Banner Advertiser

Wednesday, August 10, 2016

[mukto-mona] শোকাবহ আগস্ট: মার্কিন কূটনীতিকদের চোখে বঙ্গবন্ধু–১




http://www.prothom-alo.com/opinion/article/942802/আর্চার-ব্লাডের-কাছে-মুজিব-ছিলেন-বিপ্লবী


শোকাবহ আগস্ট: মার্কিন কূটনীতিকদের চোখে বঙ্গবন্ধু–১

আর্চার ব্লাডের কাছে মুজিব ছিলেন বিপ্লবী

মিজানুর রহমান খান | আপডেট: ০২:২৬, আগস্ট ১১, ২০১৬ | প্রিন্ট সংস্করণ

শোকাবহ আগস্টযুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাফেজখানা থেকে প্রথম আলোর সংগ্রহ করা নথিপত্রের ভিত্তিতে ধারাবাহিক প্রতিবেদন
ঢাকার সাবেক মার্কিন কনসাল জেনারেল আর্চার ব্লাড তাঁর একাত্তরের মার্চের গণহত্যার প্রতিবাদবিষয়ক টেলিগ্রামের জন্য বিখ্যাত। তিনি যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের অনুরাগী ছিলেন, তা-ও প্রচারিত। কিন্তু যে সত্য এখনো চাপা পড়া, সেটা হলো ব্লাড বাঙালি ও মুজিবকে ভালোবেসেছিলেন সেই ষাটের দশকেই। ১৯৬১ সালের ১২ জুলাই ব্লাড ওয়াশিংটনে বার্তা পাঠান আওয়ামী লীগের একজন রাজনীতিবিদের চতুর্থবারের মতো অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়া নিয়ে। আর সেই নেতা হলেন শেখ মুজিব। ব্লাডের এই নথিটি ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাফেজখানা থেকে প্রথম আলো সংগ্রহ করে।
ব্লাডের বর্ণনায়, ৫ জুলাই হাইকোর্ট মুজিবকে ফৌজদারি অসদাচরণের অভিযোগ থেকে নিষ্কৃতি দেন। ১৯৫৬-৫৭ সালে বছর দুয়েক সময় মুজিব ছিলেন প্রাদেশিক সরকারের বাণিজ্য, শ্রম ও শিল্পবিষয়ক মন্ত্রী। অভিযোগ আনা হয়েছিল, মন্ত্রী মুজিব কয়লা আমদানির চুক্তিনামা বেআইনিভাবে করেছিলেন। বিচারিক আদালতে তাঁর দুই বছরের জেল ও পাঁচ হাজার রুপি দণ্ড হলো। সেই রায় ঘোষিত হয়েছিল ১২ সেপ্টেম্বর ১৯৬০। হাইকোর্টে এর বিরুদ্ধে মুজিবের পক্ষে আপিল করলেন সোহরাওয়ার্দী। এ নিয়ে চারবার বর্তমান সরকার মুজিবের বিরুদ্ধে হেরে গেল। এর আগে ১২ অক্টোবর ১৯৫৮। জননিরাপত্তা আইনে তিনি আটক হন, ১৪ মাস অন্তরীণ থাকেন। দুর্নীতি দমন ব্যুরো জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগ এনেছিল, সরকার পরে সেই মামলা তুলে নেয়নি, বিচারও করেনি। অপর দুটি মামলায় পর্যাপ্ত সাক্ষী মেলেনি, তাই বিচারের আগেই তা পরিত্যক্ত হয়েছিল। ১৯৬০ সালের ৩১ মে আরেক ফৌজদারি মামলায় মুজিববিরোধী দুই সাক্ষী উল্টে যান। তাঁরা তাঁদের আগের লিখিত বিবৃতি থেকে মুখ ঘুরিয়ে সরকারের বৈরী হন। মুজিব অব্যাহতি পান। ব্লাড এভাবেই মুজিবের মামলা ও জেলজীবনের চিত্র আঁকেন। তারপর মন্তব্য করতে গিয়ে মুজিবকে বাইবেলের সেই বিখ্যাত ডেভিড ও গলিয়েথের কাহিনির ডেভিডের সঙ্গে তুলনা করেন। সৃষ্টিকর্তার প্রতি আস্থাশীল তরুণ ডেভিড সামরিক শক্তিতে ঢের বলীয়ান গলিয়েথকে পরাস্ত করেছিলেন।
আর কী আশ্চর্য, এ প্রসঙ্গে ব্লাড যেন বাংলাদেশের জন্মের এক দশক আগে অন্তর্যামী হিসেবে রেভল্যুশন বা বিপ্লব শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। সত্তরের নির্বাচনের পরে ব্লাড মুজিবের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছিলেন, আর ব্লাড তা লিখেও গেছেন ২০০২ সালে প্রকাশিত তাঁর 'দি ক্রুয়েল বার্থ অব বাংলাদেশে।' 'তিনি এমন একজন মানুষ যার বৈশিষ্ট্য নির্দিষ্ট করা কঠিন। অঝোর বৃষ্টির মধ্যেও তাঁর ভাষণ শুনতে লাখো জনতা মন্ত্রমুগ্ধ থাকেন। ক্ষমতার অভিপ্রায় ও সুবিধাবাদিতা সব রাজনীতিকের জন্য যেভাবে খাটে, মুজিবও তাঁর বাইরে ছিলেন না। আমি তাঁকে কখনও দেশীয় বস্ত্র ব্যতিরেকে পাশ্চত্যের পোশাক পরিহিত দেখিনি।' সত্তুরের অক্টোবরে ব্লাডকে বঙ্গবন্ধু তাঁর বিদেশনীতি প্রশ্নে বলেছিলেন,'আমি ভারতপন্থী নই। আমেরিকাপন্থী বা চীনপন্থী নই। আমি আমার জনগণপন্থী।' সত্তুরের নির্বাচনী প্রচারণার বিবরণ দিতে ব্লাড তারবার্তা পাঠান: 'বিরোধীরা যখন মুজিবকে ভারতীয় এজেন্ট, মার্কিন তহবিল গ্রহীতা হিসেবে চিহ্নিত করছেন, মুজিব তখন প্রফুল্লচিত্তে সেসব অভিযোগ অগ্রাহ্য করছেন।'
কিন্তু যা লক্ষণীয় তা হল, তখনো মুজিব বঙ্গবন্ধু কিংবা অবিসংবাদিত নেতার স্বীকৃতি পাওয়া থেকে বেশ দূরে। ব্লাডও একজন পলিটিক্যাল অফিসার হিসেবে জীবনে প্রথম ঢাকায় এসেছেন ১৯৬০ সালের জুনে। ব্লাড নিজেই লিখেছেন, ১৯৭০ সালের ২ জুনের আগে (১৯৬০-৬২ সালের পরে একাত্তরের ৩ মার্চে তিনি দ্বিতীয় বার ঢাকায় আসেন) মুজিবের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়নি। উল্লেখ্য যে, ব্লাড লিখেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে তাঁরই প্রেরিত তারবার্তাগুলোর ভিত্তিতে তিনি বই লিখেছেন। কিন্তু তাঁর বইয়ে ১২ জুলাই ১৯৬১ সালের উল্লিখিত তারবার্তাটির উল্লেখ নেই।
কে জানে অর্চার ব্লাড সেই ১৯৬১ সালে মুজিবকে হয়তো তাঁর অবচেতন মনে পূর্ববঙ্গের ভবিষ্যৎ অবিসম্বাদিত নেতা হিসেবে কল্পনা করেছিলেন। কারণ বাইবেলের ওই গল্পের মূল অর্থ হলো শয়তানরূপী গলিয়েথকে যুদ্ধে পরাস্ত করে সাধারণ মানুষের মুক্তির দূত ও ভবিষ্যৎ রাজা হিসেবে বিজয়ী ডেভিডের অভিষিক্ত হওয়া। নয় ফুট দীর্ঘ দৈত্য গলিয়েথকে তারই তরবারি দিয়ে তরুণ ডেভিড সম্মুখ লড়াইয়ে বধ করেছিলেন। নিল কাগজে ব্লাড তাঁর দুই পৃষ্ঠার ওই তারবার্তাটির (ক্রমিক নম্বর ১০) উপসংহারে লিখেছিলেন, ' শেখ মুজিবুর রহমানের সাফল্যজনক ডেভিড ও গলিয়েথ কর্ম তাঁকে জনপ্রিয়তার এমন একটি উচ্চতা দিয়েছিল, যা বিপ্লবের আগে তাঁর ছিল না। সরকার দুর্নীতির অভিযোগে রাজনীতিকদের দোষী সাব্যস্ত করার চেষ্টায় ব্যর্থ হলেও তাঁদের হয়রানির কথা বাঙ্গালীরা ভোলেনি।'
ব্লাডের ওই মুজিব মূল্যায়নের ২৭ বছর পরে ১৯৮৯ সালে মার্কিন কথ্য ইতিহাস প্রকল্পের হেনরি প্রেখটকে মুজিব সম্পর্কে বলেন: 'মার্কিন স্বার্থ বিবেচনায় নিয়েই আমরা বুঝতে পেরেছিলাম, একটি অবিভক্ত পাকিস্তানের কাঠামোর মধ্যে ভুট্টো ও মুজিব একত্রে কাজ করতে সক্ষম হবেন না। তাঁরা দুটি পৃথক পথে যাবেন।' ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি স্থগিত করে কালক্ষেপণ থেকে ভুট্টো কী পাওয়ার আশা করেছিলেন? ব্লাডের উত্তর: 'তিনি তাঁর ছয় দফা থেকে তাঁকে সরাতে এবং হয়তো তাঁর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথ রুদ্ধ করতে।
ব্লাড কনসাল জেনারেল হিসেবে সত্তুরের ৩ মার্চে এসে পরের বছরে ৫ জুন ঢাকা ত্যাগ করেন। এই প্রায় ১৫ মাসে মুজিবের সঙ্গে তিনি অনেকবার সাক্ষাৎ করেন। কথ্য ইতিহাস প্রকল্পকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ব্লাড বলেন, 'সত্তরের নির্বাচনের আগে আমি মুজিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। তিনি আমাকে বলেন, ৩০০ আসনের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে পূর্ব পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ করা ১৬৯ আসনের মধ্যে দুটি বাদে সবগুলো আমি পাব। আমি তা ওয়াশিংটনকে জানালাম, কিন্তু আমার তা বিশ্বাস হয়নি। ভেবেছিলাম এটা অতিরঞ্জন। কিন্তু তা-ই ঘটল।' ব্লাড তাঁর বইয়ে লিখেছেন, তিনি ভেবেছিলেন নির্বাচনে গেলে মুজিব ৬০ ভাগ ও ভাসানী প্রায় ১৫ ভাগ আসন পাবেন। আরো পরে ব্লাডের মন্তব্য: 'ভাসানি অনেকের কাছে শ্রদ্ধাভাজন কিন্তু মুজিবের কাছে তিনি পুরোপুরি ম্লান হয়ে গেছেন।'
২৫ মার্চের আগে বাঙালিরা সহিংসতায় জড়িয়েছিল, তা তিনি নাকচ করেন। তাঁর জবানবন্দি: 'খুবই সীমিত সহিংসতা ঘটেছিল। এক মার্কিন নারী সেক্রেটারি আমাকে অভিযোগ করেন যে কিছু বাঙালি তাঁর সঙ্গে উপযাচক হয়ে আলাপ করতে চেয়েছিল। আমি আওয়ামী লীগকে তা অবহিত করলাম। তারা আশ্বাস দিল যে সতর্ক থাকবে। এরপর আর কিছুই ঘটেনি। ৫ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকল। এ সময় আমি মুজিবের সঙ্গে নয়, তাঁর ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে গেছি। ২৫ মার্চের রাতে লানা টার্নার ও স্পেন্সার ট্রেসি অভিনীত ক্যাস টিম্বারলেন ছবিটি দেখতে কয়েকজন বাঙালি ও দূতাবাসকর্মীকে নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। ছবিটি শেষ হয়ে এসেছিল, এর মধ্যে অফিসে অবস্থানরত আমার সিআইএ সহকর্মীর কাছ থেকে ফোন পাই। তিনি জানান, পথে পথে অবরোধ গড়ে উঠছে। কিছু বাঙালি গাছ কেটে রাস্তায় ফেলেছে। এবং সেনাবাহিনী অভিযানে বের হয়ে গেছে।'

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাফেজখানা থেকে প্রথম আলোর সংগ্রহ করা নথিপত্রের ভিত্তিতে ধারাবাহিক প্রতিবেদন

আর্চার ব্লাডের ১৯৬১ সালের তারবার্তা l ছবি: প্রথম আলোমুজিবকে দায়ী করে বক্তব্য রাখতে তিনি সর্বদা সতর্ক। যদিও এই সাক্ষাৎকারে তেমন একটা চেষ্টা ছিল। যেমন তাঁকে ওই বিবরণের পরে প্রশ্ন করা হয়েছে: 'তাহলে এসব (ব্যারিকেড) ঘটনাই সহিংসতাকে উসকে দিল? কী কারণে ক্র্যাকডাউন ঘটল? ব্লাডের উত্তর: 'আচ্ছা, যা ঘটল তা হলো ইয়াহিয়ার সঙ্গে ভুট্টোও ঢাকায় এলেন। তাঁদের লক্ষ্য ছিল মুজিবের সঙ্গে আলোচনা করে যদি একটা রফা করা সম্ভব হয়।' ব্লাড অকপটে স্বীকার করেন যে ওই সময়ে আওয়ামী লীগ ছাড়া পাকিস্তানিদের কারও সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ ছিল না। কেন ছিল না? ব্লাড: হু। কেন ছিল না? হেনরি প্রেখট আবারও একই প্রশ্ন করলে ব্লাড বলেন:
'কারণ জেনারেল কমান্ডিং অফিসার, গভর্নরসহ যাঁদের আমরা জানতাম, তাঁদের অধিকাংশকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। পরে জেনেছি, তাঁরা সামরিক হামলার বিরোধিতা করেছিলেন বলেই ওই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। ভুট্টো ও মুজিব থেকে তাঁদের বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমরা তখনো যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিলাম। আর তাঁদের কাছ থেকে আমরা ধারণা পাচ্ছিলাম যে পরিস্থিতিটা ছিল একটি রোলার কোস্টারের মতো ব্যাপার। এই আশাবাদ, এই নৈরাশ্য আবার আশাবাদ—এ রকম একটি মুহূর্ত। এরপর হঠাৎ অপরাহ্নে আলোচনা ভেঙে দিয়ে ইয়াহিয়া ও ভুট্টো ঢাকা ছাড়লেন। আর সেই রাতে নেমে এল নিষ্ঠুরতম ক্র্যাকডাউন।'
এই পর্যায়ে ব্লাডের মুখে কথা প্রায় পুরে দেওয়ার চেষ্টা করেন সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী। 'তাহলে তার আগে নিশ্চয় উল্লেখযোগ্য সহিংসতা (বাঙালিদের দ্বারা) ছিল?' ব্লাডের উত্তর: না। তবে পরে তেমনটাই দাবি করা হয়েছিল।.... ২৫ মার্চের পরে ৩৬ ঘণ্টা আমরা বিচ্ছিন্ন ছিলাম। আমাদের টেলিফোন লাইন কেটে দিয়েছিল। আর সে জন্য আওয়ামী লীগকে তারা দায়ী করেছিল। ব্লাড এভাবে আগাগোড়া মুজিব ও বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেছেন। গ্রেপ্তার সম্পর্কে তাঁর সাদামাটা উত্তর: 'মুজিবের মতো যে নেতাদের তারা পেয়েছে, তাঁদেরকেই গ্রেপ্তার করেছে। অধিকাংশই পালিয়ে যান।'
তাঁর কথায়, 'একাত্তরের পরে ঢাকায় মুজিবের হিরন্ময় প্রত্যাবর্তন ঘটে। আমি যে সমস্যায় পড়েছিলাম, আমার উত্তরসূরি কনসাল জেনারেলকেও তা মোকাবিলা করতে হলো। তাঁর প্রতি নির্দেশ (যা হেনরি কিসিঞ্জার দিয়েছিলেন) ছিল, তিনি যেন মুজিবকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দরে না যান। তিনি তা-ই করেছিলেন। তাঁকে জবরদস্তি দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছিল।'
ইতিহাস মূল্যায়ন করবে যে প্রেসিডেন্ট নিক্সন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিসিঞ্জারের নীতির বিরুদ্ধাচরণ করে আর্চার ব্লাডও বাঙালির জীবনে একজন ডেভিড হয়ে উঠেছিলেন, যা একদা তিনি মুজিবকে উদ্দেশ করে লিখেছিলেন। তিনি বাঙালি সমাজ, তার শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে ভালোবেসেছিলেন। তিনি বাঙালিকে চিনেছিলেন। ১৯৬২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারিতে তিনি লিখেছিলেন, 'ভাষা আন্দোলন ছাড়া বাঙালিরা অতীতে রাজনৈতিক বিষয়ের চেয়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের প্রতি বেশি আগ্রহ দেখিয়েছে।' আর ব্লাড বলেছেন, মুজিবই ডেভিড। কিসিঞ্জারের ব্লাডবিরোধিতা ও মুজিববিরোধিতার মধ্যে কোনো মিল ছিল কি?
প্রশ্নকর্তার শেষ প্রশ্ন ছিল, কিসিঞ্জার পূর্ব পাকিস্তানে কীভাবে আটকে গেলেন? এ প্রশ্নের আগেই ব্লাড পরিষ্কার করেন যে কিসিঞ্জার কিসে অসন্তুষ্ট আর কিসে সন্তুস্ট থাকেন সে বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর সজাগ থাকত। কিসিঞ্জার সুনজরে দেখবেন না বলেই পররাষ্ট্র দপ্তরের কেউ তাঁকে রাষ্ট্রদূত করার প্রস্তুাব করেনি।
ব্লাডের কাছে সাইপ্রাস প্রসঙ্গ জানতে চাওয়া হয়নি। কিন্তু কিসিঞ্জার কি করে পূর্ব পাকিস্তান নীতি ঠিক করলেন, সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ব্লাড সাইপ্রাসকে টেনে আনেন। মুজিবকে বাদ দিয়ে সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট ম্যাকরিয়সের নাম নেন। ব্লাড কি কোনো ইঙ্গিত রেখে গেছেন?
ব্লাড বলেন, 'সাইপ্রাস আরও ভালো উদাহরণ। মার্কিন বিদেশ নীতির প্রান্তিক স্বার্থের সীমায় ছিল পূর্ব পাকিস্তান ও সাইপ্রাস। অথচ উভয় স্থানের দৃশ্যপটে কিসিঞ্জার সবচেয়ে নিকৃষ্টভাবে অবতীর্ণ হন। অতীতে তিনি এর কোনো এলাকাতেই নিজেকে সেভাবে সম্পৃক্ত রাখেননি। হঠাৎ সংকটের সৃষ্টি হল আর কিসিঞ্জার সাহেব তাতে নিজেকে জড়ালেন। কিসিঞ্জার সবকিছুকেই সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে একটি ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতার জায়গা থেকে দেখতে পছন্দ করতেন। সাইপ্রাস ও পাকিস্তানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক স্বার্থের বিষয় ছিল কিন্তু কোনোটিতেই প্রকৃত অর্থে বড় কোনো ভূরাজনৈতিক উদ্বেগ ছিল না।'
উল্লেখ্য, ১৯৭৪ সালে গ্রিক সামরিক জান্তার নেতৃত্বে পরিচালিত এক অভ্যুত্থানে ম্যাকিরিয়স সরকারের উৎখাত ঘটে। ম্যাকিরয়স অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান।
আর্চার ব্লাড লিখেছেন, ''সাইপ্রাসে সামরিক জান্তার দ্বারা প্রেসিডেন্ট ম্যাকিরিয়সকে উৎখাতের ঘটনায় আমাদের নিন্দা করা উচিত ছিল। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সবাই সেটা চেয়েছিলেন। কিন্তু কিসিঞ্জার সেটা হতে দেননি। তিনি খেলতে শুরু করেছিলেন। কারণ তিনি ম্যাকিরিয়সকে পছন্দ করতেন না।''
ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অনেকেরই ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে কিসিঞ্জার বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের বিরোধীতা করেন আর এটা সুবিদিত যে, তিনি শেখ মুজিবকেও পছন্দ করতেন না।

http://www.prothom-alo.com/opinion/article/942802/আর্চার-ব্লাডের-কাছে-মুজিব-ছিলেন-বিপ্লব

আগস্ট ১১, ২০১৬ | প্রিন্ট সংস্করণ


এনেছিলে সাথে করে মৃত্যুহীন প্রাণ মরণে তাহাই তুমি করে গেলে দান

মৃত্যুহীন মুজিব

লেখক : কলামিস্ট / সম্পাদনা : জব্বার হোসেন

http://amaderorthoneeti.net/new/2016/08/04/14047/#.V6Nh7tQrJrE

  

​ 





__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___