Banner Advertiser

Tuesday, September 6, 2016

[mukto-mona] Re: {PFC-Friends} কারা বাংলাকে দ্বিখণ্ডিত করলো এবং কার স্বার্থে



I don't know what is the source of this piece of propaganda perpetuated by mukto-mona ad infinitum 


<<Secular Muslim rule is basically a moronic idea  Muslims love it when they are a minority in a new country but as a majority, they try to take the country towards the 7th century. Ironically, it is affecting many Muslim countries and many Muslims/ Islamist would rather live and breath in infidel countries than their own heavenly Muslim majority countries. A pure irony!  >>


Badshahi India was the most secular place in the world for more than a millennium!

From: pfc-friends@googlegroups.com <pfc-friends@googlegroups.com> on behalf of Shah DeEldar <shahdeeldar@gmail.com>
Sent: Tuesday, September 6, 2016 8:02 PM
To: pfc-friends@googlegroups.com; mukto-mona@yahoogroups.com
Cc: bangladesh-progressives googlegroups
Subject: Re: {PFC-Friends} কারা বাংলাকে দ্বিখণ্ডিত করলো এবং কার স্বার্থে
 
I do not find this article to be relevant to the division of Bengal. The division was squarely based on the socio-ecomomic issues of that time. Educated Hindu Bengalees saw what was coming if there were to be an independent India or Bengal. Many Hindus chose modern education while Muslims invested in Madrassa education. Muslims basically missed the train but thought that they would be the real winner if there were to be an independent Bengal. Hindus saw the danger of being ruled again by Muslims with a dagger in one hand and the Koran in another hand. So, the decision was not so difficult. And, they were vindicated when Pakistan was created. Educated Hindu Bengalees had to cross the border due to the riots/pogroms orchestrated by Surawardi goons. 1971 was the last straw for the Hindus to cross the border. Both Pakistanis and their collaborators did a fantastic job to get rid of Hindu Bengalees which is very comparable to Palestinian refugee situation. I do not see why partition of Bengal was a bad idea for Hindu Bengalees? What am I missing?

Secular Muslim rule is basically a moronic idea  Muslims love it when they are a minority in a new country but as a majority, they try to take the country towards the 7th century. Ironically, it is affecting many Muslim countries and many Muslims/ Islamist would rather live and breath in infidel countries than their own heavenly Muslim majority countries. A pure irony!

2016-09-05 22:15 GMT-04:00 RANU CHOWDHURY <ranu51@hotmail.com>:

Interesting read. 


বাবুদের ইং-রাজি শিক্ষা
============
০১.
... ১৭২৯ খ্রিস্টাব্দে কোলকাতার রাইটার্স বিল্ডিং-এর (সচিবালয়) পূর্ব দিকে সাড়ে ছয় হাজার টাকা ব্যয়ে এমবেসাডার্স হাউস নামে বাড়িটি ক্রয় করে স্থাপিত হলো 'মেয়র্স কোর্ট'। অবশ্য ১৭২৭ খ্রিস্টাব্দে নবাব মুর্শিদ কুলী খাঁর মৃত্যু হবার পরই কেবলমাত্র এ ধরণের একটি বিচারালয় স্থাপনে ইংরেজরা সাহসী হয়েছিল।
মেয়ার্স কোর্টের অস্তিত্ব বজায় ছিল মাত্র ৪৫ বছরের মতো। ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে মেয়র্স কোর্ট যখন ওল্ড কোর্ট হাউস স্ট্রিটে, তখন এর অবলুপ্তি ঘোষণা করা হলো। এর জায়গায় ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দেই জন্ম হলো সুপ্রিম কোর্টের।
কোলকাতার "বাবু সমাজে" কীভাবে ইংরেজি শিক্ষার সূত্রপাত হলো, তা সঠিকভাবে অনুধাবনের লক্ষ্যেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির উদ্যোগে কোলকাতায় প্রথমে মেয়র্স কোর্ট এবং পরবর্তীকালে সুপ্রিম কোর্ট স্থাপনের ঘটনার উল্লেখ করতে হলো। প্রখ্যাত সাংবাদিক ও গবেষক বিনয় ঘোষ এ সম্পর্কে লিখেছেন -
"... লক্ষ্য করা গিয়েছিল যে, এই সময় থেকেই ইংরেজি ভাষা জ্ঞান কাম্য এবং প্রয়োজনীয় মনে হতে লাগল। আধাশিক্ষিত কয়েকজন ইউরেশীয় (এংলো ইন্ডিয়ান) এবং সুপ্রিম কোর্টের ব্রিটিশ এটর্ণি ও উকিলদের কজন বাঙালি-অবাঙালি উদ্যোগী দালাল - এরাই হলো আমাদের দেশের প্রথম 'প্রসিদ্ধ ও পরিপূর্ণ ইংরেজি বিদ্বান ও শিক্ষক'। এই শিক্ষকদের বেতন ছিল ষোল টাকার একটি পয়সা কম নয়। এদের ইংরেজি বিদ্যার পুঁজি বলতে পকেট নোট বুকে টুকে রাখা কয়েক ডজন শব্দ। দেশের ভুঁইফোড় অভিজাতরা এদের কাছে ইংরেজি শিখতে আসত, তাদের শিক্ষা সীমাবদ্ধ থাকত মুখস্থ করা কয়েকটা শব্দে। ইংরেজি ভাষায় যা তারা প্রকাশ করতে অক্ষম হতো তা তারা প্রকাশ করত নানা রকম সংকেত চিহ্নের সাহায্যে। প্রকাশের ব্যর্থতা পূরণের উপায় হিসেবে দেশীয়দের অনেকেই আশ্রয় নিত বিচিত্র অঙ্গভঙ্গির। ইউরোপীয় প্রভুদের কাছে এই ভাবেই তাদের বক্তব্য বোধগম্য হতো। ইংরেজি ভাষায় এই সামান্য দখল নিয়েই কিন্তু মুৎসুদ্দিরা যথেষ্ট পরিমাণে ধনার্জন করতে পেরেছিলেন যা সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি করে তাদের নবীন নাগরিক অভিজাত শ্রেণীতে প্রতিষ্ঠিত করল। ইংরেজি শিক্ষা আমাদের মতো ঔপনিবেশিক দেশের আধুনিক বুদ্ধিজীবীদের যা প্রায় অপরিহার্য উপাদান বলা চলে এইভাবেই তার শুরু। এর পেছনে প্রধান অনুপ্রেরণা ছিল ব্রিটিশ বণিক এবং শাসকদের সেবা করার এবং আর্থিক লাভের। এই অনুপ্রেরণা ক্রমে বাড়তে থাকল - আরো প্রবল হয়ে ঊনবিংশ শতাব্দীতেই ইংরেজি শিক্ষার গুণগত ও পরিমাণগত প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে। ১৮১৭ সালে কলকাতায় হিন্দু কলেজ স্থাপনা থেকেই শুরু হলো ইংরেজি শিক্ষার প্রসার॥" (বাংলার বিদ্বৎসমাজ)
- এম আর আখতার মুকুল / কোলকাতা কেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবী ॥ [ অনন্যা - জুন, ২০১৪ । পৃ: ১৩৪-১৩৫ ]
০২.
"... ঊবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে ইংরেজী ভাষা ও পাশ্চাত্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতি ঝোঁক একান্তভাবে আমাদের দেশের মানুষের আগ্রহে ঘটেছে। রাজা রামমোহন রায় বা রামকমল সেনকে ইংরেজী শিক্ষালাভের জন্য হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় নি।
... ঊনবিংশ শতাব্দীর বাঙলার এই জাগরণের বাহন ছিলেন ইংরেজী শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণী।
এই শ্রেণীটির উৎপত্তির কথা বলতে গিয়ে মার্কস লিখেছেন - 'কলকাতায় ইংরেজদের তত্ত্বাবধানে অনিচ্ছা সহকারে ও স্বল্প পরিমাণে শিক্ষিত ভারতের দেশীয় অধিবাসীদের মধ্যে থেকে নতুন একটি শ্রেণী গড়ে উঠছে যারা সরকার পরিচালনার যোগ্যতাসম্পন্ন এবং ইওরোপীয় বিজ্ঞানে সুশিক্ষিত।'
... ঊনবিংশ শতাব্দীতে আস্তে আস্তে এই ইংরেজী শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণী একটি সামাজিক শক্তি হিসাবে আবির্ভূত হতে থাকে। 'বঙ্গদূত', 'জ্ঞানান্বেষণ', 'বেঙ্গল স্পেকটেটর', 'হিন্দু প্যাট্রিয়ট', 'তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা', 'সোমপ্রকাশ', 'সুলভ সমাচার', 'সাধারণী', 'অমৃতবাজার পত্রিকা' প্রভৃতির পাতায় এই মধ্যবিত্ত শ্রেণীর দৃষ্টিভঙ্গী থেকে দেশোন্নয়নের প্রশ্নটি নানাভাবে নানা ভঙ্গীতে আলোচিত হয়েছে।
... ক্রমে ক্রমে এই ইংরেজী শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণী যতই যোগ্যতা অর্জন করতে থাকল ততই ইংরেজ শাসক দলের লোকেরা তাদের ঈর্ষার চোখে দেখতে আরম্ভ করল - এদের মধ্যে তারা ভবিষ্যৎ বিরোধিতার বীজের সন্ধান পেল। তাই আরম্ভ হল "বাঙালী বাবুদের" বিরুদ্ধে অভিযান।
... ইংরেজ সম্পাদিত একটি পত্রিকা থেকে একটি উদ্ধৃতি তুলে ধরে বলা হয়েছে 'অবিলম্বে' এই 'বাবুডমের' (Babudom) পাল্টা শক্তি হিসাবে একটি দেশীয় অভিজাত সম্প্রদায় গড়ে তোলা হোক, নতুবা এই বাঙালী এম-এ, বি-এ'রা - যাদের পদবীর মূল্য চীনাবাজারের জিনিসপত্রের বেশি নয় - তারাই সমস্ত বড় পদ বাঙলায় ত বটেই, এমন কি উত্তর ভারতেও দখল করে বসবে।
... ১৮১৭ থেকে ১৮৫৭ - এই কালপর্বে বাঙলার জাগরণে প্রধান পুরুষ ছিলেন রামমোহন ও ইয়ং বেঙ্গল দলের নেতৃবৃন্দ। এই যুগের প্রধান মুখপত্র 'বঙ্গদূত', 'জ্ঞানান্বেষণ', 'বেঙ্গল স্পেকটেটর', 'হিন্দু প্যাট্রিয়ট', 'তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা', 'সোমপ্রকাশ' প্রভৃতি। এই পর্বে বাঙলার জাগরণের প্রধান বৈশিষ্ট্য : যুগধর্মকে আকন্ঠ পান করার প্রবণতা, আধুনিকতার কালস্রোতে অবগাহন করার এক দুর্দমনীয় আগ্রহ।
ক. বঙ্গদূত : প্রথম প্রকাশ ১০ মে, ১৮২৯। এই পত্রিকার পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে ছিলেন রামমোহন রায়, দ্বারকানাথ ঠাকুর, প্রসন্ন কুমার ঠাকুর প্রভৃতি। ইংরেজী শিক্ষিত মধ্যবিত্তের ভাব ও ভাবনার প্রথম উন্মেষের পরিচয় যে পত্রিকাগুলি বহন করে এই পত্রিকা ছিল তাদের অন্যতম। কয়েকজন ইংরেজ এবং ইংরেজী শিক্ষিত বাঙালী মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টার ফলে "বেঙ্গল হেরল্ডের" সহচর "বঙ্গদূত" প্রকাশিত হয়। বঙ্গদূতের সম্পাদক ছিলেন সুপন্ডিত নীলরত্ন হালদার।
খ. জ্ঞানান্বেষণ : ১৮ জুন, ১৮৩১ এই পত্রিকা প্রথম প্রকাশিত হয়। প্রায় দশ বছর ধরে এই পত্রিকা চলেছিল। এটি ছিল ইয়ং বেঙ্গল গোষ্ঠীর মুখপত্র। দক্ষিণারঞ্জন মুখার্জি, রসিককৃষ্ণ মল্লিক, রামগোপাল ঘোষ প্রভৃতি এই পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এই পত্রিকার প্রকাশিত প্রবন্ধগুলি ইয়ংবেঙ্গল গোষ্ঠীর অগ্রগামী চিন্তার স্বাক্ষর বহন করছে। ইওরোপের প্রগতিশীল উন্নত ভাবাদর্শের আলোকচ্ছটায় কুসংস্কারের অন্ধকার অপসারিত করার প্রয়োজনে এই পত্রিকা এদেশে ইংরেজী শিক্ষার প্রসারকে স্বাগত জানিয়েছে।
গ. বেঙ্গল স্পেকটেটর : ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে এই পত্রিকা প্রথম প্রকাশিত হয়। ইংরেজী-বাঙলা দ্বিভাষী পত্ররূপে এটি প্রকাশিত হত। এটি ছিল ইয়ং বেঙ্গল গোষ্ঠীর আর এক মুখপত্র। প্যারীচাঁদ মিত্রের সহায়তায় রামগোপাল ঘোষ এই পত্রিকা প্রকাশ করেন। মাত্র দেড় বছর এই পত্রিকা চলেছিল। অতি অল্পকাল স্থায়ী হলেও এই পত্রিকা শিক্ষিত মধ্যবিত্তের মধ্যে আধুনিকতা প্রচারে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করে। হিন্দু কলেজকে কেন্দ্র করে এই সময়ে যে নব্যপন্থী আন্দোলনের উদ্ভব হয়েছিল এই পত্রিকার পরিচালকেরা ছিলেন তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত।
ঘ. তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা : প্রথম প্রকাশ ১৬ আগস্ট, ১৮৪৩। এই পত্রিকা ছিল দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর পরিচালিত ব্রাহ্ম আন্দোলনের মুখপত্র। প্রথম বার বৎসর অক্ষয়কুমার দত্ত এই পত্রিকার সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। প্রথম দিকে এই পত্রিকার সঙ্গে বিদ্যাসাগর মহাশয়েরও যোগাযোগ ছিল। বাঙলার নব-জাগরনের স্রোত-ধারাটি যে-সব পত্র-পত্রিকা পরিপুষ্ট করতে সাহায্য করেছিল 'তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা' ছিল তাদের মধ্যে অগ্রগণ্য। বস্তুত: ইংরেজী শিক্ষিত মধ্যবিত্তের চোখ দিয়ে দেখা বাঙলার নব-জাগরণের এক অপেক্ষাকৃত পরিণত রূপ তত্ত্ববোধিনীর পাতায় প্রতিফলিত হয়েছিল।
ঙ. হিন্দু পেট্রিয়ট : প্রথম প্রকাশ ১৮৫৪ খৃ:। ১৮৫৫-৬১ এই পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন হরিশ মুখার্জি। এই ক'বছর ছিল হিন্দু পেট্রিয়টের সবচেয়ে গৌরবের যুগ। দুর্গত নীল্-চাষীদের পক্ষ সমর্থন করে এই পত্রিকা বাঙলার গণতান্ত্রিক জাগরণের উদ্বোধনে একটি বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করেছিল। এদেশের ইংরাজী শিক্ষিত মধ্যবিত্তের জন্ম হয়েছিল ঊনিশ শতকে - উপনিবেশের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক কাঠামোজাত বৈপরীত্য সত্ত্বেও তারাই এদেশের মানবমুখিন বুর্জোয়া জীবনদর্শন প্রচারের প্রথম মাধ্যম, সচেতন জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের জনক এবং হিন্দু পেট্রিয়ট তাদের অন্যতম মুখপত্র॥" (পরিমার্জিত - K.K)
- ঊনিশ শতকের বাঙলার জাগরণ : তর্ক ও বিতর্ক / সম্পাদনা: নরহরি কবিরাজ ॥ [ কে পি বাগচী এন্ড কোং (কলকাতা) - ১৯৮৪ ]
০৩.
"... কৃষ্ণচন্দ্রীয় যুগে ইংরেজি শিক্ষার যে সূত্রপাত হয়েছিল, সে সম্পর্কে কিছু উল্লেখ করা প্রয়োজন। অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দেশের শাসকরূপে দেখা দিলেও, দেশের শিক্ষা সম্পর্কে কোম্পানি ছিল উদাসীন। ইংরেজ কোম্পানি অষ্টাদশ শতকের শেষভাগ পর্যন্ত শিক্ষা বিস্তারে বেসরকারি প্রচেষ্টাকে সামান্য সাহায্য করলেও, দেশের শিক্ষা বিস্তারে কোম্পানির কোনো প্রত্যক্ষ দায়িত্ব আছে, এ কথা স্বীকার করেনি।
১৭১৩ খ্রিস্টাব্দে 'সোসাইটি ফর দি ফরমেশন অব ইন্ডিয়ানস' কলকাতায় একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ১৭২০ খ্রিস্টাব্দে রেভারেন্ড বেলমীর প্রচেষ্টায় কলকাতায় একটি স্কুল স্থাপিত হয়। ১৭৩১ খ্রিস্টাব্দে 'সোসাইটি ফর দি প্রমোশন অব ইন্ডিয়ানস' একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। বেলমীর স্কুল যে বাঙালি শিশুদের জন্য ছিল না, তা নিশ্চিত বলা যায়। ১৭৩১ খ্রিস্টাব্দে অর্থাৎ পলাশি যুদ্ধের ২৬ বছর পূর্বেই 'সেন্ট অ্যানড্রুজ প্রেসবিটেরিয়ান চার্চ' একটি অবৈতনিক স্কুল স্থাপন করে। কলকাতার ভবঘুরে ও অনাথ বালকদের ইংরেজি শিক্ষার প্রথম মিশনারি প্রতিষ্ঠান 'ওল্ড চ্যারিটি স্কুল' ১৭৪২ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৭৫৪ খ্রিস্টাব্দে মিশনারি ম্যাপলটফট ইংরেজি শিক্ষা প্রসারের জন্যে এবং এই শিক্ষার সম্ভাব্য সুফল দেখিয়ে কলকাতা কাউন্সিলের কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়ে আবেদন করেছিলেন। মিশনারি কিয়েরনানভার এবং সিলভেস্টার এদেশীয়দের ইংরেজি শিক্ষা দেওয়ার জন্যে উদ্যোগী হয়েছিলেন।
১৭৫৮ খ্রিস্টাব্দে কিয়েরনানভার-এর স্কুলে ১৭৫ জন ছাত্র ছিল। এর মধ্যে ৭৮ জন 'সোসাইটি ফর দি প্রমোশন অব ক্রিশ্চিয়ান নলেজ'-র টাকায় শিক্ষা পেত। মেয়েদের ইংরেজি শিক্ষার প্রতিষ্ঠানও এ যুগে দুএকটি দেখা যায়। আনুমানিক ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে মিসেস হজেস কলকাতায় মেয়েদের জন্যে প্রথম স্কুল খোলেন। ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে গভর্নর জেনারেল হেস্টিংস 'কলকাতার মাদ্রাসা' প্রতিষ্ঠা করেন। মাদ্র্সা প্রতিষ্ঠার পিছনে শিক্ষার প্রসার ছাড়া রাজনৈতিক অভিসন্ধিও ছিল। মুসলিম-তোষণই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্য মনে হয়। তখন ইংরেজি শিক্ষার প্রসার যা কিছু হয়েছিল তার কৃতিত্ব বিশেষ করে মিশনারিদেরই প্রাপ্য॥"
- আলোককুমার চক্রবর্তী / মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ ॥ [ কে. মিত্র (কলকাতা) - জানুয়ারি, ১৯৮৯ । পৃ: ১১০-১১১ ]
০৪. 
"... ঊনিশ শতকের বাংলায় ইংরেজি শিক্ষার বিষয়টি আমরা দু-ভাগে ভাগ করে নিতে পারি। একটি হল স্কুল কলেজে কীভাবে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটল, অন্যটি স্কুলের বাইরে। বর্তমানে বিদ্যালয়চর্চায় বাইরের জগৎটি আমরা খোঁজবার চেষ্টা করছি। আগে বলা হয়েছে, বাজারের প্রয়োজনে দালাল ফড়ে বা মুতসুদ্দিদের কথোপকথনের ভেতর দিয়ে বাংলায় কীভাবে পরোক্ষে ইংরেজি ভাষার প্রসার শুরু হয়েছিল। শুধু এখানেই বিষয়টি থেমে ছিল না। ব্রিটিশ কোম্পানি ও নবোদিত ব্রিটিশ পুঁজিবাদীরা পুঁজির মৃগয়ায় তৎপর হচ্ছিলেন। তার একটি ক্ষেত্র ছিল ভারত। বাংলায় ইংরেজ শক্তি বিশেষ তৎপর ছিল। ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময় ধরে ভারত থেকে ইংল্যান্ডে পুঁজির চালান ঘটেছিল বাৎসরিক ৩.৬২ মিলিয়ন পাউন্ড। ঊনিশ শতকের প্রথম দশকের মাঝামাঝি এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৩.৬২ মিলিয়ন পাউন্ড। সুতরাং বেশ লাভজনক ছিল ভারতীয় ক্ষেত্রটি। এক্ষেত্রে ইংরেজদের খুব দরকার হয়ে পড়েছিল বাংলার ক্ষেত্রে ইংরেজদের বাংলা ভাষা জানা এবং একই সঙ্গে ইংরেজির প্রসার।
মিশনারিরা এ ব্যাপারে অগ্রগামীর ভূমিকা নিয়েছিলেন আগেই। সেখানেও প্রাথমিকভাবে গুরুত্ব পেয়েছিল ইংরেজি শব্দের বাংলা অর্থ অনুসন্ধান। বাংলা-ইংরেজি অভিধান মুদ্রিত হয়েছিল ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে ক্রনিকল প্রেস থেকে। যার নাম ইংরেজি বাংলা ভোকেবুলারি। এর আগে পর্তুগিজ বণিক ও মিশনারিদের উদ্যোগে প্রকাশিত হয়েছিল পর্তুগিজ-বাংলা অভিধান। এ ছাড়া উল্লেখযোগ্য ছিল কতকগুলি প্রেসের ভূমিকা। যেমন হিকির প্রেস, ইন্ডিয়া গেজেট প্রেস, বেঙ্গল হরকরা প্রেস, ওরিয়েন্টাল স্টার প্রেস প্রভৃতি। এখান থেকে অভিধান্, আইন ও ইংরেজি গ্রামারের বই ছাপা হত। ইংরেজি ভাষায় লেখা এই বইগুলি কিনত ইউরোপীয়রা, তবে দেশি ক্রেতা একেবারে ছিল না তা নয়। মনে রাখতে হবে এই সময়কালে বঙ্গে ইংরেজি জানাটা একটা কাজের ব্যাপার ছিল কিন্তু সেটা তখনও মানসম্মানের সঙ্গে জড়িত হয়নি। ঊনিশ শতক ক্রমশ এগিয়ে চললে, সেই শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ইংরেজি জানার বিষয়টি মানসম্মানের সঙ্গে জড়িয়ে যায়। এ বিষয়ে নীরদচন্দ্র চৌধুরীর লেখা থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলা যায় যে, "প্রথমত ইংরেজি জানিলে যে সামাজিক সম্মান পাওয়া যাইতো শুধু বাংলা বা সংস্কৃত জানিলে কখনই তাহা সম্ভব ছিল না।" এই দৃষ্টিকোণ তৈরি হবার পর থেকে বাংলায় ইংরেজি শিক্ষার প্রসারের ইতিহাস অন্যদিকে বাঁক নিতে থাকে।
তা দ্রুতগামী ও বিচিত্রগামী হয়, এমনকি পঞ্জিকার ভিতরেও ইংরেজি চিঠির মুসাবিদা করা থাকতে শুরু করে। বাঙালি পাঁজির ভিতরে মুদ্রিত নানা ধরণের চিঠি ইংরেজি ভাষায় কীভাবে লিখতে হবে তা শিখতে শুরু করে এবং প্রয়োজনে নকল করতে শুরু করে। মিশনারি প্রচেষ্টা সম্পর্কে এ যাবৎ অনেকে আলোচনা করেছেন। বাংলায় প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ইংরেজি ভাষার প্রসারে মিশনারি অবদান ছিল। পাঠ্যপুস্তক তৈরি, ইংরেজি শিক্ষা বিস্তারে এর বিশেষ মনোযোগ দেওয়া মিশনারি কর্মপদ্ধতির বৈশিষ্ট্য ছিল। ঊনিশ শতকে বাংলায় ইংরেজি শিক্ষা বিস্তারের আর একটি দিক ছিল ব্যক্তিগত উদ্যোগ। ব্যক্তিগত উদ্যোগের ক্ষেত্রে ডেভিড হেয়ার-এর অবদান্, এর পাশাপাশি আরও অনেকের অবদান ছিল। স্বয়ং উইলিয়াম কেরি ছাড়া জোশুয়া মার্শম্যান বা হানা মার্শম্যানের ইংরেজি শিক্ষার প্রসারে উৎসাহের ঘাটতি ছিল না। শ্রীরামপুরে হানা মার্শম্যান প্রতিষ্ঠিত গার্লস স্কুলটির সুনাম ছিল। ১৭৯৪ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ দিনাজপুর, যশোহর, চট্টগ্রাম প্রভৃতি জেলায় ব্যাপটিস্ট মিশনারিরা যেসব স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিল সেখানে ইংরেজি শিক্ষাদান চলত। মূলত: শব্দার্থ শেখা ছাড়া বাইবেলের মানে এবং দৈনন্দিন কথোপকথন শেখানো হত ছাত্রছাত্রীদের। বলা বাহুল্য এগুলির অনেকটাই ছিল ব্যক্তিগত উদ্যোগ।
এ প্রসঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলার থাকে, যেটি হল এই যে - ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বহুদিন পর্যন্ত, বিশেষকরে পলাশির যুদ্ধ হয়ে যাবার পরে, মিশনারিদের প্রতি খড়গহস্ত হয়ে ওঠে। তাদের এই ভয় ছিল যে মিশনারিদের ধর্মপ্রচারের ফলে এদেশের হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায় ইংরেজ সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠবে। এইজন্য ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে বহু মিশনারিকে (যাদের লাইসেন্স নেই) কোম্পানির রাজত্ব থেকে বের করে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয় ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মিশনারিদের শিক্ষাগত কার্যকলাপের রীতিমতো বিরোধিতা করে আইন জারি করতে থাকে যার একটি হল মিশনারি স্কুলগুলির প্রতি সবরকম সাহায্যদান বন্ধ করা। এর আগে ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে তারা মিশনারি স্কুলগুলিকে অর্থসাহায্য বন্ধ করে দিয়েছিল। এর ফলে ঊনিশ শতকের বাংলায় ইংরেজি শিক্ষার প্রসার কিছুটা ব্যাহত হয়। অন্তত তা মিশনারি লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়। পাশাপাশি দেশীয় ভাষা শিক্ষার প্রতি জোর দেওয়া আদি ব্রিটিশ প্রশাসকরা প্রয়োজনীয় বলে মনে করতেন। এইজন্য সরকারি উদ্যোগে প্রাথমিকভাবে ইংরেজি ভাষা শিক্ষার প্রসারে ধাবিত হয়নি। ওয়ারেন হেস্টিংস দেশীয় মানুষকে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে স্থাপন করেন কলকাতা মাদ্রাসা এবং ১৭৯২ খ্রিস্টাব্দে বেনারস সংস্কৃত কলেজ। এই একই ধরণের ইংরেজি কলেজ সরকারি উদ্যোগে স্থাপিত না হলেও কিন্তু মিশনারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮১৮-তে মিশনারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত শ্রীরামপুর কলেজ ছিল ভারতের প্রথম ইংরেজি শিক্ষার কলেজ। যদিও এখানে প্রাচ্যভাষা শিক্ষাও দেওয়া হয়। মনে রাখতে হবে ১৮১৭-তে প্রতিষ্ঠিত কলকাতার হিন্দু কলেজ মিশনারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
ঊনবিংশ শতাব্দীর সূচনায় ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই কলেজ কাজ শুরু করে ইংরেজদের বাংলা ও অন্যান্য দেশি ভাষার চর্চাকেন্দ্র হিসাবে। প্রশাসনিক কারণে ইংরেজরা বাংলা শিখতেন কিন্তু এই সূত্রে স্বাভাবিকভাবে দুটি ভাষার মধ্যে যে ধরণের নৈকট্য জন্মায় তা থেকে বাঙালিদের মধ্যেও ইংরেজি ভাষা চর্চার প্রতি ঝোঁক বাড়তে থাকে। এরপর ১৮১৭-তে পাবলিক কলেজ হিসাবে হিন্দু কলেজের উত্থান। ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে ভাষার মাধ্যম যখন ইংরেজি হয় তখন থেকেই বোঝা গিয়েছিল যে এবার ইংরেজি ভাষার প্রসার ঘটবে কারণ ইংরেজি সত্যিই রাজভাষার পদটি গ্রহণ করেছে। পরবর্তীকালে সরকারি চাকরি লাভের ক্ষেত্রে ইংরেজি বাধ্যতামূলক হয়ে যাওয়ায় বাঙালি কিছুটা উপায়হীন ভাবে এবং অনেকটাই নবজাগরণের স্বপ্নে ইংরেজি শিক্ষাকে গ্রহণ করে। বিদ্যালয়ে ইংরেজি শিক্ষা প্রদানের বিন্যাস তৈরি হয়॥"
- উনিশ শতকের বাংলা / সম্পাদনা : অলোক রায় ও গৌতম নিয়োগী ॥ [ পারুল প্রকাশনী (কলকাতা) - ২০১২ । পৃ: ১০৬-১০৯ ]


From: pfc-friends@googlegroups.com <pfc-friends@googlegroups.com> on behalf of Ahmed Khan <2005.khan@gmail.com>
Sent: Monday, September 5, 2016 5:35 PM
To: pfc-friends@googlegroups.com
Cc: bangladesh-progressives googlegroups
Subject: Re: {PFC-Friends} কারা বাংলাকে দ্বিখণ্ডিত করলো এবং কার স্বার্থে
 

কারা বাংলাকে দ্বিখণ্ডিত করলো এবং কার স্বার্থে-পর্ব ১

লিখেছেনঃ  সুনীতি কুমার ঘোষ, পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট বাম তাত্ত্বিক

2016-09-05 10:29 GMT-07:00 Sitangshu Guha <guhasb@gmail.com>:
http://www.your4state.com/tasmin-mahfuz

Tasmin Mahfuz

News Anchor/Producer

Tasmin Mahfuz WHAG Evening AnchorTasmin Mahfuz is an award winning journalist who produces and anchors WHAG News at 6pm, 7pm, and 11pm.
Before moving to Maryland, Tasmin was the Southern Utah Bureau Chief at ABC 4 Utah. She launched the station's first news bureau and was responsible to cover an area of 20,000 square miles with a population of 200,000+ people by herself.
Tasmin was born and raised in West Palm Beach, Florida. She is a graduate of Emory University in International Studies and also has a master's degree in Legal Studies. After graduation, Tasmin completed a two-year internship at the United Nations.
But her passion was to pursue a career in broadcasting journalism. She landed a job with an international network where she reported from New Jersey, New York and Washington DC.
In June 2015, the Alliance for Women in Media Foundation awarded Tasmin the prestigious Gracies Award for Outstanding Producer in TV News. She also earned an award from the Utah Chapter of the Society of Professional Journalists.
Tasmin is proud to join WHAG News and be a part of the 4-state region. Watch her every weeknight on WHAG News!


Here is a link to Tasmin Mahfuz's reportage:

https://www.youtube.com/watch?v=HfinMlCjJ7o

2016-09-05 13:23 GMT-04:00 Ahmed Khan <2005.khan@gmail.com>:

Excellent info, lot of historical message, thank you!

কারা বাংলাকে দ্বিখণ্ডিত করলো এবং কার স্বার্থে-পর্ব ১

লিখেছেনঃ  সুনীতি কুমার ঘোষ, পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট বাম তাত্ত্বিক

2016-09-05 7:15 GMT-07:00 Shah DeEldar <shahdeeldar@gmail.com>:
If the whole India could be divided on the basis of religion, why Bengal (and Punjab) should not have been divided? ....So, that Muslims could dominate the Bengal with swords and ethnic cleansing? Muslim dominated countries never accommodate minority and democratic rights. Why should Hindus should have taken a chance knowing fully what would be the downstream consequences of Muslim majority rule. People like Jogen Mondol and his community voted for Pakistan but he had to flee to India to save his life and honor. That was the beauty of majority Islamic East Pakistan! The best way to prove that Muslims are good and democratic citizens is to make Muslim countries inhabitable for Muslims, let alone for the minorities. Many Muslims are moving to infidel countries for a better and decent living. What does it say to our Islamic friends?

2016-09-03 4:30 GMT-04:00 'Raza Mia' via PFC-Friends <pfc-friends@googlegroups.com>:

কারা বাংলাকে দ্বিখণ্ডিত করলো এবং কার স্বার্থে-পর্ব ১

লিখেছেনঃ  সুনীতি কুমার ঘোষ, পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট বাম তাত্ত্বিক

three leaders
পরিস্থিতি এমন ছিল যে বাংলার ভাগ্য বাংলার জনগণের উপর নির্ভর করছিল না, নির্ভর করছিল সম্পূর্ণ বাইরের তিনটে শক্তি উপর- তাদের মধ্যে আপস ও চুক্তির উপর। আমরা দেখবো এই তিনটি শক্তির মধ্যে দুটি শক্তি- ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ ও মুসলিম লীগ নেতৃত্ব প্রস্তুত ছিল বাংলাকে হিন্দুস্থান ও পাকিস্তানের বাইরে অবিভক্ত রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকার করতে; কিন্তু স্বীকার করতে প্রস্তুত ছিল না অন্য শক্তিটি অর্থাৎ কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। এবং তাঁদেরই চাপে বাংলাকে দ্বিখণ্ডিত করা হয়।
ক্যাবিনেট মিশন পরিকল্পনা কংগ্রেস যখন কার্যত নাকচ করে দিল তখন নতুন ভাইসরয় মাউন্টব্যাটেন ও তাঁর ব্রিটিশ সহকর্মীরা একটি পরিকল্পনা রচনা করেছিলেন। এর বিস্তৃত আলোচনার এখানে অবকাশ নেই।[See Ghosh, India and the Raj,II.297-8. For a brief discussion of the plan]] শুধু উল্লেখ করবো যে, এই পরিকল্পনায় প্রত্যেক প্রদেশের প্রতিনিধিদের অধিকার দেওয়া হয়েছিল স্থির করার যে তাঁরা হিন্দুস্থানে যাবেন, না অন্য প্রদেশের সঙ্গে মিলে আলাদা গ্রুপ তৈরি করবেন অথবা স্বাধীন থাকবেন। বাংলা ও পাঞ্জাবের প্রতিনিধিদের অধিকার দেওয়া হয়েছিল তিনটি সম্ভাবনার মধ্যে একটি বাছাই করে নেওয়ার। এই তিনটি সম্ভাবনা ছিল:
(১) সমগ্র বাংলা (ও পাঞ্জাব) হিন্দুস্থানে অথবা পাকিস্তানে যোগদান করতে পারে;
(২) বাংলা (ও পাঞ্জাব) বিভক্ত হতে রাজি হয়ে এক অংশ হিন্দুস্থানে এবং অন্য অংশ পাকিস্তানে যেতে পারে; এবং
(৩) বাংলা (ও পাঞ্জাব) ঐক্যবদ্ধ থেকে পৃথক রাষ্ট্র হতে পারে।
তৃতীয় বিকল্পের বিরুদ্ধে নেহেরুর জোরালো আপত্তিতে এই পরিকল্পনাও নাকচ হয়ে যায় [TOP.X, 756, 762-3] । রিফর্মস কমিশনার ভি. পি. মেননকে ভার দেওয়া হয় নতুন পরিকল্পনা রচনা করার। এই পরিকল্পনার রূপরেখা আগের ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারিতে প্যাটেলের সঙ্গে পরামর্শ করে মেনন তৈরি করেছিলেন।[Menon to Patel, 10th May 1947. Durga Das (ed.) op cit., V, 113-7:Menon, op cit., 358-9] তাতে ঐ তৃতীয় সম্ভাবনাকে বাদ দেওয়া হয়।
অর্থাৎ বাংলাকে (ও পাঞ্জাবকে) হয় সমগ্রভাবে হিন্দুস্থানে বা পাকিস্তানে যেতে হবে আর নয়তো দ্বিখণ্ডিত হতে হবে। হিন্দুস্থান ও পাকিস্তানের বাইরে ঐক্যবদ্ধ বাংলার (বা পাঞ্জাবের) অস্তিত্ব থাকবে না। অন্য প্রদেশগুলিকে হয় হিন্দস্থানে নয় পাকিস্তানে যেতে হবে। এই মেনন-প্যাটেল পরিকল্পনাই মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা নামে খ্যাত।
এর আগে ১৯৪৭-এর ৪ঠা মার্চ ভারত সচিবের একটা স্মারকলিপিতে তিনটি রাষ্ট্রের উদ্ভবের সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছিল:  (১) উত্তর-পশ্চিম ভারতে পাকিস্তান; (২) আসাম-সহ হিন্দুস্থান; এবং (৩) বাংলা।ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার ভারত ও বর্মা কমিটি প্রদেশগুলিকে, বিশেষ করে বাংলাকে, যদি তারা চায় তাহলে হিন্দুস্থান ও পাকিস্তান থেকে পৃথক থাকার অধিকার দিতে প্রস্তুত ছিল। ১৭ই মে ১৯৪৭ তারিখের একটি স্মারকলিপিতে ভারতসচিব লিস্টওয়েল বলেছিলেন যে, "ঐক্যবদ্ধ থাকার ও নিজের সংবিধান নিজে রচনা করার অধিকার নিশ্চয়ই বাংলাকে এবং সম্ভবত পাঞ্জাবকেও দেবার পক্ষে যুক্তি আছে।" [TOP. IX, 842: X, 834, 876-8)] ।
২৩ মে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এটলী বলেছিলেন: "যুক্ত নির্বাচকমণ্ডলীর দ্বারা নির্বাচিত সংযুক্ত সরকারের ভিত্তিতে উত্তর-পূর্বে বাংলা ঐক্যবদ্ধ থাকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে- তার উজ্জ্বল আশা আছে।" (ইতিমধ্যে শরৎ বোস-আবুল হাশিম কর্তৃক স্বাক্ষরিত বাংলার কংগ্রেস-লীগ নেতাদের চুক্তি প্রকাশিত হয়েছিল।) একই দিনে ডোমিনিয়ন প্রধানমন্ত্রীদের কাছে প্রেরিত টেলিগ্রামে এটলী "উপমহাদেশে দুটি বা সম্ভবত তিনটি রাষ্ট্রের উদ্ভবের" সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেছেন।[ibid., 964] ।
Huseyn Shaheed Suhrawardy
মাউন্টব্যাটেন নিজেও কিছুদিন ধরে হিন্দুস্থান ও পাকিস্তান থেকে পৃথক ঐক্যবদ্ধ বাংলার কথা চিন্তা করেছিলেন। ২৬শে এপ্রিল সুরাবর্দি (বাংলাদেশের জাতীয় নেতা সোহরাওয়ার্দীকে পশ্চিমবঙ্গের লোকেরা এই অপনামে ডাকে-সাম্প্রদায়িকতা থেকে বামরাও মুক্ত হতে পারলনা।অথচ ইংরেজিতে তাঁর নামের বানান হচ্ছে Suhrawardy-সম্পাদক) যখন মাউন্টব্যাটেনের কাছে ঐক্যবদ্ধ স্বাধীন বাংলার প্রস্তাব করেন এবং বলেন যে "যথেষ্ট সময় পেলে তিনি বাংলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে সক্ষম হবেন বলে বিশ্বাস করেন", তখন এই প্রস্তাবের পক্ষে মাউন্টব্যাটেনের সমর্থন ছিল [ ibid., 459] ।
ওই দিনেই তিনি জিন্নাকে সুরাবর্দির (সোহরাওয়ার্দী) কথা জানান এবং জিন্নার সম্মতি পেয়েছিলেন [ibid.,452]। ২৮শে এপ্রিল মাউন্টব্যাটেন বারোজকে জানালেন যে, তাঁর এবং তাঁর ব্রিটিশ সহকর্মীদের "পরিকল্পনা পাকিস্তান ও হিন্দুস্থান থেকে পৃথক অবিভক্ত স্বাধীন বাংলার সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত রেখেছে। জিন্না কোনো আপত্তি করবে না"[ibid.,472] ।
পৃথক স্বাধীন দেশ হবার সম্ভাবনা যাতে বেশি হয় সেইজন্য ১লা মে মাউন্টব্যাটেন প্রস্তাব দিলেন যে, বাংলা থেকে নির্বাচিত সংবিধান সভার সদস্যরা প্রথমে ভোট দিয়ে ঠিক করবেন যে তাঁরা স্বাধীন বাংলার পক্ষে, না হিন্দুস্থান বা পাকিস্তানে যোগদান করতে চান। পরে তাঁরা বাংলা ভাগ হবে কিনা সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবেন [ibid., 511-2, 539,551]।
২রা মে বারোজকে মাউন্টব্যাটেন জানালেন, বাংলাকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য আর একটা বিকল্প হিসাবে বাংলায় সাধারণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করে সমস্ত ভোটদাতাদের মতামত গ্রহণ করার উপর জোর দেওয়া যেতে পারে [ibid., 554-5]। ৩রা মে কিরণশঙ্কর রায় যখন মাউন্টব্যাটেনের সঙ্গে দেখা করলেন তখন সংবিধান সভার সদস্যদের ভোটভুটির মাধ্যমে অথবা গণভোটের মাধ্যমে বাংলাকে ঐক্যবদ্ধ ও স্বাধীন থাকার অধিকার দেবার যে পরিকল্পনা মাউন্টব্যাটেন করেছিলেন তার কথা কিরণশঙ্করকে বললেন। মাউন্টব্যাটেনের কাছ থেকে কিরণশঙ্কর যখন শুনলেন যে সুরাবর্দি (সোহরাওয়ার্দী) যুক্ত নির্বাচকমণ্ডলী ও সংযুক্ত মন্ত্রিসভাতে সম্মত তখন তিনি উল্লসিত হলেন [ibid., 586]।
৪ঠা মে বারোজ মাউন্টব্যাটেনকে চিঠির মাধ্যমে ও টেলিগ্রাম করে জানালেন যে, বাংলার জনগণের মতামত নেবার জন্য গণভোট হতে পারে, তার জন্য কমপক্ষে তিন মাস সময় লাগবে [ibid., 615, 714]। তখন স্থির ছিল যে ব্রিটিশরা ক্ষমতা হস্তান্তর করবে ১৯৪৮-এর জুনের মধ্যে। অতএব বাংলায় গণভোট সম্পূর্ণ সম্ভব ছিল। বাংলা ঐক্যবদ্ধ থাকবে, না বিভক্ত হবে- এই প্রশ্নটি শুধু সেদিনের ৬ কোটির কিছু বেশি বাঙালীর কাছে নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের পক্ষেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
৭ই মে'তেও মাউন্টব্যাটেন বলেছেন যে, সুরাবর্দি (সোহরাওয়ার্দী) তাঁকে জানিয়েছেন যে জিন্না স্বাধীন বাংলাতে রাজি আছেন [ibid., 657]। মাউন্টব্যাটেন তখন ঐ প্রশ্নে গণভোট বা সাধারণ নির্বাচনের কথা ভাবছিলেন। কিন্তু তার পরেই মাউন্টব্যাটেনের মত সম্পূর্ণ বদলে গেলো। ৮ই মে'তে তিনি তাঁর চিফ অব স্টাফ লর্ড ইসমে (Lord Ismay)-কে লন্ডনে টেলিগ্রাম করে জানালেন, ভি. পি. মেননের মাধ্যমে প্যাটেল ও নেহরু জানিয়েছেন যে যতদিন না নতুন সংবিধান সম্পূর্ণ তৈরি হচ্ছে ততদিনের জন্য তাঁরা ডোমিনিয়ন স্টেটাস (ডোমিনিয়ন স্টেটাসের আর কোনো শোভন নাম নেই) নির্দিষ্ট সময়ের আগে চান। ক্ষমতা হস্তান্তরের তারিখ এগিয়ে দিতে হবে। মাউন্টব্যাটেন লিখলেন :
"এ পর্যন্ত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পক্ষে যত সুযোগ এসেছে তার মধ্যে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং [এই সুযোগের ব্যবহারে] আমরা অবশ্যই প্রশাসনিক বা অন্য কোনো বাধা মানবো না"[ibid.,699-emphasis added]।
৯ই মে এ্যাসোসিয়েটেড প্রেস অব আমেরিকার প্রতিনিধিকে প্যাটেল বললেন, তাঁরা চান শীঘ্র ডোমিনিয়ন স্টেটাস দেওয়া হোক [ibid., 716-emphasis added]। ১০ই মে মাউন্টব্যাটেন ও তাঁর সহকর্মীদের এক বৈঠকে নেহরু বললেন, ডোমিনিয়ন স্টেটাসের ভিত্তিতে যত শীঘ্র সম্ভব ক্ষমতা হস্তান্তর করা হোক [ibid.,732-emphasis added]।
ভারত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মধ্যে একটি ডোমিনিয়ন (অবশ্য পরিবর্তিত নামে) থাকবে এই ইচ্ছা জানিয়ে নেহরু ও প্যাটেল যে বার্তা পাঠিয়েছিলেন তাতে মাউন্টব্যাটেনের উল্লাসের কারণ ছিল। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীরা দীর্ঘদিন ধরে চাইছিল যে ভারত ডোমিনিয়ন বা 'কমনওয়েলথ'-এর সদস্য থাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এক মারাত্মক পর্যায়ে, ১৩ই এপ্রিল ১৯৪৩-এ, ভারতসচিব লিওরপাল্ড এমেরি (Leopold Amery) প্রধানমন্ত্রী চার্চিলকে লিখেছিলেন : "আগামী দশ বছর ভারতবর্ষকে কমনওয়েলথের মধ্যে রাখা আমাদের সামনে সব থেকে বড় কাজ… (এবং) ব্রিটিশ কূটনীতির সবচেয়ে বড় লক্ষ্য হওয়া উচিত"[TOP.III, 895-7-emphasis added]।
একই মর্মে এমরি ৯ই মে ১৯৪৩-এ ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী ইডেনকেও লিখেছিলেন[ibid.,955]। ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ওয়াভেল এবং ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার ভারত-বর্মা কমিটির সিদ্ধান্ত ছিল- "ভারতকে কমনওয়েলথ-এর মধ্যে রাখা আমাদের প্রধান লক্ষ্য হবে"[ibid., IV,333-4]। এ থেকে কিছু আভাস পাওয়া যায়, ব্রিটিশ শাসকরা ভারতকে ব্রিটিশ কমনওয়েলথের মধ্যে রাখার উপর কী গুরুত্ব দিচ্ছিলেন। তাঁরা এবং তাঁদের সামরিক বাহিনীর প্রধানরা 'কমনওয়েলথের কাঠামোর অপরিহার্য অঙ্গ' ("the linchpin in the structure of the Commonwealth") বলেই ভারতকে গণ্য করেছিলেন। তাঁরা এ কথা বারবার বলেছেন [ibid.,VIII,224;VI.561,659-60,666:passim.Emphasis added]।
মাউন্টব্যাটেনকে ভারতের ভাইসরয় মনোনীত করে ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার তরফ থেকে প্রধানমন্ত্রী এটলি তাঁকে নির্দেশ দিয়েছিলেন : সম্ভব হলে ব্রিটিশ কমনওয়েলেথের মধ্যে ব্রিটিশ ভারত ও দেশীয় রাজ্যগুলি নিয়ে এককেন্দ্রিক একটি সরকার ("a unitary Government") হবে সেটাই ব্রিটিশ সরকারের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য।… প্রথমত ভারতীয় সেনাবাহিনীর মধ্যে ভাঙন যাতে না হয় তার এবং সমগ্র ভারতবর্ষের ভিত্তি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বজায় রাখার বিরাট গুরুত্বকে আপনি ভারতীয় নেতাদের উপলব্ধি করানোর চেষ্টা করবেন। দ্বিতীয়ত, ভারত মহাসমুদ্র অঞ্চলের নিরাপত্তার ব্যাপারে সহযোগিতার ক্রমাগত প্রয়োজন- যার জন্য দেশের মধ্যে একটা চুক্তি হতে পারে- তার কথাও আপনি বলবেন [ibid., iX, 972, 973-4-emphasis added]।
অনেকে মনে করেন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীরা তাদের প্রত্যক্ষ শাসনের অবসানের আগে ভারতকে দ্বিখণ্ডিত করতে চেয়েছিল। এ নিছক অনুমান ও ভুল। এ প্রসঙ্গে আমরা কয়েকটি কথা পরে যোগ করবো।
কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতারা গোপনে আরও জানিয়েছিলেন যে, সাময়িক কিছু সময়ের জন্য ডোমিনিয়ন স্টেটাসের কথা বললেও তাঁদের ভারতবর্ষ কখনো ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বা কমনওয়েলথ ত্যাগ করবে না। তবে তাঁদের এই আশ্বাস গোপন রাখতে হবে, না হলে কংগ্রেস সংগঠনকে ডোমিনিয়ন স্টেটাসে রাজি করানোতে অসুবিধা হবে। মাউন্টব্যাটেনের মত এটলিও খুবই খুশি হয়ে ডোমিনিয়ন প্রধানমন্ত্রীদের সেই সংবাদ জানিয়েছিলেন [ibid.,X, 974-5-emphasis added]।
মাউন্টব্যাটেন ১১ই মে টেলিগ্রাম করে লন্ডনকে জানালেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের যে লক্ষ্য সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য আমাদের অবশ্যই ১৯৪৭ সালের মধ্যে ডোমিনিয়ন স্টেটাস দিতে হবে। তারপর তার ফলে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের কি কি লাভ হবে তা তিনি উল্লেখ করেছেন [ibid., 774]।
অতএব মাউন্টব্যাটেন ঠিক করলেন যে, বাংলার জনমত জানার জন্য গণভোট বা সাধারণ নির্বাচন হবে না, এমনকি বাংলার আইনসভার সদস্যরা বাংলা অবিভক্ত পৃথক রাষ্ট্র থাকবে তার পক্ষে ভোট দেবার অধিকার পাবে না। সমগ্র বাংলা যাবে হিন্দুস্থানে বা পাকিস্তানে, অথবা দু'টুকরো হবে এবং এক টুকরো যাবে হিন্দুস্থানে ও অন্য টুকরো যাবে পাকিস্তানে- শুধু এর উপরেই আইনসভার সদস্যরা ভোট দিতে পারবেন। সাম্রাজ্যের স্বার্থের যূপকাষ্ঠে বাংলার কোটি কোটি মানুষের স্বার্থকে বলি দিতে হবে।
বাংলা ঐক্যবদ্ধ থাকবে এবং হিন্দুস্থান ও পাকিস্তান থেকে পৃথক রাষ্ট্র হবে তাতে মুসলিম লীগ নেতাদের সম্মতি ছিল। ২৬শে এপ্রিল মাউন্টব্যাটেন যখন জিন্নাকে সুরাবর্দির (সোহরওয়ার্দী) স্বাধীন ঐক্যবদ্ধ বাংলার প্রস্তাবের কথা বললেন তখন জিন্না  একটুও ইতস্তত না করে বলেছিলেন, "আমি আনন্দিত হবো… তারা ঐক্যবদ্ধ ও স্বাধীন থাকুক সেটাই ভালো হবে" [ibid.,452]।
২৮শে এপ্রিল মাউন্টব্যাটেনের প্রধান সচিব মিয়েভিল (Mieville)-এর সঙ্গে আলোচনার সময় লীগের সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী খাঁ বলেছিলেন,
"বাংলা কখনও বিভক্ত হবে না এই তাঁর বিশ্বাস, তাই তিনি বাংলা নিয়ে উদ্বিগ্ন নন। তিনি মনে করেন যে, বাংলা হিন্দুস্থানে বা পাকিস্তানে যোগদান করবে না এবং পৃথক রাষ্ট্র থাকবে"[ibid.,479]। জিন্না ও লিয়াকত তাঁদের এই সম্মতি বারবার জানিয়েছেন[ibid., 472, 512, 554-5, 625, 657]।
কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব বরাবর বাংলাকে দ্বিখণ্ডিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল। আমরা দেখেছি, পাকিস্তান হোক আর না হোক, তবু বাংলাকে ভাগ করতে হবে- এই ছিল তাঁদের অন্যতম দাবি। তাঁরা চেয়েছিলেন বাংলাকে রাজনৈতিক অর্থনৈতিক এবং অন্যান্য সমস্ত দিক থেকে পঙ্গু করতে। বিড়লা প্রমুখ মাড়োয়ারী বড় মুৎসুদ্দিদের ঘাঁটি কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গকে তাঁরা কখনো হাতছাড়া করতে প্রস্তুত ছিলেন না।
উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল যে, বাংলা বয়স্ক ভোটাধিকার, যুক্ত নির্বাচকমণ্ডলী, সম্মিলিত মন্ত্রিসভা, নিজস্ব সংবিধানসভা নিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকবে, তার সংহতি অটুট থাকবে এবং বাকি ভারতের সঙ্গে সে তার সম্পর্ক নির্ধারণ করবে। এই নতুন বাংলায় সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে লড়াইয়ের পরিবর্তে সাম্রাজ্যবাদ ও তার পদলেহীদের উৎখাতের জন্য ঐক্যবদ্ধ লড়াই শুরু হবে, অগ্রগতি ও বিকাশের নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। কিন্তু এই সম্ভাবনা কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব বিনষ্ট করে দিল এবং অন্তহীন ট্রাজেডির শিকার হতে বাংলাকে বাধ্য করলো।


উৎসঃ  সুনীতি কুমার ঘোষ, কারা বাংলাকে দ্বিখন্ডিত করলো এবং কার স্বার্থে, হাসান আজিজুল হক (সম্পাদিত), বঙ্গ বাংলা বাংলাদেশ, সময় প্রকাশন, ২০১২ (পৃষ্ঠা ২৬৩-২৬৭)

যেই সোর্স থেকে লেখক সবচেয়ে বেশী রেফারেন্স দিয়েছেন সেটি হচ্ছে Mansergh, N. (Editor-in-Chief), Constitutional Relations between Britain and India: The Transfer of Power 1942-7, যার সংক্ষেপ হচ্ছে (TOP), এটি ১২ ভলিউমের রচনা।

কারা বাংলাকে দ্বিখণ্ডিত করলো এবং কার স্বার্থে-পর্ব ২

কারা বাংলাকে দ্বিখণ্ডিত করলো এবং কার স্বার্থে-পর্ব ৩

কারা বাংলাকে দ্বিখণ্ডিত করলো এবং কার স্বার্থে-শেষ পর্ব


--
You received this message because you are subscribed to the Google Groups "PFC-Friends" group.
To unsubscribe from this group and stop receiving emails from it, send an email to pfc-friends+unsubscribe@googlegroups.com.
For more options, visit https://groups.google.com/d/optout.

--
You received this message because you are subscribed to the Google Groups "PFC-Friends" group.
To unsubscribe from this group and stop receiving emails from it, send an email to pfc-friends+unsubscribe@googlegroups.com.
For more options, visit https://groups.google.com/d/optout.

--
You received this message because you are subscribed to the Google Groups "PFC-Friends" group.
To unsubscribe from this group and stop receiving emails from it, send an email to pfc-friends+unsubscribe@googlegroups.com.
For more options, visit https://groups.google.com/d/optout.



--
Sitanggshu Guha

--
You received this message because you are subscribed to the Google Groups "PFC-Friends" group.
To unsubscribe from this group and stop receiving emails from it, send an email to pfc-friends+unsubscribe@googlegroups.com.
For more options, visit https://groups.google.com/d/optout.

--
You received this message because you are subscribed to the Google Groups "PFC-Friends" group.
To unsubscribe from this group and stop receiving emails from it, send an email to pfc-friends+unsubscribe@googlegroups.com.
For more options, visit https://groups.google.com/d/optout.

--
You received this message because you are subscribed to the Google Groups "PFC-Friends" group.
To unsubscribe from this group and stop receiving emails from it, send an email to pfc-friends+unsubscribe@googlegroups.com.
For more options, visit https://groups.google.com/d/optout.

--
You received this message because you are subscribed to the Google Groups "PFC-Friends" group.
To unsubscribe from this group and stop receiving emails from it, send an email to pfc-friends+unsubscribe@googlegroups.com.
For more options, visit https://groups.google.com/d/optout.


__._,_.___

Posted by: Farida Majid <farida_majid@hotmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___