গা ঢাকা দিয়েছে কৌশলী জামায়াত, চোরাগুপ্তা হামলার শঙ্কা
আমাদের সময়.কম
ডেস্ক রিপোর্ট : আক্রমণাত্মক কৌশল পাল্টে এবার ভিন্ন কৌশলে আসছে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা। গত কয়েক বছরের হরতাল-অবরোধের মতো পিকেটিংয়ে আর দেখা যাবে না তাদের। মামলা ও ধরপাকড়ের পরও গোপনে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছিল দলটির নেতাকর্মীরা। তবে সম্প্রতি তারা আর গ্রেপ্তার না হওয়ার কৌশল গ্রহণ করেছে। গ্রেপ্তার এড়িয়ে বড় ধরনের চোরাগুপ্তা হামলার ছক কষসে ক্যাডাররা। একাধিক গোয়েন্দা ও দলীয় সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
আর এ কারণেই বৃহস্পতিবার যুদ্ধাপরাধী ও জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির আদেশ বহালের প্রতিবাদে সকাল-সন্ধ্যা হরতালে মাঠে দেখা যায়নি কোনো নেতাকর্মীকে। হয়নি পিকেটিং। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় জনজীবন ছিল স্বাভাবিক।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'বৃহস্পতিবার হরতালে ব্যাপক নাশকতার তথ্য ছিল। তাই ব্যাপক প্রস্তুতি ছিল আমাদের। তবে জামায়াত কৌশল পাল্টেছে। তারা গ্রেপ্তার এড়াতে এখন গা ঢাকা দিয়ে চলছে। এ কারণে চোরাগুপ্তা হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে।'
পুলিশ ও র্যাবের গোয়েন্দারা জানায়, হরতালে ঢাকা, রাজশাহী, বগুড়া, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রামসহ জামায়াত অধ্যুষিত ২৪টি জেলায় নাশকতার শঙ্কা ছিল। এসব জেলাগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা প্রস্ততি ছিল। বিশেষ গোয়েন্দা নজরদারিতে ছিল গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। বুধবার রাতেই রাজধানীর সন্দেহভাজন শিবিরের মেস, আস্তানা ও বিশ্ববিদ্যালয় হল কেন্দ্রিক অভিযান চালিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অন্তত ১৭ জনকে আটক করা হয়।
ঢাকায় অভিযান পরিচালনাকারী এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, 'বুধবার রাতে মগবাজরসহ জামায়াত-শিবিরের মেসে অভিযান চালানো হয়। তবে সন্দেহভাজন কয়েকজন শিবিরকর্মীকে আটক করা হলেও অভিযানের আগেই বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা গা ঢাকা দেয়।'
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, জামায়াত-শিবিরের চোরাগোপ্তা হামলা চালানোর জন্য একটি শক্তিশালী টিম রয়েছে। পরিস্থিতি নিজেদের অনূকুলে থাকলেই তারা নাশকতার তাৎক্ষণিক ছক কষে যেকোনো মুহূর্তে যেকোনো স্থানে হামলা চালাতে পারে। বিশেষ করে গাড়িতে পেট্রোলবোমা ছুঁড়ে আগুন দেয়ার ক্ষেত্রে তারা খুবই ভয়ঙ্কর। দুর্বল ভেবে কখনোই জামায়াত-শিবিরকে ছাড় দেয়া যাবে না।
বৃহস্পতিবার দিনভর রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকা ছিল আইনশৃক্সখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। সকাল থেকে হরতালের সমর্থনে জামায়াত শিবিরের কোনো মিছিল, পিকেটিং, বোমাবাজি, জ্বালাও পোড়াওয়ের ঘটনা ঘটেনি। রাজধানীর মগবাজার, মতিঝিল, বায়তুল মোকারম এলাকা, বাড্ডা, মিরপুর, পুরান ঢাকাতে নাশকতার আগাম তথ্য থাকলেও কোথাও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের বাধার সম্মুখিন হতে হয়নি পুলিশের।
এ বিষয়ে মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) শিবলি নোমান বলেন, 'সকাল থেকে হরতালের সমর্থনে কোনো ধরনের মিছিল পিকেটিংয়ের খবর পাওয়া যায়নি। তবে গোয়েন্দা তথ্য ছিল, মগবাজার কেন্দ্রীয় অফিসের আশপাশে বিভিন্ন গলি থেকে প্রধান সড়কে ঝটিকা মিছিল হতে পারে। তাই নাশকতার আশঙ্কা মাথায় রেখে মগবাজার এলাকার প্রতিটি গলিতে বাড়তি নজরদারি ছিল। প্রতিটি গলির মুখে ৫/৬ জন করে অস্ত্রধারী পুলিশ মোতায়েন ছিল।'
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই জামায়াত ইসলামির মগবাজার কেন্দ্রীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ ছিল। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করলেও সকাল থেকেই কেন্দ্রীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। প্রকাশ্যে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের কোনো কর্মকা- নেই। এমনকি দলবদ্ধভাবে মিছিল নিয়ে তারা রাস্তায়ও নামেনি।
তবে গোপনে তাদের কর্মকা- আছে দাবি করে স্থানীয়রা জানান, নেতারা আড়ালে থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এছাড়া মগবাজার এলাকায় ফুটপাতসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জামায়াত-শিবিরের কর্মী আছে। তারা সুযোগ বুঝে নাশকতা, ঝটিকা মিছিল, বোমাবাজি, রাস্তা অবরোধ করে থাকে। বাংলামেইল
http://www.amadershomoys.com/unicode/2016/01/08/52148.htm#.Vo9eNbYrJSM
__._,_.___