Banner Advertiser

Friday, June 16, 2017

[mukto-mona] ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বাঙালি হিন্দুর 'হিন্দুত্ব' বাঁচাতে তোড়জোড় - মালবী গুপ্ত



ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বাঙালি হিন্দুর 'হিন্দুত্ব' বাঁচাতে তোড়জোড়

  • ৫ মে ২০১৭




আমরা যা নই, তা হওয়ার জন্য হঠাৎই দেখছি অনেকে একেবারে উঠে পড়ে লেগেছি। এটা ঠিকই যে, পশ্চিমবঙ্গে আমরা অনেকেই এখন পাঁচমিশেলি বাঙালি। তবু এতদিন এখানে 'বাঙালি হিন্দু' হিসেবে আমাদের কোনও বিশেষ পরিচিতির খোঁজ পড়েনি। এবং যে ধর্মীয় পরিচয়ের জামাটি সম্পর্কে আমরা এতদিন উদাসীন ছিলাম, আমাদের ভাঁড়ারে না থাকা সেই জামাটি বাইরে থেকে আমদানি করতে হঠাৎই যেন বেশ তৎপর হয়ে উঠেছি।

দেখে শুনে তো আমার মনে হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি হিন্দুরা সহসা যেন আত্মপরিচয়ের গভীর সঙ্কটে পড়ে গেছে। যে সঙ্কট থেকে উদ্ধারের একমাত্র হাতিয়ার হচ্ছে আমাদের ধর্ম।

অন্তত রাজনৈতিক নেতা নেত্রীরা আমাদের সে কথা বিশ্বাস করাতে সচেষ্ট হচ্ছেন। অথচ কে না জানে, যে নিজেদের স্বার্থে, থুড়ি জনগণের স্বার্থে, তাঁরা ধর্মকে চিরকাল‍ই ব্যবহার করে এসেছেন। এবং এখন তো দেখা যাচ্ছে ধর্মকে একেবারে কমোডিটিই বানিয়ে ফেলা হচ্ছে।

যেমন হঠাৎই দেখছি পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের (হিন্দু বাঙালি) মধ্যে 'হিন্দুত্ব' জাগিয়ে তোলার একটা চেষ্টা শুরু হয়ে গেছে। সম্প্রতি ‍ 'হিন্দুত্ব'র সংজ্ঞা বা তার ব্যাখ্যা নিয়ে রাজনৈতিক নেতা নেত্রীরা কোমর বেঁধে আসরে নেমে পড়েছেন।

টেলিভিশনের চ্যানেলে চ্যানেলে তাঁরা হিন্দু শাস্ত্রজ্ঞের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে প্রতিপক্ষকে একেবারে বুঝিয়েই ছাড়তে চাইছেন - হিন্দু ধর্ম কি?


              
DIBYANGSHU SARKAR/AFP/GETTY IMAGES
Image captionকলকাতায় প্রতিমা বিসর্জন: পূজা পার্বণ যতটা না ধর্মীয়, তার থেকে বেশি সামাজিক উৎসবের রূপ নিয়েছে।

দেখে শুনে মনে হচ্ছে কেউ রামের হাত ধরে, কেউ বা হনুমানের লেজ ধরে প্রবল হিন্দু হয়ে ওঠার প্রতিযোগিতায় মাঠে ময়দানে নেমে পড়েছে। এবং ধর্ম নিয়ে রীতিমতো যেন কাড়াকাড়ি শুরু হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে একটা হাস্যকর পরিস্থিতি।

কিন্তু এই সব তর্ক বিতর্কের মাঝে আমরা একেবারেই মনে রাখি না গ্রামীণ বাংলার কথা। যেখানে বেশিরভাগ বাঙালির (হিন্দু, মুসলিম) বাস।

হয়তো অনেকে জানিই না বা খেয়ালও করি না যে, বৃহত্তর অর্থে বাঙালির আত্মপরিচয়ের সঙ্গে যে দেশজ ও লোকায়ত সংস্কৃতি ওতপ্রোত, সেখানে হিন্দু - মুসলমানের আচার ব্যবহারের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক ‍ঐতিহ্যের একটা ফল্গু ধারা মিশে ছিল। আজও যা একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় নি।

সেটাই স্বাভাবিক। কারণ বাঙলার বেশিরভাগ মুসলমানরা তো একদা হিন্দু সমাজ থেকেই ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন।

তাই যেখানে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান কখনও নিভৃতে, কখনও দলগত বা সামাজিক ভাবে পালিত হয়ে এসেছে, সেখানে আচার আচরণে পারস্পরিক বিরূপতা বা অসহিষ্ণুতা সেভাবে প্রকাশ পায়নি।

অবশ্য এমন নয় যে কখনও কোথাও কদাচৎি কোনও উত্তেজনার স্ফুলিঙ্গ জ্বলে ওঠেনি। যে উত্তেজনায় রসদ জুগিয়েছে রাজনীতির কারবারিরা, তবে তা অচিরে নিভেও গেছে। এবং সেই হিসেবে দেখতে গেলে সংখ্যা তত্ত্বের বিচারে ধর্ম নয়, বরং রাজনৈতিক দাঙ্গায়, গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে কি পশ্চিমবঙ্গে, কি বাংলাদেশে হিংসা ও মৃত্যু ঘটেছে অনেক বেশি। আজও ঘটে চলেছে।

কলকাতার নাখোদা মসজিদে ঈদের জামাতছবির কপিরাইটDIBYANGSHU SARKAR/AFP/GETTTY IMAGES
Image captionকলকাতার নাখোদা মসজিদে ঈদের জামাত: বিশ্বে বাঙালি হিসেবে যে জনগোষ্ঠী পরিচিত, তার বেশিরভাগই মুসলমান

আমার মনে হয় শহরে বিশেষত কলকাতায় বসবাসকারী মুসলমানদের হয়তো বেশিরভাগই উর্দুভাষী। যাঁদের পূর্বপুরুষরা একদা কোনও সুলতানদের প্রতিনিধি বা নবাবদের হাত ধরে এসেছিলেন। যাঁদের ভাষা বা অন্যান্য কিছু ব্যবহারিক কারণে পারস্পরিক একটা দূরত্ব থেকে গেছে।

তাই কয়েক প্রজন্ম বাংলার বাসিন্দা হয়েও 'বাঙালি' নয়, 'ওরা মুসলমান' কেবল এই পরিচয়টাই বহন করে চলেছে।

অথচ আমরা ভুলে যাই বিশ্বে বাঙালি জাতি হিসেবে যে জনগোষ্ঠী পরিচিত (বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ মিলিয়ে) তার বেশিরভাগই মুসলমান ধর্মের মানুষ। হিন্দু বাঙালি সেখানে সংখ্যালঘু।

কি জানি হয়তো সংখ্যালঘুর হীনমন্যতা থেকেই পশ্চিমবঙ্গে বাঙালি হিন্দুদের হিন্দুত্ব জাগিয়ে তোলার ঐকান্তিক বাসনা আজ রাজনৈতিক নেতা নেত্রীদের মধ্যে জেগে উঠেছে।

এমনিতে বাঙালি হিন্দুরা কোনও দিনই ঠিক গর্বের সঙ্গে 'হিন্দুত্ব' প্রকাশে তেমন ব্যাকুলতা দেখায়নি। আমার তো মনে হয় পুজো পার্বণকেও যতটা না ধর্মীয়, তার থেকে বেশি সামাজিক উৎসবের রূপ দিয়ে তাতে মেতে ওঠাই বাঙালি হিন্দুদের মধ্যে চিরকাল প্রাধান্য পেয়েছে।

পুরোহিততন্ত্র বাঙালি মানসকে মনে হয় কখনও সেভাবে আচ্ছন্ন করতে পারেনি। পারলে হিন্দুদের তেত্রিশ কোটি দেব দেবী নিয়ে অনেক বাঙালি‍ যেভাবে ঠাট্টা তামাশা করে তা পারত না, ভারতের অন্যত্র তার জুড়ি মেলা ভার।


এই প্রসঙ্গে মনে পড়ছে ছোটবেলায় দেখতাম, মাটির সরা বা থালায় কিছু ফুল বেলপাতা আর সিঁদুর মাখানো কোনও অস্পষ্ট ছবি নিয়ে কেউ হয়তো 'মা শীতলা', 'মা মনসা', 'রক্ষাকালী' বা 'ওলাই চণ্ডী'র নাম করে বাড়িতে পয়সা চাইতে এসেছেন। বড়দের কেউ কেউ তখন বেশ ঠাট্টার সুরেই তাঁদের বলতেন, ''এমনি সাহায্য চাইলেই তো পারো বাপু, খামখা ও‍ই বেটি'দের নাম করা কেন? বেটি'রা যে বিষম খাবে।'' বা হয়তো বলতেন ''তোমাদের মা শীতলার এমনই দয়া যে, তাঁর কৃপা দৃষ্টিতে গায়ে বসন্ত হচ্ছে?''

এখনও বর্তমান প্রজন্মের বহু ছেলে মেয়েকেই, বিশেষত মেয়েদের দেখি সকালে কোনও না কোনও দেবদেবীর ছবি বা মূর্তিকে নিয়মিত ফুল, বেলপাতা দিয়ে পুজো করে। বছরে ব্রতও পালন করে দু'চারটে। খুব যে ভয় ভক্তিতে তেমনটা নয়, বরং অনেকেই একটা পারিবারিক রীতি বজায় রাখতে অভ্যাস বশত মা ঠাকুমাদের অনুসরণ করে চলেছে।

আবার বেশ আধুনিকাদেরও দেখছি, পরিবারে যেসব বার ব্রত পালনের কোনও দিন কোনও চল ছিল না, তারাও হঠাৎই সেই সব ব্রত উদযাপন শুরু করেছে, যা মূলত অবাঙালিদের অনুকরণে। সে কারণ যাই হোক না কেন, মনে হয় না সেই সব আচার অনুষ্ঠানেও ধর্ম'র কোনও দূরাগত বাতাসের ঝাপটা এসে কখনও লাগে।

আসলে এতদিন বাঙালি হিন্দুর প্রাত্যহিক জীবন চর্যায় ধর্ম'র প্রায় নিঃশব্দ বহমানতা তেমন ভাবে টের পাওয়া যেত না। ‍হঠাৎই বোধহয় কারও কারও মনে হচ্ছে হিন্দু সমাজে বাঙালি হিন্দুরা যেন ব্রাত্য হয়ে পড়েছে।

তাই কি কাড়া নাকাড়া বাজিয়ে তার ধর্মীয় পরিচিতিকে রাস্তায় বার করে আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে? কিন্তু সে‍ই উদ্যোগে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের এত সক্রিয়তা কেন?

সম্পর্কিত বিষয়

                                                                                                          



আরো পড়ুন:


পহেলা বৈশাখের 'হিন্দুয়ানী' নিয়ে চুলকানি

 0

                          
                   https://womenchapter.com/views/20139


বাংলাদেশে মোডারেট মুসলিমরা কিছু দিন ধরে... - আয়েশা সুলতানা আঁখি ...

বাংলাদেশে মোডারেট মুসলিমরা কিছু দিন ধরে বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে।বিভিন্ন লেখকের বই থেকে ... মজার ব্যাপার হল,এই মোডারেট গুলোকে এবার দেখলাম পহেলা বৈশাখকে হিন্দু উৎসব হিসেবে আখ্যা দিয়ে ইভেন্ট খুলেছে।কিন্তু সেটা তে সুবিধা ... আপনার আশেপাশের কোন মোডারেট মুসলমান বা ছাগু যারা পহেলা বৈশাখ নিয়ে চুলকানি দেখায় তাদের কে বর্ষ বরণের অনুষ্ঠানে দেখা মাত্র পুলিশকে জানান।আর যদি ..
                                       


                                       


__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___