Banner Advertiser

Saturday, April 7, 2012

[ALOCHONA] TURNING POINT OF LIBERATION WAR !!!!!!



তেলিয়াপাড়া : মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া সেনা অফিসারদের প্রথম সম্মেলন

| April 2, 2012 | Comments (0)
সাইদুল ইসলাম : হবিগঞ্জ জেলার পূর্ব প্রান্তে ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী একটি ছোট্ট গ্রাম তেলিয়াপাড়া। সিলেট-হবিগঞ্জ রেলপথে ইটাখোলা রেল স্টেশন থেকে মেঠোপথে ৩০ মিনিটের দূরত্বে গত শতাব্দীর প্রথম ভাগে মাত্র ২৩ ঘর চা-বাগানের শ্রমিক নিয়ে গড়ে উঠেছিল এই গ্রামটি। ১৯৭১ সালের আগে মাত্র একবারই উল্লেখ করার মতো একটি ঘটনা ঘটেছিল এই গ্রামে। ব্রিটিশদের কাছ থেকে মালিকানা পাওয়া এ.এন মুখোপাধ্যায় বাগানটি আনোয়ার হোসেন নামের একজন বাঙালি মুসলমানের কাছে বিক্রি করে দিয়ে ভারতে চলে যান ১৯৬৫ সালে। ততদিনে বাগানের কলেবর বেড়েছে, শ্রমিকের সংখ্যা বেড়েছে, তবে যোগাযোগ ব্যবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। একটি চা-বাগান, একটি ক্ষীণকায় পাহাড়ি নালা আর অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে গড়া নির্জন গ্রামটি হঠাৎ করেই কোলাহল মুখরিত হয়ে পড়ে ১৯৭১ সালের এপ্রিলে। ২৭ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিদ্রোহের পর তেলিয়াপাড়া চা-বাগানে হেডকোয়ার্টার স্থাপন করেন ৪র্থ ইস্টবেঙ্গলের সহ-অধিনায়ক মেজর খালেদ মোশাররফ। তার এক সপ্তাহ পর ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল এখানে অনুষ্ঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধের সেনানায়কদের প্রথম সম্মেলন। সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের অন্যান্য অনেক ঘটনার মতো এই সম্মেলনটিও তেমন কোনো পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতি ছাড়াই অনুষ্ঠিত হয়। তবে সম্মেলন শেষ হয় দেশ স্বাধীন হবার আগ পর্যন্ত সর্বাত্মক লড়াইয়ের পরিকল্পনা নিয়ে।
একথা আজ আর অস্বীকার করার উপায় নেই যে, '৭০-এর নির্বাচনে বিজয়ের পরও ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা, পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীর ছলচাতুরী, ছাত্রসমাজের সশস্ত্র আন্দোলনের মহড়া এবং বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালির স্বাধীনতার আকাক্সক্ষাকে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে দিলেও লড়াই করে বিজয় অর্জনের প্রস্তুতি ছিল অপ্রতুল। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সাফল্য, দলের বুর্জোয়া চরিত্র এবং নেতৃত্বের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের উপর বিশ্বাস এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের যুদ্ধ প্রস্তুতির প্রধান প্রতিবন্ধক হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। ৭ মার্চের ভাষণ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বাঙালি ইউনিটগুলোকে উদ্দীপ্ত করলেও যুদ্ধারম্ভের আহ্বান সেখানে স্পষ্ট হয়নি। ফলতঃ এই ইউনিটগুলোর যুথবদ্ধতা নষ্ট করার জন্যে মহড়া এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার অজুহাতে সেনানিবাসের বাইরে পাঠাতে পাকিস্তান সেনা নেতৃত্বের তেমন কোনো বেগ পোহাতে হয়নি। অপারেশন সার্চ লাইটের নামে পাকিস্তান বাহিনীর নজিরবিহীন হত্যাযজ্ঞই মূলতঃ বাঙালিকে স্বাধীনতার জন্যে অকুতোভয় করে তোলে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আক্রমণের প্রায় সাথে সাথেই বাঙালি স্বতঃস্ফূর্তভাবে এর জবাব দিতে শুরু করে। ৭ মার্চের ভাষণ সেখানে যতটা প্রেরণা হিসেবে কাজ করে, বাঙালির আত্মরক্ষার মরীয়া চেষ্টা তার চেয়ে বড় অনুঘটক হিসেবে প্রতিভাত হয়। সেনাবাহিনীর বাঙালি ইউনিট এবং ইপিআরের ব্যাটালিয়নগুলো বিভিন্ন সেনানিবাস ও শহরে বিচ্ছিন্নভাবে বিদ্রোহ করে। এই ইউনিটগুলোর মধ্যে পারস্পারিক যোগাযোগ না থাকায় বিদ্রোহের প্রথম কয়েকদিন লেগে যায় খোঁজখবর সংগ্রহে। মেজর জিয়ার নেতৃত্বে ৮ম ইস্ট বেঙ্গল এবং ক্যাপ্টেন রফিকের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের ইপিআর ২৫ মার্চ রাতেই বিদ্রোহ করলেও সে খবর তখনও খালেদ মোশাররফের কাছে পৌঁছেনি। অন্যদিকে মেজর সফিউল্লাহ ২য় বেঙ্গল রেজিমেন্ট নিয়ে ২৮ মার্চ বিদ্রোহ করলেও এর আগের দিন সংঘটিত ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গলের বিদ্রোহের কথা জানতে পারেননি। ২৯ তারিখে খালেদ মোশাররফ সফিউল্লাহ'র বিদ্রোহ এবং ঢাকা আক্রমণের জন্যে কিশোরগঞ্জে ২য় বেঙ্গলকে সংগঠিত করার খবর পান। ঢাকায় পাকিস্তানি ২টি ব্রিগেডসহ প্রচুর সৈন্য মোতায়েন থাকায় খালেদ, সফিউল্লাহকে ঢাকা আক্রমণের পরিবর্তে সিলেটে এসে নিজ বাহিনীকে সংগঠিত করার জন্যে অনুরোধ করেন।  কিশোরগঞ্জের সাথে যোগাযোগের তেমন কোনো ব্যবস্থা না থাকায় তিনি একটি চিঠি দিয়ে লে. মাহবুবকে সফিউল্লার উদ্দেশ্যে পাঠান। অন্য কোনো বাহন না থাকায় মাহবুবকে যেতে হয় রেলের ইঞ্জিনে চেপে। তিনি চিঠিতে লেখেন : উড় হড়ঃ মড় ঃড়ধিৎফং উধপপধ. ণড়ঁ রিষষ নব নধহমরহম ুড়ঁৎ যবধফ ধমধরহংঃ ধিষষ. ডব যধাব ষরনবৎধঃবফ ধহ ধৎবধ যিড়ষব ড়ভ ইৎধযসধহনধৎরধ ঝঁনফরারংরড়হ ধহফ ধ ঢ়ধৎঃ ড়ভ ঝুষযবঃ. ইবভড়ৎব ঃধশরহম ধহু ভঁৎঃযবৎ ধপঃরড়হ ড়হ উধপপধ, বি ংযড়ঁষফ লড়রহঃষু ষরনবৎধঃব ঃযরং যিড়ষব ধৎবধ ধহফ ঃযবহ মড় ভড়ৎ উধপপধ. ও যধফ ধষৎবধফু পড়হঃধপঃবফ ওহফরধহ ইঝঋ ড়ভভরপবৎং ধহফ ঃযবু যধাব ধমৎববফ ঃড় যবষঢ় ঁং. ও পড়ঁষফ হড়ঃ পড়সব ধহফ সববঃ ুড়ঁ ঃড়ফধু নবপধঁংব ও ধস মড়রহম ঃড় সববঃ ইৎরমধফরবৎ ই.ঈ. চধহফবু ড়ভ ইঝঋ যিড় ঢ়ৎড়সরংবফ সব ঃড় যবষঢ় ঁং.
খালেদের পরামর্শ অনুযায়ী সফিউল্লাহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয়ে তেলিয়াপাড়া পৌঁছেন এবং ৩ এপ্রিল তেলিয়াপাড়ায় তাঁর হেডকোয়ার্টার স্থাপন করেন। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের বিদ্রোহ, কালুরঘাটের ঘোষণা এবং কুষ্টিয়ার যুদ্ধের খবর তেলিয়াপাড়া পৌঁছে। ফলে সামগ্রিক যুদ্ধ পরিস্থিতি এই সমর নায়কদের কাছে পরিস্ফুট হয়ে ওঠে। যুদ্ধের গতিময়তা এবং এই ন্যায় যুদ্ধের বৈধতা দেবার জন্যে নেতৃত্বের বিষয়টি তাদের কাছে জরুরি হয়ে পড়ে। ২ এপ্রিল কুমিল্লার মতিনগরের কাছে খালেদের সাথে কর্নেল ওসমানী ও লে. কর্নেল আব্দুর রব (অব.)-এর দেখা হয়ে যায়। এই দু'জনই তখন সামরিক বাহিনী থেকে অবসর নিয়ে আওয়ামী লীগের টিকেটে একজন এমএনএ এবং একজন এমসিএ হয়েছেন। মতিনগর হয়ে ভারতের আগরতলায় যাচ্ছেন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। খালেদের অনুরোধে তাঁরা ৪ এপ্রিল তেলিয়াপাড়ায় ফিরে আসেন বিদ্রোহী এই অফিসারদের সম্মেলনে যোগ দিতে।
৪ এপ্রিল সকাল ১০টায় তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের ম্যানেজারের বাংলোয় কর্নেল ওসমানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া সেনা অফিসারদের প্রথম সম্মেলন। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেনÑ
লে. কর্নেল আব্দুর রব (অব.)
লে. কর্নেল সালাউদ্দিন মোহাম্মদ রেযা
মেজর কাজী নুরুজ্জামান (অব.)
মেজর জিয়াউর রহমান
মেজর কাজী মোহাম্মদ সফিউল্লাহ
মেজর খালেদ মোশাররফ
মেজর নুরুল ইসলাম
মেজর মঈনুল হোসেন চৌধুরী
মেজর শাফায়েত জামিল
লে. আখতার আহমেদ
এছাড়া বিএসএফের ব্রিগেডিয়ার পান্ডেও পর্যবেক্ষক হিসেবে এ সভায় যোগ দেন। সভায়  বিদ্রোহের তাৎক্ষণিক ও সুদূরপ্রসারী  ফলাফলের পূর্বাপর বিশ্লেষণের পর রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখে বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবার সংকল্প ব্যক্ত করা হয়। এছাড়া এই যুদ্ধকে বৈধতা দেওয়া এবং বিদেশি সাহায্যের জন্যে সরকার গঠনেরও প্রয়োজন অনুভূত হয় তেলিয়াপাড়াতেই। এই সম্মেলনে গৃহিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের যুদ্ধের ভার দেয়া হয় মেজর জিয়াকে, সফিউল্লাহ পান ব্রাহ্মণবাড়িয়া-সিলেটের যুদ্ধের ভার আর খালেদ মোশাররফকে দেওয়া হয় কুমিল্লা-নোয়াখালীর দায়িত্ব। ৮ম বেঙ্গলের জনবল ছিল এমনিতেই কম। খারিয়া সেনানিবাসে বদলির জন্যে তাদের অস্ত্রশস্ত্র যুদ্ধের আগেই তুলে দেয়া হয়েছিল জাহাজে। তার ওপর কালুরঘাটসহ অন্যান্য যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির কারণে ক্যাপ্টেন এজাজ আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ২য় বেঙ্গলের একটি কোম্পানিকে ৮ম বেঙ্গলে দিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্তও হয় এই সম্মেলনে।
এই সম্মেলনের ফলে পরিকল্পনাহীন বিদ্রোহ একটি যুদ্ধের রূপ নেয়। স্পষ্ট হয়ে ওঠে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের রূপরেখা।
ওসমানী পরদিনই আগরতলা যাত্রা করেন এই সম্মেলনে গৃহিত সিদ্ধান্ত দলীয় নেতৃবৃন্দকে জানাবার জন্যে। একই সময় বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন একটি ছোট্ট ডাকোটা বিমানে আগরতলা পৌঁছান জনমত গঠন ও সাহায্যের আশায়। ১০ এপ্রিল গঠিত হয় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার। শিলিগুড়ির একটি বেতার কেন্দ্র থেকে তাজউদ্দীন সারা বিশ্বকে জানিয়ে দেন নতুন একটি দেশÑ একটি জাতি এবং মুক্তিযুদ্ধের কথা। সেদিন ১১ এপ্রিল ১৯৭১।
তথ্য সূত্র
১.    গধলড়ৎ এবহবৎধষ ঝযধভরঁষষধয; ইধহমষধফবংয ধঃ ডধৎ
২.    মেজর আখতার আহমেদ; বার বার ফিরে যাই
৩.    সাক্ষাৎকার : ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ; মুক্তিযুদ্ধের দলিল পত্র; ৯ম খ-
৪.    সাক্ষাৎকার : কর্নেল শাফায়েত জামিল; ঐ
৫.    অঁমঁংঃ অংংবসনষধমব; ছঁধসৎঁষ ঐধংধহ ইযুঁধহ; ফধরষুংঃধৎ ২৬ গধৎপয ২০০৮
About skdesk: View author profile.

Leave a Reply




If you want a picture to show with your comment, go get a Gravatar.


__._,_.___


[Disclaimer: ALOCHONA Management is not liable for information contained in this message. The author takes full responsibility.]
To unsubscribe/subscribe, send request to alochona-owner@egroups.com




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___