Banner Advertiser

Monday, March 20, 2017

[mukto-mona] গণহত্যা দিবস নিয়ে কিছু কথা



http://www.kalerkantho.com/print-edition/sub-editorial/2017/03/21/476988

গণহত্যা দিবস নিয়ে কিছু কথা

গাজীউল হাসান খান

২১ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০



গণহত্যা দিবস নিয়ে কিছু কথা


তৎকালীন আধা সামন্ততান্ত্রিক ও আধা ঔপনিবেশিক পাকিস্তানে গণতন্ত্রের চর্চা কিংবা মূল্যবোধ সেভাবে কখনো বিকশিত হতে পারেনি। একদিকে পশ্চিম পাকিস্তানের বৃহৎ ভূস্বামীগোষ্ঠী এবং অপরদিকে সামরিক শক্তির চাপ ও আধিপত্যের কারণে একটি গণতন্ত্রমনা সহনশীল নাগরিক সমাজ সেখানে গড়ে ওঠার সুযোগ পায়নি। তার পাশাপাশি ছিল পশ্চিম পাকিস্তানি উঠতি পুঁজিপতিদের পদচারণ। সে কারণে পাকিস্তান ভেঙে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সেখানে কোনো টেকসই সাংবিধানিক ব্যবস্থা কিংবা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে উঠতে পারেনি। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ ও তাদের নেতা কিংবা প্রতিনিধিরা যখনই কোনো অর্থবহ গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের পদক্ষেপ নিয়েছেন, তখনই পাকিস্তানে নেমে এসেছে কোনো জরুরি আইন অথবা সামরিক শাসনের খড়্গহস্ত। পশ্চিম পাকিস্তান, বিশেষ করে পাঞ্জাবি সামন্তবাদী ও উঠতি পুঁজিপতিরা, আমলাতন্ত্র এবং তাদের সামরিক ও বেসামরিক বসংবদদের সহযোগিতায় রাষ্ট্র পরিচালনা ও প্রশাসনের ক্ষেত্রে সৃষ্টি করেছে চরম অচলাবস্থা কিংবা কঠিন প্রতিবন্ধকতা।

১৯৫৪ সালের নির্বাচনে হক-ভাসানী-সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট বিজয়ী হয়। মুসলিম লীগের পরাজয় কিংবা ভরাডুবির পর পূর্ব পাকিস্তানের নেতারা যখন এ অঞ্চলের মানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে একে একে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করলেন, ঠিক তখনই পাকিস্তানের অনির্বাচিত গভর্নর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ কুখ্যাত ৯২ক ধারা জারি করে বাতিল করলেন নির্বাচিত ও জনপ্রিয় যুক্তফ্রন্ট সরকারটিকে। পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের বিরুদ্ধে আনা হয়েছিলবিছিন্নতাবাদের অভিযোগ। পাকিস্তানিরা (পশ্চিম) দুই বছরও টিকতে দিল না একটি নির্বাচিত সরকারকে। তাদের অপশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতার ধারাবাহিকতায় অতিষ্ঠ হয়ে মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুুল হামিদ খান ভাসানী ১৯৫৭ সালে পাকিস্তানকে জানালেন, 'সালাম' অর্থাৎ রাজনৈতিক বিদায়। কিন্তু এ প্রক্রিয়ায় ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ নিলেন সেদিনের অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি পূর্ব বাংলার মানুষের স্বাধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ১৯৬৬ সালে ঘোষণা করলেন তাঁর ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি। এবং এক নিয়মতান্ত্রিক ও পরিকল্পিত পথে এগিয়ে নিয়ে গেলেন এ দেশের সংগ্রামী জনতাকে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুকে ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। তাই ৭ই মার্চ রমনার রেসকোর্স ময়দানে আয়োজিত এক ঐতিহাসিক জনসভায় বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করলেন—'এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। ' এমন একটি ঘোষণার জন্যই (বঙ্গবন্ধুর দিক থেকে) অপেক্ষা করছিল পাকিস্তানের সামরিক স্বৈরশাসকরা। বাঙালি জাতির দীর্ঘদিনের স্বাধীনতার স্পৃহাকে ধুলোয় মিশিয়ে দিতে তাই তাদের ওপর নেমে এসেছিল ২৫ মার্চ রাতের পৈশাচিক তাণ্ডব ও হত্যাযজ্ঞ।

ষাটের দশকে আমরা ছিলাম প্রগতিশীল বাম ধারার রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন ছাত্রাবাসে আমরা তখন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের (মেনন) শ্রেণিসংগ্রামের রণনীতি ও রণকৌশল নিয়ে কাজ করছিলাম। কিন্তু তখন পূর্ব পাকিস্তানের বিশাল বাঙালি জনগোষ্ঠীর জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের প্রশ্নটি আমাদের গভীরভাবে নাড়া দেয়। আমরা তখন ভৌগোলিক দিক থেকে বিচ্ছিন্ন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের আর্থ-রাজনৈতিক মুক্তির প্রশ্নে স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু করেছিলাম। গণতন্ত্রহীন পাকিস্তানের স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে জনগণকে সশস্ত্র লড়াই শুরু করার আহ্বান জানিয়েছিলেন আমাদের নেতারা। এরই মধ্যে ২৩ মার্চ ঢাকার পল্টন ময়দানে আয়োজিত এক জনসভায় আমার ছাত্র সংগঠন, বাঙলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহবুব উল্লাহ ঘোষণা করেছিলেন, স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা প্রতিষ্ঠার কর্মসূচি। আমাদের বদ্ধমূল ধারণা ছিল, পাকিস্তানের সামরিক স্বৈরশাসক ইয়াহিয়া খান নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভকারী বাঙালি রাজনীতিক বঙ্গবন্ধুর হাতে কখনোই ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না। সে নির্বাচনে পশ্চিম পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভকারী পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টোও তা চাচ্ছিলেন না। এ অবস্থায় কালক্ষেপণের অর্থ হবে সংখ্যাতীতভাবে পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালিদের হত্যা করতে দেওয়া। সে অবস্থায় ৩ মার্চ বঙ্গবন্ধুর তৎকালীন বাসভবনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনায় স্বাধীন বাংলার মানচিত্রসহ ডিজাইন করা পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল। আনুষ্ঠানিকভাবে সে পতাকা উত্তোলন করা হলেও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী বঙ্গবন্ধু শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করছিলেন একটি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সমাধানের উদ্দেশ্যে। কিন্তু পাকিস্তানের সামরিক স্বৈরশাসকরা কখনোই বিশ্বাস করেনি বাঙালিদের। তারা ২৫ মার্চের কালরাতে পূর্ব পাকিস্তানে যখন গণহত্যা শুরু করল, তখন দেশের বিভিন্ন বিমান কিংবা নৌবন্দরগুলো বন্ধ করে দেওয়ার সময় ছিল না। ২৫ মার্চ রাতের অন্ধকারে পুলিশ ও তৎকালীন ইপিআরসহ মানুষকে অকাতরে গুলি করে হত্যা করা শুরু করেছিল পাকিস্তান বাহিনী। সে হত্যাকাণ্ড দেশের সর্বত্র চলেছে মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসব্যাপী। ২৫ মার্চ রাতে বন্দি অবস্থায় দেশত্যাগের প্রাক্কালে বঙ্গবন্ধু যে স্বাধীনতাযুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে গেছেন, তার বেশ কিছু প্রমাণও পরে সংগ্রহ করা হয়েছে।

লোকসংখ্যা ও সম্পদের দিক থেকে পূর্ব পাকিস্তানের অবস্থান পাকিস্তানে অগ্রগণ্য হলেও তারা (পশ্চিম পাকিস্তানিরা) এ অঞ্চলকে তাদের উপনিবেশ বলে মনে করত। শোষণ-বঞ্চনা কিংবা পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ওপর নির্যাতন নিষ্পেষণ—সব কিছুকেই তারা পাকিস্তানের সংহতি ও ইসলামের দোহাই দিয়ে ঢেকে দেওয়ার অপচেষ্টা চালিয়ে গেছে '৪৭-পরবর্তী প্রায় ২৫টি বছর। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকসহ রাষ্ট্রীয় জীবনের সব ক্ষেত্রে নিজেদের ন্যায্য অধিকার চাওয়াই ছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের সবচেয়ে বড় অপরাধ। পশ্চিম পাকিস্তানি রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তি সব সময়ই তাদের কায়েমি স্বার্থে পূর্বাঞ্চলের বাঙালিদের দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করেছে। বাঙালিদের সব প্রতিবাদ ও প্রতিরোধকে তারা অস্ত্র দিয়ে মোকাবেলা করার অপচেষ্টা করেছে সব সময়। গণতন্ত্রহীন স্বৈরতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় বন্দুকের জোরে যেমন সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হয়, পশ্চিম পাকিস্তানিরাও তেমন করেই বাঙালিদের শাসন ও শোষণ করার চেষ্টা করেছে। এবং বাঙালিদের তীব্র প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের মুখে শেষ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানে তা গণহত্যায় রূপান্তরিত হয়েছিল।

স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে আখ্যায়িত করার প্রচেষ্টা একদিকে যেমন আমাদের ব্যর্থতাকে প্রতিফলিত করে, অপরদিকে শেষ পর্যন্ত একটি বিবেকসম্পন্ন প্রতিবাদী জাতির অনেক দেরিতে জেগে ওঠার স্মারক বহন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির নািসবাদী সরকার নেহাত ঘৃণাবশত ৬০ লাখ ইহুদি ধর্মাবলম্বী মানুষকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। এর পর থেকে গণহত্যাকে একটি আন্তর্জাতিক অপরাধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ১৯৪৮ সালে গণহত্যা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা এবং সে অপরাধে বিচার করার লক্ষ্যে ৯ ডিসেম্বর একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এবং পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ৯ ডিসেম্বরকে গণহত্যা স্মরণ দিবস হিসেবে গ্রহণ করে। তখন থেকেই প্রতিবছর ৯ ডিসেম্বরকে বিশ্বব্যাপী উদ্যাপন করা হয় বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এবারই প্রথম বাংলাদেশ অত্যন্ত গভীরভাবে এ গণহত্যা দিবসের তাত্পর্য উপলব্ধি করে। এবং তারই ভিত্তিতে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ২৫ মার্চকে বাংলাদেশে গণহত্যা দিবস হিসেবে চিহ্নিত করে সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাব পাস করে। ১৯৪৮ সালে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনের পর, অর্থাৎ জার্মানি, পোল্যান্ডসহ অন্যান্য রাষ্ট্রে ইহুদি নিধনের পরও বিশ্বব্যাপী অনেক গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে দারফুরে সংঘটিত গণহত্যার বিরুদ্ধে হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার হয়েছে। আর বিচার হয়েছে বসনিয়ার মুসলমানদের হত্যার কারণে কিছু সাবেক যুগোস্লাভ নেতার। রুয়ান্ডায় টুটসি সম্প্রদায়ের মানুষকে হত্যা করেছে সে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ হুটু সম্প্রদায়ের মানুষ। দারফুরে প্রায় ৮০ লাখ মানুষ গণহত্যায় প্রাণ হারিয়েছে বলে ধারণা করা হয়। একাত্তরের ২৫ মার্চ থেকে বাংলাদেশে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী ও তাদের দোসররা ৩০ লাখ নিরপরাধ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছে অথচ মুখে মুখে অনেক কথা বললেও এই সেদিন পর্যন্ত কেউ তাকে গণহত্যা বলে চিহ্নিত কিংবা আখ্যায়িত করেনি।

তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের ভাগ্যের আরো পরিহাস হচ্ছে, ১৯৪০ সালে শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক আনীত লাহোর প্রস্তাব। সে প্রস্তাবের মূল অংশে ছিল উপমহাদেশের পূর্ব ও পশ্চিমে অবস্থিত দুটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ নিয়ে গঠিত হবে প্রস্তাবিত পাকিস্তান নামের রাষ্ট্রটি। তবে দুটি অংশের যে কেউ প্রয়োজনে রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করতে পারবে। কিন্তু পরবর্তীকালে তা পরিবর্তন করে পাকিস্তানকে একটি একক স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে সাংবিধানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়। সে সুযোগে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানকে তাদের অপশাসন ও শোষণ-বঞ্চনার ক্ষেত্রে পরিণত করেছিল। পূর্ব পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালিদের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার বিরুদ্ধে আর্থ-রাজনৈতিক প্রতিকার হিসেবে ছয় দফা দাবিসংবলিত একটি প্রস্তাব তুলে ধরেন, যা অতি অল্প সময়ের মধ্যে সাধারণ মানুষের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা লাভ করে। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী,  বিশেষ করে সামরিক স্বৈরশাসকরা তাকে একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মসূচি হিসেবে আখ্যায়িত করে। সে কারণে তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পরবর্তী সময়ে পাকিস্তান ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ আনে। ২৫ মার্চের মধ্যরাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ঢাকায় তখন থেকেই শুরু হয়েছিল পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর নৃশংস হত্যাকাণ্ড। তারা চিরতরে রাঙালির স্বাধিকার আদায়ের স্বপ্নকে মুছে দিতে চেয়েছিল। নিশ্চিহ্ন করে দিতে চেয়েছিল পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের ব্যাপক প্রতিবাদী অংশকে। পাকিস্তানের তৎকালীন সামরিক শাসক ইয়াহিয়া সেদিন নাকি ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি পূর্ব পাকিস্তানে ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করে তাদের স্বাধীনতার স্বপ্নকে চিরতরে মুছে দেবেন। তার পাশাপাশি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এ দেশীয় দোসররা বেছে বেছে হত্যা করেছিল এ অঞ্চলের নেতৃস্থানীয় শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক ও বুদ্ধিজীবীদের। মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যকারী বলে আখ্যায়িত করে পূর্ব পাকিস্তানের অগণিত নিরস্ত্র-নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে গণকবর দেওয়া হয়েছিল। তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী জাতিগতভাবে বাঙালিদের পরিবর্তে চেয়েছিল পূর্ব পাকিস্তানের মাটি ও সম্পদ। ভিন্ন ভাষা (বাংলা), সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যগত কারণে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের মুসলমান বলে বিবেচনা করতেও অনেকে দ্বিধা করত। এই যে সাম্প্রদায়িক কিংবা জাতিগত ঘৃণা, তারই ভিত্তিতে সংঘটিত হয়েছে তাদের হত্যাকাণ্ড। সে নির্মম হত্যাকাণ্ডকে 'গণহত্যা' ছাড়া আর কী বলা যায়। সম্ভব হলে সে গণহত্যার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধবিষয়ক আদালতে বিচার চাওয়া যায় কি না তা-ও ভেবে দেখা প্রয়োজন। তবে শেষ পর্যন্ত ২৫ মার্চকে যে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের জন্য জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাব গ্রহণ করেছে, তার জন্য একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন জানাই।

লেখক : বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক

gaziulhkhan@gmail.com

http://www.kalerkantho.com/print-edition/sub-editorial/2017/03/21/476988

Related

In February 1971, Paki President Yahya said,

"Kill three million of them and the rest will eat out of our hands".

Ref: (Robert Payne, Massacre, The Tragedy of Bangladesh and the Phenomenon of 
Mass Slaughter Throughout History; P50; New York, Macmillan, 1973).



 [ MASSACRE  (ISBN: 0025952404)]

Massacre: The Tragedy at Bangla Desh and the Phenomenon of Mass Slaughter Throughout History Hardcover – February, 1973
by Robert Payne (Author)

  • www.independent.co.uk › News › World › Asia
    The Independent
    Feb 19, 2013 - ... the Pakistani President General Yahya Khan is recorded as saying in fury: "Kill three million of them, and the rest will eat out of our hands.
  • Is 3 million martyrs a myth? [The Mathematics of a Genocide]

  • User:Elizabeth smrity - Wikipedia, the free encyclopedia

    In February 1971, Yahiya khan compared, "kill three million of them, and the rest will eat out of our hands." It meant, if the killed three million of Bengalis, their ...
  • Tribunal judgements and the death toll in the 1971 war

    bangladeshwarcrimes.blogspot.com/.../tribunal-judgements-and-death-tol...
    • Feb 23, 2014 - a book by Robert Payne which quotes Yahya Khan as saying that "Kill three million of them and the rest will eat out of our hands". (emphasis ...
  • Death by Government - Page 315 - Google Books Result

    R. J. Rummel - 2011 - ‎Political Science
    Kill three million of them and the rest will eat out of our hands. — Yahya Khan, President of Pakistan In 1971, the self-appointed president of Pakistan and .


  • __._,_.___

    Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


    ****************************************************
    Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
    Call For Articles:

    http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

    http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

    ****************************************************

    VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

    ****************************************************

    "I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
                   -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





    __,_._,___