Banner Advertiser

Tuesday, December 15, 2015

[mukto-mona] বাংলাদেশের গণহত্যা ও হেনরি কিসিঞ্জারের বিচার



বাংলাদেশের গণহত্যা ও হেনরি কিসিঞ্জারের বিচার

মফিদুল হক

১৬ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০



বাংলাদেশের গণহত্যা ও হেনরি কিসিঞ্জারের বিচার

১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে চার দশক পর বাংলার মাটিতে, এ এক ঐতিহাসিক তাত্পর্যময় ঘটনা। এই বিচার হচ্ছে গণহত্যার সঙ্গে জড়িত এ দেশীয় দোসরদের। বিলম্বিত বিচার ও কেবল এ দেশীয় সহযোগীদের বিচার সঠিক কাজ নয়, মূল হোতাদের বাদ দিয়ে সহযোগীদের বিচার ঠিক হচ্ছে না—এমন কথা অনেকে বলার চেষ্টা করছেন। তাঁদের বক্তব্যে বাস্তবতার একটি স্বীকৃতি ভিন্নভাবে মিলছে, সেটা হলো জেনোসাইড বা গণহত্যা ঘটে অনেক মানুষ মিলে, বিচার হতে হবে সবার। অপরাধীদের মধ্যে 'হোতাদের' অবস্থান রাষ্ট্রশক্তির শীর্ষে, সেই সঙ্গে গণহত্যা বাস্তব করে তোলার নিষ্ঠুর কাজে যুক্ত থাকে আরো অনেক মানুষ, মধ্যবর্তী ও মাঠপর্যায়ে যাদের অবস্থান। স্মরণ রাখা দরকার, বিলম্বিত বিচার অর্থ বিচারের অধিকার ক্ষুণ্ন হওয়া নয়, বরং বিচারের হাত যে কত শক্তিশালী, গণহত্যার জন্য বিচারের অধিকার যে কখনো তামাদি হয়ে যায় না, এ তারই অনুপম প্রকাশ। একাত্তরের গণহত্যার এ দেশীয় দোসরদের বিচারকাজ 'হোতাদের' বিচারের প্রাসঙ্গিকতা ও গুরুত্ব যে বড়ভাবে মেলে ধরেছে সেটাও এক ইতিবাচক ঘটনা। ১৯৪৮ সালে গৃহীত জোনোসাইড কনভেনশনে দৃঢ়ভাবে বলা হয়েছিল যে গণহত্যায় যারা সহযোগিতা করে, পরিকল্পনা প্রণয়নে অবদান রাখে, যোগসাজশ ও উসকানি দেয় তারাও সমভাবে দায়ী। সমভাবে কথাটিই বলা হয়েছে কনভেনশনে এবং পরবর্তী সময়ে সব আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে তা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে ওই ধারণার সম্প্রসারণ লক্ষ করা যায় এবং আন্তর্জাতিক আইনের পরবর্তী এই বিকাশ বাংলাদেশের বিচারের রায়েও আমরা লক্ষ করি। এর এক তাত্পর্যময় দিক হচ্ছে, গণহত্যা সংঘটনে জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজ বা যৌথ অপরাধচক্র; কিংবা বলা যেতে পারে সম্মিলিত অপরাধ-যৌগ গঠিত হওয়ার ধারণা।

একাত্তরের গণহত্যার দায়ভাগ বিশেষভাবে অর্পিত হয় ১৯৫ পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীর ওপর, যাদের শনাক্ত ও চিহ্নিত করা হয়েছিল, বিচারের জন্য নেওয়া হয়েছিল বিভিন্ন উদ্যোগ, এমনকি জাতীয়ভাবে প্রণীত হয়েছিল উপযুক্ত আন্তর্জাতিক আইন। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচার শুরুর পর ১৯৫ পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দাবি যে ক্রমে জোরদার হয়ে উঠছে সেটা সুলক্ষণ বটে, তবে জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজকে আরো বড়ভাবে দেখার রয়েছে। তেমনভাবে দেখলে এখানে নিশ্চিতভাবে উঠে আসে পিন্ডি-ইসলামাবাদে ক্ষমতাসীন তত্কালীন পাকিস্তানি সামরিক ও রাজনৈতিক নেতাদের নাম, অর্থাত্ কেবল ১৯৫ জন যুদ্ধবন্দি যুদ্ধাপরাধী নয়, আরো নাম এখানে উঠে আসে। গণহত্যা সংঘটনে যোগসাজশ, অনুমোদন, সহযোগিতা ও সহায়তার জন্য আরো এক নাম অপরাধী তালিকাভুক্ত হতে হবে, সেই ব্যক্তি হচ্ছেন প্রেসিডেন্ট নিক্সনের নিরাপত্তা উপদেষ্টা, পরবর্তীকালের বিদেশমন্ত্রী, মহাশক্তিধর হেনরি কিসিঞ্জার।

এ ক্ষেত্রে আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করব খ্যাতনামা সাংবাদিক ক্রিস্টোফার হিচেনসের কথা, ক্যান্সারে অকালমৃত্যু কিসিঞ্জারের বিচার অনুষ্ঠানে তাঁর ক্রুসেডে ইতি টেনেছে, কিন্তু যে প্রয়াস তিনি নিয়েছিলেন, তাঁর প্রাসঙ্গিকতা, যৌক্তিকতা ও প্রয়োজনীয়তা কোনোভাবে ফুরিয়ে যায়নি। ক্রিস্টোফার হিচেনসের গ্রন্থ 'দি ট্রায়াল অব হেনরি কিসিঞ্জার' ফিরে ফিরে পাঠ করা দরকার। হিচেনস যেসব দেশে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য কিসিঞ্জারকে দায়ী করেছেন তার মধ্যে রয়েছে ভিয়েতনাম তথা ইন্দোচীন, চিলি, সাইপ্রাস, পূর্ব তিমুর ও বাংলাদেশ। বাংলাদেশে গণহত্যা ও পরবর্তীকালের বঙ্গবন্ধু হত্যা এক সূত্রে বিচার করেছেন হিচেনস এবং প্রণয়ন করেছেন তাঁর অভিযোগনামা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকে নিক্সন-প্রশাসন অনুসৃত পাকিস্তান-তোষণমূলক নীতির প্রধান প্রবক্তা ছিলেন হেনরি কিসিঞ্জার। এর ফলে যে পাকিস্তানি শাসকরা বেপরোয়া ও যথেচ্ছভাবে তাদের ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে গেছে সেটা প্রমাণিত সত্য। এর পেছনে কিসিঞ্জারের ব্যক্তিগত স্বার্থও জড়িত ছিল, একাত্তরের সেই ভয়ংকর দিনগুলোতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান চীনের সঙ্গে আমেরিকার গোপন দূতিয়ালিতে পালন করছিলেন পরম বিশ্বস্ত ভূমিকা। জুন মাসে ভারত ও পাকিস্তান সফরে এসেছিলেন হেনরি কিসিঞ্জার এবং রাওয়ালপিন্ডি থেকে গোপনে বেইজিং গিয়ে চীনা প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাইয়ের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেন। এই সাফল্য অর্জনে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের ভূমিকা কিসিঞ্জারকে গণহত্যার এই প্রধান হোতার সঙ্গে হাত মেলাতে বিন্দুমাত্র বিচলিত করেনি। পরে ডিসেম্বরের যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনী যখন দ্রুত পিছু হটছিল তখন তাদের আত্মসমর্পণ ঠেকাতে হেন কাজ নেই কিসিঞ্জার যা থেকে বিরত ছিলেন। নিউ ইয়র্কে চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করে তিনি তাঁকে ভারত আক্রমণের প্ররোচনা দিয়েছেন নির্লজ্জভাবে। পাশাপাশি সপ্তম নৌবহরকে বঙ্গোপসাগরের দিকে ধাবিত করে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি নিতেও তিনি দ্বিধান্বিত হননি। ১০ ডিসেম্বর যখন পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড আত্মসমর্পণের জন্য বার্তা পাঠিয়েছিল, তখন সেটা ঠেকাতে কিসিঞ্জারের দৌড়ঝাঁপের অন্ত ছিল না। আত্মসমর্পণ পিছিয়ে গেল দিনকয়েক, চীনা আক্রমণের প্রতিশ্রুতি ও সপ্তম নৌবহরের দাপাদাপি পাকিস্তানি সেনানায়কদের কাছে বাঁচার অবলম্বন হয়ে উঠেছিল। সেই সঙ্গে মারারও। ১৪ ডিসেম্বর নিষ্ঠুর বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারল মরণাপন্ন পাকিস্তানি বাহিনীকে চাঙ্গা করে তোলার ফলে।

চিলিতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত আলেন্দে সরকারকে উত্খাতের ষড়যন্ত্রকারী এবং জেনারেল পিনোশের সামরিক শাসনের বর্বরতার পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কিসিঞ্জারের ভূমিকা পরমভাবে নিন্দিত হয়েছে। চিলির গণতন্ত্রকামী মানুষ নির্যাতনে প্রাণ দিয়েছেন, নিখোঁজ হয়েছেন অনেকে, দেশান্তরী হয়ে ইউরোপ-আমেরিকায় ছন্নছাড়া জীবন বেছে নিয়েছেন বহু মানুষ, তবে তাঁরা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধী হিসেবে পিনোশের বিচারের দাবি নিয়ে সদা ছিলেন সরব। এরই ফল হিসেবে দেখি অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল হিসেবে স্পেনে এসে স্থানীয় আদালতের সমন পেলেন পিনোশে, পালিয়ে লন্ডন গেলেও সেখানে আন্তর্জাতিক অপরাধের দায় এড়াতে পারলেন না। দ্রুত এলেন স্বদেশে, যেখানে শেষ পর্যন্ত তাঁকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হলো।

হেনরি কিসিঞ্জার বাইরে এক বিজ্ঞ পণ্ডিতের ভাব নিয়ে থাকেন, বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ হিসেবে ইতিহাসে নিজের অবস্থান গড়ে নিতে চান, লিখেছেন আত্মজীবনী ও সাম্প্রতিক ইতিহাসবিষয়ক বই, কিন্তু এসব বইয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা এবং এর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ নিয়ে দুই ছত্রও তিনি লেখেননি। উপেক্ষা দ্বারা তিনি আড়াল করতে চান ইতিহাসের সত্য।

চিলির শহীদদের আত্মা, নির্যাতিত নারী-পুরুষের কান্না তাড়িয়ে ফিরছে হেনরি কিসিঞ্জারকে। যত ক্ষমতাধরই তিনি হোন না কেন, তিনি কখনো যাবেন না স্পেনে কিংবা ফ্রান্সে। বন্ধুবর জেনারেল পিনোশের ভাগ্য তাঁর জন্য শিক্ষা বয়ে এনেছে। বাংলাদেশে গণহত্যার শিকার অগণিত মানুষের কান্নাও যেন তাড়িয়ে বেড়ায় কিসিঞ্জারকে, সেই ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব এখন বাংলাদেশের। গণহত্যার যোগসাজশকারী হিসেবে তিনিও সমভাবে দায়ী, এই বার্তা যেন তাঁকে সর্বদা পিছু ধাওয়া করে সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। সে জন্য বাংলাদেশের গণহত্যায় ইন্ধনদাতা হিসেবে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি অভিযোগনামা প্রণয়নের এটাই উপযুক্ত সময়।

সেই সঙ্গে এটাও স্মর্তব্য, ক্রিস্টোফার হিচেনসের গ্রন্থ প্রকাশের পরের বছর ২০০২ সালে ব্যক্তিগত কাজে প্যারিসে এসেছিলেন হেনরি কিসিঞ্জার, উঠেছিলেন বনেদি হোটেল রিজে। সেখানে তাঁর কাছে পৌঁছেছিল ফরাসি আদালতে হাজির হওয়ার সমন, বিচারক রজার লে লয়ের প্রবীণ এই রাষ্ট্রবিদের কাছে জানতে চান 'অপারেশন কন্ডোর' সম্পর্কে এবং সেই সময় সামরিক অভিযানে নিখোঁজ পাঁচ মার্কিনির ভাগ্য বিষয়ে। বলা বাহুল্য, কিসিঞ্জার আদালতে হাজিরা দেননি, কাজ ফেলে সেই রাতেই বিমানে তিনি ফিরে আসেন আমেরিকায়। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের সুযোগ নেননি কিসিঞ্জার, পালিয়ে তিনি বাঁচলেন বটে, তবে ইতিহাসের নিরিখে সেটা যেন হয় আপাতত বাঁচা। আইনের কাঠগড়ায় হেনরি কিসিঞ্জারকে দাঁড় করানোর সুযোগ এখনো হাতছাড়া হয়নি, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার রয়েছে 'অপারেশন সার্চলাইট' নিয়ে, পাকিস্তানি বাহিনী পরিচালিত গণহত্যা বিষয়ে। তিনি যদি জেনে থাকেন দূর বাংলাদেশে গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে, তাঁর যদি সুযোগ থাকে সেই গণহত্যা প্রতিরোধের, সেই সুযোগ যদি তিনি না ব্যবহার করেন, তবে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তিনিও গণহত্যার জন্য দায়ী হবেন।

সেই বিচারের অপেক্ষায় এখনো রয়েছি আমরা।

লেখক : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি

- See more at: http://www.kalerkantho.com/print-edition/muktadhara/2015/12/16/302279#sthash.v2TmXTit.dpuf




__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___

[mukto-mona] বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের বীজ ও বিষবৃক্ষ



বুদ্ধিজীবী হত্যা

বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের বীজ ও বিষবৃক্ষ

মফিদুল হক | আপডেট: ০১:২৫, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৫ | প্রিন্ট সংস্করণ

      

রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে হত্যাযজ্ঞ, ১৯৭১মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের প্রাক্কালে, পাকিস্তানি বাহিনী ও তার দোসরদের চূড়ান্ত পরাভব স্বীকারের আগমুহূর্তে, বরেণ্য বুদ্ধিজীবীদের ঠান্ডা মাথায় যে নৃশংসতার সঙ্গে হত্যা করা হয় এবং হত্যার পর ছিন্নভিন্ন রক্তাক্ত শবদেহগুলো বুড়িগঙ্গা নদীতীরের পরিত্যক্ত ইটের ভাটায় গাদাগাদি করে ফেলে রাখা হয়, সেই নিষ্ঠুরতার পেছনে মতাদর্শের ভূমিকা ও স্বরূপ যে এখনো আমরা পুরোপুরি বুঝে উঠতে পেরেছি, তা বলা যাবে না। পরতে পরতে উন্মোচিত হয়েছে এই হত্যাকাণ্ডের বাস্তবতা এবং সেই উন্মোচন এখনো এত বছর পরও রয়েছে অব্যাহত। ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১-এ যে বুদ্ধিজীবীদের বেছে বেছে ঘর থেকে তুলে নিয়ে একত্রে হত্যা করা হয়েছে, সেটা তো জানা গেল বিজয় অর্জনের পর। তিন দিন খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকা ক্ষত-বিক্ষত অনেক লাশ শনাক্ত করা যায়নি। অনেকের লাশের কোনো সন্ধান আর মেলেনি, হয়তো খুবলে খেয়েছে শকুন কিংবা কুকুর, কিংবা ফেলা হয়েছে আর কোনো গর্তে, যা আর কেউ কখনো খুঁজে পায়নি।
দেশব্যাপী পরিচালিত নয় মাসের গণহত্যায় অগণিত মানুষের প্রাণদানের সীমাহীন ট্র্যাজেডিতে ভয়াবহ মাত্রা যোগ করেছিল বুদ্ধিজীবী হত্যা, যার কোনো সামরিক কার্যকারণ ছিল না, তবে বাঙালি জাতির বিরুদ্ধে প্রবল আক্রোশ যে এখানে ফুটে উঠেছে, সেটা বুঝতে ভুল হওয়ার অবকাশ ছিল না। অচিরেই জানা গেল দুই ঘাতকের পরিচয়—চৌধুরী মঈনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামান খান এবং হন্তারক সংগঠন, ইসলামী ছাত্রসংঘের পরীক্ষিত সদস্যদের নিয়ে গঠিত আলবদর বাহিনী-সম্পর্কিত কিছু তথ্য। গভর্নর হাউসে প্রশাসনের প্রধান মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর ডেস্ক ডায়েরিতে পাওয়া গেল অনেক বুদ্ধিজীবীর নাম, কারও নামের পাশে আছে ক্রসচিহ্ন, কোথাও বা লেখা বাড়ির নম্বর, অথবা কোনো মন্তব্য। নোটশিটের এক জায়গায় লেখা ছিল, ক্যাপ্টেন তাহির ব্যবস্থা করবে আলবদরদের গাড়ির। বুঝতে পারা যায়, সামরিক বাহিনী ও রাজনৈতিক শক্তির যোগসাজশ, কিন্তু এর পেছনের দর্শন ও তথাকথিত ধর্মাদর্শ বিচার-বিশ্লেষণ অনেকটা থেকে যায় আড়ালে।
ঘটনার পরম্পরা উদ্ঘাটিত হয়েছে পরতে পরতে, এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানি ঘাতকপ্রধানের কাছ থেকে পাওয়া গেছে তথ্য, আর ঘাতক দলের পক্ষ থেকেও পাওয়া গেছে গুপ্তবাহিনী গঠনের বিবরণী। উভয় ক্ষেত্রেই নিজেদের সাফাই গাওয়া এবং অহং প্রকাশের তাগিদ ছিল মুখ্য, কিন্তু সত্য তো অলক্ষেই তার কাজ করে চলে। মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী লিখেছেন তাঁর স্মৃতিকথা, লাহোরের জং পাবলিশার্স প্রকাশ করেছে ১৯৯২ সালে, সেখানে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে অদ্ভুত সাফাই তিনি গেয়েছেন, লিখেছেন, 'আমার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ ছিল যে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে ২০০ বুদ্ধিজীবী হত্যার ব্যবস্থা আমি করেছি। আগের সন্ধ্যায় ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠিত হয় এবং ভারতীয়রা ঢাকা শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয়। সত্য ঘটনা হচ্ছে, ১৭ ডিসেম্বর সকালে অনেক মৃতদেহ পাওয়া যায়। এর আগে ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে, তাই এই হত্যাকাণ্ড নিশ্চয় তারা ছাড়া অন্য কেউ করেছে।'
বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ১৪ ডিসেম্বর, বধ্যভূমি থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষ এর সরব সাক্ষী, আর গলাপচা শবদেহগুলো সাক্ষ্য দিয়েছে নীরবে। রাও ফরমান আলীর পক্ষে তাই ১৬ ডিসেম্বর রাতে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ঘটার আষাঢ়ে গপ্প ফাঁদতে হয়, তবে গল্পকথার ফাঁকেও সত্য প্রকাশিত হয় অজান্তে। কাদালেপা মাইক্রোবাসে করে যে বুদ্ধিজীবীদের তুলে নিয়ে আসা হয়েছিল, তাঁদের বাড়ি থেকে, সেটা তো বিভিন্নভাবে জানা গিয়েছিল। এই প্রসঙ্গে রাও ফরমান আলী বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের পেছনের এক ঘটনা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বলেছেন, অবশ্যই নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য। তিনি লিখেছেন, '১০ ডিসেম্বর সূর্যাস্তের সময় ঢাকার কমান্ডার মেজর জেনারেল জামশেদ আমাকে পিলখানায় তাঁর দপ্তরে আসতে বলেন। তাঁর কম্যান্ড পোস্টের কাছাকাছি এসে আমি অনেকগুলো গাড়ি দেখতে পাই। বাঙ্কার থেকে বেরিয়ে এসে তিনি আমাকে গাড়িতে উঠতে বলেন, কয়েক মিনিট পর আমি জানতে চাই, এই গাড়িগুলো কেন আনা হয়েছে? তিনি বললেন, "নিয়াজির সঙ্গে সেটা নিয়েই কথা বলতে চাই।" ক্যান্টনমেন্টের হেডকোয়ার্টারের দিকে যেতে যেতে তিনি জানালেন, বিপুলসংখ্যক বুদ্ধিজীবী ও অগ্রণী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করার আদেশ তিনি পেয়েছেন। আমি তাঁকে বলি, কেন, কী কারণে? গ্রেপ্তার করার সময় তো এটা নয়।'
এই বয়ান স্পষ্টত বুঝিয়ে দেয় বুদ্ধিজীবীদের নিশ্চিহ্ন করার তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছিল, তালিকা অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন করার জন্য গাড়িও ছিল প্রস্তুত। তালিকা নিয়ে গাড়ির সওয়ারি হয়ে বাড়ি বাড়ি যারা যাবে, সেই বাঙালি ঘাতকেরাও ছিল তৈরি। এই ঘাতকদের দেখেছেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা, মুখ কাপড় দিয়ে আবৃত ছিল বেশির ভাগ ক্ষেত্রে, তবে কারও কারও মুখের কাপড় সরে গিয়েছিল, পরে ছবি দেখে তাদের শনাক্ত করা যায় এবং এভাবে ঘটনার পরম্পরা হয়েছিল যুক্ত ও উন্মোচিত। ১০ ডিসেম্বর যে প্রশান্ত সন্ধ্যায় পিলখানায় প্রবেশের বিবরণ দিয়েছেন ফরমান আলী, সেখানে সেই দিনটির নাটকীয়তার কোনো উল্লেখ নেই, অথচ এই দিন সকালেই লড়াইয়ে হার মেনে গভর্নর হাউস থেকে জাতিসংঘ প্রতিনিধির কাছে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিলেন ফরমান আলী স্বয়ং। যুদ্ধবিরতির সেই প্রস্তাব কার্যকর হয়নি, দাবি ছিল নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের। এরপর সংকট আরও ঘনীভূত হয় এবং ১৩ ডিসেম্বর জেনারেল গুল হাসান রাওয়ালপিন্ডি থেকে প্রেরিত বার্তায় ইঙ্গিত দেন, পীতজাতি আসবে উত্তর থেকে, আর দক্ষিণ থেকে আসবে শ্বেতাঙ্গ। অর্থাৎ চীন ভারত সীমান্ত আক্রমণ করবে এবং বঙ্গোপসাগর দিয়ে ধেয়ে আসবে মার্কিন সপ্তম নৌবহর। এই পরিপ্রেক্ষিতে নিয়াজিকে আত্মসমর্পণ না করার পরামর্শ দেওয়া হয় এবং বিলম্বিত হয় পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ। বাড়তি সময়টুকুতে ঘটে বাড়তি ও ভয়ংকর নৃশংসতা—বুদ্ধিজীবী হত্যা।
বুদ্ধিজীবী নিধন পরিকল্পনা যারা বাস্তবায়ন করেছিল, সেই ঘাতক আলবদর কখনো তাদের অপরাধ স্বীকার করেনি, কিন্তু আলবদর বাহিনী গঠনের সবিস্তার বিবরণী তারা দাখিল করেছে তাদেরই প্রণীত গ্রন্থে। সেলিম মনসুর খালিদ প্রণীত উর্দু গ্রন্থ আলবদর প্রকাশিত হয়েছিল লাহোর থেকে জেনারেল জিয়াউল হকের শাসনামলে, ১৯৮৫ সালে। এই বইয়ে আলবদরপ্রধান, তাঁদের সহকারী ও অন্য সদস্যদের বিভিন্ন ভূমিকা তুলে ধরা হয়েছে ইসলামের স্বঘোষিত রক্ষকের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে, তবে সবার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে ছদ্মনাম। তারপরও সবচেয়ে বড় যে স্বীকৃতি ফুটে উঠেছে তা হলো, সেনাবাহিনীর বিধিবদ্ধ কাঠামোর বাইরে জঙ্গি ও হিংসাশ্রয়ী ইসলামের অনুসারী রাজনৈতিক দলের তরুণ ক্যাডারদের সেনাবাহিনীর অস্ত্র ও অর্থ দ্বারা সমর্থিত ও পরিচালিত গোষ্ঠীতে রূপান্তর। এই গোষ্ঠী যে হবে ঘাতক গোষ্ঠী, তাদের কার্যকলাপ যে হবে 'ইসলামের শত্রুকে উৎখাত' করা, সেটা ছিল স্বতঃসিদ্ধ। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বুদ্ধিজীবী হত্যায় আলবদর নেতা আলী আহসান মুজাহিদ, মতিউর রহমান নিজামী, মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, চৌধুরী মঈনুদ্দিন, আশরাফুজ্জামান খান ও কাদের মোল্লার ভূমিকা বারবার উঠে এসেছে এবং এই বই সেখানে গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। তবে এসব হচ্ছে ঘটনার পরম্পরা, এর পেছনে যে মতাদর্শ, যা ধর্মের মহৎ আদর্শ অবলম্বন করে ঘৃণার বিষভাণ্ড তৈরি করে এবং পূর্ণ করে তোলে কানায় কানায়, সেসব তো দাবি করে আরও গভীর বিবেচনা। এই বিশ্লেষণ আমাদের বুঝতে সহায়তা করবে কীভাবে রোপিত হয় ঘৃণার বীজ এবং তা ক্রমে ক্রমে হয়ে ওঠে বিষবৃক্ষ, হয়ে ওঠে সমাজের ব্যাপক মানুষের জীবন-সংহারক। এর সূচনা আপাতদৃষ্টিতে অহিংস সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্ব ঘিরে, কিন্তু সেখানে অসহিষ্ণুতা ও হিংসার উপাদান যেমন নিহিত থাকে, তেমনি দেখা যায় অন্যকে চিহ্নিত করার প্রবণতা, রাষ্ট্রের সমাজের ধর্মের শত্রু হিসেবে গণ্য করা।
এমনই সংঘাতের বীজ রোপণ করেছিল পাকিস্তানি দ্বি-জাতিতত্ত্বের সাম্প্রদায়িক আদর্শ এবং প্রকাশ পেয়েছিল সর্বজনীন রাষ্ট্রকে ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রে রূপদানের প্রচেষ্টায়। তথাকথিত ধর্মভিত্তিক জাতীয়তার পরিপোষক পাকিস্তান ছিল এক বায়বীয় ধারণা, কেননা ধর্ম ব্যক্তিগত বিশ্বাসের বিষয়, যা ব্যক্তিকে গোষ্ঠীবদ্ধ করে, কোনো জাতিসত্তায় রূপায়িত করে না। একই ধর্মের মানুষ নানা ভাষা-সংস্কৃতির অনুসারী হতে পারে, হওয়াটাই সংগত। কিন্তু এর বিপরীতে পাকিস্তানি জাতিসত্তা তথা ধর্মভিত্তিক জাতীয়তা মুছে ফেলতে চাইছিল ভাষা-সংস্কৃতি-ইতিহাস-ঐতিহ্যভিত্তিক সত্তা। দ্বন্দ্বের এমনই প্রকাশ আমরা দেখি ১৯৪৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর কার্জন হলে অনুষ্ঠিত সাহিত্য সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে যখন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, 'আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি। মা প্রকৃতি নিজের হাতে আমাদের চেহারায় ও ভাষায় বাঙালিত্বের এমন ছাপ মেরে দিয়েছেন যে মালা-তিলক-টিকিতে কিংবা টুপি-লুঙ্গি-দাড়িতে ঢাকার জো টি নেই।'
সভায় উপস্থিত অবাঙালি শিক্ষাসচিব ফজলে আহমেদ সব শিষ্টাচার ভঙ্গ করে সভাপতির ভাষণের পর মঞ্চে তেড়ে উঠে বক্তৃতা শুরু করেন। তিনি বলেন, 'আজ এখানে যেসব প্রবন্ধ পড়া হলো, সেগুলো শোনার পর আমি ভাবছি, আমি কি ঢাকায় আছি না কলকাতায়।'
সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে পাকিস্তান রাষ্ট্র যদি প্রতিষ্ঠা করতে হয়, তবে বাঙালি জাতিসত্তার ওপর চাপিয়ে দিতে হবে 'মুসলিম জাতিসত্তা', আর সে ক্ষেত্রে বাংলার সম্প্রীতির সমাজবন্ধন বিনষ্ট করতে হবে এবং বাঙালি সংস্কৃতির বিলুপ্তি না হোক, অন্তত বিভ্রম সৃষ্টি করে জগাখিচুড়ি এক সংস্কৃতি বা সংস্কৃতিহীনতার জন্ম দিতে হবে। আর এই কাজ করার শ্রেষ্ঠ অবলম্বন হতে পারে ধর্ম। ১৯৪৮ সালে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উর্দুর পক্ষে জিন্নাহর সদম্ভ উক্তি ছিল এই পাকিস্তানি রাষ্ট্রনীতির প্রকাশ। ১৯৫০ সালের দাঙ্গা ও ব্যাপকভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের দেশত্যাগ ছিল এই নীতির প্রতিফল। বায়ান্নর একুশেতে বাংলা ভাষার জন্য তরুণের আত্মাহুতিতে জাতির জাগরণ সূচিত হলে মর্নিং নিউজ পত্রিকার শিরোনাম 'ঢাকার রাজপথে ধুতির বিচরণ' সেই বিকৃত চিন্তাজাত বিকৃত মানস মেলে ধরে, অন্য সম্প্রদায়কে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা সঞ্চারের বর্বরতা আর চাপা থাকে না।
জাতিকে পদানত, বিভ্রান্ত ও বিপথগামী করার নানা আয়োজনে ভরপুর ছিল পাকিস্তানের ২৩ বছরের শাসনকাল। ধর্ম হয়েছিল তাদের এই অভিযানের ঢাল ও তলোয়ার। সশস্ত্র এই দুই শক্তির ওপর মালিকানা থাকে রাষ্ট্রের, একাত্তরে চূড়ান্ত সমাধানের জন্য সশস্ত্র সব শক্তি নিয়ে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল পাকিস্তানি বাহিনী তথা পাকিস্তানি রাষ্ট্র। সেই পটভূমিকায় বাঙালির প্রতিরোধ মোকাবিলায় ঢাল হাতে নিল জঙ্গি ইসলামের প্রবক্তা রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী, তাদের তরুণ অনুসারীদের হাতে তুলে দিল তলোয়ার, সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সমর্থন ও মদদে।
এই সংযোগ যে বিষময়তা ও সশস্ত্রতার জন্ম দিয়েছিল, তারই নিষ্ঠুর ছোবলে মৃত্যুবরণ করতে হয় বাংলার বরেণ্য বুদ্ধিজীবীদের। এর পেছনের জঙ্গি মতাদর্শ ও সংগঠন বুঝে-ওঠা তাই বহন করে অশেষ গুরুত্ব। গণহত্যার বীজ যদি বেড়ে উঠতে দেওয়া হয়, তবে বিষবৃক্ষের শিকড়ের বিস্তার, কাণ্ডের শক্ত হয়ে ওঠা ও সমাজে ডালপালা মেলে দেওয়া রোধ সম্ভব হয় না। বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের বর্বরতার সামগ্রিক কাঠামো ও মতাদর্শ পর্যালোচনা তাই বহন করে বিশেষ তাৎপর্য।
'জেনোসাইডওয়াচ'-এর প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক গ্রেগরি স্ট্যানটন গণহত্যার আটটি ধাপ শনাক্ত করেছিলেন। এর শুরু সাদামাটাভাবে বিভাজন বা ক্লাসিফিকেশনের মাধ্যমে যখন কোনো গোষ্ঠীকে আলাদাভাবে ক্ষতিকারক বা শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে তা রূপ নেয় আদর্শগত সংহতি ও সংগঠনে, কেননা গণহত্যা কিংবা বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের মতো কাজ সম্পাদনে চাই মতাদর্শ দ্বারা অন্ধ ব্যক্তিদের দিয়ে গঠিত উপযুক্ত সাংগঠনিক শক্তি। সপ্তম ধাপে গণহত্যা রূপ নেয় বীভৎসতার, গ্রেগরি স্ট্যানটন এই ধাপকে চিহ্নিত করেছেন উৎসাদন বা এক্সটারমিনেশন হিসেবে। এরপরও সর্বশেষ আরেকটি ধাপ চিহ্নিত করেছেন এই বিশ্লেষক, চূড়ান্ত সেই ধাপ হচ্ছে ডিনাইয়াল বা অস্বীকৃতি। আমরা এই ধাপের পরিচয় পাই মেজর জেনারেল ফরমান আলীর ভাষ্যে, নিজামী কিংবা মুজাহিদের বক্তব্যে, যাঁরা অস্বীকার করতে চান গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ কিংবা বুদ্ধিজীবী নিধনের ঘটনা।
বুদ্ধিজীবী হত্যাবিষয়ক বিচার-বিবেচনা তাই ধর্ম-অবলম্বন করে রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তোলা এবং সেই সংগঠন দ্বারা সাম্প্রদায়িক সহিংস প্রচারণার নিষ্ঠুর পরিণতি প্রকাশ করে। অতীত পর্যালোচনা থেকে আমরা বুঝি ধর্মকে ব্যবহার করে নৃশংসতার প্রতিরোধে সমাজের ঐক্য ও অঙ্গীকার এবং সম্প্রীতির সমাজ নির্মাণে অবদান রচনার কোনো বিকল্প নেই। তাই প্রয়োজন বিষবৃক্ষের বীজ উৎপাটন, জঙ্গি ইসলামের মোকাবিলার সেই কর্তব্য সর্বতোভাবে পালনে এগিয়ে যাওয়া হয়ে উঠেছে সময়ের দাবি।

মফিদুল হক: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি ও লেখক

http://www.prothom-alo.com/special-supplement/article/713356/ বুদ্ধিজীবী-হত্যাকাণ্ডের-বীজ-ও-বিষবৃক্ষ

Prothom Alo

আরও পড়ুন :

অমিয় তরফদারের মুক্তিযুদ্ধের অপ্রকাশিত ছবি

http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/713158/ অমিয়-তরফদারের-মুক্তিযুদ্ধের-অপ্রকাশিত-ছবি

http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/713593/ যে-টেবিল-আত্মসমর্পণের-সাক্ষী


http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/713752/ অপরাজেয়-অমিত-শক্তির-বাংলাদেশ

http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/713161/ ১৬-ডিসেম্বর-আত্মসমর্পণ-১৯-ডিসেম্বর-অস্ত্রসমর্পণ


http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/712789/ রেললাইন-ধরে-হাঁটিয়ে-পাকিস্তানিদের-ঢাকায়-নেওয়া-হয়

http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/712717/ মসজিদে-শহীদদের-স্মরণে-স্তম্ভ

যুদ্ধাপরাধের বিচার

ভারতকে মুচলেকা দিয়েছিল পাকিস্তান!

মিজানুর রহমান খান | আপডেট: ০০:২৭, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৫ | প্রিন্ট সংস্করণ



__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___

[mukto-mona] সৌদি আরবের ১৭ অবাক করা তথ্য



সৌদি আরবের ১৭ অবাক করা তথ্য
আয়োজন ডেস্ক
১৫ ডিসেম্বর, ২০১৫

সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ। এ দেশটি বেশ কয়েকটি কারণে বিশ্বে পরিচিত। এ লেখায় থাকছে তেমন কিছু তথ্য। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে বিজনেস ইনসাইডার।


১. বিভিন্ন অপরাধে সৌদি আরবে প্রচুর মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। গড়ে এ সংখ্যা প্রায় প্রতি দুই দিনে একজন করে। এ বছর এখন পর্যন্ত ১৫১ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।


২. সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে বিশাল একটি উটের বাজার রয়েছে। রিয়াদে প্রতিদিন প্রায় একশ উট বিক্রি হয়।


৩. সৌদি আরবে রয়েছে সুবিশাল কয়েকটি তেলক্ষেত্র। এসব তেলক্ষেত্রে রয়েছে ৭৫ বিলিয়ন ব্যারেল তেল।


৪. সৌদি আরবে কোনো নদী নেই। নদীবিহীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশ এটি।


৫. বিশ্বে একমাত্র সৌদি আরবেই নারীরা গাড়ি চালাতে পারে না।


৬. সৌদি আরবের জনসংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের চেয়ে সামান্য বেশি। তবে টেক্সাসের অর্থনীতি সৌদি আরবের চেয়ে অনেক বড়।


৭. সৌদি আরবের জিডিপির ৪৫ শতাংশ আসে তেল থেকে। এটি ইরাক, মরক্কো, রুয়ান্ডা ও টংগার একত্রিত অর্থনীতির চেয়েও বেশি।


৮. সৌদি আরবে নির্মিত হচ্ছে বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন। প্রায় এক কিলোমিটার উঁচু হবে এ 'জেদ্দা টাওয়ার' নামে ভবনটি।


৯. কিংডম টাওয়ার নামে একটি সুউচ্চ ভবন নির্মিত হচ্ছে সৌদি আরবে। এটি নির্মাণে ব্যয় হবে ১.২৩ বিলিয়ন ডলার।


১০. সৌদি আরব ও জর্ডানের মাঝে জিক-জ্যাক বর্ডারের পেছনে ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। জানা যায়, চার্চিল কায়রোতে একটি পানীয় উদ্বোধনের পর সে অবস্থাতেই একট কলমের সাহায্যে এ বর্ডার আঁকেন।


১১. সৌদি আরবের ৬০ শতাংশ শ্রমিকই বিদেশী। সৌদি আরবের যাবতীয় নির্মাণকাজেই বিদেশিদের অবদান রয়েছে।


১২. সৌদি আরবের নারী কর্মজীবীদের সংখ্যা অন্য দেশের তুলনায় বেশ কম। এটি মোট শ্রমশক্তির প্রায় ২০ শতাংশ।


১৩. সৌদি আরবে তরুণ জনসংখ্যার হার বেশি। ৪৭ শতাংশ জনসংখ্যার বয়স ২৪ বছরের কম। অ্যিদিকে ৬০ বছরের উর্ধ্বে জনসংখ্যা মাত্র পাঁচ শতাংশ।


১৪. সৌদি আরবের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে নয় বরং বিপুল সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে অর্জিত হচ্ছে (সূত্র এইচএসবিসি চার্ট)।


১৫. সৌদি আরব সম্প্রতি ছয়টি 'অর্থনৈতিক শহর' তৈরি করছে। এগুলো অর্থনীতিকে গতিশীল করবে এবং তেল নির্ভরতা কমাবে।


১৬. সৌদি আরব সামরিক বাহিনীর পেছনে বিপুল অর্থ ব্যয় করে। এটি আফগানিস্তানের মোট জিডিপির চার গুণ বেশি।


১৭. তেলনির্ভর হওয়ার কারণে তেলের দাম বাড়লে সৌদি আরবের অর্থনীতি গতিশীল হয়। অন্যদিকে তেলের দাম কমলে দেশটির অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
- See more at: http://www.dainikdhakareport.com/ayonjon/2015/12/15/38015#sthash.YAcnjXW7.dpuf



__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___