মার্কিন নির্বাচন নিয়ে শেষকথা বলার সময় এখনো আসেনিসপ্তাহান্তে সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে একজন পরিচিত সিলেটি ভদ্রলোক জালাল মাহমুদ জিজ্জাসা করেন, দাদা, কে হচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট? বললাম, এখন নির্বাচন হলে হিলারী ক্লিন্টন জিতবেন; কিন্তু নভেম্ববে কে জয়ী হবেন একথা এখনি বলা মুশকিল। তিনি একমত হলেন। রাতে এক জটলায় একদা সাংবাদিক গোলাম মল্লিক হটাৎ বর্ণমালা সম্পাদক মাহফুজুর রহমানকে প্রশ্ন করেন, কে হচ্ছেনা প্রেসিডেন্ট? মাহফুজ উত্তর দিলেন, হিলারী। মল্লিক একটু উষ্মা নিয়েই বললেন, কিছুসংখ্যক মুসলমান হিলারীকে প্রেসিডেন্ট বানিয়ে ফেলেছেন; এরপর একটু জোর দিয়েই বলেন, 'নো, ট্রাম্প উইল বী প্রেসিডেন্ট'। জন্মভূমি সম্পাদক রতন তালুকদার এইফাঁকে বলেন, হিলারী প্রেসিডেন্ট হলে মার্কিনীরা এবার জেনেশুনে একজন 'অসাধু'-কে নির্বাচিত করবেন। মিডিয়ায় সদ্য প্রায় একই কথা বলেছে, 'ভোটারদের এবার একজন 'অবিশ্বস্থ' অথবা একজন 'অস্থির' প্রার্থীকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে হবে। এনিয়ে আরো অনেক কথা হয়, সাংবাদিক রিমন ইসলাম ব্যাখ্যা করলেন কিভাবে হিলারীর জয় প্রায় নিশ্চিত। আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল আবেদীন বললেন, জয় হবে ট্রাম্পের।বিশ্ব এখন দুই ভাগে বিভক্ত, ট্রাম্প ও হিলারী এবং সবারই নিজ নিজ পক্ষে যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে। ছোট বুশের নির্বাচনের ঠিক আগে প্যারিস গিয়েছিলাম। পার্থ প্রতিম মজুমদারের সৌজন্যে এক পার্টীতে গেলে আমেরিকা থেকে এসেছি শুনে সবাই জেঁকে ধরে এবং জানতে চায়, বুশ কতটা শোচনীয় ভাবে হারবে? অভ্যাগতরা অর্ধেক-অর্ধেক ভারতীয় এবং বাংলাদেশী। বলেছিলাম, বুশ সহজেই জিতবেন। সবাই নাখোশ হলেন। কেউ কেউ ভাব দেখালেন যে, 'ব্যাটা আমেরিকা থেকে এলেও কোন খবরই রাখেনা'! আসলে ১৯৯৬ সাল থেকে একটি বাদে প্রতিটি নির্বাচনের একবছর আগে থেকে অন্তত: সপ্তাহে একটি করে লেখা দিয়েছি সাপ্তাহিক 'ঠিকানা'-তে। এবছর ২০১৬-তে বরং মাসে একটি লেখা ভোরের কাগজ এবং একই সাথে ঠিকানায় ছাপা হচ্ছে, সেই হিসাবে এটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে ৮ম কিস্তি। খোঁজখবর না রাখলে লেখা সহজ নয়, সেই হিসাবেই বলা যায়, শেষ কথা বলার সময় এখনো আসেনি। যদিও এবারের নির্বাচনে ক'টি কথা বারবার আসছে: হিলারী বলছেন, 'ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হবার অনুপযুক্ত'; আর ট্রাম্প বলছেন, 'আমি জিতবো, এবং ভালোভাবেই জিতবো'।বাস্তবতা হলো, শেষ হাসি কে হাসবেন, হিলারী না ট্রাম্প সেটা এখনো শুধুই জল্পনা-কল্পনা বা হিসাব-নিকেশ। তবে এসময়ে হিলারীর অবস্থান ভালো। ভোটারদের দোটানার মধ্যেই এগিয়ে যাচ্ছে প্রচারণা। আগস্টের শুরু থেকে মধ্য আগস্ট পর্যন্ত ট্রাম্প দু:সময় পার করেছেন। প্রায় প্রতিটি জরীপে তিনি পিছিয়ে, হিলারী এগিয়ে। হিলারীর পজেভিট ভোট বাড়েনি, কিন্তু ট্রাম্পের কমেছে, তাই ব্যবধান বেড়েছে। বোদ্ধামাত্রই এখন বলবেন, ট্রাম্পের অবস্থান ভালো নয়, জয়ের জন্যে তাকে অলৌকিক কিছু করতে হবে। সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে তিনটি ডিবেট বা বিতর্ক। জরীপের ব্যারোমিটার এর সাথে ওঠানামা করবে। এছাড়া এখন প্রতিদিন কত ঘটনা ঘটছে, ঐসব ঘটনায় প্রার্থীদের প্রতিক্রিয়াও বিবেচ্য। ধারণা করা যায়, এবার সাদা ভোট বেশি পাবেন ট্রাম্প, কালো ভোট হিলারী। ইভাঞ্জেলিকদের ভোট পাবেন ট্রাম্প, উদারপন্থীদর হিলারী। কিন্তু ভোটের হিসাবটা ঠিক আগের মত নেই, একক কোন গ্রূপের ভোট দিয়ে এখন আর জেতা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। তদুপরি পপুলার ভোট জিতলেই হবেনা, ইলেকটোরাল কলেজ ভোটে অর্থাৎ বেশিরভাগ স্টেটে জিততে হবে।উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, ২০০০ সালে আল-গোর পপুলার ভোটে জেতেন কিন্তু ইলেকটোরাল ভোটে হারেন। প্রেসিডেন্ট হন বুশ। আবার রোনাল্ড রিগ্যান ১৯৮০সালে ৫৬% সাদা ভোট পেয়ে ৪৪টি স্টেটে জয় পান এবং প্রেসিডেন্টহন।কিন্তু ২০১২ তে মিট রামণি ৫৯% সাদা ভোট পেলেও নির্বাচনে জয়ীহন ওবামা। অর্থাৎ মার্কিন ভোটে র প্যাটার্ন বদলাচ্ছে এবং শুধুসাদা ভোট এখন জয়ের জন্যে যথেষ্ ট নয়। এজন্যে চাই সব মহলের সমর্থন। সম্ভবত: ট্রাম্প সেটা মনে রেখে শনিবার ১৩ই আগস্ট হটাৎডেমোক্রেটদের শক্ত ঘাঁটি কানেক্টিকাটে হাজির হন। তিনি বলেন, 'আই লাভ কানেকটিকাট, এখানে আমি থেকেছি। পর্যবেক্ষকরাঅবশ্য বলছেন, কানেক্টিকাটে না গিয়ে ট্রাম্পের উচিত ওহাইও-তে যাওয়া। হিলারী যেমনি সর্বমহলের ভোটার জন্যে সবার কাছে ছুটছেন, ট্রাম্পও তাই, কিন্তু তিনি ইতিমধ্যে অনেকেরই বিরাগভাজন হয়েছেন। ট্রাম্প অবশ্য 'ড্যাম-কেয়ার'। এমনকি দলকেও তিনি কেয়ার করছেন না। দল পুরোপুরি তার পেছনে নেই। রিপাবলিকান পার্টি ভাবছে, ট্রাম্প না হাউস সংখ্যাগরিষ্ঠতা? এমুহুর্তে রিপাবলিকানরা হাউস ও সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ। এটি ধরে রাখতে তারা ট্রাম্পকে ডাম্প করতেও পারেন, সেক্ষেত্রে ট্রাম্পের জন্যে জয় দু:স্বপ্ন হয়ে যাবে।দলগত অবস্থান থেকে হিলারী সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন। ডেমোক্রেটরা হোয়াইট হাউস, কংগ্রেস ও সিনেট দখলে নিলেও অবাক হবার কিছু থাকবেনা। যদিও বার্নি স্যান্ডার্স সমর্থকরা শেষ পর্যন্ত কি করেন সেটাও দেখার বিষয়। এদিকে হিলারী ক্লিনটন যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রীছিলেন তখন লিবিয়ার বেনগাজীতে জঙ্গী হামলায় ৪জন আমেরিকান নিহত হয়েছিলেন, এদের মধ্যে দু'জন সৈন্য। নিহত ঐ দুই সেনা সদস্যের পরিবার হিলারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তারা হিলারীর ব্যক্তিগত ই-মেইল ব্যবহারকে এজন্যে দায়ী করেন। এছাড়া ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু হয়েছে। তদুপরি এফবিআই তাদের সাথে হিলারীর কথোপকথনের নোট সোমবার ১৬ই আগস্ট কংগ্রেসের কাছে হস্তান্তর করেছে। ক্লিনটন ফাউন্ডেশন নিয়ে বিতর্ক ঘনীভূত হচ্ছে। বিল ক্লিন্টন ফাউন্ডেশনের বোর্ড থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। হিলারী প্রেসিডেন্ট হলে ফাউন্ডেশন আর বিদেশী ডোনেশন নেবে না বলেও জানিয়েছে। কেউ কেউ এও ভাবছেন, নির্বাচনের আগে হিলারী 'বেনগাজী' বা 'প্রাইভেট ই-মেইল সার্ভার' ইস্যুতে আরো বড় সমস্যায় পড়তে যাচ্ছেন।মার্কিন নির্বাচনে উভয় দলেরই বাঁধাধরা কিছু স্টেট্ থাকে। রিপাবলিকান স্টেটগুলোকে ম্যাপে দেখানো হয় লাল হিসাবে, ডেমোক্রেটদের নীল। সাধারণত: ঐসব স্টেট্ পার্টি লাইনে ভোট দেয়। কিন্তু ফলাফল নির্ধারণ হয় সুইং স্টেটগুলোতে। সেইদিক থেকে ফ্লোরিডা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যেমন ২০০০ সালে ফ্লোরিডা বুশকে জিতেয়েছিলো। ২০১৬-এ মধ্য আগস্টে হিলারী প্রায় সবগুলো সুইং স্টেটে এগিয়ে থাকলেও ফ্লোরিডাতে সমান-সমান। গত সপ্তাহে কুইনিপিক ইউনিভার্সিটি জরীপে ফ্লোরিডাকে দেখানো হয় ৪৬-৪৫%; যদিও হিলারী ওহাইওয়ে-তে ৪ পয়েন্ট, ও পেনসিলভানিয়ায় ১০ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন। নিরপেক্ষ ভোটারদের মধ্যে ক্লিনটন-ট্রাম্প ৪২-৪১%, কিন্ত ফেভারেবল দু'জনেরই ৩৯%। দুই দলের সম্মেলনের আগে ও পরে এনবিসি, ওয়াল স্ট্রীট জার্নাল ও ম্যারিস্ট জরীপে দেখা যায়, ট্রাম্প নর্থ ক্যারোলিনা ৯ পয়েন্ট (আগে ৬); ভার্জিনিয়া ১৩ (আগে ৯); এবং কলোরাডোতে ১৪ (আগে ৮) পয়েন্টে পিছিয়ে পড়েছেন, ব্যতিক্রম ফ্লোরিডা। শনিবার সর্বশেষ এবিসি জরীপে হিলারী-ট্রাম্প ৫০-৪২; এনবিসি ৫০-৪১ এবং রয়টার জরীপে ৪২-৩৬% দেখানো হয়েছে।শুক্রবার ১৯শে আগস্ট ট্রাম্পের ক্যাম্পেইন ম্যানেজার পল ম্যানফোর্ট পদত্যাগ করেছেন। ট্রাম্প সদ্য তার প্রচার ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক রদবদল করেছেন এবং রক্ষণশীলদের সামনে এনেছেন। হিলারী ক্লিন্টন বলেছেন, যতই রদবদল হউক মূল ব্যক্তিটি তো বদলাচ্ছেনা। পরক্ষনেই তিনি আক্রমণাত্মক ভাষায় বলেন, 'ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হবার অনুপযুক্ত'। ট্রাম্প অবশ্য বদলায়নি। ফ্লোরিডাতে ১০ই আগস্ট বুধবার এক সমাবেশে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট ওবামাকে আইএস-এর প্রতিষ্টাতা এবং হিলারিকে কো-ফাউন্ডার বলে মন্তব্য করেন। হিলারি বলেছেন, যিনি এমন মন্তব্য করতে পারেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হবার যোগ্য নন। মঙ্গলবার ৯ই আগস্ট নর্থ ক্যারোলিনায় আর এক সমাবেশে ট্রাম্প সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধন নিয়ে কথা বলে পুনরায় প্রমান করেছেন তিনি বদলাননি। ওই সমাবেশে তিনি বলেন, ''হিলারী যদি বিচারক নিয়োগের ক্ষমতা পেয়ে যান, নাথিং ইউ ক্যান ডু, ফোক্স; অবশ্য দ্বিতীয় সংশোধনী আছে''। ডেমোক্রেটরা এটাকে হিলারীকে হত্যার প্রচ্ছন্ন হুমকী বলে শোরগোল তোলেন। হিলারী রিপাবলিকানদের তার প্রতি সমর্থন জানানোর আহবান জানান। রিপাব্লিকনারা অনেকে বিরক্ত হন।যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনীটি হচ্ছে, মার্কিন নাগরিকদের অস্ত্র রাখার অধিকার, যা পাশ হয় ১৫ডিসেম্বর ১৭৯১ এবং এই কারণেই 'গান কন্ট্রোল' আইন পাশে ডেমোক্রেটরা তেমন সুবিধা করতে পারছেন না। ট্রাম্প ডেমোক্রেট সম্মেলনের পরপরই ইরাক যুদ্ধে নিহত এক 'গোল্ডস্টার' মুসলিম দম্পত্তির সাথে বিতর্কে জড়িয়ে যান এবং ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন। গোল্ডস্টার ফ্যামিলী হচ্ছে সেইসব সম্মানিত সেনা পরিবার যাদের সন্তান যুদ্ধে নিহত হয়েছেন। ওই গোল্ডস্টার সেনা পরিবারের ছেলে ইরাকে নিহত হন। অন্যদিকে অরল্যান্ডো হত্যাকান্ডের কুখ্যাত খলনায়ক ওমর মতিনের পিতাকে হিলারীর ক্যাম্পেইনে দেখা গেলে তা নিয়েও হৈচৈ হয়। পিতা মতিন সিদ্দিকী বলেছেন, হিলারী ক্যাম্প থেকে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। হিলারী ক্যাম্প তা অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি অনাহুত। তবে এবারের নির্বাচনে মার্কিন নিরাপত্তা, জঙ্গীবাদ ও মুসলিম ইস্যু প্রাধান্য পাবে এবং ট্রাম্প এ অস্ত্র বারবার ব্যবহার করবেন। তিনি প্রমান করতে চাইবেন হিলারী নমনীয়। ঠিক যেমনি হিলারী বলেছেন, ট্রাম্পের হাতে পারমাণবিক অস্ত্রের চাবি বিপজ্জনক হবে।
এরআগে ট্রাম্প স্পীকার পল রায়ান ও সিনেটর জন ম্যাককেইনকে সমর্থন জানাতে অস্বীকৃতি জানালে দলের ভেতরে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন। যদিও ট্রাম্পের ভাইস-প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ৩রা আগস্ট স্পীকার পল রায়ানকে সমর্থন জানান। মিডিয়া এটাকে ভাঙ্গন হিসাবে দেখাতে চাইলেও ট্রাম বলেছেন, দল ঐক্যবদ্ধ। মাইক পেন্স বলেছেন, রায়ানকে সমর্থন জানানোর আগে তিনি ট্রাম্পের সাথে কথা বলেছেন এবং ট্রাম্প তাতে আপত্তি করেননি। পরে অবশ্য ট্রাম্প সবাইকেই সমর্থন দেন। এঘটনার পরপরই মেইনের রিপাবলিকান সিনেটর সুজান কলিন্স ওয়াশিংটন পোস্টকে ৮ আগস্ট বলেছেন, ট্রাম্পের মেজাজ, বিচার-বিবেচনা ও খামখেয়ালি আচরণের কারণে তিনি প্রেসিডেন্ট হবার অযোগ্য এবং তাকে তিনি ভোট দেবেন না। ট্রাম্পের জন্যে আরো দু:সংবাদ হচ্ছে যে, রিপাবলিকান দলীয় সমর্থনে থার্ড পার্টি প্রার্থী আবির্ভুত হয়েছেন। সোমবার ৮ই আগস্ট হাউস রিপাবলিকান কনফারেন্সের পলিসি ডিরেক্টর প্রধান, সাবেক সিআইএ এলুমনি ইভান ম্যাকমুলান নিজেকে ক্যান্ডিডেট হিসাবে ঘোষণা করেছেন। এবিসি নিউজকে তিনি বলেছেন, ট্রাম্প-হিলারীর ওপর আমেরিকানরা বিরক্ত। একই দিন নিউইয়র্ক টাইমস বলেছে, ৫০জন সিনিয়র রিপাবলিকান জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা এক বিবৃতিতে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট হবার জন্যে ট্রাম্পের অভিজ্ঞতা, মূল্যবোধ বা চারিত্রিক দৃঢ়তা কোনটাই নেই এবং তিনি হবেন একজন দায়িত্বজ্ঞানহীন বিপজ্জনক প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প অবশ্য ওদের 'অপাংতেয়' বলে মন্তব্য করেছেন।
পূর্ববর্তী আরো সংবাদ হচ্ছে, পহেলা আগস্ট সোমবার সম্মেলনের পরে সিএনএন প্রথম জরিপে হিলারি ৯ পয়েন্টে এগিয়ে যান। ৩রা আগস্ট ফক্স নিউজ জরীপে হিলারি ১০পয়েন্টে এগিয়ে যান ৪৯-৩৯। যদিও ৬২% বলেছে হিলারি অসৎ। বেন কারসন, যিনি প্রাইমারীতে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্ধি ছিলেন এবং পরে ট্রাম্পকে সমর্থন দেন, বিভিন্ন জরীপকে তিনি 'ননসেন্স' বলে মন্তব্য করেছেন। ৭ই আগস্ট ওয়াশিংটন পোস্ট-এবিসি নিউজ জরীপ বলেছে ট্রাম্প ৮-পয়েন্টে হিলারী থেকে পিছিয়ে আছেন। তবে একইদিন জুলিয়ানী বলেছেন, ওটা কিছু নয়, বুশ-ডুকাকিস লড়াইয়ে বুশ সেপ্টেম্বরে ১৬পয়েন্টে পিছিয়ে ছিলেন। প্রায় একই সময়ে বিবিধ জরীপে দেখা যায়, হিলারী ফ্লোরিডাতে ৪৪-৩৯; কলোরাডোতে ৪৬-৩২; ভার্জিনিয়াতে ৪৬-৩৩ এবং নর্থ ক্যারোলিনায় ৪৮-৩৮ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন। অন্যদিকে হাওয়াই'র ডেমোক্রেট কংগ্রেসওম্যান তুলসী গ্যাবার্ড বলেছেন, তিনি হিলারীকে সমর্থন দিতে প্রস্তুত নন। উল্লেখ্য যে, তুলসী প্রাইমারীতে স্যান্ডার্সকে মনোনীত প্রেসিডেন্ট হিসাবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। এদিকে ট্রাম্প গত সপ্তাহে মেইনে এক সমাবেশে মিনেসোটায় সোমালী ইমিগ্র্যান্টদের বিরুদ্ধে বলে আবারো সমালোচনার ঝড় তুলেছেন। সোমালীরা মুখ্যত: মুসলমান। ট্রাম্প ২০১৫ সালের ওয়াশিংটন টাইমসের উদৃতি দিয়ে বলেছেন, মিনেসোটা হচ্ছে আইসিস বা ইসলামী জঙ্গীদের নিয়োগ দেয়ার জন্যে উর্বর ক্ষেত্র। উল্লেখ্য, ২০১৪ থেকে ৯জন মুসলিম জঙ্গী ওই স্টেটে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করছেন। কংগ্রেসের একমাত্র মুসলিম সদস্য, মিনেসোটার ডেমোক্রেট কংগ্রেসম্যান কেইথ ইলিসন, ট্রাম্পের এই বক্তব্যকে 'ননসেন্স' বলে মন্তব্য করেছেন। ফক্স নিউজ হোস্ট সিন্ হ্যানেটি বলেছেন, ট্রাম্প হারলে এজন্যে রিপাবলিকান নেতারা দায়ী থাকবেন। হিলারী তার ২০১৬ ট্যাস্ক রিটার্ন প্রকাশ করেছেন এবং ট্রাম্পকে তার রিটার্ন প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
শিতাংশু গুহ, কলাম লেখক।
নিউইয়র্ক, ২১শে আগস্ট ২০১৬।
__._,_.___