Banner Advertiser

Wednesday, August 17, 2016

[mukto-mona] মুক্তচিন্তা : বিএনপির রাজনীতি কুয়াশামুক্ত হোক



  • মুক্তচিন্তা

বিএনপির রাজনীতি কুয়াশামুক্ত হোক

বুধবার, ১৭ আগস্ট ২০১৬

জন্মলগ্নে দলটির নাম ছিল 'বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল'। কাজেই দলটির সংক্ষিপ্ত পরিচয় হওয়া উচিত ছিল 'বাজাদ'। কিন্তু তা না হয়ে দলটি পরিচিত ইংরেজি অনুবাদ অনুযায়ী। যারা ইংরেজি জানে না তাদের কাছেও দলটি বিএনপি নামে পরিচিত। সে যাই হোক অবশেষে দলটির কার্যকরী কমিটির পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। নানা কথা শোনা গেছে পত্রপত্রিকার মাধ্যমে। আমরা সেসব কথায় যাব না। আমরা আশা করব, কমিটির সদস্যরা কাজ করবেন দলের জন্য, জাতির মঙ্গলের জন্য। কাউকে সন্তুষ্ট করা তাদের লক্ষ্য হবে না- এটাই সবাই আশা করবে। কুয়াশামুক্ত হোক বিএনপির রাজনীতি দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রচর্চার মাধ্যমে।

দেশে-বিদেশে সেনাবাহিনী কর্তৃক দেশের শাসনভার গ্রহণের ইতিহাস যদি আমরা শুনি, এই বিষয়ে বইপত্র যদি পড়ি তবে দেখব কতক বিষয় সব দেশে একই রকম। নিয়মতান্ত্রিক সরকারকে জনগণের কাছে অপ্রিয় করবার জন্য যেসব ষড়যন্ত্র করা হয় এবং যেসব কাজ করা হয় সে সবের আলোচনা আমরা করব না। আমরা শুধু সংক্ষেপে উল্লেখ করব ক্ষমতা দখলের পর তাদের আচরণের চরিত্র। প্রথমেই তারা ঢাকঢোল পিটিয়ে বলে এবং বলতে থাকে যে, ক্ষমতা দখলের ইচ্ছা তাদের ছিল না। অনিচ্ছা সত্ত্বেও ক্ষমতা তাদের নিতে হয়েছে। তবে ক্ষমতা তারা খুব শিগগিরই ফেরত দেবে। প্রচারমাধ্যমে এসব কথা শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা হয়ে যায়। এর সঙ্গে চলতে থাকে গণতান্ত্রিক সরকারের নামে কুৎসা রটনা। সেনা সরকার দেশের কত ভালো করছে সেটা বলা শুরু হয় শিগগিরই। এর সঙ্গে শুরু হয় সেনাকর্তার গুণাবলির বিস্তারিত বর্ণনা। অন্তরালে চলতে থাকে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করবার প্রস্তুতি। সরকারি টাকা খরচ হয় এ জন্য। সরকারি কর্মচারীদের ব্যবহার করা হয় বিশেষ করে গোয়েন্দা বিভাগগুলোকে। তারপর 'হ্যাঁ / না' নির্বাচন। তারপর দল গঠন। দলে যোগ দেয় অতীতের ব্যর্থ রাজনীতিবিদরা, আমলারা এবং আর সব অপরিচিত রহস্যজনক ব্যক্তিরা। 'দল ছুট, 'পেশা ছুট' ব্যক্তিরা। তারপর তথাকথিত নির্বাচন। সবটা সময় ধরে সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরুদ্ধ। জনপ্রিয় রাজনীতিবিদরা কারার অন্তরালে।

আমাদের ইতিহাসের দিকে একটু তাকানো যাক। মুসলমানদের আগমনের আগে বৌদ্ধ আর হিন্দুদের মধ্যে দ্ব›দ্ব ছিল। মুসলমানদের আসার পর বৌদ্ধদের ভূমিকা খুব একটা দেখা যায় না। হিন্দু আর মুসলমানরা একসঙ্গে বাস করেছে শান্তির সঙ্গে। ইংরেজ আমলে দৃশ্যটা পালটে যায়। মুসলমানরা ইংরেজদের সঙ্গে সম্পূর্ণ অসহযোগের মনোভাব গ্রহণ করে। হিন্দুরা পাশ্চাত্য শিক্ষা গ্রহণ করে। এর ফলে মুসলমানরা পিছিয়ে পড়ে। এসব কারণে মুসলমানরা আলাদা বাসভূমি দাবি করে। পাকিস্তানের জন্ম হয় সাতচল্লিশে। কিন্তু স্বাধীনতার পরে পশ্চিম পাকিস্তানিরা উপনিবেশ হিসেবে মনে করতে থাকে পূর্বপাকিস্তানকে। দেখা যায় পূর্ব পাকিস্তান জয় না করেও পূর্ব পাকিস্তানকে পরাধীন জাতিতে পরিণত করে পশ্চিম পাকিস্তানিরা। চাকরি-বাকরি, ব্যবসায়-বাণিজ্য এবং অন্য সব কিছুতে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে পর্বতসম বিশাল পার্থক্য গড়ে ওঠে। পাকিস্তান গণতান্ত্রিক দেশ হওয়া সত্ত্বেও সেখানে কোনো দিন নির্বাচন হয়নি। প্রথম দিকে আমলা ও সেনাবাহিনী মিলিতভাবে ছদ্মবেশে দেশ শাসন করে। ১৯৫৮ সালে আইউব খানের নেতৃত্বে তারা খোলাখুলি দেশের কর্তৃত্ব গ্রহণ করে। গায়ের জোরে দেশ চালাতে থাকে তারা। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বিরাট পার্থক্য গড়ে ওঠে। অবশেষে গণআন্দোলনের কাছে নতি স্বীকার করতে হয় তাদের। সত্তর সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সেনাবাহিনী ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকার করে। এই অবস্থায় স্বাধীনতা ঘোষণা করা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা ছিল না পূর্ব পাকিস্তানের।

কিন্তু একটা সশস্ত্র আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত ছিল না পূর্ব পাকিস্তান। এই সুযোগ নিয়ে পাকিস্তানিরা ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করে। এক কোটি মানুষ প্রতিবেশী ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করে। মুক্তিবাহিনী গড়ে ওঠে। বাংলাদেশ স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেয়। স্বাধীনতাযুদ্ধের এই পটভূমি স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে কিছু সমস্যার সৃষ্টি করে। এসব সমস্যার সুযোগ নিয়ে অগণতান্ত্রিক শক্তি ভয়াবহ রক্তপাতের মাধ্যমে ক্ষমতা গ্রহণ করে ১৯৭৫-এ। এই ক্ষমতা দখলকারীদের দিকে তাকানো যাক।

এদের অনেকে ছিল প্রশাসনের অংশ। কিন্তু তারা দোষারোপ করল জাতির জনককে। যে ভারত স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল সেই ভারতকে তারা নানাভাবে দোষারোপ করল। একটা সাম্প্রদায়িক চিত্র দাঁড় করানো হলো। মনে হলো যেন পাকিস্তানি আবহাওয়া ফিরে এলো। পৃথিবীব্যাপী সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের একই কায়দা, একই স্টাইল। গণতান্ত্রিক সরকারের নিন্দা করা হলো। সেনানায়কের সততার প্রশংসা। ছেঁড়া গেঞ্জি আর ভাঙা বাক্সের কথা। একজন লেখক উল্লেখ করলেন প্যারিস থেকে আনা দামি বুটজোড়ার কথা এবং আমেরিকা থেকে আনা কালো চশমার কথা। দল গঠনের একই কায়দা। সরকারি অর্থ আর সরকারি কর্মচারী। গোয়েন্দা বাহিনীর ব্যবহার। 'হ্যাঁ / না' নির্বাচনে শতকরা ৯৮ ভাগ ভোট পাওয়া। দল গঠন। সেই দলছুট আর পেশাছুটদের কাহিনী। ১৯৭১-এর যুদ্ধের স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি পুনর্বহাল হলো। বিএনপি সরকারে স্থান পেল জামায়াত নেতারা। বিএনপি গঠিত হয়েছিল সেনানায়কের প্রয়োজনে। তারপর সেই দল তার পরিবারের কাজে লেগেছে। আপসহীন নেত্রী হিসেবে পরিচিত দলনেত্রী কিন্তু পত্রপত্রিকায় বলা হয়েছে যে, তিনি এরশাদের কাছ থেকে একটি বিশাল আকারের বাড়ি নিয়েছিলেন। জিয়া হত্যার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করা হয়নি।

দলে আছে বামপন্থীরা, আছে ডানপন্থীরা এবং আছে অন্যান্য পন্থীরা। কী তাদের একত্রে রেখেছে কে জানে! দুই বারের আন্দোলনে অর্ধশতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। গাছ কাটা হয়েছে অসংখ্য। রেললাইন উপড়ানো হয়েছে। অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দেশের। পত্রপত্রিকায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, নেতাদের কোথাও দেখা যায়নি আন্দোলনের সময়। ধ্বংসাত্মক কাজের নির্দেশ দিয়েছে কারা? কারা সে নির্দেশ পালন করেছে? এসব কি গণতান্ত্রিক পদ্ধতি? ভারতবিরোধী প্রচার করে বিএনপি কিন্তু মোদির সঙ্গ লাভে উৎসাহ দেখা গেছে। রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার করা হয় কিন্তু অনেক নেতার জীবনযাপনে ধর্ম দেখা যায় না। সব কিছু যোগ দিলে দেখা যায় যে, দলটির রাজনীতি কুয়াশাচ্ছন্ন। এবারের বিশাল আকারের কমিটি দলটির রাজনীতি কুয়াশামুক্ত করবে এই আশা করি।

ওয়াহিদ নবী : চিকিৎসক, লেখক। রয়্যাল কলেজ অফ সাইকিয়াট্রিস্টের ফেলো।

http://www.bhorerkagoj.net/print-edition/2016/08/17/102689.php

ওয়াহিদ নবী

বিএনপির রাজনীতি কুয়াশামুক্ত হোক

বুধবার, ১৭ আগস্ট ২০১৬




__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___