Banner Advertiser

Friday, July 21, 2017

[mukto-mona] প্রহসনের ফাঁসি ও কর্নেল তাহের - হাসানুল হক ইনু




স্মরণ

প্রহসনের ফাঁসি ও কর্নেল তাহের

হাসানুল হক ইনু
২১ জুলাই ২০১৭, ০২:৪২
প্রিন্ট সংস্করণ

কর্নেল আবু তাহের, বীর উত্তম২১ জুলাই ১৯৭৬ সাল। ভোর চারটা। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার। শ্রাবণের আর্দ্র রাত বিদায় নিচ্ছে। এই দেশ, এই জাতি, এই সময় আর সমাজের ইতিহাসে এক কলঙ্কময় ঘটনা ঘটে গেল কারাভ্যন্তরে। মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখসমরে পা হারানো একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিসংগ্রামের অন্যতম বীর সেনানায়ক কর্নেল আবু তাহের, বীর উত্তমকে তাঁরই মুক্ত করা স্বদেশভূমিতে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হলো। ক্ষুদিরাম বসু, সূর্যসেনের সঙ্গে, গত শতাব্দীর শেষ প্রান্তে আরেকটি নাম যুক্ত হলো—কর্নেল আবু তাহের।

কর্নেল তাহের, সময়ের সাহসী পুরুষ। যাঁর কাছে 'স্বাধীনতা' শব্দটির মানে হচ্ছে সামগ্রিক মুক্তি। যিনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণ থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি, বরং মুক্তিকামী একটি নিপীড়িত জাতির মুক্তিচেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়েই পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসে যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকে তিনি দেখেছিলেন ঔপনিবেশিক শোষণমুক্তির লক্ষ্যে পরিচালিত একটি জনযুদ্ধ হিসেবে। সেনানায়ক হিসেবে তিনি সে দৃষ্টিকোণ থেকেই যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন, সম্মুখসমরে একটি পা হারিয়েছেন, যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দূরে, নিরাপদ স্থানে বসে নির্দেশ প্রদান করেননি। স্বাধীনতার পর তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, পরাধীন দেশের ঔপনিবেশিক কায়দায় গড়ে ওঠা সেনাবাহিনী কখনোই স্বাধীন দেশের উপযোগী হতে পারে না। স্বাধীন গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার পূর্বশর্ত হিসেবে তিনি আমলাতান্ত্রিক, উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্কহীন, শাসকের হাতিয়ার বাহিনীর ঔপনিবেশিক কাঠামো ভেঙে জনতার বাহিনী প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন।

কিন্তু আমরা দেখলাম স্বাধীনতা, গণতন্ত্র আর জনতার পক্ষ নিয়ে সামরিক শাসন, আমলাতন্ত্রের হাতে কর্নেল তাহেরকে এক নির্মম পরিণতি বরণ করতে হলো। কী ছিল তাঁর অপরাধ? ষড়যন্ত্রকারীদের ক্ষমতার প্রাণভোমরাদের চিহ্নিত করে, সৈনিক-জনতার ঐক্যবদ্ধ শক্তি দিয়ে তাকে আঘাত করেছিলেন বলে? কর্নেল তাহের যদি অপরাধীই হবেন, তবে কেন প্রকাশ্য আদালতে তাঁর বিচার করা হলো না? কেন কারাগারের অভ্যন্তরে গোপন সামরিক আদালতে তাঁর বিচারের প্রহসন করা হলো? এসব প্রশ্নের উত্তর জানা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, তাহেরের আত্মত্যাগ আগামী দিনের গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের প্রেরণা ও সঠিক দিকনির্দেশনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

১৯৭৬ সালে কর্নেল তাহেরের ফাঁসির সময় আমি হাসানুল হক ইনু তাঁর সঙ্গেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী ছিলাম। আমি এ জঘন্য হত্যাকাণ্ডের একজন সাক্ষী। কিছুদূরে আরেকটি ঘরে বন্দী অবস্থায় জেগে ছিলাম। কারাগারে সেদিন কেউই ঘুমায়নি। ওই ভোর চারটায় বন্দীরা একসঙ্গে মুহুর্মুহু স্লোগানে কারাগার মুখর করে তুলেছিল।

কর্নেল তাহেরের সঙ্গে সামরিক আদালতে আমাকেও দণ্ডিত করে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং কিছু টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ২ বছর, আমার নামের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত অর্থাৎ মোট ১২ বছরের সাজা। ওই সামরিক আদালতের প্রতিটা ঘটনার আমি জীবন্ত সাক্ষী। আমি দেখেছি তাহেরের সাহস ও ধৈর্য। ওই সময়ের ঘটনাগুলো যা টুকে রেখেছিলাম, তার কিছু অংশ আজ প্রকাশ করছি।

১৯৭৬ সালের ২১ জুলাই তাহের বিদায় নেন। আর আমি সেই স্মৃতি নিয়েজেনারেল জিয়ার কারাগারেথাকি। ১৯৮১ সালের ১৩ জুন পর্যন্ত প্রায় টানা পাঁচ বছর। ১৭ জুলাই মামলার রায়ে কর্নেল তাহেরের ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছিল। তাঁর পরিবারের কেউ আগে দেখা করতে পারেনি। তখন স্বরাষ্ট্রসচিব ছিলেন পাকিস্তানপন্থী জনাব সালাউদ্দিন। আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন স্বয়ং জেনারেল জিয়াউর রহমান। রায় ঘোষণার পর বহু চেষ্টা করেও লুত্ফা তাহের দেখা করার অনুমতি জোগাড় করতে পারেননি।

১৯ জুলাই দুপুরের পর রাষ্ট্রপতি সায়েমের দপ্তর থেকে বলা হলো, গোটা পরিবারকে তাহেরের সঙ্গে দেখা করতে যেতে হবে তখনই। বড় ভাই আরিফুর রহমান, তাহেরের মা-বাবা-ছেলে যীশু, আরিফ ভাইয়ের বড় ছেলে বাপী, বোন জলি, ভাবিরাসহ লুত্ফা তাহের যখন কারাগারে যান, সবার সামনে তাহের এলেন। হাসলেন। খুবই স্বাভাবিক। ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গে বললেন আরিফুর রহমান। কর্নেল তাহেরের সোজা উত্তর, 'আমি তো চোর নই যে ক্ষমা ভিক্ষা করব। আমার ফাঁসি হতে পারে না।' লুত্ফা তাহের যখন শেষ চেষ্টা হিসেবে ছেলেমেয়ের ভবিষ্যৎ ভেবে পুরো বিষয়টা চিন্তা করার কথা বললেন, তখনো কর্নেল তাহের হাসিমুখেই বললেন, 'আমার ছেলেমেয়েদের দেশের মানুষ দেখবে।'

মৃত্যুর আগে লেখা তাঁর শেষ চিঠিতে তাই কর্নেল তাহের আবারও বলেছেন তাঁর সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে—'নীতু, যীশু ও মিশুর কথা—সবার কথা মনে পড়ে। তাদের জন্য অর্থসম্পদ কিছুই আমি রেখে যাইনি। কিন্তু আমার গোটা জাতি রয়েছে তাদের জন্য। আমরা দেখেছি শত সহস্র উলঙ্গ মায়া-মমতা ভালোবাসাবঞ্চিত শিশু। তাদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয় আমরা গড়তে চেয়েছি।'

শোষণমুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে তাহের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশে যখন তিনি দেখতে পেলেন, সেনাবাহিনীতে থেকে তাঁর ভাবনা ও এর বাস্তবায়নের সব পথ রুদ্ধ, তখন তিনি সেনাবাহিনীর উচ্চপদ ছেড়ে দিয়ে প্রত্যক্ষভাবে রাজনীতিতে যুক্ত হতে এক মুহূর্তও দেরি করেননি। পরবর্তী সময়ে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহি জনতার অভ্যুত্থান অবশ্যই এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যে ব্যাপক অংশ মুক্তিযুদ্ধে শরিক হয়েছিল, সেই বাহিনী যাতে আর রাষ্ট্রপতি হত্যা, ক্ষমতা দখল ও গরিব দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে না পারে, তার চেষ্টা তাহের করেছিলেন সেনাবাহিনীর কাঠামো পুনর্বিন্যাসের, সমাজ পরিবর্তনের ধ্বনি তুলে।

জেনারেল জিয়াউর রহমান কর্নেল তাহেরের ভাবনার অংশীদার হতে পারেননি। তাই ৭ নভেম্বরের চেতনা, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে জেনারেল জিয়া হলেন প্রতিপক্ষ। জেনারেল জিয়া সম্পর্কে তাই অত্যন্ত খেদের সঙ্গে মামলায় প্রদত্ত জবানবন্দির একপর্যায়ে তাহের বলেছেন, 'জিয়া শুধু আমার সঙ্গেই নয়, বিপ্লবী সেনাদের সঙ্গে, ৭ নভেম্বরের পবিত্র অঙ্গীকারের সঙ্গে, এককথায় গোটা জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আমাদের পেছন থেকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। খালেদ মোশাররফের সঙ্গে তুলনায় জিয়া মুদ্রার অন্য পিঠ বলেই প্রমাণিত হয়েছে। আমাদের জাতির ইতিহাসে আর একটাই মাত্র এ রকম বিশ্বাসঘাতকতার নজির রয়েছে, তা হচ্ছে মীর জাফরের।'

কর্নেল তাহের সব সময় সংগ্রামের ওপরই জোর দিয়েছেন, আপসের কথা বলেননি। বন্দী হওয়ার পর এমন একটা নজিরও নেই যে ক্ষমতাসীন জেনারেল জিয়ার কাছে উনি কোনো ধরনের দেনদরবার করেছেন। উনি খুব পরিষ্কার ধারণা রাখতেন জেনারেল জিয়া সম্পর্কে। উনি নিশ্চিত হয়েছিলেন, তাঁর আর জেনারেল জিয়ার পথ এক নয়। ১৯৭৬ সালের ১৫ জুলাই তারিখে লুত্ফা তাহেরকে লেখা চিঠিতে তিনি বলেছেন, 'জিয়াকে আস্তাকুঁড় থেকে তুলে এনে তাকে দিয়েছিলাম সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মান, কিন্তু সে আস্তাকুঁড়ে ফিরে গেছে। ইতিহাস আমাদের পক্ষে।' কর্নেল তাহের সে জন্য আর নিজে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেননি। বরং জেনারেল জিয়ার চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করার কথা বলেছেন। মৃত্যু জেনেও তাই কর্নেল তাহের একটুও টলেননি। মামলার রায়ের পর উকিলদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, 'এ সেই সরকার, যাকে আমি ক্ষমতায় বসিয়েছি। এদের কাছে আপনারা কিছুই চাইবেন না।...এই দেশদ্রোহীদের কাছে আমি প্রাণভিক্ষা চাইতে পারি না।'

কে না জানে, তাহেরের নেতৃত্বেই সিপাহি অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছিল। কে না জানে, তাহের ভারত-আমেরিকা বা কোনো বিদেশপন্থী ছিলেন না। উনি ছিলেন দেশপন্থী। কিন্তু তারপরও মামলায় তাঁকে দেশদ্রোহী বলার চেষ্টা করা হয়, বিশৃঙ্খলাকারী বলা হয়। সরকারি সাক্ষীরাই বারবার বলেছে, বাংলাদেশকে রক্ষা করার জন্য ৭ নভেম্বর কর্নেল তাহেরের নির্দেশে সিপাহি বিপ্লব হয়। কর্নেল তাহের যে দোষ করেননি, তা কীভাবে খণ্ডন করবেন? তাই তিনি ওই সব মিথ্যা অভিযোগের জবাবে তাঁর জবানবন্দির একপর্যায়ে সত্য কথাটাই আবার বলেছিলেন:

'ট্রাইব্যুনালের রেকর্ডকৃত দলিলপত্রেই দেখা যায় যে ১৯৭৫ সালের ৬ নভেম্বর ঢাকা সেনানিবাসে আমার নেতৃত্বে সিপাহি অভ্যুত্থান হয়। সেদিন এভাবেই একদল বিভ্রান্তিকারীর ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র নির্মূল করা হয়। মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বন্দিদশা থেকে মুক্তি পান আর দেশের সার্বভৌমত্বও থাকে অটুট। এই যদি হয় দেশদ্রোহিতার অর্থ, তাহলে হ্যাঁ, আমি দোষী। আমার দোষ আমি দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছি। এ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করেছি। সেনাবাহিনীর প্রধানকে বন্দী অবস্থা থেকে মুক্ত করেছি। সর্বোপরি বাংলাদেশের অস্তিত্বের প্রশ্নে মানুষের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে এনেছি। সেই দোষে আমি দোষী।'

২০ জুলাই ১৯৭৬ সন্ধ্যায় বার্তাবাহক এসে জানিয়ে দিল পরের দিন কর্নেল তাহেরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কথা। তাহের শুনলেন এবং ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় দিলেন বার্তাবাহককে। কারাগারের নিয়ম অনুযায়ী, একজন মৌলভি আসেন এবং তাহেরকে কৃত অপরাধের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনার অনুরোধ জানান। তাহের যা বিশ্বাস করতেন, তা বলতে দ্বিধা করতেন না। তাহের মৌলভির উদ্দেশে শুধু বলেন, 'আপনাদের সমাজের কালিমা আমাকে কখনো স্পর্শ করতে পারেনি। কখনো না। আমি সম্পূর্ণ সুস্থ। আপনি এখন যান। আমি এখন ঘুমাব।' এরপর তাহের সত্যি সত্যি ঘুমাতে যান এবং গভীর নিদ্রায় ডুবে যান। স্বাধীন বাংলাদেশের আলো-বাতাসে বীর তাহেরের সেটাই ছিল শেষ ঘুম।

২১ জুলাই ভোররাত তিনটা। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার। ৮ নম্বর সেল। ঘুম থেকে তাহেরকে ডেকে তোলা হয়। উপস্থিত ব্যক্তিরা তাঁকে সাহায্য করতে চাইলে তাহের মৃদু স্বরে শুধু বলেন, 'আমার নিষ্পাপ শরীরে তোমাদের স্পর্শ লাগুক, আমি তা চাই না।' এ অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে তিনি দাঁত মেজে, দাড়ি কেটে, গোসল করে, নকল পা, জুতা, প্যান্ট, শার্ট নিজেই পরে নেন। আম কাটেন। নিজে খান, অন্যদের দেন। চা পান করেন। সিগারেট ধরান। তাহেরের এই শান্ত প্রকৃতি দেখে উপস্থিত কারা কর্তৃপক্ষের লোকেরা প্রথমে হতভম্ব হয়ে পড়ে, পরে বেদনায় মুষড়ে পড়ে। তাহের যেন দেশপ্রেমে মোড়া এক জীবন্ত শরীর। অন্য কোনো কথা নয়, কেবলই দেশের কথা। সবাইকে উদ্দেশ করে তাহের বলেন, 'সবাই এত বিষণ্ন কেন? আমি দুদর্শাগ্রস্তদের মুখে হাসি উদ্ভাসিত করতে চেয়েছিলাম। মৃত্যু আমাকে পরাজিত করতে পারবে না।'

গোপন বিচারের সময় যা বলেছেন, ঠিক তেমনই আচরণ করেছেন কর্নেল তাহের ফাঁসির আগে। ফাঁসির কয়েক দিন আগে তাঁর জবানবন্দি শেষে কর্নেল তাহের বলেছিলেন, 'এ জাতির প্রাণে আমি মিশে রয়েছি। কার সাধ্য আছে আমাকে আলাদা করে। নিঃশঙ্ক চিত্তের চেয়ে জীবনে আর কোনো বড় সম্পদ নেই। আমি তার অধিকারী।' সত্যিই তিনি নিঃশঙ্ক চিত্তের অধিকারী বলেই দৃঢ় পায়ে ঠিক ভোর চারটায় এগিয়ে যান ফাঁসির মঞ্চে, 'বিদায় বাংলাদেশ, বিদায় দেশবাসী, বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক' বলে। মৃত্যুর আগে স্ত্রী লুত্ফাকে লেখা শেষ চিঠিতে তাহের বলেছিলেন, 'আমাকে কেউ হত্যা করতে পারে না। আমি আমার সমগ্র জাতির মধ্যে প্রকাশিত। আমাকে হত্যা করতে হলে সমগ্র জাতিকে হত্যা করতে হবে।'

আজ আমাদের সামনে প্রশ্ন, তাহেরকে জেনারেল জিয়া হত্যা করেছিলেন, কিন্তু তাঁর আদর্শ, তাঁর চেতনা কি হত্যা করতে পেরেছেন? ১৯৭৬ সালে জেনারেল জিয়া ক্ষমতার সিংহাসনে এবং কর্নেল তাহের ফাঁসির মঞ্চে—কোনটা বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলজনক, তার রায় ইতিহাসই দেবে।

এক সামরিক প্রহসনের আদালতে কর্নেল তাহেরকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ২০১১ সালের ২২ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রায় তাঁকে আবার প্রকৃত দেশপ্রেমিক হিসেবে প্রমাণ করল এবং তাঁর সব মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করল। প্রমাণিত হয়েছে কর্নেল তাহেরকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া ও তা কার্যকর করা ছিল ঠান্ডা মাথায় খুন। সত্যি হলো এই যে, প্রহসনের আদালতে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও জনতার আদালত ও আইনের আদালতে তাহের দেশপ্রেমিক এবং জেনারেল জিয়া মূল খলনায়ক। বাংলাদেশে যাতে আর কখনো কোনো প্রহসনের বিচারে কর্নেল তাহেরের মতো দেশপ্রেমিককে জীবন দিতে না হয়, সেটিই সবার চাওয়া।

হাসানুল হক ইনু: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্যমন্ত্রী।



__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___