জামাল খান ক্যালিফোর্নিয়ায় সিটি নির্বাচনে লড়ছেন
Thikana -New York // Dec-13-2019
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্ণিয়া অঙ্গরাজ্যের আসন্ন সিটি কাউন্সিল (City Council Election; DISCTRICT- 4) নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত তরুন জামাল খান। 'সিলিকন ভ্যালি' খ্যাত ক্যালিফোর্ণিয়ার বে-এরিয়ার (Bay Area) 'স্যান হোজে' (San Jose) সিটির স্হানীয় বাসিন্দা জামাল খান বিশ্ববিখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে অধ্যয়ন করেছেন।
মেধাবী তরুন জামাল খান তার ছেলেবেলা ও শৈশব কাটিয়েছেন সিলিকন ভ্যালিতেই (Silicon Valley)। তার বাবার নাম ড. মাহবুব খান ও মায়ের নাম রিনা খান। চার ভাই-বোনের মধ্যে জামাল তৃতীয়। জামাল খান লেইনভিউ এলেমেন্টরি স্কুল, মোরিল মিডল স্কুল ও ইন্ডিপেনডেন্স হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা লাভ করেন। এরপর তিনি ক্যালিফোর্ণিয়ার খ্যাতনামা ইউসি বার্কলে (UC BARKELEY) বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন-তিনটি বিষয়ের (অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও বৈশ্বিক দারিদ্র পরিস্হিতি মোকাবেলা) উপর স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। বার্কলে (UC BARKELEY) বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র থাকাকালীন সময়ে তিনি ম্যাপলাইট (MapLight; নন-প্রফিট অর্গানাইজেশন)এবং সান ফ্রান্সিসকোতে ইউএস হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি'র (Nancy Pelosi) অধীনে ইনটার্নশীপের কাজ সম্পন্ন করেন। এছাড়াও ঐ সময়ে তিনি টাটা ইন্টারন্যাশনাল (TATA Int.) ও ইউসি বার্কলে'র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত 'সামাজিক উদ্যোক্তা বিষয়ক' ওয়ার্কশপ করেছেন। মেধাবী জামাল খান ইউসি বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে আটটি সেমিস্টারের প্রত্যেকটিতে সম্মানের সাথে কৃতকার্য হয়েছেন। এজন্য তিনি 'ট্রাভিস স্কলারশীপ ইন পলিটিক্স এন্ড এথিক্স' (Travis Scholarship in Politics and Ethics) লাভ করেন।
এরপর জামাল খান যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে অবস্হিত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে (Harvard Law School in Cambridge, Massachusetts) আসেন। এখানে তিনি হার্ভার্ড থেকে প্রকাশিত 'দ্য হার্ভার্ড হিউম্যান রাইটস জার্নালে'র ম্যানেজিং টেকনিক্যাল এডিটর হিসেবে কাজ করেছেন। পাশাপাশি তিনি 'সাউথ এশিয়ান ল স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনে'র (South Asian Law Students Association) কম্যুনিকেশন্স চেয়ারম্যান এবং 'মুসলিম ল স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনে'র (Muslim Law Students Association) প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন গ্রীষ্মকালীন অবকাশের ছুটির সময়ে তিনি ওয়াশিংটন ডিসি'র ইউ এস সিনেটের স্হায়ী সাবকমিটির অধীনে 'ইনভেস্টিগেশন্স এন্ড দ্য অফিস অফ গভর্নমেন্ট এথিক্স' বিষয়ে ইনটার্নশীপ সম্পন্ন করেছেন।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করার পর জামাল খান 'দ্য প্রেসিডেন্টাল ম্যানেজমেন্ট ফেলোশীপ প্রোগ্রামে'র (Presidential Management Fellowship program) জন্য মনোনীত হন। তিনি হোয়াইট হাউজের একাধিক অফিসে বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণাধর্মী কাজ করেছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ইন্টারগভার্নমেন্টাল এফ্যেয়ার্স, পরিবেশ রক্ষা, খাদ্য ও পুষ্টি ইত্যাদি (Environmental Quality, and the Food and Nutrition Service)। ওবামা প্রশাসনের (Obama Administration) রাজ্যস্তরে বেশকিছু অগ্রাধিকারমূলক কাজে জামাল খান জড়িত ছিলেন যার ভেতর- নূন্যতম মজুরি, পারিবারিক ও অসুস্থকালীন ছুটি, ভোটের অধিকার, আগ্নেয়াস্ত্রের সীমিতকরন, কার্যক্ষেত্রের অনুমোদন, ওপিওয়েড সমস্যা ও মোকাবেলা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য (minimum wage, paid sick and family leave, voting rights, gun violence prevention, occupational licensing, and the Opioid Crisis)।
হোয়াইট হাউজের (White House) ফেলোশীপ প্রোগ্রাম শেষে জামাল খান ক্যালিফোর্ণিয়ার লস এঞ্জেলেসে সিনেটর কামালা হ্যারিসের (Kamala Harris) ক্যাম্পেইন হেড কোয়ারটার্সে যোগ দেন। এরপর তিনি নেভাডা অঙ্গরাজ্যের লাস ভেগাসে সিনেটর ক্যাথরিন কোর্তেজের (Catherine Cortez Masto) ক্যাম্পেইন টিমের 'ডেপুটি ডিজিটাল ডিরেক্টর' হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর নির্বাচনের পর জামাল বে-এরিয়াতে ফিরে এসে এস সি এন স্ট্র্যাটেজিসের (SCN Strategies) বর্তমানে এস সি আর বি স্ট্র্যাটেজিস (now known as SCRB Strategies) পলিটিক্যাল কনসালট্যান্ট হিসাবে কিছুকাল কাজ করেন। বিগত নির্বাচন মৌসুমে জামাল খান স্যান হোজে সিটি মেয়র স্যাম লিকার্ডো'র (Sam Liccardo) নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে 'ফাইন্যান্স ও ড্যাটা ডিরেক্টর' হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
জনসাধারনের ভেতর 'ওপিওয়েড সমস্যা' (Opioid Crisis) সম্পর্কিত বিভিন্ন দিক সহজভাবে তুলে ধরে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য জামাল খান প্রতিষ্ঠা করেছেন 'দ্য আমেরিকান ওপিওয়েড প্রজেক্ট' (American Opioid Project)। যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী গবেষণামূলক এ প্রজেক্টের অধীনে বেশকিছু প্রবন্ধ ও পডকাস্ট ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে এবং 'ওপিওয়েড' সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত সম্বলিত আরও কর্মশালা, জার্নাল, পডকাস্ট ও বইসমূহের প্রকাশনার কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে।
বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত, উদ্দোমী ও মেধাবী তরুন জামাল খান বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করলেও তিনি মনে করেন তার সকল কাজ একই সূত্রে গাঁথা, যেটি হলো 'পাবলিক সার্ভিস' (Public Service) বা 'জনসেবা'। তাই আগামী মার্চ মাসে অনুষ্ঠিতব্য 'স্যান হোজে সিটি কাউন্সিল' (ডিস্ট্রিক্ট ৪) নির্বাচনের প্রার্থী হিসাবে জামাল খান প্রবাসী বাংলাদেশী কম্যুনিটি এবং শহরের তরুন ও নতুন ভোটারদের কাছে ইতিমধ্যেই হয়ে উঠেছেন অত্যন্ত জনপ্রিয়।
__._,_.___