---------- Forwarded message ----------
--
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। বহু বছরের সম্প্রীতির ইতিহাস। গত কয়েকদিন পত্রপত্রিকায় ও প্রাইভেট চ্যানেলের টকশোতে এসব শুনতে শুনতে কান একেবারে জ্বালা পালা। বনে বাঘ থাকে। বাঘের সাথে থাকে তার সম্প্রদায়। আবার একই বনে থাকে হরিণ ও তার সম্প্রদায়। পৃথিবীর সবকটি অভয়ারণ্যে এ এক পরি
চিত দৃশ্য। তাই বলে কেউ বলে না বনে বাঘ ও হরিণ সম্প্রীতিতে বসবাস করছে। কারণ বাঘ হরিণ খেয়ে বেঁচে থাকে। বাংলাদেশে মুসলমান ও সং...
চিত দৃশ্য। তাই বলে কেউ বলে না বনে বাঘ ও হরিণ সম্প্রীতিতে বসবাস করছে। কারণ বাঘ হরিণ খেয়ে বেঁচে থাকে। বাংলাদেশে মুসলমান ও সং...
খ্যালঘু শ্রেণীর মধ্যে বিরাজ করছে এ জাতীয় সম্প্রীতি। মুসলমানরা সংখ্যালঘুদের খেতে খেতে নিম্ন সংখ্যায় নামিয়ে এনেছে। সরকার পরিচালিত আদম শুমারি এসব তথ্য জানান দিচ্ছে। সামান্য ঠুনকো কারণে বাংলাদেশের জঙ্গি মুসলমানরা সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা চালায়। আর প্রশাসন থাকে নীরব। সরকার ও বিরোধীরা করে রাজনীতি। সংবাদ ছেপেও কাজের কাজ কিছু হয় না। অত:পর সংখ্যালঘুদের দেশ ত্যাগ। বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রীতির সাথে বসবাস করছে । এ শ্রেণীর কথাবার্তা বাংলাদেশের মতলববাজ মুসলমানরা বলে।
বাংলাদেশের মুসলমানদের সাম্প্রদায়িকতা আমি প্রতিবেশী দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর সাম্প্রদায়িকতার সাথে তুলনা করি না। তুলনা করা উচিতও নয়। কিন্তু অনেকে করে। যারা করে তারা না জেনেই করে। বাংলাদেশের মুসলমানদের সাম্প্রদায়িকতা ভিন্ন প্রকৃতির। এটা ভারত এমনকি মোল্লাতন্ত্র পাকিস্তানেও দেখা যায় না। একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে ভোট দেবার জন্য সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নির্যাতন করে জঙ্গি মুসলমানরা। গ্রাম কে গ্রাম হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়। ২০০১ সালে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এলাকা বিশেষ এসব সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। যা উপমহাদেশে নজিরবিহীন।
কবি বলে ছিলেন এমন দেশটি কোথায়ও খুঁজে পাবে নাকো তুমি……। আসলেই এমন দেশে খুঁজে পাওয়া যাবে না। কুয়েত থেকে বাংলাদেশি শ্রমিকদের পিটিয়ে রক্তাত্ব করে এক কাপড়ে বিমানে উঠিয়ে দেয়া হয়। জঙ্গি ওই মুসলমানরা থাকে প্রতিক্রিয়াহীন। কোন মিছিল প্রতিবাদ নেই। সৌদিতে এক ব্যক্তির খুনের অভিযোগে আট বাংলাদেশি মুসলমানকে হিন্দুদের পশু বলির মত বলি দেয়া হয়। তারপরও জঙ্গি ওই মুসলমান গোষ্ঠী চুপ থাকে। দেশের মা বোনদের তুলে দেয়া হয় মধ্যপ্রাচ্যের শেখদের হারেমে। মুসলমান প্রতিক্রিয়াহীন। গ্রামের বাচ্চা ছেলেদের উটের জকি বানিয়ে মরু ভূমিতে মেরে ফেলা হয়। মুসলমান প্রতিক্রিয়া হীন। অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশের সীমান্ত রক্ষী কোন গরুচোরকে গুলি করেছে তা ফলাও করে প্রচার করে। ফেসবুকে ও ব্লগে জিহাদি জোশে লেখা আসতে থাকে। মনে হবে ওই গরুচোরটি ছিলও দেশপ্রেমিক বাংলাদেশি নাগরিক। মুসলমানের হৃদয়ে শুরু হয় রক্তক্ষরণ। ভারতীয় গরু খাওয়া ছেড়ে দিলেই হয়। তাহলেই কেউ গরুপাচার করতে গিয়ে মারা পড়বে না। লক্ষাধিক ভিসা যে দেশ দেয় কি প্রয়োজন কাঁটাতারের বেড়া কেটে অথবা ডিঙ্গিয়ে প্রতিবেশী দেশে ঢোকার? আবার অবৈধ এসব অনুপ্রবেশকারীর পক্ষে মানবিক হতে হবে। না হলে দালাল জাতীয় উপাধি পেতে হবে জঙ্গি মুসলমানদের কাছে।
বাংলাদেশ ২৪ বছর ছিলও পাকিস্তানের শাসনে। তখনকার দিনের রাজনীতি, পত্র পত্রিকা, এদেশের শিক্ষিত মুসলিম শ্রেণীকে সাম্প্রদায়িক শিক্ষায় শিক্ষিত করেছে। এই শিক্ষিত বাংলাদেশি মুসলমানরাই বিহারি মুসলমানদের সাথে কাঁদে কাঁদ মিলিয়ে ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সালের পূর্ব পর্যন্ত বাংলাদেশের আনাচে কানাচে সংখ্যালঘু নিধনের নেতৃত্ব দিয়েছে। এদের বেশির ভাগ ছিলও মুসলিম লীগ(বর্তমানে বিএনপি) ও জামাত সমর্থক। সাম্প্রদায়িক এই শিক্ষা এমনই এক রূপ নিয়েছিলো যা এদেশের সংস্কৃতি তথা ভাষার ওপর প্রথম আঘাত হানে। উর্দুর মত একটি জারজ ভাষাকে মুসলমানের ভাষা হিসেবে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিলও পাকিস্তানের তৎকালীন পাঞ্জাবী শাসক গোষ্ঠী। আজকাল ফেসবুকে বাংলা লেখাকে ইংরেজি বর্ণ দিয়ে যেভাবে লেখা হয়, উর্দু ভাষা হচ্ছে এমন এক প্রকৃতির ভাষা। হিন্দিকে আরবি বর্ণ দিয়ে লেখার রীতিকে উর্দু বলা হয়। এরকম এক হাস্যকর জারজ ভাষা হতো আমাদের রাষ্ট্রভাষা। আর সেটা হতো সেই ইসলামের দোহাই দিয়ে। মুসলমানের মুসলমানিত্বের দোহাই দিয়ে। এখন যেমন মুসলমানিত্ব জাহির করে এদেশের হিন্দু ও বৌদ্ধদের ভারত যাবার হুমকি দেয়া হচ্ছে। আজ ওই একই শক্তি রামুর বৌদ্ধদের প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমারে চলে যাবার হুমকি দিচ্ছে।
সেই যাই হোক, পাকিস্তান আমলে সাম্প্রদায়িক শিক্ষায় শিক্ষিত ওই বাঙ্গাল জনগোষ্ঠী করত মুসলিম লীগ। বর্তমানে যারা বিএনপি, জাতীয় পার্টি করে। দেশ স্বাধীন হবার পর ৪০ বছর কেটে গেছে। এসব সাম্প্রদায়িক মুসলিমদের সাথে আত্মীয়তা হয়েছে প্রগতিশীল মুসলিম ঘরানার(আওয়ামেলীগ-বামপন্থী) লোকদের সাথে। যার ফলে দেখা যায় রাজাকারের ঘরে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান লালিত পালিত হচ্ছে। আত্মীয়তার সূত্রে মুসলিম-লীগের সাম্প্রদায়িকতা এদেশের সিংহভাগ তরুণ প্রজন্মর মধ্যে সঞ্চারিত হয়েছে। যে কারণে এখন অন্য সম্প্রদায়ের লোক কিছু দিন পর পরই হামলার শিকার হচ্ছে। আর নীরব থাকছে প্রগতিশীল আওয়ামীলীগ সরকার। রামুর ঘটনা সেটাই প্রমাণ করে। বিভিন্ন সূত্রের খবর হচ্ছে সব রাজনৈতিক ঘরানার লোক এক হয়ে সংখ্যালঘু বৌদ্ধদের ওপর হামলা করেছে। অন্যদিকে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন ছিলও নিষ্ক্রিয়। কিছুদিন আগে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়। ওই দাঙ্গার পর চট্টগ্রামের মুসলমানদের মনে ক্ষোভ সঞ্চার হয়। সেই ক্ষোভ পড়ে নিজ দেশে বসবাসকারী বৌদ্ধদের ওপর। তাই সামান্য একটি ঠুনকো অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে কক্সবাজারের বৌদ্ধদের ওপর হামলা করে সংখ্যাগুরু জঙ্গি মুসলমানরা। এতে সহায়তা করে স্থানীয় পুলিশ, সরকার ও বিরোধী দলের লোকজন। শত হোক তারও তো মুসলমান। তারা কেনও মুসলমানিত্ব দেখানো থেকে পিছিয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনী মুসলিম-লীগ সমর্থিত বাংলাদেশি মুসলমানদের চরম শিক্ষা দেয়। জিন্নাহ টুপি ছেড়ে ওই জঙ্গি মুসলমান ৯৯% মুজিব কোট পড়ে। এরপর মুজিব কোটের অনেকে কালো সানগ্লাস পড়ে। বর্তমানে মুজিব কোট ও সানগ্লাস পড়ে আগের মত সংখ্যালঘুদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়া যায় না। যেমনটা আগে বিহারিদের নিয়ে বাংলাদেশি মুসলমান করতো। পাছে ভয় হয় আবার যদি ভারত এদেশ আক্রমণ করে। তখন কি সাজ সেজে নিজেদের রক্ষা করবে বাংলাদেশি মুসলমান। তাই এবার তারা কৌশল বদল করে। হিন্দু বৌদ্ধদের ধীরে ধীরে খতম করার কৌশল। রাতের আধারে সংখ্যালঘুর মন্দির, বিগ্রহ ভাঙ্গা। চিংড়ি ঘের লুট করা।তাদের জমি জবর দখল করা। তাদের মেয়ে ছেলেদের অপহরণ করা। ইত্যাদি।
তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর চট্টগ্রামের নন্দিরহাটে একটি গুজবকে কেন্দ্র করে পুরো গ্রামের হিন্দু সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি, দোকানপাট, জ্বালিয়ে দেয়া হলও। ভাংচুর করা হলও ওই এলাকার ছয় সাতটি বৃহৎ মন্দির। দুই তিন দিন ধরে এ হামলা চলে। পুলিশ নীরব দর্শক। এ ঘটনায় কারো শাস্তি হয়েছে বলে জানা যায় না। এর পর সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে হুজুরে কেবলা নাটকে নবীর অপমান করা হয়েছে। একটি সাম্প্রদায়িক দৈনিকের জেলা প্রতিনিধির মিথ্যা প্ররোচনায় লোকজন উত্তেজিত হয়ে ওই গ্রামের হিন্দুর সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি ও দোকান পাটে আগুন লাগায়। অথচ নাটকে মুসলমান হিন্দু উভয় সম্প্রদায়ের লোকজন ছিলও। কিন্তু আক্রমণের শিকার হলো হিন্দুরা। এক্ষেত্রেও পুলিশকে নীরব দর্শকের ভূমিকায় দেখা যায়। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের কারো শাস্তি হয়েছে বলে জানা যায়নি। এরপর দিনাজপুরে মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে একটি গ্রামের সকল হিন্দুদের ঘরবাড়িতে আগুন লাগানো হয়। এ ঘটনারও সুষ্ঠু তদন্ত হয়েছে বলে জানা যায় না। কারো গ্রেফতার বা সাজা হয়েছে বলে জানা যায় না। শুধু খবর আসে মন্ত্রী অথবা ডিসি গিয়েছে। ক্ষতি পূরণ দিয়ে এসব ঘটনার সমাপ্তি টানা হয়। এরপর সব-চুপ চাপ। দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হওয়ার কারণে প্রশ্রয় পাচ্ছে মুসলিম জঙ্গিরা। তারা যখন দেখবে এসব ঘটনা করে আনায়েসে পার পাওয়া যাচ্ছে। পুলিশ কিছু করবে না। তখন আগের চেয়ে বেশি উৎসাহ নিয়ে তারা এসব করবে। রামুর ঘটনা হচ্ছে সেই ধারাবাহিকতায়। এখন শোনা যাচ্ছে রামুর ঘটনা নিয়ে তদন্ত হবে। তদন্ত করবে সেই নিস্ক্রিয় মুসলিম পুলিশ। যাদের সহায়তায় হামলা হলো। তারা কীভাবে নিজেদের দোষী বলবে? এরই মধ্যে হাউকোর্ট আবার সুয়োমোটো দিয়েছে মন্দির মসজিদ রক্ষার। বুঝলামনা মসজিদ রক্ষার জন্য কেনো সুয়োমটো দিতে হবে। মসজিদ আক্রান্ত হয়েছে এমনটা শুনিনি। তাছাড়া এই সুয়োমোটোর কি মূল্য আছে? এটি বাস্তবায়ন করবে তো সরকারে সেই নিস্ক্রিয় মুসলমান পুলিশ।
আফগানিস্তানে বামিয়ানের বৌদ্ধ মুর্তি ভেঙ্গে তালেবানরা ছয় মাসের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। দেখি বাংলাদেশে হাসিনা-খালেদার অনুসারিরা এসব কর্মকাণ্ড করে কতদিন টিকে থাকতে পারে।
লেখক সুমন দত্ত, সাংবাদিক
বাংলাদেশের মুসলমানদের সাম্প্রদায়িকতা আমি প্রতিবেশী দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর সাম্প্রদায়িকতার সাথে তুলনা করি না। তুলনা করা উচিতও নয়। কিন্তু অনেকে করে। যারা করে তারা না জেনেই করে। বাংলাদেশের মুসলমানদের সাম্প্রদায়িকতা ভিন্ন প্রকৃতির। এটা ভারত এমনকি মোল্লাতন্ত্র পাকিস্তানেও দেখা যায় না। একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে ভোট দেবার জন্য সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নির্যাতন করে জঙ্গি মুসলমানরা। গ্রাম কে গ্রাম হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়। ২০০১ সালে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এলাকা বিশেষ এসব সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। যা উপমহাদেশে নজিরবিহীন।
কবি বলে ছিলেন এমন দেশটি কোথায়ও খুঁজে পাবে নাকো তুমি……। আসলেই এমন দেশে খুঁজে পাওয়া যাবে না। কুয়েত থেকে বাংলাদেশি শ্রমিকদের পিটিয়ে রক্তাত্ব করে এক কাপড়ে বিমানে উঠিয়ে দেয়া হয়। জঙ্গি ওই মুসলমানরা থাকে প্রতিক্রিয়াহীন। কোন মিছিল প্রতিবাদ নেই। সৌদিতে এক ব্যক্তির খুনের অভিযোগে আট বাংলাদেশি মুসলমানকে হিন্দুদের পশু বলির মত বলি দেয়া হয়। তারপরও জঙ্গি ওই মুসলমান গোষ্ঠী চুপ থাকে। দেশের মা বোনদের তুলে দেয়া হয় মধ্যপ্রাচ্যের শেখদের হারেমে। মুসলমান প্রতিক্রিয়াহীন। গ্রামের বাচ্চা ছেলেদের উটের জকি বানিয়ে মরু ভূমিতে মেরে ফেলা হয়। মুসলমান প্রতিক্রিয়া হীন। অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশের সীমান্ত রক্ষী কোন গরুচোরকে গুলি করেছে তা ফলাও করে প্রচার করে। ফেসবুকে ও ব্লগে জিহাদি জোশে লেখা আসতে থাকে। মনে হবে ওই গরুচোরটি ছিলও দেশপ্রেমিক বাংলাদেশি নাগরিক। মুসলমানের হৃদয়ে শুরু হয় রক্তক্ষরণ। ভারতীয় গরু খাওয়া ছেড়ে দিলেই হয়। তাহলেই কেউ গরুপাচার করতে গিয়ে মারা পড়বে না। লক্ষাধিক ভিসা যে দেশ দেয় কি প্রয়োজন কাঁটাতারের বেড়া কেটে অথবা ডিঙ্গিয়ে প্রতিবেশী দেশে ঢোকার? আবার অবৈধ এসব অনুপ্রবেশকারীর পক্ষে মানবিক হতে হবে। না হলে দালাল জাতীয় উপাধি পেতে হবে জঙ্গি মুসলমানদের কাছে।
বাংলাদেশ ২৪ বছর ছিলও পাকিস্তানের শাসনে। তখনকার দিনের রাজনীতি, পত্র পত্রিকা, এদেশের শিক্ষিত মুসলিম শ্রেণীকে সাম্প্রদায়িক শিক্ষায় শিক্ষিত করেছে। এই শিক্ষিত বাংলাদেশি মুসলমানরাই বিহারি মুসলমানদের সাথে কাঁদে কাঁদ মিলিয়ে ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সালের পূর্ব পর্যন্ত বাংলাদেশের আনাচে কানাচে সংখ্যালঘু নিধনের নেতৃত্ব দিয়েছে। এদের বেশির ভাগ ছিলও মুসলিম লীগ(বর্তমানে বিএনপি) ও জামাত সমর্থক। সাম্প্রদায়িক এই শিক্ষা এমনই এক রূপ নিয়েছিলো যা এদেশের সংস্কৃতি তথা ভাষার ওপর প্রথম আঘাত হানে। উর্দুর মত একটি জারজ ভাষাকে মুসলমানের ভাষা হিসেবে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিলও পাকিস্তানের তৎকালীন পাঞ্জাবী শাসক গোষ্ঠী। আজকাল ফেসবুকে বাংলা লেখাকে ইংরেজি বর্ণ দিয়ে যেভাবে লেখা হয়, উর্দু ভাষা হচ্ছে এমন এক প্রকৃতির ভাষা। হিন্দিকে আরবি বর্ণ দিয়ে লেখার রীতিকে উর্দু বলা হয়। এরকম এক হাস্যকর জারজ ভাষা হতো আমাদের রাষ্ট্রভাষা। আর সেটা হতো সেই ইসলামের দোহাই দিয়ে। মুসলমানের মুসলমানিত্বের দোহাই দিয়ে। এখন যেমন মুসলমানিত্ব জাহির করে এদেশের হিন্দু ও বৌদ্ধদের ভারত যাবার হুমকি দেয়া হচ্ছে। আজ ওই একই শক্তি রামুর বৌদ্ধদের প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমারে চলে যাবার হুমকি দিচ্ছে।
সেই যাই হোক, পাকিস্তান আমলে সাম্প্রদায়িক শিক্ষায় শিক্ষিত ওই বাঙ্গাল জনগোষ্ঠী করত মুসলিম লীগ। বর্তমানে যারা বিএনপি, জাতীয় পার্টি করে। দেশ স্বাধীন হবার পর ৪০ বছর কেটে গেছে। এসব সাম্প্রদায়িক মুসলিমদের সাথে আত্মীয়তা হয়েছে প্রগতিশীল মুসলিম ঘরানার(আওয়ামেলীগ-বামপন্থী) লোকদের সাথে। যার ফলে দেখা যায় রাজাকারের ঘরে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান লালিত পালিত হচ্ছে। আত্মীয়তার সূত্রে মুসলিম-লীগের সাম্প্রদায়িকতা এদেশের সিংহভাগ তরুণ প্রজন্মর মধ্যে সঞ্চারিত হয়েছে। যে কারণে এখন অন্য সম্প্রদায়ের লোক কিছু দিন পর পরই হামলার শিকার হচ্ছে। আর নীরব থাকছে প্রগতিশীল আওয়ামীলীগ সরকার। রামুর ঘটনা সেটাই প্রমাণ করে। বিভিন্ন সূত্রের খবর হচ্ছে সব রাজনৈতিক ঘরানার লোক এক হয়ে সংখ্যালঘু বৌদ্ধদের ওপর হামলা করেছে। অন্যদিকে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন ছিলও নিষ্ক্রিয়। কিছুদিন আগে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়। ওই দাঙ্গার পর চট্টগ্রামের মুসলমানদের মনে ক্ষোভ সঞ্চার হয়। সেই ক্ষোভ পড়ে নিজ দেশে বসবাসকারী বৌদ্ধদের ওপর। তাই সামান্য একটি ঠুনকো অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে কক্সবাজারের বৌদ্ধদের ওপর হামলা করে সংখ্যাগুরু জঙ্গি মুসলমানরা। এতে সহায়তা করে স্থানীয় পুলিশ, সরকার ও বিরোধী দলের লোকজন। শত হোক তারও তো মুসলমান। তারা কেনও মুসলমানিত্ব দেখানো থেকে পিছিয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনী মুসলিম-লীগ সমর্থিত বাংলাদেশি মুসলমানদের চরম শিক্ষা দেয়। জিন্নাহ টুপি ছেড়ে ওই জঙ্গি মুসলমান ৯৯% মুজিব কোট পড়ে। এরপর মুজিব কোটের অনেকে কালো সানগ্লাস পড়ে। বর্তমানে মুজিব কোট ও সানগ্লাস পড়ে আগের মত সংখ্যালঘুদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়া যায় না। যেমনটা আগে বিহারিদের নিয়ে বাংলাদেশি মুসলমান করতো। পাছে ভয় হয় আবার যদি ভারত এদেশ আক্রমণ করে। তখন কি সাজ সেজে নিজেদের রক্ষা করবে বাংলাদেশি মুসলমান। তাই এবার তারা কৌশল বদল করে। হিন্দু বৌদ্ধদের ধীরে ধীরে খতম করার কৌশল। রাতের আধারে সংখ্যালঘুর মন্দির, বিগ্রহ ভাঙ্গা। চিংড়ি ঘের লুট করা।তাদের জমি জবর দখল করা। তাদের মেয়ে ছেলেদের অপহরণ করা। ইত্যাদি।
তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর চট্টগ্রামের নন্দিরহাটে একটি গুজবকে কেন্দ্র করে পুরো গ্রামের হিন্দু সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি, দোকানপাট, জ্বালিয়ে দেয়া হলও। ভাংচুর করা হলও ওই এলাকার ছয় সাতটি বৃহৎ মন্দির। দুই তিন দিন ধরে এ হামলা চলে। পুলিশ নীরব দর্শক। এ ঘটনায় কারো শাস্তি হয়েছে বলে জানা যায় না। এর পর সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে হুজুরে কেবলা নাটকে নবীর অপমান করা হয়েছে। একটি সাম্প্রদায়িক দৈনিকের জেলা প্রতিনিধির মিথ্যা প্ররোচনায় লোকজন উত্তেজিত হয়ে ওই গ্রামের হিন্দুর সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি ও দোকান পাটে আগুন লাগায়। অথচ নাটকে মুসলমান হিন্দু উভয় সম্প্রদায়ের লোকজন ছিলও। কিন্তু আক্রমণের শিকার হলো হিন্দুরা। এক্ষেত্রেও পুলিশকে নীরব দর্শকের ভূমিকায় দেখা যায়। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের কারো শাস্তি হয়েছে বলে জানা যায়নি। এরপর দিনাজপুরে মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে একটি গ্রামের সকল হিন্দুদের ঘরবাড়িতে আগুন লাগানো হয়। এ ঘটনারও সুষ্ঠু তদন্ত হয়েছে বলে জানা যায় না। কারো গ্রেফতার বা সাজা হয়েছে বলে জানা যায় না। শুধু খবর আসে মন্ত্রী অথবা ডিসি গিয়েছে। ক্ষতি পূরণ দিয়ে এসব ঘটনার সমাপ্তি টানা হয়। এরপর সব-চুপ চাপ। দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হওয়ার কারণে প্রশ্রয় পাচ্ছে মুসলিম জঙ্গিরা। তারা যখন দেখবে এসব ঘটনা করে আনায়েসে পার পাওয়া যাচ্ছে। পুলিশ কিছু করবে না। তখন আগের চেয়ে বেশি উৎসাহ নিয়ে তারা এসব করবে। রামুর ঘটনা হচ্ছে সেই ধারাবাহিকতায়। এখন শোনা যাচ্ছে রামুর ঘটনা নিয়ে তদন্ত হবে। তদন্ত করবে সেই নিস্ক্রিয় মুসলিম পুলিশ। যাদের সহায়তায় হামলা হলো। তারা কীভাবে নিজেদের দোষী বলবে? এরই মধ্যে হাউকোর্ট আবার সুয়োমোটো দিয়েছে মন্দির মসজিদ রক্ষার। বুঝলামনা মসজিদ রক্ষার জন্য কেনো সুয়োমটো দিতে হবে। মসজিদ আক্রান্ত হয়েছে এমনটা শুনিনি। তাছাড়া এই সুয়োমোটোর কি মূল্য আছে? এটি বাস্তবায়ন করবে তো সরকারে সেই নিস্ক্রিয় মুসলমান পুলিশ।
আফগানিস্তানে বামিয়ানের বৌদ্ধ মুর্তি ভেঙ্গে তালেবানরা ছয় মাসের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। দেখি বাংলাদেশে হাসিনা-খালেদার অনুসারিরা এসব কর্মকাণ্ড করে কতদিন টিকে থাকতে পারে।
লেখক সুমন দত্ত, সাংবাদিক
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ,নিউ ইংল্যান্ড,বস্টন
--
__._,_.___