Banner Advertiser

Wednesday, January 16, 2008

[vinnomot] ড. আনোয়ার হোসেনের লিখিত জবানবন্দি(Statement of Dr. Anwar)


কোর্ট রিপোর্টার জানান, 'সত্য যে কঠিন, কঠিনেরে ভালবাসিলাম'Ñ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এ উদ্ধৃতি দিয়ে বক্তব্য শুরু করেন অধ্যাপক আনোয়ার। তিনি বলেন, আমি নিঃশঙ্ক, কারণ আমি এমন একটি দেশে জন্মগ্রহণ করেছি যে দেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘাতকের বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে নিঃশঙ্ক চিত্তে জীবন দিয়েছেন। আমি কর্নেল আবু তাহের, বীরউত্তমের ভ্রাতা, যিনি ফাঁসির মঞ্চে তার অমর বাণী উচ্চারণ করেছেন, নিঃশঙ্ক চিত্তের চেয়ে জীবনে আর বড় কোন সম্পদ নেই। আমাদের বিরুদ্ধে আনীত এ মামলা কোন সাধারণ মামলা নয়। এই মামলায় এই কাঠগড়ায় আসামি হিসেবে শুধু চারজন শিক্ষক ও উপস্থিত একজন ছাত্র এবং অনুপস্থিত ১৪ জন ছাত্র আসামি নয়। আজ এই কাঠগড়ায় আসামি হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে। কাঠগড়ায় আসামি করা হয়েছে জাতির বিবেককে। কাগজে কলমে শাহবাগ থানার একজন পুলিশ অফিসার এ মামলার বাদী। কিন্তু আমরা জানি, দেশবাসী জানে, জাতির বিবেকের বিরুদ্ধে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আসল প্রতিপক্ষ কারা। এরা হচ্ছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা, মামলার চার্জ গঠনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে এ সংস্থার সদস্যরা। শুধু তাই নয়, প্রতিনিয়ত তারা উপস্থিত থাকে এই আদালতে। ইতিহাসে একদিন লেখা হবে, আপনি একটি ঐতিহাসিক মামলায় বিচারিক দায়িত্ব পালন করেছিলেন। জাতির বিবেককে হেয় প্রতিপন্ন করা এবং দলিত করাই এ মামলার মূল লক্ষ্য। সাড়ে চার মাস ধরে কারাভোগের পর গত ৯ই ডিসেম্বর থেকে আমাদের বিরুদ্ধে এই মামলা শুরু হয়েছে। চার্জ গঠন, সাক্ষীÑ যাদের মধ্যে রয়েছে অসহায় চায়ের দোকানদার, ফেরিওয়ালা, ফুলের দোকানের কর্মচারী, পিয়ন, ভীত-সন্ত্রস্ত কনস্টেবলÑ এদের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। আমি আজ স্মরণ করছি, ঐতিহাসিক আরেকটি মামলার কথা যেটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৭৬ সালে জেনারেল জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনামলে। কি আশ্চর্য, ১৯৭৬-এর সেই গোপন মামলার ৩১ বছর পর আজকের এই মামলায় তারই ভ্রাতা, এই আমি মুখ্য আসামি।
অধ্যাপক আনোয়ার বলেন, স্বৈরশাসক এবং তাদের স্তাবকেরা অনেক সময় ঢালাওভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের এই বলে কটাক্ষ করেন যে, আমরা শুধু রাজনীতি করি। আমার গায়ে সেনা ইউনিফরম নেই। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩ আদেশ আমাকে রাজনীতি বিষয়ে অভিমত প্রকাশ করতে বাধা দেয় না। তবে ইউনিফরম পরে শুধু দেশে নয় বিদেশেও রাজনীতি করে বেড়াচ্ছেন। ঘোড়াকে আকাশে ওড়াচ্ছেন, রাজা মরতে পারেন, তিনি মারা যেতে পারেনÑ এসব মন্তব্য করে ভীত-সন্ত্রস্ত এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতে ঠেলে দিচ্ছেন। ট্রাস্ট ব্যাংকে অনিয়ম করে অসত্য বক্তব্য রেখেছেন চাকরিবিধি লঙ্ঘন করেÑ তা আপনিও নিশ্চয়ই জানেন শিক্ষকেরা ছাত্রদের পিতা ও অভিভাবকের মতো বিপন্ন ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানোকে আমরা কর্তব্য জ্ঞান করিÑ এটা নতুন নয়। ১৯৯০ সালে এরশাদ সামরিক স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধেÑ আজকের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন যিনি সেই সময় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ছিলেন, তার নেতৃত্বে শুধু জরুরি অবস্থা ভঙ্গ নয় কারফিউ ভেঙে আমরা শিক্ষকেরা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে রাস্তায় নেমে এসেছি। গত ২০শে আগস্ট খেলার মাঠে আমাদের ছাত্র আক্রান্ত হয়েছিল সেনা সদস্যের হাতে। তারা অপমানিত হয়েছিল এবং বিক্ষুব্ধ হয়েছিল। বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের ওপর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নগ্ন হামলায় বহু ছাত্র আহত হয়েছিল, রক্তাক্ত হয়েছিল। বহু শিক্ষক ছুটে গিয়েছিলেন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত ভিসি অধ্যাপক ইউসুফ হায়দার সেখানে ঘোষণা করেছিলেন, এখন বিপন্ন ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের একমাত্র কর্তব্য। পুলিশের হাতে তিনি নিজেও আহত হয়েছিলেন। এ ঘটনা থেকেই বোঝা যায়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কত বেপরোয়া আচরণ করেছিল সেদিন।
অধ্যাপক আনোয়ার আদালতের উদ্দেশে বলেন, অন্যান্য বারের মতো ২০শে আগস্ট এবং তৎপরবর্তী ঘটনায় শিক্ষকেরা ছাত্রদের সঙ্গে কোন বিক্ষোভে অংশ নেননি, রাস্তায় নামেননি। আমরা নানাভাবে চেষ্টা করেছি পরিস্থিতি শান্ত করতে। আমরা ২১শে আগস্ট শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে জরুরি সাধারণ সভা করে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে যে প্রস্তাবসমূহ গ্রহণ করেছিলাম, তার কোনটিই সরকারবিরোধী ছিল না। আর প্রস্তাবগুলো আমার বা কোন শিক্ষকের ব্যক্তিগত প্রস্তাব ছিল না। আমরা জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার চেয়েছি। তিনি বলেন, আগস্ট ঘটনা তদন্তে বিচারপতি হাবিবুর রহমান খানকে প্রধান করে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। তদন্ত কমিশনের রিপোর্ট তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রদান করে সনির্বন্ধ অনুরোধ করেছিলেন তদন্ত রিপোর্টটি যেন অবিলম্বে প্রকাশ করা হয়। নিতান্ত পরিতাপের বিষয় সেই রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়নি। কেন  হলো না, কাদের ইঙ্গিতে হলো না, তা আমরা জানতে চাই। কারণ তার সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্রদের ভাগ্য জড়িত। মাননীয় বিচারপতি একটি সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে রিপোর্টের মূল বিষয়গুলো তুলে ধরেছিলেন। বলেছিলেন, ২০শে আগস্টের ঘটনা আকস্মিক, ২১শে আগস্টের ঘটনা স্বতঃস্ফূর্ত, ২২শে আগস্টের ক্যাম্পাসের বাইরের ঘটনায় অন্যান্য শক্তির সম্পৃক্ততা থাকতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আগস্টের ঘটনায় আমরা শিক্ষকেরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের বাইরে কোন সমাবেশ বা মিছিলে অংশ নেইনি। কিন্তু আপনি নিজেও তো জানেন, ঢাকার প্রধান সড়কে কতবার কত জঙ্গি মিছিল হয়েছে বর্তমান জরুরি অবস্থায়। কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, মামলা হয়নি। অন্যদিকে আমাদের শিক্ষক-ছাত্রদের বিরুদ্ধে কেমন বৈষম্যমূলক ও প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া হলো, তা দেশবাসী জানে। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, দাগি দুষ্কৃতকারী নই। তবে ২৩শে আগস্ট গভীর রাতে আমাকে ও আমার সহকর্মী ড. হারুন-অর-রশিদকে গ্রেপ্তার করা হলো, শাহবাগ থানায় নেয়ার নাম করে চোখ বেঁধে নেয়া হলো অজ্ঞাতস্থানে, তা আমাকে মনে করিয়ে দিলো পাকিস্তানি দখলদার সৈনিকদের আচরণের কথা। ওই অজ্ঞাত স্থানে যেখানে গভীর রাতে আমাকে নেয়া হয়েছিল তা আমার অত্যন্ত পরিচিত। কারণ ১৯৭৬ সালে জেনারেল জিয়ার শাসনামলে আমি শিক্ষক থাকাকালে আমাকে গ্রেপ্তার করে সেখানে সাড়ে তিন মাস রাখা হয়েছিল। এবারে রিমান্ডে রাখা হয়েছে সরকারি হিসাবে ৮ দিন, তবে বাস্তবে ১২ দিন। ওই নির্যাতন কেন্দ্রে রিমান্ডে নেয়ার পর যখন আবার কোর্টে হাজির করা হয়, তখন কি ভয়াবহ শারীরিক ও মানসিক বৈকল্যে ভুক্তভোগী নিপতিত হয় তা আপনারা জানেন। তথ্য আদায়ের নামে সেখানে যা যা করা হয়, তার সবই প্রয়োগ করা হয়েছিল বাংলাদেশের বিবেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষকের প্রতি। প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ডিগ্রির নির্যাতনমূলক জিজ্ঞাসাবাদÑ তার সবই চালানো হয়েছিল। চোখ বন্ধ অবস্থায় দিন-রাতের হিসাব ছিল না। মনে পড়ে কালো কাপড়ের পট্টিতে চোখ বাঁধা অবস্থায় আমাকে একজন জিজ্ঞাসা করেছিলেন "বলুন ব্ল্যাক হোল কাকে বলে?" আমি পদার্থ বিজ্ঞানের ছাত্র নই। তারপরও বলেছিলাম আমার জানামতে মহাকাশে এটি সেই কৃষ্ণ গহ্বর যেখানে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এত বেশি যা এমনকি আপাতভরহীন আলোককে পর্যন্ত শুষে নেয়। তারা বলেছিলেন, আপনি সেই ব্ল্যাক হোলে আছেন।
তিনি আরও বলেন, কুসুমেও কীট থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যে শিক্ষকরা নৈতিকভাবে অধঃপতিত হয়েছেন, দুর্নীতি করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তিকে মলিন করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বারবার দাবি করেছি। তারা তো সবাই স্বপদে বহালÑ শুধু আছেন নয়, তাদের সঙ্গেই আপনাদের দেন-দরবার। আরেকটি বিষয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। তা হলো আমার ক্ষমা প্রার্থনা বিষয়ে। ছাত্রদের অভিভাবক হিসেবে সম্মানিত জোয়ান থেকে শুরু করে সেনাপ্রধান পর্যন্ত সকলের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলাম। সেনাবাহিনীর আহত মর্যাদাবোধের যেন দ্রুত নিরাময় হয়। রিমান্ডে থাকাকালে আমি নিজে প্রস্তাব করেছিলাম এ বিষয়ে আমি কোর্টে বলবো। তারা অবাক হয়েছিলেন। আমাকে অনুরোধ করেছিলেন, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সামনে আমার কথাগুলো বললে সেনাবাহিনীর বড় উপকার হবে। সারাদেশে সেনা সদস্যরা তা শুনতে পাবে। ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে। আমি শর্ত দিয়েছিলাম, আমার মতো করে আমাকে বলতে দিতে হবে। তারা কথা দিয়েছিলেন তারা তা রক্ষা করবেন। আমার ক্ষমা প্রার্থনা মিডিয়াতে শুনে দেশবাসী হয়তো ভেবেছেন আমাকে চাপ প্রয়োগ করে বাধ্য করে তা করানো হয়েছে। আজ শপথ করে বলছি, পৃথিবীতে এমন কোন শক্তি জন্মগ্রহণ করেনি যারা কর্নেল তাহেরের ভাই ড. আনোয়ার হোসেনকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন কিছু বলতে বাধ্য করতে পারে। কিন্তু মহামান্য আদালত আমার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছিল। আমার সম্পূর্ণ বক্তব্য প্রচারে বাধা দেয়া হয়েছিল। দেশের মঙ্গলের জন্য সেনাবাহিনী যেন ছাত্র-শিক্ষক-জনতার প্রতিপক্ষ হিসেবে আর অবস্থানে না আসে, ছাত্ররা যেন রক্ষা পায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেন রক্ষা পায় সেই কারণে কোন গ্লানিবোধ না করে একজন শিক্ষকের বিবেক ও সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত নীতিনিষ্ঠ সবল ও উচ্চতর অবস্থান থেকে আমি সেই ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলাম। আমি গভীরভাবে বিশ্বাস করি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সিপাহিরা এবং ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠ অফিসাররা কোন উচ্চাভিলাষীদের হাতিয়ার হিসেবে জনগণের গণতান্ত্রিক শাসনের বিপরীতে কোন অসাংবিধানিক সরকার প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্রে অংশ নেবে না শুধু নয়, জনতার সঙ্গে মিলে তা প্রতিহত করবে।
আজ দেশবাসী সবার মনে একটি প্রশ্ন, আসলে দেশ চালাচ্ছে কারা? মানুষ মনে করে একটি ভৌতিক অবয়বহীন সরকার দেশ পরিচালনা করছে। দেশে চলছে অঘোষিত সামরিক শাসন এবং সেনাবাহিনীর অতি ক্ষুদ্র একটি অংশ সেনাবাহিনীর নামে তা করছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার স্বাধীনভাবে তাদের সংবিধান নির্ধারিত কাজ করতে পারছে না।
তিনি আরও বলেন, ভুল ও ভয়ের শাসনে দেশে চলছে নীরব দুর্ভিক্ষ। ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ, কেউ কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। দুর্নীতিও কমেনি, শুধু রেইট বেড়ে গেছে। প্রধান উপদেষ্টার অফিসের প্রায় পাশে, ক্যান্টনমেন্টের অতি কাছে র‌্যাংগস ভবন ভেঙে পড়ে হতভাগ্য গরিব মজুরদের লাশ দিনের পর দিন ঝুলে থাকলো, আমাদের সেনাবাহিনী বা সরকারি কোন প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভব হলো না সেই লাশগুলো উদ্ধার করা। শেষ পর্যন্ত ওই গরিব মানুষদের আত্মীয়-স্বজনরা এসে নিজেরাই সেসব লাশ উদ্ধার করে নিয়ে গেল। ভেবে দেখুন মহামান্য আদালত, কি সুশাসনেই না চলছে দেশ।
তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিশেষ ট্রাইবুনালে বিচারের দাবিতে আজ সারা জাতি ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু ভুতুড়ে সরকার নির্বিকার। গত ১ বছরে এসব যুদ্ধাপরাধীদের গায়ে আঁচড় পর্যন্ত লাগেনি। বিভিন্ন সময়ে সামরিক সরকার এবং বিশেষ করে বিগত জামায়াত-বিএনপি জোট সরকারের আমলে রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে এরা তাদের অবস্থান পাকা করেছে। তারা সে সমাবস্থানে সুরক্ষিতই আছে। বাংলাভাইদের মদতদাতা প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র সচিব ওমর ফারুকের কিছুই হয়নি। খাদ্য-ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সচিব পদে আছেন আয়ুব মিয়া, যাকে ১৯৭১ সালে বরিশাল শহরে রাজাকার হিসেবে ঘোরানো হয়েছিল। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মতো প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান করা হয়েছে জামায়াতের সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক আবদুর রবকে। বিসিএসআইআর-এর চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান জামায়াতের প্রভাবশালী সদস্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জামায়াত সংশ্লিষ্ট দুর্নীতিবাজ, নীতিভ্রষ্ট উপাচার্য ও অন্যান্য পদাধিকারীগণ যথাস্থানেই আছেন। সংবাদপত্র প্রকাশনা শিল্পের মালিকদের বন্দি করে এসব সংবাদপত্রে কর্মরত হাজার হাজার সাংবাদিকের রুটি-রুজির পথ বন্ধ করে তাদের শুকিয়ে মারা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে অন্তত জামিনে মুক্তি দিন। তেমনি বেগম খালেদা জিয়াকেও মুক্তি দিন। তার স্বামী জেনারেল জিয়া তার জীবনদাতা আমার ভাই কর্নেল তাহেরকে হত্যা করেছিলেন। কিন্তু স্বামীর অপরাধে আমি তাকে দোষারোপ করবো না। '৯০-এর গণঅভ্যুত্থানে আপনি অনমনীয় দৃঢ়তা দেখিয়েছেন, তার জন্য আপনার প্রতি আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা আছে। আমি বিনয়ের সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান রাখবোÑ কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে আপনি কর্নেল তাহেরের বিধবা স্ত্রী লুৎফা তাহেরের সঙ্গে দেখা করে স্বামীর ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করুন।
গত ঈদের আগে কারাগারে বন্দি দু'জন ছাত্রকে রিমান্ডে নিয়ে ঈদের দিন তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে গাড়ি পোড়ানোর মামলায় তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ছাত্র-শিক্ষকদের জড়াতে চেয়েছে। তিনি বলেন, আমি জানতে চাই, ২২শে আগস্ট কারফিউ জারির পর নিরপরাধ ছাত্রছাত্রী, রিপোর্টার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের ওপর যে বর্বর-নির্যাতন চালিয়েছিল যৌথবাহিনী তাদের বিরুদ্ধে কি কোন মামলা রজু হয়েছে? বন্দি ছাত্রদের মুক্তি দিন। দেশকে অরাজকতার দিকে ঠেলে দেবেন না। আমাদের ছাত্র-শিক্ষকদের আর অপমান করবেন না। মৃত্যুকে আমি ভয় পাই না, কারণ বঙ্গবন্ধুর সেই উক্তি 'আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউ আমাদের মারতে পারবে না'Ñ তা আমি সব সময় স্মরণ করি। জীবনানন্দ দাশের কবিতার চরণ 'মরণের হাত ধরে স্বপ্ন ছাড়া কে বাঁচিতে পারে' উচ্চারণ করে মহামান্য আদালত আমি বিশুদ্ধ চিত্তে শপথ করে বলছি, আমি নির্দোষ।
 


Is this CTG is better than Ershad  in case of political party reform and anti corruption drive ?
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
Sobhan Allah-  Only Allah flawless 
           Alhamdulillah - All praise to be of Allah 
                   Allah hu Akbar - Allah, the Greatest
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------Would Be Mahathir of BD
 


Be a better friend, newshound, and know-it-all with Yahoo! Mobile. Try it now. __._,_.___

Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___

[vinnomot] ড. আনোয়ার হোসেনের লিখিত জবানবন্দি


কোর্ট রিপোর্টার জানান, 'সত্য যে কঠিন, কঠিনেরে ভালবাসিলাম'Ñ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এ উদ্ধৃতি দিয়ে বক্তব্য শুরু করেন অধ্যাপক আনোয়ার। তিনি বলেন, আমি নিঃশঙ্ক, কারণ আমি এমন একটি দেশে জন্মগ্রহণ করেছি যে দেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘাতকের বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে নিঃশঙ্ক চিত্তে জীবন দিয়েছেন। আমি কর্নেল আবু তাহের, বীরউত্তমের ভ্রাতা, যিনি ফাঁসির মঞ্চে তার অমর বাণী উচ্চারণ করেছেন, নিঃশঙ্ক চিত্তের চেয়ে জীবনে আর বড় কোন সম্পদ নেই। আমাদের বিরুদ্ধে আনীত এ মামলা কোন সাধারণ মামলা নয়। এই মামলায় এই কাঠগড়ায় আসামি হিসেবে শুধু চারজন শিক্ষক ও উপস্থিত একজন ছাত্র এবং অনুপস্থিত ১৪ জন ছাত্র আসামি নয়। আজ এই কাঠগড়ায় আসামি হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে। কাঠগড়ায় আসামি করা হয়েছে জাতির বিবেককে। কাগজে কলমে শাহবাগ থানার একজন পুলিশ অফিসার এ মামলার বাদী। কিন্তু আমরা জানি, দেশবাসী জানে, জাতির বিবেকের বিরুদ্ধে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আসল প্রতিপক্ষ কারা। এরা হচ্ছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা, মামলার চার্জ গঠনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে এ সংস্থার সদস্যরা। শুধু তাই নয়, প্রতিনিয়ত তারা উপস্থিত থাকে এই আদালতে। ইতিহাসে একদিন লেখা হবে, আপনি একটি ঐতিহাসিক মামলায় বিচারিক দায়িত্ব পালন করেছিলেন। জাতির বিবেককে হেয় প্রতিপন্ন করা এবং দলিত করাই এ মামলার মূল লক্ষ্য। সাড়ে চার মাস ধরে কারাভোগের পর গত ৯ই ডিসেম্বর থেকে আমাদের বিরুদ্ধে এই মামলা শুরু হয়েছে। চার্জ গঠন, সাক্ষীÑ যাদের মধ্যে রয়েছে অসহায় চায়ের দোকানদার, ফেরিওয়ালা, ফুলের দোকানের কর্মচারী, পিয়ন, ভীত-সন্ত্রস্ত কনস্টেবলÑ এদের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। আমি আজ স্মরণ করছি, ঐতিহাসিক আরেকটি মামলার কথা যেটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৭৬ সালে জেনারেল জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনামলে। কি আশ্চর্য, ১৯৭৬-এর সেই গোপন মামলার ৩১ বছর পর আজকের এই মামলায় তারই ভ্রাতা, এই আমি মুখ্য আসামি।
অধ্যাপক আনোয়ার বলেন, স্বৈরশাসক এবং তাদের স্তাবকেরা অনেক সময় ঢালাওভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের এই বলে কটাক্ষ করেন যে, আমরা শুধু রাজনীতি করি। আমার গায়ে সেনা ইউনিফরম নেই। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩ আদেশ আমাকে রাজনীতি বিষয়ে অভিমত প্রকাশ করতে বাধা দেয় না। তবে ইউনিফরম পরে শুধু দেশে নয় বিদেশেও রাজনীতি করে বেড়াচ্ছেন। ঘোড়াকে আকাশে ওড়াচ্ছেন, রাজা মরতে পারেন, তিনি মারা যেতে পারেনÑ এসব মন্তব্য করে ভীত-সন্ত্রস্ত এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতে ঠেলে দিচ্ছেন। ট্রাস্ট ব্যাংকে অনিয়ম করে অসত্য বক্তব্য রেখেছেন চাকরিবিধি লঙ্ঘন করেÑ তা আপনিও নিশ্চয়ই জানেন। শিক্ষকেরা ছাত্রদের পিতা ও অভিভাবকের মতো বিপন্ন ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানোকে আমরা কর্তব্য জ্ঞান করিÑ এটা নতুন নয়। ১৯৯০ সালে এরশাদ সামরিক স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধেÑ আজকের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন যিনি সেই সময় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ছিলেন, তার নেতৃত্বে শুধু জরুরি অবস্থা ভঙ্গ নয় কারফিউ ভেঙে আমরা শিক্ষকেরা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে রাস্তায় নেমে এসেছি। গত ২০শে আগস্ট খেলার মাঠে আমাদের ছাত্র আক্রান্ত হয়েছিল সেনা সদস্যের হাতে। তারা অপমানিত হয়েছিল এবং বিক্ষুব্ধ হয়েছিল। বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের ওপর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নগ্ন হামলায় বহু ছাত্র আহত হয়েছিল, রক্তাক্ত হয়েছিল। বহু শিক্ষক ছুটে গিয়েছিলেন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত ভিসি অধ্যাপক ইউসুফ হায়দার সেখানে ঘোষণা করেছিলেন, এখন বিপন্ন ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের একমাত্র কর্তব্য। পুলিশের হাতে তিনি নিজেও আহত হয়েছিলেন। এ ঘটনা থেকেই বোঝা যায়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কত বেপরোয়া আচরণ করেছিল সেদিন।
অধ্যাপক আনোয়ার আদালতের উদ্দেশে বলেন, অন্যান্য বারের মতো ২০শে আগস্ট এবং তৎপরবর্তী ঘটনায় শিক্ষকেরা ছাত্রদের সঙ্গে কোন বিক্ষোভে অংশ নেননি, রাস্তায় নামেননি। আমরা নানাভাবে চেষ্টা করেছি পরিস্থিতি শান্ত করতে। আমরা ২১শে আগস্ট শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে জরুরি সাধারণ সভা করে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে যে প্রস্তাবসমূহ গ্রহণ করেছিলাম, তার কোনটিই সরকারবিরোধী ছিল না। আর প্রস্তাবগুলো আমার বা কোন শিক্ষকের ব্যক্তিগত প্রস্তাব ছিল না। আমরা জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার চেয়েছি। তিনি বলেন, আগস্ট ঘটনা তদন্তে বিচারপতি হাবিবুর রহমান খানকে প্রধান করে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। তদন্ত কমিশনের রিপোর্ট তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রদান করে সনির্বন্ধ অনুরোধ করেছিলেন তদন্ত রিপোর্টটি যেন অবিলম্বে প্রকাশ করা হয়। নিতান্ত পরিতাপের বিষয় সেই রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়নি। কেন  হলো না, কাদের ইঙ্গিতে হলো না, তা আমরা জানতে চাই। কারণ তার সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্রদের ভাগ্য জড়িত। মাননীয় বিচারপতি একটি সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে রিপোর্টের মূল বিষয়গুলো তুলে ধরেছিলেন। বলেছিলেন, ২০শে আগস্টের ঘটনা আকস্মিক, ২১শে আগস্টের ঘটনা স্বতঃস্ফূর্ত, ২২শে আগস্টের ক্যাম্পাসের বাইরের ঘটনায় অন্যান্য শক্তির সম্পৃক্ততা থাকতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আগস্টের ঘটনায় আমরা শিক্ষকেরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের বাইরে কোন সমাবেশ বা মিছিলে অংশ নেইনি। কিন্তু আপনি নিজেও তো জানেন, ঢাকার প্রধান সড়কে কতবার কত জঙ্গি মিছিল হয়েছে বর্তমান জরুরি অবস্থায়। কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, মামলা হয়নি। অন্যদিকে আমাদের শিক্ষক-ছাত্রদের বিরুদ্ধে কেমন বৈষম্যমূলক ও প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া হলো, তা দেশবাসী জানে। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, দাগি দুষ্কৃতকারী নই। তবে ২৩শে আগস্ট গভীর রাতে আমাকে ও আমার সহকর্মী ড. হারুন-অর-রশিদকে গ্রেপ্তার করা হলো, শাহবাগ থানায় নেয়ার নাম করে চোখ বেঁধে নেয়া হলো অজ্ঞাতস্থানে, তা আমাকে মনে করিয়ে দিলো পাকিস্তানি দখলদার সৈনিকদের আচরণের কথা। ওই অজ্ঞাত স্থানে যেখানে গভীর রাতে আমাকে নেয়া হয়েছিল তা আমার অত্যন্ত পরিচিত। কারণ ১৯৭৬ সালে জেনারেল জিয়ার শাসনামলে আমি শিক্ষক থাকাকালে আমাকে গ্রেপ্তার করে সেখানে সাড়ে তিন মাস রাখা হয়েছিল। এবারে রিমান্ডে রাখা হয়েছে সরকারি হিসাবে ৮ দিন, তবে বাস্তবে ১২ দিন। ওই নির্যাতন কেন্দ্রে রিমান্ডে নেয়ার পর যখন আবার কোর্টে হাজির করা হয়, তখন কি ভয়াবহ শারীরিক ও মানসিক বৈকল্যে ভুক্তভোগী নিপতিত হয় তা আপনারা জানেন। তথ্য আদায়ের নামে সেখানে যা যা করা হয়, তার সবই প্রয়োগ করা হয়েছিল বাংলাদেশের বিবেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষকের প্রতি। প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ডিগ্রির নির্যাতনমূলক জিজ্ঞাসাবাদÑ তার সবই চালানো হয়েছিল। চোখ বন্ধ অবস্থায় দিন-রাতের হিসাব ছিল না। মনে পড়ে কালো কাপড়ের পট্টিতে চোখ বাঁধা অবস্থায় আমাকে একজন জিজ্ঞাসা করেছিলেন "বলুন ব্ল্যাক হোল কাকে বলে?" আমি পদার্থ বিজ্ঞানের ছাত্র নই। তারপরও বলেছিলাম আমার জানামতে মহাকাশে এটি সেই কৃষ্ণ গহ্বর যেখানে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এত বেশি যা এমনকি আপাতভরহীন আলোককে পর্যন্ত শুষে নেয়। তারা বলেছিলেন, আপনি সেই ব্ল্যাক হোলে আছেন।
তিনি আরও বলেন, কুসুমেও কীট থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যে শিক্ষকরা নৈতিকভাবে অধঃপতিত হয়েছেন, দুর্নীতি করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তিকে মলিন করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বারবার দাবি করেছি। তারা তো সবাই স্বপদে বহালÑ শুধু আছেন নয়, তাদের সঙ্গেই আপনাদের দেন-দরবার। আরেকটি বিষয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। তা হলো আমার ক্ষমা প্রার্থনা বিষয়ে। ছাত্রদের অভিভাবক হিসেবে সম্মানিত জোয়ান থেকে শুরু করে সেনাপ্রধান পর্যন্ত সকলের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলাম। সেনাবাহিনীর আহত মর্যাদাবোধের যেন দ্রুত নিরাময় হয়। রিমান্ডে থাকাকালে আমি নিজে প্রস্তাব করেছিলাম এ বিষয়ে আমি কোর্টে বলবো। তারা অবাক হয়েছিলেন। আমাকে অনুরোধ করেছিলেন, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সামনে আমার কথাগুলো বললে সেনাবাহিনীর বড় উপকার হবে। সারাদেশে সেনা সদস্যরা তা শুনতে পাবে। ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে। আমি শর্ত দিয়েছিলাম, আমার মতো করে আমাকে বলতে দিতে হবে। তারা কথা দিয়েছিলেন তারা তা রক্ষা করবেন। আমার ক্ষমা প্রার্থনা মিডিয়াতে শুনে দেশবাসী হয়তো ভেবেছেন আমাকে চাপ প্রয়োগ করে বাধ্য করে তা করানো হয়েছে। আজ শপথ করে বলছি, পৃথিবীতে এমন কোন শক্তি জন্মগ্রহণ করেনি যারা কর্নেল তাহেরের ভাই ড. আনোয়ার হোসেনকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন কিছু বলতে বাধ্য করতে পারে। কিন্তু মহামান্য আদালত আমার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছিল। আমার সম্পূর্ণ বক্তব্য প্রচারে বাধা দেয়া হয়েছিল। দেশের মঙ্গলের জন্য সেনাবাহিনী যেন ছাত্র-শিক্ষক-জনতার প্রতিপক্ষ হিসেবে আর অবস্থানে না আসে, ছাত্ররা যেন রক্ষা পায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেন রক্ষা পায় সেই কারণে কোন গ্লানিবোধ না করে একজন শিক্ষকের বিবেক ও সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত নীতিনিষ্ঠ সবল ও উচ্চতর অবস্থান থেকে আমি সেই ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলাম। আমি গভীরভাবে বিশ্বাস করি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সিপাহিরা এবং ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠ অফিসাররা কোন উচ্চাভিলাষীদের হাতিয়ার হিসেবে জনগণের গণতান্ত্রিক শাসনের বিপরীতে কোন অসাংবিধানিক সরকার প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্রে অংশ নেবে না শুধু নয়, জনতার সঙ্গে মিলে তা প্রতিহত করবে।
আজ দেশবাসী সবার মনে একটি প্রশ্ন, আসলে দেশ চালাচ্ছে কারা? মানুষ মনে করে একটি ভৌতিক অবয়বহীন সরকার দেশ পরিচালনা করছে। দেশে চলছে অঘোষিত সামরিক শাসন এবং সেনাবাহিনীর অতি ক্ষুদ্র একটি অংশ সেনাবাহিনীর নামে তা করছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার স্বাধীনভাবে তাদের সংবিধান নির্ধারিত কাজ করতে পারছে না।
তিনি আরও বলেন, ভুল ও ভয়ের শাসনে দেশে চলছে নীরব দুর্ভিক্ষ। ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ, কেউ কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। দুর্নীতিও কমেনি, শুধু রেইট বেড়ে গেছে। প্রধান উপদেষ্টার অফিসের প্রায় পাশে, ক্যান্টনমেন্টের অতি কাছে র‌্যাংগস ভবন ভেঙে পড়ে হতভাগ্য গরিব মজুরদের লাশ দিনের পর দিন ঝুলে থাকলো, আমাদের সেনাবাহিনী বা সরকারি কোন প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভব হলো না সেই লাশগুলো উদ্ধার করা। শেষ পর্যন্ত ওই গরিব মানুষদের আত্মীয়-স্বজনরা এসে নিজেরাই সেসব লাশ উদ্ধার করে নিয়ে গেল। ভেবে দেখুন মহামান্য আদালত, কি সুশাসনেই না চলছে দেশ।
তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিশেষ ট্রাইবুনালে বিচারের দাবিতে আজ সারা জাতি ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু ভুতুড়ে সরকার নির্বিকার। গত ১ বছরে এসব যুদ্ধাপরাধীদের গায়ে আঁচড় পর্যন্ত লাগেনি। বিভিন্ন সময়ে সামরিক সরকার এবং বিশেষ করে বিগত জামায়াত-বিএনপি জোট সরকারের আমলে রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে এরা তাদের অবস্থান পাকা করেছে। তারা সে সমাবস্থানে সুরক্ষিতই আছে। বাংলাভাইদের মদতদাতা প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র সচিব ওমর ফারুকের কিছুই হয়নি। খাদ্য-ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সচিব পদে আছেন আয়ুব মিয়া, যাকে ১৯৭১ সালে বরিশাল শহরে রাজাকার হিসেবে ঘোরানো হয়েছিল। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মতো প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান করা হয়েছে জামায়াতের সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক আবদুর রবকে। বিসিএসআইআর-এর চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান জামায়াতের প্রভাবশালী সদস্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জামায়াত সংশ্লিষ্ট দুর্নীতিবাজ, নীতিভ্রষ্ট উপাচার্য ও অন্যান্য পদাধিকারীগণ যথাস্থানেই আছেন। সংবাদপত্র প্রকাশনা শিল্পের মালিকদের বন্দি করে এসব সংবাদপত্রে কর্মরত হাজার হাজার সাংবাদিকের রুটি-রুজির পথ বন্ধ করে তাদের শুকিয়ে মারা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে অন্তত জামিনে মুক্তি দিন। তেমনি বেগম খালেদা জিয়াকেও মুক্তি দিন। তার স্বামী জেনারেল জিয়া তার জীবনদাতা আমার ভাই কর্নেল তাহেরকে হত্যা করেছিলেন। কিন্তু স্বামীর অপরাধে আমি তাকে দোষারোপ করবো না। '৯০-এর গণঅভ্যুত্থানে আপনি অনমনীয় দৃঢ়তা দেখিয়েছেন, তার জন্য আপনার প্রতি আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা আছে। আমি বিনয়ের সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান রাখবোÑ কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে আপনি কর্নেল তাহেরের বিধবা স্ত্রী লুৎফা তাহেরের সঙ্গে দেখা করে স্বামীর ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করুন।
গত ঈদের আগে কারাগারে বন্দি দু'জন ছাত্রকে রিমান্ডে নিয়ে ঈদের দিন তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে গাড়ি পোড়ানোর মামলায় তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ছাত্র-শিক্ষকদের জড়াতে চেয়েছে। তিনি বলেন, আমি জানতে চাই, ২২শে আগস্ট কারফিউ জারির পর নিরপরাধ ছাত্রছাত্রী, রিপোর্টার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের ওপর যে বর্বর-নির্যাতন চালিয়েছিল যৌথবাহিনী তাদের বিরুদ্ধে কি কোন মামলা রজু হয়েছে? বন্দি ছাত্রদের মুক্তি দিন। দেশকে অরাজকতার দিকে ঠেলে দেবেন না। আমাদের ছাত্র-শিক্ষকদের আর অপমান করবেন না। মৃত্যুকে আমি ভয় পাই না, কারণ বঙ্গবন্ধুর সেই উক্তি 'আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউ আমাদের মারতে পারবে না'Ñ তা আমি সব সময় স্মরণ করি। জীবনানন্দ দাশের কবিতার চরণ 'মরণের হাত ধরে স্বপ্ন ছাড়া কে বাঁচিতে পারে' উচ্চারণ করে মহামান্য আদালত আমি বিশুদ্ধ চিত্তে শপথ করে বলছি, আমি নির্দোষ।
 


Is this CTG is better than Ershad  in case of political party reform and anti corruption drive ?
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
Sobhan Allah-  Only Allah flawless 
           Alhamdulillah - All praise to be of Allah 
                   Allah hu Akbar - Allah, the Greatest
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------Would Be Mahathir of BD
 


Never miss a thing. Make Yahoo your homepage. __._,_.___

Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___