Some wonderments and quesries from me elicited the following response from Professor Kar.
Please don't kill the messager. I am still a learner. If you have any queries, please contact Mr. Kar. As a matter of fact, I am planning to ask him more questions.
From: Sushanta Kar <karsushanta40@gmail.com>
To: subimal chakrabarty <subimal@yahoo.com>
Sent: Sunday, August 12, 2012 1:10 PM
Subject: Re: Assam Crisis
To: subimal chakrabarty <subimal@yahoo.com>
Sent: Sunday, August 12, 2012 1:10 PM
Subject: Re: Assam Crisis
ঘোটটো সব্বাই পাকায়। তার রূপ এবং মাত্রাভেদ আলাদা। আপনি নাস্তিক জানি। আপনার লেখা আমি এখানে ওখানে পড়েছি। মুক্তমনা নিয়েও আমার খানিক ধারণা আছে। মাঝে মধ্যে পড়ি।
কিন্তু সত্যি বলতে কি 'যুক্তিবাদী'দের নিয়ে আমার কিছু রিজার্ভেশন আছে। আমার বলবার মানে এই নয় যে মুক্তমনাতে সব্বাই যুক্তিবাদী। হ্যা, এটাও ঠিক যে যুক্তিবাদীদেরও ওই সব গালি খেতে হয়, যা সাধারণত ধর্মদ্বেষীরা প্রতিপক্ষকে দিতে ভালোবাসে।
এবারে যুক্তিবাদীদের সঙ্গে তফাৎ আমার ভাবনার অনেক কিছুই। এখানে যেটি প্রাসঙ্গিক সেটি বলি।
আমি মনে করিনা, ধর্মবিশ্বাসী মানেই সাম্প্রদায়িক বা ধর্মদ্বেষী হয়, বা নাস্তিক মানেই অসাম্প্রদায়িক হয়। নাস্তিকদের সম্প্রদায় বিদ্বেষের বড় প্রমাণ এই মূহুর্তে চীন। যার উগ্র-হান জাতীয়তাবাদী শাসনে
তিব্বতের বৌদ্ধ এবং পশ্চিম চিনের উইঘুরেরা মোটেও ভালো নেই।
আমার ভাবনাতে খুব এক সরল অঙ্ক আছে। যদিও বাস্তবে ঘটনাগুলো এতো সরল নয়। কিন্তু সরল করে না বললে তো অন্যের অনুধাবনে পৌঁছুনো যাবে না, তাই বলা।
আধুনিক পুঁজিবাদী রাষ্ট্র তলোয়ার বাদ দিয়ে আনবিক বোমাকে হাতিয়ার করেছে। তেমনি ধর্ম শাস্ত্রকে ছেড়ে সাম্প্রদায়িকতাকে আশ্রয় করেছে। জাতি রাষ্ট্র বলে একটা ধারণার কথা শুনি। আমরা যারা নাস্তিক কিম্বা বামপন্থার কথা বলেছি, তারাও অনেক সময় জাতি রাষ্ট্রের নাম শুনলেই জয় ধ্বনীও দিয়েছি। 'জয় বাংলা' কিম্বা 'সোনর অসম' বলেছি তো বটেই। কিন্তু সত্যি কি জাতি রাষ্ট্রগুলো ধর্মীয় আবহ থেকে মুক্ত? আছে কোনো রাষ্ট্র গোটা পৃথিবীতে? বডোদের কথাই ধরিনা, কেন? তারাই কি আর বিশুদ্ধ হিন্দু স্বার্থের রক্ষাতে মাঠে নেমেছে? তারা কি সাঁওতালদের মেরে কেটে তাড়ায় নি? তারা কি কোচেদের বিরুদ্ধে লড়ছে না? তারা কি অসমিয়া আধিপত্যের থেকে মুক্তির জন্যেই বডোল্যাণ্ড রাজ্যের দাবিতে লড়ছে না? তারপরেও কেমন এদের ভাষ্য গিয়ে মিলে যায় হিন্দুত্বের স্রোতে। আমি মনে করি না, চট্টগ্রামে আদিবাসীদের জমি দখল করছে শুধু জামাত-বিএনপি। আর লীগেরা আদিবাসিদের খুব মামার বাড়ির আদরে রেখেছে। আদিবাসীদের অস্তিত্বই স্বীকার করে না। ২১শে ফেব্রুয়ারীর দেশে বাংলা ছাড়া আর কোনো ভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতি মেনে নেয় না। এগুলো কি কোনো ভাবেই অমুসলমান নিপীড়ন নয়? শুধুই কি যত দোষ নন্দ ঘোষ জামাতেরাই! অসমে কি কংগ্রেস শাসনে নেই! ধর্মনিরপেক্ষ! জাতীয়তাবাদী!
তো, আমার ভাবনা অন্য রকম। আধুনিক পুঁজিবাদের সঙ্গে সামন্তীয় বিশ্বাসের বিরোধ বাঁধে স্বাভাবিক ভাবেই, কিন্তু তাই বলে সে ধর্মকে বাদ দেয় না। তাকে নতুন চেহারা দেয়, যেমন দিচ্ছেলেন আমাদের দেশে রামমোহন থেকে বঙ্কিম বিবেকানন্দ। বিশ্বাসের থেকে প্রবল হয় পরিচিতির প্রশ্ন। শাস্ত্রের থেকে বড় হয় সম্প্রদায়। যেকোনো হিন্দুকে বলুন, বেদ উপনিষদ নিয়ে কথা বলতে , হাঁ করে তাকিয়ে থাকবে। কিন্তু বলুন মুসলমানের বিরুদ্ধে দুটো কথা বলতে, সেই সবই গড় গড় করে আউড়ে যাবে, যা তাদের শিখিয়েছেন বঙ্কিম, অরবিন্দ, শরৎচন্দ্র থেকে শুরু করে শ্যামাপ্রসাদ হয়ে, আজকের তামাম প্রচার মাধ্যম। মুসলমানের জনসংখ্যা, ধর্মান্ধতা, ক্রুরতা, বিচ্ছিন্নতাবোধ ইত্যাদি ইত্যাদি নিয়ে এরা বিশেষজ্ঞ। এগুলোই আজকের ধর্ম। প্রচারগুলোকে একটা সম্প্রদায়ের সঙ্গে জুড়ে দেয়। কিন্তু এটা কি সে করে শুধু ধর্মের প্রসঙ্গেই? সংখ্যালঘু জাতি সত্বাগুলো সম্পর্কেও সে ওমন কিন্তু আধুনিক 'ধারাভাষ্য' বা শাস্ত্র গড়ে তোলে। এই যেমন বাংলাদেশ 'বাঙালি' দেশ, ( বহু প্রগতিশীল ভারতীয় হিন্দুও ভাবেন কথাটা খুবই প্রগতিশীল। জামাত বিরোধী! কথাটা যে চাকমা বিদ্বেষী, বিহারি মুসলমান বিদ্বেষী --এই ভাবনা তাদের চিন্তাতে দূর দূর অব্দিও আসেই না! ) অসম 'অসমিয়া'র প্রদেশ। (কিম্বা খিলঞ্জিয়ার। খিলঞ্জিয়া মানে স্থানীয়। আর হাজার বছরের প্রাচীন বাঙালি এখানে খিলঞ্জিয়া নয়, কিন্তু আটশ বছর আগে আসা আহোম খিলঞ্জিয়া। দেড়শ বছরা আগে আসা সাওতাল আদিবাসী খিলঞ্জিয়া, কিন্তু একই সময়ে আসা মুসলমান নয়। )
এই সব মিথ্যে প্রচারের উপর ভিত্তি করেই 'আধুনিক জাতিরাষ্ট্র' নিজের গড়ে উঠাকে কিম্বা গড়ে উঠার সম্ভাবনাকে সামাজিক বৈধতা দেয়, তথা স্বীকৃতি আদায় করে। এই নতুন 'শাস্ত্র'কে হাতিয়ার করেই সে ভোট তন্ত্রের উপর নিজের আধিপত্য কায়েম রাখে।
ভোট যারা দেয়, এবং ভোট যারা কেনে--তারা দুটো পৃথক শ্রেণি। সে আমরা সব্বাই জানি।
যারা দেয় তারা লুণ্ঠিত হয়, যারা কেনে তারা লুঠ করে। এই লুঠকে আড়াল করবার কোনো দরকার পড়েনি রাজা রাম থেকে শুরু করে সিরাজদ্দোউলা কারোরই। কারণ, তাদের ভোটের বাহানা করতে হয় নি।
এবারে 'ভোটবেঙ্ক' বলে একটা শব্দজোড় আমরা ভারতীয় রাজনীতি সম্পর্কে খুব শুনি। কথাটা রাজনীতির লোকেরা কম বলে , খবরের কাগজ আর পানের দোকানি বলে বেশি। কাদের সম্পর্কে? সংখ্যালঘুদের আর দলিতদের সম্পর্কে। আসল ভোটবেঙ্কটি কিন্তু সংখ্যাগুরু এবং উচ্চবর্ণের ।
লুণ্ঠনের পক্ষে তাদের নিপীড়িত শ্রেণিটিরও সমর্থণ আদায় করে নিয়ে সঙ্গী করে নিতে কাজে আসে এই জাতীয়তাবাদের যুগের 'শাস্ত্র'। যে কাজ ঔরঙজেব থাকলে তলোয়ারের জোরে করতেন, সেই কাজ এখনো বন্দুকের জোরে রাষ্ট্র করে, কিন্তু প্রাথমিক কাজগুলো করে রাখে এই সমর্থণ ভিত্তির লোকজনেরা। বডোল্যান্ডে তাই হয়েছে, গুজরাটেও তাই হয়েছিল। লালগড়েও তাই হয়েছিল । ছত্রিশগড়েও তাই হচ্ছে। আমারতো অসম পুলিশকে তত ভয় করে না, যত ভয় করে আমার কলেজের আসু নামের ছাত্র সংগঠনটির বাচ্চা সদস্যদের। এরাই হলো, আধুনিক যুগের সম্প্রসারিত রাষ্ট্র। পশ্চিম বাংলার সিপিএম ক্যাডাররাও তাই ছিল। বাংলাদেশের লীগ সমর্থকেরাও কম যায় না। এরা পুলিশেরও আল্লাহতালা! (হ্যা, আমার পেশা অধ্যাপনা। আপনি জানতে চাইছিলেন।)
এমতাবস্থাতে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাণীকে আমার স্পষ্টতই ভণ্ডামো বলে মনে হয়। যেমন ভণ্ডামো ছিল ঠাণ্ডা যুদ্ধের যুগের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতি।
বডো শাসকেরা সসস্ত্র সামাজিক ভাবে বৈধ উগ্রপন্থীদের সঙ্গে নিয়ে, পুলিশ সঙ্গে নিয়ে হাঙ্গামা করল বলেই অধিকাংশ বিপন্ন মানুষ হলো মুসলমান। কোথাও কোথাও মুসলমান গুণ্ডারা প্রতিরোধ করল বলে কিছু বডো মানুষও বিপন্ন হলেন। কিন্তু সংখ্যাতে তারা কম, কেন না, মুসলমান পক্ষে রাষ্ট্র ছিল না। বিদেশি শক্তির কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু থাকেও যদি, কে বেশি ক্ষতি করতে পারে দেশি না বিদেশি সেতো অঙ্কেই প্রমাণ। ভাবুনতো, নব্বুই দশকের মুম্বাই দাঙ্গা এবং বোমাবাজি দুটোর কোনটিতে লোক বেশি মরেছিল এবং বিপন্ন হয়েছিল? অথচ, সংবিধান, আইন, প্রচার মাধ্যম কাদের জন্যে কাঁদল বেশি, কাদের ধরে শাস্তি দিল। কাদের জন্যে করল না কিছুই! আফজল গুরুকে ফাঁসি দিয়ে হবে, কিন্তু নরেন্দ্র মোদীকে দেশের প্রধানমন্ত্রী করতে হবে।
এবারে ধরুন, তারপরেও, আপনি আমি বললাম শান্তি শান্তি! ব্যাপারটা কী দাঁড়ালো?
যে বডোরা বিপন্ন হলেন, তাদের বলা গেল যা হয়েছে হয়েছে ভুলে যাও। মানে নিরন্ন হয়েছো, তাই থেকে যাও। কিন্তু যে মুসলমান বিপন্ন হলো তাদের বলা হলো, বাপুহে তুমি যে নিজের বাড়িতে ফিরবে, আগে স্বদেশী হবার প্রমাণ দেখাও দেখি। না দেখাতে পারো, শিবিরে পচো। কিন্তু বিদ্রোহ করো না। ওটা মৌলবাদ! কোনোদিন কোনো কমিউনিষ্ট দল আসে তবে ওদের সঙ্গে মিছিল করো, এরা কল্কি অবতার, শহর থেজে আসবেন বিশ্বাস রেখো। সাবধান, গাঁয়ের মোল্লার কথায় মুসলমান সংগঠনে যেও না। ওসব মৌলবাদ! শান্তি শান্তি!
কথাগুলো আমি একাধারে, আধুনিক রাষ্ট্র এবং পরিচিতির রাজনীতি নিয়ে বলতে গিয়ে বললাম। একই কথা, মায়ান্মারের রোহিঙ্গিয়া, ( লোগ তো জাতীয়তাবাদী! ঐ ভন্ডরা চাকমাদের বাঙালি বলে চালিয়ে দিতে চায়, রোহিঙ্গিয়াদের 'বাঙালি' বলে জয় করে নিল না কেন? বললেই পারত, মায়ান্মারে 'বাঙালি' নিধন চলবে না! জামাত জুজুতো জুজুই! ) কিম্বা বাংলাদেশের হিন্দু কিম্বা, আদিবাসীদের সম্পর্কে । বাংলাদেশের কোনো হিন্দু মনু-র পক্ষে বললেন কিনা তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না, আমি জানি তিনি ভারতীয় ভাজপা, বা আর এস এস-এর মতো বিপজ্জনক হতেই পারেন না। বরং ভাজপার মতাদর্শ তাকে ওখানে নিষ্ক্রিয় এবং হতাশ করে রাখতে পারে, সফলতার সঙ্গেই। কী করে! কারণ, তিনি যে জানেন, তার নরেন্দ্রমোদীও নেই, সুতরাং মুক্তিও নেই। মার খাওয়াটাই ভবিতব্য।
তিনি যে খুব ধর্ম বোঝেন বা মানেন-- তা নাও হতে পারে। কিন্তু মারটা যেহেতু তার ধর্মীয় পরিচয়কে ঘিরেই খেতে হয়, তার পক্ষে ধর্ম নিয়ে এক প্রবল গৌরব বোধ তা মিথ্যে হলেও থাকতেই পারে। কিন্তু সেই গৌরব বোধও ভারতীয় নাস্তিক ভাজপা সদস্যের থেকে নিরাপদ!
সংখ্যালঘু কোনো দেশেই সাধারণত আক্রামক হয় না, আর হলেও তার সঙ্গে রাষ্ট্র থাকে না। থাকার ভান করে মাত্র। এই যেমন অসম সরকার বলছে হাঙ্গামাতে বাংলাদেশি নেই, কিন্তু হাঙ্গামা আটকায় নি, বা এখন শরণার্থীদের পরিচয় পত্রের প্রশ্নে ভাজপা শিবিরের দাবির কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।
যদিবা, বিশুদ্ধ শ্রেণি ঐক্য কিম্বা বিদ্রোহও চাই একটা দেশে ---তবে, সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের নিপীড়িত শ্রেণিটির ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে না বেরুলেও চলবে, তার মাতৃভাষাকে ছাড়বারও দরকার নেই। কিন্ত এই দুটোকে কেন্দ্র করে যে আধুনিক 'শাস্ত্র' বা 'বয়ান কেন্দ্র' শাসকেরা গড়ে তোলে তার থেকে বেরিয়ে এসে, সংখ্যালঘুদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হতে দ্বিধা করা উচিত নয়। সেই সংখ্যালঘু কোথাও মুসলমান, কোথাও , হিন্দু, কোথাও বাঙালি, কোথাও বডো। স্থান-কাল ভেদতো করাই চাই। দুনিয়া জোড়া হিন্দু -মুসলমান সাম্প্রদায়িকতাকে এক করে ফেলা আসলে অতিব্যাপ্তি দোষে দুষ্ট হয়। মালয়েশিয়াতে যখন হিন্দু মার খায়, কিম্বা শ্রীলঙ্কাতে তখন সে যদি বা 'জয় শ্রীরাম' বল;এ সমবেত হয়, আমি যদি বা নাস্তিকও হই কিম্বা মার্ক্সবাদী আমার পাশে দাঁড়াতে দ্বিধা হবে না। কারণ, ওদেশে হিন্দুকে মার দিয়েই শাসক শ্রেণি নিজের লুণ্ঠনকে বৈধতা দেয়। ঠিক একই রকম, বাংলাদেশের বাঙালি উগ্রজাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে আমি এদেশে থেকেই সোচ্চার, তেমনি সোচ্চার পশ্চিম বাংলার প্রশ্নে। কিন্তু অসমে, মাঝে মধ্যে বাঙালি জাতীয়তাবাদীর সঙ্গে এক টেবিলে বসতে আমার লজ্জা হবে না। যতক্ষণ কথাগুলো রাজনৈতিক আত্মরক্ষার এবং আত্মমর্যাদার জন্যে নিবেদিত হয়।
তেমনি লজ্জা হবে না, সেই মুসলমানের সঙ্গে এক সঙ্গে পথ হাঁটতে দুনিয়ে জুড়ে যে মার্কিনিদের আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়ছে। (এক 'আন্তর্জাতিক স্থান-কালে'ও কি আমরা বাস করছি না, যেখানে হিন্দুত্ব আর ইহুদীবাদ সাম্রায্যবাদের সঙ্গে জোট বেধেছে! এবং বিভাজিত হয়েছে ইসলাম এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় শিবির! )
প্রশ্ন উঠতে পারে, অসমে তো বডোরও সংখ্যালঘু, নিপীড়িত। তবে, আমি এই মুহূর্তে ওদের পক্ষে বলছি না কেন? বলছিলাম, যখন আশির দশকে এরা আলাদা রাজ্যের দাবিতে লড়াই শুরু করেছিলেন, এবং শয়ে শয়ে পুলিশের গুলিতে মরছিলেন। মেয়েরা ধর্ষিতা হচ্ছিলেন। কিন্তু ক্রমে শাসক শ্রেণি তাদের শাসনের ছোট সহযোগী করে ফেলল। বিটিসি দিয়ে দিল, যেখানে ওরা একক বড় জনগোষ্ঠী তাই। সেই বিটিসি এখন বিটিএডি। এবং বিটিএডি-তে বডোরা শাসক জনগোষ্ঠী।
কিন্তু সত্যি বলতে কি 'যুক্তিবাদী'দের নিয়ে আমার কিছু রিজার্ভেশন আছে। আমার বলবার মানে এই নয় যে মুক্তমনাতে সব্বাই যুক্তিবাদী। হ্যা, এটাও ঠিক যে যুক্তিবাদীদেরও ওই সব গালি খেতে হয়, যা সাধারণত ধর্মদ্বেষীরা প্রতিপক্ষকে দিতে ভালোবাসে।
এবারে যুক্তিবাদীদের সঙ্গে তফাৎ আমার ভাবনার অনেক কিছুই। এখানে যেটি প্রাসঙ্গিক সেটি বলি।
আমি মনে করিনা, ধর্মবিশ্বাসী মানেই সাম্প্রদায়িক বা ধর্মদ্বেষী হয়, বা নাস্তিক মানেই অসাম্প্রদায়িক হয়। নাস্তিকদের সম্প্রদায় বিদ্বেষের বড় প্রমাণ এই মূহুর্তে চীন। যার উগ্র-হান জাতীয়তাবাদী শাসনে
তিব্বতের বৌদ্ধ এবং পশ্চিম চিনের উইঘুরেরা মোটেও ভালো নেই।
আমার ভাবনাতে খুব এক সরল অঙ্ক আছে। যদিও বাস্তবে ঘটনাগুলো এতো সরল নয়। কিন্তু সরল করে না বললে তো অন্যের অনুধাবনে পৌঁছুনো যাবে না, তাই বলা।
আধুনিক পুঁজিবাদী রাষ্ট্র তলোয়ার বাদ দিয়ে আনবিক বোমাকে হাতিয়ার করেছে। তেমনি ধর্ম শাস্ত্রকে ছেড়ে সাম্প্রদায়িকতাকে আশ্রয় করেছে। জাতি রাষ্ট্র বলে একটা ধারণার কথা শুনি। আমরা যারা নাস্তিক কিম্বা বামপন্থার কথা বলেছি, তারাও অনেক সময় জাতি রাষ্ট্রের নাম শুনলেই জয় ধ্বনীও দিয়েছি। 'জয় বাংলা' কিম্বা 'সোনর অসম' বলেছি তো বটেই। কিন্তু সত্যি কি জাতি রাষ্ট্রগুলো ধর্মীয় আবহ থেকে মুক্ত? আছে কোনো রাষ্ট্র গোটা পৃথিবীতে? বডোদের কথাই ধরিনা, কেন? তারাই কি আর বিশুদ্ধ হিন্দু স্বার্থের রক্ষাতে মাঠে নেমেছে? তারা কি সাঁওতালদের মেরে কেটে তাড়ায় নি? তারা কি কোচেদের বিরুদ্ধে লড়ছে না? তারা কি অসমিয়া আধিপত্যের থেকে মুক্তির জন্যেই বডোল্যাণ্ড রাজ্যের দাবিতে লড়ছে না? তারপরেও কেমন এদের ভাষ্য গিয়ে মিলে যায় হিন্দুত্বের স্রোতে। আমি মনে করি না, চট্টগ্রামে আদিবাসীদের জমি দখল করছে শুধু জামাত-বিএনপি। আর লীগেরা আদিবাসিদের খুব মামার বাড়ির আদরে রেখেছে। আদিবাসীদের অস্তিত্বই স্বীকার করে না। ২১শে ফেব্রুয়ারীর দেশে বাংলা ছাড়া আর কোনো ভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতি মেনে নেয় না। এগুলো কি কোনো ভাবেই অমুসলমান নিপীড়ন নয়? শুধুই কি যত দোষ নন্দ ঘোষ জামাতেরাই! অসমে কি কংগ্রেস শাসনে নেই! ধর্মনিরপেক্ষ! জাতীয়তাবাদী!
তো, আমার ভাবনা অন্য রকম। আধুনিক পুঁজিবাদের সঙ্গে সামন্তীয় বিশ্বাসের বিরোধ বাঁধে স্বাভাবিক ভাবেই, কিন্তু তাই বলে সে ধর্মকে বাদ দেয় না। তাকে নতুন চেহারা দেয়, যেমন দিচ্ছেলেন আমাদের দেশে রামমোহন থেকে বঙ্কিম বিবেকানন্দ। বিশ্বাসের থেকে প্রবল হয় পরিচিতির প্রশ্ন। শাস্ত্রের থেকে বড় হয় সম্প্রদায়। যেকোনো হিন্দুকে বলুন, বেদ উপনিষদ নিয়ে কথা বলতে , হাঁ করে তাকিয়ে থাকবে। কিন্তু বলুন মুসলমানের বিরুদ্ধে দুটো কথা বলতে, সেই সবই গড় গড় করে আউড়ে যাবে, যা তাদের শিখিয়েছেন বঙ্কিম, অরবিন্দ, শরৎচন্দ্র থেকে শুরু করে শ্যামাপ্রসাদ হয়ে, আজকের তামাম প্রচার মাধ্যম। মুসলমানের জনসংখ্যা, ধর্মান্ধতা, ক্রুরতা, বিচ্ছিন্নতাবোধ ইত্যাদি ইত্যাদি নিয়ে এরা বিশেষজ্ঞ। এগুলোই আজকের ধর্ম। প্রচারগুলোকে একটা সম্প্রদায়ের সঙ্গে জুড়ে দেয়। কিন্তু এটা কি সে করে শুধু ধর্মের প্রসঙ্গেই? সংখ্যালঘু জাতি সত্বাগুলো সম্পর্কেও সে ওমন কিন্তু আধুনিক 'ধারাভাষ্য' বা শাস্ত্র গড়ে তোলে। এই যেমন বাংলাদেশ 'বাঙালি' দেশ, ( বহু প্রগতিশীল ভারতীয় হিন্দুও ভাবেন কথাটা খুবই প্রগতিশীল। জামাত বিরোধী! কথাটা যে চাকমা বিদ্বেষী, বিহারি মুসলমান বিদ্বেষী --এই ভাবনা তাদের চিন্তাতে দূর দূর অব্দিও আসেই না! ) অসম 'অসমিয়া'র প্রদেশ। (কিম্বা খিলঞ্জিয়ার। খিলঞ্জিয়া মানে স্থানীয়। আর হাজার বছরের প্রাচীন বাঙালি এখানে খিলঞ্জিয়া নয়, কিন্তু আটশ বছর আগে আসা আহোম খিলঞ্জিয়া। দেড়শ বছরা আগে আসা সাওতাল আদিবাসী খিলঞ্জিয়া, কিন্তু একই সময়ে আসা মুসলমান নয়। )
এই সব মিথ্যে প্রচারের উপর ভিত্তি করেই 'আধুনিক জাতিরাষ্ট্র' নিজের গড়ে উঠাকে কিম্বা গড়ে উঠার সম্ভাবনাকে সামাজিক বৈধতা দেয়, তথা স্বীকৃতি আদায় করে। এই নতুন 'শাস্ত্র'কে হাতিয়ার করেই সে ভোট তন্ত্রের উপর নিজের আধিপত্য কায়েম রাখে।
ভোট যারা দেয়, এবং ভোট যারা কেনে--তারা দুটো পৃথক শ্রেণি। সে আমরা সব্বাই জানি।
যারা দেয় তারা লুণ্ঠিত হয়, যারা কেনে তারা লুঠ করে। এই লুঠকে আড়াল করবার কোনো দরকার পড়েনি রাজা রাম থেকে শুরু করে সিরাজদ্দোউলা কারোরই। কারণ, তাদের ভোটের বাহানা করতে হয় নি।
এবারে 'ভোটবেঙ্ক' বলে একটা শব্দজোড় আমরা ভারতীয় রাজনীতি সম্পর্কে খুব শুনি। কথাটা রাজনীতির লোকেরা কম বলে , খবরের কাগজ আর পানের দোকানি বলে বেশি। কাদের সম্পর্কে? সংখ্যালঘুদের আর দলিতদের সম্পর্কে। আসল ভোটবেঙ্কটি কিন্তু সংখ্যাগুরু এবং উচ্চবর্ণের ।
লুণ্ঠনের পক্ষে তাদের নিপীড়িত শ্রেণিটিরও সমর্থণ আদায় করে নিয়ে সঙ্গী করে নিতে কাজে আসে এই জাতীয়তাবাদের যুগের 'শাস্ত্র'। যে কাজ ঔরঙজেব থাকলে তলোয়ারের জোরে করতেন, সেই কাজ এখনো বন্দুকের জোরে রাষ্ট্র করে, কিন্তু প্রাথমিক কাজগুলো করে রাখে এই সমর্থণ ভিত্তির লোকজনেরা। বডোল্যান্ডে তাই হয়েছে, গুজরাটেও তাই হয়েছিল। লালগড়েও তাই হয়েছিল । ছত্রিশগড়েও তাই হচ্ছে। আমারতো অসম পুলিশকে তত ভয় করে না, যত ভয় করে আমার কলেজের আসু নামের ছাত্র সংগঠনটির বাচ্চা সদস্যদের। এরাই হলো, আধুনিক যুগের সম্প্রসারিত রাষ্ট্র। পশ্চিম বাংলার সিপিএম ক্যাডাররাও তাই ছিল। বাংলাদেশের লীগ সমর্থকেরাও কম যায় না। এরা পুলিশেরও আল্লাহতালা! (হ্যা, আমার পেশা অধ্যাপনা। আপনি জানতে চাইছিলেন।)
এমতাবস্থাতে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাণীকে আমার স্পষ্টতই ভণ্ডামো বলে মনে হয়। যেমন ভণ্ডামো ছিল ঠাণ্ডা যুদ্ধের যুগের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতি।
বডো শাসকেরা সসস্ত্র সামাজিক ভাবে বৈধ উগ্রপন্থীদের সঙ্গে নিয়ে, পুলিশ সঙ্গে নিয়ে হাঙ্গামা করল বলেই অধিকাংশ বিপন্ন মানুষ হলো মুসলমান। কোথাও কোথাও মুসলমান গুণ্ডারা প্রতিরোধ করল বলে কিছু বডো মানুষও বিপন্ন হলেন। কিন্তু সংখ্যাতে তারা কম, কেন না, মুসলমান পক্ষে রাষ্ট্র ছিল না। বিদেশি শক্তির কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু থাকেও যদি, কে বেশি ক্ষতি করতে পারে দেশি না বিদেশি সেতো অঙ্কেই প্রমাণ। ভাবুনতো, নব্বুই দশকের মুম্বাই দাঙ্গা এবং বোমাবাজি দুটোর কোনটিতে লোক বেশি মরেছিল এবং বিপন্ন হয়েছিল? অথচ, সংবিধান, আইন, প্রচার মাধ্যম কাদের জন্যে কাঁদল বেশি, কাদের ধরে শাস্তি দিল। কাদের জন্যে করল না কিছুই! আফজল গুরুকে ফাঁসি দিয়ে হবে, কিন্তু নরেন্দ্র মোদীকে দেশের প্রধানমন্ত্রী করতে হবে।
এবারে ধরুন, তারপরেও, আপনি আমি বললাম শান্তি শান্তি! ব্যাপারটা কী দাঁড়ালো?
যে বডোরা বিপন্ন হলেন, তাদের বলা গেল যা হয়েছে হয়েছে ভুলে যাও। মানে নিরন্ন হয়েছো, তাই থেকে যাও। কিন্তু যে মুসলমান বিপন্ন হলো তাদের বলা হলো, বাপুহে তুমি যে নিজের বাড়িতে ফিরবে, আগে স্বদেশী হবার প্রমাণ দেখাও দেখি। না দেখাতে পারো, শিবিরে পচো। কিন্তু বিদ্রোহ করো না। ওটা মৌলবাদ! কোনোদিন কোনো কমিউনিষ্ট দল আসে তবে ওদের সঙ্গে মিছিল করো, এরা কল্কি অবতার, শহর থেজে আসবেন বিশ্বাস রেখো। সাবধান, গাঁয়ের মোল্লার কথায় মুসলমান সংগঠনে যেও না। ওসব মৌলবাদ! শান্তি শান্তি!
কথাগুলো আমি একাধারে, আধুনিক রাষ্ট্র এবং পরিচিতির রাজনীতি নিয়ে বলতে গিয়ে বললাম। একই কথা, মায়ান্মারের রোহিঙ্গিয়া, ( লোগ তো জাতীয়তাবাদী! ঐ ভন্ডরা চাকমাদের বাঙালি বলে চালিয়ে দিতে চায়, রোহিঙ্গিয়াদের 'বাঙালি' বলে জয় করে নিল না কেন? বললেই পারত, মায়ান্মারে 'বাঙালি' নিধন চলবে না! জামাত জুজুতো জুজুই! ) কিম্বা বাংলাদেশের হিন্দু কিম্বা, আদিবাসীদের সম্পর্কে । বাংলাদেশের কোনো হিন্দু মনু-র পক্ষে বললেন কিনা তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না, আমি জানি তিনি ভারতীয় ভাজপা, বা আর এস এস-এর মতো বিপজ্জনক হতেই পারেন না। বরং ভাজপার মতাদর্শ তাকে ওখানে নিষ্ক্রিয় এবং হতাশ করে রাখতে পারে, সফলতার সঙ্গেই। কী করে! কারণ, তিনি যে জানেন, তার নরেন্দ্রমোদীও নেই, সুতরাং মুক্তিও নেই। মার খাওয়াটাই ভবিতব্য।
তিনি যে খুব ধর্ম বোঝেন বা মানেন-- তা নাও হতে পারে। কিন্তু মারটা যেহেতু তার ধর্মীয় পরিচয়কে ঘিরেই খেতে হয়, তার পক্ষে ধর্ম নিয়ে এক প্রবল গৌরব বোধ তা মিথ্যে হলেও থাকতেই পারে। কিন্তু সেই গৌরব বোধও ভারতীয় নাস্তিক ভাজপা সদস্যের থেকে নিরাপদ!
সংখ্যালঘু কোনো দেশেই সাধারণত আক্রামক হয় না, আর হলেও তার সঙ্গে রাষ্ট্র থাকে না। থাকার ভান করে মাত্র। এই যেমন অসম সরকার বলছে হাঙ্গামাতে বাংলাদেশি নেই, কিন্তু হাঙ্গামা আটকায় নি, বা এখন শরণার্থীদের পরিচয় পত্রের প্রশ্নে ভাজপা শিবিরের দাবির কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।
যদিবা, বিশুদ্ধ শ্রেণি ঐক্য কিম্বা বিদ্রোহও চাই একটা দেশে ---তবে, সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের নিপীড়িত শ্রেণিটির ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে না বেরুলেও চলবে, তার মাতৃভাষাকে ছাড়বারও দরকার নেই। কিন্ত এই দুটোকে কেন্দ্র করে যে আধুনিক 'শাস্ত্র' বা 'বয়ান কেন্দ্র' শাসকেরা গড়ে তোলে তার থেকে বেরিয়ে এসে, সংখ্যালঘুদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হতে দ্বিধা করা উচিত নয়। সেই সংখ্যালঘু কোথাও মুসলমান, কোথাও , হিন্দু, কোথাও বাঙালি, কোথাও বডো। স্থান-কাল ভেদতো করাই চাই। দুনিয়া জোড়া হিন্দু -মুসলমান সাম্প্রদায়িকতাকে এক করে ফেলা আসলে অতিব্যাপ্তি দোষে দুষ্ট হয়। মালয়েশিয়াতে যখন হিন্দু মার খায়, কিম্বা শ্রীলঙ্কাতে তখন সে যদি বা 'জয় শ্রীরাম' বল;এ সমবেত হয়, আমি যদি বা নাস্তিকও হই কিম্বা মার্ক্সবাদী আমার পাশে দাঁড়াতে দ্বিধা হবে না। কারণ, ওদেশে হিন্দুকে মার দিয়েই শাসক শ্রেণি নিজের লুণ্ঠনকে বৈধতা দেয়। ঠিক একই রকম, বাংলাদেশের বাঙালি উগ্রজাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে আমি এদেশে থেকেই সোচ্চার, তেমনি সোচ্চার পশ্চিম বাংলার প্রশ্নে। কিন্তু অসমে, মাঝে মধ্যে বাঙালি জাতীয়তাবাদীর সঙ্গে এক টেবিলে বসতে আমার লজ্জা হবে না। যতক্ষণ কথাগুলো রাজনৈতিক আত্মরক্ষার এবং আত্মমর্যাদার জন্যে নিবেদিত হয়।
তেমনি লজ্জা হবে না, সেই মুসলমানের সঙ্গে এক সঙ্গে পথ হাঁটতে দুনিয়ে জুড়ে যে মার্কিনিদের আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়ছে। (এক 'আন্তর্জাতিক স্থান-কালে'ও কি আমরা বাস করছি না, যেখানে হিন্দুত্ব আর ইহুদীবাদ সাম্রায্যবাদের সঙ্গে জোট বেধেছে! এবং বিভাজিত হয়েছে ইসলাম এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় শিবির! )
প্রশ্ন উঠতে পারে, অসমে তো বডোরও সংখ্যালঘু, নিপীড়িত। তবে, আমি এই মুহূর্তে ওদের পক্ষে বলছি না কেন? বলছিলাম, যখন আশির দশকে এরা আলাদা রাজ্যের দাবিতে লড়াই শুরু করেছিলেন, এবং শয়ে শয়ে পুলিশের গুলিতে মরছিলেন। মেয়েরা ধর্ষিতা হচ্ছিলেন। কিন্তু ক্রমে শাসক শ্রেণি তাদের শাসনের ছোট সহযোগী করে ফেলল। বিটিসি দিয়ে দিল, যেখানে ওরা একক বড় জনগোষ্ঠী তাই। সেই বিটিসি এখন বিটিএডি। এবং বিটিএডি-তে বডোরা শাসক জনগোষ্ঠী।
__._,_.___