Banner Advertiser

Sunday, July 9, 2017

[mukto-mona] ভারত : পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রদায়িকতা ছড়াতে মরিয়া বিজেপি



ভারত

পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রদায়িকতা ছড়াতে মরিয়া বিজেপি

সায়নদেব চৌধুরী
১০ জুলাই ২০১৭, ০০:২৩
প্রিন্ট সংস্করণ

পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক দৃশ্যপট দ্রুতই বদলে যাচ্ছে। এ বছরের এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে রাম নবমী অনুষ্ঠান পালন করে, পশ্চিমবঙ্গে যে অনুষ্ঠানের একেবারেই চল নেই। এর মধ্য দিয়ে তারা এক বিষাক্ত হিন্দুত্ব ছড়িয়ে দিল। সেদিন তারা তরুণদের হাতে তরবারি ও ছোরা দিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন শহর ঘোরাল। এটা ছিল নির্লজ্জতার চরম পরাকাষ্ঠা। এর মধ্য দিয়ে এই বিশ্বাসও ভেঙে গেল যে আরএসএস মুসলিমবিরোধী হিন্দুত্ববাদী প্রচারণা শুধু সামাজিক মাধ্যমে সীমিত রাখবে। তবে রাম নবমীতে যে শক্তির মহড়া হয়ে গেল, তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না। এটা এক সংগঠিত ও পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত কর্মসূচির অংশ ছিল, যার মধ্য দিয়ে স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলো আরএসএস ও তার সহযোগী সংগঠনগুলোর কাছ থেকে সম্পদ পাচ্ছে, যা শেষ হওয়ার নয়।

পশ্চিমবঙ্গে যে শুধু বিজেপি নোংরা খেলা খেলছে তা নয়, স্থানীয় ইসলামপন্থীরাও মাঠে নেমেছে। নিজেদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে তারা মুসলমানদের শিক্ষার সুযোগ ও কর্মসংস্থানহীনতার ইস্যু কাজে লাগাচ্ছে। এ ধরনের ষড়যন্ত্রের কারণে কখনো কখনো বিস্ফোরণমুখর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। রাজ্যে সম্প্রতি ঠিক তেমনই এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

ফেসবুকে এক নীতিগর্হিত মন্তব্যের জেরে বাংলার চব্বিশ পরগনা জেলায় যে দাঙ্গা লাগল, সেটার প্রত্যক্ষ কারণ হলো, ইসলামপন্থীরা রাজ্যের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে অবাধে চরমপন্থার বিস্তার ঘটাতে পারছে। গত কয়েক মাসে বাংলার বিভিন্ন জেলায় যেসব বিক্ষিপ্ত দাঙ্গা হয়েছে, এই দাঙ্গা তার ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ সংযোজন—উত্তরের মালদা থেকে কলকাতার নিকটবর্তী ধুলাগড় পর্যন্ত। একটা ব্যাপার ক্রমেই পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে, এসব হঠাৎ করে ঘটছে না। এগুলো একদম হিসাব ও সমন্বয় করে ঘটানো হচ্ছে, এখানে উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি উসকানি আছে। ফলে অনিবার্যভাবে সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, সম্পদনাশ ও সামাজিক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হচ্ছে, সমাজ আরও বিভক্ত হয়ে পড়ছে।

পশ্চিমবঙ্গ অনেক দিন ধরেই ডানপন্থীদের নজরে আছে, যার কারণ অনুমেয়। ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিকভাবে বহুকাল ধরে পশ্চিমবঙ্গে বিপুলসংখ্যক মুসলিম জনসংখ্যার বাস। ফলে হিন্দু রাষ্ট্রের ধারণা যতই বিকৃত শোনাক না কেন, পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া তা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হবে না। মুসলিম অন্ধবিশ্বাসের এক স্থানীয় ভাষ্য এই বিকৃত তত্ত্ব শক্তিশালী করছে। কিন্তু এই মেরুকরণের আরেকটি সূক্ষ্ম কারণ আছে।

কেরালার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গও আধুনিক যুগে ইউরোপীয় মিশনারি ও ভ্রমণশীল মানুষের আগমনের প্রথম জায়গা ছিল। ফলে এই দুটি রাজ্য বহির্বিশ্বের চিন্তার সঙ্গে বহুদিন ধরেই যুক্ত। গত ১৫০ বছরে ভারতের বুদ্ধিবৃত্তির বড় জোগানদাতা ছিল এই দুটি রাজ্য, যেটা আধুনিক ভারতীয় জাতিরাষ্ট্রের ভিত্তি নির্মাণ করেছে। আরএসএসের একগুঁয়ে বুদ্ধিবৃত্তি এবং ইউরোপীয় আলোকায়নের প্রতি ঘৃণার লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে এই আদর্শ। ফলে আরএসএসের কৌশলী 'ভারত' ধারণার শিকড় গভীরে প্রোথিত করার জন্য এই দুটি রাজ্যের বৃহৎ প্রতীকী মূল্য আছে, তা সে যতই অনুদার বা অবৈধ হোক না কেন। সেই লক্ষ্যে পশ্চিমবঙ্গ দখল শুধু কাঙ্ক্ষিতই নয়, খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।

ইসলামপন্থীরা দেখেছে, পশ্চিমবঙ্গ তাদের পাল্টা অভিযোগের একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। কিন্তু বিজেপি যেভাবে দখলদারির পরিকল্পনা করছে, তাতে ধাঁধায় পড়ে যাচ্ছি। প্রথমত, পশ্চিমবঙ্গে বহুদিন ধরেই সুশাসনের অভাব রয়েছে; সেখানে প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান, শিল্পায়ন, অবকাঠামো, স্বাস্থ্য ও দুর্নীতির মতো জনহিতকর ইস্যু রয়েছে, যেগুলো আমলে নিতে হবে। ফলে পশ্চিমবঙ্গে কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন দানা বেঁধে উঠতে হলে যৌক্তিকভাবেই এসব ইস্যু সামনে আনতে হবে।

দ্বিতীয়ত, পশ্চিমবঙ্গকে সাম্প্রদায়িক করাটা খুব সহজ হবে না, যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হয়েছে। সহজ হবে না কারণ, এখানকার অধিকাংশ গণপ্রতিষ্ঠান অর্থাৎ স্কুল, কলেজ, গণমাধ্যম ও বিচার বিভাগ ধর্মনিরপেক্ষতা ও তথ্যসমৃদ্ধ বিতর্কের দীর্ঘ ইতিহাসের পরিপ্রেক্ষিতে গড়ে উঠেছে। তৃতীয়ত, পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক ও খাদ্যাভ্যাস ভারতের অধিকাংশ অঞ্চলের মতো গত এক শতক কালে নানা বিচ্যুতির সময়ও অটুট থেকেছে। এই সংস্কৃতি ও খাদ্যাভ্যাসে নানা প্রভাব রয়েছে।

শেষতক, ১৯৪০-এর নির্মম দাঙ্গা এবং ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকের শান্ত সময়েও পশ্চিমবঙ্গ নির্লজ্জ সাম্প্রদায়িকতার দিকে ধাবিত হয়নি। যদিও পশ্চিমবঙ্গে ভারতের সবচেয়ে রক্তাক্ত ও নির্মম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে। এ প্রশ্ন করাই যায়, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ঢোকার জন্য আরএসএস বা বিজেপি সুশাসনজনিত ইস্যু না ধরে সাম্প্রদায়িক পথ ধরল। উত্তর ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী রীতি জোরপূর্বক চালুর চেষ্টা করে তারা কী অর্জন করবে? তাদের এই আত্মবিশ্বাসের কারণ কী?

সাম্প্রদায়িক রাজনীতি দিয়ে অল্প আয়াসেই কিছু অর্জন করা সম্ভব। অন্যান্য রাজ্যের সফলতায় বলীয়ান হয়ে রাজ্য বিজেপি উৎপাত শুরু করেছে। পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে, যেখানে কর্মসংস্থানের অভাব ও নিরাপদ জীবনযাত্রার নিশ্চয়তা নেই, সেখানে মানুষকে এক বেলা খাবার দিলে বা কিছু অতিরিক্ত টাকা দিলে বিপুলসংখ্যক বেকারকে দলে ভেড়ানো যাবে। এখন পর্যন্ত এরাই মাঠের সৈনিক হিসেবে কাজ করছে। তবে কিছু জায়গা বাদে অন্য কোথাও এই জঙ্গি মনোভাবাপন্ন মানুষের বড় সমাবেশ ঘটানো যাবে না।

সমস্যাটা সংখ্যা নিয়ে নয়, শহুরে মধ্য আয়ের পুরুষ বাঙালি শরণার্থীদের কাছ থেকে তারা যে মৌন সমর্থন পাচ্ছে, সেটাই সমস্যা। সমর্থন ভিত্তির কারণে যারা বাংলা বলে (বাম, কংগ্রেস বা তৃণমূল) আর যারা বলে না (জাতীয়তাবাদী), তাদের মধ্যকার পুরোনো বিভাজন কমে আসছে। সম্প্রতি সাবেক কিছু বামপন্থী বিজেপিকে সমর্থন দিয়েছেন। অন্যদের ক্ষেত্রে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস 'মন্দের' প্রতিমূর্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে, আর বামদের শূন্যস্থানটা পূরণ করবে বিজেপি। শেষমেশ স্থানীয় ওয়াহাবিরা মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে, মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কুয়াশাচ্ছন্ন, যার বদৌলতে এরা সীমান্তবর্তী জেলায় প্রভাব বিস্তার করতে পারছে। এই দলগুলো হয় বিজেপির ফাঁদে পা দিচ্ছে, না হয় পশ্চিমবঙ্গের এক অংশে ইসলামি ঝান্ডা গাড়ার চেষ্টা করছে।

দুভাবেই মানুষ ক্রমে ধরে নিতে শুরু করেছে, বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় রূপ সংহত করবে এবং এই উন্মাদ ওয়াহাবিদের দু-একটা শিক্ষা দেবে। এসব তুলনামূলকভাবে নতুন ঘটছে। বছরের পর বছর ধরে রাজ্যের বুদ্ধিবৃত্তিক ও বাণিজ্যিক সম্পদ অগ্রাহ্য করার কারণে এমনটা ঘটছে। কিন্তু সম্ভবত সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হচ্ছে বছরের পর বছর ধরে বাম শাসন ও জনসমর্থন থাকলেও তারা ভোটারদের গণতান্ত্রিক জনগণে রূপান্তরিত করতে পারেনি, যারা শিক্ষা, যুক্তি ও সহমর্মিতা দিয়ে শাসনকাঠামো বেছে নিতে পারে।

সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার প্রতিক্রিয়ায় রাজ্য যা করেছে, তা বোধগম্যই ছিল। প্রাথমিকভাবে তারা গণমাধ্যমকে বিপন্ন এলাকায় ঢুকতে দেয়নি। এরপর যখন তারা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে, তখন অশালীনভাবে বিজেপির ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দিয়েছে। সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামার পর মমতা ব্যানার্জি গভর্নরকে দোষারোপ করেছেন, কারণ তিনি সহিংসতা সামাল দেওয়ার মতো দলগত পরামর্শ দিয়েছেন।

পুলিশ অন্য সময় সাধারণত ক্ষিপ্রতার সঙ্গে বল প্রয়োগ করে, কিন্তু ধর্মীয় জঙ্গি বাহিনীর ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে সংশয় দেখা যায়। এ ছাড়া তৃণমূল কংগ্রেস ২০১১ সাল থেকে তেমন গুরুতর বিরোধী দলকে মোকাবিলা করছে না। এর সঙ্গে তারা একরকম ধাতস্থ হয়ে গেছে। কিছু সফলতা সত্ত্বেও মমতার সরকার দুর্নীতির আলো-আঁধারিতে রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক শূন্যতার মধ্যে অনায়াসে খেলে বেড়াচ্ছে (অনেকটা মোদির মতো)। মমতার কর্মকাণ্ডের গুরুতর তদন্ত ও শক্তিশালী বিরোধী কণ্ঠ উঠে এলে তাঁর পতন শুরু হয়ে যাবে। পশ্চিমবঙ্গের শাসন কেমন হবে এবং আগামী দিনে তাকে কোন প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হবে, এটাই তা নির্ধারণ করে দেবে।

এই মুহূর্তে বড় রাজনৈতিক পরিবর্তন হবে এমনটা বলার সময় আসেনি। সম্ভবত, পুরোনো ছাইভস্ম থেকে নতুন বামের উদয় হবে, যদিও তা হওয়ার জন্য একাধারে বেশ কিছু সাহসী ও কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এখনো আশা আছে, পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকেরা ঐতিহ্যগতভাবে আবারও একসময় প্রতিরোধ গড়তে শুরু করবেন। কিন্তু তৃণমূল ভুল করতে থাকলে এবং বামেরা বিপদগ্রস্ত থেকে গেলে বিজেপিই বড় দানটা মারবে। পশ্চিমবঙ্গ শুধু সীমান্তবর্তী ও জনবহুল রাজ্য নয়, এটি এখন সমস্যাগ্রস্তও বটে।

অন্য কথায়, পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুত্ব বিস্তারের পথে এসব ঐতিহাসিক ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতার পর যদি বিজেপি নিকট ভবিষ্যতে বিজয়ী হতে পারে, তাহলে ধরে নিতেই হবে, পশ্চিমবঙ্গের রক্ষা করার মতো কিছু নেই—কখনোই তেমন কিছু ছিল না।

অনুবাদ: প্রতীক বর্ধন দ্য ওয়্যার ডট ইন থেকে নেওয়া (ঈষৎ সম্পাদিত)।

সায়নদেব চৌধুরী: ভারতীয় লেখক। 

 

http://www.prothom-alo.com/opinion/article/1244601/পশ্চিমবঙ্গে-সাম্প্রদায়িকতা-ছড়াতে-মরিয়া-বিজেপি


Why Is the BJP Communalising West Bengal Instead of Offering It Good Governance?

West Bengal North 24 Parganas

Three battalions of paramilitary forces were sent to West Bengal's North 24 Parganas on Tuesday in the wake of communal clashes. Credit: IANS

The political locus of Bengal is rapidly shifting. In early April this year, the BJP used Ram Navami – an obscure festival in the local calendar – to flaunt a toxic brand of Hindutva, arming the children and youth with swords and knives, and making them march across Bengal's towns. It was a show of outright brazenness, pulverising the belief that many had that the RSS would confine its Muslim bashing-Hindutva campaign to social media mobilisation. However, the Ram Navami show of strength was not an isolated moment in Bengal. It was part of an organised and well-funded programme through which local Hindutva factions have been receiving undiminished resources from the RSS and its ilk.   ............

Read more at: https://thewire.in/154936/bjp-west-bengal-communalisation/

সম্পর্কিত বিষয় :

বাংলাকে গুজরাত বানাও, তেলঙ্গানা থেকে উস্কানি বিজেপি বিধায়কের

সংবাদ সংস্থা

৯ জুলাই, ২০১৭, ১৪:৩৯:৫১
|
শেষ আপডেট: ৯ জুলাই, ২০১৭, ১৪:৫২:৩৩

RAJA SING LODH

হায়দরাবাদের বিজেপি বিধায়ক রাজা সিংহ। -ফাইল চিত্র।




বাংলাকে গুজরাত বানাও, তেলঙ্গানা থেকে উস্কানি বিজেপি বিধায়কের





                                                                    


                                                                






__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___