ড. ইউনূসের আয়কর রেকর্ড অস্বচ্ছ, তদন্তে এনবিআর
গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আয়কর রেকর্ড পরিষ্কার নয়। তাঁর ঘোষিত আয়ের পরিমাণ, উৎস, পরিশোধিত কর, দান প্রদানসহ বিভিন্ন বিষয়ে অস্বচ্ছতা রয়েছে।
গত এক দশকে তিনি যে পরিমাণ আয়ের ওপর কর দিয়েছেন, করমুক্ত আয় হিসেবে দাবি করেছেন তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। সম্পদ ও প্রকৃত আয়ও গোপন করেছেন তিনি। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী ও সংস্থার সঙ্গে তাঁর আর্থিক লেনদেন রয়েছে। একটি অনুসন্ধানী সংস্থা দীর্ঘদিন ধরে দেশে-বিদেশে তাঁর সম্পদের তথ্যের অনুসন্ধান করেছে। গতকাল সোমবার এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানের দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।এদিকে ড. ইউনূসের রাজস্বসংক্রান্ত সব বিষয় তদন্ত করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তাঁর আয়-ব্যয়, সম্পদের হিসাব, বিভিন্ন ক্ষেত্রে তথ্য গোপনের অভিযোগ বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে ড. ইউনূসের কর ও আয়ের বিষয়ে কথা বলেছেন। পরদিন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ড. ইউনূসের কর সুবিধা অপব্যবহারের বিষয়ে তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে এনবিআরের অনুসন্ধানরত একটি সংস্থার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এনবিআর ড. ইউনূস ও তাঁর সহযোগী প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম ও কর ফাঁকির বিষয়ে তদন্ত করছে। তদন্তে ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি থাকাকালে ব্যাংকের তহবিল বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরের বিষয়টি আইনানুগভাবে হয়েছে কি না, ড. ইউনূস কর্তৃক ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে দান করা অর্থের উৎস ও সম্প্রতি রিও অলিম্পিকে মশাল বহনের সুযোগ গ্রহণের জন্য তাঁর প্রদত্ত চাঁদার উৎস অনুসন্ধান ও যাচাই করা, বকেয়া কর দাবি পরিশোধ না করে হাইকোর্ট বিভাগে দায়ের করা মামলাগুলো মনিটর করা, ড. ইউনূসের কাছ থেকে দানগ্রহীতা তিনটি প্রতিষ্ঠান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ট্রাস্ট, ইউনূস ফ্যামিলি ট্রাস্ট ও ইউনূস সেন্টারের দান গ্রহণের প্রকৃতি, আয়ের অন্যান্য উৎস ও গৃহীত দান-অনুদান ব্যয়ের বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় যে ড. ইউনূস ২০১১-১২ থেকে ২০১৩-১৪ কর বছর মেয়াদে দান কর আইন ১৯৯০-এর বিধান অনুুযায়ী প্রযোজ্য দান কর ফাঁকি দিয়ে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ট্রাস্ট, ইউনুস ফ্যামিলি ট্রাস্ট ও ইউনূস সেন্টারকে ৭৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা দান করেন। পরে আয়কর বিভাগ তাঁর উপরোক্ত দানের বিপরীতে প্রায় ১৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা কর ধার্য করে। ড. ইউনূস কর বিভাগের ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল কমিশনার ও কর ট্রাইব্যুনালে আপিল করে ব্যর্থ হয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন, যা বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।
সূত্র জানায়, এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) ড. ইউনূসের বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করছে। তাতে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি থাকাকালে নিয়ম ভেঙে আয়কর অব্যাহতি নেওয়া, পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে অনুমোদন না নিয়ে বিদেশ সফর ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন অভিযোগের উল্লেখ আছে।
এনবিআর মনে করছে, গ্রামীণ ব্যাংকের আয়কর রিটার্নে অসত্য আয়কর বিবরণী দেওয়া হয়েছে, যা আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-র ১৬৫ ধারা অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। গ্রামীণ ব্যাংকের ১৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আটটির পরিচালনাকাজে আইনবহির্ভূতভাবে কর অব্যাহতি সুবিধা নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সূত্র জানায়, ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকে কর্মরত থাকা অবস্থায় কোনো কাজেই গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সমর্থন নেননি। কারো অনুমোদন ছাড়াই ১৯৯৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংকের রিভলবিং ফান্ড থেকে ৩৪৭ কোটি ১৮ লাখ ৪৯ হাজার ৪৭৩ টাকা এবং একই ব্যাংকের সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট ফান্ড থেকে ৪৪ কোটি ২৫ লাখ ১২ হাজার ৬২৫ টাকা গ্রামীণ কল্যাণ নামের সহযোগী প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করেন। গ্রামীণ কল্যাণ ফের গ্রামীণ ব্যাংকের তহবিলে 'বোরোয়িং ফ্রম ব্যাংকস অ্যান্ড ফরেন ইনস্টিটিউশন' খাতে ১৯৯৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর ৩৮৭ কোটি ৫১ লাখ ৬২ হাজার ৯৬ টাকা ঋণ দেয়। এসব ক্ষেত্রেও কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি। গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ ১৯৮৩ অনুযায়ী এ ব্যাংক শুধু ভূমিহীনদের ঋণ দিতে পারে। ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠানে তহবিল স্থানান্তর করে গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ ১৯৮৩-র ১৯ ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করেছে।
সূত্র মতে, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৯৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অর্থ গ্রামীণ কল্যাণ প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরের দাবি করা হলেও প্রকৃতপক্ষে তহবিল স্থানান্তরিত না হওয়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের যে সম্পদ বিদ্যমান ছিল, তার উৎস হিসেবে গ্রামীণ কল্যাণ থেকে ওই অর্থ পুনরায় একই দিনে ঋণ হিসেবে কাগজে-কলমে স্থানান্তর দেখানো হয়েছে। এর মাধ্যমে সম্পদের বিপরীতে তহবিল না থাকলে 'অব্যাখ্যায়িত আয়' হিসেবে বিবেচনাযোগ্য অর্থের ওপর প্রযোজ্য আয়কর গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আয়কর অব্যাহতি কর্তন এসআরও নং-৯৩-আইন/২০০০-এর শর্ত ভঙ্গ হয়েছে। তহবিল স্থানান্তর সংক্রান্ত বিষয়ে গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণ কল্যাণের মধ্যে চুক্তি সম্পাদিত হয় ১৯৯৭ সালের মে মাসে। অথচ তহবিল স্থানান্তর দেখানো হয়েছে ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বরে, অর্থাৎ চুক্তি স্বাক্ষরের প্রায় পাঁচ মাস আগে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার গ্রামীণ ব্যাংককে আয়কর দেওয়া থেকে অব্যাহতি দিয়েছে, কিন্তু গ্রামীণ কল্যাণকে দেওয়া হয়নি। তাই তহবিল স্থানান্তর আইনবহির্ভূতভাবে হয়েছে। ১৯৯৭ সালের ১ জানুয়ারির পর গ্রামীণ ব্যাংকের 'সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট ফান্ড' থেকে তিন কোটি ৯৪ লাখ ১৩ হাজার ৬৫ টাকা গ্রামীণ কল্যাণে স্থানান্তর করা হয়। এ কার্যক্রম সঠিক ছিল না বিধায় প্রদত্ত তহবিল গ্রামীণ ব্যাংককে ফেরত দেওয়ার জন্য দাতা সংস্থা নোরাড ১৯৯৮ সালের ২৬ মে গ্রামীণ ব্যাংককে চিঠি দেয়। গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ৪৯তম সভার (২৮ জুলাই ১৯৯৮ তারিখে অনুষ্ঠিত) কার্যবিবরণী অনুযায়ী, নোরাডের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গ্রামীণ ব্যাংক কর্তৃক এনডাওমেন্ট ফান্ড হিসেবে ১৯৯৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত গ্রামীণ কল্যাণের কাছে স্থানান্তরিত ৩৯১ কোটি ৭০ লাখ ১৪ হাজার ৪১৩ টাকা থেকে নোরাডের ৭৫ কোটি ৪৫ লাখ ৭৩ হাজার ৯৩ টাকা গ্রামীণ ব্যাংকে প্রত্যর্পণ করা হয়েছে বলে সভায় জানানো হয়। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০০ সালের ১৩ এপ্রিল জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এসআরও নং-৯৩-আইন/২০০০ অনুসারে ১৯৯৭ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০০০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংকের আয়ের ওপর আরোপণীয় আয়কর সুপার ট্যাক্স ও মুনাফার কর প্রদান থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তবে শর্ত দেওয়া হয়, সব লভ্যাংশসহ ওই করের অর্থ একটি পুনর্বাসন তহবিল গঠন করে তাতে জমা করতে হবে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের কাজে অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। শর্ত অনুযায়ী পুনর্বাসন তহবিল গঠিত হলেও ১৯৯৯ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে এসব তহবিল থেকে ব্যবহার করা হয়েছে মাত্র এক কোটি ৩০ লাখ টাকা। ১৯৯৮ সালের বন্যার পরও ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে পুনর্বাসন তহবিলের ব্যবহার খুবই কম। এনবিআর মনে করছে, এ ক্ষেত্রে শর্ত লঙ্ঘিত হয়েছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০০৬ সালের ২২ মার্চ অনুষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৭৬তম সভায় ড. ইউনূসের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান প্যাকেজেস করপোরেশনকে ১৯৯০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত প্রদত্ত মূলধন ঋণ ও চলতি ঋণের সুদের হার ১০, ১২, ১৬-এর পরিবর্তে ৫ শতাংশ পুনর্নির্ধারণ করে হিসাব নিষ্পত্তি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় গ্রামীণ ব্যাংকের স্বার্থ বিবেচনা করা হয়নি। অনেক ক্ষেত্রে ড. ইউনূস ব্যাংকটির পরিচালনায় একচ্ছত্র স্বাধীনতা ভোগ করেছেন। তাঁর ব্যক্তিগত ইচ্ছার প্রতিফলনে অধিকাংশ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রচলিত আইনকানুন অনুসরণ করা হয়নি। এ ছাড়া আইনবহির্ভূতভাবে কর অব্যাহতি, বিদেশ থেকে ওয়েজ আর্নার্স সুবিধায় আনা অর্থ এবং সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে আইন ভঙ্গ করার বিষয়ও এনবিআর তদন্ত করছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ড. ইউনূসের কর ফাঁকির বিষয়টি এনবিআর তদন্ত করছে। তদন্তে বড় ধরনের অনিয়ম পাওয়া যাচ্ছে। রাজস্ব আইন অনুসারে এ বিষয়ে শাস্তির সুপারিশ করা হবে।
http://www.kalerkantho.com/pri
মঙ্গলবার । ৩১ জানুয়ারি ২০১৭ । ১৮ মাঘ ১৪২৩। ২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৩৮।
অনুদানের ১০০ মিলিয়ন ডলার নিয়ে ড: ইউনুসের অনিয়ম, আর তা চেপে যাওয়ার জন্য দাতাদের কাছে তদবীর!
__._,_.___
দরিদ্র অসহায় জনগোষ্ঠীর সাথে চরম উপহাস: ইউনুসের হিলারী পল্লী
একজন 'সচেতন মিথ্যুক' ডঃ ইউনূস স্যার !
ড: ইউনুসের দূর্ণীতি ও অনিয়ম
ক্ষুদ্রঋণ কি ব্যবসায়িক ভাবে সাফল ? প্রমাণ কি?
ড: ইউনুসের উটপাখি, উড়তে বললে হয়ে যায় উট!- যা কখনও উড়ে না। আর বোঝা নিতে বললে হয়ে যায় পাখি ! - যা বোঝা বহন করে না।
শেয়ার করুন..খুলে দিন মুখোস নোবেলপ্রাপ্ত সুদখোরের দুর্নীতি চিত্র ...
https://www.youtube.com/watch?v=WhavElkKMw4
Senior Correspondent, Chittagong, bdnews24.com
Published: 2013-10-17 19:15:20.0 BdST Updated: 2013-10-17 23:58:12.0 BdST
Former Grameen Bank Managing Director Muhammad Yunus has criticised the government's move to bring the microfinance institution under Bangladesh Bank supervision and has warned of thwarting the attempt.
Caught in Micro-Debt part 3
Caught in Micro-Debt part 4
Microfinance pioneer is under attack in his homeland
http://www.economist.com/node/17857429