__._,_.___
গোলাম মুজতবা ধ্রুব, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 2015-08-07 21:36:48.0 BdST Updated: 2015-08-08 00:51:25.0 BdST
নিলয়ের স্ত্রী আশা মনি শুক্রবার রাতে সাংবাদিকদের এ তথ্য দিয়েছেন, জানিয়েছেন হত্যাকাণ্ডের সময় তিনিও বাসায় ছিলেন।
আশা মনি বলেন, "আনুমানিক ২৫ বছর বয়সী এক যুবক বলেন- বাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি বাসা দেখাতে বলেছেন। এরপর বাসা দেখার নাম করে বাসার ভেতরে ঢুকেন তিনি।
"ওই যুবক বাসা দেখার সময় হাতে থাকা মোবাইল টিপছিলেন। মোবাইলে কাউকে এসএমএস করছিলেন বলে মনে হয়েছে।"
বাসা দেখা শেষ হলেও ওই যুবক বের না হওয়ায় বেডরুমে ল্যাপটপে কাজ করতে থাকা স্বামী নিলয়কে বিষয়টি জানান আশা।
আশা বলেন, "নিলয় ওই যুবককে চলে যেতে বলার সঙ্গে সঙ্গেই আরও তিনজন লোক বাসায় ঢুকে। এদের মধ্যে ৩০ থেকে ৩৫ বছর বয়সী একজনের মুখে দাড়ি ছিল।
নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয় ও তার স্ত্রী আশা মনি। আশা মনির ফেইসবুক থেকে
শুক্রবার দুপুরে নিজের বাসায় খুন হন ব্লগার নিলয়
আশা জানান, নিলয়কে কোপ দেওয়ার পর চিৎকার করে স্বামীকে না মারতে তিনি ওই লোকের পা জড়িয়ে ধরেন। এরপর তাকে চুল ধরে টেনে নিয়ে একটি বারান্দায় আটকে রাখা হয়।
রাজধানীর গোড়ানের পাঁচ তলার ওই বাড়িতে পঞ্চম তলায় স্ত্রীকে নিয়ে সাবলেট থাকতেন নিলয়। ওই ফ্ল্যাটে দুইটি বেডরুম, দুটি বারান্দা, রান্না ঘর ছাড়াও ছোট্ট আরেকটি কক্ষ আছে। একটি বেডরুম, বারান্দা ও ছোট্ট কক্ষটি ব্যবহার করত নিলয় দম্পতি।
ছোট বোন ইশরাত তন্নী বৃহস্পতিবার নেত্রকোনা থেকে ঢাকায় বেড়াতে এসেছে জানিয়ে আশা মনি বলেন, "ওই সময় আমার বোন রান্না করছিল। সেও চিৎকার শুরু করলে তারা ওকে অন্য একটি বারান্দায় আটকে রাখে।"
দুই বোনকে আলাদা আলাদা বারান্দায় আটকে রেখে নিলয়কে মাথা ও ঘাড়ে কুপিয়ে যুবকরা চলে যায় বলে জানান আশা।
তিনি বলেন, চারজন যুবকের মধ্যে একজনের হাতে কালো রঙের একটি পিস্তল ছিল। যুবকরা চলে যাওয়ার পর থেকে নিলয়ের ব্যক্তিগত ল্যাপটপটা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
আশা জানান, পরিবারের অমতে দুই বছর আগে কোর্ট ম্যারেজ করেন তারা।
নিরাপত্তা চাইলে নিলয়কে 'দেশ ছাড়তে' বলেছিল পুলিশ
2015-08-07 17:58:36.0
নিলয়ের ওয়াল থেকে: 'সরকার বলুক, আর কত লাশ দরকার'
2015-08-07 19:21:27.0
ব্লগার নিলয় হত্যা: শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের বিক্ষোভ
2015-08-07 20:58:26.0
ভিন্নমতের কণ্ঠ রোধে হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে: অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল
2015-08-07 23:25:00.0
ব্লগার নিলয় হত্যার বিচার চেয়ে ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রীর ট্যুইট
2015-08-07 22:26:02.0
00:51:25.0 BdST
কবরের ভেতরও স্বাভাবিক মৃত দেহ রাখার গ্যারান্টি দিতে পারছে না এ লজ্জা কোথায় রাখবে?
কবর থেকে লাশ চুরি করে সেই লাশ সিদ্ধ করে গোশত ছাড়িয়ে কঙ্কাল বের করে সেই কঙ্কাল বিক্রি করা হচ্ছে মেডিকেল কলেজগুলোতে বেশ অনেক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছিলরাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার কবরস্থান থেকে লাশ চুরি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই নিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নীরবতা আমাদেরকে বিস্মিত করেছে।
উদাহরণত উল্লেখ করতে হয়, চারদিকে ঘন গজারি বন। গভীর রাত, ঘুটঘুটে অন্ধকার। ঝি-ঝি পোকা আর শেয়ালের ডাকে এক ভয়ার্ত পরিবেশ। গা ছমছম করা ওই পরিবেশেগাজীপুরের ধীরাশ্রম এলাকার গজারিয়া চালা কবরস্থান থেকে লাশ চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে আবেদ আলী ও তার ছেলে শাহজাহান। একটি অথবা দুটি নয় ১৩টি লাশকবর থেকে তুলেছিল তারা। কোনটি অর্ধগলিত আবার কোনটি একেবারেই কঙ্কাল । কবরস্থানের পাশে একটি পরিত্যক্ত ঘরে গরম পানিতে লাশগুলোর পচা গোশত ছাড়ানোর সময়হাতেনাতে ধরা পড়ে তারা। চলতি বছরের ২৬ জুলাইয়ের ঘটনা এটি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করে তাদের আদালতে হাজির করে। তবে বেশি দিন তাদের জেলহাজতেথাকতে হয়নি। কারাগার থেকে বের হয়ে আবারও তারা ফিরে গেছে পুরনো পেশায়। লাশ চুরি চক্রের সদস্য আবদুল মোতালেব জানায়, গত কয়েক বছরে গাজীপুর, টাঙ্গাইল ওমোমেনশাহী এলাকার বিভিন্ন কবরস্থান থেকে তারা বেশ কয়েক হাজার লাশ চুরি করে। এরপর সেগুলো কঙ্কাল তৈরি করে বিক্রি করে দিয়েছে। একেকটি কঙ্কাল তারা মহাজনেরকাছে বিক্রি করেছে পাঁচ হাজার টাকায়। জানা গেছে, কয়েক হাত ঘুরে যখন মেডিকেল পড়–য়া শিক্ষার্থীদের কাছে এ কঙ্কাল পৌঁছে তখন এর দাম দাঁড়ায় ১৫ থেকে ২০ হাজারটাকা। প্রতি বছর দেশে কঙ্কালের চাহিদা রয়েছে আড়াই থেকে তিন হাজার। দেশে কঙ্কালের ব্যবসা অবৈধ হলেও ব্যাপক চাহিদার কারণে কবর থেকে লাশ চুরি করে তৈরি করা হচ্ছেকঙ্কাল। এটি এখন লাভজনক ব্যবসায়ও পরিণত হয়েছে। (নাঊযুবিল্লাহ)
বোনস বা কঙ্কাল ছাড়া একজন মেডিকেল শিক্ষার্থীর কোনভাবেই অধ্যয়ন করা সম্ভব নয়। বিশেষ করে যারা প্রথম এবং দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাদের জন্য কঙ্কাল অত্যাবশ্যক।কঙ্কাল ছাড়া এ সাবজেক্টে পড়া একেবারেই অসম্ভব। অথচ কঙ্কাল সংগ্রহে সরকারি কোন নীতিমালা নেই। ব্রিটিশ আমল থেকে অজ্ঞাত লাশ দিয়ে কঙ্কাল তৈরি করা হচ্ছে।
দেশের ২২টি সরকারি ও ৫৫টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে প্রতি বছর ভর্তি হয় প্রায় ৭ হাজার শিক্ষার্থী। এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে শতকরা ৬০ জন আগের ব্যাচের শিক্ষার্থীদের কাছথেকে কঙ্কাল সংগ্রহ করে। বাকি ৪০ ভাগ অর্থাৎ আড়াই হাজার শিক্ষার্থী প্রতি বছর নতুন কঙ্কাল কেনে। সে হিসেবে প্রতি বছর দেশে কঙ্কালের চাহিদা আড়াই থেকে তিন হাজার।
জানা গেছে, কঙ্কালের ব্যবসা অবৈধ হলেও ব্যাপক চাহিদার কারণে এটি এখন ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। তবে এ ব্যবসা প্রকাশ্যে হয় না। মেডিকেল যন্ত্রাংশ বিক্রির বিভিন্ন বড় বড়প্রতিষ্ঠানে চাহিদার কথা জানিয়ে অগ্রিম টাকা দিলেই মেলে কঙ্কাল। বিশেষ করে পুরনো ঢাকার মিটফোর্ড, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়াওশাহবাগের বড় বড় ফার্মেসিতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় মেলে একেকটি কঙ্কাল। তবে রাজধানীতে অপেক্ষাকৃত কম দামে কঙ্কাল বিক্রি করে কয়েকটি চক্র।
এর আগে ভারত থেকে চোরাইপথে আসা কঙ্কাল বেশির ভাগ চাহিদা পূরণ করতো। বর্তমানে সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করায় কঙ্কাল আসার সংখ্যা শূন্যের কোঠায় পৌঁছেছে। তবেবেওয়ারিশ লাশ অথবা মৃত্যুর আগে কেউ তার দেহ দান করলে তার লাশ দিয়ে কঙ্কাল তৈরি করার নিয়ম দেশে প্রচলিত রয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজে শুধু বেওয়ারিশ লাশ অথবা মৃত্যুর আগে কেউ তার দেহ দান করে গেলে ওই লাশ থেকে কঙ্কাল তৈরি করা হয়। তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজের অ্যানাটমিবিভাগের কেউ কঙ্কাল তৈরি করে না। বাইরে থেকে লোক এনে কঙ্কাল তৈরি করা হয়। প্রতিটি কঙ্কাল তৈরি করতে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়। হাসপাতালের মর্গে কঙ্কালতৈরি হয় না। ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার ফুটন্ত পানিতে লাশ ডুবিয়ে রাখা হলে শরীরের গোশত ও চর্বি আস্তে আস্তে আলাদা হয়ে যায়। এরপর ব্লিচিং পাউডার দিয়েপরিষ্কার করে পূর্ণাঙ্গ কঙ্কাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, কঙ্কাল চুরি ঘটনা প্রতিভাত করে মানুষই মানুষের খাদক। প্রশ্ন উঠে মানুষ কখন মানুষের খাদকে পরিণত হয়? মূলত দু'অবস্থায় এমনটি হয়।
এক. রাষ্ট্রযন্ত্র যখন তার নাগরিকদের মাঝে আদর্শগত চেতনা বা প্রবণতা তৈরিতে ব্যর্থ হয় অথবা এ প্রক্রিয়া শূন্য থাকে।
দুই. রাষ্ট্রযন্ত্র বৈষম্য তৈরি করে খালি পুঁজিপতিদের জন্য অবাধ পুঁজির দরজা খোলা রাখে। আর সাধারণ নাগরিকদের জন্য জীবন-জীবিকার পথ খুবই সঙ্কীর্ণ ও সীমাবদ্ধ করেরাখে।
বলাবাহুল্য, রাষ্ট্রযন্ত্র এ দুটো ক্ষেত্রেই গভীরভাবে দুষ্ট। কথিত কঙ্কাল চুরির ঘটনা তারই একটি অনুষঙ্গ বা প্রমাণ। অবস্থা এমন যে মানুষ মরেও শান্তি পাচ্ছে না। বা মরার পরওমানুষ লাশটুকু পর্যন্ত নিরাপত্তায় থাকছে না। রাষ্ট্রযন্ত্রের ব্যর্থতার উপজাত হচ্ছে যে কবরেও চোর-ডাকাত হামলা দিচ্ছে। আগে শোনা যেত যে, মৃত ব্যক্তির কাফন চুরি হয়। এখনদেখা যাচ্ছে, খোদ মৃত ব্যক্তিই চুরি হয়ে যাচ্ছে। (নাঊযুবিল্লাহ) একি জঘন্য মানসিকতার দেশে বসবাস আমাদের? সরকার এ লজ্জা ঢাকবে কি দিয়ে? সরকার যে শুধু স্বাভাবিকমৃত্যুর গ্যারান্টি দিতে পারছেনা বিষয়টি তাই নয় বরং সরকার কবরের ভেতরও স্বাভাবিক মৃত দেহ রাখার গ্যারান্টি দিতে পারছে না।
আমরা সরকারের এই চরম নপুংসকতার জন্য গভীর নিন্দাবাদ জানাই। সরকার অন্তত মানুষের মৃতদেহ সংরক্ষণে সফল হোক- এই কামনা আকুলভাবে করি।