Banner Advertiser

Thursday, September 15, 2016

[mukto-mona] Please read



http://www.bhorerkagoj.net/print-edition/2016/09/16/106804.php

'হিন্দুরা উত্তরাধিকার আইন চায় বলে মনে হয়না'

ঈদ এলো, চলেও গেলো। তবে ঈদের আনন্দ বহমান। শুভেচ্ছা বিনিময় চলছে। ঈদ একদিন। উৎসব অনেকদিন। এবার ঈদে ৭দিন ছুটি। সমানতালে আনন্দ বইছে। সামনের মাসের শুরুতে দুর্গাপূজা। সবাইকে শারদ শুভেচ্ছা। পূজা ৫দিন। আনন্দ বেশ কিছুকাল। তবে সরকারি ছুটি মাত্র ১দিন। এবার ঈদ বা পূজা সন্ত্রাস বিরোধী তৎপরতার মধ্যেই অতিবাহিত হয়েছে এবং হবে। আগের ঈদে শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলা হয়েছিলো। তাই এবার পুলিশ তৎপর ছিলো। দুর্গাপূজায় পাহাড়া আগেও ছিলো, এবারো থাকবে। দেশে যে দুর্দিন যাচ্ছে, সামনে হয়তো সকল ধর্মীয় অনুষ্টানে পুলিশ প্রহরা লাগবে। ঈদের আগখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, হিন্দুদের জন্যে উত্তরাধিকার আইন হবে। এমনিতে ঈদে কিছু ছোটখাট অপরাধী মুক্তি পায়; সরকার বস্ত্র-চিনি ইত্যাদি বিতরণ করেন, এবার ১০টাকা কেজি চাল দিয়েছেন; ধারণা করি 'উত্তরাধিকার আইন' হিন্দুদের জন্যে 'ঈদ-বোনাস'। হিন্দুরা উত্তরাধিকার আইন চায় কিনা সেটা ভিন্ন প্রশ্ন।  

ঠিক মনে নাই, হয়তো দুই দশক আগে কেউ একজন একটি চমৎকার নিবন্ধ লিখেছিলেন, 'হিন্দুদের রামও মারছে, রাবণও মারছে' । কোথায় লিখেছিলেন, কি লিখেছিলেন মনে নেই, তবে সম্ভবত: তিনি  রাম হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন আওয়ামী লীগকে এবং রাবন হচ্ছে বিএনপি। অধ্যাপক আবুল বারাকাতের উদৃতি দিয়ে তিনি বলেছিলেন, হিন্দু সম্পত্তি দখলের ব্যাপারে রাম প্রতিপক্ষ রাবন থেকে অনেক এগিয়ে। এই দুই দশকের মধ্যে আওয়ামী লীগ বেশিরভাগ সময় ক্ষমতাসীন। হয়তো তাই, হিন্দু সম্পত্তি দখলের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ এখন শুধু আর এগিয়ে নয়, চ্যাম্পিয়ান। সদ্য সমাপ্ত সামার অলিম্পিকের জন্যে ব্রাজিলের রিও ডি জেনোরিও শহরটিকে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে বহু মানুষকে গৃহহারা করা হয়েছে।আইরিন নামক একটি থিঙ্কট্যাঙ্ক বলেছে, 'গৃহ থেকে উচ্ছেদ' যদি একটি অলিম্পিক ইভেন্ট হতো তাহলে নিশ্চিত ব্রাজিল সোনা পেতো। 

আইরিন এও বলেছে, কর্তৃপক্ষ সবাইকে ক্ষতিপূরণ এবং বাসস্থান দিয়েছেনা, কেউ কেউ এতে যথেষ্ট লাভবান হয়েছেন। আমার বিশ্বাস, আইরিন খবর রাখেনা, রাখলে সংখ্যালঘুদের বাস্তুচ্যুত করার জন্যে ব্রাজিল নয়, সোনা পেতো বাংলাদেশ।সেই কবে ১৯৪৭-এ শুরু হয়েছে হিন্দু'র সম্পত্তি দখল, আজো অবিরাম তা চলছে। কিছুদিন আগে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এসেছিলেন নিউইয়র্কে, তাকে কেউ একজন হিন্দু নির্যাতনের কথা বললে তিনি একটু অবাক হন! তিনি জানেন না বা খবর রাখেন না।  ২০০১-এ ভোলায় হিন্দুদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন হয়েছে। মন্ত্রী তোফায়েল আহমদ ক্ষমতায় থেকেও ওই নির্যাতিতদের জন্যে কি করেছেন তা কেউ জানেনা। এই দুই মন্ত্রীর সাথে হিন্দুদের সম্পর্ক ভালো। কিন্তু তারাও হিন্দু নির্যাতন নিয়ে মুখ খুলেন না। এই যখন তাদের অবস্থা, তখন হাইব্রীড মন্ত্রী-এমপি-নেতারা গনিমতের মাল হিন্দুর বাড়িঘর-সম্পত্তি দখল করবেন,তাতে আর আশ্চর্য কি? 

এখন দেখা যাক, হিন্দুরা আসলেই উত্তরাধিকার আইনটি চায় কিনা বা হিন্দু সম্পত্তি দখলের সাথে উত্তরাধিকার আইনের সম্পর্কটা কি ? সম্পর্কের কথা পরে আসছি; তবে হিন্দুরা উত্তরাধিকার আইনটি চায়না তা একবাক্যে বলা যায়। কারো কারো মতে এটা পার্বত্য শান্তি চুক্তির মত একটি পদক্ষেপ, অর্থাৎ, চুক্তি আছে, শান্তি নাই। সন্তু লারমার ভাষায়, পার্বত্য শান্তি চুক্তি করে পাহাড়ীদের থেকে অস্ত্র কেড়ে নেয়া হয়েছে, দেয়া হয়নি কিছু! হিন্দুরা ভয় পাচ্ছে, উত্তরাধিকার আইন হলে তাদের 'রাজকন্যা ও রাজত্ব' দু'টিই যাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কে এই মন্ত্রণা দিয়েছেন জানিনা, তবে এটা সু-বুদ্ধি নয়। প্রধানমন্ত্রী যদি নির্বাচনকে সামনে রেখে হিন্দুদের কিছু দিতেই চান,তবে পৃথক মন্ত্রণালয় দিন; পূর্ণ ও যোগ্য মন্ত্রী দিন; হেট্ ক্রাইম বিল পাশ করুন; রমনা কালীবাড়ি ফিরিয়ে দিন; ঢাকেশ্বরীকে জাতীয় মন্দির ঘোষণা করুন; সংখ্যালঘু নির্যাতন বিচারে স্পেশাল ট্রাইবুনাল গঠন করুন; ইত্যাদি। হিন্দুদের হাজারো সমস্যা আছে, সেগুলো সমাধান করুন; দয়া করে উত্তরাধিকার আইনে হাত দিয়ে সমস্যা বাড়াবেন না! 

তাহলে কি হিন্দু পিতামাতা কন্যা সন্তানকে সম্পত্তির ওপর অধিকার দিয়ে চায়না? নিশ্চয় চায় তবে একটা 'কিন্তু' আছে। একটি ঘটনা বলি: বিচারপতি দেবেশ ভট্টাচার্য্য ছিলেন অত্যন্ত উদার। আশির দশকে এরশাদের আমলেও হিন্দু নারীদের বাপের সম্পত্তির অধিকার দেযার ওপর বেশ কথাবার্তা হচ্ছিলো। দেবেশবাবু এবং আমরা সবাই একবাক্যে এর পক্ষে ছিলাম। কিন্তু একটু সমস্যা ছিলো। হিন্দুরা একসাথে রাজত্ব ও রাজকন্যা হারাতে তখনো রাজি ছিলোনা, এখনো রাজি নয়। বছর দুই-তিন আগে রাখিদাশ পুরকায়স্থ নিউইয়র্ক এসেছিলেন, তিনিও একই ইস্যু নিয়ে কথা বলেন। সবাই রাজি, কিন্তু একটু সমস্যা আছে। রাখীদিকে যা বোঝানো হয়েছে, আশির দশকে দেবেশবাবুকে একই কথা বোঝানো হয়েছিলো এবং তিনি তা মেনে নিয়েছিলেন। রাখিদিও ইতস্তত: মানতে বাধ্য হয়েছিলেন। 

কারণ সমস্যাটি প্রকট। না মেনে উপায় নেই। বাংলাদেশে প্রতিদিন হিন্দু কমছে; এর একটি অন্যতম কারণ হিন্দু নারীর ওপর আক্রমণ। তথাকথিত প্রগতিশীলরা যতই এটাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলুন না কেন; বিষয়টি মোটেই তা নয়। কোন গ্রামে একটি মেয়ে অপহৃত বা ধর্ষিতা হলে, বা এমনকি স্বেচ্ছায় ঘর ছাড়লে (সংখ্যা প্রায় শূন্যের কোটায়), তখন ওই পরিবারটি এবং ওই গ্রামের হিন্দুরা লজ্জা ও ভয়ে এলাকা ছাড়ে। দেশান্তরী হয়। এটাই বাস্তবতা। ধর্ষণকে হিন্দু খেদানোর একটি অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসন প্রায়শ: অত্যাচারীর পক্ষে থাকে। বাংলাদেশে এমনিতে মেয়েদের নিরাপত্তা কম; হিন্দু রমণীর নিরাপত্তা আরো কম। মিডিয়ায় প্রতিনিয়ত অপহরণ, ধর্ষণ ও জোরকরে বিয়ে এবং ধর্মানন্তকরনের সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। গ্রামে-গঞ্জে এটা মহামারী। হিন্দুরা মেয়ে হারাচ্ছে। সরকার উদাসীন। প্রশাসন বিপক্ষে। 

এরপর হিন্দু মেয়েদের বাপের সম্পত্তির ওপর অধিকার দিলে কন্যার সাথে সাথে সম্পত্তিও যাবে। সরকার হিন্দু রমণীকে সম্পত্তির ওপর কত শতাংশ অধিকার দেবেন এবং কোন যুক্তিতে? এমনিতে দেশে হিন্দুর সম্পত্তি অবৈধ দখলের মহোৎসব চলছে। আর কন্যার বদৌলতে একাংশের বৈধ দখল পেলে পুরো সম্পত্তি হিন্দুর  হাতছাড়া  হতে বেশি সময় লাগবেনা। স্পষ্ট কথা, হিন্দুরা উত্তরাধিকার আইন চায়না; কারণ তারা বিশ্বাস করেনা যে, এটা তাদের কল্যাণের জন্যে।তবে হিন্দু মেয়েদের বাপের সম্পত্তির ওপর অধিকার দেয়া যেতে পারে, কিন্তু শর্ত থাকবে যে, অন্যধর্মে বিয়ে হলে বা ধর্মান্তরিত হলে ওই মেয়ে বাপের সম্পত্তির ওপর অধিকার হারাবে। অন্যথায় উত্তরাধিকার আইন হলে গ্রামকে গ্রাম উজাড় হয়ে যাবে; দেশে হিন্দু'র সংখ্যা পাকিস্তানের মত শূন্যতে চলে আসবে এবং বাংলাদেশ তখন 'মিনি পাকিস্তান' হবে। 

এমনিতে বাংলাদেশ পাকিস্তানের পথেই হাটছে; উত্তরাধিকার আইন সেই 'হাঁটা'-কে 'জগিং'-এ রূপান্তরিত করবে। শত্রূ সম্পত্তি আইন যেমন অর্ধ-শতাব্দী ধরে হিন্দুর জন্যে অভিশাপ হয়ে আছে, এবং বাংলাদেশকে হিন্দু-শূন্য করতে ব্যাপক অবদান রাখছে; উত্তরাধিকার আইনও তাই করবে। রাষ্ট্র কি চায় বাংলাদেশ হিন্দুশূন্য হউক? আরো কথা আছে, সরকার যেমন মুসলিম পারিবারিক আইনে হাত দেননা; একই কারণে হিন্দু পারিবারিক আইনে হস্তক্ষেপের্ প্রয়োজন নাই। সরকার চাইলে অনেক কিছুই করতে পারেন, কিন্তু সরকার কি পারবেন পুত্র-কন্যাকে সম্পত্তির ওপর সমঅধিকার দিয়ে সবার জন্যে ইউনিফর্ম সিভিল কোড চালু করতে? পারবেন না। হিন্দুরা উত্তরাধিকার আইন চায়না; দু'চারজন শহুরে হিন্দু যারা এর পক্ষে, তারা মূলত: বাম ঘরানার লোক। সংখ্যাগুরুর মধ্যে যাদের অন্তর হিন্দু'র জন্যে কাঁদে তারা সংখ্যায় নগন্য। এই দুই পক্ষ এককাট্টা হয়ে ইউনিফর্ম সিভিল কোডের জন্যে সংগ্রাম শুরু করুন না? তা তারা করবেন না, কারণ ওখানেও 'কিন্তু' আছে!  

শিতাংশু গুহ, কলাম লেখক।
নিউইয়র্ক। ১৩ই সেপ্টেম্বর। 



--
Sitanggshu Guha


__._,_.___

Posted by: Sitangshu Guha <guhasb@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___