Banner Advertiser

Saturday, October 13, 2012

[mukto-mona] সংখ্যালঘু মেরে রাজনীতি ! - হাটহাজারী দিনাজপুর সাতক্ষীরা রামু উখিয়া টেকনাফ পটিয়ার ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা ...



রবিবার, ১৪ অক্টোবর ২০১২, ২৯ আশ্বিন ১৪১৯

সংখ্যালঘু মেরে রাজনীতি!
হাটহাজারী দিনাজপুর সাতক্ষীরা রামু উখিয়া টেকনাফ পটিয়ার ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা
শংকর কুমার দে ॥ বিএনপি-জামায়াতের অপরাজনীতির পরিণতির সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের নির্মমতার শিকার হচ্ছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। চট্টগ্রামের পটিয়া, কক্সবাজারের উখিয়া, রামু ও টেকনাফের ঘটনার আগেও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা লোভের বশীভূত হয়ে একের পর এক এ ধরনের মানবতাবিরোধী জঘন্য সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ঘটানো হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করতে পূর্বপরিকল্পিত নীলনকশা অনুযায়ী এ ধরনের সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস ঘটিয়ে তা আবার শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো ধামাচাপা দেয়ার ছক তৈরি করে রাখা হয়েছে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা করে গানপাউডার ছিটিয়ে আগুন দিয়ে বাড়িঘর, বৌদ্ধবিহার ও মন্দির জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে মায়াকান্না দেখানোর জন্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আইওয়াশ দেয়ার মতো একটি তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছে বিএনপি। বিএনপি-জামায়াতের অতীত সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের অপরাজনীতির একের পর এক উদাহরণ থাকার পরও বিএনপি যে উদোরপি-ি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে চেয়েছে তা পরিষ্কার হয়ে উঠেছে। 
চট্টগ্রামের হাটহাজারী, দিনাজপুরের চিরিরবন্দর, সাতক্ষীরা, পাবনাসহ বিভিন্ন স্থানে এ পর্যন্ত যেসব সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে তার প্রতিটিতে ছিল জামায়াত-শিবিরের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণ ও উস্কানি। এসব প্রতিটি ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদনে জামায়াতÑশিবিরের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। সর্বশেষ চট্টগ্রামের পটিয়া, কক্সবাজারের উখিয়া, টেকনাফের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা, আগুন দেয়া ও মন্দির-মূর্তি ভাংচুরের ঘটনায় জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যাওয়ার পর পরই বিএনপি তদন্ত কমিটি গঠন করে গোটা ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা শুরু করে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বিশেষ করে আওয়ামী লীগকে ভারতের দালাল বলে গালি দেয় বিএনপি-জামায়াত। আওয়ামী লীগ যদি ভারতের দালালই হয় তাহলে তারা সংখ্যালঘু হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা চালাবে না এটাই স্বাভাবিক। নির্বাচনের সময়ে সংখ্যালঘুরা আওয়ামী লীগকে ভোট দেয় বলে প্রচার চালিয়ে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করার ঘটনার নজির অসংখ্য। বিএনপি-জামায়াত সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, উপাসনালয়ে আগুন ও মন্দির-মূর্তি ভাংচুর করে এখন আওয়ামী লীগের ওপর দায় চাপানোর অপচেষ্টা করে যাচ্ছে আর এর মধ্যে দিয়ে তার অতীতের ঘটনাগুলোই প্রমাণ দেয়।
বিএনপি-জামায়াত ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর সারাদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বী সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, নির্যাতন, ধর্ষণ, বাড়িঘর, লুটপাট, আগুন দেয়া থেকে শুরু করে পুকুরের মাছ, গোয়ালের গরু, থালা-বাসন লোটাকম্বল লুটপাট করে তাদের দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। '৭০ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে জামায়াতের মানবতাবিরোধী জঘন্য ভূমিকার জন্য যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু হয়েছে। '৭৫ সালে সপরিবারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে জামায়াত যুদ্ধাপরাধীরদের সঙ্গে নিয়ে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম সংযোজন করে ধর্মীয় উন্মাদনার সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ঝাপি খুলে দেয়। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর সাম্প্রদায়িক রাজনীতির অপকৌশল প্রয়োগ করতে জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসবাদ শুরু করে। মিয়ানমার থেকে শরণার্থী হিসেবে আগত রোহিঙ্গাদের দলে দলে আশ্রয়-প্রশয় দিয়ে দলে ভিড়ায়। এসব ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিএনপি-জামায়াত যখনই রাজনীতিতে জনসমর্থনহীন হয়ে পড়ে তখনই তারা সাম্প্রদায়িক রাজনীতি, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদসহ নানা অপকৌশলের শিকারের পরিণত করা হয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন চালিয়ে এক ঢিলে দুই পাখি মারা হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস হয় এবং তারা নিরাপদ নয় বলে দেশে ও বিদেশে প্রচার করা হয়। দ্বিতীয়ত: বিএনপি-জামায়াত তাদের যুদ্ধাপরাধ, ধর্মান্ধতা ও জঙ্গীবাদের আশ্রয়-প্রশয় দেয়ার রাজনীতিকে আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু হওয়ার পর এবার বিএনপি-জামায়াত চেষ্টা করেও সরকারবিরোধী জনমত গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়ে বার বার উগ্র মৌলবাদীদের দিয়ে ধর্মান্ধতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের পথ বেছে নেয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে কোরান অবমাননার জের ধরে চট্টগ্রামের পটিয়া, কক্সবাজারের উখিয়া, টেকনাফ, রামুর ঘটনাও যে বিএনপি-জামায়াত যে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের তা-বলীলা ঘটিয়েছে তাতে ইতোমধ্যেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসতে শুরু করায় তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়ে সরকারের ওপর দোষ চাপিয়ে পার পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। 
দৈনিক জনকণ্ঠের নিজস্ব প্রতিবেদকরা সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ঘটনার নেপথ্যের ঘটনা সম্পর্কে তুলে ধরেছেন তাদের প্রতিবেদনে।
দিনাজপুর থেকে সাজেদুর রহমান শিলু জানান, দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলা পল্লীতে জামায়াত নেতাদের উস্কানিতে ৩২টি হিন্দু পরিবারের বসতভিটায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার ২ মাস অতিবাহিত হলেও এখনও সেখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক কাটেনি। এসব ঘটনায় ১শ' ৮৭ জনকে আসামি করা হলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ২৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এসব মামলার অন্যতম আসামি জেলা জামায়াতের সাবেক আমির ও চিরিরবন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আফতাব উদ্দীন মোল্লাকে এখন পর্যন্ত আটক করতে পারেনি পুলিশ। আটক হয়নি এসব সন্ত্রাসী ঘটনায় নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিরা। পলাতক আসামিদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও কোন লাভ হয়নি। হামলার শিকার লোকজনের অভিযোগ, মামলা প্রত্যাহারের জন্য জামায়াত ও শিবিরের নেতা-কর্মীরা তাদের বিভিন্নভাবে জয়ভীতি দেখাচ্ছে। 
৪ আগস্ট শনিবার ২০১২। স্থান দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ৬ নং অমরপুর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রাম। ওইদিন সকালে সেই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারগুলোর উপর মহা-প্রলয় নেমে আসে। জামায়াতের ইন্ধনে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, মারপিট, লুটপাট, বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, শ্লীলতাহানি ও ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় ১৬ জন আহত হয়। মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে হামলায় আক্রান্তরা ঘটনাটিকে একাত্তরের হানাদার বাহিনীর হামলার চেয়েও বর্বর ও নির্মম বলে উল্লেখ করেন। ১৪৪ ধারা জারি ও ২ শতাধিক পুলিশ, ২ প্লাটুন বিজিবি ও ২ গাড়ি র‌্যাব সদস্য মোতায়েন করার পরও সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কয়েক দফায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের বসতবাড়ির ওপর হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর, মারপিট, লুটপাট, শ্লীলতাহানি ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটানো হয়। তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেফতার করা হয় ৮ জনকে। হামলার শিকার লোকজনদের অভিযোগ, জেলা জামায়াতের সাবেক আমির ও চিরিরবন্দর উপজেলা চেয়ারম্যানের উস্কানিমূলক বক্তব্যের পরই তাদের উপর হামলা চালানো হয়। হামলাকারীদের মধ্যে অনেকেই সরাসরি জামায়াত ও শিবিরের সঙ্গে জড়িত। 
জানা যায়, দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ৬ নং অমরপুর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের বলাইবাজার এলাকায় একটি অস্থায়ী মসজিদঘর ছিল। ওই মসজিদের জমির মালিক চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন কলেজের প্রফেসর হামিদা খাতুন তাঁর নিজ অর্থায়নে তা পাকাকরণের জন্য উদ্যোগ নেন। মসজিদ ঘরের স্থানে পাকা নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর করা হয়। কিন্তু মসজিদ ঘর থেকে ২শ' গজ দূরে অনেক আগে থেকে একটি কালী মন্দির থাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন মসজিদ ঘরটি ৫শ' গজ দূরে নির্মাণ করার জন্য প্রস্তাব দেয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকদিন ধরে সেখানে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ৩ আগস্ট শুক্রবার এই মসজিদ ঘর নির্মাণকে কেন্দ্র করে চিরিরবন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান এবং জেলা জামায়াতের সাবেক আমির আফতাব উদ্দিন মোল্লা উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে জনসাধারণের মধ্যে ধর্মীয় অনুভূতি সৃষ্টি করেন। ফলে সেদিন ভোরে অসংখ্য লোক একত্রিত হয়। এদের মধ্যে অধিকাংশ লোক বহিরাগত ও জামায়াত শিবিরের সক্রিয় কর্মী। ৪ আগস্ট সকাল ১১টায় তারা রাজাবাজার গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের ১২টি বাড়িতে সেøাগান দিয়ে হামলা চালায়। তারা ১২টি বাড়ির লোকজনকে বেধড়ক মারপিট করে। সোভা রানী রায় (৩৫) নামে এক গৃহবধূ শ্লীলতাহানির শিকার হন। এসব বাড়িতে লুটপাট করে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। এতে ১৩ জন অগ্নিদগ্ধ হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৫ জনকে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হামলার শিকার ভবেশ চন্দ্র রায় জানান, হামলাকারীরা সকলেই বহিরাগত। তাদের মধ্যে যে ২/১জনকে চেনা গেছে তারা সকলেই জামায়াত ও শিবির কর্মী। তিনি বলেন, স্থানীয় জামায়াত নেতা তৈয়ব হাজির নেতৃত্বে জামায়াতের কাদের, নিন্দালু, কামু, রফিকুল, রায়হান, লিয়াকত ও সুমনকে তিনি চিনতে পেরেছেন। 
ঘটনার সংবাদ পেয়ে পুলিশের রংপুর বিভাগীয় ডিআইজি বিনয় কৃষ্ণ বালা, দিনাজপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আজিজুল ইমাম চৌধুরী, তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোঃ জামাল উদ্দিন আহম্মেদ, পুলিশ সুপার ময়নুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে অনিদির্ষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তাৎক্ষণিক ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ইতোমধ্যে সেখানে মোতায়েন করা হয় ২ প্লাটুন বিজিবি, র‌্যাব-এর দুটি গাড়ি ও ২ শতাধিক পুলিশ সদস্য। এরই মধ্যে ওই চিহ্নিত মহলের মদদে লোকজন আবার একই ইউনিয়নের ছোট হাসিমপুর গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের ৪টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট, মারপিট ও অগ্নিসংযোগ করে। এতে আরও ৪ জন আহত হয়। দুপুর ৩টায় লোকজন আবারও একই উপজেলার আব্দুলপুর ইউনিয়নের মাঝাপাড়া গ্রামে হিন্দুদের বাড়িতে হামলা চালানোর চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিরোধের মুখে তাদের অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়। দায়িত্বে অবহেলার জন্য চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রশিদুল মোন্নাফ কবিরকে প্রত্যাহার করা হয়। এই ঘটনার পর সেখানে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়। মসজিদ নির্মাণ কাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়। এই ঘটনায় দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল মালেককে আহ্বায়ক করে জেলার সরকারী কৌঁসলি ওয়াহেদ আলী নবেল এবং এএসপি শাহিন হোসেন সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি প্রায় ১ মাস তদন্ত করে ৫২ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন জমা দেন। এই প্রতিবেদনে তারা ঘটনার সঙ্গে জামায়াতের সরাসরি জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করেন।
এই ঘটনায় মোট ৩টি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় আসামি করা হয় ১শ' ৮৭ জনকে। পুলিশের উপর হামলা ও আহত করার অভিযোগে ৪ আগস্ট চিরিরবন্দর থানার এসআই আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৭। এই মামলায় জেলা জামায়াতের সাবেক আমির ও চিরিরবন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আফতাব উদ্দীন মোল্লাসহ ৬৪ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা হলেন এসআই আজম আলী প্রধান। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন অবস্থায় রয়েছে। হিন্দু পরিবারের উপর হামলা, অগ্নিসংযোগ, মারপিট ও লুটপাটের অভিযোগে ৭ আগস্ট রাজাপুর গ্রামের সুভাস চন্দ্র রায় বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলা নং-৮। এই মামলায় ১শ' ১০ জনকে আসামি করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আমিনুল ইসলাম তদন্ত শেষে দ্রুত বিচার আইনে আদালতে মামলাটির চার্জশীট দাখিল করেন। এই মামলায় আসামি হিসেবে জেলা জামায়াতের সাবেক আমিরের নাম রয়েছে। একই অভিযোগে ৯ আগস্ট আব্দুলপুর গ্রামের দীনেশ চন্দ্র বাদী হয়ে ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা নং-১০। এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মোঃ হারেসুল ইসলাম তদন্ত শেষে দ্রুত বিচার আইনে আদালতে মামলাটির চার্জশীট দাখিল করেন।
এই মামলায়ও আসামি হিসেবে জেলা জামায়াতের সাবেক আমিরের নাম রয়েছে। এরই মধ্যে পুলিশ ২৪ জনকে গ্রেফতার করে। 
১ অক্টোবর সোমবার দিনাজপুর প্রথম শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও দ্রুত বিচার আদালতের বিজ্ঞ বিচারক এএসএম তাসকিনুল হকের আদালতে এই চাঞ্চল্যকর ২টি মামলার দিন ধার্য ছিল। ১২ সেপ্টেম্বর আদালতের নির্দেশে দুটি জাতীয় পত্রিকায় পালিয়ে থাকা ১৬৪ আসামিকে হাজির হতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেয়া হয়েছিল। উক্ত আদেশ অনুযায়ী দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে আসামিদের হাজির হতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বিচারক মামলার পরবর্তী তারিখ আসামি ১৬ অক্টোবর ধার্য করে আটক আসামিদের জেলা কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেয়। 
সাতক্ষীরা থেকে মিজানুর রহমান জানান, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জের ফতেপুর ও চাকদাহ গ্রামে সংখ্যালঘু পরিবারের উপর ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের হামলা, লুটপাট ও পুড়িযে দেয়ার ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত। মামলায় আটক বিভিন্ন আসামিকে পুলিশের কাছে দেয়া স্বীকারোক্তিতে এমনই তথ্য প্রকাশ পেলেও মামলা সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের অভিযোগ, আদালতে দাখিল করা কাগজপত্রের সঙ্গে সহিংস ঘটনার ফুটেজ ও স্টিল ছবি সংযুক্ত করা হয়নি। এমনকি রিমান্ডে নিয়ে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে নামমাত্র। ফলে মামলার ভবিষ্যত নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। 
এদিকে সহিংস ঘটনায় দায়ের করা ৪টি মামলায় এ পর্যন্ত এজাহারভুক্ত ও এজাহার বহির্ভূত ফতেপুর ও চাকদাহের মামলায় ১শ' ৩০ জন গ্রেফতার ও আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেছে। বর্তমানে ছাত্রশিবির নেতা কালীগঞ্জের ফতেপুর গ্রামের ওমর ফারুখ ও চৌমুহুনী দারুল উলুম সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জামায়াত নেতা মাওলানা আব্দুল কাদের হেলালী, জাপা নেতা জুলফিকার সাঁফুইসহ কমপক্ষে ২৫ জন জেলহাজতে রয়েছে। দৈনিক দৃষ্টিপাতের দঃশ্রীপুর প্রতিনিধি শিবির ক্যাডার মিজানুর রহমান ও জেলহাজতে রয়েছে। ১৮ সেপ্টেম্বর বসন্তপুর গ্রামের শিবির নেতা শারাফাত হোসেন (চাকদাহে সহিংসতা চলাকালে অংশ নেয়া ছবি সংবলিত) ও ৮ অক্টোবর গণপতি গ্রামের শাহজামানকে আটক করার পর পুলিশ আর্থিক সুবিধা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। এ ছাড়া গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে সাধারণ মানুষের নাম বলিয়ে লাখ লাখ টাকা অর্থবাণিজ্য করার পাশাপাশি মামলার মেরিট নষ্ট করা হচ্ছে বলেও সিনিয়র আইনজীবীদের অভিযোগ। 
এদিকে ফতেপুর ও চাকদাহে সহিংসতার ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত টিমের সদস্য যুগ্ম সচিব আবু ছালেহ শেখ মোঃ জহিরুল হক, উপসচিব মোস্তাফিজুর রহমান ও সিনিয়র সহকারী সচিব মাহাবুবর রহমান সাতক্ষীরা সার্কিট হাউসে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য, সাংবাদিক, প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ কমপক্ষে ৩০ জনের জবানবন্দী গ্রহণ করেন। দু' দফা এই তদন্ত অনুষ্ঠিত হলেও সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার শনিবার জনকণ্ঠকে বলেন, বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এখনও প্রকাশ পেয়েছে বলে তার জানা নেই। সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, তিনিও তদন্ত কমিটির রিপোর্টের বিষয়ে কিছু জানেন না। আলোচিত ৪টি মামলার বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা দারোগা সোহরাব, বেলাল ও ইয়াছিনের কাছে শনিবার দুপুরে মামলার অগ্রগতি ও গ্রেফতারের সংখ্যা জানতে চাইলে তারা রাত ৮টার পর যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, তারা এখন রেস্টে আছেন। 
কালীগঞ্জের ফতেপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মিতা রানীকে স্কুলে ডেকে এনে গ্রেফতার করে তৎকালীন থানার ওসি ফরিদ আহমেদ। একই সময়ে গ্রেফতার করা হয় প্রধান শিক্ষক রেজওয়ান হারুনকে। স্বাধীনতা দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছাত্রদের অভিনীত একটি নাটকে নবীজি সম্পর্কে কটূক্তি করা হয়েছেÑ এই অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হলেও ৩১ মার্চ শনিবার কয়েক হাজার মানুষ হামলা চালিয়ে লুটপাট করে হাজতে আটক থাকা মিতা রানীর বসতবাড়ি আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয় স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আকুল মেম্বরসহ তার তিনভাই এর বসতবাড়ি। পোড়ানো হয় স্থানীয় সাংস্কৃতিক পরিষদ। ভেঙ্গে তছনছ করা হয় ফতেপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চেয়ার, টেবিলসহ আসবাবপত্র। লুট করা হয় হাকিমের বাঁশতলা বাজারের কম্পিউটারের দোকান। ঘটনার দিন সকাল ১১টায় ইউনিয়নের বাইরে থেকে আসা কয়েক হাজার মানুষ এই অতর্কিত হামলায় অংশ নেয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, হামলায় অংশ নেয়া অধিকাংশরাই ছিল বিভিন্ন মাদরাসার ছাত্র ও মৌলবাদী সংগঠনের সদস্য। অভিযোগ, হামলার সময় পুলিশের ভূমিকা ছিল রহস্যজনক। এর পর ১ এপ্রিল একই উপজেলার সীমান্তগ্রাম চাকদাহে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে সংখ্যালঘু পরিবারের ৭টি বাড়ি লুটপাট ও পুড়িয়ে দেয়া হয়। 
কালীগঞ্জ উপজেলার ফতেপুর হাইস্কুল মাঠে স্বাধীনতা দিবস, উদযাপন উপলক্ষে ২৭ মার্চ রাতে স্কুলমাঠে প্রখ্যাত সাহিত্যিক আবুল মুনসুর আহমেদের 'হুজুর কেবলা'র গল্প অবলম্বনে মীর শাহিনুর হোসেন একটি নাটক মঞ্চস্থ করেন। নাটকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স) সম্পর্কে কটূক্তির অভিযোগ সম্পর্কিত একটি রিপোর্ট ২৯ মার্চ সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত দৈনিক দৃষ্টিপাত পত্রিকায় ছাপা হয়। এর পর পরই ধর্মান্ধদের হামলায় ও তা-বে পুড়তে থাকে কালীগঞ্জের ফতেপুর ও চাকদাহ গ্রাম। জেলা প্রশাসকের দেয়া একটি তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়, প্রকাশিত রিপোর্টে মহানবী (স) সম্পর্কে যে সংলাপের কথা লেখা হয়েছে প্রকৃতপক্ষে আবুল মুনসুর আহমদ রচিত 'হুজুর কেবলা' নামক গল্পে এ জাতীয় কোন শব্দাবলী নেই এবং গল্প অবলম্বনে রচিত নাটকের স্ক্রিপ্টে এ জাতীয় কোন শব্দ চয়ন করা হয়নি। এমনকি নাটকটির ভিডিওফুটেজে এ জাতীয় সংলাপের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করে বলা হয়, এরূপ সংবাদে সাম্প্রদায়ীকতাকে উস্কে দেয়া হয়েছে। 
রিপোর্টে আরও বলা হয়, জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় উত্তেজিত জনতা ৩১ মার্চ ফতেপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির ক্ষতি করেছে। এ ছাড়া ৮টি পরিবারের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে সাধারণ নিরীহ মানুষের সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধনসহ জনমনে তীব্র আতঙ্কের সৃষ্টি করে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারত্মকভাবে ব্যাহত করে। এ ছাড়া এই ঘটনার ধারাবাহিকতায় প্রতিবেশী দেশের সীমান্ত হতে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে বসন্তপুর ইউনিয়নের চাকদহা গ্রামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৭টি পরিবারের ঘরবাড়িতে ১ এপ্রিল উত্তেজিত জনতা লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে। এ ঘটনায় সারাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মাঝে নিরাপত্তাহীনতার সৃষ্টি হয়েছে এবং সরকার বিব্রত হয়েছে। প্রশাসন চরম অবস্থার মুখোমুখি হয়েছে। সর্বোপরি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘিœত হয়েছে। এ কারণে স্থানীয় দৈনিকটির প্রকাশনার অনুমতি বাতিলও করা হয়। 
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের নাটকে নবীজি সম্পর্কে কি কটূক্তি করা হয়েছিল এ বিষয়টি এলাকার কারও কাছে স্পষ্ট না হলেও এই ঘটনার জন্য সংশ্লিষ্ট স্কুল প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সহসভাপতি দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিদারুল ইসলামসহ সকলে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করার ঘোষণা দেন। এর পরও এ ঘটনায় দক্ষিণ শ্রীপুর ইউপি সদস্য আবু জাফর সাঁপুই বাদী হয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি, তিনজন সদস্য, দু'জন শিক্ষক ও নাটক পরিচালনাকারীর নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ দিকে মামলা ও গ্রেফতারের ঘটনার পরও কৃষ্ণনগর, বালিয়াডাঙ্গা ও রামনগর গ্রাম থেকে কয়েক হাজার মানুষ লাঠি নিয়ে হামলিয়ে পড়ে ফতেপুর গ্রামে। কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা আনছার উদ্দিন, সাবেক চেয়ারম্যান জাপানেতা মোশারাফ হোসেনের নেতৃত্বে হাজার হাজার মানুষ হামলা চালিয়ে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটালেও সেখানে থাকা পুলিশ সদস্যরা ছিল একেবারেই নির্বিকার। 
চাকদাহে মৌলবাদীদের পরিকল্পিত সহিংসতা '৭১ সালের সহিংসতাকে হার মানিয়েছে বলে বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মন্তব্য করেন। ভারতীয় দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি সুজিত কুমার ঘোষ এলাকা ঘুরে মন্তব্য করেন, একি ভয়াবহ দৃশ্য। সুজিত কুমার ঘোষ পরে ফতেপুর বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন । এর পরপরই তিনি দেখা করেন সেখানকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। তিনি সহিংসতার শিকার শিক্ষক মিতা রানী হাজরা, লক্ষ্মীপদ ম-ল, আনারুল ইসলাম আকুল মেম্বর, শাহীনুর রহমান, আব্দুল হাকিমসহ এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের বাড়িঘরও সন্ত্রাসীরা ভাংচুর করে পুড়িয়ে দেয় । তাদের কাছ থেকে সেদিনের পৈশাচিক ঘটনার বর্ণনা শোনেন তিনি। 

বিএনপির তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে বনমন্ত্রী যা বলেছেন 
রামুতে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে এবং বসতিতে হামলার ঘটনায় তদন্তের নামে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ কক্সবাজারে গিয়ে পিকনিক করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বন ও পরিবেশমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, নেতারা কক্সবাজারে গিয়ে ভাল হোটেলে থেকে, সমুদ্রসৈকতে মনের আনন্দে ঘুরে ঢাকায় ফিরে ৭২ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন দিয়েছেন খালেদা জিয়ার কাছে, যার নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে তারই এলাকায় হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টানদের ওপর অতীতে অত্যাচার চালানো হয়েছে। শনিবার দুপুরে নগরীর শিল্পকলা একাডেমীতে আয়োজিত এক ছাত্রলীগ নেতার স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। সভায় বন ও পরিবেশমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া যাদের দিয়ে তদন্ত কমিটি বানিয়েছেন তাঁদের নেতৃত্বেই ২০০১ সালে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টানদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। ওই সময় মন্দির, গির্জা এবং বৌদ্ধ প্যাগোডায় আগুন দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার অপরাধে ধর্ষণের মতো কাজও করা হয়েছে। আর এসব ঘটনায় ইন্ধনদাতারা কক্সবাজারে গিয়ে পিকনিক করে বেগম খালেদা জিয়ার সামনে প্রতিবেদন দিয়েছেন বলে বক্তব্যে অভিযোগ করেন মন্ত্রী। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা এবং অতীতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করা, সংখ্যালঘু নির্যাতন তার সবই এক সূত্রে গাঁথা। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দেশ থেকে জঙ্গীবাদ নির্মূল, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আরও সুদৃঢ় করা এবং ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করে যাচ্ছে। আর সরকারের এই প্রচেষ্টার কারণে দেশ আজ সব ক্ষেত্রেই এগিয়ে গেছে।

ধৃতদের স্বীকারোক্তি
নিজস্ব সংবাদদাতা কক্সবাজার থেকে জানান, রামুতে ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে বৌদ্ধ বিহার ও বসতিতে সহিংসতার ঘটনায় জড়িতদের আটকে জেলা পুলিশ প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ওই অভিযানের অংশ হিসেবে গত শুক্র ও শনিবার ২ দিনে আরও ৬ জন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আটককৃতরা উখিয়ার কোর্টবাজারের পশ্চিম রতœা এলাকার মৃত গুরা মিয়ার পুত্র বোরহান, রামুর রাজারকুলের কাটালিয়া এলাকার আহাম্মদ কবিরের পুত্র আবুল হাশেম, একই এলাকা হাফেজপাড়ার মৃত পেয়ার মোহাম্মদের পুত্র ছৈয়দ আলম, উখিয়ার মরিচ্চা এলাকার সুলতানের পুত্র কামাল ও রামুর তেচ্ছিপুলের আশাকারপাড়া এলাকার নুরুল হকের পুত্র পিকআপচালক মোঃ রুবেল। আসামিদের আদালতে প্রেরণ করা হলে ধৃত বোরহান উদ্দিনকে শনিবার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী নেয়া হয়। বোরহান তার দেয়া জবানবন্দীতে আদালতে ওই সহিংসতার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং ঘটনায় জড়িত আরও ৯ জনের নাম প্রকাশ করেছে। ধৃত পিকআপচালক রুবেলও তার দেয়া জবানবন্দীতে ঘটনার দিন তার পিকআপ ব্যবহার করে ও লোকজন আনানেয়ার কথা স্বীকার করে এবং জড়িত ৪ জনের নামসহ অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জনের নাম উল্লেখ করেছে আদালতে। একইভাবে আবুল হাশেম তার জবানবন্দীতে স্বীকারোক্তিমূলক বলেন, ঘটনার দিনে সে রামু পূর্ব কাটালিয়া পাড়ার সুধাংশু বড়ুয়ার বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘাটনায় জড়িত থাকার কথা। সে তার সঙ্গে ঘটনায় জড়িত আরও ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ধৃত আসামি কামাল পশ্চিম মরিচ্যা দিপঙ্কর বৌদ্ধ বিহারে জড়িত ৫ জনের নাম উল্লেখপূর্বক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে। 
উল্লেখ্য, গত ২৯ সেপ্টেম্বর রামুতে সহিংসতায় রাতে এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে রামু, উখিয়া, টেকনাফের সহিংস ঘটনায় রামু থানায় ৪টি, উখিয়া থানায় ৪টি, সদর থানায় ৩টি ও টেকনাফ থানায় ২টিসহ সর্বমোট ১৬টি মামলা রুজু করা হয়। উক্ত মামলায় ৩২১ জন এজাহার নামীয়সহ অজ্ঞাত ১৪ হাজার ৯২৬ জনকে আসামি করা হয়। উক্ত আসামিদের মধ্য থেকে সর্বমোট এজাহারনামী ১৩০ জন এবং এজাহার বহির্ভূত তদন্তে প্রাপ্ত ৮৯ জনসহ সর্বমোট ২২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ঐ রাতে ঘটনাস্থলে যাতায়াতে ব্যবহৃত ২টি ট্রাক, একটি মিনি বাস ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2012-10-14&ni=112474

Related:

রামু হামলার মূল হোতা মুক্তাদির গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার | তারিখ: ১০-১০-২০১২

On Wed, Oct 3, 2012 at 2:15 PM, Mohammad Rahman <mrahman246@yahoo.com> wrote:

Don't read Jaganna kantha , read atleast Prothom Alo. You will know who was behind it.
Sent from Yahoo! Mail on Android



From: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>;
ফাঁস হচ্ছে নেপথ্য তথ্য
০ সর্বমোট ২৭ বৌদ্ধ বিহার ও মন্দির ভস্মীভূত
০ যুবদল ও এমপির জড়িত থাকার সেলফোন কললিস্ট মিলছে
০ ৪৮ ঘণ্টায় প্রণীত নীলনক্সা
মোয়াজ্জেমুল হক, এইচএম এরশাদ ॥ গত শনি ও রবিবার কক্সবাজারের তিন উপজেলা রামু, উখিয়া ও টেকনাফে রোহিঙ্গা জঙ্গী সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে মৌলবাদী জামায়াত ও তাদের দোসর বিএনপির সাম্প্রদায়িক একটি গোষ্ঠী সংখ্যালঘু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বিহার এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মন্দিরে আক্রমণ, ভাংচুর ও আগুন দিয়েছে বলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে আসছে। চট্টগ্রামের পটিয়ায় বৌদ্ধ বিহার ও মন্দিরে আক্রমণ ও ভাংচুরের ঘটনায় স্থানীয় জাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডে কর্মরত জামায়াতে ইসলামীভুক্ত ইসলামী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সমর্থক শ্রমিক কর্মীদের জড়িত থাকার বিষয়টি ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। এসব ঘটনা নিয়ে সরকারীভাবে বিএনপি ও মৌলবাদী সংগঠনসমূহ দায়ী বলে বিভিন্ন পর্যায়ে বলা হলেও সুনির্দিষ্টভাবে এখনও বক্তব্য মেলেনি। শনি ও রবিবারে সংঘটিত এসব ঘটনায় সর্বমোট ২৭টি বৌদ্ধ বিহার ও হিন্দুদের মন্দির ভাংচুর ও আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে। বিক্ষিপ্তভাবে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে বৌদ্ধ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতবাড়ি। মঙ্গলবার পর্যন্ত এসব ঘটনা নিয়ে গ্রেফতার হয়েছে সর্বমোট ২৫২ জন। 
অনুসন্ধানে এবং দায়িত্বশীল বিভিন্ন সূত্রেপ্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী নিশ্চিত হওয়া গেছে এ ঘটনা সম্পূর্ণ পরিকল্পিতএর নেপথ্যে জামায়াত শিবির ও বিএনপির উগ্র একশ্রেণীর সন্ত্রাসী তৎপরতায় লিপ্তদের রয়েছে প্রণীত নীলনকশা। রামু, উখিয়া ও টেকনাফে গান পাউডার ও পেট্রোল দিয়ে বিহার, মন্দির ও বসতবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনার কাজে জড়িতদের মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গা জঙ্গীদের একটি অংশ। আর চট্টগ্রামের পটিয়ায় ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডে কর্মরত ইসলামী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সমর্থক নেতাকর্মীরা সরাসরি বিহার-মন্দির ভাংচুরে নেতৃত্ব ও উস্কানি দেয়ার তথ্য মিলেছে। নেতৃত্বদানকারীদের পরিচয় মিলেছে ওয়েস্টার্ন মেরিনের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিও চিত্রে। 
উখিয়া এক আইনজীবী সহকারী (মুন্সী) জনৈক উত্তম কুমার বড়ুয়ার ফেসবুকে ট্যাগ করা পবিত্র কোরান শরীফ অবমাননাকর একটি ছবি প্রদর্শিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রণীত নীলনকশা অনুযায়ী প্রথমে এ্যাকশন শুরু হয়ে যায় রামু উপজেলায়। শনিবার রাত ৮টার পর থেকে জঙ্গী তৎপরতায় মিছিল বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর রাত ১২টা থেকে শুরু হয় হামলা, ভাংচুর ও আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনা। যে তা-ব ভোর ৪টা পর্যন্ত চলে। এ সময় রামুর ১২ বিহার ও মন্দির এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী বড়ুয়াপাড়াগুলোর বসতবাড়ি ম্যাসাকার হয়। একের পর এক জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে যায় বিহার, মন্দির ও বসতবাড়ি। ঐদিন রাতেই উখিয়া ও টেকনাফে অনুরূপ পন্থায় বিহার, মন্দির ও সংখ্যালঘুপাড়া আক্রান্ত হয়ে ভাংচুর ও আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায়। রবিবার রাতেও উখিয়া এবং টেকনাফে বিহার-মন্দিরে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। 
রামুর ঘটনার সূত্রপাত, জঙ্গী মিছিলে কারা নেতৃত্ব দেয় স্থানীয় বিএনপিদলীয় এমপির ভূমিকা কী ছিল তা ধীরে ধীরে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। এসব ঘটনার পর রামু, উখিয়া ও টেকনাফে ১৪৪ ধারা এখনও অব্যাহত আছে। মামলা হয়েছে সর্বমোট ১৭টি। মঙ্গলবার পটিয়ার ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের আরও ১২ ইসলামী সমাজ কল্যাণ ফেডারেশনের সমর্থক কর্মচারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে এ সংস্থার ৩৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এরাও ঐ সংগঠনের সমর্থক। ওয়েস্টার্ন মেরিন কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিষ্ঠানের যত কর্মচারী বেরিয়েছিল বলে দাবি করেছে মূলত তার চেয়ে বেশি ভাংচুরের ঘটনায় অংশ নিয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি। 
গত দুদিনের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, পবিত্র কোরান অবমাননার কথা ছড়িয়ে দিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি করা হয় প্রথমে রামুতে। তারপর একে একে তা উখিয়া, টেকনাফ এবং পরদিন পটিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। রামু, টেকনাফ, উখিয়ায় বড়ুয়া ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি ও দোকানপাটে হামলা, লুটপাট ও মন্দিরে আগুন লাগানোর ঘটনায় প্রশিক্ষিত জঙ্গী রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের আনা হয় বলে দায়িত্বশীল বিভিন্ন সূত্রে জানানো হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনিকভাবে এখনও এদের কারও নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। রামু হাইটুপি এলাকার উত্তম কুমার বড়ুয়ার ফেসবুকে 'ইনসাল্ট আল্লাহ' নামে ফেসবুক এ্যাকাউন্ট থেকে কোরান অবমাননাকর ছবি দেয়ার ঘটনাটি অত্যন্ত কৌশলে সাধারণ ধর্মপ্রিয় মানুষের মাঝেও চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করে। ইতোমধ্যে বেরিয়ে এসেছে, উক্ত ছবিটি মোবাইলে ধারণ করে অতি উৎসাহী একশ্রেণীর যুবক খুব দ্রুত বিভিন্ন জনের মোবাইলে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়। 
বর্তমানে বিভিন্ন সূত্রে বলা হচ্ছে, দেশে অস্থিতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে রামু, উখিয়া, টেকনাফ এবং পটিয়ায় ন্যক্কারজনক যে ঘটনা ঘটানো হয়েছে তাতে জামায়াত-বিএনপির একশ্রেণীর সন্ত্রাসীদের ইন্ধন এখন পরিষ্কার। রামুর পুরো ঘটনা ঘটেছে রীতিমতো কমান্ডো স্টাইলে। সাধারণ কিছু মানুষ এদের সঙ্গে সুর মিলিয়েছে প্রণীত নীলনকশার বাইরে থেকে কিছু না বুঝে। ধর্মীয় উন্মাদনা তাদের মধ্যে যে ছিল তাতে কোন সন্দেহ নেই। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী খুবই সুস্থ ও ঠা-া মস্তিষ্কে জঘন্যতম এ ঘটনা ঘটাতে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনদের দুই ধরনের কথা বলে এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতো কাজ হয়েছে। একদিকে মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত এদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের বোঝানো হয়েছে বাংলাদেশের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা মিয়ানমারের রাখাইনদের সঙ্গে গোপন আঁতাত করে সেখানে তাদের ফিরিয়ে নিয়ে পুনরায় অত্যাচার, নিপীড়ন ও জুলুম চালাবে এবং হত্যার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়কে নির্মূল করতে থাকবে। এ ধরনের ঘটনায় মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা বিতাড়িত হতেই থাকবে। অপরদিকে, বাংলাদেশ সরকার তাদের গ্রহণও করবে না। অপরদিকে, পবিত্র কোরান অবমাননাকর ছবি ফেসবুকে কৌশলে ট্যাগ করে দিয়ে ক্ষেপিয়ে তোলা হয় মুসলিম সম্প্রদায়ের সাধারণ লোকজনকে। যার নেপথ্যে জামায়াত-বিএনপির ইন্ধনের বিষয়টি ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এ ঘটনা ঘটানোর পূর্বে জামায়াত-বিএনপির কিছুসংখ্যক নেতা বিভিন্ন পয়েন্টে গোপন বৈঠক করার তথ্যও মিলছে। সাম্প্রতিক সময়ে মাথাছাড়া দিয়ে ওঠা জামায়াতে আরাকান, হিযবুত তাহ্রীর, আরাকান রোহিঙ্গা ইউনিয়ন (এআরআই) ও দেশীয় জামায়াতে ইসলামীসহ উগ্রপন্থী একাধিক জঙ্গী সংগঠন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বর্তমান সরকারকে হেয়প্রতিপন্ন করে বেকায়দায় ফেলার অপতৎপরতার অংশ হিসেবে এ ধরনের জঘন্যতম ঘটনার জন্ম দেয়া হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের নীলনকশায় ছিল এ ঘটনা দ্রুত সারাদেশে ছড়িয়ে যাবে রীতিমতো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হাঙ্গামা শুরু হবে সর্বত্র। যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচার বানচাল ও নাশকতা সৃষ্টির বিষয়টি এ ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে বলে বলা হচ্ছে। 
ঘটনার পূর্বে রোহিঙ্গা মৌলভী দ্বারা পরিচালিত কক্সবাজার ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির একাধিক মাদ্রাসা থেকে উস্কানি দিয়ে অসংখ্য উগ্র ছাত্রদের একাধিক ট্রাকযোগে জমায়েত করা হয়েছিল রামু স্টেশন ও এলাকার মিঠাছড়িতে। পাশাপাশি শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া সৃষ্টির মাধ্যমে ধর্মীয় সেøাগান দিয়ে বিহার, মন্দিরের দিকে এগিয়ে যায় ক্যাডাররা। তারপর একে একে গান পাউডার ও পেট্রোল দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হয় বিহার, মন্দির ও বসতবাড়ি। 
গত শনিবার রাতে ঘটনার সময় রামু স্টেশনে প্রতিবাদসভায় উপস্থিত থাকা এক ব্যক্তি জানান, মুসলিম সম্প্রদায়ের উত্তেজিত লোকজনরা ধারণা করেছিল যে, ধর্মের প্রতি অবজ্ঞা ও কোরানের অবমাননার বিরুদ্ধে হয়ত প্রতিবাদ সভা হবে। নিন্দা জানিয়ে বক্তব্য রাখা হবে। এতে শরিক হলে পুণ্যের ভাগি হওয়া যাবে। এ ধারণায় যোগ দেয় সাধারণ একশ্রেণীর মানুষ। কিন্তু প্রতিবাদসভা চলাকালে দেখা গেছে, লিংকরোড ও নাইক্ষ্যংছড়ির উভয় দিক থেকে অসংখ্য মোটরসাইকেল ও ট্রাকযোগে খ- খ- মিছিল সহকারে অচেনা লোকজন এসে সভাস্থলে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। মিছিল সহকারে গিয়ে বড়ুয়াপাড়ায় এবং মন্দিরগুলোর ওপর হামলে পড়ে গান পাউডার ও পেট্রোল ছিটিয়ে দেয়। এ ভয়াবহ তা-ব রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত চলে। আবার দমকল বাহিনীকে বাধা দিতে পথিমধ্যে কিছুসংখ্যক উগ্রবাদী জঙ্গী নেতা রোহিঙ্গা ছাত্রদের নিয়ে অবস্থান নেয়। ঘটনার নীলনকশা তৈরি করে তাদের সহযোগীদের পুরো দায়িত্ব অর্পণ করে কতিপয় জঙ্গী ও জামায়াতের সংশ্লিষ্টরা ঘটনার রাতে এলাকার বাইরে চলে যায়। এর কারণ হচ্ছে- তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার পর তাদের দাবি হবে তারা ঘটনার সময় এলাকায় ছিলেন না। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পূর্ণ রাজনৈতিক এবং আক্রোশমূলক। সংশ্লিষ্ট সূত্রসমূহে জানানো হচ্ছে, রামুতে ঘটনা সৃষ্টির পূর্বে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভাড়াটে রোহিঙ্গাদেরও জড়ো করা হয়েছিল। বিভিন্ন স্থানে পৃথক পৃথক বৈঠকও করা হয় অতি গোপনে। 
ছবি ট্যাগকারী কারা ॥ পবিত্র কোরান অবমাননাকর ছবি ট্যাগ-শেয়ার করার নেপথ্যে যাদের নাম জানা যাচ্ছে তারা হলো, রামু মেরুংলোয়া ফতেখাঁরকুলের বাসিন্দা মৃত শামসুল হুদার পুত্র যুবদল নেতা আজিজ, লম্বরীপাড়ার বাদশা মিয়ার পুত্র ও বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য লুৎফর রহমান কাজলের অফিস কর্মী যুবদল নেতা আতিক ও ফতেখাঁরকুল মৃত বদরুজ্জামানের পুত্র যুবদল নেতা মোঃ কামাল উদ্দিন মেম্বার। তারা তিনজন ঘটনার আগে থেকে প্রায়শ অভিযুক্ত উত্তম কুমারের অফিসে বসে তার ই-মেইলে বিভিন্ন ছবি ডাউনলোড করত বলে তথ্য বেরিয়ে আসছে। 
সরেজমিন তথ্যে বেরিয়ে আসছে রামুর ঘটনার দিন অর্থাৎ শনিবার রাত ৯টায় রামু বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ী ও নিরীহ ব্যক্তিদের একটি মিছিল রামু স্টেশনে আসে। পরবর্তীতে রাত সাড়ে নয়টার দিকে হেঁটে সাধারণ উত্তেজিতদের আরও একটি মিছিল এসে জমায়েত হয়। শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিকভাবে চলছিল প্রতিবাদ সমাবেশ। রাত সাড়ে ১১টার পর ট্রাক-মিনিট্রাক ও ড্যাম্পার যোগে যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাদের নেতৃত্বে অন্তত ২০-২৫টি খ- খ- মিছিল আসে মারমুখী অবস্থায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টিকল্পে সেøাগান দিতে থাকে। অল্পক্ষণের মধ্যে কমান্ডো স্টাইলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী পেট্রোলের বোতল হাতে একটি গ্রুপ মোটরসাইকেলের মহড়া দিয়ে সমাবেশ স্থলের দিকে এসেই বড়ুয়া পল্লীর দিকে এগিয়ে যায় এবং তা-ব শুরু করে দেয়। 
মিছিলে যারা নেতৃত্ব দেয়
তথ্যানুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে পূর্ব মেরুংলোয়া থেকে আসা মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছে যুবদল নেতা আজিজ, যুবদল নেতা দিদার ও কামাল উদ্দিন মেম্বার। তেচ্ছিপুল থেকে ছাত্রদল নেতা লিটন ও সাবেক ছাত্রদল নেতা গায়ক কাশেস, পশ্চিম মেরুংলোয়া থেকে যুবদল নেতা আফসার মেম্বার, উখিয়ারঘোনা থেকে বিএনপি নেতা মোঃ ইসলাম, রামুর দক্ষিণ দিক থেকে যুবদল নেতা ফতেখারকুলের আবদুল গণি, চকরিয়া খোটাখালীর নুরুল হক। পাশাপাশি ম-লপাড়া থেকে আসা মিছিলে বাইট্যা রশির পুত্র নুরুল হোসেন। সিপাহিপাড়া থেকে আসা মিছিলের নেতৃত্বে ছিল যুবদল নেতা টিপু কোম্পানি। এছাড়া কাউয়ারখোপ থেকে যুবদল নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন (স্থানীয় সাংবাদিক)। রাজারকুল থেকে আসা মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছে যুবদল নেতা আরিফুর রশিদ, নুরুল ইসলাম ও আমান উল্লাহ। কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন থেকে মুরাপাড়ার জামায়াত নেতা মৌলভী মোজাহের, জামায়াত নেতা জহির উদ্দিন বাবুল, ছাত্রদল সভাপতি রেজাউল করিম, যুবদল সভাপতি মাহমুদুল হক মামুন, মোহাম্মদ শফি ও দেলোয়ার হোসেন সাঈদী। খুনিয়াপালং থেকে যুবদল নেতা আলমগীর মেম্বার ও আবদুর রহিম বৈদ্য। চাকমারকুল থেকে জামায়াত নেতা ফারুক ও হাবিবুর রহমান, বিএনপি নেতা মনির আহমদ, জামশেদ, জামায়াত নেতা মোস্তফা ও হাবিবুল্লাহ এবং ঈদগাও থেকে আসা মিছিলে জামায়াত নেতা মোহাম্মদ আলম ও আলতাজ আহমদ নেতৃত্বে দিয়েছেন বলে ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে এবং রামুর সাধারণ লোকজন সূত্রে জানানো হয়েছে। ঐসব মিছিলে নেতৃত্বদানকারীদের আগে থেকে বলা হয়েছিল কে কোন্ মন্দিরে এবং বড়ুয়াপল্লীতে জ্বালাও- পোড়াও এবং হামলা-লুটপাটের ঘটনায় অংশ নেবে। মিছিল সহকারে আসা দুষ্কৃতকারীরা রামুর বড়ুয়াপল্লীতে হামলা-ভাংচুর ও লুটপাটকারীদের মারমুখী অবস্থায় প্রত্যক্ষ করা গেছে বলে ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আরও জানা গেছে, বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য পিএস দেলোয়ার মুঠোফোনে হামলাকারীদের এই বলে আহ্বান করেছে যে, 'আপনারা ট্রাক-গাড়ি নিয়ে মিছিল সহকারে চলে আসুন।' গাড়ি ভাড়ার চিন্তা করবেন না। এমপি সাহেব চলে আসছেন। ঐ দেলোয়ারের মোবাইল ফোনের কল লিস্ট চেক করলে সত্যতা মিলবে বলে কয়েকটি সূত্রে জানানো হয়েছে। 
  1. জঙ্গীদের নতুন সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা ইউনিয়ন ও জামায়াতে আরাকান কক্সবাজারের কয়েক নেতা ভুয়া ঠিকানায় বাংলাদেশের জাতীয় সনদ গ্রহণকারীরাও এ ঘটনায় সম্পৃক্ত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। টেকনাফের লম্বাবিলে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গত রবিবার বিকেল ৪টায় জামায়াতের রোকন হোয়াইক্যং ইউপি চেয়াম্যান নুর মোহাম্মদ আনোয়ারীর নেতৃত্বে এক গোপন বৈঠকে হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান জামায়াত রোকন মাস্টার মীর কাশেম, ইউপি সদস্য জামায়াত নেতা রশিদ আহমদ, বিএনপি নেতা মোস্তফা কামাল ও জালাল আহমদ মৌলবাদীপন্থী স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তিদের নিয়ে যোগ দেয়। ঐ গোপন বৈঠক শেষে মৌলভী কামাল হোসেকে দিয়ে মাইকিংয়ের মাধ্যমে এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের উস্কানিমূলক প্রচারণায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠেছে। উক্ত ঘোষণার রেশ ধরে এবং জামায়াত নেতা নুর আহমদ আনোয়ারী মোটরসাইকেল নিয়ে এসে 'নারায়ে-তকবির' সেøাগান দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করার পর হোয়াইক্যং বড়ুয়াপল্লীতে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ শুরু হয়। তবে টেকনাফ উপজেলা জায়ামাতের আমির অধ্যক্ষ নুর হোসেন ছিদ্দিকি মঙ্গলবার এ ধরনের অভিযোগ নাকচ করে বলেন, এ ঘটনায় জামায়াতে ইসলামীর দূরতম সম্পর্কও নেই। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের এক নেতার দিকে ইঙ্গিত করে জেলা জামায়াতের আমির মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, রামু, উখিয়া ও টেকনাফে বড়ুয়াপল্লীতে হামলা ঘটনায় প্রশাসন অহেতুক জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মীদের আসামি করছে। সরকার এটি পলিটিক্যাল ইস্যুতে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও জানান, কক্সবাজারে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি দীর্ঘস্থায়ী ছিল এবং আছে। সৃষ্ট ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে তিনি এতে জামায়াতে ইসলামীর দূরতম সম্পৃক্ততাও নেই বলে দাবি করেন।  

কার ইন্ধনে পরিকল্পিত হামলা

কামরুল হাসান ও আব্দুল কুদ্দুস, কক্সবাজার থেকে | তারিখ: ০৩-১০-২০১২

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-10-03/news/294675

তাৎক্ষণিক

বৌদ্ধবিহারে হামলা ও প্রশাসনের ভূমিকা

সুলতানা কামাল | তারিখ: ০৩-১০-২০১২

........ প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্যে, যারা এই কাজ করেছে, তারা ঘটনার শুরুতেই ফেসবুক থেকে সেই ছবি ছাপিয়ে পোস্টার বানিয়ে তা প্রদর্শন করে উসকানিমূলক বক্তব্য দিতে থাকে। নিমেষের মধ্যে নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে ট্রাকভর্তি বিক্ষোভকারীরা এসে আক্রমণের কাজে লেগে পড়ে। তাদের হাতে স্পষ্টত পেট্রল ও পাউডার-জাতীয় পদার্থ ছিল, যা দিয়ে আগুন লাগানো হয়েছে। এটাও জানা গেছে যে একটি জাহাজ তৈরির কারখানার ৫০০ কর্মীও মন্দির আক্রমণে অংশগ্রহণ করে। পটিয়ায়ও দুটি বৌদ্ধমন্দিরে আগুন লাগানো হয়েছে একই কায়দায়। .......

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-10-03/news/294643

Several Facebook users, meanwhile, said Uttam Barua, the Ramu youth being accused of Quran defamation, did not post the photo deemed to be offensive to Islam. They said Uttam was tagged in the photo from a Facebook ID called 'Insult Allah' and so he was in no way responsible. 

bangladesh muslims attack buddhists..burn temples:


Related:
The Religion-Traders  routinely frame stories to establish their narrow objective:
Here is one example ......  (just a tip of the iceberg):

  1. Muslim Cleric Khalid Jadoon Accused of Framing Christian Girl with Down's Syndrome

    Opposing Views‎ - 2 days ago
    Muslim cleric Khalid Jadoon was arrested for trying to frame 11-year-old Rimsha Masih, who is accused of burning pages of a Koran near ...

    Muslim Cleric Accused of Planting Evidence in Pakistan Blasphemy Case



    Police escort blindfolded Muslim cleric Khalid Jadoon as he is brought before a judge at a court in Islamabad, September 2, 2012.
      
    Ayaz Gul

    September 02, 2012

    ISLAMABAD — Police in Pakistan have arrested aMuslim cleric for allegedly planting evidence against a Christian girl accused of blasphemy. The development has raised hopes the girl may be released in a case that has revived calls for reform in the country's controversial anti-blasphemy laws. .......... 
    Details At:











__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___