২৩ মার্চ ছিল পাকিস্তান প্রজাতন্ত্র দিবস। লাহোর প্রস্তাবের স্মরণে প্রতি বছর দিবসটি পালন করা হত। কিন্তু সেদিন ঢাকার প্রেসিডেন্ট ভবন ও সেনাবাহিনীর সদর দফতর ছাড়া বাংলাদেশে আর কোথাও পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা ওড়েনি। ঢাকার সেক্রেটারিয়েট, হাইকোর্ট, গণপরিষদ, ইপিআর, রাজারবাগ পুলিশ সদর দফতর, ঢাকা বেতার, টেলিভিশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রধান বিচারপতি ও মুখ্য সচিবের বাসভবনসহ সব সরকারি-বেসরকারি ভবন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলার পতাকা তোলা হয়।
এদিনেই বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সদস্যদের সামরিক কায়দায় অভিবাদনের মধ্য দিয়ে তাঁর বাসভবনে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। এর আগে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সংগঠনের প্রেসিডেন্ট নূরে আলম সিদ্দিকী এই পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধুর হাতে তুলে দেন।
পাকিস্তান দিবসে স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের প্রতিরোধ দিবসের ডাকে এদিন বাংলাদশের ঘরে ঘরে স্বাধীনতার পতাকা ওড়ে। ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। পতাকা উত্তোলনের সময় গান ফায়ারিং করেন স্বাধীন বাংলা নিউক্লিয়াসের সদস্য ও জয় বাংলা বাহিনীর উপপ্রধান কামরুল আলম খসরু।
এই বাহিনীর পাঁচ শতাধিক সদস্য সামরিক কায়দায় স্বাধীন বাংলার পতাকা নিয়ে মিছিল করে সারা ঢাকা শহরে। ছাত্রী মিছিলের নেতৃত্ব দেন মমতাজ বেগম। জয় বাংলা বাহিনীর পাঁচ শতাধিক সদস্য প্যারেড করে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে যান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে তাঁরা সেখানে অভিবাদন জানান। বঙ্গবন্ধু সালাম গ্রহণ শেষে জয় বাংলা বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত ভাষণে বলেন, বাংলার মানুষ কারো করুণার পাত্র নয়। আপন শক্তির দুর্জয় ক্ষমতাবলেই আপনারা স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনবেন। বাংলার জয় অনিবার্য।
আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমেদ ও ড. কামাল হোসেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা বিচারপতি এ.আর. কর্নেলিয়াস, লে. জেনারেল পীরজাদা, এম.এ আহমেদ কর্নেল হাসানের সঙ্গে দুপুর এবং বিকালে দুই দফায় দুই ঘন্টা স্থায়ী বৈঠকে মিলিত হন।
__._,_.___