Banner Advertiser

Sunday, September 4, 2016

[mukto-mona] আল বদর থেকে ধনকুবের বাঙালী খান [মীর কাশেম আলী]



আল বদর থেকে ধনকুবের বাঙালী খান

প্রকাশিত : ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬
1
  • জাফর ওয়াজেদ

একাত্তরে ওরা স্লোগান তুলত, 'আমাদের রক্তে পাকিস্তান টিকবে' 'হাতে লও মেশিনগান, দখল কর হিন্দুস্থান।' কিন্তু সে সব ধুলায় মিলিয়ে গেছে। মুক্তিযুদ্ধ তখনও পুরোপুরি শুরু হয়নি। কেবল প্রতিরোধ গড়ে উঠছে বিভিন্ন স্থানে, সংগঠিত হতে চলেছে স্বাধীনতাকামী বাঙালী। পাকিস্তানী হানাদার সেনারা শহর ছাড়িয়ে তখনও গ্রামে পৌঁছায়নি। সবে মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়েছে মুক্তাঞ্চলে। আর ঢাকা শহরে হানাদারদের তত্ত্ব¡াবধানে জামায়াত মুসলিম লীগ পিডিপি, নেজামে ইসলামীসহ কতিপয় ধর্মব্যবসায়ী মিলে গঠন করে শান্তি কমিটি। সত্তরের নির্বাচনে এদের সবাই পরাজিত হয়েছিল। অথচ তখনও মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত বা তাদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়নি। সারাদেশে চলছে নারকীয় হত্যাকা-। হানাদারদের সহযোগিতায় এগিয়ে এলো নির্বাচনে পরাজিত পাকিস্তানপন্থী দলের নেতা ও কর্র্মীরা। বাঙালীর বিরুদ্ধে তারা দ্রুত অবস্থান নিয়ে একতাবদ্ধ হয়ে পড়ে। লক্ষ্য তাদের বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথ রুদ্ধ করা, মুক্তিকামী বাঙালীদের নৃশংসভাবে নিধন, হিন্দু সম্প্রদায়কে দেশ থেকে বিতাড়ন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করাসহ বাঙালীদের বশংবদ রাখা। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই এত দ্রুত এরা কী করে সংগঠিত হলো তা বিশ্লেষণ করা হয়নি আজও। অথচ এই দলগুলো পৃথকভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। অবশ্য তাদের মিল ছিল এক জায়গায়। আর তা হচ্ছেÑ ছয় দফা ও আওয়ামী লীগের বিরোধিতা এবং বাঙালীর স্বাধিকারের আন্দোলনকে নস্যাত করা। নির্বাচনী ঐক্য তারা গড়ে না তুললেও মানসিক ঐক্য তাদের ছিল।

আর তাই তারা নির্বাচন শেষ হওয়ার চার মাসের মাথায় একাত্তরের এপ্রিলে এক কাতারে এসে শামিল হয়েছিল। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তারা পাকিস্তানী হানাদারের সঙ্গে যূথবদ্ধ হয়ে বাঙালী নিধন কর্মসূচী নিয়েছিল। পাশাপাশি তাদের আগ্রহ ও লক্ষ্য ছিল ক্ষমতার অংশীদারিত্ব পাওয়া। তাই টিক্কা খান, ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে তারা বহুবার বৈঠক করেছে বাঙালীদের হাত থেকে পাকিস্তানকে রক্ষা করতে তাদের কাজে লাগাতে। এজন্য ক্ষমতার অংশী করার জন্য নানাপথ ও পন্থা বাতলে দিয়েছিল। ইয়াহিয়া, টিক্কা তাদের ফেলে দেয় ডাস্টবিনে। ন্যাপকিনের মতো ব্যবহার করেছিল। পরাজিত হওয়ার পর পাকিস্তানী সেনারা তাদের ফেলে গিয়েছিল। আত্মসমর্পণের সঙ্গী করেনি। ফলে এরা নিজ দায়িত্বে আত্মগোপনে অথবা পালিয়ে গিয়েছিল নানা পথ ধরে। অনেকেরই ঠাঁই হয়েছিল পাকিস্তানে। অনেকে মধ্যপ্রাচ্যে। শিক্ষিতরা ব্রিটেনে। অবশ্য পাকিস্তানী শাসকদের কাছে এদের কদর ছিল, এখনও আছে তবে ভবিষ্যতে আর থাকবে কিনা, সন্দেহ রয়েছে। কারণ এদের আয়ু ক্ষীণ হয়ে এসেছে রাজনৈতিকভাবে তবে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদে দীক্ষিতরা এখনও মাঠ পর্যায়ে রয়েছে। এরাই হচ্ছে একাত্তরের আলবদর, আল শামস, রাজাকারদের উত্তরসূরি। লক্ষ্য-উদ্দেশ্য তাদের সেই পুরনো। তবে আধুনিকতা সংযোজিত হয়েছে। হওয়াটাই স্বাভাবিক। মান্ধাতা আমলের পথ ও পদ্ধতি পরিবর্তিত হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণেই।

বাংলাদেশ, বাঙালী, স্বাধীনতা- এই শব্দগুলো একটি জাতির অন্তঃপ্রাণ। কিন্তু হানাদারের সহযোগীরা এই শব্দগুলোর বিরুদ্ধে সশস্ত্র হয়ে উঠেছিল একাত্তরে। আজও তারা সেই অবস্থান থেকে সরে আসেনি। বরং আরও হৃষ্টপুষ্ট হয়েছে। একাত্তরে পাকিস্তানী হানাদাররা ছিল তাদের মুরব্বি। আর এখন সামরিক জান্তার গর্ভে জন্ম নেয়া বিএনপি। তাদের ক্রোড়ে আশ্রয়-প্রশ্রয় নিয়ে-পেয়ে এরা ফুলে ফেঁপে উঠেছে নানাক্ষেত্রে। শক্তিমত্তা এদের যে কম নয়, তা প্রমাণও করেছে নানা সময়ে। সশস্ত্র শক্তি প্রদর্শন ছাড়া যে ক্ষমতায় যাওয়া বা অংশীদার হওয়া যায় না; তারা সবসময় তা প্রমাণ করতে পেরেছে। তারা সবসময় তা প্রমাণ করতে চেয়েছে। তারা ক্ষমতার অংশীদারও হতে পেরেছিল অর্থ ও অস্ত্রের ভা-ার মজবুত থাকার কারণেই। জামায়াতে ইসলামীর পরিচয় নামক পুস্তিকায় উল্লেখ করা হয়েছে, 'আল্লাহর রাসুল (সা) বলেছেন যে, মেষের পাল থেকে আলাদা একটি মেষকে যেমন নেকড়ে বাঘ ধরে খায়, তেমনি জামায়াত থেকে বিচ্ছিন্ন থাকলে শয়তানের খপ্পরে পড়তে হয়।' মহানবীর বাণীর সঙ্গে জামায়াতের এই তুল্যমূল্য শয়তানেরই কারসাজি। বরং বাংলার মানুষ একাত্তর সাল থেকে অদ্যাবধি বলে আসছে জামায়াত থেকে বিচ্ছিন্ন থাকলে শয়তানের খপ্পরমুক্ত থাকা যায়। তবে বিএনপি নেত্রী বেগম জিয়া জামায়াতের বাণী মেনে চলেন। আর এই শয়তানের খপ্পরে যাতে পড়তে না হয়, সেজন্য জামায়াত থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চাইছেন না কোনভাবেই। জামায়াতের মতো বিএনপিও মনে করে জামায়াতে ইসালামীর মতো একটি সংগঠন আল্লাহর বিশেষ রহমত। তবে বাঙালী জাতির জীবনে এরা জল্লাদ তুলনীয় এক নারকীয় প্রতিষ্ঠান হিসাবেই চিহ্নিত। ইসলামের নামে এরা ইসলামকেই বিকৃত করতে চায়। আর এ কাজটি করে এসেছে তাদের মূল নেতা মওলানা মওদুদী। তার বক্তব্য বিতর্কিত এবং ধর্মবিরোধী বলেই জনসমাজে প্রচলিত। সেই মওদুদীর ইতিহাস এদেশবাসী জানে। মিথ্যাচারে ঢাকা পড়ে না তার আসল কৃতী ও কীর্তি। স্বরূপ তার উদঘাটিত হয়েছে বহু আগে। মওদুদী অনুসারী জামায়াতে ইসলামী সত্তরের নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল। পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে একটি আসনও পায়নি পূর্ববাংলা থেকে। পাকিস্তানের দুই অংশেই তারা প্রার্থী দিয়েছিল। জামানত বাজেয়াফত হয়েছে অনেকের। খোদ পাকিস্তানে তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। পাকিস্তানের পুরনো এই দলটির কোন জনসমর্থন নেই। তবে সেনা ও গোয়েন্দাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে আসছে। বাংলাদেশের জামায়াত পরিচালনায় পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় জামায়াতের অর্থ ও অস্ত্রবল সহায়তা পেয়ে আসছে।

জামায়াতও তার সহযোগী সংগঠনগুলোর নারকীয় বীভৎস চেহারা ফুটে উঠেছিল একাত্তরের পঁচিশে মার্চ, অপারেশন সার্চ লাইটের পর। ২৫ মার্চ ও পরবর্তী সময়ে যে সব শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবীদের বেছে বেছে হত্যা করা হয়েছে, তার তালিকা মার্চের অসহযোগ আন্দোলনের সময়ই টিক্কা খানের হাতে তুলে দিয়েছিল জামায়াতে ইসলামী নামক দলটিই। আইয়ুব খানের শাসনামলে বিভিন্ন সরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও সংস্থায় জামায়াতপন্থীরা ক্রমশ আসন গেড়ে বসে, যাদের মুখোশ উন্মোচিত হয় একাত্তর সালে।

কাকতালীয় হলেও বাস্তব যে একাত্তর সালের দশ এপ্রিল বিকেলে যখন মুজিবনগর সরকার ঘোষিত হয়, একই দিন সকালে ঢাকায় শান্তি কমিটি গঠিত হয় টিক্কা খানের দরবারে। তাতে 'পালের গোদা' ছিলেন নরঘাতকখ্যাত গোলাম আযম। সঙ্গে ছিলেন মুসলিম লীগ নেতা খাজা খয়ের উদ্দিনসহ আরও অনেকে। তাদের সঙ্গে আরও একজন ছিলেন। যিনি নির্বাচনে জাতীয় পরিষদে সামান্য ভোটের ব্যবধানে জয় লাভ করেছিলেন। সেই নুরুল আমিন। যে কিনা ষোলোই ডিসেম্বর পাকিস্তানের পরাজয়ের পর ইসলামাবাদে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। তারই সঙ্গে সত্তরের নির্বাচনে বিজয়ী অপর প্রার্থী স্বতন্ত্র রাজা ত্রিদিব রায় হলেন সে দেশের সংখ্যালঘু মন্ত্রী। আওয়ামী লীগের বাইরে যে দু'জন নির্বাচিত হয়েছিলেন, এরাই তারা এবং এরা পাকিস্তানের সেবাদাস হিসেবে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ভৃত্যের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। পাকিস্তানীরা এই দু'জনকে বিদেশীদের কাছে প্রদর্শন করতেন এই বলে যে, এরা হচ্ছে সাচ্চা পাকিস্তানী। বাঙাল মুলুকে জন্মেও এরা না-বাঙালী এবং পাকিস্তানের জন্য জান কোরবান দিতে পারেন। একাত্তরের পরও এরা জন্মভূমিতে ফিরতে পারেনি। ফেরেওনি। সেই সাহসও তাদের ছিল না। যেমন ছিল না মুসলিম লীগ ঢাকার নবাব বংশধর খাজা খয়ের উদ্দিনেরও। একাত্তরের পর গ্রেফতার হয়েছিলেন, পরে তাকে পাকিস্তান পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। সেখানে গিয়ে আর রাজনীতির খাতায় নাম লেখাননি জানে প্রাণে বেঁচে যাওয়া বাঙালী ও স্বাধীনতাবিদ্বেষী এই খাজা। কিন্তু সাহস দেখিয়েছিল বটে নরঘাতক গোলাম আযম। পঁচাত্তরপরবর্তী সামরিক জান্তা শাসক জিয়াউর রহমানের সঙ্গে আঁতাত করে তিনি পাকিস্তানী পাসপোর্ট নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে আসেন। যে বাংলাদেশের বিরোধিতায় গোলাম আযম ও তার ক্যাডাররা লাখ লাখ বাঙালী হত্যায় পাকিস্তানী হানাদারের সহযোগী হিসেবে মাঠে নেমেছিল, তাদের পুনর্বাসনে জিয়া সক্রিয় ছিলেন। সেই তাদের সমন্বয়ে গঠিত জামায়াতে ইসলামী জিয়ার হাত ধরে অনেকটা পথই হেঁটেছে। আর তাই আজ বেগম জিয়া তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে, তাদের কাঁধে ভর করে দিনগত পাপক্ষয় করে যাচ্ছেন। এটাই তার জন্য স্বাভাবিক। 'পতিই পরম গুরু'Ñ এই আরাধ্য যার, সেই বেগম জিয়া স্বামীর আদর্শের মধ্যে এই একটিকে প্রবলভাবে আঁকড়ে রেখেছেন। কখনও দূরে ঠেলে দেন না। বরং ক্ষমতার অংশীদার করেছেন। এমনকি গাড়িতে জাতীয় পতাকা দিয়েছেন। অথচ এই নরাধমরা রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হওয়ার কথাই ছিল না। বিশ্বের কোথাও যুদ্ধাপরাধী, এমনকি তাদের বংশের সদস্য বা উত্তরসূরিদের রাজনীতি এমনকি সামাজিক ক্ষেত্রেও প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। অথচ বাংলাদেশে নরঘাতককুলকে সেই সুযোগ দিয়েছিল সেক্টর কমান্ডারখ্যাত জিয়াউর রহমান প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাবলে। তারপরও এই ঘাতকরা একাত্তরের চর্চা অব্যাহত রাখে। গুপ্তহত্যা, টার্গেট কিলিং, রগকাটার মতো সব গুরুতর অপরাধে এরা জড়ায়। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে তাদের নেতাদের ফাঁসি ও জেলে থাকার কারণে দলের মাঝারি ও নিচু পর্যায়ের নেতাদের অনেকে জঙ্গী খাতায় নাম লিখিয়েছে। এসব বৃত্তান্ত এখন ক্রমশ প্রকাশিত হচ্ছে। ছাত্রশিবিরের নাম সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। জামায়াতের প্রতি তাদের আশীর্বাদ ও স্নেহধন্য এখনও পুরোপুরি বিলোপ হয়নি। 'মডারেট ইসলামী দল' হিসেবে জামায়াত খ্যাতি পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে। সৌদি আরবের অর্থ ও অস্ত্রবলে বলিয়ান হয়ে জামায়াতের তৎপরতা এদেশবাসী দেখেছে এবং এখনও দেখছে, তা মুছে যাবে না। জামায়াত বাংলাদেশের সমাজ জীবনকে কলুষিত করেছে একাত্তর সাল থেকে।

বাংলাদেশের শক্তিশালী মানুষ সংগঠিত হওয়ার আগেই একাত্তরের এপ্রিলে জামায়াত-শিবির সংগঠিত রূপ পরিগ্রহ করে। স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরুতে তা নস্যাত করার জন্য তারা সশস্ত্র রূপ নেয়। এপ্রিলের শেষে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর নামে সশস্ত্র সংগঠন আল বদর গঠন করে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘ। শিক্ষিত জামায়াতও ছাত্রসংঘ নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে জামালপুরে প্রথম গঠিত হয় আল বদর বাহিনী। প্রধান উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক দৃষ্টিকোণ থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধরত বাঙালী জনগোষ্ঠীকে পাকিস্তানী জীবনদর্শনে বিশ্বাসী জনগোষ্ঠীকে রূপান্তরিত করা। পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর সঙ্গে যোগসাজশে বদর বাহিনী সার্বিকভাবে জামায়াতে ইসলামী তথা গোলাম আযমের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হতো। স্বাধীনতাকামী বাঙালীদের খুঁজে বের করা, হিন্দুদের বলপূর্বক মুসলমান বানানো, সেমিনার ও প্রচারপত্রের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ তথা আওয়ামী লীগবিরোধী প্রচারণা, প্রয়োজনে সশস্ত্রভাবে মোকাবেলা করা এবং জামায়াতী চিন্তাধারার প্রচার-প্রসার ঘটানো ও হানাদারদের সঙ্গে ক্ষমতার ভাগ-বাটোয়ারা করা ছিল এদের তৎপরতার মূল দিক। বদর বাহিনীর নৃশংসতা জনমনে ভয়াবহ আতঙ্কের সৃষ্টি করেছিল।

হানাদারদের দখল করা বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ও মহকুমায় জামায়াত ও ছাত্রসংঘের সদস্য সমন্বয়ে সশস্ত্র বদর বাহিনী গড়ে ওঠে। সর্বত্র এদের নিজস্ব ক্যাম্প ছিল। যেখান থেকে রেশন পরিচালনা করা হতো। এসব ঘাঁটিতে ধরে আনা হতো মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগ সমর্থক ও হিন্দুদের। ক্রমাগত নির্যাতনের মধ্য দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হতো। মুক্তিযুদ্ধ অপ্রতিরোধ্যভাবে বিজয়াভিমুখ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এদের তৎপরতা বাড়ছিল ভয়াবহভাবে। শেষের সেদিন ছিল ভয়ঙ্কর। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসা বিজ্ঞানের অধ্যাপক, লেখক, সাংবাদিক এবং সরকারী কর্মকর্তা থেকে শুরু করে নি¤œপর্যায়ের চাকরিজীবী এমনকি সামান্য শিক্ষিত বাঙালী মূলত বদর বাহিনীর নৃশংস শিকারে পরিণত হয়েছিল। পাকিস্তানী হানাদার উপদেষ্টা জেনারেল রাও ফরমান আলীর নীলনকশা অনুযায়ী বদর বাহিনী এই ঘৃণ্য তৎপরতা চালিয়েছিল। বিশেষত যুদ্ধ শেষের আগের কয়েকটি দিনে ঢাকায় সংঘটিত বুদ্ধিজীবী হত্যার মর্মান্তিক ঘটনাগুলো এর প্রমাণ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।

জামায়াতের আমির গোলাম আযমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হতো বদর বাহিনী। এর কেন্দ্রীয় প্রধান ছিলেন মতিউর রহমান নিজামী। আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ প্রাদেশিক প্রধান। মীর কাশেম আলী তৃতীয় নেতা ও মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ছিলেন প্রধান সংগঠক। জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম বদর বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকে পরিণত হয়। ১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ সালে আলবদর শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, 'আলবদর একটি নাম। একটি বিস্ময়! আলবদর একটি প্রতিজ্ঞা! যেখানে তথাকথিত মুক্তিবাহিনী, আলবদর সেখানেই। যেখানেই দুষ্কৃতকারী, আলবদর সেখানেই। ভারতীয় চর কিংবা দুষ্কৃতকারীদের কাছে আলবদর সাক্ষাত আজরাইল।'

১৯৭১ সালের ৮ নবেম্বর দৈনিক পাকিস্তান আগের দিন ঐতিহাসিক বদর দিবস পালন উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে ইসলামী ছাত্রসংঘের সমাবেশের ওপর প্রতিবেদন ছাপে। পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সাধারণ সম্পাদক ও বদরনেতা মীর কাশেম আলী বদর দিবসের শপথ হিসেবে তিনটি কর্মসূচী ঘোষণা করেন। প্রথমত. ভারতের আক্রমণ রুখে দাঁড়ানো, দ্বিতীয়ত. দুষ্কৃতকারীদের খতম করা এবং তৃতীয়ত, ইসলামী সমাজ কায়েম করা। জমায়েত শেষে 'আমাদের রক্তে পাকিস্তান টিকবে', 'বীর মুজাহিদ অস্ত্র ধর ভারতকে খতম কর', 'মুজাহিদ এগিয়ে চল, কলকাতা দখল কর' এবং 'ভারতের চরদের খতম কর' ইত্যাদি সেøাগান দিয়ে ঢাকার রাজপথে উল্লাস মিছিল করে। পরদিন দৈনিক সংগ্রাম লিখেছিল, 'মিছিলকারী জিন্দাদিল তরুণরা ভারতীয় দালালদের খতম কর'; 'হাতে লও মেশিনগান দখল কর হিন্দুস্তান', 'আমাদের রক্তে পাকিস্তান টিকবে' প্রভৃতি সেøাগানে রাজধানীর রাজপথ মুখরিত করে তোলে।

১৯৭১ সালের ২৩ নবেম্বর মীর কাশেম আলী এক বিবৃতিতে 'সৈনিক হিসেবে প্রস্তুত হয়ে যাওয়ার জন্য' সংগঠনের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান। এই সময়কালে প্রকাশিত এক প্রচারপত্রে বলা হয়েছিল, 'শত্রু আশপাশেই রয়েছে। তাই সতর্কতার সঙ্গে কাজ চালাতে হবে। মনে রাখবেন, আপনারা পাকিস্তানকে টিকিয়ে রাখার জন্যই কেবল যুদ্ধ করছেন না, এ যুদ্ধ ইসলামের। নমরুদের হাত থেকে মাতৃভূমিকে রক্ষার জন্য আমাদের আমিরের (গোলাম আযম) নির্দেশ পালন করুন।' আলবদরের নৃশংসতার বিবরণ স্বাধীনতার পর পর বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। যে সব চিত্র বিধৃত হয়েছে, তা হিটলারের গেস্টাপো, ভিয়েতনামের মাইলাই কিংবা লেবাননে প্যালেস্টাইনীদের সাবরা শাতিল শিবিরের হত্যাযজ্ঞের চেয়েও হাজার গুণ ভয়াবহ। বদর বাহিনীর হাতে শুধু ঢাকার শত শত বুদ্ধিজীবী, ডাক্তার, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, অধ্যাপক ও শিল্পীই প্রাণ হারাননি, বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে শত শত বিশিষ্ট নাগরিকও রেহাই পাননি। ভিন্নমতাবলম্বীর অনেক আলেমও তাদের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন। এসব মর্মন্তুদ ঘটনার অনেক বিবরণ আজও অপ্রকাশিত। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর পাশাপাশি আলবদর বাহিনীও পরাজিত হয়। তবে হানাদার বাহিনীর পাশাপাশি তারা আত্মসমর্পণ করেনি। মীর কাশেমসহ অন্যরা আত্মগোপন করে। কেউ পালিয়ে পাকিস্তানসহ অন্য দেশে চলে যায়।

১৯৭৭ সালে মীর কাশেম আলীর আত্মপ্রকাশ ঘটে। ইসলামী ছাত্রসংঘকে রূপান্তর করে গড়া হয় ইসলামী ছাত্রশিবির। মীর কাশেম আলী এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। গোলাম আযমের অর্থ সংগ্রহের তহবিলটা একসময় মীর কাশেমের কুক্ষিগত হয়। মীর কাশেম নিজেও অর্থ সংগ্রহে নেমে পড়েন। ছাত্রশিবির সভাপতির পদ ছেড়ে যোগ দেন সৌদি আরবভিত্তিক এনজিও রাবেতা আল আলমে ইসলাম নামক সংস্থায়। যে সংস্থাটি বাংলাদেশে আটকেপড়া পাকিস্তানীদের সাহায্য-সহযোগিতার কাজে নিয়োজিত থাকার আড়ালে জামায়াত-শিবির প্রতিষ্ঠার কাজ করতে থাকে। তাদের মাধ্যমে আর্থিক যোগানও আসতে থাকে। বাংলাদেশে ১৯৭২ থেকে '৭৫ সাল পর্যন্ত সময়কালে মসজিদ-মাদ্রাসা ধ্বংস করা হয়েছে, বহু মুসলমান নির্যাতিত ইত্যাদি বানোয়াট তথ্য দিয়ে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে অর্থ সংগ্রহের কাজ শুরু করেন মীর কাশেম।

ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি পদ ছাড়ার ৪ বছরের মাথায় মীর কাশেম আলী ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলাদেশে জামায়াতীদের কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা লাভের জন্য এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত তৎকালীন সৌদি রাষ্ট্রদূত ফুয়াদ আবদুল হামিদ আল খতিব। গোলাম আযমের ঘনিষ্ঠ বন্ধুটি রাষ্ট্রদূত থাকা অবস্থায় ব্যাংকটির পরিচালক মনোনীত হন। মীর কাশেম ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান হন। শুরুতে পরিচালকমন্ডলী ও শরিয়া কাউন্সিলের সব সদস্যই ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর মজলিশে শূরার সদস্য। এরা হলেন কামালউদ্দিন জাফরী, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, মুহম্মদ আলী, আবদুল জব্বার, শামসুদ্দিন আহমদ, নুরুল ইসলাম প্রমুখ। ব্যাংকের একটি যাকাত তহবিল রয়েছে। ব্যাংকের আয়ের শতকরা আড়াই ভাগ যায় যাকাত তহবিলে। এর প্রায় পুরোটাই জামায়াত তার রাজনৈতিক কর্মকা-ে ও দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করে। এই ব্যাংকের ঋণের সুযোগ-সুবিধা জামায়াতীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এমনকি জামায়াতের বাইরের কোনো লোককে কর্মচারীও বড় একটা নিয়োগ করা হয় না।

মীর কাশেম আলী ব্যাংকটি গঠনের পর অন্যান্য খাতেও প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ইবনে সিনা ট্রাস্ট, পরিবহন, টেলিযোগাযোগ, সংবাদপত্র, টেলিভিশন কেন্দ্র, শিক্ষা সব খাতেই বিনিয়োগ করেন। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তথা সিআইপি মর্যাদা নিয়েও বিদেশে সফর করেছেন। ইসলামী ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা মীর কাশেম ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশনেরও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ইবনে সিনা ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা মীর কাশেমের তত্ত্বাবধানে গড়ে উঠেছে ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যাল, ইবনে সিনা ডায়াগনিস্টিক সেন্টার, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতাল ইত্যাদি। মীর কাশেমের অর্থ দিন দিন এতই বেড়েছে যে, নানা খাতে অর্থলগ্নি করেছে। কেয়ারী নামে ১০টি কোম্পানির পরিচালক মীর কাশেম আলী। যাতে তার পরিবারের সদস্যদের মালিকানা রয়েছে। এর প্রধান কার্যালয় ধানম-ির সাতমসজিদ রোডে কেয়ারী প্লাজায়। কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার জন্য রয়েছে মীর কাশেমের একক মালিকানাধীন বিলাসবহুল পাঁচটি প্রমোদতরী। এছাড়া মীর কাশেম মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকাজ প্রশ্নবিদ্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি লবিস্ট প্রতিষ্ঠানকে দুই কোটি ৫০ লাখ ডলার দেন ।

মীর কাশেম ছিলেন একাত্তরের আলবদর বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা নেতা। দুই দশকের মধ্যেই তিনি ধনকুবেরে পরিণত হন। তার এই উত্থানের পেছনে যে কত মিথ্যাচার জড়িত, তা ক্রমে প্রকাশিত হচ্ছে। মীর কাশেম মূলত জামায়াতের অর্থদাতা। জামায়াতের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানই তার হাতে গড়া এবং তার ওপর নির্ভরশীল। ফাঁসি হওয়ার পর এখন পরিস্থিতি কি দাঁড়ায় সেটা স্পষ্ট হবে আগামীতে। মীর কাশেম ইডেন শিপিং লাইন্সের চেয়ারম্যান। প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রাস্ট, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও ফুয়াদ আল খতিব ফাউন্ডেশনের। ইসলামী ব্যাংক স্কুল ও কলেজের অন্যতম উদ্যোক্তাও মীর কাশেম।

১৯৭৭ থেকে ১৯৮৩ সালের এই স্বল্প সময়ের মধ্যে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক থেকে মীর কাশেম ক্রমেই পরিণত হন ধনকুবেরে। ১৯৭০ সালে চট্টগ্রাম সরকারী কলেজে স্নাতক শ্রেণীর ছাত্র থাকাকালে ইসলামী ছাত্রসংঘের কলেজ সভাপতি ছিলেন। ১৯৮৩ সাল হতে ক্রমে সম্পদশালী হয়ে ওঠার পেছনে কোন আলাদীনের চেরাগ হয়ত ছিল। তবে বাংলাদেশের মানুষ এই ঘাতকের দিন দিন ফুলে ফেঁপে ওঠার বিষয়টি টের পেতে অনেক সময় নিয়েছে। আজ হোক কাল হোক- এসব তথ্য একদিন প্রকাশিত হবেই। মীর কাশেম একাত্তরে বাঙালী খান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন তার নৃশংসতার কারণে। একজন যুবকের এক চোখ তুলে তার হাতে দেয়ার মতো অমানবিকতার নিদর্শন রেখে গেছেন। বাংলার মাটিতে তাদের আপাত ঠাঁই মিলেছে। কিন্তু তা হয়ত বেশিদিনের জন্য নয়। জাগ্রত বাঙালী এদের সমস্ত শিকড় উপড়ে ফেলে দেবেই। মীর কাশেমের ফাঁসির পর তরুণ প্রজন্মের অশ্রুসজল উচ্ছ্বাস রাজাকারমুক্ত দেশ উপহার দেবেই।

https://www.dailyjanakantha.com/details/article/215278/আল-বদর-থেকে-ধনকুবের-বাঙালী-খান

আরও পড়ুন:


ছয় যুদ্ধাপরাধীর বিচার, ইতিহাসের দায়মুক্তি
অনলাইন ডেস্ক
Published : Sunday, 4 September, 2016 at 10:17 AMUpdate: 04.09.2016 10:23:12 AM
  

'চট্টগ্রামের জল্লাদ' মীর কাসেমের ফাঁসি কার্যকর

চ্যানেল আই অনলাইন

অনলাইন ডেস্ক

৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ২২:৪৬
'চট্টগ্রামের জল্লাদ' মীর কাসেমের ফাঁসি কার্যকর

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। রাত ১০টা ৩০ মিনিটে কাশিমপুর কারাগারে তার মত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইজিপি একেএম শহীদুল হক। এরমধ্য দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শাস্তি দিয়ে কলঙ্কমোচনের পথে এগিয়ে গেল দেশ। details at: http://www.channelionline.com/news/details/%E2%80%98%E0%A6%9A%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%9C%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E2%80%99-%E0%A6%AE%E0%A7%80%E0%A6%B0/34693



















'মৃত্যুঘর' ডালিম হোটেল সুনসান
 
'মৃত্যুঘর' ডালিম হোটেল সুনসান

  মিঠুন চৌধুরী, চট্টগ্রাম ব‌্যুরো  বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

Published: 2016-08-30 16:59:18.0 BdST Updated: 2016-08-30 17:19:12.0 BdST

http://bangla.bdnews24.com/ctg/article1206503.bdnews

মীর কাসেমের ফাঁসি বহাল : ডালিম হোটেলের নির্যাতিতরা যা বললেন


ডালিম হোটেল আর মীর কাসেম অবিচ্ছেদ্য - Prothom-Alo

www.prothom-alo.com/.../ডালিম-হোট...
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে চট্টগ্রামের ডালিম হোটেল ও মীর কাসেম আলী হয়ে ওঠে অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। ডালিম হোটেলের আলবদর ক্যাম্প ছিল সব অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু। সব আটক, নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা এখানেই ঘটেছে। এই ডালিম হোটেলের নিয়ন্ত্রণ ও কর্তৃত্বে ছিলেন মীর কাসেম আলী। তাঁর পরিকল্পনা ও নির্দেশনায়...

একাত্তরে ডালিম হোটেল ছিল মৃত্যুর কারখানা - Prothom-Alo

www.prothom-alo.com › ... › বিবিধ



ডালিম হোটেল জাদুঘর করার দাবি চট্টগ্রাম গণজাগরণ মঞ্চের - bdnews24.com

9 hours ago - মুক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতা মীর কাসেমের নির্দেশেই চট্টগ্রাম টেলিগ্রাফ অফিসসংলগ্ন এলাকায় হিন্দু মালিকানাধীন মহামায়া ভবন দখল করে নাম দেওয়া হয় ডালিম হোটেল। সেখানে গড়ে তোলা হয় বদর বাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের ঘাঁটি এবং বন্দিশিবির। ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর্যবেক্ষণে এই ডালিম হোটেলকে ...

যেভাবে কাসেমের 'ডালিম হোটেল' টর্চার সেল হয়ে ওঠে | জাতীয় | ঢাকা টাইমস

6 hours ago - একাত্তরে চট্টগ্রামের আলবদর কমান্ডার মীর কাসেম আলীর বানানো টর্চার সেল 'ডালিম হোটেলকে' মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি জাদুঘর বানানোর দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্য এবং গণজাগরণ মঞ্চের চট্টগ্রামের নেতাকর্মীরা। এ লক্ষ্যে হোটেলটি অধিগ্রহণ করারও দাবি জানান তারা। রিভিউ খারিজের পর আজও ...

নৃশংসতার নির্মম সাক্ষী ডালিম হোটেল | 131618 | Bangladesh Pratidin

Mar 9, 2016 - মুক্তিযুদ্ধ শুরুর কয়েক মাসের মধ্যেই হিন্দু মালিকাধীন মহামায়া ভবন দখল করেন মীর কাসেম আলী। নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর আলবদর বাহিনী ভবনটির নাম দেয় 'ডালিম হোটেল'। এ হোটেলে চলতে থাকে মুক্তিকামী মানুষদের নির্যাতন। প্রতিদিন প্রায় অর্ধশত বাঙালিকে ডালিম হোটেলে ধরে এনে নির্যাতন করা হতো। এদের বেশির ভাগই ছিলেন ...

চট্টগ্রামে ডালিম হোটেল জামায়াতি টর্চার সেল - জিন্দা লাশ এর বাংলা ...

আলবদর বাহিনীর টর্চার সেল ডালিম হোটেল ১৯৭১ সালে ডালিম হোটেলে বাঙালিদের নির্যাতন নিয়ে একটি সক্ষাৎকার দিয়েছিলেন গণতন্ত্রী পার্টির প্রয়াত নেতা সাইফুদ্দিন খান। ২০০৬ সালের ৯ ডিসেম্বর দৈনিক সংবাদে সেটি প্রকাশিত হয়। ডালিম ভবনে নিয়ে যাওয়ার সময় 'জয় বাংলা' সেস্নাগান দিয়েছিলেন সাইফুদ্দিন খান মুক্তিযুদ্ধের সময় সাইফুদ্দিন ...

৭১'র ডালিম হোটেলের 'ঘাতক' থেকে 'মিডিয়া টাইকুন' মীর কাসেম | www ...

coxbangla.com/.../৭১র-ডালিম-হোটেলের-ঘাতক/
3 hours ago - দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভয়াবহ নাৎসি অত্যাচার কেন্দ্রগুলি নির্বিচারে খুন ও অত্যাচারের নিদর্শন হয়ে রয়েছে৷ আর চট্টগ্রামবাসীর কাছে ডালিম হোটেল সেরকমই অত্যাচারের কেন্দ্র৷ যাকে একবার এই হোটেলে নিয়ে যাওয়া হত তার বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা থাকত না৷ এই বাড়ির বিভিন্ন ঘর ছিল বিভিন্নরকম টর্চার সেল৷ আদতে বাড়িটির ...





__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___