__._,_.___
জন্মের দাবি বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ হউক৭২-এর সংবিধানের ভূয়সী প্রশংসা একদা সবাই করতেন। ওই সংবিধানটি ছিলো সময় ও যুগোপযুগী। ওতে জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা সংযোজিত হয়েছিলো। জাতির জনক বঙ্গবনধু শেখ মুজিব বুঝেছিলেন দেশকে এগিয়ে নিতে এর বিকল্প নেই। সংবিধান প্রবর্তনের পর এক ভাষণে তিনি বলেছিলেন, "--আর সাম্প্রদায়িকতা যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র বাংলাদেশ। মুসলমান তার ধর্মকর্ম করবে। হিন্দু তার ধর্মকর্ম করবে। বৌদ্ধ তার ধর্মকর্ম করবে। কেউ কাউকে বাঁধা দিতে পারবেনা। ইসলামের নামে আর বাংলাদেশের মানুষকে লুট করে খেতে দেয়া হবেনা।" কবে, কোথায় তিনি একথা বলেছিলেন তা মনে নেই, কথাগুলো হুবহু কিনা তাও জানিনা, কিন্তু মর্মার্থ একই; ফেইসবুকে এক বনধু এ উক্তিটি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, তাকে ধন্যবাদ। বাক্যের শেষ কথাটি তিনি বলেছিলেন পাকিস্তানীদের দিকে লক্ষ্য রেখে, কারণ পাকিস্তানীরা ধর্মের নামে সিকি শতাব্দী বাঙ্গালীদের শোষণ করেছে।বঙ্গবনধু নেই, ৭২-এর সংবিধানও নেই; পনেরবার কাটাছেড়ার পর এখন যা আছে, তা ৭২-এর ধ্বংসাবশেষ। সুযোগ পেয়েও আমরা ৭২-এ ফিরে যাইনি। আমাদের সংবিধানের ওপর স্বৈরাচারী সরকার অনেক আঘাত হেনেছেন, জিয়া-এরশাদ ওই তালিকায় শীর্ষে। ক্ষমতায় থাকার জন্যে ওই দু'জন সংবিধানকে তাদের বাপদাদার সম্পত্তির মত ব্যবহার করেছেন। সবচেয়ে বড় আঘাত হেনেছেন জিয়া ৫ম এবং এরশাদ ৮ম সংশোধনীর মাধ্যমে। ওই দু'টি সংশোধনীর মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ পুনরায় পাকিস্তানের মত একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিনত হয় বা হওয়ার উপক্রম হয়। আদালতের রায়ে অবশ্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ১৯৭২-এর সংবিধানে ফিরে আসতে পারতো, সরকার শুধু 'তত্বাবধায়ক সরকার বাতিল' অংশটুকু গ্রহণ করেছেন, বাকিটুকু অজ্ঞাত কারণে বা মৌলবাদীদের অসন্তুষ্ট না করতে এড়িয়ে গেছেন। ফলে রাষ্ট্রধর্মের বিরুদ্ধে ২৮ বছর আগে দায়ের করা রীট পিটিশনের ওপর পুনরায় শুনানী শুরু হচ্ছে ২৭শে মার্চ ২০১৬। যারা ওই রিটটি এনেছিলেন, তাদের অনেকেই এখন নেই, যারা আছেন বা নেই, সবাইকে ধন্যবাদ।দেশবাসী এটাকে স্বাগত জানায়। মামলার রায় যাই হোক, মানুষ তা স্বাগত জানাবে। দেশবাসী আশা করে সরকার রায় বাস্তবায়ন করবেন। একথা বলার কারণ এই যে, ভারতের সুপ্রীম কোর্টের 'শাহবানু' মামলার রায়ের কথা আমরা জানি, রাজীব গান্ধী সরকার মৌলবাদীদের খুশি করতে সংখ্যাগরিষ্টতার জোরে লোকসভায় তা উল্টে দিয়েছিলেন। আমরা তা চাইনা। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা এখন যেকোন সময়ের চাইতে অনেক বেশি স্বাধীন এবং মানুষ যথেষ্ট আস্থাশীল। সাম্প্রতিক সময়ে মহামান্য আদালত প্রধানের কিছু পদক্ষেপ ও কথাবার্তা এবং এমনকি দুই মন্ত্রীকে আদালতে তলব বাংলাদেশের ইতিহাসে নজীরবিহীন ও উত্সাহব্যঞ্জক। একটি দেশের সাধারণ মানুষের সর্বশেষ আস্থার স্থল হচ্ছে আদালত, আদালত যতটা স্বাধীন গণতন্ত্র ততটাই মজবুত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সদ্য বলেছেন, 'ওই দুই মন্ত্রীর বক্তব্য সরকারের বক্তব্য নহে', একথার অর্থ হলো প্রশাসন আদালতকে সমীহ করছেন এবং একইসাথে প্রশাসন চায় আদালত স্বাধীন ও বলিষ্টভাবে কাজ করুক।সরকার কেন পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ৭২-এ ফিরে যাননি, তা আমরা বুঝি। রাজনীতিক দল বা সরকারের ভোটের দরকার, তারা ইচ্ছে থাকলেও সবকিছু করতে পারেন না। আদালত পারে। এরশাদও মোল্লাদের কাছে টানতেই রাষ্ট্রধর্ম আমদানী করেছিলেন, ইসলামের প্রতি মহানুভবতার জন্যে নহে। ওই লম্পট পবিত্র ধর্মকে নিয়েও লাম্পট্য করেছেন, ব্যাক্তস্বার্থে ইসলামকে ব্যবহার করেছেন। এরশাদ ১৯৮৮ সালের ৯ই জুন ভোটারবিহীন সংসদে রাষ্ট্রধর্ম বিলটি পাশ করিয়েছেন। সেদিন এর প্রতিবাদে ঢাকায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা মিছিল করেছিলো, আমি নিজে ওই মিছিলের সামনের সারিতে ছিলাম। স্মর্তব্য, কোন রাজনৈতিক দল বা প্রগতিশীল সংগঠন তখন মাঠে নামেনি, কারণ ভোট! মিছিলটি শেষ হয়েছিলো জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে। ঐসময় একজন এনএসআই অফিসার আমার সাথে সৌজন্যমুলুক কথাবার্তা বলেছিলেন, প্রেসক্লাবে বসে চা খেতেখেতে আমরা কথা বলেছিলাম। তিনি আমাকে জিজ্জাসা করেছিলেন, 'আচ্ছা, রাষ্ট্রধর্ম হলে হিন্দুদের কি ক্ষতি?' আমি তাকে বললাম, ভারত যদি হিন্দু রাষ্ট্র হয় তো আপনার কেমন লাগবে? তিনি চমকিত হয়ে বললেন, ভারত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, ভারত কেন হিন্দু রাষ্ট্র হতে যাবে? আমি বললাম, তাতে আপনার ক্ষতি কি, ভারত তো আপনার দেশ নয়? তিনি একটু চিন্তা করে বলেছিলেন, তাহলে তো মুসলমানদের ক্ষতি হবে'। তাকে বলেছিলাম, আপনি ভারতের সংখ্যালঘুর কথা ভাবছেন, নিজ দেশের সংখ্যালঘুর কথা ভাববেন না?এঘটনাটি ইতিপূর্বে নিউইয়র্কের কাগজে দু'একবার ছাপা হয়েছে। শুধু সংখ্যালঘুর জন্যে নয়, রাষ্ট্রধর্ম দেশের আপামর জনগনের জন্যে ক্ষতিকর। কারণ এতে রাষ্ট্রে ধর্মের অনুপ্রবেশ ঘটে এবং তা জনগনকে বিভক্ত করে। রাষ্ট্রধর্ম মৌলবাদকে উত্সাহিত করে। রাষ্ট্র সবার, ধর্ম যারযার। পত্রিকায় দেখলাম, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেছেন, 'সাম্প্রদায়িকতা রুখতে ঘুরে দাড়াও বাংলাদেশ'। হেফাজত বলেছে, 'রাষ্ট্রধর্ম বাতিল হলে দাবানল জ্বলে উঠবে'। সন্ত্রাসের উস্কানিদাতা আওয়ামী ওলামা লীগ বলেছে, রাষ্ট্রভাষা থাকলে রাষ্ট্রধর্ম থাকবে। বাংলাদেশের ইতিহাস আছে ঘুরে দাড়ানোর। বাংলাদেশ ঘুরে দাড়াতে পারে। বাংলাদেশকে ঘুরে দাড়াতেই হবে। ৬৯, ৭১-এ বাংলাদেশ ঘুরে দাড়িয়েছিলো, কবর দিয়েছিলো সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র পাকিস্তানের। আর একবার কি সেটা অসম্ভব? মৌলবাদের গর্জন, অসারের তর্জন-গর্জনের মতই নিস্ফল হতে বাধ্য। ধর্মনিরপেক্ষতা মৌলবাদের প্রতি হুমকিস্বরূপ, ধর্মনিরপেক্ষতা ধর্মহীনতা নয় বরং তা সকল ধর্মের নাগরিককে তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার দেয় এবং ধর্মনিরপেক্ষতা কখনই ইসলামের প্রতি হুমকী নয়।সামাজিক মাধ্যমে রাষ্ট্রধর্মের পক্ষে-বিপক্ষে এখন বিস্তর লেখালেখি হচ্ছে। এ বিষয়ে মৌলবাদী শক্তি সেই পুরানো কোরাস গাইছে। একাত্তরে এরা ইসলাম গেল বলে ইসলাম রক্ষায় রাজাকার হয়েছিলো। ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তির হাতেই নিরাপদ, ধর্মান্ধদের হাতে নয়। এ সময়ে বাংলাদেশ যেমন আছে, ইসলামও আছে, শুধু রাজাকাররা একের পর এক ফাঁসিকাস্টের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রধর্ম না থাকলে নাকি বাংলাদেশ ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগিয়ে যাবে! মানুষ তো বরং উল্টোটা দেখছে। পঁচাত্তরের পর ধর্মকে রাজনীতিতে টেনে আনার কারণেই বাংলাদেশে আজ মৌলবাদী-সন্ত্রাসীদের রমরমা অবস্থা। রাষ্ট্রধর্ম আছে বলেই মানুষকে হেফাজতি তান্ডব দেখতে হয়েছে, দেশবাসী 'বার্ন ইউনিট' চিনেছে বা পবিত্র কোরান পোড়ার দৃশ্য মানুষকে দেখতে হয়েছে। আর এসব তারাই করেছে ধর্মকে যারা রাজনীতিতে ব্যবহার করে বা যারা ধর্মের এজেন্সি নিয়ে বসে আছে। শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ কোরান শরিফ পোড়ায় না, বাসভর্তি সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারেনা। অর্থাৎ রাষ্ট্রধর্ম এতকাল মৌলবাদকে সুড়সুড়ি দিয়েছে, এটা বন্ধ হওয়া দরকার। সরকার করেনি, তাই মানুষ এখন আদালতের মুখাপেক্ষী।বাংলাদেশ জনসুত্রে ধর্মনিরপেক্ষ। জন্মের দাবি বাংলাদেশ আবার ধর্মনিরপেক্ষ হউক। ধর্মনিরপেক্ষ নাহলে গণতন্ত্র মিছে। নেপাল একদা হিন্দু রাষ্ট্র ছিলো, এখন ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। নেপাল যদি পারে আমরা পারবো না কেন? বাংলাদেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী, নারীর উন্নয়নের জন্যেও বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক হতে হবে। ৮ই মার্চ ছিলো বিশ্ব নারী দিবস, এনিয়ে দু'একটি কথা না বললেই নয়। এবারের নারী দিবসে আমাদের দেশের নারীদের বড় পাওনা, একজন খুনি, ধর্ষক যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদন্ড বহালের রায়। জয় বাংলা। এবারের নারী দিবসে স্বামী বিবেকানন্দের একটি উক্তি দিয়ে লেখাটা শেষ করবো। স্বামীজীকে একবার এক ইংরেজ জিজ্ঞাসা করে যে, 'আচ্ছা তোমাদের মেয়েরা হ্যান্ডশেক করেনা কেন? স্বামীজি পাল্টা প্রশ্ন করেন, তোমাদের রানী কি হ্যান্ডশেক করেন? ভদ্রলোক উত্তর দেন, না। বিবেকানন্দ তখন বলেন, আমাদের দেশের প্রতিটি নারীই একএকজন রানী, তোমাদের রানীর মত।শিতাংশু গুহ, কলাম লেখক।নিউইয়র্ক, ১৩ মার্চ ২০১৬।
আকবর সাহেবের মত দ্বেষপ্রেমীর দরকার নেই।
যথেষ্ট জামাত-বিনপি দেশ-নিন্দুক ছড়িয়ে আছে দেশ-বিদেশে।
বাংলাদেশের ১৯৭২ এর সংবিধানে বিসমিল্লার সংযোজন অবৈধ, নিষ্প্রয়োজন, এবং অনৈসলামিকও বটে যদি মদিনা সনদকে দৃষ্টান্ত মানি।
তা ছাড়া, ১২০০ শত বছরের ইতিহাসে ভারতবর্ষের বা বাংলার কোন মুসলমান রাজা-বাদশা ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষনা করেননি, করাটা সুশাসনের অন্তরায় হবে বলেই করেননি।
Farida Majid Let me draw your attention to the central point made by 'My Father's Killer's Funeral', a point I've been making over the years and failed to convince some of you.
Here is Aatish << The form of Islam that has appeared in our time — and that killed my father and so many others — is not, as some like to claim, medieval. It's not even traditional. It is modern in the most basic sense: It is utterly new. The men who came to mourn my father's killer were doing what no one before them had ever done. As I watched this unprecedented funeral, motivated not by love for the man who was dead but by hatred for the man he killed, I recognized that the throng in Rawalpindi was a microcosm of radical Islam's relationship to our time. . . . >>>
http://www.nytimes.com/2016/03/13/opinion/sunday/my-fathers-killers-funeral.html?smid=fb-share&_r=0
জন্মের দাবি বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ হউক
৭২-এর সংবিধানের ভূয়সী প্রশংসা একদা সবাই করতেন। ওই সংবিধানটি ছিলো সময় ও যুগোপযুগী। ওতে জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা সংযোজিত হয়েছিলো। জাতির জনক বঙ্গবনধু শেখ মুজিব বুঝেছিলেন দেশকে এগিয়ে নিতে এর বিকল্প নেই। সংবিধান প্রবর্তনের পর এক ভাষণে তিনি বলেছিলেন, "--আর সাম্প্রদায়িকতা যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র বাংলাদেশ। মুসলমান তার ধর্মকর্ম করবে। হিন্দু তার ধর্মকর্ম করবে। বৌদ্ধ তার ধর্মকর্ম করবে। কেউ কাউকে বাঁধা দিতে পারবেনা। ইসলামের নামে আর বাংলাদেশের মানুষকে লুট করে খেতে দেয়া হবেনা।" কবে, কোথায় তিনি একথা বলেছিলেন তা মনে নেই, কথাগুলো হুবহু কিনা তাও জানিনা, কিন্তু মর্মার্থ একই; ফেইসবুকে এক বনধু এ উক্তিটি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, তাকে ধন্যবাদ। বাক্যের শেষ কথাটি তিনি বলেছিলেন পাকিস্তানীদের দিকে লক্ষ্য রেখে, কারণ পাকিস্তানীরা ধর্মের নামে সিকি শতাব্দী বাঙ্গালীদের শোষণ করেছে।
বঙ্গবনধু নেই, ৭২-এর সংবিধানও নেই; পনেরবার কাটাছেড়ার পর এখন যা আছে, তা ৭২-এর ধ্বংসাবশেষ। সুযোগ পেয়েও আমরা ৭২-এ ফিরে যাইনি। আমাদের সংবিধানের ওপর স্বৈরাচারী সরকার অনেক আঘাত হেনেছেন, জিয়া-এরশাদ ওই তালিকায় শীর্ষে। ক্ষমতায় থাকার জন্যে ওই দু'জন সংবিধানকে তাদের বাপদাদার সম্পত্তির মত ব্যবহার করেছেন। সবচেয়ে বড় আঘাত হেনেছেন জিয়া ৫ম এবং এরশাদ ৮ম সংশোধনীর মাধ্যমে। ওই দু'টি সংশোধনীর মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ পুনরায় পাকিস্তানের মত একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিনত হয় বা হওয়ার উপক্রম হয়। আদালতের রায়ে অবশ্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ১৯৭২-এর সংবিধানে ফিরে আসতে পারতো, সরকার শুধু 'তত্বাবধায়ক সরকার বাতিল' অংশটুকু গ্রহণ করেছেন, বাকিটুকু অজ্ঞাত কারণে বা মৌলবাদীদের অসন্তুষ্ট না করতে এড়িয়ে গেছেন। ফলে রাষ্ট্রধর্মের বিরুদ্ধে ২৮ বছর আগে দায়ের করা রীট পিটিশনের ওপর পুনরায় শুনানী শুরু হচ্ছে ২৭শে মার্চ ২০১৬। যারা ওই রিটটি এনেছিলেন, তাদের অনেকেই এখন নেই, যারা আছেন বা নেই, সবাইকে ধন্যবাদ।
দেশবাসী এটাকে স্বাগত জানায়। মামলার রায় যাই হোক, মানুষ তা স্বাগত জানাবে। দেশবাসী আশা করে সরকার রায় বাস্তবায়ন করবেন। একথা বলার কারণ এই যে, ভারতের সুপ্রীম কোর্টের 'শাহবানু' মামলার রায়ের কথা আমরা জানি, রাজীব গান্ধী সরকার মৌলবাদীদের খুশি করতে সংখ্যাগরিষ্টতার জোরে লোকসভায় তা উল্টে দিয়েছিলেন। আমরা তা চাইনা। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা এখন যেকোন সময়ের চাইতে অনেক বেশি স্বাধীন এবং মানুষ যথেষ্ট আস্থাশীল। সাম্প্রতিক সময়ে মহামান্য আদালত প্রধানের কিছু পদক্ষেপ ও কথাবার্তা এবং এমনকি দুই মন্ত্রীকে আদালতে তলব বাংলাদেশের ইতিহাসে নজীরবিহীন ও উত্সাহব্যঞ্জক। একটি দেশের সাধারণ মানুষের সর্বশেষ আস্থার স্থল হচ্ছে আদালত, আদালত যতটা স্বাধীন গণতন্ত্র ততটাই মজবুত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সদ্য বলেছেন, 'ওই দুই মন্ত্রীর বক্তব্য সরকারের বক্তব্য নহে', একথার অর্থ হলো প্রশাসন আদালতকে সমীহ করছেন এবং একইসাথে প্রশাসন চায় আদালত স্বাধীন ও বলিষ্টভাবে কাজ করুক।
সরকার কেন পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ৭২-এ ফিরে যাননি, তা আমরা বুঝি। রাজনীতিক দল বা সরকারের ভোটের দরকার, তারা ইচ্ছে থাকলেও সবকিছু করতে পারেন না। আদালত পারে। এরশাদও মোল্লাদের কাছে টানতেই রাষ্ট্রধর্ম আমদানী করেছিলেন, ইসলামের প্রতি মহানুভবতার জন্যে নহে। ওই লম্পট পবিত্র ধর্মকে নিয়েও লাম্পট্য করেছেন, ব্যাক্তস্বার্থে ইসলামকে ব্যবহার করেছেন। এরশাদ ১৯৮৮ সালের ৯ই জুন ভোটারবিহীন সংসদে রাষ্ট্রধর্ম বিলটি পাশ করিয়েছেন। সেদিন এর প্রতিবাদে ঢাকায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা মিছিল করেছিলো, আমি নিজে ওই মিছিলের সামনের সারিতে ছিলাম। স্মর্তব্য, কোন রাজনৈতিক দল বা প্রগতিশীল সংগঠন তখন মাঠে নামেনি, কারণ ভোট! মিছিলটি শেষ হয়েছিলো জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে। ঐসময় একজন এনএসআই অফিসার আমার সাথে সৌজন্যমুলুক কথাবার্তা বলেছিলেন, প্রেসক্লাবে বসে চা খেতেখেতে আমরা কথা বলেছিলাম। তিনি আমাকে জিজ্জাসা করেছিলেন, 'আচ্ছা, রাষ্ট্রধর্ম হলে হিন্দুদের কি ক্ষতি?' আমি তাকে বললাম, ভারত যদি হিন্দু রাষ্ট্র হয় তো আপনার কেমন লাগবে? তিনি চমকিত হয়ে বললেন, ভারত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, ভারত কেন হিন্দু রাষ্ট্র হতে যাবে? আমি বললাম, তাতে আপনার ক্ষতি কি, ভারত তো আপনার দেশ নয়? তিনি একটু চিন্তা করে বলেছিলেন, তাহলে তো মুসলমানদের ক্ষতি হবে'। তাকে বলেছিলাম, আপনি ভারতের সংখ্যালঘুর কথা ভাবছেন, নিজ দেশের সংখ্যালঘুর কথা ভাববেন না?
এঘটনাটি ইতিপূর্বে নিউইয়র্কের কাগজে দু'একবার ছাপা হয়েছে। শুধু সংখ্যালঘুর জন্যে নয়, রাষ্ট্রধর্ম দেশের আপামর জনগনের জন্যে ক্ষতিকর। কারণ এতে রাষ্ট্রে ধর্মের অনুপ্রবেশ ঘটে এবং তা জনগনকে বিভক্ত করে। রাষ্ট্রধর্ম মৌলবাদকে উত্সাহিত করে। রাষ্ট্র সবার, ধর্ম যারযার। পত্রিকায় দেখলাম, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেছেন, 'সাম্প্রদায়িকতা রুখতে ঘুরে দাড়াও বাংলাদেশ'। হেফাজত বলেছে, 'রাষ্ট্রধর্ম বাতিল হলে দাবানল জ্বলে উঠবে'। সন্ত্রাসের উস্কানিদাতা আওয়ামী ওলামা লীগ বলেছে, রাষ্ট্রভাষা থাকলে রাষ্ট্রধর্ম থাকবে। বাংলাদেশের ইতিহাস আছে ঘুরে দাড়ানোর। বাংলাদেশ ঘুরে দাড়াতে পারে। বাংলাদেশকে ঘুরে দাড়াতেই হবে। ৬৯, ৭১-এ বাংলাদেশ ঘুরে দাড়িয়েছিলো, কবর দিয়েছিলো সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র পাকিস্তানের। আর একবার কি সেটা অসম্ভব? মৌলবাদের গর্জন, অসারের তর্জন-গর্জনের মতই নিস্ফল হতে বাধ্য। ধর্মনিরপেক্ষতা মৌলবাদের প্রতি হুমকিস্বরূপ, ধর্মনিরপেক্ষতা ধর্মহীনতা নয় বরং তা সকল ধর্মের নাগরিককে তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার দেয় এবং ধর্মনিরপেক্ষতা কখনই ইসলামের প্রতি হুমকী নয়।
সামাজিক মাধ্যমে রাষ্ট্রধর্মের পক্ষে-বিপক্ষে এখন বিস্তর লেখালেখি হচ্ছে। এ বিষয়ে মৌলবাদী শক্তি সেই পুরানো কোরাস গাইছে। একাত্তরে এরা ইসলাম গেল বলে ইসলাম রক্ষায় রাজাকার হয়েছিলো। ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তির হাতেই নিরাপদ, ধর্মান্ধদের হাতে নয়। এ সময়ে বাংলাদেশ যেমন আছে, ইসলামও আছে, শুধু রাজাকাররা একের পর এক ফাঁসিকাস্টের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রধর্ম না থাকলে নাকি বাংলাদেশ ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগিয়ে যাবে! মানুষ তো বরং উল্টোটা দেখছে। পঁচাত্তরের পর ধর্মকে রাজনীতিতে টেনে আনার কারণেই বাংলাদেশে আজ মৌলবাদী-সন্ত্রাসীদের রমরমা অবস্থা। রাষ্ট্রধর্ম আছে বলেই মানুষকে হেফাজতি তান্ডব দেখতে হয়েছে, দেশবাসী 'বার্ন ইউনিট' চিনেছে বা পবিত্র কোরান পোড়ার দৃশ্য মানুষকে দেখতে হয়েছে। আর এসব তারাই করেছে ধর্মকে যারা রাজনীতিতে ব্যবহার করে বা যারা ধর্মের এজেন্সি নিয়ে বসে আছে। শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ কোরান শরিফ পোড়ায় না, বাসভর্তি সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারেনা। অর্থাৎ রাষ্ট্রধর্ম এতকাল মৌলবাদকে সুড়সুড়ি দিয়েছে, এটা বন্ধ হওয়া দরকার। সরকার করেনি, তাই মানুষ এখন আদালতের মুখাপেক্ষী।
বাংলাদেশ জনসুত্রে ধর্মনিরপেক্ষ। জন্মের দাবি বাংলাদেশ আবার ধর্মনিরপেক্ষ হউক। ধর্মনিরপেক্ষ নাহলে গণতন্ত্র মিছে। নেপাল একদা হিন্দু রাষ্ট্র ছিলো, এখন ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। নেপাল যদি পারে আমরা পারবো না কেন? বাংলাদেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী, নারীর উন্নয়নের জন্যেও বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক হতে হবে। ৮ই মার্চ ছিলো বিশ্ব নারী দিবস, এনিয়ে দু'একটি কথা না বললেই নয়। এবারের নারী দিবসে আমাদের দেশের নারীদের বড় পাওনা, একজন খুনি, ধর্ষক যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদন্ড বহালের রায়। জয় বাংলা। এবারের নারী দিবসে স্বামী বিবেকানন্দের একটি উক্তি দিয়ে লেখাটা শেষ করবো। স্বামীজীকে একবার এক ইংরেজ জিজ্ঞাসা করে যে, 'আচ্ছা তোমাদের মেয়েরা হ্যান্ডশেক করেনা কেন? স্বামীজি পাল্টা প্রশ্ন করেন, তোমাদের রানী কি হ্যান্ডশেক করেন? ভদ্রলোক উত্তর দেন, না। বিবেকানন্দ তখন বলেন, আমাদের দেশের প্রতিটি নারীই একএকজন রানী, তোমাদের রানীর মত।
শিতাংশু গুহ, কলাম লেখক।
নিউইয়র্ক, ১৩ মার্চ ২০১৬।
জন্মের দাবি বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ হউক৭২-এর সংবিধানের ভূয়সী প্রশংসা একদা সবাই করতেন। ওই সংবিধানটি ছিলো সময় ও যুগোপযুগী। ওতে জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা সংযোজিত হয়েছিলো। জাতির জনক বঙ্গবনধু শেখ মুজিব বুঝেছিলেন দেশকে এগিয়ে নিতে এর বিকল্প নেই। সংবিধান প্রবর্তনের পর এক ভাষণে তিনি বলেছিলেন, "--আর সাম্প্রদায়িকতা যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র বাংলাদেশ। মুসলমান তার ধর্মকর্ম করবে। হিন্দু তার ধর্মকর্ম করবে। বৌদ্ধ তার ধর্মকর্ম করবে। কেউ কাউকে বাঁধা দিতে পারবেনা। ইসলামের নামে আর বাংলাদেশের মানুষকে লুট করে খেতে দেয়া হবেনা।" কবে, কোথায় তিনি একথা বলেছিলেন তা মনে নেই, কথাগুলো হুবহু কিনা তাও জানিনা, কিন্তু মর্মার্থ একই; ফেইসবুকে এক বনধু এ উক্তিটি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, তাকে ধন্যবাদ। বাক্যের শেষ কথাটি তিনি বলেছিলেন পাকিস্তানীদের দিকে লক্ষ্য রেখে, কারণ পাকিস্তানীরা ধর্মের নামে সিকি শতাব্দী বাঙ্গালীদের শোষণ করেছে।বঙ্গবনধু নেই, ৭২-এর সংবিধানও নেই; পনেরবার কাটাছেড়ার পর এখন যা আছে, তা ৭২-এর ধ্বংসাবশেষ। সুযোগ পেয়েও আমরা ৭২-এ ফিরে যাইনি। আমাদের সংবিধানের ওপর স্বৈরাচারী সরকার অনেক আঘাত হেনেছেন, জিয়া-এরশাদ ওই তালিকায় শীর্ষে। ক্ষমতায় থাকার জন্যে ওই দু'জন সংবিধানকে তাদের বাপদাদার সম্পত্তির মত ব্যবহার করেছেন। সবচেয়ে বড় আঘাত হেনেছেন জিয়া ৫ম এবং এরশাদ ৮ম সংশোধনীর মাধ্যমে। ওই দু'টি সংশোধনীর মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ পুনরায় পাকিস্তানের মত একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিনত হয় বা হওয়ার উপক্রম হয়। আদালতের রায়ে অবশ্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ১৯৭২-এর সংবিধানে ফিরে আসতে পারতো, সরকার শুধু 'তত্বাবধায়ক সরকার বাতিল' অংশটুকু গ্রহণ করেছেন, বাকিটুকু অজ্ঞাত কারণে বা মৌলবাদীদের অসন্তুষ্ট না করতে এড়িয়ে গেছেন। ফলে রাষ্ট্রধর্মের বিরুদ্ধে ২৮ বছর আগে দায়ের করা রীট পিটিশনের ওপর পুনরায় শুনানী শুরু হচ্ছে ২৭শে মার্চ ২০১৬। যারা ওই রিটটি এনেছিলেন, তাদের অনেকেই এখন নেই, যারা আছেন বা নেই, সবাইকে ধন্যবাদ।দেশবাসী এটাকে স্বাগত জানায়। মামলার রায় যাই হোক, মানুষ তা স্বাগত জানাবে। দেশবাসী আশা করে সরকার রায় বাস্তবায়ন করবেন। একথা বলার কারণ এই যে, ভারতের সুপ্রীম কোর্টের 'শাহবানু' মামলার রায়ের কথা আমরা জানি, রাজীব গান্ধী সরকার মৌলবাদীদের খুশি করতে সংখ্যাগরিষ্টতার জোরে লোকসভায় তা উল্টে দিয়েছিলেন। আমরা তা চাইনা। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা এখন যেকোন সময়ের চাইতে অনেক বেশি স্বাধীন এবং মানুষ যথেষ্ট আস্থাশীল। সাম্প্রতিক সময়ে মহামান্য আদালত প্রধানের কিছু পদক্ষেপ ও কথাবার্তা এবং এমনকি দুই মন্ত্রীকে আদালতে তলব বাংলাদেশের ইতিহাসে নজীরবিহীন ও উত্সাহব্যঞ্জক। একটি দেশের সাধারণ মানুষের সর্বশেষ আস্থার স্থল হচ্ছে আদালত, আদালত যতটা স্বাধীন গণতন্ত্র ততটাই মজবুত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সদ্য বলেছেন, 'ওই দুই মন্ত্রীর বক্তব্য সরকারের বক্তব্য নহে', একথার অর্থ হলো প্রশাসন আদালতকে সমীহ করছেন এবং একইসাথে প্রশাসন চায় আদালত স্বাধীন ও বলিষ্টভাবে কাজ করুক।সরকার কেন পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ৭২-এ ফিরে যাননি, তা আমরা বুঝি। রাজনীতিক দল বা সরকারের ভোটের দরকার, তারা ইচ্ছে থাকলেও সবকিছু করতে পারেন না। আদালত পারে। এরশাদও মোল্লাদের কাছে টানতেই রাষ্ট্রধর্ম আমদানী করেছিলেন, ইসলামের প্রতি মহানুভবতার জন্যে নহে। ওই লম্পট পবিত্র ধর্মকে নিয়েও লাম্পট্য করেছেন, ব্যাক্তস্বার্থে ইসলামকে ব্যবহার করেছেন। এরশাদ ১৯৮৮ সালের ৯ই জুন ভোটারবিহীন সংসদে রাষ্ট্রধর্ম বিলটি পাশ করিয়েছেন। সেদিন এর প্রতিবাদে ঢাকায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা মিছিল করেছিলো, আমি নিজে ওই মিছিলের সামনের সারিতে ছিলাম। স্মর্তব্য, কোন রাজনৈতিক দল বা প্রগতিশীল সংগঠন তখন মাঠে নামেনি, কারণ ভোট! মিছিলটি শেষ হয়েছিলো জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে। ঐসময় একজন এনএসআই অফিসার আমার সাথে সৌজন্যমুলুক কথাবার্তা বলেছিলেন, প্রেসক্লাবে বসে চা খেতেখেতে আমরা কথা বলেছিলাম। তিনি আমাকে জিজ্জাসা করেছিলেন, 'আচ্ছা, রাষ্ট্রধর্ম হলে হিন্দুদের কি ক্ষতি?' আমি তাকে বললাম, ভারত যদি হিন্দু রাষ্ট্র হয় তো আপনার কেমন লাগবে? তিনি চমকিত হয়ে বললেন, ভারত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, ভারত কেন হিন্দু রাষ্ট্র হতে যাবে? আমি বললাম, তাতে আপনার ক্ষতি কি, ভারত তো আপনার দেশ নয়? তিনি একটু চিন্তা করে বলেছিলেন, তাহলে তো মুসলমানদের ক্ষতি হবে'। তাকে বলেছিলাম, আপনি ভারতের সংখ্যালঘুর কথা ভাবছেন, নিজ দেশের সংখ্যালঘুর কথা ভাববেন না?এঘটনাটি ইতিপূর্বে নিউইয়র্কের কাগজে দু'একবার ছাপা হয়েছে। শুধু সংখ্যালঘুর জন্যে নয়, রাষ্ট্রধর্ম দেশের আপামর জনগনের জন্যে ক্ষতিকর। কারণ এতে রাষ্ট্রে ধর্মের অনুপ্রবেশ ঘটে এবং তা জনগনকে বিভক্ত করে। রাষ্ট্রধর্ম মৌলবাদকে উত্সাহিত করে। রাষ্ট্র সবার, ধর্ম যারযার। পত্রিকায় দেখলাম, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেছেন, 'সাম্প্রদায়িকতা রুখতে ঘুরে দাড়াও বাংলাদেশ'। হেফাজত বলেছে, 'রাষ্ট্রধর্ম বাতিল হলে দাবানল জ্বলে উঠবে'। সন্ত্রাসের উস্কানিদাতা আওয়ামী ওলামা লীগ বলেছে, রাষ্ট্রভাষা থাকলে রাষ্ট্রধর্ম থাকবে। বাংলাদেশের ইতিহাস আছে ঘুরে দাড়ানোর। বাংলাদেশ ঘুরে দাড়াতে পারে। বাংলাদেশকে ঘুরে দাড়াতেই হবে। ৬৯, ৭১-এ বাংলাদেশ ঘুরে দাড়িয়েছিলো, কবর দিয়েছিলো সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র পাকিস্তানের। আর একবার কি সেটা অসম্ভব? মৌলবাদের গর্জন, অসারের তর্জন-গর্জনের মতই নিস্ফল হতে বাধ্য। ধর্মনিরপেক্ষতা মৌলবাদের প্রতি হুমকিস্বরূপ, ধর্মনিরপেক্ষতা ধর্মহীনতা নয় বরং তা সকল ধর্মের নাগরিককে তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার দেয় এবং ধর্মনিরপেক্ষতা কখনই ইসলামের প্রতি হুমকী নয়।সামাজিক মাধ্যমে রাষ্ট্রধর্মের পক্ষে-বিপক্ষে এখন বিস্তর লেখালেখি হচ্ছে। এ বিষয়ে মৌলবাদী শক্তি সেই পুরানো কোরাস গাইছে। একাত্তরে এরা ইসলাম গেল বলে ইসলাম রক্ষায় রাজাকার হয়েছিলো। ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তির হাতেই নিরাপদ, ধর্মান্ধদের হাতে নয়। এ সময়ে বাংলাদেশ যেমন আছে, ইসলামও আছে, শুধু রাজাকাররা একের পর এক ফাঁসিকাস্টের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রধর্ম না থাকলে নাকি বাংলাদেশ ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগিয়ে যাবে! মানুষ তো বরং উল্টোটা দেখছে। পঁচাত্তরের পর ধর্মকে রাজনীতিতে টেনে আনার কারণেই বাংলাদেশে আজ মৌলবাদী-সন্ত্রাসীদের রমরমা অবস্থা। রাষ্ট্রধর্ম আছে বলেই মানুষকে হেফাজতি তান্ডব দেখতে হয়েছে, দেশবাসী 'বার্ন ইউনিট' চিনেছে বা পবিত্র কোরান পোড়ার দৃশ্য মানুষকে দেখতে হয়েছে। আর এসব তারাই করেছে ধর্মকে যারা রাজনীতিতে ব্যবহার করে বা যারা ধর্মের এজেন্সি নিয়ে বসে আছে। শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ কোরান শরিফ পোড়ায় না, বাসভর্তি সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারেনা। অর্থাৎ রাষ্ট্রধর্ম এতকাল মৌলবাদকে সুড়সুড়ি দিয়েছে, এটা বন্ধ হওয়া দরকার। সরকার করেনি, তাই মানুষ এখন আদালতের মুখাপেক্ষী।বাংলাদেশ জনসুত্রে ধর্মনিরপেক্ষ। জন্মের দাবি বাংলাদেশ আবার ধর্মনিরপেক্ষ হউক। ধর্মনিরপেক্ষ নাহলে গণতন্ত্র মিছে। নেপাল একদা হিন্দু রাষ্ট্র ছিলো, এখন ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। নেপাল যদি পারে আমরা পারবো না কেন? বাংলাদেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী, নারীর উন্নয়নের জন্যেও বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক হতে হবে। ৮ই মার্চ ছিলো বিশ্ব নারী দিবস, এনিয়ে দু'একটি কথা না বললেই নয়। এবারের নারী দিবসে আমাদের দেশের নারীদের বড় পাওনা, একজন খুনি, ধর্ষক যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদন্ড বহালের রায়। জয় বাংলা। এবারের নারী দিবসে স্বামী বিবেকানন্দের একটি উক্তি দিয়ে লেখাটা শেষ করবো। স্বামীজীকে একবার এক ইংরেজ জিজ্ঞাসা করে যে, 'আচ্ছা তোমাদের মেয়েরা হ্যান্ডশেক করেনা কেন? স্বামীজি পাল্টা প্রশ্ন করেন, তোমাদের রানী কি হ্যান্ডশেক করেন? ভদ্রলোক উত্তর দেন, না। বিবেকানন্দ তখন বলেন, আমাদের দেশের প্রতিটি নারীই একএকজন রানী, তোমাদের রানীর মত।শিতাংশু গুহ, কলাম লেখক।নিউইয়র্ক, ১৩ মার্চ ২০১৬।
জন্মের দাবি বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ হউক৭২-এর সংবিধানের ভূয়সী প্রশংসা একদা সবাই করতেন। ওই সংবিধানটি ছিলো সময় ও যুগোপযুগী। ওতে জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা সংযোজিত হয়েছিলো। জাতির জনক বঙ্গবনধু শেখ মুজিব বুঝেছিলেন দেশকে এগিয়ে নিতে এর বিকল্প নেই। সংবিধান প্রবর্তনের পর এক ভাষণে তিনি বলেছিলেন, "--আর সাম্প্রদায়িকতা যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র বাংলাদেশ। মুসলমান তার ধর্মকর্ম করবে। হিন্দু তার ধর্মকর্ম করবে। বৌদ্ধ তার ধর্মকর্ম করবে। কেউ কাউকে বাঁধা দিতে পারবেনা। ইসলামের নামে আর বাংলাদেশের মানুষকে লুট করে খেতে দেয়া হবেনা।" কবে, কোথায় তিনি একথা বলেছিলেন তা মনে নেই, কথাগুলো হুবহু কিনা তাও জানিনা, কিন্তু মর্মার্থ একই; ফেইসবুকে এক বনধু এ উক্তিটি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, তাকে ধন্যবাদ। বাক্যের শেষ কথাটি তিনি বলেছিলেন পাকিস্তানীদের দিকে লক্ষ্য রেখে, কারণ পাকিস্তানীরা ধর্মের নামে সিকি শতাব্দী বাঙ্গালীদের শোষণ করেছে।বঙ্গবনধু নেই, ৭২-এর সংবিধানও নেই; পনেরবার কাটাছেড়ার পর এখন যা আছে, তা ৭২-এর ধ্বংসাবশেষ। সুযোগ পেয়েও আমরা ৭২-এ ফিরে যাইনি। আমাদের সংবিধানের ওপর স্বৈরাচারী সরকার অনেক আঘাত হেনেছেন, জিয়া-এরশাদ ওই তালিকায় শীর্ষে। ক্ষমতায় থাকার জন্যে ওই দু'জন সংবিধানকে তাদের বাপদাদার সম্পত্তির মত ব্যবহার করেছেন। সবচেয়ে বড় আঘাত হেনেছেন জিয়া ৫ম এবং এরশাদ ৮ম সংশোধনীর মাধ্যমে। ওই দু'টি সংশোধনীর মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ পুনরায় পাকিস্তানের মত একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিনত হয় বা হওয়ার উপক্রম হয়। আদালতের রায়ে অবশ্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ১৯৭২-এর সংবিধানে ফিরে আসতে পারতো, সরকার শুধু 'তত্বাবধায়ক সরকার বাতিল' অংশটুকু গ্রহণ করেছেন, বাকিটুকু অজ্ঞাত কারণে বা মৌলবাদীদের অসন্তুষ্ট না করতে এড়িয়ে গেছেন। ফলে রাষ্ট্রধর্মের বিরুদ্ধে ২৮ বছর আগে দায়ের করা রীট পিটিশনের ওপর পুনরায় শুনানী শুরু হচ্ছে ২৭শে মার্চ ২০১৬। যারা ওই রিটটি এনেছিলেন, তাদের অনেকেই এখন নেই, যারা আছেন বা নেই, সবাইকে ধন্যবাদ।দেশবাসী এটাকে স্বাগত জানায়। মামলার রায় যাই হোক, মানুষ তা স্বাগত জানাবে। দেশবাসী আশা করে সরকার রায় বাস্তবায়ন করবেন। একথা বলার কারণ এই যে, ভারতের সুপ্রীম কোর্টের 'শাহবানু' মামলার রায়ের কথা আমরা জানি, রাজীব গান্ধী সরকার মৌলবাদীদের খুশি করতে সংখ্যাগরিষ্টতার জোরে লোকসভায় তা উল্টে দিয়েছিলেন। আমরা তা চাইনা। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা এখন যেকোন সময়ের চাইতে অনেক বেশি স্বাধীন এবং মানুষ যথেষ্ট আস্থাশীল। সাম্প্রতিক সময়ে মহামান্য আদালত প্রধানের কিছু পদক্ষেপ ও কথাবার্তা এবং এমনকি দুই মন্ত্রীকে আদালতে তলব বাংলাদেশের ইতিহাসে নজীরবিহীন ও উত্সাহব্যঞ্জক। একটি দেশের সাধারণ মানুষের সর্বশেষ আস্থার স্থল হচ্ছে আদালত, আদালত যতটা স্বাধীন গণতন্ত্র ততটাই মজবুত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সদ্য বলেছেন, 'ওই দুই মন্ত্রীর বক্তব্য সরকারের বক্তব্য নহে', একথার অর্থ হলো প্রশাসন আদালতকে সমীহ করছেন এবং একইসাথে প্রশাসন চায় আদালত স্বাধীন ও বলিষ্টভাবে কাজ করুক।সরকার কেন পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ৭২-এ ফিরে যাননি, তা আমরা বুঝি। রাজনীতিক দল বা সরকারের ভোটের দরকার, তারা ইচ্ছে থাকলেও সবকিছু করতে পারেন না। আদালত পারে। এরশাদও মোল্লাদের কাছে টানতেই রাষ্ট্রধর্ম আমদানী করেছিলেন, ইসলামের প্রতি মহানুভবতার জন্যে নহে। ওই লম্পট পবিত্র ধর্মকে নিয়েও লাম্পট্য করেছেন, ব্যাক্তস্বার্থে ইসলামকে ব্যবহার করেছেন। এরশাদ ১৯৮৮ সালের ৯ই জুন ভোটারবিহীন সংসদে রাষ্ট্রধর্ম বিলটি পাশ করিয়েছেন। সেদিন এর প্রতিবাদে ঢাকায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা মিছিল করেছিলো, আমি নিজে ওই মিছিলের সামনের সারিতে ছিলাম। স্মর্তব্য, কোন রাজনৈতিক দল বা প্রগতিশীল সংগঠন তখন মাঠে নামেনি, কারণ ভোট! মিছিলটি শেষ হয়েছিলো জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে। ঐসময় একজন এনএসআই অফিসার আমার সাথে সৌজন্যমুলুক কথাবার্তা বলেছিলেন, প্রেসক্লাবে বসে চা খেতেখেতে আমরা কথা বলেছিলাম। তিনি আমাকে জিজ্জাসা করেছিলেন, 'আচ্ছা, রাষ্ট্রধর্ম হলে হিন্দুদের কি ক্ষতি?' আমি তাকে বললাম, ভারত যদি হিন্দু রাষ্ট্র হয় তো আপনার কেমন লাগবে? তিনি চমকিত হয়ে বললেন, ভারত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, ভারত কেন হিন্দু রাষ্ট্র হতে যাবে? আমি বললাম, তাতে আপনার ক্ষতি কি, ভারত তো আপনার দেশ নয়? তিনি একটু চিন্তা করে বলেছিলেন, তাহলে তো মুসলমানদের ক্ষতি হবে'। তাকে বলেছিলাম, আপনি ভারতের সংখ্যালঘুর কথা ভাবছেন, নিজ দেশের সংখ্যালঘুর কথা ভাববেন না?এঘটনাটি ইতিপূর্বে নিউইয়র্কের কাগজে দু'একবার ছাপা হয়েছে। শুধু সংখ্যালঘুর জন্যে নয়, রাষ্ট্রধর্ম দেশের আপামর জনগনের জন্যে ক্ষতিকর। কারণ এতে রাষ্ট্রে ধর্মের অনুপ্রবেশ ঘটে এবং তা জনগনকে বিভক্ত করে। রাষ্ট্রধর্ম মৌলবাদকে উত্সাহিত করে। রাষ্ট্র সবার, ধর্ম যারযার। পত্রিকায় দেখলাম, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেছেন, 'সাম্প্রদায়িকতা রুখতে ঘুরে দাড়াও বাংলাদেশ'। হেফাজত বলেছে, 'রাষ্ট্রধর্ম বাতিল হলে দাবানল জ্বলে উঠবে'। সন্ত্রাসের উস্কানিদাতা আওয়ামী ওলামা লীগ বলেছে, রাষ্ট্রভাষা থাকলে রাষ্ট্রধর্ম থাকবে। বাংলাদেশের ইতিহাস আছে ঘুরে দাড়ানোর। বাংলাদেশ ঘুরে দাড়াতে পারে। বাংলাদেশকে ঘুরে দাড়াতেই হবে। ৬৯, ৭১-এ বাংলাদেশ ঘুরে দাড়িয়েছিলো, কবর দিয়েছিলো সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র পাকিস্তানের। আর একবার কি সেটা অসম্ভব? মৌলবাদের গর্জন, অসারের তর্জন-গর্জনের মতই নিস্ফল হতে বাধ্য। ধর্মনিরপেক্ষতা মৌলবাদের প্রতি হুমকিস্বরূপ, ধর্মনিরপেক্ষতা ধর্মহীনতা নয় বরং তা সকল ধর্মের নাগরিককে তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার দেয় এবং ধর্মনিরপেক্ষতা কখনই ইসলামের প্রতি হুমকী নয়।সামাজিক মাধ্যমে রাষ্ট্রধর্মের পক্ষে-বিপক্ষে এখন বিস্তর লেখালেখি হচ্ছে। এ বিষয়ে মৌলবাদী শক্তি সেই পুরানো কোরাস গাইছে। একাত্তরে এরা ইসলাম গেল বলে ইসলাম রক্ষায় রাজাকার হয়েছিলো। ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তির হাতেই নিরাপদ, ধর্মান্ধদের হাতে নয়। এ সময়ে বাংলাদেশ যেমন আছে, ইসলামও আছে, শুধু রাজাকাররা একের পর এক ফাঁসিকাস্টের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রধর্ম না থাকলে নাকি বাংলাদেশ ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগিয়ে যাবে! মানুষ তো বরং উল্টোটা দেখছে। পঁচাত্তরের পর ধর্মকে রাজনীতিতে টেনে আনার কারণেই বাংলাদেশে আজ মৌলবাদী-সন্ত্রাসীদের রমরমা অবস্থা। রাষ্ট্রধর্ম আছে বলেই মানুষকে হেফাজতি তান্ডব দেখতে হয়েছে, দেশবাসী 'বার্ন ইউনিট' চিনেছে বা পবিত্র কোরান পোড়ার দৃশ্য মানুষকে দেখতে হয়েছে। আর এসব তারাই করেছে ধর্মকে যারা রাজনীতিতে ব্যবহার করে বা যারা ধর্মের এজেন্সি নিয়ে বসে আছে। শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ কোরান শরিফ পোড়ায় না, বাসভর্তি সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারেনা। অর্থাৎ রাষ্ট্রধর্ম এতকাল মৌলবাদকে সুড়সুড়ি দিয়েছে, এটা বন্ধ হওয়া দরকার। সরকার করেনি, তাই মানুষ এখন আদালতের মুখাপেক্ষী।বাংলাদেশ জনসুত্রে ধর্মনিরপেক্ষ। জন্মের দাবি বাংলাদেশ আবার ধর্মনিরপেক্ষ হউক। ধর্মনিরপেক্ষ নাহলে গণতন্ত্র মিছে। নেপাল একদা হিন্দু রাষ্ট্র ছিলো, এখন ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। নেপাল যদি পারে আমরা পারবো না কেন? বাংলাদেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী, নারীর উন্নয়নের জন্যেও বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক হতে হবে। ৮ই মার্চ ছিলো বিশ্ব নারী দিবস, এনিয়ে দু'একটি কথা না বললেই নয়। এবারের নারী দিবসে আমাদের দেশের নারীদের বড় পাওনা, একজন খুনি, ধর্ষক যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদন্ড বহালের রায়। জয় বাংলা। এবারের নারী দিবসে স্বামী বিবেকানন্দের একটি উক্তি দিয়ে লেখাটা শেষ করবো। স্বামীজীকে একবার এক ইংরেজ জিজ্ঞাসা করে যে, 'আচ্ছা তোমাদের মেয়েরা হ্যান্ডশেক করেনা কেন? স্বামীজি পাল্টা প্রশ্ন করেন, তোমাদের রানী কি হ্যান্ডশেক করেন? ভদ্রলোক উত্তর দেন, না। বিবেকানন্দ তখন বলেন, আমাদের দেশের প্রতিটি নারীই একএকজন রানী, তোমাদের রানীর মত।শিতাংশু গুহ, কলাম লেখক।নিউইয়র্ক, ১৩ মার্চ ২০১৬।