Banner Advertiser

Friday, May 11, 2012

[mukto-mona] আমার সাঈদী-শ্রবণ



আমি বেড়ে উঠেছি একটি প্রচণ্ড ধর্মভীরু আর কুসংস্কারাচ্ছন্ন গ্রামে। এখানে জ্বীনে-ভূতে মানুষকে ধরে, আবার ওঝা এসে কখনো সখনো সেই মহাক্ষমতাশালী জ্বীন-ভূতের আছর থেকে মানুষকে রক্ষাও করে!! এখানে জন্মের পর থেকেই শিশুর কব্জি, মাজা আর গলায় নানান তাবিজ-পাথর ঝুলতে শুরু করে। এখানে মুসলমানেরা হুজুরের পড়া পানি খেয়ে রোগমুক্তি পেতে চায় আর হিন্দুরা যায় মনসা-শীতলা'র বাড়ি। এখানের মানুষ এমন লোককে ওস্তাদ মানে যে কিনা বহু দিনের অপরিচ্ছন্নতায় জটাধারী হয়ে এখন নিজেকে জ্বীনের বাদশা বলে দাবি করে। এখানে চুরি যাওয়া মালামাল ফেরত পেতে বাটিচালান আর আয়না পড়া দেয়া হয়। এখানে নদীভাঙ্গন পীড়িত মানুষগুলো সরকারের কাছে আর্জি জানিয়ে পরিত্রাণ পায় না। তাই আশায় বসে থাকে যে, মসজিদ ঘরটার আগে এসে নিশ্চয়ই নদীভাঙ্গন থেমে যাবে। প্রতিবার আশাভঙ্গ হয়েও এই মানুষগুলো আবারো আশা করে, আল্লার ঘর ভাঙ্গবে না। আল্লার ঘর সব কিছু ঠেকিয়ে দিবে। এমন বিশ্বাসী মানুষগুলোকে বেহেস্ত দিবেন না তো আর কাকে দিবেন, আল্লা? তাই তো আল্লা তাদের জন্য সত্তরটা করে হুরপরী যোগাড় করতে এতই ব্যস্ত থাকেন যে, অন্যসব আবদার-আহাজারিতে কান দেবার সময়ই পান না!
 
এই গ্রামে প্রতিবছর জৈনপুরী, চন্দ্রপুরী হুজুরেরা আসেন ছবক দিতে; এলাকাটাকে পাক-পবিত্র করতে। আর সেই উপলক্ষে এখানে সিন্নি বিলানো হয়, তবারক দেয়া হয়। হুজুর গভীর রাত অব্দি ওয়াজ করতে থাকেন আর তার শিষ্যরা তাল মিলিয়ে সোভানাল্লা, নাউজুবিল্লা বলে যান। সেই সাথে ঘোষনা হতে থাকে, "অমুক ছাহেব, মাহফিলের জন্য এতহাজার টাকা দিয়েছেন। সবই জোরে বলেন...মারহাবা..." সবাই সমস্বরে বলে ওঠে, "মারহাবা! মারহাবা!!" সেই টাকার কতকটা যায় হুজুরের পকেটে আর কতকটা দিয়ে গরু-মহিষ জবাই আর সিন্নির খরচ মেটানো হয়। গ্রামাঞ্চলে কালোটাকা সাদা করার এটাই সমাজস্বীকৃত উপায়। মসজিদ বানাও, ওয়াজ-মাহফিলে দান-খয়রাত করো, হজ্ব করো; টাকা হালাল হয়ে যাবে। বাড়ির পাশেই মসজিদ হওয়ায় ছোটোবেলা থেকে প্রায় প্রতিবছর দেখে এবং শুনে আসা ওয়াজ-মাহফিলের রূপটা আমার কাছে এরকমই।
 
এলাকার কথা অনেক বললাম। চলে আসি সাঈদী হুজুরের(!) প্রসঙ্গে। "হুজুর আলেম লোক। আল্লার খাস বান্দা। হেয় কেন মানুষ মারতে যাইবো। তাছাড়া গণ্ডোগলের(!) বছর হের বয়সই বা কত আছিল? তারে নিয়া যারা আজেবাজে কতা কইবো তারা হক্কলে দোজখে যাইবো"-সাঈদীকে নিয়ে এই হচ্ছে আমার এক এলাকাবাসীর উক্তি। তিনি পত্রিকা বলতে পড়েন আমার দেশ, নয়াদিগন্ত। প্রথম আলোও পড়েন না, কারণ ঐটাতে নবীজ্বীরে ব্যঙ্গ করছে। ওনারা বেশী শোনেন সাঈদীর ওয়াজের ক্যাসেট। ডিজিটাল দুনিয়ার কেউ হলে না হয় কয়েকটা নেটলিঙ্ক ধরিয়ে দেয়া যেত, কিন্তু এখানে সেটা সম্ভব না পুকুরঘাটে কথায় কথায় যুদ্ধাপরাধ ইস্যু নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তাই আমাকে এখানেই থেমে যেতে হয়। আমার এলাকা ছেয়ে আছে জামাত-নেতাদের মুক্তি দাবীর পোস্টারে। কি বিএনপি, কি জামাত সবার পোস্টারেই শোভা পাচ্ছে সাকা আর জামাতের পাঁচ-ছয়জন নেতার ছবি। জামাতের অঙ্গসংগঠন হিসেবে পরিচিতি পেতে বিএনপি' বোধ করি আর বেশি বাকী নেই। আর অন্ততঃ কয়েকটা যুদ্ধাপরাধীকে যদি ফাঁসিতে ঝোলাতে না পারে, আস্থা হারাবে আওয়ামী লীগও তাই আগামী নির্বাচনে 'না-ভোট'কেই আপাতত বিজয়ীর আসনে দেখছি!
 
ফিরে আসি আল্লামা দেলওয়ার হোসেন সাঈদী ছাহেবের আলোচনায়। আল্লামা হুজুর ছাহেব আদতেই বহুগুণে গুণান্বিত তিনি যেমন ওয়াজে ওস্তাদ, তেমনি সঙ্গীতেও। বাজী ধরে বলতে পারি তার সঙ্গীত প্রতিভায় মুগ্ধ হবেন যে কেউ। এমন প্যারোডি এই আমি অন্ততঃ জীবনে আর শুনিনি।  "ভিগি ভিগি", "আম্মাজান আম্মাজান", "তোমায় দেখলে মনে হয়" এর মতো হিন্দি-বাংলা-ইংরেজী অসংখ্য জনপ্রিয় গানের সুরকে কণ্ঠে ধারণ করে তিনি গেয়েছেন, " হাসিনা তুমি...(না জানে কোয়ি এর সুরে)", "ফুফুজান, ভারত যান"...এরকম আরো অসংখ্য গান। আমাদের বাড়ির পাশের চায়ের দোকানে অবিরত বাজতে থাকতো এবং এখনো বাজে এইগানগুলো...জোরে কিংবা আস্তে...যেকোনো সরকারের আমলেই। একটু কৌশলে খোঁজ করলে মালিবাগ-মগবাজার কিংবা কাঁটাবনের দোকানগুলো থেকে আপনারাও হয়তো তার দু-একটা কপি সংগ্রহ করতে পারবেন।
 
হুজুর অসাধারণ ওয়াজ করেন। আল্লা-খোদার কথা বলেন। ইছলামের কথা বলেন। তিনি দাঁড়ি কাটতে না করেন। কারণ, দাঁড়িতে নাকি ফেরেস্তা ঝুলে। তাই দাঁড়ি কাটলে ফেরেস্তারা কষ্ট পায়, গুণাহ হয়। তিনি মেয়েদের পর্দা করতে বলেন, যাতে মুমিন মুসলমানের ঈমান ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। চুল ঢাকতে বলেন, কারণ চুল বাইরে থাকলে সেটা নাকি কবরে বিষাক্ত সাপ হয়ে ছোবল মারতে থাকে। তিনি নারীর উপর পুরুষের হক নিয়ে কথা বলেন। তিনি বেহেস্তের হুরেদের বর্ণনা দেন। আর সেসব শুনে মমিনদের চোখ ছলছল করে ওঠে। সবশেষে তিনি ইছলামে নারীদের যে সর্বোচ্চ সম্মানের আসন দেয়া হয়েছে সেকথাও বলেন।
 
হুজুরের অনেক গুণ, অনেক বিদ্যা, অনেক রহমত। আজ আর সেসব বলে শেষ করতে পারবো না। তাই আপাততঃ একটা জুক্সই বলি...
 
অনেকদিন হুজুরের সাথে থেকে থেকে বেশ প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠা এক সাগরেদকে একদিন এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাঠানো হলো ওয়াজ করতে। তো সেই সাগরেদ প্রথমবার ওয়াজ করার সুযোগ পেয়ে তার এতদিনের বিদ্যে সব উজাড় করে দিয়ে ওয়াজ করে গেলো। গ্রামের লোকেরাও তার ওয়াজে খুবই খুশি হলো। রাতে তার থাকার ব্যবস্থা হলো মেম্বারের বাড়িতে। সেই বাড়িতে খাওয়া দাওয়া শেষ করে সাগরেদ যখন ঘুমাতে গেলো তখনি পড়লো এক মহাফ্যাসাদে। সময় টা ছিলো শীতকাল। অথচ তাকে কোন কাঁথা বা কম্বল কিছুই দেয়া হয়নি। এদিকে নতুন এলাকা। কিছু বলতেও পারছেন না। শেষে ইতস্ততঃ করে বলেই ফেললেন। তখন গৃহকর্তা জানালো যে, হুজুর আপনি তো ওয়াজে বলছেন যে, মেয়েলোকের পরিধানের জিনিস গায়ে দেয়া হারাম। আর আমাদের গ্রামে তো মেয়েমানুষের পুরান শাড়ি-কাপড় দিয়ে বানানো কাঁথাই গায়ে দেই। তাই গুণাহ হবে বলে আপনাকে দেই নাই। কোন জবাব দিতে না পেরে সাগরেদকে সেই শীতের রাতটা শেষপর্যন্ত কাঁথা ছাড়াই কাটাতে হলো। পরদিন ফিরে এসেই সে তার হুজুরকে পাকড়াও করে ঘটনা জানালো। তখন হুজুর হেসে বললে, "আরে বোকা, এই ওয়াজ তো গরমকালের। শীতকালে এই ওয়াজ দিলে চলবো?"



__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___