Banner Advertiser

Tuesday, September 2, 2014

[mukto-mona] আমাদের রাজনৈতিক আদর্শের চারটি স্তম্ভ - ওয়াহিদ নবি



বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ১৯ ভাদ্র ১৪২১
আমাদের রাজনৈতিক আদর্শের চারটি স্তম্ভ
ওয়াহিদ নবি
এই লেখাটির প্রথম অংশ ছাপা হয়েছে ২৭ আগস্ট। আজ শেষ অংশ ছাপা হলো।
গণতন্ত্র
গণতন্ত্রের সংজ্ঞা নিরূপণ সহজ নয়। তাই বিজ্ঞজনেরা কি বলেছেন তা আমরা উল্লেখ করব। দার্শনিক এরিস্টটল বলেছিলেন, 'সবাই প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন সবার মধ্য থেকে কয়েকজনকে।' পেরিক্লিস বলেছিলেন, 'আমাদের দেশকে গণতান্ত্রিক দেশ বলা হয় এই জন্য যে, শাসনক্ষমতা মুষ্টিমেয় মানুষের হাতে নয়, অনেকের হাতে।' গণতন্ত্র সম্বন্ধে আব্রাহাম লিংকনের উক্তি সর্বজন পরিচিত, 'জনগণের জন্য, জনগণের এবং জনগণের দ্বারা।' 
গণতান্ত্রিক মানসিকতার ভেতরে রয়েছে কিছু অভিজ্ঞতা, কিছু ধারণা ও কিছু বিশ্বাস। গণতন্ত্রের আবির্ভাবে জনগণ একটা পরিবর্তনের আস্বাদ পায়। এমনকি গণতন্ত্র আসার আগেই মানুষ এই স্বাদ পেয়ে থাকে। আমাদের দেশের ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা একটু ভিন্ন অবস্থা দেখতে পাই। গত শতাব্দীর ষাটের দশকে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের আন্দোলন শুরু হয়। সামরিক শাসনের একগুঁয়েমির জন্য গণতন্ত্রের এই আন্দোলন স্বাধীনতার সংগ্রামে পরিণত হয়। দেশ স্বাধীন হলে স্বাধীনতার আস্বাদটা এত বিশালভাবে অনুভূত হয় যে গণতন্ত্রের স্বাদটা গৌণ হয়ে যায়। ফরাসী দার্শনিক এলেক্সি টকভিল বলেছিলেন, 'জনগণের মত নিয়ে শুধু নয়, জনগণের দ্বারা গণতন্ত্র অর্জন করতে হবে।' 
সমাজের বিভিন্ন অংশের সমন্বিত কার্যকলাপ প্রয়োজন হয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায়। গ্রিসের গণতন্ত্র বিকাশে পোলিস গঠন খুব সাহায্য করেছিল। বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ নিয়ে গঠিত পোলিসগুলোতে বিভিন্ন শ্রেণীর কার্যকলাপ ছিল সমন্বিত। তাদের মধ্যে ছিল সহযোগিতার মনোভাব। জনগণের যদি ধারণা থাকে প্রশাসন সম্বন্ধে এবং যদি ধারণা থাকে প্রতিষ্ঠান সম্বন্ধে তবে গণতন্ত্র বিকাশে সুবিধা হয়। স্থানীয় সরকারের সক্রিয়তা তাই বিশেষভাবে সাহায্য করে। 
কর্তৃপক্ষ সম্বন্ধে গণতান্ত্রিক মানুষের ধারণা প্রভু-ভৃত্যের মতো নয়। গণতন্ত্রে কর্তৃপক্ষের হাতে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দেয়া হয় না। কিছুদিনের জন্য তাদের দায়িত্ব দেয়া হয় জনগণের সেবা করার জন্য। গণতন্ত্রে কর্তৃপক্ষ জনগণের প্রতিনিধি। গণতন্ত্রে মানুষ বিমূর্ত ধারণায় অভ্যস্ত। সমতা বলতে সব নাগরিকের সমতা বোঝায় না সব ব্যাপারে। গণতন্ত্রে সবার সমান সুযোগ সুবিধা রয়েছে। আইনের চোখে সবাই সমান। স্বাধীনতা বলতে এটা বোঝায় না যে সবার যা ইচ্ছা তাই করার স্বাধীনতা রয়েছে। গণতন্ত্রে বাক-স্বাধীনতা রয়েছে। রয়েছে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা। কিন্তু জনগণ বুঝে যে স্বাধীনতা তখনই মানুষ উপভোগ করতে পারে যখন তাদের দায়িত্ববোধ থাকে। 
গণতান্ত্রিক মন যুক্তিতে বিশ্বাসী। আমাদের পৃথিবী সব সময়ই বদলাচ্ছে। যুক্তি আমাদের সাহায্য করে পরিবর্তিত অবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে। যুক্তি আমাদের সাহায্য করে বিভেদের মাঝে একতা খুঁজে নিতে। যুক্তিসম্পন্ন মানুষ নমনীয়। ইউরোপের ইতিহাসে দেখা যায় যে কৃষিভিত্তিক সমাজের চেয়ে রেনেসাঁপরবর্তী শিল্পভিত্তিক সমাজ অধিকতর নমনীয়। 
অষ্টম শতাব্দীর মাঝামাঝি বাংলার মানুষ গোপালকে নির্বাচিত করেছিল দেশ শাসন করার জন্য। দেশে চলমান অরাজকতা দূর করার জন্য দেশবাসী এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। পৃথিবীর গণতন্ত্রের ইতিহাসে বাংলার একটা স্থান রয়েছে, যদিও সেদিনের গণতন্ত্রের চরিত্র ছিল ভিন্ন। পাল বংশের পরে বাঙালীর হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব আসে ১৯৭১ সালে। এককথায় বাংলা প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতা অর্জন করে ১৯৭১ সালে। বাংলায় গণতন্ত্র প্রথম আসে ১৯৭১ সালে। অর্থাৎ স্বাধীনতা আর গণতন্ত্র বাঙালীরা প্রথম উপভোগ করে ১৯৭১ সালে। এরপর দুই সেনানায়ক দেশ শাসন করে ১৫ বছর ধরে। তা হলে দেখা যাচ্ছে যে, আমাদের গণতন্ত্রের বয়স মাত্র ২৫ বছর। একজন মানুষের জীবনে ২৫ বছর দীর্ঘ সময় মনে হলেও একটা জাতির ইতিহাসে এই সময়টা দীর্ঘ নয়। এই সময়টার কথা চিন্তা করতে হবে অন্যান্য দেশের গণতন্ত্র বিকাশের সময়কালের কথা চিন্তা করে। আমাদের অগ্রগতি কিছু হয়েছে, কিছু হয়নি। গণতন্ত্রের সমস্যা দেখলেই অগণতান্ত্রিক শক্তির হাতে দেশ তুলে দেবার চিন্তা আমাদের পরিহার করতে হবে। সমস্যা থাকলে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। 
একজন পণ্ডিত ব্যক্তি বলেছিলেন যে, অন্যদের অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের শিক্ষা লাভ করা উচিত। বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আমাদের কিছু কিছু সমস্যা রয়েছে। 'জাভেডি বারবু' তাঁর 'ডেমোক্র্যাসি এ্যান্ড ডিক্টেটরশিপ' গ্রন্থে বলেছেন যে, গণতন্ত্র বিকাশের জন্য দেশে একটা বিরাজমান স্থিতিশীল অবস্থা প্রয়োজন। আমাদের গণতন্ত্র আসার আগে আমরা একটি অস্থিতিশীল অবস্থার মধ্য দিয়ে গেছি। পাকিস্তানের সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও তারপর রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রামের পর স্থিতিশীল অবস্থা ফিরে আসার আগেই আমাদের গণতান্ত্রিক দায়িত্ব নিতে হয়। গ্রিস, ব্রিটেন ও আমেরিকায় স্থিতিশীল অবস্থায় গণতন্ত্র আসে। কিন্তু গণতন্ত্র আসার আগে ফ্রান্সে স্থিতিশীল অবস্থা ছিল না বলেই অনেকের বিশ্বাস। কিন্তু টকভিলের মতে এই ধারণা ঠিক নয়। আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের এবং আমলাদের দেশ পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা ছিল না। আমাদের দেশে চলছিল সামন্ততান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা, যা গণতন্ত্রের জন্য অনুকূল নয়। এ সবের কারণ আমাদের দীর্ঘদিনের পরাধীনতা। আমাদের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা বিকশিত হওয়ার সুযোগ পায়নি। তৃণমূল থেকে গণতন্ত্র বিকশিত হতে হবে, না হলে সংসদীয় গণতন্ত্র ফলপ্রসূ হবে না। আমাদের নিজেদের মানসিকতা উন্নত করা প্রয়োজন সুস্থ গণতন্ত্রের জন্য। প্রকৃত শিক্ষা গণতন্ত্রের জন্য অনুকূল। দীর্ঘদিনের পরাধীনতার জন্য আমাদের মধ্যে দায়িত্ববোধ গড়ে ওঠেনি। আমরা অন্যের কাজে খুব উঁচু মান আশা করি। নিজের কাজ সম্পর্কে চিন্তা করি না। প্রকৃত শিক্ষার অভাবে দৈবের ওপর আমাদের আস্থা অনেক বেশি। গণতন্ত্র বিকাশের জন্য আরও তিনটি আদর্শিক স্তম্ভের বিকাশ প্রয়োজন। জাতীয়তাবোধ, পার্থিব চিন্তা, সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র একসূত্রে বাঁধা। 
সমাজতন্ত্র 
সমাজতন্ত্র একটি অর্থনৈতিক পদ্ধতি। সমাজতন্ত্র একটি রাজনৈতিক আদর্শ। একটি জীবনব্যবস্থা। সাধারণ মানুষের জন্য সমাজতন্ত্র কল্যাণ বয়ে আনবে এই আশাতেই প-িত ব্যক্তিগণ এই আদর্শের কথা ভেবেছেন। সমাজতন্ত্রের অনেক দিশারী অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। ত্যাগ স্বীকার করেছেন। অনেকে চরম ত্যাগ স্বীকার করেছেন। কিন্তু স্বার্থান্বেষীরা সমাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়েছে। সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। এমনটা সারা পৃথিবীতেই ঘটেছে। আমাদের দেশের কথা ভাবা যাক। বহু বছর থেকেই সমাজতন্ত্র আওয়ামী লীগের ঘোষিত নীতি। কিন্তু অতি দ্রুত পদোন্নতি লাভ করা সেনাকর্তা ক্ষমতা দখল করার পর শাসনতন্ত্রের বিভিন্ন পরিবর্তনের সময় সমাজতন্ত্র শাসনতন্ত্র থেকে গায়েব করে দিলেন। এটা তিনি করলেন স্বাধীনতাবিরোধীদের খুশি করে নিজের ক্ষমতা দৃঢ় করার জন্য। কাজেই সেখানে তাঁর বসানো 'সামাজিক ন্যায় বিচার' কথাটা একটা রসিকতার মতো শোনায়। সমাজতন্ত্র কর্মজীবী মানুষের মুক্তির সোপান। সেনা কর্তা 'মুক্তি' কথাটাও শাসনতন্ত্র থেকে মুছে দেন। যিনি সার্বিকভাবে মুক্তির বিরোধী তিনি সমাজতন্ত্রের পক্ষে হবেন না এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যেহেতু স্বার্থান্বেষীরা সমাজতন্ত্রের নামে সব সময়েই অবান্তর সব কুৎসা রটাচ্ছে তাই সমাজতন্ত্র সম্পর্কে আলোচনা হওয়া উচিত সাধারণের মন থেকে ভুল বোঝাবুঝি দূর করার লক্ষ্যে। 
পুঁজিবাদ উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার কথা বলে। কিন্তু বাস্তবে আমরা কি দেখি। উৎপাদনের মাধ্যম সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কয়েকজন মানুষের হাতে চলে যায়। এর কারণ হচ্ছে বড় মাছগুলো ছোট মাছগুলোকে গিলে খেয়ে ফেলে। পুঁজিবাদের লক্ষ্য হচ্ছে মুনাফা। তাদের উৎপাদিত পণ্যগুলো তাই সাধারণ মানুষের ব্যবহারের লক্ষ্যে বা প্রয়োজনের লক্ষ্যে প্রস্তুত হয় না। নানা রকমের চোখ ধাঁধানো পণ্য তাই বাজার ছেয়ে ফেলে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে যে খাদ্যদ্রব্যের মান উন্নয়ন না করে এমন কি ভেজাল মিশাল দিয়ে নিকৃষ্ট খাবার তৈরি করে। তারপর ওরা প্রসাধনদ্রব্য প্রস্তুত করে বিজ্ঞাপনের চোখ ধাঁধানো ব্যবহারে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। জাতীয় জীবনে এর প্রতিফলন আমরা কি দেখি? রেল স্টেশনগুলোর করুণ অবস্থা চোখে পড়লেও বিউটি পার্লারগুলোর চাকচিক্য চোখ ধাঁধিয়ে দেয়।
চাকরির জন্য সাধারণ মানুষ সব সময়েই চিন্তিত থাকে। কারখানাগুলোর মালিকানা মুষ্টিমেয় মানুষের হাতে চলে গেলে সাধারণ মানুষের জীবিকা এদের করুণার ওপরে নির্ভর করে। শ্রমিকদের বেতন তারা যত কম দেবে ততই তাদের মুনাফা বাড়বে। এদিকে চাকরির সংখ্যা কম হলে সাধারণ মানুষ চাকরি হারানোর ভয়ে ভীত থাকবে। তাদের দাবিদাওয়া উচ্চকণ্ঠে ধ্বনিত হবে না। এদের জীবনযাত্রার মান নিচে নেমে যাবে। ম্যাক্সিম গোর্কির 'মা' উপন্যাসে শ্রমিকদের জীবনযাত্রার করুণচিত্র ফুটে উঠেছে। এমনি করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে ডিএইচ লরেন্সের বর্ণনায়। আমাদের দেশের বস্তিগুলোর মানবেতর চিত্র আমাদের অজানা নয়। 
পুঁজিবাদী ধনিকগোষ্ঠী শক্তিশালী হয়ে বাজার খোঁজার জন্য বিদেশের দিকে বদ নজর দিয়েছিল, যার ফলে ঔপনিবেশিকতার জন্ম হয়েছিল। পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়েছিল অনগ্রসর দেশগুলো। ধনী দেশগুলোর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ফলে দু'টি বিশ্বযুদ্ধসহ অনেক যুদ্ধের সূত্রপাত হয়েছিল। 'পুঁজিবাদী দেশগুলোর অর্থনৈতিক নৈরাজ্যই হচ্ছে আমার মতে সমস্ত অমঙ্গলের কারণ।' এই কথাটি কোন সমাজতান্ত্রিক বা কোন সাম্যবাদী নেতা বলেননি। এই কথাটি ১৯৪৯ সালে 'মান্থলি রিভিউ' পত্রিকায় 'হোয়াই সোস্যালিজম' নামে একটি প্রবন্ধে সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক আলবার্ট আইনস্টাইন লিখেছিলেন। 
পুঁজিবাদের শোষণে কর্মজীবী মানুষের দুরবস্থা দেখে সমাজতন্ত্রের কথা চিন্তা করেন কল্যাণকামী মানুষেরা। সমাজতন্ত্র অনুযায়ী উৎপাদনের মাধ্যমের মালিকানা জনগণের হাতে রাখা উচিত বলে বিবেচনা করা হয় কিংবা সমবায় পদ্ধতিতে উৎপাদনের মাধ্যমগুলোকে পরিচালিত করা উচিত বলে মনে করা হয়। মানুষের কাজে লাগে এমন সব জিনিসের উৎপাদনের দিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত বলে মনে করা হয়। উৎপাদিত দ্রব্য বাজারজাত করার পর যে মুনাফা অর্জিত হবে তা আবার মানুষের উপকারে ব্যয় করা হবে বলে সমাজতন্ত্রীরা মনে করেন। সমাজে শ্রেণী বিভাগের ফলে মানুষে মানুষে তারতম্য যেন ভীষণ আকার ধারণ না করে। যারা উৎপাদন করবে পরিকল্পনা গ্রহণের ব্যাপারে তাদের যেন ভূমিকা থাকে। 
ফরাসী দেশের কাউন্ট হেনরি দ্য সেইন্ট-সাইমন সমাজতন্ত্র কথাটি প্রথম ব্যবহার করেন। 'লেটারস ফ্রম এ্যান ইনহ্যাবিট্যান্ট অব জেনেভা টু হিজ কনটেমপোরারিজ' নামে একটি প্রবন্ধে তিনি সমাজের তিনটি শ্রেণীর মানুষের কথা উল্লেখ করেন। বৈজ্ঞানিক, লেখক, শিল্পী প্রভৃতি সৃজনশীল ব্যক্তিদের তিনি সমাজের গুরুত্বপূর্ণ মানুষ বলে অভিহিত করেন। মালিক শ্রেণীকে তিনি ফরাসী বিপ্লবের কথা মনে করিয়ে দিয়ে শ্রমিকদের প্রতি ন্যায়সঙ্গত ব্যবহার করার উপদেশ দেন। কর্মীদের তিনি জ্ঞান আহরণের উপদেশ দেন। 
সমাজতন্ত্র কি করে প্রবর্তন করা উচিত বা কি করে কার্যকর করা উচিত এ নিয়ে বিভিন্ন চিন্তাধারা রয়েছে। রবার্ট ওয়েন ঊনবিংশ শতাব্দীতে 'আদর্শ সমাজতন্ত্র' প্রবর্তন করার চেষ্টা করেন। তিনি ধনতান্ত্রিক সমাজ থেকে বিছিন্ন হয়ে সমাজতান্ত্রিক কমিউন সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছিলেন। 'সোস্যাল ডেমোক্র্যাটরা' গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই সমাজতন্ত্রে উত্তরণ সম্ভব বলে মনে করেন। কেউ কেউ মনে করেন যে বিপ্লব ছাড়া সমাজতন্ত্রে উত্তরণ সম্ভব নয়। 
ধর্মনিরপেক্ষতা 
কালের আবর্তে একটি বিশেষ চিন্তাধারা যখন গতি হারিয়ে স্থবিরতার শিকার হয় তখন নতুন চিন্তাধারার উদ্ভব হয়। পুরনো চিন্তাধারার ধারক ও বাহকেরা নিজেদের সীমাবদ্ধতা বোঝাার চেষ্টা না করে নতুন চিন্তাধারার প্রতি আক্রমণাত্মক মনোভাব গ্রহণ করে। অনেক সময় নিজেদের প্রভাব প্রতিপত্তি বজায় রাখার জন্য তাঁরা পশ্চাৎমুখী চিন্তাধারাকেই আঁকড়ে ধরে থাকেন। এই ধরনের পরিস্থিতিতে রক্ষণশীলদের আচরণ আক্রমণাত্মক হয়ে থাকে। ইতিহাসে এই জাতীয় ঘটনার অনেক উদাহরণ পাওয়া যায়। 
আরবের রক্ষণশীল দার্শনিক ইবনে গাজালি মুক্তচিন্তার অধিকারী দার্শনিকদের আক্রমণ করে 'ইনকোহারেন্স অব দ্য ফিলোসফার্স' নামে একটি বই লেখেন। এর উত্তরে স্পেনের মুসলমান দার্শনিক ইবনে রুশদ 'ইনকোহারেন্স অব দ্য ইনকোহারেন্স' নামে একটি বই লেখেন। ঐতিহাসিকরা মনে করেন যে, এ বইটির মাধ্যমে ইবনে রুশদ পার্থিব চিন্তাধারা স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন। ইবনে গাজালি ও ইবনে রুশদের মসিযুদ্ধ প্রধানত দর্শনশাস্ত্রের চর্চা সম্বন্ধে। কিন্তু ইবনে রুশদের লেখায় ধর্মনিরপেক্ষ চিন্তাধারা ফুটে ওঠে। যদিও প্রাচীন দার্শনিক মার্কাস অরেলিয়াস বা প্রোটাগোরাস প্রমুখের লেখায় পার্থিব চিন্তাধারা প্রকাশ পেয়েছিল কিন্তু ইবনে রুশদ প্রথম স্পষ্টভাবে পার্থিব চিন্তাধারা প্রকাশ করেন। 
রক্ষণশীল চিন্তাধারার মানুষেরা যে কত নিষ্ঠুর হতে পারে ইউরোপের ইতিহাসের দিকে তাকালে তা বোঝা যায়। পঞ্চদশ শতাব্দীতে কপার্নিকাস আবিষ্কার করেন যে, পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে। কিন্তু বাইবেলের শিক্ষা বিপরীত। কপার্নিকাস জীবিতকালে ধর্মযাজকদের ভয়ে তাঁর আবিষ্কার প্রকাশ করতে সাহস করেননি। গ্যালিলিও এই সত্য প্রকাশ করায় ধর্মযাজকদের রোষানলে দগ্ধ হন। কারান্তরালে তাঁর মৃত্যু হয়। স্পেনের বৈজ্ঞানিক মাইকেল সার্ভেটাস মানুষের রক্তসঞ্চালন প্রণালী ব্যাখ্যা করেন। ধর্মান্ধরা তাঁকে পুড়িয়ে মারে। জিওরডিনো ব্রুনো সূর্যকে অনেক নক্ষত্রের একটি বলে বর্ণনা করেন। ধর্মযাজকরা বিশ্বের বিশালতার কথা বুঝতে পারেনি। তারা ব্রুনোকে পুড়িয়ে মারে। সত্য বলার অপরাধে ডারউইনকেও কম নাজেহাল হতে হয়নি ঊনবিংশ শতাব্দীতে। আজ আমরা দেখি পার্থিব চিন্তাধারার অনুসারী মহাপুরুষদের খুঁজে পাওয়া তথ্য সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে আর ধর্মান্ধরা ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বে¡ও কোন কোন দেশে প্রতিক্রিয়াশীলরা চোখ রাঙিয়ে বেড়াচ্ছে। ইতিহাসের অগ্রগতিকে বাধা দিচ্ছে। নিজেদের জন্মভূমিকে পিছিয়ে রাখছে জ্ঞানের অগ্রযাত্রায়।
'সেক্যুলারিজম' কথাটি প্রচলন করেন বিলাতের দার্শনিক জর্জ জ্যাকব হলিওক। তিনি ছিলেন 'এগনিস্টিসিজম' আদর্শের অনুসারী। এই আদর্শের প্রবক্তা হ্যাক্সলি বিশ্বাস করতেন যে, এই আদর্শ একটি প্রক্রিয়া, যার দ্বারা একটি মতামতের সত্যাসত্য যাচাই করে নেয়া যায়। হলিওক বলেছিলেন যে সেক্যুলারিজম খ্রীস্টান ধর্মের বিরুদ্ধে নয়। তাঁর মতামত ধর্ম থেকে স্বাধীন। সত্যের অগ্রগতি সেক্যুলারিজমের উদ্দেশ্য। সত্যকে জানার আর কোন পথ নেই-এ কথা তিনি বলেননি। কিন্তু সত্যকে জানার একটি পথ যে সেক্যুলারিজম সে কথা তিনি বলে গেছেন।
আমরা মনে করি যে সেক্যুলার শব্দটির বাংলা প্রতিশব্দ হিসেবে 'ধর্মনিরপেক্ষতা' শব্দটি বেছে নেয়া ঠিক হয়নি। এর ফলে মুক্তচিন্তার বিরোধীরা ধর্মনিরপেক্ষতাকে ধর্মহীনতা হিসেবে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে। এই বিষয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়েছে এবং চালিয়ে যাচ্ছে। এই অপপ্রচারের সামনে মুক্তচিন্তার অধিকারীরা অসহায় বোধ করেছেন। তাঁরা স্বাধীনভাবে খোলামেলাভাবে তাঁদের মতামত প্রকাশ করতে পারেননি। এইসব কারণে অগ্রগতির আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছি আমরা। বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারা বিকশিত হচ্ছে না। আমরা পরমুখাপেক্ষী থেকে যাচ্ছি। পার্থিব চিন্তার বিরোধীরা পার্থিব দেশের আবিষ্কৃত জিনিস ব্যবহার করছেন ঠিকই কিন্তু নিজের দেশে পার্থিব চিন্তার বিকাশে বাধার সৃষ্টি করে নিজের দেশকে পিছিয়ে রাখছেন। 
পার্থিব চিন্তার ব্যাপক প্রসার ঘটে ইতালিতে রেনেসাঁস (ৎবহবংংধহপব) শুরু হবার পর। রেনেসাঁস শুরু ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে চতুর্দশ শতাব্দীতে। রেনেসাঁসের পথিকৃৎ ফ্রানসেস্কো পেট্রার্ক। তিনি ছিলেন মানবতাবাদী। রেনেসাঁস ইউরোপের সাংস্কৃতিক জীবনে নবজাগরণ নিয়ে আসে। রেনেসাঁস ইউরোপের শিল্পে, সাহিত্যে, বিজ্ঞানে, রাজনীতিতে-এক কথায় জীবনের সর্বস্তরে একটা বিশাল বিপ্লব ঘটায়। প্রধানত ক্যাথলিকরা ইউরোপের চিন্তার জগতে একটা স্থবিরতা এনেছিল। ইতালির মানুষ বুঝেছিল যে জীবনে অগ্রগতির জন্য প্রয়োজন মুক্তচিন্তা। জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় উন্নতির জন্য প্রয়োজন প্রাসঙ্গিক তথ্য এ কথা তারা বুঝতে পেরেছিল। জ্ঞানের অগ্রগতির জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন উৎস। সামন্তবাদ আর ধর্মযাজকরা মিলে যে বদ্ধ পরিবেশের সৃষ্টি করেছিল তাতে মানুষ হাঁপিয়ে উঠেছিল। পার্থিব চিন্তাধারা এনে দিল নতুন পথের সন্ধান। জ্ঞানে, বিজ্ঞানে, সাহিত্যে, শিল্পে রাজনীতিতে ইউরোপে একটা নতুন প্রাণের সঞ্চার হলো। 
এবার নিজের দেশের ইতিহাসের দিকে তাকানো যাক বস্তুনিষ্ঠতার সঙ্গে মুক্ত মন নিয়ে। মুসলমান রাজত্বের পাঁচ শ' বছরে স্থানীয় মুসলমানরা ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুর ধারেকাছে ছিল না কিন্তু এক ধরনের মানসিক সম্পর্ক ছিল তাদের সঙ্গে যার কোন বাস্তব ভিত্তি ছিল না। এই কারণে ইংরেজরা ক্ষমতা দখল করলে মুসলমানরা একই সঙ্গে, ক্রোধ ও অসহায় বোধ করে। ইংরেজী ভাষাকে তারা বর্জন করল। উইলিয়াম হান্টারের লেখা 'দ্য ইন্ডিয়ান মুসলমানস' পড়লে সে সময়ের চিত্র দেখতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে প্রধানত রাজা রাম মোহন রায়ের শেখানো পথ অনুসরণ করে হিন্দুরা অনেক দূর এগিয়ে গেল। একটি বিষয় উল্লেখ করলে বিষয়টি অনেক পরিষ্কার হবে। ইংরেজ সরকার যখন পুরনো হিন্দু ধর্ম শিক্ষার জন্য বিদ্যায়তন খোলার উদ্যোগ নেয় তখন রাজা রাম মোহন রায় তার প্রতিবাদ করেন। তিনি দাবি করেন যেন ইংরেজ সরকার আধুনিক শিক্ষার ব্যবস্থা করে অর্থাৎ পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, অঙ্ক, দর্শন ইত্যাদি শিক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করে। অন্যদিকে মুসলমানরা মাদ্রাসা শিক্ষক।
লেখক : রয়্যাল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিস্টের ফেলো
http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=13&dd=2014-09-03&ni=184188
প্রকাশ : বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ১৯ ভাদ্র ১৪২১

Also read:
আমাদের রাজনৈতিক আদর্শের চারটি স্তম্ভ
ওয়াহিদ নবি
...........আমাদের রাজনৈতিক আদর্শের চারটি স্তম্ভ হচ্ছে (১) জাতীয়তাবাদ, (২) ধর্মনিরপেক্ষতা, (৩) সমাজতন্ত্র ও (৪) গণতন্ত্র। আমরা এই স্তম্ভগুলো সম্বন্ধে অতিসংক্ষেপে আলোচনা করব এই আশায় যে, এগুলো সম্বন্ধে বিস্তৃততর ও গভীরতর আলোচনা হবে।
জাতীয়তাবাদ 
১৮৮২ সালে ফরাসী দার্শনিক আর্নেস্টো রেনাঁ একটি মহামূল্যবান ভাষণ দেন জাতীয়তাবাদ সম্বন্ধে। জাতীয়তাবাদ সম্বন্ধে আলোচনা হলে রেনাঁর এই ভাষণের কথা কেউ না কেউ উল্লেখ করবেনই। অথচ ছাপার অক্ষরে এই ভাষণটি মাত্র ৭২ লাইন। রেনাঁ বলেছিলেন "অতীতে আমাদের পূর্বপুরুষরা যে বীরত্বপূর্ণ গৌরবগাথা সৃষ্টি করেছিলেন তাই হচ্ছে আমাদের জাতীয়তার ভিত্তি। বর্তমানে আমরা যখন অতীতের সেই গৌবের কথা স্মরণ করে সমষ্টিগতভাবে ভবিষ্যতে মহান কাজ করার সঙ্কল্প গ্রহণ করব তখন আমরা একটা প্রকৃত জাতি গড়ে তুলব।" তিনি আরও বলেছিলেন, ''অতীতের গৌরবের চেয়ে অতীতের শোক ও দুঃখ আমাদের কাছে বেশি মূল্যবান। কারণ দুঃখ আমাদের কর্তব্যবোধ জাগ্রত করে এবং একত্রে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করে।'' একাত্তরে বাঙালী জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস আমাদের গৌরবগাথা। আমাদের মুক্তিবাহিনীর বীরত্ব, আমাদের মিত্র ভারতীয় বাহিনীর প্রায় ২০ হাজার সৈনিকের আত্মদান, রাশিয়ার মানুষের সর্বাত্মক সমর্থন-এসব আমাদের মানসনেত্রে চিরজাগরুক থাকবে। কিন্তু এর চেয়েও বড় ৩০ লাখ মানুষের আত্মদান, শতসহস্র নারীর সম্ভ্রম হারানো, অগণিত আহত মানুষের সীমিত জীবনযাপন-এগুলো আমাদের শোকগাথা। আমাদের গৌরবগাথা আর শোকগাথা আমাদের কর্তব্যবোধকে জাগরিত করুক। এই হোক আমাদের জাতীয়তার ভিত্তি। ...............................  Details at:
প্রকাশ : বুধবার, ২৭ আগষ্ট ২০১৪, ১২ ভাদ্র ১৪২১

উপ-সম্পাদকীয় | কালের কণ্ঠ

আমাদের একঘেয়েমি বোধটাও কি ভোঁতা হয়ে গেছে! 


http://www.kalerkantho.com/print-edition/sub-editorial/2014/08/26/121133








__._,_.___

Posted by: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___

[mukto-mona] Saudis risk new Muslim division with proposal to move Mohamed’s tomb



An intolerable outrage!
<< The al-Baqi cemetery already contains the bodies of many of the Prophet's family, including his father who was removed there in the 1970s, Dr Alawi said. In 1924 all the grave markers were removed, so pilgrims would not know who was buried there, and so be unable to pray to them.
"The Prophet would be anonymous," Dr Alawi added. "Everything around the Prophet's mosque has already been destroyed. It is surrounded by bulldozers. . . . .>>>
http://www.independent.co.uk/news/world/middle-east/saudis-risk-new-muslim-division-with-proposal-to-move-mohameds-tomb-9705120.html#

<< The Independent has previously revealed how the multibillion-pound expansion of the Grand Mosque has, according to the Washington-based Gulf Institute, led to the destruction of up to 95 per cent of Mecca's millennium-old buildings. They have been replaced with luxury hotels, apartments and shopping malls.
King Abdullah has appointed the prominent Wahhabi cleric and imam of the Grand Mosque, Abdul Rahman al-Sudais, to oversee the expansion project – necessary to cope with the huge number of pilgrims who now visit each year. >>

Muslims waiting to pray at the tomb of the Prophet at al-Masjid al-Nabawi in Medina Muslims waiting to pray at the tomb of the Prophet at al-Masjid al-Nabawi in Medina (Reuters)


Al-Nabawi mosque around the tomb has been expanded by generations of Arabian rulers, particularly the Ottomans. It includes hand-painted calligraphy documenting details of the Prophet's life and his family. Dr Alawi said the plans also call for these to be destroyed as well as the Green Dome which covers the Prophet's tomb.



__._,_.___

Posted by: Farida Majid <farida_majid@hotmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___

[mukto-mona] মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী হত্যাকান্ডে সন্দেহের তীর উগ্রপন্থী দুই সংগঠনের দিকে



সন্দেহের তীর উগ্রপন্থী দুই সংগঠনের দিকে
সাজ্জাদ মাহমুদ খান
মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী হত্যাকান্ডে ব্যক্তিগত কিংবা ব্যবসায়িক বিরোধ খুঁজে পাননি তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। মতাদর্শগত বিরোধকে সামনে রেখে তদন্ত চলছে। যারা ফারুকীর মতাদর্শ নিয়ে অনলাইনে সরব ছিল তাদের একটি তালিকা তৈরি করেছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। এই তালিকায় আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ও আনসারুস সুন্নাহ নামে দুটি উগ্রপন্থী দলের নাম উঠে এসেছে। তবে মঙ্গলবার পর্যন্ত হত্যাকা-ে সরাসরি সংশ্লিষ্ট কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

২৭ আগস্ট রাত সোয়া ৯টার দিকে রাজধানীর ১৭৪, পূর্ব রাজাবাজারের বাসায় স্বজনদের আটকে রেখে মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকীকে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ডিসি (পশ্চিম) শেখ নাজমুল আলম বলেন, ফারুকী হত্যাকান্ডে সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে এমন সব বিষয়ই খতিয়ে দেখছে পুলিশ। হত্যাকান্ডের মোটিভ ও হত্যাকারী সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, ফারুকীর মতাদর্শের বিরুদ্ধে অনলাইনে সরব ছিল দুই উগ্রপন্থী দল আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ও আনসারুস সুন্নাহ। এই দুটি দল তাদের নিজেদের ওয়েবসাইটে ফারুকীকে বেদাতপন্থী ও কুফুরি আকিদাপন্থী বলে আখ্যায়িত করে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছে। ফারুকী হত্যাকান্ডের সঙ্গে এই দুটি দলের যোগসূত্র রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এজন্য যারা অনলাইন ব্লগ, ইউটিউব ও ফেসবুকে মাজারের পূজারি, দজ্জাল, খাজাবাবাসহ বিভিন্ন নামে অপপ্রচার চালিয়েছে তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।

উগ্রপন্থী দলের একাধিক ওয়েবসাইট ঘেটে দেখা গেছে, তারা ফারুকীকে বেদাতপন্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে। আনসারুস সুন্নাহর একটি ফেসবুক পেজে লেখা রয়েছে- 'নুরুল ইসলাম ফারুকী ভ্রান্ত বেরেলবি মতবাদের প্রচারক ছিলেন, তিনি কবর-মাজার ওয়ালাদের শিরকি কাজকর্মকে অলি-আউলিয়াদের ভালোবাসার নাম দিয়ে সাফাই গাইতেন। তিনি কট্টর মাজারপন্থী ছিলেন। এছাড়া তিনি সহিহ আকিদার আলেমদের ওহাবি, লা মাজহাবি ইত্যাদি বলে গালাগাল করতেন। আমরা তাকে বেদাতপন্থী হিসেবেই জানি।' এছাড়া এই সংগঠনটি ফারুকীকে মানসুর হাল্লাজের অনুসারী বলে আখ্যায়িত করে। তাদের মতে, মানসুর হাল্লাজ একজন মুরতাদ। আনসারুস সুন্নাহর মতে, ফারুকী 'ফানাফিল্লাহ' মতবাদেরও প্রচার করতেন, যা আনসারুস সুন্নাহর মতে শিরকি ও কুফুরি কাজ। আনসারুস সুন্নাহ এই মতবাদের কট্টর প্রতিবাদ করে প্রচার চালায়। তাদের ভাষ্য, ফারুকীর মতো সেলিব্রিটি মাওলানারা ইসলামের অনেক ক্ষতি করছে। এজন্য তাদের 'বাতিল' হিসেবে ঘোষণাও করেছে তারা।

আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের অনুসারীরা কিয়ামত পর্যন্ত অসি অর্থাৎ তরবারি দিয়ে জিহাদ করতে হবে বলে মনে করে। এ কারণেই তারা কখনও আগ্নেয়াস্ত্র থাকলেও তা ব্যবহার করে না। তারা চাপাতিকে তরবারি হিসেবে ব্যবহার করে। হামলাকারীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল, কিন্তু তারা তা ব্যবহার করেনি। গত বছর আগস্ট মাসে খুলনায় নতুন মতাদর্শ প্রচারকারী মুসলিম উম্মাহর প্রধান ও তার ছেলে এবং গোপীবাগের সিক্স মার্ডারের ঘটনায়ও ঘাতকদের হাতে অস্ত্র ছিল কিন্তু তারা ব্যবহার করেনি। গলা কাটার সময় ঘাতকরা ফারুকীকে বলেছিল- তুই অনেক 'বেদাতি' ও 'শিরকি' কাজ করেছিস। তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, আনসারুল্লাহর প্রধান জসিম উদ্দিন রাহমানীসহ অল্প কিছু লোককে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হলেও তাদের বিরাট অংশ এখনও সক্রিয়। তাদের কেউ এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারে। প্রয়োজনে জসিম উদ্দিন রাহমানী ও তার সহযোগীদের নতুন করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

'পীর-আউলিয়াদের পক্ষে কথা বলায় ফারুকী হত্যা'

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত নেতারা বলেছেন, পীর-আউলিয়া এবং তাদের প্রতিষ্ঠান ও ঐতিহ্যের নিদর্শনগুলোর পক্ষে কথা বলার কারণেই ফারুকীকে হত্যা করা হয়েছে। জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো বারবার হুমকি দিয়ে তাকে আদর্শিক জিহাদ থেকে বিরত রাখতে চেয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তাকে নির্মমভাবে জবাই করে সফল হয়েছে তারা। মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রাম নগরীর লালদীঘি ময়দানে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত সমন্বয় কমিটি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে নেতারা এ কথা বলেন।

সমাবেশ থেকে জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক টিভি চ্যানেল পিস টিভি বন্ধ করতে সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়। বক্তারা বলেন, খুনিরা দ্রুত গ্রেফতার না হলে তীব্র আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এ ধরনের হত্যাকান্ড বন্ধে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান নেতারা। এ সময় ফারুকী হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে ১০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ৪ থেকে ১২ সেপ্টেম্বর দেশের পীর মাশায়েখ, ওলামায়ে কেরাম ও সুন্নি সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় এবং অভিমত সংগ্রহ, ১৩ সেপ্টেম্বর ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন, ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ওলামা মাশায়েখ পেশাজীবী ও বুদ্ধিজীবীদের প্রতিনিধি সম্মেলনের ঘোষণা দেয়া হয় । আল্লামা মুফতি ওবাইদুল হক নঈমীর সভাপতিত্বে সংগঠনের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার ও মাওলানা সউম আবদুস সামাদের সঞ্চালনায় এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদের খতিব অধ্যক্ষ আল্লামা জালাল উদ্দিন আল কাদেরীসহ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের নেতারা।
- See more at: 
http://www.alokitobangladesh.com/last-page/2014/09/03/94188
যে কারণে মাওঃ নূরুল ইসলাম ফারুকীকে জীবন দিতে হলো           এ এইচ এম আহসান উল্লাহ

  


  • মাওঃ নূরুল ইসলাম ফারুকীকে জবাই করে হত্যা | Faridgonj Times

    www.faridgonjtimes24.com/মাওঃ-নূরুল-ইসলাম-...

    5 days ago - বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন, চ্যানেল আই'র কাফেলা অনুষ্ঠানের উপস্থাপক, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওঃ নুরুল ইসলাম ফারুকীকেগতকাল বুধবার রাতে তার বাসায় ঢুকে একদল দুর্বৃত্ত জবাই করে হত্যা করে। প্রখ্যাত এই আলেমের হত্যাকাণ্ডের খবরে চাঁদপুর জেলার ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মাঝে ...
  • মাওঃ নূরুল ইসলাম ফারুকীর খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে - চাঁদপুর ...

    1 day ago - বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম, সুপ্রীম কোর্ট জামে মসজিদের খতিব, চ্যানেল আইর জনপ্রিয় ইসলামী অনুষ্ঠান 'কাফেলা' ও 'সত্যের সন্ধানে'সহ আরো বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে ইসলামী অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ও বিজ্ঞ আলোচক, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওঃ শায়খ নূরুল ইসলাম ফারুকীকে ...
  • মাওঃ নূরুল ইসলাম ফারুকীকে হত্যার... - দৈনিক চাঁদপুর কন্ঠ

    মাওঃ নূরুল ইসলাম ফারুকীকে হত্যার প্রতিবাদ বিক্ষোভে উত্তাল চাঁদপুর রোববার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল.




  • __._,_.___

    Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


    ****************************************************
    Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
    Call For Articles:

    http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

    http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

    ****************************************************

    VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

    ****************************************************

    "I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
                   -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





    __,_._,___

    [mukto-mona] একটি লিফলেট নিয়ে হুলস্থূল বিএনপিতে



    একটি লিফলেট নিয়ে হুলস্থূল বিএনপিতে

    স্টাফ রিপোর্টার | ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪, বুধবার, ১০:৩৬ | মতামত: ১ টি
    'আসুন বিএনপিকে রক্ষা করি' শীর্ষক একটি লিফলেট নিয়ে হুলস্থূল চলছে বিএনপিতে। 'তৃণমূল নেতৃবৃন্দ'র নামে গত দুই সপ্তাহ ধরে ছড়ানো হচ্ছে এ লিফলেট। বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়, নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সভা-সমাবেশ চলাকালে এ লিফলেট ছড়ানোর ঘটনা ঘটেছে কয়েকবার। সোমবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর বিএনপি আয়োজিত দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান চলাকালেও কয়েকজনকে ভিড়ের মধ্যে লিফলেট ছুড়ে দিয়ে সরে যেতে দেখা গেছে। লিফলেটটি ছুড়ে মারার সময় দুইজনকে ধরে গণপিটুনি দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে সেখানে। লিফলেটটি পড়ে দেখা গেছে, তার বিষয়বস্তু ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনে অনিয়ম। লিফলেটের শীর্ষভাবে রয়েছে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেলের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণাত্মক নানা তথ্য। বিশেষ করে ঢাকা মহানগরের বাইরের নেতা হিসেবে নগর কমিটিতে তার অযোগ্যতা প্রমাণই লিফলেটের মূল লক্ষ্য। লিফলেটের প্রধান দাবি মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব পদ থেকে সোহেলের অপসারণ ও অভিযুক্তদের প্রভাবমুক্ত হয়ে অঙ্গদলগুলোর পুনর্গঠন। সোহেলকে দিয়ে শুরু হলেও লিফলেটে আক্রমণের তীর ছোড়া হয়েছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহউদ্দিন আহমেদ, আবদুল কাইয়ুম, দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন আল মামুন, হাওয়া ভবনের কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বকুল, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নীরব, মহিলা দলের সম্পাদক শিরিন সুলতানা, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল বারী বাবু ও ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলের বিরুদ্ধে। হাবিব-উন নবী সোহেল ও রফিকুল ইসলাম বকুলের বিরুদ্ধেই করা হয়েছে সবচেয়ে বেশি আক্রমণ। লিফলেটে ঢাকা মহানগর, ছাত্রদল, যুবদল, মহিলা দলের চলতি কমিটি গঠন ও কর্মসূচি প্রণয়নে প্রভাব সৃষ্টি এবং আন্দোলনে ব্যর্থতার জন্য উল্লিখিত নেতাদের দায়ী করা হয়েছে। এদিকে আন্তর্জাতিক গুম দিবসের মানববন্ধন শেষে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে লিফলেটের বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেন কয়েকজন সিনিয়র নেতা। মানববন্ধন শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার কক্ষে গেলে সেখানে জড়ো হন অভিযুক্তদের অনেকেই। এ সময় সেখানে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান ও কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, শহীদউদ্দিন চৌধুরী, শিরিন সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেল, মীর সরফত আলী সপু, সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। মির্জা আলমগীরের কাছে এ লিফলেট বিতরণকারী গ্রুপের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান নেতারা। শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, সরকারের এজেন্টরাই এ লিফলেট বিতরণ করছে। চিহ্নিত করে এসব এজেন্টের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। এ সময় মির্জা আলমগীর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিএনপির মিটিংয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে লিফলেট বিতরণের কথা চিন্তা করা যায়? এটা ভাল লক্ষণ নয়। এটা দল ভাঙার ষড়যন্ত্রের অংশ। যে কোন মূল্যে দলের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে।http://mzamin.com/details.php?mzamin=Mzk2MzE=&s=MTA=




    __._,_.___

    Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


    ****************************************************
    Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
    Call For Articles:

    http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

    http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

    ****************************************************

    VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

    ****************************************************

    "I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
                   -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





    __,_._,___

    [mukto-mona] বিএনপি ও তারেক রহমানের রাজনীতির ভবিষ্যত



    বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ১৯ ভাদ্র ১৪২১
    বিএনপি ও তারেক রহমানের রাজনীতির ভবিষ্যত
    আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী
    পয়লা সেপ্টেম্বর সোমবার বিএনপি বা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হলো। এবারের এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন দলের নেত্রী খালেদা জিয়া তার স্বামী দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করতে গেলেও ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সভায় উপস্থিত হতে পারেননি। দলের সূত্র থেকে জানা যায়, তিনি নানা রোগব্যাধি ও বয়সাধিক্যের ভার আর সামাল দিয়ে উঠতে পারছেন না। দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য, দেশের সব পত্র-পত্রিকা এমনকি বিএনপির প্রতি সহানুভূতিশীল বাংলা দৈনিক 'প্রথম আলো'তে পর্যন্ত বলা হয়েছে, বর্তমানের মতো এমন দুর্দিন বিএনপির আর কখনও আসেনি।
    এই বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে যে বৈশিষ্ট্যটি এবার সবচাইতে বেশি চমক সৃষ্টি করেছে, তা হলো একটি খবর। খবরটি হলো, বিএনপির 'নির্বাহী নেতা' তারেক রহমান ব্রিটিশ নাগরিকত্ব লাভের জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। খবরটির সত্যাসত্য এখনও সঠিকভাবে জানা যায়নি। কিন্তু লন্ডনের বাংলাদেশী মহলে তা জোরেশোরে ছড়িয়ে পড়েছে এবং বাংলাদেশেও একটি বহুল প্রচারিত দৈনিকে তা প্রকাশিত হয়েছে। বিএনপি বা তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তার কোন প্রতিবাদ এখন পর্যন্ত দেয়া হয়েছে বলে আমার জানা নেই।
    বিএনপির এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের বৈশিষ্ট্যগুলো থেকে এই দলটির এবং তার ভাবী নেতা তারেক রহমানের রাজনীতির ভবিষ্যত সম্পর্কে একটা আভাস পাওয়া যায়। বিএনপির প্রতি সহানুভূতিশীল মিডিয়াগুলোর মতেও এই ভবিষ্যত ভাল নয়। কোন কোন মিডিয়ায় তো স্পষ্টই বলা হয়েছে, বিএনপির এমন দুর্দিন আর কখনও আসেনি। কথাটা বিএনপির নেতারাও প্রকারান্তরে স্বীকার করে নিয়েছেন। পয়লা সেপ্টেম্বর ঢাকায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সভায় দলের ভারবাহী (বহুদিন ধরে তিনি ভারপ্রাপ্ত) মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন, 'এই দুর্দিন সারা বাংলাদেশের।'
    তিনি সম্ভবত বোঝাতে চেয়েছেন, তার দলের দুর্দিন বলে যাকে বলা হচ্ছে তা সারা দেশের দুর্দিন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ এই দুর্দিন টের পাচ্ছে না; বরং ঢোলের বাদ্য থামলে যেমন মানুষ শান্তি পায় তেমনি আন্দোলনের নামে বিএনপির সন্ত্রাসের রাজনীতি বন্ধ হতেই দেশের মানুষ বহুকাল পর একটু শান্তি ও স্বস্তিতে দিন কাটাচ্ছে। ফলে রমজানের পর আন্দোলনের হাঁকডাক দিয়ে বিএনপি জনগণের কাছ থেকে সাড়া পায়নি। এখন কোরবানির ঈদের পর আন্দোলনের কথা বলা হচ্ছে।
    গোঁদা পা দিয়ে লাথি মারার ইচ্ছা একজন মানুষের যতই থাকুক, তার শক্তির পরিমাপ আগে করতে হবে। বিএনপি গত সাধারণ নির্বাচনে যোগ না দিয়ে এখন জনবিচ্ছিন্ন এবং কোমর ভাঙ্গা। বিএনপির 'পারিবারিক আত্মীয়' এবং লেঠেল জামায়াত এখন নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। তারা নিজেদের কোন ইস্যু ছাড়া কেবল বিএনপিকে বাঁচাতে মাঠে নামবে না। এই অবস্থায় ফখরুল মির্জা এবং দলের দু'চারজন পাতি নেতার গলাবাজি ছাড়া বর্তমান রাজনীতিতে মূলধন বলতে বিএনপির আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।
    বিএনপির কোন নীতি নেই এবং কোন সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক কর্মসূচীও নেই।
    জিয়াউর রহমানকে শহীদ বানিয়ে, আওয়ামী লীগের বিরোধিতার নামে স্বাধীনতার মূল আদর্শগুলোর বিরোধিতা এবং কারণে অকারণে ভারতবিদ্বেষী প্রচার দ্বারা একটি রাজনৈতিক দল তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারে না। এতদিন বিএনপি টিকে রয়েছে দেশী-বিদেশী স্বার্থান্বেষী মহল প্রচারণার সাহায্যে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে 'আপোসহীন নেত্রী' হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার যে ভাবমূর্তি তৈরি করেছিল, সেই ভাবমূর্তির সাহায্যে। তাছাড়া ঘাতকদের হাতে নির্মমভাবে নিহত জিয়াউর রহমানের বিধবা স্ত্রী হিসেবেও খালেদা জিয়ার প্রতি মানুষের সহানুভূতি আছে। 
    এই সহানুভূতিকে বেগম জিয়া কাজে লাগিয়েছেন। নিহত স্বামীর জন্য তার মনে যতটা শোক, তার চাইতে চোখে শোকাশ্রু বহায়েছেন অনেক বেশি। কিন্তু তার তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রিত্বের আমলেও জিয়া হত্যার তদন্ত বা জিয়াউর রহমানের প্রকৃত হত্যাকারীদের বিচারের ব্যবস্থা করেননি। জেনারেল এরশাদের প্রতি তিনি প্রচণ্ড ক্রোধ দেখিয়েছেন তার স্বামী হত্যার হোতা হিসেবে। এমনকি এই ক্রোধের শিকার হয়ে জেনারেল এরশাদকে ক্ষমতা ত্যাগের পর দীর্ঘকাল জেল খাটতেও হয়েছে। কিন্তু এই জেনারেলকেই তিনি আবার ক্ষমতার স্বার্থে কাছে টেনে নেন এবং একই মঞ্চে বসে সভা-সম্মেলন করেন। 
    এক সময় আওয়ামী লীগবিরোধী মঞ্চে একটা চমৎকার সম্মিলন ঘটেছিল। একাত্তরের ঘাতক জামায়াত, বঙ্গবন্ধু হত্যা ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন বলে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ শোনা যায়, সেই জিয়াউর রহমানের দল বিএনপি এবং জিয়াউর রহমানের হত্যা চক্রান্তে যুক্ত ছিলেন বলে যাকে সন্দেহ করা হয় সেই জেনারেল এরশাদ (জেনারেল মঞ্জু হত্যা মামলারও যিনি ছিলেন অভিযুক্ত)। বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে অভিযুক্ত ঘাতকদের এক সময়ের এই 'মহাসম্মিলনী' আর কখনও ঘটেনি।
    দু'শ' বছর আগে নবাবী আমলে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা চক্রান্তের নায়কদের নিয়ে গঠিত মহাসম্মিলনীতে ঘসেটি বেগমের নেতৃত্ব দেয়ার মতো এ যুগে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ঘাতক ও দালালদের মহাসম্মিলনীতে নেতৃত্বদানেও খালেদা জিয়া নজির স্থাপন করেছেন। কিন্তু নীতি বর্জিত রাজনীতি কখনও টেকে না। অভিযুক্ত ঘাতকদের মহাসম্মিলনীও টেকেনি। '৭১-এর পর গত বছর (২০১৩) দেশময় সন্ত্রাস ছড়িয়েও জামায়াত এখন নিষ্ক্রিয় না হলেও নির্বীর্য। এরশাদ সাহেবের এখন না ঘরকা না ঘাটকার দশা। অন্যদিকে সাধারণ নির্বাচনে না গিয়ে বিএনপি যে চরম বোকামি করেছে, তার ফলে তার অবস্থা হাঁটুভাঙ্গা দ'য়ের মতো। সাপুড়ে বাঁশি বাজাচ্ছে। কিন্তু সাপ ঝাঁপি থেকে বের হচ্ছে না। 
    বেগম জিয়া কখনও জনগণকে তার দলের বা তার নেতৃত্বের ক্ষমতার উৎস করে তোলেননি। তার ক্ষমতার প্রধান উৎস ছিল দু'টি। ক্যান্টনমেন্ট এবং লায়েক হওয়ার পর পুত্র তারেক রহমান। ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি তার হাতছাড়া হয়েছে এবং পুত্র তারেককেও নানা গুরুতর অপরাধের মামলার আসামি হয়ে দেশ ছাড়তে হয়েছে। তার দেশে ফেরার সাহস নেই। তিনি বিদেশে বসে কিছু ভাড়াটে গবেষক যোগাড় করে ইতিহাসবিদ সেজেছেন। তিনি একদিকে নতুন নতুন ঐতিহাসিক তথ্য আবিষ্কার করে লোক হাসাচ্ছেন এবং অন্যদিকে মা'কে দেশে তার রাজনীতির খুঁটি হিসেবে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন। বিএনপির অস্তিত্ব ও ঐক্য ধরে রাখার জন্য বেগম জিয়া পুত্র তারেককে দলের নেতাকর্মীদের নাকের ডগায় মূলোর মতো ঝুলিয়ে রেখেছেন। তাদের হয়ত বোঝাতে চাইছেন, তোমাদের ভয় নেই। আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে কি হবে, দলকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য তারেক রহমান আছেন। তিনি প্রত্যক্ষভাবে নেতৃত্ব গ্রহণের জন্য যথাসময়ে 'মহানায়কের' বেশে দেশে ফিরবেন। 
    এই আশায় বিএনপির সাধারণ নেতাকর্মীরা চাতক পাখির মতো তারেক রহমানের দেশে ফেরার প্রতীক্ষায় বসে আছেন। কিন্তু 'মহানায়ক' সুস্থ শরীরে সিঙ্গাপুরে যাচ্ছেন, সৌদি আরবে যাচ্ছেন; কিন্তু দেশে ফিরছেন না। ফলে বিএনপির তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত হতাশা ক্রমে বাড়ছে। খবর প্রকাশিত হয়েছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে দলে দলে বিএনপি-কর্মী দল ছাড়ছেন। অনেকে আওয়ামী লীগেও চলে যাচ্ছেন। দলের এই দুর্দিনের ছায়াই পড়েছে এবারের ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে পারেননি। 
    নীতিহীন দলের নেতৃত্বেও যদি ভাঙন ধরে তাহলে দল টেকে না। খবরটি যদি সত্য হয় যে, খালেদা জিয়া ক্রমশ অসুস্থতা ও বয়সাধিক্যে দলকে নেতৃত্বদানে সক্ষমতা হারাচ্ছেন এবং অন্যদিকে তারেক রহমান ব্রিটিশ নাগরিকত্ব লাভের চেষ্টা শুরু করেছেন সে দেশেই স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য। অর্থাৎ তিনি দেশে ফিরে মামলা-মোকদ্দমার মোকাবেলা করতে চান না এবং নিশ্চিত কারাবাসও এড়াতে চান, তাহলে বিএনপির আগামী কোন সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হওয়া দূরের কথা, তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাই দুরূহ হবে। হতাশ ও দিকভ্রষ্ট নেতা-কর্মীরা অনেকে অন্য দলে চলে যাবেন। ভাসানী ন্যাপ ও জাসদের মতো বিএনপি নানা স্পিøন্টার্স গ্রুপে ভাগ হবে এবং শেষ পর্যন্ত সাইনবোর্ডসর্বস্ব দল হয়ে দাঁড়াবে। মুসলিম লীগ ভেঙে অনেক মুসলিম লীগ তৈরি হওয়ার মতো বিএনপি ভেঙে অনেক বিএনপি গঠিত হলেও বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই।
    বেগম খালেদা জিয়া যদি অসুস্থতাবশত দলকে নেতৃত্ব দিতে না পারেন এবং তারেক রহমানও দেশে ফেরার সাহস না দেখিয়ে বিদেশেই স্থায়ীভাবে বসবাসের ব্যবস্থা করেন, তাহলে আগামী সাধারণ নির্বাচনে বিএনপির জয়ী হওয়া দূরের কথা, ওই সময় পর্যন্ত দলটির বর্তমান দুর্দিন আরও কতটা ঘনায় তা দেখার রইল। আমাদের তথাকথিত সুশীল সমাজ তো গত ৫ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের পর থেকেই হৈ চৈ তুলেছেন এই নির্বাচনের বৈধতা নেই। জনসাধারণ এই নির্বাচন মেনে নেয়নি। কিন্তু মিডিয়ার জনসমীক্ষায় দেখা যায় এখন অন্য চিত্র। 
    ঢাকার যে 'ঢাকা ট্রিবিউন' ইংরেজী দৈনিকটি কিছুকাল আগে খবর ছেপেছিল যে, দেশের মানুষ ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে খুশি নয়, তারা তাড়াতাড়ি আরেকটি সাধারণ নির্বাচন চায়; সেই 'ট্রিবিউন' দু'দিন আগে একটি জনমত জরিপের ফল প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, দেশের ৭৭ ভাগ মানুষ বর্তমান সরকারের কাজে খুশি। তারা তাড়াতাড়ি আরেকটি নির্বাচন চায় না। বরং চায় এই সরকার তাদের পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করুক। তাড়াতাড়ি আরেকটি নির্বাচন হলে তারা মনে করে, দেশে আবার সন্ত্রাস, অরাজকতা, রাজনৈতিক গুম-খুন দেখা দেবে। মানুষের জীবনে শান্তি ও স্বস্তি থাকবে না।
    এই জনমত সমীক্ষার ফলও বিএনপি ও তারেক রহমানের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য অশনি সঙ্কেতস্বরূপ। তার সম্পর্কে লন্ডনের বাজারে নানা গুজব। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, ছয় বছরের বেশি সময় যাবত তিনি বিদেশে রাজার হালে বসবাস করছেন। তার এই অর্থের উৎস কি? তার সম্পর্কে অভিযোগ, তিনি শুধু বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্যই চেষ্টা করছেন না, দেশী-বিদেশী একাধিক ব্যবসায়ী কার্টেলের সঙ্গে জড়িত হয়ে বিদেশে বসে ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে এবং অসত্য প্রচারণায় দু'হাতে অর্থ ঢেলে দেশের রাজনীতিতে অস্থিরতা ও অরাজকতা সৃষ্টি করতে চান।
    দেশে ফিরে রাজনীতি করার সাহস তার নেই। দেশে ফিরবেন নাও মোটে। তাতে দেশে তার দল গোল্লায় যাক তাতে তার মাথা ব্যথা নেই। তিনি বিদেশে বসে ষড়যন্ত্রের ঘুঁটি চালবেন। বিএনপির ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষেও তিনি আবার লন্ডনে বসে 'বাণী' প্রচার করেছেন। তাতে বিএনপির সাধারণ নেতা-কর্মীদের জন্য কোন কর্মসূচী ও দিক নির্দেশনা নেই। আবার তিনি ভাড়াটে গবেষকদের সাহায্যে ইতিহাসবিদ সেজেছেন এবং তার পিতা জেনারেল জিয়াউর রহমান যে কত বড় পুণ্যাত্মা ছিলেন তার 'গবেষণাম-িত' বিবরণ দিয়েছেন। বর্তমান রেখে তারেক এখন অতীতাশ্রয়ী। সম্ভবত তার রাজনীতিও অতীতমুখী হয়েছে। অতীতমুখী মানুষের শেষ পরিণতি অতীতের অতলেই শেষ পর্যন্ত তলিয়ে যাওয়া। তারেক রহমানের জন্য সম্ভবত সেই পরিণতিই অপেক্ষা করছে।
    বিএনপির ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকায় নেত্রীবিহীন অনুষ্ঠান এবং লন্ডনে বসে তারেক রহমানের 'ইতিহাস চর্চা' দল এবং তারেক রহমানের রাজনীতির ভবিষ্যত সম্পর্কে কোন সম্ভাবনার আভাস দেয় না। কিন্তু দেশে দ্বিদলীয় সুষ্ঠু গণতন্ত্র প্রয়োজন। বিএনপি যদি দেশে এই প্রয়োজন মেটাতে চায় তাহলে তাকে চক্রান্ত ও মিথ্যা ইতিহাস চর্চার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। পাকিস্তানের আইএসআইয়ের অভিশপ্ত কব্জা থেকে মুক্ত হতে হবে।
    আমাকে বাংলাদেশের এক সাংবাদিক বন্ধু একটি চমৎকার কথা বলেছেন, তিনি বলেছেন, "যেদিন দেখবেন বেগম খালেদা জিয়া আর বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুদিবসে বিশাল কেক কেটে নিজের বানোয়াট জন্মদিনের অশ্লীল উৎসব আর করছেন না, জানবেন বিএনপি সেদিন আইএসআইয়ের কব্জা থেকে মুক্ত হয়েছে।"
    আমার অধিক মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।


    [লন্ডন, ২ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার, ২০১৪]
    প্রকাশ: বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ১৯ ভাদ্র ১৪২১


    __._,_.___

    Posted by: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>


    ****************************************************
    Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
    Call For Articles:

    http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

    http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

    ****************************************************

    VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

    ****************************************************

    "I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
                   -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





    __,_._,___

    [mukto-mona] জিয়া-ডালিম ও ১৫ আগস্ট লে. কর্নেল (অব) ডালিমের বয়ান - ১২



    বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ১৯ ভাদ্র ১৪২১
    জিয়া-ডালিম ও ১৫ আগস্ট লে. কর্নেল (অব) ডালিমের বয়ান - ১২ 
    মুনতাসীর মামুন
    (২ সেপ্টেম্বরের পর)
    যাক, ডালিমের ভাষ্য অনুসারে পরদিনই তার ডাক পড়ল সেনা সদর দপ্তরে। সেনাপ্রধানের দপ্তরে যাওয়ার আগেই জেনারেল জিয়া তাকে ডেকে পাঠালেন এবং সব শুনে বললেন, "This is incredible and ridiculous. This is simply not acceptable. ঠিক আছে দেখ চীফ কি বলে।" [পৃ.৪৩৫]
    মেজর হাফিজ তখন জিয়ার ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ডালিমকে বললেন, "গত রাতের বিষয়টা শুধুমাত্র তোমার আর ভাবীর ব্যাপারই নয়। সমস্ত আর্মির dignity pride honour are at stake. মানে আমরা সবাই এর সাথে জড়িত। you got to understand this clearly ok? অন্যসব ব্রিগেডের সাথে আলাপ হয়েছে তারাও এ ব্যাপারে সবাই একমত। This has got to be sorted out right and proper. দেখ মুজিব কি বিচার করবে? আমরা শফিউল্লাহর মাধ্যমে দাবি জানাব আর্মির তরফ থেকে। প্রধানমন্ত্রীকে সে দাবি অবশ্যই মানতে হবে। দাবিগুলোও আমরা ঠিক করে ফেলেছি। তুমি শফিউল্লাহ কি বলে শুনে আস। তারপর আমরা যা করার তা করব।" [পৃ. ৪৩৫-৩৪৬]
    শফিউল্লাহর সঙ্গে ডালিম কথা বললেন। শফিউল্লাহ জানালেন, প্রধানমন্ত্রী ও তিনি সম্পূর্ণ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এখন তা মিটমাট করে নেয়া উচিত। ডালিম তাতে রাজি নয়। মিটিং শেষ। ডালিম বাইরে এসে দেখেন সেনাসদরের "প্রায় সব অফিসার একত্রিত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।" তারা জানতে চায় সেনাপ্রধান কী বললেন। ডালিম জানালেন, সবাই ক্ষুব্ধ। একজন এডিসিকে বললেন, সেনাপ্রধানকে বাইরে আসতে বলতে, তারা কথা বলবেন। শফিউল্লাহ বাইরে এলেন। একজন বললেন, গাজী যা করেছেন তা শুধু সম্পূর্ণ "It has compromised the honour and the dignity of the whole armed forces particularly army. we can't take lying. It has got to be sorted out right and proper. [পৃ. ৫৩৭]
    শফিউল্লাহ জানালেন, প্রধানমন্ত্রী ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন, তাঁরা মানতে রাজি নন। তাঁরা জানালেন, তাদের তিনটি দাবি আছে। সেনাপ্রধানকে এই দাবি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরতে হবে-
    "১। গাজীকে তার সংসদপদ এবং অন্য সমস্ত সরকারী পদ থেকে এই মুহূর্তে অব্যাহতি দিয়ে তাকে এবং তার অবৈধ অস্ত্রধারীদের অবিলম্বে আর্মির হাতে সোপর্দ করতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে, যাতে করে আইনানুযায়ী তাদের সাজা হয়।
    ২। গত রাতের সমস্ত ঘটনা প্রচার মাধ্যমগুলোর মাধ্যমে দেশের জনগণকে অবগত করার অনুমতি দিতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে।
    ৩। যেহেতু গাজী আওয়ামী লীগের সদস্য সেই পরিপ্রেক্ষিতে পার্টি প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকে ব্যক্তিগতভাবে মেজর ডালিম এবং তার স্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। 
    আপনাকে আমাদের এই ৩টি দাবি নিয়ে যেতে হবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এবং আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে এ দাবিগুলো মেনে নিতে হবে। এই দাবিগুলো যদি আদায় করতে অপরাগ হন তবে you have got no right to sit your chair. you will be considered not fit enough to lead this army." [পৃ. ৪০৮]
    শফিউল্লাহ যখন বিচলিত তখন জিয়া এসে যোগ দেন ডালিমদের সঙ্গে এবং অফিসারদের শান্ত করে শফিউল্লাহকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে প্রস্তাব দিতে " To accept the demands for the greater interest of the nation and the armed forces." [ পৃ. ৪০৮]
    তাদের " demands are quite legitimate." [পৃ. ৪৩৯] ডালিম এ প্রসঙ্গে লিখেছেন, "তিনি সাহস করে ঐ ধরনের স্পষ্ট বক্তব্য রাখবেন সেটা আমাদের কাছে ছিল অপ্রত্যাশিত। এতে প্রমাণিত হয় পাকিস্তান প্রত্যাগতদের মাঝে অনেকেই ছিলেন ন্যায়পরায়ণ।"
    শফিউল্লাহ সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে ফিরে এলেন, তাঁর সঙ্গে ছিলেন খালেদ মোশাররফ, শাফায়াত জামিল। ডালিমরা তার সঙ্গে দেখা করলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি সময় চেয়েছেন এবং সেনাপ্রধান বললেন, তাকে সময় দিতেই হবে। ডালিমরা এতে খুশি হলেন না। তারা আজিজ পল্লীতে বৈঠকে বসলেন। অন্যান্য ব্রিগেডের সঙ্গেও যোগাযোগ করলেন। রাতে খবর পেলেন আনমার্কড গাড়িতে সেনাপ্রধান ও শাফায়াত জামিল বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে দেখা করতে গেছেন। তারা আরও জানালেন রাত সাড়ে ১২টার দিকে রক্ষীবাহিনীর 'মুভমেন্ট' শুরু হয়েছে। "রাত আড়াইটার পর বিভিন্ন বর্ডার এলাকা থেকে খবর আসতে লাগল মধ্য রাত্রির পর থেকে ভারতীয় বাহিনীর অস্বাভাবিক তৎপরতা শুরু হয়েছে। তার মানে নিজের নিরাপত্তার জন্য শেখ মুজিব শুধুমাত্র তার অনুগত রক্ষীবাহিনী এবং সেনাবাহিনী তার তল্পিবাহক নেতৃত্বের ওপর আস্থা রেখে স্বস্তি পাচ্ছেন না তাই বন্ধু রাষ্ট্রের সাহায্যও চেয়ে বসেছেন মৈত্রী চুক্তির আওতায়। দুঃখ হলো, পেশাগত নিজ যোগ্যতায় নয় শেখ মুজিবের বদান্যতায় যারা এক লাফে মেজর থেকে মেজর জেনারেল বনে গেছেন তারা নিজেদের চামড়া পর্যন্ত বিকিয়ে দিয়ে বসে আছেন শেখ সাহেব এবং তার দলের স্বার্থ রক্ষার জন্য। ব্যতিক্রম অবশ্য ছিল; জেনারেল জিয়াউর রহমান ছিলেন তেমন একজন।" [পৃ. ৪৪০]
    এক জুনিয়র সেনা অফিসারের সঙ্গে একটি ঘটনা ঘটেছে এক রাজনৈতিক নেতার অনুচরদের। সেটি একেবারে রাষ্ট্রীয় ব্যাপার হয়ে দাঁড়াল, পুরো সেনাবাহিনীর পক্ষ হলো এবং জাতির জনককে দুঃখ প্রকাশ করতে বলা হলো। শুধু তাই নয়, তার ক্ষমা প্রার্থনা দাবি করা হলো। এই ঘটনার দু'টি দিক আছে। একটি হলো, হয়ত সেনাবাহিনীর এই তরুণ অফিসাররা পাকি মানসিকতায় এতই আক্রান্ত ছিলেন যে কোন রকম সিভিল কর্তৃত্ব মানতে রাজি ছিলেন না এবং তারা সেনাবাহিনীর ম্যানুয়েল বিরোধী কাজ করছিলেন। 
    শুধু তাই নয়, ষড়যন্ত্র করেছিলেন। এই বক্তব্য যদি সঠিক না হয় তা হলে বলতে হবে, ডালিম নিজেকে সেনাবাহিনীর সবচেয়ে জনপ্রিয় অফিসার হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছেন। বোঝাতে চেয়েছেন তিনি ছিলেন সেনাবাহিনীর সম্পদ যাকে রক্ষা করার জন্য সেনাবাহিনী প্রস্তুত ছিল।
    তবে, যে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে এই ভাষ্যে তা হলো ১৯৭৫ যারা ঘটিয়েছিল ১৯৭২ থেকে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছিল বিভিন্ন ইস্যু তৈরি করে একটি আবহ তৈরি করতে চেয়েছেন। আর জে. জিয়া বা এরশাদ এদের সঙ্গেই ছিলেন এবং নিজেদের ক্ষেত্র প্রস্তুত করছিলেন যে কারণে দেখি জে. জিয়া তার সময়ে জে. এরশাদকে সেনাপ্রধান করেছিলেন।
    ডালিমকে অবসর দেয়া হয়। তিনি সদর দফতরে গেলেন। সেখানে "চরম উত্তেজনা, শফিউল্লাহ অফিসে নেই। তিনি নাকি অসুস্থ। জেনারেল জিয়া আমি এসেছি জানতে পেরে ডেকে পাঠালেন।" [পৃ. ৪৪৩] এরপর তাদের কথোপকথন তুলে দিচ্ছি তাতে বোঝা যাবে আমার পূর্বোক্ত অনুমান সঠিক কিনা। (চলবে)

    প্রকাশ : বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ১৯ ভাদ্র ১৪২১
     
    জিয়া-ডালিম ও ১৫ আগস্ট লে. কর্নেল (অব) ডালিমের বয়ান - ১
    মুনতাসীর মামুন
    প্রকাশ : বুধবার, ২০ আগষ্ট ২০১৪, ৫ ভাদ্র ১৪২১
    জিয়া-ডালিম ও ১৫ আগস্ট লে. কর্নেল (অব) ডালিমের বয়ান - ২                   
    মুনতাসীর মামুন
    প্রকাশ : শুক্রবার, ২২ আগষ্ট ২০১৪, ৭ ভাদ্র ১৪২১

    জিয়া-ডালিম ও ১৫ আগস্ট লে. কর্নেল (অব) ডালিমের বয়ান -৩ 
    মুনতাসীর মামুন
    প্রকাশ : শনিবার, ২৩ আগষ্ট ২০১৪, ৮ ভাদ্র ১৪২১

    জিয়া-ডালিম ও ১৫ আগস্ট লে. কর্নেল (অব) ডালিমের বয়ান - ৪ 
    মুনতাসীর মামুন
     প্রকাশ : রবিবার, ২৪ আগষ্ট ২০১৪, ৯ ভাদ্র ১৪২১

    সোমবার, ২৫ আগষ্ট ২০১৪, ১০ ভাদ্র ১৪২১

    জিয়া-ডালিম ও ১৫ আগস্ট লে. কর্নেল (অব) ডালিমের বয়ান - ৫ 
    মুনতাসীর মামুন
    প্রকাশ :  সোমবার, ২৫ আগষ্ট ২০১৪, ১০ ভাদ্র ১৪২১
     
    জিয়া-ডালিম ও ১৫ আগস্ট লে. কর্নেল (অব) ডালিমের বয়ান -  
    মুনতাসীর মামুন
    (২৫ আগস্টের পর)
    প্রকাশ : মঙ্গলবার, ২৬ আগষ্ট ২০১৪, ১১ ভাদ্র ১৪২১
    জিয়া-ডালিম ও ১৫ আগস্ট লে. কর্নেল (অব) ডালিমের বয়ান - 
    মুনতাসীর মামুন
    প্রকাশ : বুধবার, ২৭ আগষ্ট ২০১৪, ১২ ভাদ্র ১৪২১
     
    শুক্রবার, ২৯ আগষ্ট ২০১৪, ১৪ ভাদ্র ১৪২১
    জিয়া-ডালিম ও ১৫ আগস্ট লে. কর্নেল (অব) ডালিমের বয়ান -  
    মুনতাসীর মামুন
    (২৮ আগস্টের পর)    
    প্রকাশ : শুক্রবার, ২৯ আগষ্ট ২০১৪, ১৪ ভাদ্র ১৪২১
    রবিবার, ৩১ আগষ্ট ২০১৪, ১৬ ভাদ্র ১৪২১
    জিয়া-ডালিম ও ১৫ আগস্ট লে. কর্নেল (অব) ডালিমের বয়ান  ৯     
    মুনতাসীর মামুন

    http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=16&dd=2014-08-31&ni=183836
    প্রকাশ : রবিবার, ৩১ আগষ্ট ২০১৪, ১৬ ভাদ্র ১৪২১

    সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ১৭ ভাদ্র ১৪২১
    জিয়া-ডালিম ও ১৫ আগস্ট লে. কর্নেল (অব) ডালিমের বয়ান - 
    মুনতাসীর মামুন
    প্রকাশ : সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ১৭ ভাদ্র ১৪২১

    মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ১৮ ভাদ্র ১৪২১
    জিয়া-ডালিম ও ১৫ আগস্ট লে. কর্নেল (অব) ডালিমের বয়ান -  ১
    মুনতাসীর মামুন

    প্রকাশ : মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ১৮ ভাদ্র ১৪২১

    †hfv‡e †mbvcÖavb n‡jb †Rbv‡ij wRqv

    Zia passively involved - The Daily Star

    1. Mar 15, 2011 - Zia decided to kill Taher as he wanted to appease the army officers ... was passively involved in the assassination of Bangabandhu Sheikh ...
    2. Video:

    http://www.youtube.com/watch?v=dglIcOQtYUk

    The killer duo Rashid and Farook tells Anthony Mascarenhas in an interview why they killed Mujib and the role of Zia and Mustaq and how they featured in their plan. The interview was taken in 1976 in London

    ফিরে দেখা পঁচাত্তর: মুজিব হত্যা, খুনি মেজররা ও আমাদের দ্বিচারিতা

    সোহরাব হাসান: কবি, সাংবাদিক।
    sohrabo3@dhaka.net









    __._,_.___

    Posted by: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>


    ****************************************************
    Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
    Call For Articles:

    http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

    http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

    ****************************************************

    VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

    ****************************************************

    "I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
                   -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





    __,_._,___

    Newer Posts Older Posts Home