Banner Advertiser

Saturday, May 6, 2017

[mukto-mona] কাশেম বিন বাকার : ইসলামী মোড়কে যৌন সুড়সুড়ি



কাশেম বিন বাকার : ইসলামী মোড়কে যৌন সুড়সুড়ি


 জববার হোসেন

 প্রকাশিত: ১০:০৩ এএম, ০২ মে ২০১৭, মঙ্গলবার |  আপডেট: ০৩:৪৬ পিএম, ০২ মে ২০১৭, মঙ্গলবার
কাশেম বিন বাকার : ইসলামী মোড়কে যৌন সুড়সুড়ি

যৌন বাণিজ্যের বিশাল বাজার জুড়ে রয়েছে পর্ন ইন্ডাষ্ট্রি। রয়েছে নানান সেগমেন্ট। অসংখ্য সাইট। সে সব সাইট জুড়ে রয়েছে অসংখ্য ক্যাটাগরি। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে অ্যারাব, অ্যারাব সেক্স ইত্যাদি। এখন কেউ যদি 'অ্যারাব' শব্দটির কারণে এসব সাইটে ক্লিক করে ইসলামী সাইট ভেবে বসেন তাহলে যেমন বিপদ, তেমনি কাশেম বিন আবু বাকার'কে 'ইসলামী নভেলিস্ট' বা 'ইসলামী সাহিত্যিক' ভেবে থাকলে বিপদটি একই।

এসব পর্নে মেয়েরা বোরকা পরে, হিজাব পরে আসে। কখনো কখনো পুরুষেরা তাদের দেখে আকৃষ্ট হয়। কখনো বোরকাওয়ালী, হিজাবওয়ালীরা আকৃষ্ট হয় পুরুষের প্রতি। কখনো পুরুষ তাদের বোরকা খোলে। কখনোবা তারা নিজেরাই কামোত্তেজনা বোধ করে নিজেদের বোরকা খুলে ফেলে। বিষয় ঘুরে ফিরে একই। তারপর যা হবার তাই হয়, পর্নের সূত্র অনুযায়ী।

কাশেম বিন আবু বাকারের লেখা ও সাহিত্য, এসব পর্ন ভিডিও থেকে খুব বেশি দূরবর্তী কিছু নয়। বলা ভালো, এক ধরনের সফট পর্নোগ্রাফি। 'বিসমিল্লাহ' বলে চুমু খাওয়া, নিজেকে সামাল দিতে না পেরে বোরকার ভেতর হাত দিয়ে স্তন চাপ দিয়ে 'তওবা' করা, বাসর রাতে 'আমি জানি না, আমাকে শিখিয়ে দাও না গো', পরে 'আলহামদুলিল্লাহ' আপনাকে আমার জন্যেই তৈরি করা হয়েছে- ইত্যাকার বিষয় পাঠকের মনে যে চিত্রকল্প ও আবেদন তৈরি করে তা পর্নগ্রাফি নয় তো কী? তার কোন কোন নায়কের হিজাব টেনে ছিঁড়ে ফেলতে ইচ্ছে করে। রোরকার বাইরে থেকেই বোরকার ভেতরের অস্তিত্ব টের পান। কেউ যদি এসব বর্ণনাকেও 'ইসলামী' ভেবে বসেন তাহলে খুব মুশকিল।

কাশেম বিন আবু বাকারের পাঠক কারা? মূলত মাদ্রাসাগামীরা। মাদ্রাসাগামীদের পাঠ দেয়া হয়, যৌনতা বিষয়টি পাপ। মাদ্রাসার ছেলে মেয়েরা মিনেস্ট্রেশন, মাষ্টারবেশন এসব বিষয়কেও গর্হিত অন্যায় বলে ভাবে। ফলে তাদের মধ্যে যৌনতা বিষয়ে এক অদ্ভুত অবদমন কাজ করে। নায়ক পাপও করে, আবার তওবাও করে। অস্তাকফিরুল্লাহ পড়ে। এভাবেই যৌন অবদমিত মাদ্রাসাগামীদের মাঝে তিনি যৌনতাকে 'হালাল' করেন। জায়েজ করেন। 'তওবা'তো পড়া হয়েছে 'অস্তাকফিরুল্লাহ'তো বলা হয়েছে।

কাশেম বিন আবু বাকারের বই প্রচুর বিক্রি হয়। মানছি। তিনি জনপ্রিয়। সেটাও মানছি। কিন্তু তিনি কোথায় জনপ্রিয়, কাদের কাছে জনপ্রিয় সেটাও তো বিবেচ্য। শওকত আলী, হাসনাত আব্দুল হাই, হাসান আজিজুল হক, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী কখনোই অতো বিক্রি হয় না, চটি যত বিক্রি হয়। বিক্রি দিয়ে কী সাহিত্য ও সাহিত্যিক বিচার করা যায়?

কাশেম বিন আবু বাকারকেও যিনি বিক্রির দিক থেকে ছাড়িয়ে গেছেন, তার নাম লজ্জাতুননেছা। নারীর পর্দা, কেন পর্দা করা উচিত,পর্দা না করার গুনাহ, নারীর মান, মহিলাদের ওয়াজ, নারীদের হায়েজ নেফাজ এমন অসংখ্য বই লজ্জাতুননেছা'র নামে প্রকাশিত। আরেকটি বইয়ে বাজার সয়লাব। সেটিও 'ইসলামী' বই হিসেবে পরিচিত। স্বামী-স্ত্রীর মধুর মিলন। এই বইটিও বিক্রয় তালিকার শীর্ষে। ধর্মের নামে, ইসলামের নামে মিথ্যা, বিকৃত নানান বর্ণনা রয়েছে এতে। এতো অশ্লীল বর্ণনা আর কোনো বইয়ে আছে কী না আমার জানা নেই। এসব বইয়ের সঙ্গে কোরআন হাদীসের কী সম্পর্ক? এসব বই কে কী 'ইসলামী' বই বলব? বাংলাবাজার থেকে প্রকাশিত এসব বই বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, লঞ্চঘাট, হাট বাজার, গ্রামে গঞ্জে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে। দেখার কেউ নেই।

অনেক কাল ধরে লিখছেন কাশেম বিন আবু বাকার। এখন বয়সের কারণে লেখায় সক্রিয়ও নন তিনি। এএফপি এতকাল পরে তাকে কেন আবিষ্কার করলো তা বিস্ময় নয়, সন্দেহ জাগায়। ভয় হয়। বুঝবার বাকি নেই এর পেছনে কোন আন্তর্জাতিক বহুজাতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে। ডেইলি মেইল এর প্রতিবেদন আরো সন্দেহজনক। ভুলে গেলে চলবে না, উইকিপিডিয়া ডেইলি মেইল'কে ভুয়া হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশের শফি হুজুর মেয়েদের তেঁতুল বলার কিছুদিন পর, ডেইলি মেইল একটি অদ্ভুত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, কোথাকার কোন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বিশেষ মুহূর্তে পুরুষের 'টকটক' লাগে। অথচ এটি একেবারেই বিজ্ঞানহীন একটি তথ্য। তাহলে কেন একটি ভুল ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করল ডেইলি মেইল, কী ছিল তাদের উদ্দেশ্য?

অবশ্য একে ওকে তাকে দোষ দিয়ে লাভ কী? বাইরের লোক তো ষড়যন্ত্র করবেই। সোনার দেশ বাংলাদেশ। এদেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র হবে না তো দুনিয়ার কোন দেশ নিয়ে হবে? কী নেই এদেশে? ঝড় বন্যায় সব শেষ হয়ে যায়। আবার নতুন করে দাঁড়ায় মানুষ। হারতে হারতে জিতে যায়। এদেশের মানুষই তো সবচেয়ে বড় সম্পদ। যারা কারো জন্য, কোন কিছুর জন্য অপেক্ষা করে থাকে না, এগিয়ে যায় জীবনের পথে।

চেতনার যে ভিত্তিভূমিতে দাঁড়িয়ে এদেশ যাত্রা করেছিল, সেই যাত্রা পথ কে তো ভিন্ন পথে প্রবাহিত করেছি আমরাই। লোভে, লাভে, রাজনৈতিক সুবিধা নেবার জন্যে। যে হেফাজত ৫ মে দেশ অচল করে দেবার ষড়যন্ত্র করেছিল, হুমকি দিয়েছিল, লণ্ডভণ্ড করেছিল রাজধানী, সেই হেফাজত প্রধানই পরে আদরণীয় হয়ে উঠে। ছাড় দেয়া হয় তাদের। আহ্লাদে, আস্কারায় মৌলবাদের হেফাজতি চারাগাছ বাড়তে থাকে। তাদের তালিকা ধরে চলে পাঠ্যপুস্তক সংশোধন প্রক্রিয়া। লেখকদের তারা হিন্দু মুসলমান দু'দলে ভাগ করে, ঐতিহ্যের মঙ্গল শোভাযাত্রা তাদের কাছে 'হিন্দু কালচার', তারা ভাস্কর্য, নানান স্থাপত্য নিদর্শন সরিয়ে নিতে উঠে পড়ে লেগেছে। আমরাই এ চারাগাছের শিকড়ে জল ঢেলে এখন রীতিমত বৃক্ষে পরিণত করেছি।

তেঁতুল শফি'রা যে সমাজের স্বপ্ন দেখেন, বাস্তবায়ন চান, একজন কাশেম বিন আবু বাকার তারই সাহিত্য রুপকার। যিনি নারীকে যৌনবস্তু, সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র হিসেবে গল্প উপন্যাসে নিয়ে আসেন। যার উপন্যাসে বিয়ের পর মেয়েদের চাকরি করাকে নিরুৎসাহিত করা হয়, কেবল পতি সেবার মগ্ন থাকতে বলা হয়। যিনি একই সঙ্গে একাধিক স্ত্রী রাখাকে বৈধ মনে করেন। তিনি নিশ্চয়ই হেরেমেও বিশ্বাস করেন। একজন লেখকের 'ইনটেনশন'ই তার সবচেয়ে বড় পরিচয়। কাশেম বিন আবু বাকারের যেকোনো উপন্যাসের প্রথম পাঁচ পাতা পাঠেই তার যৌন সুড়সুড়ির ইঙ্গিতটি, উদ্দেশ্যটি স্পষ্ট হয়ে উঠে। যা বুঝবার জন্যে অনেক বেশি মেধাবী হবার, ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের প্রয়োজন নেই।

যারা বটতলার এই লেখককে, হিরো আলমের মতো হিরো বানাচ্ছেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় 'ইসলামী নভেলিস্ট' বলতে চাচ্ছেন, বোঝা যায় তারা কী চান? তারা তেঁতুল শফি'দের পৃষ্টপোষক। এখানে যে হোমগ্রোন মৌলবাদ রয়েছে, ধর্মান্ধতা রয়েছে, সেই নিবু নিবু আগুনে ঘি ঢেলে একজন কাশেম বিন আবু বাকারকে 'লিজেন্ড' বানানোর এবং বাংলাদেশকে মৌলবাদী রাষ্ট্র প্রমাণের অপচেষ্টা ছাড়া এ আর কিছুই নয়। অথচ কাশেম বিন আবু বাকার ইসলামের প্যাকেটে আদিরসাত্মক, কামোত্তেজক, যৌন সুড়সুড়িদাতা ছাড়া আর কিছুই নন।

লেখক : সম্পাদক, আজ সারাবেলা। ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, মিডিয়াওয়াচ। পরিচালক, বাংলাদেশ সেন্টার ফর ডেভলপমেন্ট জার্নালিজম অ্যান্ড কমিউনিকেশন। সদস্য, ফেমিনিস্ট ডটকম, যুক্তরাষ্ট্র।

এইচআর/জেআইএম

https://www.jagonews24.com/opinion/news/262837/কাশেম-বিন-বাকার--ইসলামী-মোড়কে-যৌন-সুড়সুড়ি


আরও পড়ুন:    

সময় চিত্র

কাশেম বিন আবু বাকার ও আমাদের মনস্তত্ত্ব 

by আসিফ নজরুল


আসিফ নজরুলঅধ্যাপকআইন বিভাগঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


                                                                                                                                                

                                            ০৭ মে ২০১৭, ০১:১৬
                                              প্রিন্ট সংস্করণ




Story image for কাশেম বিন আবু বাকার from BBC বাংলা

কাসেম বিন আবুবাকারের লেখা নিয়ে এবার ইসলামপন্থীদের আপত্তি

BBC বাংলা-Apr 28, 2017
তিনি বলেন, "মেইনস্ট্রীমের বাইরে একজন বড় জনগোষ্ঠী আছে এবং সেখানে বয়সেরও একটা বিষয় আছে। কাশেম বিন আবু বাকার সেই জায়গাতেই আঘাত করেছেন। আমাদের দেশে যখনি কোন সাহিত্যিক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে যেমন হুমায়ুন আহমেদ কিংবা কাজী আনোয়ার হোসেনকে নিয়েও বিতর্ক হয়েছে বিভিন্ন সময়। এতে তাদের কিছু আসে যায়নি""।
Story image for কাশেম বিন আবু বাকার from Dhakatimes24

কাসেম বিন আবু বাকারের কষ্ট প্রেমিকাকে না পাওয়া

Dhakatimes24-Apr 30, 2017
কাসেম বিন আবু বাকার। সম্প্রতি বিদেশের কয়েকটি মিডিয়ায় তাকে নিয়ে লেখা হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিপুল আলোচনায় আসেন তিনি। কেউ কেউ নানাভাবে তার সমালোচনা করছে। আবার তার সমর্থকেরও অভাব নেই। বিশেষ করে প্রেমকে উপজীব্য করে ইতিমধ্যে আশিটির বেশি উপন্যাস লিখেছেন ৮০ বছর বয়সী এই লেখক। আর এসব উপন্যাসের ...



__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___