Banner Advertiser

Sunday, March 17, 2013

[mukto-mona] পোষ্ট মর্টেম জামাতে ইসলাম : পর্ব ২



পোষ্ট মর্টেম জামাতে ইসলাম : পর্ব ২

২০ শে মার্চ, ২০০৮ রাত ১১:৩৬ |


মুক্তিযুদ্ধের নয়টি মাস সীমাহীন উত্তেজনামূলক বক্তৃতা,বিবৃতি ইত্যাদি প্রচারণার মাধ্যমে গোলাম আযম এবং তার দল জামায়াতে ইসলামী চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছে। এর একটি তালিকা ক্রমধারা অনুযায়ী  সাজালে বোঝা যাবে কতখানি নিচ এবং তৃতীয় শ্রেনীর রাজনীতিক ছিলেন তৎকালীন 
জামায়াতে ইসলামীর নেতারা।  টিক্কা খানের কামানের গোলায় যখন ঢাকা শহর আগুনে জ্বলছিল,তখন গোলাম আযম ৬ এপ্রিল,১৯৭১ টিক্কা খানের সাথে দেখা করে পাকিস্তানি সৈন্যদের পদেেপর প্রতি নিঃশর্ত সমর্থন জ্ঞাপন করেন।(দৈনিক সংগ্রাম,৭এপ্রিল,১৯৭১)।

৭ এপ্রিল গোলাম আযম সংবাদপত্রে এক বিবৃতিতে বলেন,সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারীদের(মুক্তিবাহিনীদের-লেখক)দেখামাত্র খতম করে দেওয়া হবে। (দৈনিক সংগ্রাম,৮এপ্রিল,১৯৭১)। ১০ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে শান্তি কমিটি গঠন করা হয়। গোলাম আযম এই শান্তি কমিটির শীর্ষস্থানীয় সদস্য হিসেবে যোগদান করেন।।(দৈনিক সংগ্রাম,১১এপ্রিল,১৯৭১)। ১২ এপ্রিল ছাত্র সংঘ নেতা মতিউর রহমান নিজামী,মোহাম্মদ ইউনুস, নুরুল ইসলাম,শাহ জমাল চৌধুরী এক বিবৃতিতে বলেন,স্বাধীন বাংলা গোলামে পরিনত করবে। ১২ এপ্রিল ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে শান্তি কমিটির মিছিলে গোলাম আযম নেতৃত্ব দেন এবং মিছিল শেষে গোলাম আযম পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।। (দৈনিক সংগ্রাম,১৩ এপ্রিল,১৯৭১)।

১৪ এপ্রিল দৈনিক সংগ্রাম বলে যে, দিনাজপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের সকল ঘাঁটি নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে এবং সকল অনুপ্রবেশকারী মুক্তিবাহিনীকে নির্মূল করা হয়েছে। ১৫ এপ্রিল জামায়াতে ইসলামের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম পাকিস্তানি সৈন্যদের গ্রামাঞ্চালে গিয়ে দুষ্কৃতকারীদের(মুক্তিবাহিনীকে) আক্রমন করার পরামর্শ দেয়।২২ এপ্রিল জামালপুরে ইসলামী ছাত্র সংঘের নেতা কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে জামালপুরে প্রথম আলবদর বাহিনী গঠিত হয়। মে মাসে জামায়াত নেতা ইউসুফের নেতৃত্বে খুলনায় রাজাকার বাহিনী প্রথম কাজ শুরু করে। ২২ এপ্রিল দৈনিক সংগ্রাম মন্তব্য করে যে,মাননীয় প্রেসিডেন্ট ইয়হিয়া খান ও টিক্কা খানের সময় উপযোগী পদেেপর জন্য পাকিস্তান রা পেয়েছে। ২৩ এপ্রিল দৈনিক সংগ্রাম মুক্তিবাহিনী ধরার জন্য বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করার পরামর্শ দেয়। গোলাম আযম পরিচালিত দৈনিক সংগ্রাম ৩০ এপ্রিল সংখ্যায় বলে যে, যারা পূর্ব পাকিস্তানকে বাংলাদেশ করেছিল তাদের পাকিস্তানে জায়গা হবে না। পয়লা মে দৈনিক সংগ্রাম বলে,দেশের শান্তির জন্য দুষ্কৃতকারীর (মুক্তিবাহিনীর) মূল উৎস উৎখাত হওয়া প্রয়োজন। পত্রিকাটি আরো মন্তব্য করেন,দুষ্কৃতকারীদের (মুক্তিবাহিনীকে)  নিমূল করা একান্ত প্রয়োজন। এছাড়া,পূর্ব পাকিস্তানে 'বাংলাদেশ সরকার' নামক কোন কিছুর অস্তিত্বও নেই বলে দৈনিকটি উল্লেখ করে। ৪ মে জামায়াতের এই দৈনিক পত্রিকাটি মুক্তিবাহিনীকে ধরিয়ে দেওয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করে। পত্রিকাটি বলে,এটা হবে 'ঈমানি দায়িত্ব'। ৬ মে দৈনিক সংগ্রাম বলে, 'বাংলাদেশ'ওয়ালারা ভূত তা অকল্যাণ বয়ে এনেছে। ২৫ মার্চ রাতের গনহত্যা ও ধ্বংসলীলাকে সমর্থন করে নির্লজ্জের মতো জামায়োতে ইসলামীর মুখপত্রটি ৮ মে তারিখের সংখ্যায় বলে,শেখ মুজিব ২৬ মার্চ সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলা কায়েমের পরিকল্পনা এঁটে ছিলেন। সেনাবাহিনী তা ২৫ মার্চ হঠাৎ আক্রমন চালিয়ে এই পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়ে আমাদের পাকিস্তানকে বাঁচিয়েছে।  ২৪ মে জামায়োতে ইসলামীর মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মসমপর্ণের আহ্বান জানায়। পত্রিকাটি বলে,'গেরিলাগিরির' নামে মুক্তিবাহিনীর তৎপরতা পািকস্তানি সেনাবাহিনী তছনছ করে দেবে। ২৭ মে দৈনিক সংগ্রাম মুক্তিবাহিনী ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। এদিন পত্রিকাটি মুক্তিবাহিনী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বিশেষ ট্রাইবুনালে বিচার করার জন্য পাকিস্তানি সেনাবাহিনির কাছে আবেদন জানায়। ২৮ মে জামায়োতে ইসলামীর পত্রিকাটি মুক্তিবাহিনী নির্মূলের জন্য অস্ত্রশস্ত্র দাবি করে। তারা একই সাথে বেসমরিক পোশাকধারী একটি বাহিনী গঠনেরও পরামর্শ দেয়। ১৩ জুন জামায়োতে ইসলামী বলে,'গেরিলাগিরির' নামে যেসব দুষ্কৃতকারী দেশের শান্তি ব্যাহত করছে,সামরিক কর্তৃপরে অনুমতিক্রমে প্রয়োজনীয় হাতিয়ার নিয়ে গেরিলা পদ্ধতিতেই দুষ্কৃতকারীদের (মুক্তিবাহিনীকে) নির্মূল করার জন্য গ্রাম প্রতিরা বাহিনী গঠন করতে হবে।(দৈনিক সংগ্রাম,১৩ জুন,১৯৭১)।

১৫ জুন দৈনিক সংগ্রাম মুক্তিবাহিনিকে খতম করার জন্য শুধুমাত্র সেনাবাহিনীর দিকে তাকিয়ে না থেকে পাকিস্তানপন্থীদের পথ বেছে নিতে বলা হয়।
১৭ জুন গোলাম আযম বলেন,দুষ্কৃতকারীরা (মুক্তিযোদ্ধারা) এখনও ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত রয়েছে। তিনি বলেন,এদের যদি পকিড়াও করা হয়,তবেই পরিস্থিতি দমন করা যাবে। (দৈনিক সংগ্রাম,১৭ জুন,১৯৭১)। 

২০ জুন গোলাম আযম লাহোরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন,যারা প্রকাশ্যে পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতার আন্দোলন শুরু করেছিল,তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী সকল দুষ্কৃতকারী(মুক্তিযোদ্ধ) উৎখ্যাত করেছে। তিনি মুক্তিবাহিনী মোকাবেলার জন্য সরকারের কাছে অস্ত্র সরবরাহের দাবি জানান। (দৈনিক সংগ্রাম,২১ জুন,১৯৭১)। ২২ শে জুন গোলাম আযম এক সাাৎকারে বলেন,তারা কখোনই পাকিস্তান ত্যাগ করতে পারবেন না। এই জন্য কোরবানি দেওয়ার জন্যেও তাঁর কর্মীরা প্রস্তুুত রয়েছে। একই দিন গোলাম আযম এক কর্মিসভায় বলেন,বেআইনী ঘোষিত আওয়ামী লীগ কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানে সৃষ্ট সামপ্রতিক গোলযোগ ১৮৫৭ সালের বাংলা বিদ্রোহের চেয়েও দশগুন বেশি শক্তিশালী ছিল। তিনি ২৩ জুন বলেন,পূর্ব পাকিস্তানি ভাইয়েরা সর্বদাই পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে বাস করবে।(দৈনিক সংগ্রাম,২২ জুন ও ২৩ জুন,১৯৭১)। ২২ জুন গোলাম আযম এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য যেসব দল আন্দোলন করছে তাদের নিষিদ্ধ ঘোষনার আহ্বান জানান।(দৈনিক সংগ্রাম,২৩ জুন ১৯৭১)। ৩০ জুন গোলাম আযম এবং তার রাজনৈতিক পিতা মাওলানা মওদুদী মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনকারী সংসদ সদস্যদের পদ বাতিল ঘোষনা করায় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াকে অভিনন্দন জানান। (দৈনিক সংগ্রাম,৩০ জুন,১৯৭১)।

একই দিন জামায়াতে ইসলামীর মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করাকে রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা বলে অভিহিত করে। ৪ জুলাই দৈনিক সংগ্রাম এক উপসম্পাদকীয়তে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে 'ইহুদী ষড়যন্ত্র' বলে অভিহিত করে। ৪ জুলাই ইসলামী ছাত্রসংঘের পরিচালনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে ুদ্র অস্ত্রের সাহায্যে রাজাকারদের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী লড়াইয়ের প্রশিন শুরু করা হয়। (দৈনিক সংগ্রাম, ৪ জুলাই, ১৯৭১)। ৮ জুলাই জামায়াতে ইসলামী মুক্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে জনগণকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানায়। একই দিন দৈনিক সংগ্রাম মন্তব্য করে,পাকিস্তান টিকে থাকার জন্যেই এসেছে।

৯ জুলাই থেকে জামায়াতে ইসলামী,তার নেতারা এবং দৈনিক সংগ্রাম মুক্তিবাহিনীকে দুষ্কৃতকারীর সাথে 'ডাকাত' নামে অভিহিত করতে শুরু করে।(দৈনিক সংগ্রাম, ৯ জুলাই, ১৯৭১)।

১৬ জুলাই দৈনিক সংগ্রাম এবং জামায়াতের নেতারা ভাষা আন্দোলনের স্মরণে নির্মিত ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি পকিস্তানি সেনাবাহিনী ভেঙ্গে ফেলায় অভিনন্দন জানায়।  একই দিন দৈনিক সংগ্রাম বলে,য়ারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছে পাকিস্তানপন্থীরা তাদের কোনোদিনই মা করবে না।

১৭ জুলাই দৈনিক সংগ্রাম মুক্তিবাহিনীর সদস্যদের দেশদ্রোহী বলে আখ্যায়িত করে। জুলাই মাসে বরিশালে মুসলিম লীগের সভায় ব্যারিষ্টার আখতারউদ্দিন আহমদ,মেজর আফসারউদ্দিন,এডভোকেট আব্দুর রহমান বিশ্বাস প্রমুখ মুক্তিযোদ্ধাদের দুষ্কৃতকারী ও বিদেশী চর আখ্যায়িত করে এদের উৎখাত করার আহ্বান জানান। (দৈনিক সংগ্রাম, ১৮ জুলাই, ১৯৭১)। মুক্তিযুদ্ধের সময় বৃটিশ টেলিভিশনে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞের সচিত্র প্রতিবেদন দেখানো হলে দৈনিক সংগ্রাম ১৯ জুলাই সাফাই গেয়ে লেখে, এগুলো ঘূর্ণিঝড়ের ছবি। ২ আগষ্ট গোলাম আযম ঢাকার মাদ্রাসার ছাত্রদের মিছিলে বলেন, মুক্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে এ যুদ্ধ শুধু অস্ত্রের নয়,এটা আদর্শিক যুদ্ধ। এ যুদ্ধে জিততেই হবে। (দৈনিক সংগ্রাম, ৩ আগষ্ট, ১৯৭১)।  একই দিন ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতা মতিউর রহমান নিজামী বলেন, মুক্তিবাহিনী পাঁচগুণ শক্তিশালী হওয়া সত্ত্বেও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে পরাজিত হবে। একই সভাই মতিউর রহমান নিজামী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে তাদের 'ভাই' আখ্যায়িত করায় ৩ আগষ্ট দৈনিক সংগ্রাম মন্তব্য করে,জনাব নিজামী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে আমাদের 'ভাই' বলে  যথার্থ করেছেন,সেনাবাহিনীর সাথে একাত্ম হয়ে শত্রুর (মুক্তিবাহিনীর) মোকাবেলা করতে হবে। ৮ আগষ্ট দৈনিক সংগ্রামে গোলাম আযম এক উপসম্পাদকীয়তে লেখেন,১৯৬৫ সালের যুদ্ধে টিক্কা খানের বীরত্বের কথা শুনে তাঁকে এক নজর দেখার ইচ্ছা প্রবল হচ্ছিল। তাঁর ছবি আমার মানসপটে বিশেষ মর্যাদার সাথে আকা রয়েছে। ১২ আগষ্ট গোলাম আযম বাংলাদেশ আন্দোলনের সমর্থকদের দুশমন আখ্যা দিয়ে তন্নতন্ন করে তালাশ করে খুজে বের করার আহ্বান জানান। মতিউর রহমান নিজামী ও মোহাম্মদ ইউনুসও অনুরূপ  বিবৃতি দেন।(দৈনিক সংগ্রাম, ১২ আগষ্ট, ১৯৭১)। 

১২ আগষ্ট মুক্তিযুদ্ধবিরোধী পাকিস্তানি সামরিক সরকারের পুতুল পূর্ব পাকিস্তানি ডাঃ মালেকের মন্ত্রিসভায় জামায়াতে নেতারা যোগদান করেন।           ১৩ আগষ্ট দৈনিক সংগ্রামও মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তিদানের আহ্বান জানায়। 

পাকিস্তানের শেষ আজাদী দিবস ১৪ আগষ্ট সংখ্যায় দৈনিক সংগ্রাম স্বীকার করে,অত্যাচার-অনাচারের কারণে মুক্তিযুদ্ধোবিরোধী তাদের 'শান্তি কমিটি' অশান্তি কমিটিতে পরিণত হয়েছে। ১৪ আগষ্ট পাকিস্তানের শেষ আজাদী দিবসে কার্জন হলে আয়োজিত এক সেমিনারে পিডিপি নেতা নূরুল আমীন বলেন,আজ আজাদী দিবস আনন্দের দিন,কিন্তু এই আনন্দের দিনেও আমাদের মন ভারাক্রান্ত। কিন্তু গোলাম আযম একই অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে বলেন,এবার প্রাণচাঞ্চল্যের সাথে আজাদী দিবস উদ্‌যাপিত হয়েছে। পাকিস্তানের ভিতরে হাজার হাজার দুশমন জন্ম নিয়েছে। বাইরের চেয়ে ভিতরের দুশমন আরো বেশি বিপজ্জনক । ঘরে ঘরে এইসব দুশমন খুঁজে বের করতে হবে। (দৈনিক সংগ্রাম, ১৬ আগষ্ট, ১৯৭১)।  

১৯ আগষ্ট দৈনিক সংগ্রামের সাথে এক সাক্ষাতকারে গোলাম আযম বলেন,মুক্তিযুদ্ধের পাল্টা অভিযান নিয়ে আমাদের আসাম দখল করে নেওয়া উচিত।

২০ আগষ্ট দৈনিক সংগ্রামে গোলাম আযম বেনামে এক উপসম্পাদীয়তে আজাদী দিবস উপলক্ষে ইয়াহিয়া খান ও টিক্কা খানের তোরণ নির্মাণকে অভিনন্দিত করেন।

২২ আগষ্ট মতিউর রহমান নিজামী এক অনুষ্ঠানে বলেন, পাকিস্তান যারা চায় না,তারা ইসলাম চায় না। (দৈনিক সংগ্রাম, ২৩ আগষ্ট, ১৯৭১)।

২৩ আগষ্ট দৈনিক সংগ্রাম 'রাজাকার অর্ডিন্যান্স' জারি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে।

২৬ আগষ্ট গোলাম আযম পেশোয়ারে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানকে দুষ্কৃতকারীদের (মুক্তিবাহিনীর)হাত থেকে রা করেছে এবং এই দুষ্কৃতকারীদের ধ্বংস করার জন্য সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করতে হবে। (দৈনিক সংগ্রাম, ২৭ আগষ্ট, ১৯৭১)।    জামায়াতে নেতা চৌধুরী রহমত এলাহী একই দিন সামরিক আইন তুলে নেয়ার বিরোধিতা করে বিবৃতি দেন।                                                 বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনের উদ্দেশ্যে একটি বিমান নিয়ে পালিয়ে আসতে গিয়ে শহীদ হন। জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম মতিউর রহমানের নিন্দা করে সম্পাদকীয় লেখে। আমাদের এই  বিরশ্রেষ্ঠকে দৈনিক সংগ্রাম 'দুষ্কৃতকারী' বলে আখ্যায়িত করে এবং পাকিস্তানি পাইলট মিনহাজ রশিদ যে মতিউর রহমানকে হত্যা করে দৈনিক সংগ্রাম সেই পাকিস্তানি পাইলটের জন্য আহাজারি করে লেখে,মিনহাজ রশিদের বীরত্ব ও আত্মত্যাগের কাহিনী শুনে গর্বে বুক ভরে ওঠে। (দৈনিক সংগ্রাম, ৩০ আগষ্ট, ১৯৭১)।

পয়লা সেপ্টেম্বর দৈনিক সংগ্রাম আবার মন্তব্য করে মুক্তিযোদ্ধা পাইলট (বীরশ্রেষ্ঠ) মতিউর রহমান বিশ্বাসঘাতক এবং পাকিস্তানি পাইলট মিনহাজুর রশীদ 'শহীদ'। পয়লা সেপ্টেম্বর গোলাম আযম করাচিতে বলেন যে,বিচ্ছিন্নতাবাদীদের (স্বাধীনতাকামীদের)খতম করার উদ্দেশ্যে রাজাকাররা ভাল কাজই করেছে। (দৈনিক সংগ্রাম, ২ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১)।

২ সেপ্টেম্বর জামায়াতে ইসলামী এবং দৈনিক সংগ্রাম বাঙালি নিধনকারী রক্তলোলুপ টিক্কা খানের বিদায়ে মন্তব্য করেন যে,তিনি কথা কম বলতেন এবং কাজ বেশি করতেন। তিনি বীরত্বের  সাথে ব্যবস্থা গ্রহন না করলে পাকিস্তান এতদিনও টিকে থাকতো না। এদেশের মানুষ কোনদিন টিক্কা খানকে ভুলবে না এবং তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে। ৪ সেপ্টেম্বর জামায়াতের অঙ্গ সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতা মতিউর রহমান নিজামী বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানকে ভারতের এজেন্ট ও দুষ্কৃতকারী বলে বিবৃতি দেন। একই দিন দৈনিক সংগ্রাম মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থন করায় সংবাদপত্রগুলোকে বিশ্বাসঘাতক বলে অভিহিত করে।

৬ সেপ্টেম্বর গোলাম আযম মুক্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দেন। (দৈনিক সংগ্রাম, ৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১)।

একই দিন দৈনিক সংগ্রাম মন্তব্য করে,পাকিস্তানের সেনাবাহিনী রাজাকারদের কৃতিত্বে আনন্দিত ও গর্বিত।

৬ সেপ্টেম্বর মতিউর রহমান নিজামী বলেন ছাত্রসংঘ কর্মীরা রক্ত দিয়ে পাকিস্তানের প্রতি ইঞ্চি জমি রা করবে। (দৈনিক সংগ্রাম, ৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১)।

১৩ সেপ্টেম্বর গোলাম আযম মুক্তিবাহিনীকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করার আহ্বান জানান। (দৈনিক সংগ্রাম, ১৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১)।

১৪ সেপ্টেম্বর গোলাম আযম শুধু মুক্তিযোদ্ধাই নয়,তাদের যে কোনো ব্যাক্তিকেই তালাশ করে বের করে শায়েস্তা করার আহ্বান জানান। (দৈনিক সংগ্রাম, ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১)।

একই দিন দৈনিক সংগ্রাম লেখে,আলবদর একটি নাম। যেখানেই তথাকথিত মুক্তিবাহিনী সেখানেই আলবদর। মুক্তিবাহিনীর কাছে আলবদর সাক্ষাৎ আজরাইল। 

১৪ সেপ্টেম্বর যশোরে মতিউর রহমান নিজামী সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের খতম করার আহ্বান জানান। (দৈনিক সংগ্রাম, ১৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১)।

১৬ সেপ্টেম্বর মতিউর রহমান নিজামী বলেন,দুনিয়ার কোন শক্তিই পাকিস্তানকে ধ্বংস করতে পারবে না।

১৭ সেপ্টেম্বর গোলাম আযম মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল এডুকেশন কলেজ ট্রেনিং গ্রহনরত রাজাকার শিবির পরিদর্শন করেন এবং রাজাকারদের মনোবল ফিরিয়ে আনার জন্য বত্তৃতা দেন।

১৮ সেপ্টেম্বর জামায়াতে নেতা আব্বাস আলী খান মুক্তিযুদ্ধবিরোধী পাকিস্তানপন্থী পূর্ব পাকিস্তানের মালেক মন্ত্রিসভায় যোগদান করেন।

১৮ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদপুরে রাজাকারদের প্রসিণ ক্যাম্পে গোলাম আযম এক ভাষণে বলেন,বাইরের চেয়ে ঘরের শত্রু বেশি তিকর। এদের তম করতে হবে। (দৈনিক সংগ্রাম, ১৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১)

২১ সেপ্টেম্বর জামায়াতে নেতা আব্বাস আলী খান বলেন,পাকিস্তান ধ্বংসের জন্য একদল ছাত্র দায়ী। (দৈনিক সংগ্রাম, ২২ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১)।

২৫ সেপ্টেম্বর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী তাঁবেদার মন্ত্রীদের জামায়াতে ইসলামী এক সংবর্ধনা দেয়। এখানে গোলাম আযম বলেন,পাকিস্তানই যদি না থাকে,তাহলে জামায়াত কর্মীদের বেঁচে থেকে লাভ নেই । (দৈনিক সংগ্রাম, ২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১)।

২৮ সেপ্টেম্বর দৈনিক সংগ্রাম 'শেখ সাহেবের খাদ্য তালিকা' শীর্ষক এক নিবন্ধে বলে,রাষ্ট্রদ্রোহী শেখ মুজিব জেলের ভেতরে ভাল খাওয়া-দাওয়া করছেন এটা দুঃখজনক।

৭ অক্টোবর দৈনিক সংগ্রাম মুক্তিবাহিনী মোকাবেলায় রাজাকারদের জন্য ভারি অস্ত্রশস্ত্র দাবি করে বলে,অন্যথায় দুষ্কৃতকারী (মুক্তিবাহিনী) নির্মূল করা যাবে না। একই দিন ইত্তেহাদুল ওলামার বৈঠকে মাদ্রাসার ছাত্র ও আলেমদের সামরিক টেনিংদানের আহ্বান জানানো হয়। ১১ অক্টোবর মুক্তিবাহিনীর গুলিতে ৩জন রাজাকার নিহত হলে দৈনিক সংগ্রাম একে 'গৌরবের মৃত্যু' বলে অভিহিত করে। এই দিন জামায়াত নেতারা পুনরায় রাজাকার-আলবদরদের জন্য ভারি অস্ত্রশস্ত্র দাবি করে বলে,অন্যথায় মুক্তিবাহিনী দমন করা যাবে না। ১৪ অক্টোবর পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক আবুল খালেক এক বিবৃতিতে বলেন,রাজাকাররা সামরিক আইন কর্তৃপরে সরাসরি নিয়ন্ত্রণাধীনে থেকে কাজ করছে।

১৮ অক্টোবর দৈনিক সংগ্রাম বলে,যারা পাকিস্তানের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না,তারা যেন এদেশ ছেড়ে চলে যায়।

২০ অক্টোবর দৈনিক সংগ্রাম 'তিক্ত হলেও সত্য'শিরোনামে বলে,জাতি কর্তৃক গোলম আযমের গলাধাক্কা খাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

২৯ অক্টোবর দৈনিক সংগ্রাম অফিস-আদালত থেকে মুক্তিযুদ্ধ সমর্থকদের বের করে দেয়ার আহ্বান জানান।

৪ নভেম্বর দৈনিক সংগ্রাম মন্তব্য করে,দুষ্কৃতকারীদের (মুক্তিবাহিনীর) ক্রমবর্ধমান দুঃসাহসিক তৎপরতা উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। তাদের এই দুর্বৃত্তপনার অবসান করা হবে। ইতিমধ্যেই সারাদেশে রাজাকার,মুজাহিদ ও বদর বাহিনী এই সব দুষ্কৃতকারী (মুক্তিবাহিনী)-কে একের পর এক খতম করে চলেছে।

৭ নভেম্বর 'বদর দিবস' শিরোনাম নিবন্ধে উল্লেখ করে,মক্তিযোদ্ধাদের নির্মূলে হয় গাজী,নয় শহীদ হওয়ার শপথ নিতে হবে।

৭ নভেম্বর জামায়াত নেতা আবুল খালেক বদর দিবসের এক জনসভায় বলেন,বাংলাদেশ আন্দোলনকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিতে হবে।

এদিন ইসলামী ছাত্রসংঘ ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধোবিরোধী এক মিছিল বের করে এবং শ্লোগান তোলে,'আমাদের রক্তে পাকিস্তান টিকবে।' (দৈনিক সংগ্রাম,৮ 

নভেম্বর, ১৯৭১) জামায়াতে ইসলামী দলটি যে ইসলামের নামে বরাবরই মিথ্যা এবং জালিয়াতির আশ্রয় নেয় তার প্রমান ৮ নভেম্বরের দৈনিক সংগ্রাম। এদিন সংগ্রাম বলে,মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকল খরচ ইসরাইল বহন করছে। মুক্তিবাহিনীকে ট্রেনিংও দিচ্ছে দিচ্ছে ইসরাইলের সেনাবাহিনী। ইহুদীরা মুক্তিবাহিনীকে অস্ত্রশস্ত্র এবং টাকা-পয়সাও দিচ্ছে। একই দিন দৈনিক সংগ্রাম বলে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পরই রাজাকারদের স্থান। রাজাকার বাহিনীর দুই শাখা আলবদর ও আলশামস-এর ওপরই পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। ১০ নভেম্বর জামায়াতে নেতা আব্বাস আলী খান এক বিবৃতিতে বলেন, পাকিস্তান টিকে থাকার জন্যই সৃষ্টি হয়েছে। (দৈনিক সংগ্রাম, ১০ নভেম্বর, ১৯৭১) ১২ নভেম্বরের দৈনিক সংগ্রাম প্রকাশ্যে বুদ্ধিজীবি হত্যার পরামর্শ দেয়। এদিন তারা বলে,বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তর থেকে যারা মুক্তিযুদ্ধোকে সমর্থন করছে তাদের দ্রুত খুঁজে বের করে উৎখাত করতে হবে। এটা যতো বিলম্ব হবে ততোই পাকিস্তানের তি হবে। ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতা মতিউর রহমান নিজামী ১৪ নভেম্বর দৈনিক সংগ্রামে এক নিবন্ধে বলেন,পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় বদর বাহিনী গঠিত হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীর পাশে দাঁড়িয়ে আলবদর বাহিনী মুক্তিবাহিনীকে পর্যুদস্ত করবে। ১৬ নভেম্বরের দৈনিক সংগ্রাম মক্তিবাহিনীর তৎপরতা যাতে বিদেশে যেতে না পারে তার জন্য বিদেশী সাংবাদিকদের ওপর কড়া নজর রাখার পরামর্শ দেয়। একই দিন ছাত্রসংঘ নেতা ও আলবদর বাহিনী প্রধান মতিউর রহমান নিজামী এক নিবন্ধে বলেন,পাকিস্তান হচ্ছে আল্লাহর ঘর। 

১৯ নভেম্বরের দৈনিক সংগ্রাম গোলাম আযমকে পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বানানোর আহ্বান জানায়। ২৪ নভেম্বর ইসলামী ছাত্রসংঘ নেতারা এক বিবৃতিতে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।  একই দিন গোলাম আজমও এক বিবৃতি দেন। তিনি পাকিস্তানকে ভারত আক্রমণের আহ্বান জানান এবং রাজাকার-আলবদরদের উন্নতমানের স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রে সজ্জিত করার আহ্বান জানান। (দৈনিক সংগ্রাম, ২৪ নভেম্বর, ১৯৭১) 

২৫ নভেম্বর জামায়াত নেতা গোলাম আযম ও আব্বাস আলী খান পাকিস্তান রর জন্য দেহের শেষ রক্তবিন্দু দেয়ার জন্য জামায়াত কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।১২

জামায়াতে ইসলামী তাদের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম এবং গোলাম আযম, আব্বাস আলী খান,মতিউর রহমান নিজামী প্রমুখ ১৯৭১ সালের মুক্তিযদ্ধের নয়টি মাস এভাবে ক্ষিপ্ত কুকুরের মতো বাংলা, বাঙালি এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরুদ্ধে ক্রমাগত হুমকি,মিথ্যা প্রচারণা দ্বারা রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কলুষিত করে তুলেছিল। ২৫ মার্চের পর থেকেই সারাদেশে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে মিলে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করে। মা-বোনদের ধরে নিয়ে তাদের প্রথমে ধর্ষণ এবং পরে হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধ সমর্থকদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয় এবং সর্বশেষে ১৪ ডিসেম্বর বিজয়ের মাত্র একদিন আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। নয় মাসের দৈনিক সংগ্রামের বিভিন্ন পাতা থেকে সংপ্তি করে ছোট যে ডায়রি তুলে দেয়া হয়েছে,তাতেই বোঝা সম্ভব সেদিন কী ভয়াবহ পরিস্থিতি তারা সৃষ্টি করেছিল। 'মুক্তিযোদ্ধাদের খতম কর','বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করে মুক্তিযোদ্ধা খোঁজ কর','মুক্তিযুদ্ধ সমর্থকদের পাকিস্তানে জায়গা হবে না','মুক্তিবাহিনীকে ধরিয়ে দাও','মুক্তিবাহিনীর সদস্যদের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল কর', 'মুক্তিযোদ্ধা নির্মূলের জন্য আরো উন্নত অস্ত্র দাও','মুক্তিবাহিনী খতম করার জন্য সেনাবাহিনীর দিকে তাকিয়ে থাকলেই চলবে না','স্বাধীনতার সমর্থক দলগুলোকে নিষদ্ধ করতে হবে',মুক্তিযুদ্ধ রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা','স্বাধীন বাংলা ইহুদী ষড়যন্ত্র','পাকিস্তান টিকে থাকার জন্যই এসেছে',পাকিস্তানের জন্য শেষ রক্তবিন্দুদানের আহ্বান','মক্তিবাহিনীরা ডাকাত','মুক্তিযোদধাদের পাকিস্তানপন্থীরা কোনদিনই মা করবে না','বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান দুষ্কৃতকারী','আলবদর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সাক্ষাৎ আজরাইল','পাকিস্তান যদি না থাকে তাহলে জামায়াত কর্মিদের বেঁচে থেকে লাভ নেই', 'রাজাকারদের গৌরবের মৃত্যু','পাকিস্তানের অস্তিতে যার বিশ্বাস করেনা',তাদের এদেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে', 'অফিস-আদালত থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের বের কর','বাংলাদেশ অন্দোলনকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিতে হবে'ইত্যাদি বাক্যগুলো প্রতিদিন গোলাম আযম,তাঁর শিষ্যরা,তার মুখপত্র বিরামহীনভাবে প্রচার করেছে। যে কোন সুস্থ মানুষ লাইব্রেরিতে গিয়ে দৈনিক সংগ্রামের পাতা খুললেই এই দলিল পড়ে শিউরে উঠবে।

আজ যেসব ভন্ড,প্রতারক,লম্পট রাজনীতিবিদরা গোলাম আযম ও জামায়াতীদের পক্ষে সাফাই গাচ্ছেন তাদের জন্য করুনা হয়। তারা অমানুষ এবং খুনীর সহযোগী-খুনী। গোলাম আযমের নির্দেশে এদেশে রাজাকার-আলবদররা যে লাখ লাখ মুক্তিকামী মানুষকে হত্যা করেছে,তার দায়ভাগ নিতে হবে তাদেরও।

বিএনপি সরকারের তিন লম্পট(ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা,জমিরুদ্দিন সরকার ও রফিকুল ইসলাম মিয়া) যে ভুমিকা নিয়েছিল এদের প্রতিষ্ঠিত করতে,তাকে শুধু নির্লজ্জ বলা যায় না,তাঁরা বাংলা মায়ের কুসন্তান এবং কলঙ্ক। এরা গোলাম আযমের চেয়েও পাপী এবং নরাধম যারা আজ গোলাম আযমকে মাফ করে দিতে চায়,তারা হল পিশাচের বন্ধু। গোলাম আযম কি আজও মাফ চেয়েছে,নাকি ভুল স্বীকার করেছে,যে গায়ে পড়ে গিয়ে মাফ করে দিতে হবে আজ গোলাম আযমদের নির্মূলের শ্লোগান এবং দাবি উঠেছে,কারন তারা মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মূল করতে চেয়েছিল। তারা বলেছিল,পাকিস্তান না থাকলে তাদের বেঁচে থেকে লাভ নেই।

মুক্তিযোদ্ধাদের ঘরে ঘরে খুজে বের করার জন্য তারা নির্দেশ দিয়েছিল,তাই তাদেরও আজকে ঘরে ঘরে খুঁজে বের করতে হবে। এবার আর আপোসের কোনো প্রশ্নই নেই।

কারণ স্বাধীনতা যুদ্ধের পরও গোলাম আযম বাংলাদেশ ধ্বংসের এবং অস্বীকারের তৎপরতা অব্যাহত রেখেছিলেন। সেই প্রমান এবং সাক্ষ্য তিনি নিজেই রেখেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৭২ সালে পাকিস্তানে'পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার সপ্তাহ'নামে যে দিবস পালন করা হয় তার আহ্বায়ক হয়েছিলেন এই গোলাম আযম।  একই বছর ডিসেম্বরে গোলাম আযম লণ্ডনে যান এবং সেখানে 'পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি'নামে এক বাংলাদেশবিরোধী স্থায়ী ষড়যন্ত্র শুরু করেন। দীর্ঘ আট বছর এই কমিটির মাধ্যমে গোলাম আযম লণ্ডনে ষড়যন্ত্রের নেতৃত্ব দেন। (মুহাম্মদ কামরুজ্জামান,গোলাম আযমের সংগ্রামী জীবন,ঢাকা,১৯৮৯ পৃষ্ঠা৭০ মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, পূর্বোক্ত,পৃষ্ঠা ৮২।)

গোলাম আযমের নির্দেশে লিখিত তাঁর তথাকথিত সংগ্রামী জীবনীর লেখক আলবদর মুহাম্মদ কামরুজ্জামান জানাচ্ছেন,১৯৭৩ সাল থেকে বেশ কয়েকবার গোলাম আযম সৌদি আরব যান এবং সৌদি বাদশাহ ফয়সাল বিন আবদুল আজিজের সাথে দেখা করে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দেয়ার আহ্বান জানান।

আলবদর কামরুজ্জামান নিজেই লিখেছেন,বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ জনগণের ওপর ধর্মনিরপেতার নামে ধর্মহীনতা চাপিয়ে দেয়ার কোন ষড়যন্ত্র যাতে সফল হতে না পারে,সে বিষয়ে গোলাম আযম সৌদি বাদশাহর প্রভাব কাজে লাগানোর অনুরোধ জানান। (দৈনিক বাংলা, ১০ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২।)

আলবদর নেতা গোলাম আযম নিজেও জানাচ্ছেন,'হজ-পরবর্তী ৬ বছর আমি প্রধানত লণ্ডনে কাটিয়েছি এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে দুনিয়ার বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। 

বাংলাদেশের শাসনতন্ত্রে ধর্মনিরপেক্ষতাকে বিপন্ন মনে করাই ছিল স্বাভাবিক। (দৈনিক বাংলা, ১৮ এপ্রিল ১৯৭৩। )

এই স্বীকারোক্তি শুনেছি আমরা গোলাম আযমের নিজের জবানীতেই। এর চেয়ে বড় প্রমান আর দলিল কি প্রয়োজন আছে। গোলাম আযমরা এই পর্যন্ত যতো খুন,হত্যা,লুট,ধর্ষণ ইত্যাদি করেছে তার  সবটাই তারা করেছে ধর্মের নামে, ইসলামের নামে। ইসলামকে এভাবে তারা কীভাবে বারবার তি করেছে,তার একটা বিবরণ পূর্বের পর্ব-1 এ আলোচনা করা হয়েছে। পাকিস্তানের তৎকালীন হাক্কানী আলেমরা জামায়াত ইসলামী,মওদুদী, গোলাম আযমদের সম্বন্ধে তাই বারবার সতর্ক করে দিয়েছিলেন। আলেমরা জামায়াতীদের কাফের বলেও ফতোয়া দিয়েছিলো।  জামায়াতীরা হল ধর্মোন্মাদ। ধর্মের মূল প্রেরণার সাথে এদের কোন সম্পর্ক নেই। জামায়াতীরা ইসলামের মূল ভিত্তি নামাজ নিয়ে আন্তরিক নয়,দেশের অনেক জামায়াতীকে দেখা যায় তারা প্রকৃতপক্ষে নামাজই পড়তে জানে না। তারা ইসলাম কায়েম করবে কিভাবে! মাওলানা সাঈদী তার জনসভা এখন ভিডিও ব্যবসায় পর্যন্ত নিয়ে গেছেন,ইসলামের তি করার আর থাকলো কি!

বহুল কথিত রাজাকার মাফ পাওয়ার আওতায়ও গোলাম আযম পড়ে নি। স্বাধীনতার পরপর জেলখানাগুলো রাজাকারে ভরে গিয়েছিল। সেই সময় দেশে এতো ম্যাজিষ্ট্রেট বা বিচারকও ছিল না যে দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি করা সম্ভব ছিল। উপরন্তু মাওলানা ভাসানী ও জাসদ দালাল আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলে তৎকালীন শেখ মুজিব সরকারের প্রতি প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। হলিডে পত্রিকায় তৎকালীন ভাসানী ন্যাপ  নেতা এনায়েতুল্লাহ খান তো প্রকাশ্যে দালালদের হালাল করার নির্লজ্জ প্রচারণা চালাতেই ছিলেন। ভাসানী ন্যাপ নেতা মশিউর রহমান যাদু মিঞা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করায় তাঁকেও জেলে আটকে রাখা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তাকে মুক্তি দেয়া হলে তৎকালীন ইসলামিক একাডেমি মিলনায়তনে তাঁর সম্মানে আয়োজিত সংবর্ধনায় প্রধান অথিতির ভাষণ দেন রাশেদ খান মেনন (তিনি তখন ভাসানী ন্যাপের নেতা ছিলেন) অনেকেই এসব ঘটনা ভুলে গেছেন। এই সময় বড় বাস্তব ঘটনা ছিল পাকিস্থানে কয়েক লাখ বাঙালির আটকেপড়া। বর্তমান সরকারের কৃষিমন্ত্রী জেনারেল মজিদ-উল হক,পররাষ্টমন্ত্রী কর্নেল  মুস্তাফিজ সাহেবরাও এই আটকেপড়ার মধ্যে ছিলেন। স্বদেশ তাদের এই লাখো বাঙালির আত্মীয়স্বজনরা চরম উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছিল সেদিন। পাকিস্তানিরা তাদের জিম্মি করে রেখেছিল। ফলে ছেড়ে দিতে হয়েছিল বন্দী পাকিস্তানি এক লাখ সৈন্যকেও। এত কিছু প্রতিকূলতার মধ্যে কতগুলো পদক্ষেপ ছিল যুগান্তকারী। তৎকালীন সরকার গোলাম আযমসহ তৎকালীন ১৫ জন দালাল রাজনীতিককে ২২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। (দৈনিক বাংলা, ২২ এপ্রিল ১৯৭৩।)

১৭ এপ্রিল, ১৯৭৩ সালে সরকারের এক হ্যাণ্ডআউটে বলা হয়,যুদ্ধাপরাধীদের জন্য জেনাভা কনভেনশনের ৩ নং ধারা লংঘনের দায়ে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল 

গঠিত হবে। (দৈনিক বাংলা, ২১ এপ্রিল ১৯৭৩, ১৭ মে ১৯৭৩, ৩০ আগষ্ট ১৯৭৩, পয়লা ডিসেম্বর ১৯৭৩।) যুদ্ধাপরাধীরা আদালতে হাজির না হওয়ায় গোলাম আযমসহ মোট ৩৯ জনের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়। (দৈনিক বাংলা, ২১ এপ্রিল ১৯৭৩, ১৭ মে ১৯৭৩, ৩০ আগষ্ট ১৯৭৩, পয়লা ডিসেম্বর ১৯৭৩।) এরপর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী দালালদের কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়। মুসলিম লীগপন্থী একদল রাজনীতিক ছিলেন যারা মূলত যুদ্ধকালীন সময়ে মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক বিরোধিতা করেছে। জামায়াতীদের মতো অস্ত্র নিয়ে  মুক্তিবাহিনী এবং মুক্তিকামী মানুষকে হত্যা করে নি। এই রকমসহ কয়েক প্রকার লোককে মাফ করা হয়। প্রায় ১২ হাজার মামলা এবং ২৯ হাজার আসামী এই সময় কারাগারে আটকে পড়ায় তাদের ওপর নির্ভরশীল কয়েক লাখ পরিবার-সদস্য নিদারুণ সঙ্কটে পতিত হয় যা তৎকালীন যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু বলা হয়,

১. দেশদ্রোহিতা,হত্যা,ধর্ষণ,ডাকাতি,অগ্নিসংযোগের অপরাধী মাফ পাবে না।
২. দালালমন্ত্রী,উপদেষ্টা,রাজাকার কমাণ্ডার মাফ পাবে না।
৩. শান্তি কমিটির নেতা মাফ পাবে না।
৪. ১৮ ধরনের অপরাধী মাফ পাবে না। (দৈনিক বাংলা, ২১ এপ্রিল ১৯৭৩, ১৭ মে ১৯৭৩, ৩০ আগষ্ট ১৯৭৩, পয়লা ডিসেম্বর ১৯৭৩।)(বিভিন্ন প্রকার যুদ্ধাপরাধের দায়) সুতরাং আজ গোলাম আযমের বিরুদ্ধে যে জনমত গড়ে উঠেছে তা স্পষ্টতই মুক্তিযদ্ধের চেতনার ভিত্তিমূল থেকে উৎসারিত। গোলাম 
আযম ও খুনী রাজাকার-আলবদরদের আজ নির্মূল করার কথা উঠেছে,কারণ তারা মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মূল করতে চেয়েছিল। গোলাম আযমের জায়গা বাংলাদেশে হবে না-এই শ্লোগান উঠছে এই জন্য যে,গোলাম আযম '৭১ সালে বলেছিলেন,মুক্তিযোদ্ধাদের জায়গা পাকিস্তানে হবে না। জামায়াতীদের উৎখাত ও খতম করার জনমত গড়ে উঠেছে এই জন্য যে, জামায়াতীরা মুক্তিকামী মানুষকে খতম করেছিল। গোলাম আযমদের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল করার কথা উঠেছে এই জন্য যে, গোলাম আযমরাও মুক্তিযোদ্ধাদের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল করতে চেয়েছিল।

জাতি আজ মুক্তিযুদ্ধের খুনীদের বিচার চায়। তাদের সকল অপকর্মের দলিল রয়েছে। পিছিয়ে যাওয়ার আর কোন অবকাশ নেই।

লেখাটির বিষয়বস্তু(ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড): জামাতে ইসলামরাজাকার ;

বিষয়বস্তুর স্বত্বাধিকার ও সম্পূর্ণ দায় কেবলমাত্র প্রকাশকারীর...

http://www.somewhereinblog.net/blog/amarblogblog/28780987

Previous:

পোষ্ট মর্টেম জামাতে ইসলাম: পর্ব-১

১৯ শে মার্চ, ২০০৮ রাত ১০:২২ |







__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___

[mukto-mona] বেগম খালেদা জিয়া : একটি বক্তৃতা ॥ মিথ্যাচার আর হুমকি



সোমবার, ১৮ মার্চ ২০১৩, ৪ চৈত্র ১৪১৯

একটি বক্তৃতা ॥ মিথ্যাচার আর হুমকি

মুহম্মদ শফিকুর রহমান

বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট (যদিও দু'টি ছাড়া বাকি ১৬টিই ওয়ান-ম্যান ওয়ান-প্যাড পার্টি) নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বুধবার তাঁর নয়া পল্টন দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে ১৩ মিনিটের একটি বক্তৃতা দেন, যার পুরোটাই মিথ্যাচারে ভরা এবং রয়েছে বেশকিছু হুমকি। তিনি তাঁর স্বভাবজাত অভ্যাস থেকে বেরোতে পারেননি। টিভি চ্যানেলে তাঁর সরাসরি কণ্ঠ এবং পরদিন বৃহস্পতিবারের দৈনিক পত্রিকা থেকে উদ্ধার করা মিথ্যাচার আর হুমকিগুলো হলো : মিথ্যাচার-১) আওয়ামী লীগ হিন্দুদের বাড়ি-ঘরে হামলা করেছে। ২) আমরা হিন্দুদের পাশে আছি। থাকব, ৩) সাম্প্রতিক সহিংসতা 'গণহত্যা' ৪) গণহত্যার জন্য প্রধানমন্ত্রী দায়ী এবং ৫) আমরাও যুদ্ধাপরাধের বিচার চাই। হুমকিগুলো হলো ১) 'মঞ্চ-ফঞ্চ' বানানো বন্ধ করুন ২) মঞ্চ-ফঞ্চ বানিয়ে বাঁচতে পারবেন না। ৩) ক্ষমতা থেকে টেনে নামানো হবে, ৪) 'গণহত্যার' বিচারে ট্রাইব্যুনাল করা হবে এবং ৫) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে সবার বিচার করা হবে।
সবচেয়ে জঘন্য কথাটি বলেছেন- সরকার একদিকে আমাদের সভা ভাঙছেন বোমা- গুলি ছুড়ে, অপরদিকে 'নাস্তিকদের' লালন করছেন (?) এ কথার প্রথম অংশ মিথ্যাচার, দ্বিতীয় অংশ সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক। প্রথম অংশটি স্বভাবজাত এবং প্রতিনিয়তই তা করে চলেছেন। দ্বিতীয় অংশটি রীতিমতো ভীতিকর একজন মানুষের সাংস্কৃতিক দৈন্যের স্তর কত নিচে নামলে কাউকে 'নাস্তিক' বলে তার জীবন হুমকির মুখে ঠেলে দিতে পারেন সম্ভবত বেগম জিয়াই এর প্রকৃত উদাহরণ। তবে তার দলটি মূলত সাম্প্রদায়িক এবং চরম সাম্প্রদায়িক দল জামায়াত-শিবিরকে নিয়ে জোট বেঁধে নিজেরাও আরও সাম্প্রদায়িক হয়ে উঠেছেন। বেগম জিয়া ও তাঁর দল এবং জোট যেহেতু স্বাভাবিক পথে ক্ষমতায় যাওয়ার রাস্তাই খঁজে পাচ্ছে না তখন তৃতীয় অরাজনৈতিক-অনৈতিক-অগণতান্ত্রিক শক্তিকে ক্ষমতায় আসার পথ দেখানোর জন্যই সহিংস পথ বেছে নিয়েছেন। চরম সহিংস জামায়াত শিবিরের সন্ত্রাসী কর্মকা-কে সমর্থন-সহযোগিতা দিচ্ছেন। তৃতীয় শক্তি এলে আর যাই হোক, আওয়ামী লীগ তো ক্ষমতাচ্যুত হবে এবং তখন লাইনের তৃতীয় ভাইজানরা এলে এমনও হতে পারে যে ক্ষমতার উদ্দিষ্টও দিতে পারে এবং যুদ্ধাপরাধীদেরও কারাগার থেকে ছাড়িয়ে এনে কোলে বসিয়ে দিতে পারে। কিন্তু এসবই এক অবান্তর চিন্তা। তৃতীয় শক্তি বলে যাদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয় সেই সেনাবাহিনী ক্ষমতার রাজনীতির ব্যাপারে নিরপেক্ষ বলে আমার বিশ্বাস এবং তারাও জাতির সচেতন অংশ হিসেবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হোক শাস্তি হোক শাস্তি কার্যকর হোক তা চায়। কেনইবা তারা আসবে? অতীত অভিজ্ঞতা বলে এ ধরনের এ্যাকশনে কতিপয় জেনারেল বা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ক্ষমতার সাধ পায়, সাধারণ সৈনিকরা তো কেবল ব্যবহৃত হয়েছে অতীতের প্রতিটি মিলিটারি এ্যাকশনে, ক্ষমতার সাধ কি তারা তা জানে না। ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগ হয়ে, প্রথমে পাকিস্তান হবার অল্পদিনের মাথায় তৃতীয় শক্তির বন্ধুরা ক্ষমতা দখল করে দেশটাকে তছনছ করে দেয় এবং ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মাথায় বাঙালীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান স্বাধীন জাতি-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর এবং সর্বশেষ মাত্র ৪ বছর আগেও সাধারণ সৈনিকরা দেখেছে। কেনইবা তারা জামায়াত-শিবিরের মতো ঘৃণিত শক্তি ও তাদের শরিকদের কথায় পড়বে? নিজের ভালটা শিশুও বোঝে, সৈনিকরা বুঝবে না তা কি হয়?
এবার আসছি তার মিথ্যা কথাগুলো আলোচনায়। 'আওয়ামী লীগে অনেক রাজাকার'Ñ তাঁর বক্তব্য নির্জলা মিথ্যা। ঐতিহাসিক জ্ঞান থাকলে তিনি জানতেন বা মোটামুটি একটা লেভেল পড়াশোনা থাকলে দেখতে পেতেন আওয়ামী লীগের সমালোচনার অনেক কিছু আছে। কিন্তু এ দলে রাজাকার আছে বা ছিল এমনটি কেউ বলতে পারবে না। রাজাকারী ভাবনা এবং সাম্প্রদায়িকতা একই কথা। আওয়ামী লীগের জন্মই হয়েছিল (১৯৪৯ সালের ২৩ জুন) সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই-এর লক্ষ্য নিয়ে এবং সেই থেকে দলটি সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছে, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধেও পাকি এবং তাদের দোসর সাম্প্রদায়িক জামায়াত শিবির ও তাদের ঘাতক বাহিনী রাজাকার আলবদর আল শামসদের পরাভূত করেই আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে, বাঙালীর জাতি-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার হাজার বছরের স্বপ্নসাধ বাস্তবে রূপ দিয়েছিল। খালেদা জিয়া আওয়ামী লীগে রাজাকার হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের নামোচ্চারণ করেছেন গত মঙ্গলবারের বক্তৃতায়। এর জবাব মহীউদ্দীন খান আলমগীর দেবেন। ইতোমধ্যে দিয়েছেনও আমি বলব ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর সাম্প্রতিক জামায়াতী সহিংসতার মুখে যা যা করেছেন কিংবা মঙ্গলবার বিএনপি কার্যালয়ে যেভাবে তল্লাশি করিয়েছেন, তা নিয়ে রাজাকার এবং তাদের সহযোগীরা সোচ্চার হবেন, স্বাভাবিক কিন্তু তাঁর দলের কারও কারও কিছু মন্তব্য দুঃখজনক বটে। তাছাড়া যারা তাঁকে রাজাকার বলেন তাদের এটুকু বলব একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সব মানুষ ভারতে যেতে বা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে পারেনিÑ কেউ ভীতির কারণে কেউবা সুযোগ করে নিতে পারেনি তা-ই দেশাভ্যন্তরে চাকরি-বাকরি করেছে তাদের সবাইকে রাজাকার বলা ঠিক নয়। তাদের সংখ্যা মুক্তিযোদ্ধাদের চেয়ে বেশি। তাছাড়া নিজের দিকেও তাকানো উচিত। আর যিনি বলছেন আওয়ামী লীগে রাজাকার আছে প্রথমত কথাটা মিথ্যা দ্বিতীয়ত বরং তার দল বিএনপিই গঠিত হয়েছে ভাসানী ন্যাপের রাজাকার-হাফ রাজাকার, মুসলিম লীগের রাজাকার এবং মুসলিম লীগ-জামায়াত-নেজামে ইসলাম পার্টির রাজাকারদের বাগিয়ে তাদের দিয়ে। 'আওয়ামী লীগ হিন্দুদের বাড়ি-ঘরে হামলা করেছে'Ñ এটিও চরম মিথ্যাচার। রবং জন্মলগ্ন থেকে আওয়ামী লীগের অসাম্প্রদায়িক- ধর্মনিরপেক্ষ নীতিই চর্চা হয়ে এসেছে। ১৯৪৯ থেকে এ পর্যন্ত যতবার এদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা হয়েছে প্রত্যেকবারই আওয়ামী লীগ ও সমমনা দলগুলোই ভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, ভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষরাও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগ ও সমমনাদের পাশাপাশি যুদ্ধ করেছে। এমনকি ১৯৬৪ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় বঙ্গবন্ধুই প্রথম 'পূর্ব বাংলা রুখিয়া দাঁড়াও' ব্যানার নিয়ে ঢাকার রাজপথে মিছিল নিয়ে দাঙ্গা প্রতিরোধ করেন পরদিন দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক অবজারভার ও দৈনিক সংবাদসহ বিভিন্ন কাগজে 'পূর্ববাংলা রুখিয়া দাঁড়াও' এই শিরোনামে অভিন্ন সম্পাদকীয় ছাপা হয়েছিল, দাঙ্গা বন্ধ হয়েছিল। নিকট অতীত ১৯৯৩ সালে ভারতের উগ্র হিন্দুদের দ্বারা 'বাবরী মসজিদ ভাঙ্গা' হলে বিএনপির সুহৃদ সাংবাদিক গিয়াস কামাল চৌধুরী ভয়েস অব আমেরিকা রেডিওতে খবর পাঠান 'বাবরী মসজিদ ভাঙ্গায় বাংলাদেশের হিন্দুরা ঢাকায় মিষ্টি খেয়ে উল্লাস করেছে,' ব্যস আর যায় কোথায় ভারতের উগ্র হিন্দুদের মতই ঢাকায় উগ্র মুসলমানরা হিন্দু মন্দির ভাঙ্গা শুরু করে। সেদিনও আওয়ামী লীগই প্রথম রাজপথে নামে এবং ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি মিছিল বের করে। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা হলো রাতের প্রথম প্রহর ৪টার দিকে লেখক গবেষক- ইতিহাসবিদ প্রফেসর ড. মুনতাসীর মামুন আমাকে টেলিফোনে ঘুম থেকে জাগিয়ে সকাল ৭টার দিকে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যাওয়ার জন্য বলেন। গিয়ে দেখলাম আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পাশাপাশি জননী সাহসিকা বেগম সুফিয়া কামাল প্রফেসর কবীর চৌধুরী, প্রফেসর খান সরোয়ার মুরশিদ, সৈয়দ শামসুল হক, ফয়েজ আহমেদ, মুনতাসীর মামুন, শাহরিয়ার কবির এবং আরও অনেকে উপস্থিত হয়েছেন। আমরা পুরনো ঢাকায় মিছিল করে প্রেসক্লাবে এসে তৎকালীন গেস্ট রুম বর্তমান নিচতলার খাবার ঘর। যৌথ বিবৃতি দিয়েছিলাম যে কারণে তৎকালীন বিএনপি জামায়াতপন্থী ক্লাব কর্তৃপক্ষ ঐ কক্ষের প্রধান দরজা বন্ধ করে ছিটকিরি লাগিয়ে দেয় Guests are not allowed এঁবংঃং ধৎব হড়ঃ ধষষড়বিফ সারাদেশে ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এমনি মিছিল হয়েছিল সেদিন বিএনপির কাউকে দাঙ্গা প্রতিরোধে দেখা যায়নি। বরং তারা মনে মনে হাসছিল। এর অর্থ দাঁড়ায় বিএনপিপন্থীরা দাঙ্গা লাগায় আর আওয়ামী লীগ ও সমমনারা দাঙ্গা প্রতিরোধ করে। বিএনপি নেত্রী বলেছেন, তারা হিন্দুদের পাশে আছেন এবং থাকবেন। এ আরেকটি মিথ্যা কথা। ২০০১-এর নির্র্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াত জোট বেঁধে ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন নির্যাতন চালায় আওয়ামী লীগ, হিন্দু- বৌদ্ধ-খ্রিস্টান জনগোষ্ঠীর ওপর। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়ার এবং নৌকার পক্ষে কাজ করার কর্মী সমর্থকদের হত্যা, হাত কেটে দেয়া, বাড়ি-ঘর-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুট। দখল এবং নারী -নির্যাতনের ঘটনা ঘটায়, এমন কি হিন্দু বিধবা মহিলারাও বিএনপি-জামায়াতী সন্ত্রাসী এবং সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের শিকার হন- মাত্র তো ১১ বছর আগের ঘটনা, এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলেন ম্যাডাম? তিনি বলেছেন, তারাও যুদ্ধাপরাধের বিচার চান, তবে তা হতে হবে স্বচ্ছ এবং আন্তর্জাতিক মানের। ফ্রান্স, টকিও, কম্বোডিয়া, বসনিয়ার যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইন ও কার্যক্রম কত স্বচ্ছ এবং সকল পক্ষের অধিকার রক্ষা করে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন, শুধু এইটুকুই বলব এখানে যুদ্ধাপরাধীরা আইনজীবী নিয়োগ, সাক্ষী নিয়োগ। প্রতিপক্ষের সাক্ষীকে সওয়াল-জওয়াবে করা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন এমনকি উচ্চ আদালতে আপীল করার সুযোগ পর্যন্ত পাচ্ছেন, যা পৃথিবীর কোথাও নেই। তিনি সাম্প্রতিক জামায়াত-শিবিরের সহিংসতা, মানুষ হত্যা, পুলিশ হত্যা, মানুষের গাড়ি-বাড়ি ভাঙচুর, এ সবকে 'গণহত্যা' বলছেন। গত শনিবারের লেখায় আমি বলেছি 'গণহত্যা' বা ইংরেজী genocide শব্দের অর্থ কি? অর্থ হলোÑ "ব্যাপক হত্যা দ্বারা বা জীবন ধারণের পক্ষে সম্পূর্ণ প্রতিকূল অবস্থার সৃষ্টি করে কোন জাতি বা সম্প্রদায়ের বিলোপ সাধন (deliberate extraimnation of a race or community by mass murder or by imposing conditions that make survival impossible.) এর মানে গণহত্যা বা মবহড়পরফব হয়েছে ১৯৭১ সালে এবং তা করেছে পাকি হানাদার মিলিটারি জান্তা এবং তাদের সহযোগী জামায়াত ছাত্রসংঘ (ছাত্র শিবির), মুসলিম লীগ ও অন্যান্য সাম্প্রদায়িক শক্তি, যাদের নিয়ে বেগম খালেদা জিয়া এখন ঘর করছেন। তাঁর তো বোঝার কথা নয়। রাজাকাররা তাঁকে বুঝিয়েছে এটাকে 'গণহত্যা' বলে চালানো গেলে ১৯৭১ সালের 'গণহত্যাকে' ভুলিয়ে দেয়া যাবে। অতএব, তিনি বলে দিয়েছেন? মনে হয় মানুষ সব অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত বা বোকার স্বর্গে বাস করে (?) বিএনপির বুদ্ধিজীবী মাহফুজ উল্লাহ ফরহাদ মাযহার আসিফ নজরুল, নুরুল কবির, পিয়াস করিম, আমেনা মহসিন এবং হালের কিছু সাবেক ছাত্রলীগ নামধারী টিভি আঁতেল এ প্রশ্নে কি বলেন জানা দরকার।
বেগম জিয়া অন্যায়ভাবে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর তথা শাহবাগসহ দেশব্যাপী গণজাগরণ মঞ্চকে তুচ্ছ- তাচ্ছিল্য ভরে কথা বলেছেন। শব্দ ব্যবহার করেছেন 'মঞ্চ-ফঞ্চ'। এর মানে তার রাজনীতির অন্তরাত্মায় তরুণ প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা এমন আঘাত হেনেছেন। যে রাগে-দুঃখে যা মুখে আসছে বলে দিচ্ছেন। বাচ্চাগুলো এমন দুষ্ট যে, 'জয় বাংলা' সেøাগান বাংলার গ্রাম-গঞ্জ শহর-বন্দর সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়ে এমন এক আবহ সৃষ্টি করেছে এখন আর 'জয় বাংলা'র বাইরে গিয়ে রাজনীতি করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেগম জিয়ার প্রয়াত স্বামী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মিলিটারি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দম্ভভরে বলে ছিলেন I will make politics difficult for the politicians (রাজনীতিকদের জন্য রাজনীতি করা কঠিন করে তুলব আমি)" আর গণজাগরণ মঞ্চের তরুণরা যা করেছে তা- হলো," Joy BANGLA has made politics difficult for begum Khaleda Zia and her friends'' তিনি গণজাগরণ মঞ্চের ছেলেদের 'নাস্তিক' বলেছেন। এমন ফতোয়া তিনি দিতে পারেন কি-না বা আমাদের পবিত্র ধর্ম ইসলাম তাকে এই ক্ষমতা দিয়েছে কি-না, আমি সেদিকে যাব না, এ ব্যাপারে ফাইনাল কথা বলার মতো ধর্মীয় জ্ঞান আমার নেই ও বলে আমি বিশ্বাস করি। কিন্তু একটা ব্যাপার জানি তা হলো 'আপনি আচরি ধর্ম অপরে শেখাও'। যে মানুষ ধর্ম কর্ম করে না, যে মানুষ ধর্মের সত্যিকার বাণী জনসমক্ষে তুলে ধরার জ্ঞান অধিকার রাখেন না , এ অবস্থায় তিনি যখন ফতোয়া দেন তখন তা ধর্মপ্রাণ ইসলামে বিশ্বাসী মানুষকে আঘাত করে, বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। না-জেনে বা খোঁজ খবর না-নিয়ে প্রজন্ম চত্বরের ছেলে-মেয়েদের 'নাস্তিক' বলা তা-ই খালেদা জিয়ার একটি গর্হিত কাজ হয়েছে। একাত্তরে পাকি হানাদার মিলিটারি জান্তা রণাঙ্গনে আমাদের বলত 'দুষ্কৃতকারী' এবং আমরা না-কি 'হিন্দু' হয়ে গেছি। খালেদা জিয়াও আজ নতুন প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধাদের নাস্তিক বলে জনরোষের শিকার বানাতে চাচ্ছেন- এটা তার দুরভিসন্ধি ছাড়া আর কিছুই নয়। খালেদা জিয়া প্রজন্ম চত্বরের সদস্যদের নাস্তিক বলছেন অথচ ওরা বারবার বলেছে ওদের লড়াই যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে- পবিত্র ইসলাম বা ধর্মের বিরুদ্ধে তাদের কোন অবস্থান নেই। তবু তিনি বলছেন।
তবে হ্যাঁ, কোন একটা স্পর্শকাতর গুজব সমাজে ছড়িয়ে দিতে পারলে কিছু সময়ের জন্য হলেও মানুষকে বিভ্রান্ত করা যায় (তবে সবসময় নয়)। এই যেমন ফাঁসির দ-প্রাপ্ত দেইল্লা রাজাকার ওরফে মাওলানা সাঈদীর ছবি নাকি চাঁদে দেখা গেছে? এই গুজবকে কেন্দ্র করে বগুড়াসহ দেশের কয়েকটি স্থানে কি আত্মঘাতী কা-টাই না ঘটে গেল। টিভি চ্যানেলে দেখলাম বগুড়ায় বোরখাপরা মহিলারা বিশাল বিশাল সব দা, বাঁশ, দা তলোয়ার উঁচিয়ে বিক্ষোভ করছে 'দেইল্লা রাজাকারের মুক্তি' দিতে হবে। থানা আক্রান্ত হয়েছে পুলিশের প্রাণহানি ঘটেছে আবার পুলিশের গুলিতে গ্রামের সহজ সরল ধর্মপ্রাণ অথচ বিভ্রান্ত মানুষেরও জীবনহানি ঘটেছে। অথচ বিষয়টি যে কত বড় জ্বালিয়াতি, ওলামাদের মতে সরাসরি 'বেদাআত।'
বিয়ষটি হাস্যকরও বটে। এবং এ নিয়ে অনেক মুখরোচক গল্পও শোনা গেছে, যা ছাপার অক্ষরে পরিবেশন করা যায় না। তাই করলাম না। তবে যে সব সহজ সরল ধর্মপ্রাণ নারী-পুরুষ বিভ্রান্ত হয়ে রাস্তায় নেমে লঙ্কাকা- ঘটালেন তাদের ব্যাপারে একটা কথা বলতে চাইÑ কোনদিকে দৌড় দেয়ার আগে জানা দরকার কোথায় দৌড়াচ্ছেন, কেন দৌড়াচ্ছেন ইত্যাদি ইত্যাদি। চিলে কান নিয়ে গেছে বলে দৌড়ের আগে কানে হাত দিয়ে দেখা দরকার কানটা আছে না গ্যাছে? একটি সেল- ফোনের বিজ্ঞাপন খুব মজার- (কথা পরিষ্কারভাবে শোনা সংক্রান্ত) এক লোক ভাজা-সিমের বিচিতে কামড় দিলে দাঁতে ব্যথা পান, ভদ্রলোক ব্যথায় উচ্চারণ করেন 'দাঁত ভেঙ্গে গেছেরে...।' লোকজন শুনলেন ' বাঁধ ভেঙ্গে গেছে।' আর থামায় কে? সবাই বাঁধের দিকে ছুটছে তো ছুটছে। এই ইমেজের আরেকটি বিজ্ঞাপন হলো এক গৃহিণী তার কর্তাকে বললেন বাজার থেকে বড় দেখে একটা 'হাঁস' আনতে, ভদ্রলোক বাজার থেকে বড় মোটা দেখে একটা 'বাঁশ' নিয়ে এলেন, দেখে গৃহিণী আগুন। এগুলো হলো শ্রবণ -বিভ্রান্তি? আর 'দেইল্লা রাজাকারের মুখ চাঁদে দেখা গেছে' এটা হলো পরিকল্পিতভাবে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে মানুষকে রাজপথে নামিয়ে যদি দেইল্লা রাজকারের ফাঁসির হুকুমটা বাতিল করা যায়, এই প্রচেষ্টা। প্রচেষ্টা না বলে ষড়যন্ত্র বলাই ভাল, 'কারণ' এর স্রষ্টা ষড়যন্ত্রের হোতা জামায়াত-শিবির।
ম্যাডাম খালেদা জিয়া যখন অভিযোগ করছেন প্রজন্ম চত্বরের ছেলেমেয়েরা 'নাস্তিক' তখন মাগরিবের আজান হচ্ছিল এবং তিনি তার বক্তৃতা বন্ধ বা স্থগিত না করে বক্তৃতা শেষ করেন আজানের মধ্যেই। আজানও শেষ তাঁর বক্তৃতাও শেষ হলো। বেগম খালেদা জিয়া বললেনÑ পুলিশ বোমা-গুলি ছুড়ে ১৮ দলীয় জোটের মঙ্গলবারের নয়াপল্টনের জনসমাবেশ প- করে দেয়। এটি এখটি অসত্য তথ্য। মানুষ যা নিজ চোখে দেখেছে তাকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন মিথ্যা তো বটেই, বরং যিনি বলছেন তাঁর ব্যক্তিগত সততা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে পারে। জনগণ টিভি চ্যানেলের সুবাদে দেখেছে ঐদিন পুলিশ জনসমাবেশস্থলে বা বিএনপি কার্যালয়ের আশপাশে কোথাও আসেনি বা অবস্থান নেয়নি। পুলিশের অবস্থান ছিল পূর্বে ফকিরাপুল মোড় ও পশ্চিমে নাইটেঙ্গেল মোড়। তা-ও সিকিউরিটি রিজনে। সমাবেশ চলছে, অনেক নেতা বক্তৃতা করলেন সর্বশেষ বক্তা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব) তাঁরও বক্তৃতা প্রায় শেষ এমন সময় নাইটেঙ্গেল মোড়ে পুলিশের সামনে প্রথম বোমাটির বিস্ফোরণের শব্দের সাথে সাথেই মিজা ফখরুল পরদিন বুধবার হরতাল ডেকে দিলেন। এরপর অবশ্য বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। তবে মির্জা ফখরুলের হরতাল ডাকার গ্রাউন্ডটি এতো শিশুসুলভ ছিল যে, টিভি দর্শকদের বোঝার বাকি রইল না সব কিছু পূর্বপরিকল্পিত ছিল। অর্থাৎ বোমা ফাটিয়ে হরতালের ঘোষণা হবে।
বেগম জিয়া পুলিশের প্রতি হুমকি দিয়েছেনÑ জনগণের ট্যাক্সের পয়সায় আপনাদের বেতন-ভাতা হয় (কথাটি মূলত এরশাদবিরোধী অন্দোলনে শেখ হাসিনা বলতেন) অথচ সেই জনগণের বিরুদ্ধে যাচ্ছেন অপনারা। ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেলে আপনাদেরও কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। এটা শুনে আমার এক ভাগ্নি সরকারী কলেজের অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর রোকেয়া মন্তব্য করলেন পুলিশের মতো এমপি- বিরোধী দলীয় নেতাও জনগণের ট্যাক্সের পয়সায় বেতন-ভাতা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। বিরোধীদলীয় নেতা-তো পূর্ণ মন্ত্রীর মর্যাদায় বা ছায়া সরকারপ্রধানের মর্যাদায় সব পান, তবুও সংসদে যান না কেন? রবং তিনি হরতাল ডাকেন আর জামায়াত- শিবিরসহ তাঁর জোটের কর্মীরা সেই জনগণেরই গাড়ি- বাড়ি দোকানপাঠ ভাঙচুর করে, আগুন দিয়ে জ্বালায়, জনগণের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা, বোমা, হত্যার ঘটনা ঘটায় আবার পুলিশের প্রতিরোধে নিরীহ জনগণের প্রাণ যায়? এসব প্রশ্নতো বিরোধীদলীয় নেতাকে করা যায়?
বস্তুত খালেদা জিয়া যখন অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন তখন নিজের দিকে তাকান না বা সচেতনভাবেই ভুলে যান। তিনি ভুলে গেছেন ২০০৪ সালের ১ মার্চ তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্বকালে তৎকালীন পুলিশ আওয়ামী লীগ অফিসে কি করেছিল? টিয়ার গ্যাস ছুড়তে ছুড়তে আওয়ামী লীগ অফিসে বেধড়ক লাঠি পেটা করেছিল, গ্রেফতার করেছিল। ভাঙচুর করেছিল। সেদিনও দেড় শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, গত মঙ্গলবার বিএনপি অফিস থেকেও দেড় শতাধিক গ্রফতার করা হয়। তবে একটু পার্থক্য আছে ২০০৪-এর আওয়ামী লীগ অফিসের মতো বিএনপি অফিসে নেতাকর্মীদের পেটানো হয়নি। কক্ষ ভেঙ্গে তাদের বের করা হয়েছিল মাত্র। আরেকটি কথা পাপিয়া বা নিলুফার মনির তৃতীয় শ্রেণীর নারীদের এমপি বানিয়ে ভুল করেছেন বলে মনে করি। এরাও তার ইমেজ নষ্ট করছে।
সর্বশেষ একটা কথা বলতে চাই, খালেদা জিয়া বলেছেন ক্ষমতায় গেলে প্রধানমন্ত্রীসহ সবাইকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন। বিচার করবেন। কিন্তু ক্ষমতায় গেলো তো?...

ঢাকা-১৪ মার্চ ২০১৩
লেখক : ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক

http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=16&dd=2013-03-18&ni=129106

Also Read:

Lv‡j`v wRqvi K‡É ÿgZvwjáyi AvZ©bv`

http://www.amaderorthoneeti.com/content/2013/03/18/news0376.htm


কী চান খালেদা

http://www.samakal.com.bd/details.php?news=13&action=main&option=single&news_id=334563&pub_no=1351


মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে বিএনপির জনসভায় খালেদা জিয়া

আন্দোলন করলে আরও কিছু প্রাণহানি হবে

তানভীর সোহেল ও আব্দুল মমিন, মানিকগঞ্জ থেকে | তারিখ: ১৭-০৩-২০১৩

http://prothom-alo.com/detail/date/2013-03-17/news/337258




__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___

[mukto-mona] Khaleda Maniacally Screaming like a Deranged Powermonger !!!!!



Lv‡j`v wRqvi K‡É ÿgZvwjáyi AvZ©bv`

--------Igi dvi"K

we‡kl cÖwZwbwa : RvZxq msm‡`i we‡ivax`jxq †bÎx I weGbwci †Pqvicvimb †eMg Lv‡j`v wRqvi mv¤cÖwZK e³‡e¨i Zxeª mgv‡jvPbv K‡i evsjv‡`k AvIqvgx hyejx‡Mi †Pqvig¨vb †gvnv¤§` Igi dvi"K †PŠayix e‡j‡Qb, Zvi e³e¨ D¯‹vwbg~jK, `vwqZ¡Ávbnxb Ges RvwZi cÖwZ AegvbbvKi|eMg wRqvi e³e¨‡K wZwb ÔwnZvwnZ Ávbk~b¨ GK ÿgZvwjáyi AvZ©bv`Õ wn‡m‡e wPwýZ K‡i e‡jbÑ Ô†eMg wRqv RbM‡Yi wei"‡× hy× †NvlYv K‡i‡Qb|Õ

GK wee„wZ‡Z MZKvj †iveevi Igi dvi"K †PŠayix e‡jb, Avgiv Mfxi D‡Ø‡Mi m‡½ jÿ¨ KiwQ †eMg Lv‡j`v wRqv Kw`b a‡i wewfbœ ¯'v‡b mfv-mgv‡ek K‡i wKQz D¯‹vwbg~jK e³e¨ ivL‡Qb| G e³e¨¸‡jv my¯úó wg_¨vPvi, cÿcvZc~Y© Ges d¨vwmev`x Avùvjb| m¤cÖwZ weGbwci Kvh©vjq cwi`k©‡b wM‡q GK mgv‡e‡k †eMg wRqv Awf‡hvM K‡i‡Qb, hy×vcivax mvC`xi iv‡qi ci mviv‡`‡k miKvi ÔMYnZ¨vÕ Pvwj‡q‡Q| GKwU ivR‰bwZK `‡ji †bÎx G iKg wg_¨vPvi Ki‡Z cv‡ib, GUv we¯§qKi|

BwZnv‡mi GKwU RNb¨Zg MYnZ¨v, gyw³hy‡×i mgq evsjv‡`‡ki 30 jvL gvbyl wbg©gfv‡e wba‡bi Rb¨ hviv Acivax Ges wePvivaxb Zv‡`i wePvi I `Ê fÊyj Kivi j‡ÿ¨ we‡ivax`jxq †bÎx gv‡V †b‡g‡Qb| wZwb †h AmshZ I ûgwKi fvlvq K_v e‡j‡Qb, Zv †Kv‡bv MYZvwš¿K `‡ji †bÎxi fvlv n‡Z cv‡i bv|

wee„wZ‡Z hye †bZv Igi dvi"K †PŠayix e‡jb, RvgvqvZ-wkwei mviv‡`‡k †hfv‡e ZvÊe I b„ksm bvkKZv Pvjv‡jv, ag©‡K wb‡q wg_¨v †emvwZ Ki‡jv, GgbwK mvC`x‡K Puv‡` †`Lvi g‡Zv RNb¨ wg_¨vPvi Ki‡jvÑ Gme wb‡q †eMg wRqv ÔUzÕ kã ch©š— Ki‡jb bv| G †_‡K †evSv hvq, hy×vcivax‡`i euvPv‡ZB wZwb Gfv‡e i"`ªg~wZ© aviY K‡i‡Qb| hy×vcivax‡`i wePvi n‡"QÑ G Kvi‡Y wZwb †ÿv‡f K_vi gvÎvÁvb nvwi‡q †d‡j‡Qb| Lv‡j`v wRqv hy×vcivax‡`i wePv‡ii e¨vcv‡i mvgvb¨ `~iZ¡UzKzI eRvq iv‡Lbwb| NvZK I mš¿vmxi m‡½ GKvÍ n‡q †M‡Qb|

Igi dvi"K †PŠayix e‡jb, evsjv‡`‡k gvbeZvi kÎ" Ges ivóª‡`ªvnx‡`i wePv‡i mš¿vm m„wó K‡i evav`vb Ges †mB evav`vb‡K mg_©b Rvbv‡bv wK ivóª‡`ªvn bq! G mš¿v‡m RvgvqvZ cywjk‡K nZ¨v K‡i‡Q| Av‡›`vj‡bi bv‡g wbixn evmhvÎx cywo‡q †g‡i‡Q, evm I cÖvB‡fU Mvwo cywo‡q‡Q, we`y¨r‡K›`Ö Dwo‡q w`‡q‡Q, †Uªb R¡vwj‡q w`‡q‡Q, †`‡ki GKvwaK Zi"Y‡K b„ksmfv‡e nZ¨v K‡i‡Q, RvgvqvZ-wkwei mwnsmZv K‡i Pj‡Q| A_P Zv‡`i mg_©b w`‡"Qb Lv‡j`v wRqv| 

weGbwc I `‡ji †Pqvicvimb †eMg wRqvi MYwe‡ivax Av`k© D‡jøL K‡i Igi dvi"K e‡jb, Õ71-Gi hy×vcivax‡`i `Ê`v‡bi `vwe‡Z Pjgvb wekvj MYAv‡›`vjb‡K ÔgÂdÂÕ e‡j cwinvm Kiv Ges AvIqvgx jxM miKvi‡K bvbvfv‡e KUvÿ K‡i †eMg Lv‡j`v wRqv cÖK…Zc‡ÿ wb‡Ri Pwi‡Îi ewntcÖKvk NwU‡q‡Qb| wZwb mivmwi RbZvi wei"‡× Ges gvbeZvi kÎ"‡`i wkwe‡i kvwgj n‡q‡Qb| Lv‡j`v wRqv e‡j‡Qb, kvnev‡M hvq bvw¯—K cÖK…wZi Zi"Y, Giv †mLv‡b wM‡q bvP-Mvb Ki‡Q| AcKg© Ki‡Q| Avm‡j Lv‡j`v wRqvi `„wó‡Z fv‡jv Zi"Y ZvivBÑ hviv nvIqv feb MVb K‡i nvRvi nvRvi †KvwU UvKv `yb©xwZ Ki‡Z cvi‡e| Zvi Kv‡Q gv`Kvm³ I †evgvevRivB fv‡jv Zi"Y|

Igi dvi"K †PŠayix e‡jb, Avm‡j †eMg wRqv Kx Pvb? †mw`b wZwb e‡j‡Qb, ÔAv‡›`vjb Ki‡Z †M‡j nq‡Zv Avi wKQz cÖvYnvwb n‡e, Rvbgv‡ji ÿwZ n‡e| wKš' †`‡ki ¯^v‡_© gvby‡li ¯^v‡_© G ÿwZ †g‡b wb‡Z n‡e|Õ Zvi K_vq †evSv hv‡"QÑ we‡ivax`jxq †bÎx Lv‡j`v wRqv Avm‡j i³cvZ Pv‡"Qb| jv‡ki Ici w`‡q ÿgZvq †h‡Z Pv‡"Qb| wZwb wb‡Ri cwievi‡K myiwÿZ †i‡L gvby‡li jvk wb‡q ivRbxwZ Ki‡Z Pvb| G b¨°viRbK e³‡e¨i ga¨ w`‡q wZwb nZ¨v‡K D‡¯‹ w`‡q‡Qb| GKRb we‡ivax`jxq †bZvi G e³e¨ †g‡b †bIqv hvq bv| Lv‡j`v wRqv K_vq K_vq mevB‡K bvw¯—K wn‡m‡e †NvlYv Ki‡Qb| Bmjvg †Mj, Bmjvg †Mj e‡j ie Zzj‡Qb| †eMg wRqvi Kv‡Q Avgvi cÖkœÑ Bmjvg a‡g©i BRviv †K w`j Avcbvi Kv‡Q? AvjøvnÕB‡Zv e‡j‡Qb, wZwb wb‡R Bmjvg iÿv Ki‡eb| †K Avw¯—K Avi †K bvw¯—K Zv wba©viY Kivi Avcwb †K? hLb GKRb‡K Avcwb bvw¯—K ej‡eb, ZLb †m hw` Avw¯—K nq Zvn‡j Avcwb (Lv‡j`v wRqv) wb‡RB‡Zv bvw¯—K n‡q hv‡eb| Zvn‡j wK Avgiv a‡i †be, †eMg wRqvi Avw¯—KZvi msÁv n‡jvÑ gnvb Avjøvn‡K bq, whwb Lv‡j`v wRqvi Ici wek¦vm ivL‡eb wZwbB Avw¯—K (bvDRywejøvnt)? Igi dvi"K †PŠayix e‡jb, cÖwZwµqvkxj I Rw½ev`x ivRbxwZi m‡½ gyw³hy‡×i †PZbvq wek¦vmx cÖMwZkxj Zi"Y‡`i cv_©K¨ GLv‡bB| G Awnsm kvwš—c~Y© Ges m„Rbkxj Kvh©µgB kvnevM Av‡›`vj‡bi eo kw³| 

kvnev‡Mi MYRvMiY g‡Âi mgv‡jvPbv K‡i †eMg wRqv †h e³e¨ w`‡q‡Qb †m e³e¨ cÖZ¨vL¨vb K‡i hyejxM †Pqvig¨vb e‡jb, hy×vcivax‡`i iÿvq Lv‡j`v RvwZi wei"‡× Ae¯'vb wb‡q‡Qb| kvnev‡Mi ÔMYRvMiY gÂÕ RvwZi Avkv-AvKv•ÿvi cÖZxK| Zvi"‡Y¨i AvKv•ÿvi cÖZxK| Gi wei"‡× K_v e‡j Kvh©Z wZwb RbM‡Yi wei"‡× Ae¯'vb wb‡q‡Qb| Zvi K‡É Õ71-G Bqvwnqv Lv‡bi e³e¨B cyb:D"PvwiZ n‡"Q| 

Lv‡j`v wRqvi e³e¨‡K ÿgZv‡jvfxi cÖjvc wn‡m‡e eY©bv K‡i hyejx‡Mi †Pqvig¨vb e‡jb, RbM‡Yi m¤ú` I Rxeb‡K wZwb ÿgZvi wmuwo wn‡m‡e e¨envi Ki‡Z PvB‡Qb| gvby‡li i‡³ øvb K‡i †eMg wRqvi ÿgZvq hvIqvi ¯^cœ G †`‡ki gvbyl †Kv‡bvw`b c~iY n‡Z †`‡e bv| Igi dvi"K †PŠayix e‡jb, Gi gva¨‡g AvMvgx‡Z ivR‰bwZK mwnsmZvq †h cÖvYnvwb n‡e, Rvbgv‡ji ÿwZ n‡e, Zvi `vq-`vwqZ¡ †eMg wRqv‡KB wb‡Z n‡e|

AvIqvgx hyejx‡Mi †Pqvig¨vb e‡jb, MZ wZb w`‡b †eMg wRqv XvKv, gyÝxMÄ Ges gvwbKM‡Ä †hme e³e¨ w`‡q‡Qb, Zv‡Z cÖgvwYZ n‡q‡Q †h, †eMg wRqv Rvgvqv‡Zi gyLcvÎ| hy×vcivax‡`i euvPv‡bvB Zvi wRNvsmvi g~j D‡Ïk¨| evsjv‡`‡ki RbM‡Yi hy‡× †eMg wRqv Aek¨B civwRZ n‡eb|

Igi dvi"K †PŠayix e‡jb, †eMg wRqv RbZv I Rvgvqv‡Zi ga¨Kvi hy‡× Rvgvqv‡Zi cÿ wb‡q‡Qb| G hy‡× RvgvqvZ‡K kw³ RywM‡q wZwb wK Zv‡`i mš¿vm mdj Ki‡Z cvi‡eb? BwZnv‡m mš¿vm mdj nIqvi †Kv‡bv bwRi †bB| g‡b ivL‡eb, AvIqvgx jx‡Mi we‡ivwaZv K‡i ivRbxwZ‡Z †UKv hvq wKš' RbM‡Yi we‡ivwaZv K‡i ivRbxwZ‡Z †UKv hvq bv| GK_vI mZ¨Ñ gvby‡li kw³ hZ K‡g Av‡m gy‡Li wel ZZB DMÖ n‡q I‡V| m¤úv`bv : AvjvDwÏb

http://www.amaderorthoneeti.com/content/2013/03/18/news0376.htm


Also Read:


কী চান খালেদা

http://www.samakal.com.bd/details.php?news=13&action=main&option=single&news_id=334563&pub_no=1351


মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে বিএনপির জনসভায় খালেদা জিয়া

আন্দোলন করলে আরও কিছু প্রাণহানি হবে

তানভীর সোহেল ও আব্দুল মমিন, মানিকগঞ্জ থেকে | তারিখ: ১৭-০৩-২০১৩

http://prothom-alo.com/detail/date/2013-03-17/news/337258

একটি বক্তৃতা ॥ মিথ্যাচার আর হুমকি

মুহম্মদ শফিকুর রহমান

http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=16&dd=2013-03-18&ni=129106





__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___

Re: [mukto-mona] Re: Fwd: এই খবরটার সত্যতা কি? ওদের কি ওয়েব আছে?



Thanks for correcting me. 

Sent from my iPhone

On Mar 17, 2013, at 8:03 PM, Kamal Das <kamalctgu@gmail.com> wrote:

 

Mr. Chakrabarty

Hannan Shah and Shah Hannan are different persons.  The second person is not a blogger in Muktomona.

On Mon, Mar 18, 2013 at 1:01 AM, subimal chakrabarty <subimal@yahoo.com> wrote:
 

Sushanta babu
 
Your concerns are with AL, Indian expansionism, and the powerful BJP. You have not expressed any concerns with BNP which was in power for many years and is still a potential party to be in power again. To you Jamat is an insignificant (merely a communal one) force and hence should not be a matter of much concern. (Correct me if I have misread you). You have your own political and ideological views. That make you see things in a particular way.
 
I have been observing the politics in Bangladesh (and erstwhile East Pakistan) for a long time. I am more concerned with BNP than with AL and I have expressed my views many a time. I am not going into the details now as I believe you should already have some knowledge about it.
 
While BJP is a nationalist force, Jamat is not. Jamat is not a weak force. It has a closely knit extensive and intensive network which even is superior to that of communist parties. It has different operational levels. The topmost level is simply the tip of an iceberg which can destroy the whole the Titanic (read whole democratic and secular system of the country). It has armed cadres (you are getting news about what they are doing after the verdicts against the war criminals. They not only destroy temples, they also kill police. It's network also covers press and media, madrassas, clinics, banks, educational institutions, and NGOs. It's political beliefs are based on its founder Mowdoodi's theological-political theories which many Islamic thinkers have described as unIslamic. Mowdoodi was awarded death penalty in Pakistan for instigating anti-Ahmadiya riots. Saudi intervention saved his life. Ahmadiyas have been declared non-Muslims in Pakistan. Nobel Lauraeate Prof. Salam was an Ahmadia i.e., not a Muslim in Pakistan. It acted as the collaborators of the Pakistan occupation army in 1971. They (as the members of the Al Badar bahini) started systematically killing the progressive forces in Bangladesh. They had a long list which they could not finish as the country was liberated. Even BNP leader Barrister Mowdud Ahmed has once said that these Al Badar members were more dangerous than the Pakistani army as the former's plan was to criple the cultural front by killing the enlightened and progressive intellectuals among the Bengalis. Jamat is anti-Bengali nationalism and anti-Bengali culture. This party does not believe in secularism and many of their important advisers favor replacing the current legal system with Sharia law (you might have seen the comments of one such adviser Abdul Hannan Shah in Muktomona forum). Now it is up to you how you would judge BJP vis-a-vis Jamat-e-Islami.
 
Indian hegemony and big brotherly attitude (I am not sure if the term "expansionist" can be used in the context of Bangladesh) and her tendency to have a bigger share in all dealings with Bangladesh. But you are overlooking the Saudi influence (using petrodollars) in Bangladesh. Rise in fanaticism and Islamic militancy in Bangladesh have been largely due to this. 
 
Now let me say some thing about the article by Arup Baishya which you have given to me as an attachment. I am happy that he has congratulated the Shahbag group and expressed optimism that some thing good will come out of it. The framework (globalization and its beneficiaries among the professionals, etc.) he has used for analyzing the situation in Bangladesh focuses on the ideally ultimate solution for the country. In that sense it is too theoretical. Shahbag movement is much more straightforward: The war criminals must be punished. No compromise on it. No conspiracy---whoever the conspirators are---will be acceptable. This trial has already been overdue. Accomplishment of fair trial will relieve the country of the big burden of inaction on the part of the nation with respect to these criminals. The other purpose is to emphasize on the great spirits of independence. Nothing more than that.
 
I want to disagree with Baishya that the organizers are all bloggers and professionals. We are all bloggers. They include bloggers, non-bloggers, professionals, and non-professionals. Most importantly they are activists and they are risking their lives. Baishya has undermined their size, support base, and strength. He has lamented the security and logistics provided to them by the ruling party. What is wrong with that? BNP should do the same thing if it sincerely believes in trying the war criminals. Unfortunately Khaleda Zia has echoed what Sayyidi said to the judge: You have been coerced by the atheists and given me death penalty by breaking the law.
 
Baishya has referred to Camus and has expressed his disapproval of death penalty by hanging. But the thing is that death penalty as the highest form of punishment is legal in Bangladesh. UK does not have it although it engages in committing and supporting many extra-judicial killings in the foreign lands. Many underground parties including communist parties and Jihadi and radical groups are continually doing it. Baishya's disapproval is irrelevant here. 
 
Regards.                
 
 
  

From: Sushanta Kar <karsushanta40@gmail.com>
To: subimal chakrabarty <subimal@yahoo.com>
Sent: Saturday, March 16, 2013 1:46 PM
Subject: Fwd: এই খবরটার সত্যতা কি? ওদের কি ওয়েব আছে?

সুচরিতেষু,
সুবিমলদা,
আমি দীর্ঘদিন ধরেই কোন পক্ষ না  নিয়েই শাহাবাগ অধ্যয়ন করছিলাম। কারণ লীগ নিয়ে আমি বড়ই সন্দিহান। তেমনি ভারতীয় সম্প্রসারণ বাদ নিয়ে। আর জামাতকে যদিও সাম্প্রদায়িক বলেই ভাবি, তবু ভারতে যে ভাবে বিযেপির সঙ্গে এক করে দেখছিলেন অনেকে সেটি মেনে নিতে বেগ পেতে হচ্ছে। কারণটি সংক্ষিপ্ত, আমাদের দেশে রাষ্ট্র,শাসক দলকে সঙ্গে নিয়ে নেলী ১৯৮৩ বা গুজরাট ২০০২ বা মুম্বাই ১৯৯২র খুনিদের ফাঁসি দাবি করতে কেউ সাহসী হবে না। এতো দুর্বল নয় বিজেপি। আপনার মন্তব্যগুলোও আমি অধ্যয়ন করছিলাম মুক্তমনাতে নীরবে। আজ মনে হলো, আমার এক বন্ধুর লেখা পড়াই। আপনার অভিমত জানতে পেলে ভালো লাগবে। লেখাটি এক সংগে আর দুটো কাগজ ছেপেছে শিলচরে।

সুশান্ত



Reply via web post Reply to sender


__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___

[mukto-mona] পোষ্ট মর্টেম জামাতে ইসলাম :পর্ব-১



পোষ্ট মর্টেম জামাতে ইসলাম: পর্ব-১

১৯ শে মার্চ, ২০০৮ রাত ১০:২২ |

পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাসের সূদীর্ঘ ২৪টি বছর মাওলানা আবু আলা মওদুদী ও তার প্রতিষ্ঠিত জামায়াতে ইসলামী এবং তাঁর অনুসারীরা 
প্রতিনিয়ত বক্ততা,বিবৃতি ও কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে দেশটিকে জাহান্নাম  বানিয়ে ছেড়েছিল। তাদের উগ্রতা,পাষন্ডতা এবং নির্মমতা আধুনিক সভ্যতার 

সকল সৃজনশীলতাকে ম্লান করে দিয়েছিল সেদিন। ১৯৫৩ সালে সমগ্র পশ্চিম পাকিস্তানে ধর্মের নামে হাজার হাজার পাকিস্তানিকে হত্যা,খুন,ধর্ষন ও লুটপাট করে এই দলটি ইতিহাসের জঘন্যতম  কালিমা সৃষ্টি করেছিল। পাকিস্তানের তৎকালীন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিচারক,বিচারপতি মুনীর ও বিচারপতি কায়ানী এই  হত্যাযজ্ঞ,লুন্ঠন,ধর্ষনের পরিকল্পনা ও প্ররোচনাদানের অপরাধে  জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মওদুদী কে ফাঁসিতে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছিলেন। কিন্তু ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানের সামরিক শাসনামলে এই কুখ্যাত মাওলানা মওদুদীকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। যদি এই ভুলটি আইয়ুব খাঁর মতো স্বৈরশাসকরা না করতেন তাহলে হয়তো ইতিহাসের একই বর্বরতার পুনরাবৃত্তি নাও ঘটতে পারতো। যেহেতু মাওলানা মওদুদী ইসলামের নামে খুন করেও বেঁচে গিয়েছিলেন,যেহেতু তাঁর ফাঁসির আদেশ হওয়ার পরও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হল না,যেহেতু এই পাপিষ্ঠ তার কৃতকর্মের জন্য কোন প্রকার ভুল বা অনুতাপ প্রকাশ করে নি,সেহেতু ১৯৭১ সালে পাকিস্তানে আবার ১৯৫৩ সালের পুনরাবৃত্তি ঘটলো। এবারের ঘটনার নায়ক হয়ে আসলেন খুনী মওদুদীর যোগ্য শিষ্য গোলাম আযম। এই আধুনিক খুনীদের একজনের নামের পূর্বে 'মাওলানা',আরেকজনের নামের পূর্বে 'অধ্যাপক' শব্দজুড়ে অত্যান্ত সুকৌশলে ধর্মের নামে দিনের পর দিন তারা প্রকাশ্যেই হত্যালীলার রাজনীতি চালিয়ে আসছেন। 

গোলাম আযম ছিলেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জামায়াতে ইসলামীর আমীর এবং মওদুদী ছিলেন সমগ্র পাকিস্তানের আমীর। তাঁরা প্রথম থেকেই বলে আসছেন তাঁরা নাকি 'ইসলামী'আদর্শের রাজনীতি করেন। প্রকৃতপক্ষে তাঁরা মহান ধর্ম ইসলামের বিবৃতি সাধন করে মওদুদীবাদ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে রত।

তৎকালীন পাকিস্তানের হাক্কানী আলেমরা অনেকবার ফতোয়া দিয়ে জামায়াতে ইসলামী মওদুদীবাদীদের কাফের ঘোষণা করেছিলেন। আলেমরা 

এমনকি এই কথাও বলেছিলেন,মওদুদীবাদী গোলাম আযমের পেছনে নামাজ পড়লে নামাজ হবে না।

পীর মোহসীন উদ্দীন দুদু মিয়া ১৯৬৯ সালে জানিয়েছিলেন,মওদুদীর নামের আগে যে 'মাওলানা' শব্দটি ব্যবহার করেন তা সনদপ্রাপ্ত 'মাওলানা' খেতাব নয়। তিনি বলেন,ভরতের হাইদরাবাদের নিজামের দরবারে মওদুদী প্রভুদের তুষ্ট করার জন্য মওদুদী নানা রকম দালালির কাজকর্ম করতেন। 

সেখানে তিনি নিয়মিত সুট এবং টাই পরতেন। পরে অনৈসলামিক কাজে নিয়ত সাম্রাজ্যবাদী ওই প্রভুরা মওদুদীকে 'মাওলানা' খেতাব দেন। (দৈনিক পাকিস্তান,২০ অক্টোবর,১৯৬৯।)

এছাড়া রাজতন্ত্রের বৈধতা ও প্রয়োজনীয়তা তা আবার ইসলামী দৃষ্টিকোন থেকে প্রমান করার জন্য তিনি হাইদরাবাদের নিজামুলমুলক আসিফ জাহর জীবন-চরিতও রচনা করেছিলেন। (বর্তমানে সৌদি রাজতন্ত্রের সাথে জামায়াতে ইসলামীর সখ্যতার কারণও এখানেই নিবন্ধ)। (হালিম দাদ খান,মুক্তিযুদ্ধ ও গোলাম আযম(ঢাকাঃ১৯৯২)পৃষ্ঠা ৯)

১৯৬৯ সালের ৭ নভেম্বর ঢাকার কেরানীগঞ্জের শ্রদ্ধেয় আলেম মাওলানা অলিউর রহমান, জামায়াতে ইসলামীর কর্মকাণ্ডে দেশের মানুষ ইসলাম সম্পর্কে ভুল বুঝতে পারে আশংকা করে বিবৃতি দিয়েছিলেন। (দৈনিক পাকিস্তান,৭ নভেম্বর ১৯৬৯।) ১৯৭০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার নিখিল পাকিস্তান ইসলামী বিপ্লবী পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা মোহাম্মদ ওবায়দুল্লহ বিন সাইদ জামায়াতে ইসলামী সমর্থক ইমামের পেছনে নামাজ না পড়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। (দৈনিক পাকিস্তান,১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৭০।)

৬৯ সালের ৩০ অক্টোবর পাকিস্তানের ১৩ জন আলেম জামায়াতে ইসলামী সমর্থকদের কাফের ঘোষনা করে ফতোয়া দিয়েছিলেন। (দৈনিক পাকিস্তান, ৩০ অক্টোবর ১৯৬৯।) পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি জামে মসজিদের ইমাম ১৯৬৯ সালে জানিয়েছিলেন, মাওলানা মওদুদী কোরআনের অপব্যাখ্যা করে বই লিখে প্রচার করে ধর্মপ্রান মুসলমানদের ক্ষতিগ্রস্ত করছেন। তিনি দাবি করেন,মওদুদী তার বইগুলো প্রত্যাহার করবেন বলে ওয়াদা দিয়েছিলেন কিন্তু তিনি ওয়াদা খেলাপকারী মোনাফেকের পরিচয় দিয়েছিলেন। (দৈনিক পাকিস্তান,২২ সেপ্টেম্বর ১৯৬৯।) এখানে বলাবাহুল্য,পবিত্র ইসলাম ও কোরআনের অপব্যাখ্যা করা এই বইগুলোই বর্তমান বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী এবং তার শিরোমণি গোলাম আযম, আব্বাস আলী খান,মওদুদীবাদ যা উগ্রধর্মান্ধ ও ক্ষমতার লিপ্সা থেকে জাত, যা আধ্যাত্মিকতা নয়,প্রচণ্ড ভোগ-বিলাস ও মোহ সৃষ্টির প্রয়োজনে সৃষ্ট। সারা দুনিয়ার মানুষ ইসলামকে শান্তির ধর্ম হিসেবেই জানে। এই ধর্মের প্রচারক হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা (সঃ) দ্বারে দ্বারে গিয়ে দাওয়াতের মাধ্যমে মানুষকে সৎ ও ন্যায়ের পথে এনেছিলেন। এই জন্যে রসুলকে সীমাহীন নির্যাতনের সম্মুখীন হতে হয়েছিল। কিন্তু গোলাম আযমের গুরু মওদুদী হযরত রসুলে আকরামের এই আত্মত্যাগকে অপমানিত করছেন কোন প্রকার কৌশলে নয়,একেবারে প্রকাশ্য কৌশলে। মওদুদী তাঁর 'আল জেহাদ কিল ইসলাম' গ্রন্থে' লিখেছেন ; রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহে ওয়াসাল্লাম তের বছর পর্যন্ত আরবকে ইসলামের আহ্বান জানাতে থাকেন,মানুষকে বুঝানোর যত প্রকার উৎকৃষ্ট পন্থা আছে তা অবলম্বন করেন,যুক্তি-প্রমান দেন....তিনি সত্য প্রকাশ ও সংস্থাপনের জন্য উপযোগী কোন উপায় বাদ দেয় নাই।... কিন্তু ওয়াজ নসিয়ত ব্যর্থ হওয়ার পর ইসলামের আহ্বায়ক তলোয়ার হাতে লইলেন...তিনি (সঃ)তলোয়ার হাতে লওয়ার পর মানুষের মন থেকে ক্রমে ক্রমে পাপ ও দুস্ক্কৃতির কালিমা দূর হতে লাগলো।' (মওলানা আবু আলা মওদুদী,আল জেহাদ কিল ইসলাম,পৃষ্ঠা ১৩৭-১৩৮(হযরত মিয়া তাহের আহমদ (আইঃ),পাকিস্তান সরকারের শ্বেতপত্রের উত্তর, দ্বিতীয় খণ্ড (ঢাকা,১৯৮৭) প্রশ্নে উদ্ধৃত।) দুনিয়ার বুকে ইসলাম প্রচারিত হওয়ার এই তত্ব হচ্ছে অমুসলমানদের। ইসলামবিরোধীরা সব সময় প্রচার করে এসেছে যে,ইসলাম দুনিয়াতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে গায়ের জোরে তলোয়ার দিয়ে। মওদুদীর এই ব্যাখ্যায় শুধু ইসলামের দুশমনরাই খুশি হতে পারে,মুসলমানেরা নয়। শুধু তা-ই নয়,মওদুদী চ্যালেঞ্জ করেছেন পরম শক্তিমান আল্লাহ তায়ালার প্রতিও,অপমান করেছেন আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদকেও(নাউজিবিল্লাহ!)। এছাড়া ইসলামের সুবিখ্যাত সাম্য ও কেন্দ্রীয় আদর্শের আকর্ষণের কথাও এতে অস্বীকার করা হয়েছে। এমনি করে এই জামায়াতে ইসলামী এবং গোলাম আযমরা সুকৌশলে এদেশে ইসলামের মূল প্রেরনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ১৯৬৯-৭০ সালে যখন এদেশের আপামর মানুষ তাদের প্রিয় রাজনৈতিক নেতা হিসাবে শ্লোগান তুলেছিলেন,'আমার নেতা-তোমার নেতা : শেখ মুজিব-শেখ মুজিব' তখন জামায়াতে ইসলামী পাল্টা আমাদের প্রিয় নবীকে শেখ মুজিবের প্রতিপক্ষ দাঁড় করিয়ে বলল,'আমার নেতা-তোমার নেতা : বিশ্ব নবী মোস্তফা।' জামায়াতে ইসলামীরা জানতো,এদেশের মানুষ বাংলাদেশের নেতা হিসেবেই শেখ মুজিবের শ্লোগান দিচ্ছে। তারপরেও প্রিয় নবীর নামে পাল্টা শ্লোগান তুলে তারা বলেছিল,আমাদের নেতা হযরত মোহম্মদকে মানলে পাল্লায় ভোট দাও। কিন্তু বাংলার মানুষ ভোট দিল শেখ মুজিবের নৌকায়। তাহলে অর্থটা কি দাঁড়ায়,ভোটে কি শেখ মুজিবের কাছে হযরত মোহম্মদ(সঃ)-এর পরাজয় ঘটলো(নাউজিবিল্লাহ)!  এভাবেই পলেপলে দিনে দিনে জামায়াত আমাদের ধর্ম, আমাদের ইসলামকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। পৃথিবীর সকল দেশেই যার যার রাষ্ট্রীয় ভূখণ্ড,জাতিসত্তা,ইতিহাস,ঐতিহ্য,আইনবিধি নিয়ে আলাদা সংবিধান থাকে। পৃথিবীর সকল দেশেই তা আছে,শুধু তাই নয়,সকল মুসলিম দেশেও আছে। কিন্তু বুঝেশুনেই জামায়াত চটকদার শ্লোগান দেয়,'আমাদের সংবিধান কোরআন'।  প্রকৃতপক্ষে কোরআনকে কে অস্বীকার করছে ? কেউ না। তবুও জামায়াত একটি দেশের সংবিধানের প্রতিপক্ষ হিসেবে কোরআনকে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। খুব সচেতনভাবে পবিত্র গ্রন্থ কোরআনকে তারা এভাবে অপমানিত করছে। প্রিয় নবী হযরত মোহম্মদ(সঃ)-এর সময়ে তার নেতৃত্বে বদরের যুদ্ধ হয়েছিল। সেই পবিত্র ধর্মীয় যুদ্ধে যেসব বীর অংশ নিয়েছিলেন তারা  ইসলামের ইতিহাসে আলবদর নামে খ্যাতি লাভ করেছিল। গোলাম আযমরা ১৯৭১ সালে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের সময় এই নামেই একটি খুনী বাহিনী তৈরি করলো। মহান আল্লাহ সেদিন তাদের অবশ্যই শায়েস্তা করেছিল,তাদের ধ্বংস করেছিল,সমূলে এদেশ থেকে উৎপাটন করেছিল। কিন্তু একটি ক্ষত থেকেই গেল, মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যাকারী, আমাদের মা-বোনদের ধর্ষণকারী এই বাহিনীকে এখন বাংলার মানুষ রাজাকার-আলবদর বলে গাল দেয়। পবিত্র 'আলবদর' শব্দটির এই অপব্যবহারের ফলে মহান ইসলামের এক বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল। পৃথিবীর সব দেশের গনতান্ত্রিক সমাজ বলে থাকে জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। চীনের মাও সে তুং অবশ্য বলতেন,বন্দুকের নলই সকল ক্ষমতার উৎস। তার বিপরীতে এই রাজনৈতিক বাক্যটি  ব্যবহার হত। ইদানিং জামায়াতে ইসলামী ও গোলাম আযমরা সারাদেশে একটি শ্লোগান দেয়ালের গাঁয়ে সেঁটে দিচ্ছে : 'আল্লাহই সকল ক্ষমতার উৎস'। এই শ্লোগানটি নতুন করে তুলে গোলাম আযমরা আসলে কি বলতে চায় : একটি হচ্ছে,তারা জনগনকে ভয় পায়,জনগনের রায়কে ভয় করে,তারা জানে যতোই ইসলাম,আল্লাহ,কোরআন,নবী ইত্যাদি নিয়ে তারা রাজনৈতিক ব্যবসা করুক না কেন,জনগণ সময়ে এসে ঠিকই তাদের ঝাড়ু-পেটা নয় শুধু, এবার একেবারে নির্মূল করে ছাড়বে। কারণ আমাদের মহান আল্লাহ অবশ্যই সকল ক্ষমতার উৎস। এ ব্যাপারে কারো শুধু নিরংকুশ নয়,বিন্দুমাত্র সন্দেহ থাকলে সে আর মুসলমান থাকতে পারে না। কিন্তু 'জনগন সকল ক্ষমতার উৎস' কথাটি আসছে একটা দৈশিক প্রশ্নে, এরশাদের মতো অবার্চীনরা মনে করে রাইফেল একটা উচিয়ে ধরতে পারলেই ক্ষমতাই যাওয়া যায়,' জনগন ক্ষমতার উৎস' বলতে এই বন্দুকওয়ালাদেরকেই চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে,জামায়াতী-গোলামরা তা জানেও।  কিন্তু মহান আল্লাহ তায়ালাকে তারা সজ্ঞানে হেয় করতে চায় বলেই এই 'আল্লাহ ক্ষমতার উৎস' শ্লোগানটি পাল্টা সামনে তুলে দিচ্ছে। জামায়াতী-গোলাম আযমরা যুগে যুগে যে মার খেয়েছে, ধ্বংস হয়েছে এই কারনেই। পবিত্র ধর্ম ,আল্লাহ এবং আমাদের প্রিয় নবীকে নিয়ে রাজনৈতিক ব্যবসা করার কারণেই আজ সমাজে তারা উচ্ছিষ্ট,তারা নরাধম,অসভ্য,বর্বর বলে  পরিচিত। এই জন্যেই বাংলার পবিত্র ভূমিতে তাদের জায়গা নেই বলে ধ্বনি ওঠে। শুধু বাংলা কেন,এই পৃথিবীর কোন দেশই এই গণ্ডমূর্খ, জ্ঞানপাপী, রাফেজী ধর্মদ্রোহী বাতিল মতবাদীদের আজকে গ্রহন করতে রাজি হচ্ছে না। এদের প্রতি আল্লাহর গজব ও অভিশাপ নাজিল হয়েছে। ১৯৫৩ সালে এদের আমীর মওদুদীর ফাঁসি হয়েছিল,সেই রায় কার্যকর না করাতে এদেশের জনগন ১৯৭১ সালে এদের পাপের ফলকে ভোগ করেছে। আবার ১৯৭১ সালে এদের পাপের উপযুক্ত শাস্তি না হওয়াতে আজকে আবার এইসব 'বাতেল মতবাদে'র লাঞ্ছনা জনগনকে ভোগ করতে হবে। যেহেতু জনগন তার মনোবাঞ্ছা পূরণে দেরিতে হলেও গোলাম আজমের ফাঁসি দিতে প্রস্তুত এবং পবিত্র  দায়িত্ব পালনে যারাই পিছপা হবেন,আল্লাহ তাদেরও শাস্তি দিতে ভুলবেন না।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) তাঁর বিদায় হজের শেষ ভাষণে বলেছিলেন,ধর্ম নিয়ে তোমরা বাড়াবাড়ি করো না,অতীতে অনেক জাতি ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করে ধ্বংস হয়ে গেছে। এই সেদিনই তো আমরা দেখলাম,কথায় কথায় পাকিস্তানে ধর্মের নামে হোলিখেলার রাজনীতি। এই বর্বর ধর্ম ব্যবসায়ীদের জন্য পৃথিবীর সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত একটি দেশ 'পাকিস্তান' টিকতে পারলো না,ধ্বংস হয়ে গেল। আজও দেখতে পাচ্ছি,আমাদের দেশের এক শ্রেনীর মাওলানা সেই পূর্বের মতোই আবারও ধর্মের নামে ডিগবাজি খাচ্ছেন,মনের খুশিতে যা ইচ্ছা বলছেন, যা ইচ্ছা ফতোয়া দিচ্ছেন,ইসলামের নামে লড়াই করতে চাচ্ছেন। তাদের জন্য এক প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড় অপেক্ষা করছে,সবকিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে যাবে,উড়ে যাবে এইসব জোশ, আলেম হিসেবে তারা কখনোই তখন আর বিবেচিত হবেন না। কারন তাঁরা রাজনীতির মাঠে নেমেছেন,তাঁরা রাজনৈতিক নেতার মর্যাদা হিসেবেই আল্লাহর ইচ্ছায় সীমা লঙঘনের দায়ে জনগন কর্তৃক হেদায়িত হবেন। এখানে বলে নেওয়া ভাল,আমাদের দেশের হাক্কানী আলেমরা কখনই তাদের সাথে ছিলেন না,তাঁরা এই নোংরা রাজনীতিতে কখনই আসেন না। আমাদের দেশের মাদ্রাসার ছাত্র এবং আলেম সমাজ বেশির ভাগ 'দেওবন্দী' আলেম সমাজের অনুসারী। এরা কখনই জামায়াতে ইসলামীর মওদুদীবাদকে সমর্থন করেন নি, বরং জামায়াতদের তারা কাফেরই মনে করে থাকেন। এছাড়া,আমাদের দেশের আরেকটি দাওয়াতী প্রতিষ্ঠান আছে, 'তবলীগ জামাত' যার নাম,তারাও কখনই ধর্মের সাথে রাজনীতিকে মেলাতে আসেন নি । অনেক সচেতন রাজনৈতিক কর্মীই তাদের সম্বন্ধে ভুল বুঝে থাকেন। জামায়াতী ইসলামী গোলাম আযমরা আজ মনেপ্রানে এদেরই প্রধান শত্রু বলে বিবেচনা করে থাকে। কারন জামায়াতে ইসলামী ও গোলাম আযমদের মওদুদীবাদী আদর্শকে তাত্ত্বিকভাবে এরাই সবসময় প্রত্যাখ্যান করে আসছে। প্রকতপক্ষে এরাই আসল ইসলামিক মৌলবাদী। জামায়াতে ইসলামীকে আজ যারা 'মৌলবাদ' বলছেন তাঁরা আসলে ভূল করছেন। কারণ জামায়াতে ইসলামী ও তার নেতা-কর্মীরা সেই গোলাম আযম, মাওলানা সাঈদী যেই হোন,তারা কেউ ইসলামের মূলকে ধরে রয় নি,বরং ইসলামের বিকৃতি সাধন করে তারা এখন তথাকথিত আধুনিক ইসলাম করার চেষ্টা করছেন,যা রসুলের ইসলামের সাথে কোন মিল নেই। মাওলানা সাঈদী,গোলাম আযমরা এখন অডিও-ভিডিও,নাচ,গান,বাদ্য,চার রঙা ছবির আত্মজীবনীর বই সবই করে চলেছেন। জামায়াতে ইসলামী এবং গোলাম আযম-মাওলানা সাঈদীদের সবচেয়ে বড় অধঃপতন দেখতে পাই তাদের মিথ্যাচারে। তাদের প্রচারিত দৈনিক সংগ্রাম,মিল্লাত প্রভৃতি দৈনিকগুলোকে দিনের পর দিন মিথ্যা এবং জ্বলন- মিথ্যাগুলো জেনেশুনে প্রচার করতে দেখা যায়। তা যেকোনো সুসভ্য মানুষকে বিচলিত করবে। প্রতিদিন সংবাদ আর মিল্লাত পড়লে মনে হবে দেশে বুঝি এখন কোন যুদ্ধ চলছে। তাদের অবিরাম মিথ্যার বেসাতি এবং অসহনীয় উস্কানির ফলে দেশে যদি কোনো প্রলয়ংকরী ঘটনা ঘটে যায় তাহলে পরবর্তীকালে এগুলোই হবে দলিল,যেকোনো সুসভ্য মানুষ পড়লে বুঝতে পারবে এইসব পাপিষ্ঠ অমানুষের দল কেমন করে ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে এনেছিল ১৯৭১ সালের মতোই।

জামায়াতে ইসলামী ও গোলাম আযমের মিথ্যাচারের কতকগুলো নমুনা এই প্রসংগে উল্লেখ করা যায়। প্রথমেই একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের  মীমাংসা হওয়া উচিত তথাকথিত 'ভাষা সৈনিক' হিসেবে গোলাম আযমের দাবি। প্রকৃতপক্ষে ভাষা আন্দলন বলতে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির আত্মদানকেই বোঝানো হয়ে থাকে। ভাষার সংগ্রাম হিসেবে এদিনটিকেই বাংগালি জাতি প্রতিবছর স্মরণ করে থাকে। বর্তমানের ভাষা শহীদ মিনার '৫২সালের এই দিনটির স্মৃতি সামনে রেখেই। গোলাম আযম ১৯৫২ সালে ছাত্র ছিলেন না,রাজনৈতিক নেতাও ছিলেন না।  গোলাম আযমের নির্দেশে তাঁরই অনুগামী শিষ্য আলবদর নেতা মুহাম্মদ কামরুজ্জামান গোলাম আযমের যে জীবনীগ্রন্থ রচনা করেছেন তাতে দাবি করেছেন যে,১৯৪৮ সালে চকবাজারে গোলাম আযম অন্যদের সাথে প্রচারপত্র বিলি করতে গিয়েছিলেন। আরও একটি তথ্য দিতে গিয়ে এই গ্রন্থেই বলা হয়েছে,পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান যখন ঢাকায় এসেছিলেন, তখন ডাকসুর পক্ষ থেকে একটি মানপত্র পড়া হয়েছিল এবং তা ডাকসুর সহ-সভাপতি  অরবিন্দ বোস পড়বেন বলে ঠিক হলেও হিন্দু বলে তিনি পড়েন নি,পড়েছেন সাধারণ সম্পাদক গোলাম আযম। ব্যস্‌,এই তো বীর! আজ ভাষা আন্দোলন যখন বাঙাগালির হৃদয়ে এমন প্রাণবিদ্ধ হয়ে আছে,কোন রকম তার সাথে কৃতিত্ব নিয়ে ভাষা সৈনিক খেতাব নিতে পারলেই বাংগালির হৃদয়ে স্থান পাওয়া সম্ভব হবে। কিন্তু সম্ভব নয়। কারণ প্রথমেই বলেছি,ভাষা সৈনিক বলতে এদেশের মানুষ '৫২ সালের একুশের মিছিলের সৈনিকদের বুঝে থাকেন। গোলাম আযম ১৯৪৮ সালে ভাষার লড়াইয়ের এই তথাকথিত সংযোগের দাবী ধোপে টেকে না। কারণ ১৯৪৮ কেন,এরকম বাংলা ভাষার দাবির সমর্থনে ছোটখাট সূত্রপাত ১৯৫৭,এমনকি'৪৭-পূর্ববর্তী সময়েও ঘটেছে। বরং ১৯৪৮ সালে ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ভাষার সংগ্রামে  গোলাম আযম ছিলেন নীরব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে সেদিন বাংলা ভাষার পক্ষে একটি বিবৃতিও তিনি দেন নি। দালাল ছাত্রনেতা হিসেবে তিনি সেদিন ছিলেন নীরব। সেদিনের আন্দলনের পক্ষে তিনি তাঁর একটি বিবৃতির প্রমানও দেখাতে পারবেন না। ভাবতে লজ্জা হয়,সেদিনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা যেসময় জিন্নাহর মুখের উপর 'না-না' করে থুতু ছিটিয়ে দিয়েছিলেন,গোলাম আযম তখন গা ঢাকা দিয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছেন। বরং গোলাম আযম নিজেই ঐ গ্রন্থেই স্বীকার করেছেন,জিন্নাহ সম্মানে রেসকোর্সের সংবর্ধনায় তিনি নাকি 'মঞ্চের কাছেই বসেছিলেন' এবং সেদিন জিন্নাহ উর্দূর পক্ষে কথা বললে তিনি নাকি কোন প্রতিবাদ দেখেন নি। (মুহাম্মদ কামরুজ্জামান,অধ্যাপক গোলাম আযমের সংগ্রামী জীবন,ঢাকা, ১৯৮৯, পৃষ্ঠা ২৭-২৮।) এর চেয়ে নির্লজ্জ মিথ্যা আর কি হতে পারে! প্রকৃতপক্ষে সেদিনও  গোলাম আজমের ভূমিকা ছিল সুস্পষ্টভাবে উর্দূরই পক্ষে। ফলে জিন্নাহর সাথে যখন ছাত্র নেতারা দেখা করতে গিয়েছিলেন, এবং বাংলার পক্ষে দাবি জানিয়েছিলেন তখন সেই প্রতিনিধিদলে গোলাম আযম কেন স্থান পান নাই। তার সেদিনের একই গনবিরোধী ভূমিকার জন্যই ডাকসুর মতো প্রতিষ্ঠানের সাধরণ সম্পাদক হওয়ার পরও কোন জায়গায় তাঁর প্রতিনিধিত্ব নেই। তিনি বাংলার দাবিতে কোথাও যান নি। কোন দলিলে তাঁর নাম পাওয়া যায় না। গোলাম আযম বাঙালি সন্তান হয়েও আজীবনই যে পাঞ্জাবী প্রভুদের 'দাস' ছিলেন তার প্রমান রয়েছে তাঁর প্রমাণ রয়েছে তাঁর কর্মকাণ্ডেই। ১৯৭০ সালের ১১ এপ্রিল রাজশাহীতে গোলাম আযম বলেছিলেন,'বাঙালিরা কখোন জাতি ছিল না'। (দৈনিক পাকিস্তান, ১৩ এপ্রিল, ১৯৭০।) একই বছর ১৮ জুন তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের শুক্কুরে তাঁর  পাঞ্জাবি প্রভুদের দেওয়া এক সংবর্ধনার জবাবে বলেন, বাংলা ভাষা আন্দোলনের সময় তিনি তাতে অংশ নিয়েছিলেন কিন্তু এই জন্য তিনি অনুতপ্ত।  তিনি আরো বলেন, এদেশের মুসলমানদের ভাষা হওয়া উচিত উর্দূ। (দৈনিক পাকিস্তান, ১৯ জুন, ১৯৭০।) গোলাম আযম ডাকসুর একজন নেতা হয়েও '৪৮সলে চকবাজারে একটি সামান্য প্রচারপত্র বিলি করার কৃতিত্ব নিয়েই ভাষা আন্দোলনের অংশগ্রহনের খেতাব নিতে চাচ্ছেন,অথচ বাংলা ভাষার পক্ষে ডাকসুর নেতা হিসেবে একটি বিবৃতি সেদিন তিনি কুন্ঠাবোধ করেছিলেন। আর তিনিই সেই অংশগ্রহনের দাবিদার না হয়েও বলছেন ,ভুল করেছিলেন। আজকে আবার তাঁর যখন বিচারের সম্মুখিন হবার সম্ভাবনা হচ্ছে,তখন আবার বলছেন,তিনি 'ভাষা সৈনিক' ছিলেন। ভাবতে অবাক লাগে যে,এদের মতো পাপাচারী- মিথ্যাবাদী এবং ভণ্ড প্রতারক ‌ কি হতে পারে! পৃথিবীতে এই চিড়িয়ার আর একটি দৃষ্টান্ত পাওয়া সম্ভব হবে কিনা সন্দেহ!

- তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ তথ্য ব্যাংক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,ঢাকা। 

লেখাটির বিষয়বস্তু(ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড): জামাতে ইসলামরাজাকার ;
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০০৮ রাত ১০:২৫ | বিষয়বস্তুর স্বত্বাধিকার ও সম্পূর্ণ দায় কেবলমাত্র প্রকাশকা

http://www.somewhereinblog.net/blog/amarblogblog/28780637






__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___