Banner Advertiser

Thursday, November 22, 2012

[mukto-mona] মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার : বাবাকে হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে কাঁদলেন সাক্ষী বিউটি ...



বাবাকে হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে কাঁদলেন সাক্ষী বিউটি

ঢাকা: আব্দুল আলীমের নেতৃত্বে শান্তি কমিটির সদস্যরা তার বাবা জব্বার হোসেনকে নির্যাতন শেষে হত্যা করেন বলে অভিযোগ করেছেন বিউটি খানম। বৃহস্পতিবার মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সাবেক বিএনপি নেতা আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে-২ সাক্ষ্য দানকালে এ অভিযোগ করেন তিনি। 

বিউটি জানান, সে সময় জয়পুরহাট মহকুমা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ও রাজাকার কমান্ডার আব্দুল আলীম ও তার সহযোগী সদস্যরা পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগিতা করতেন।

সাক্ষ্য দিতে গিয়ে তার বাবাকে নির্যাতন ও হত্যার মর্মস্পর্শী বর্ণনা দেন বিউটি। বাবার কথা বলতে গিয়ে তিনি বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় এজলাসকক্ষের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। 

জয়পুরহাটের পাঁচবিবির বালিঘাটা গ্রামের শহীদ ইপিআর সদস্য জব্বার হোসেনের কন্যা বিউটি আলীমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের অষ্টম সাক্ষী। এর আগে বিউটির স্বামী গোলাম রসুল ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে এসে একই ঘটনার একই ধরনের বর্ণনা দিয়েছেন। আলীমের বিরুদ্ধে ৭ম সাক্ষী শহীদ জব্বার হোসেনের জামাতা গোলাম রসুল সোমবার তার সাক্ষ্যেও জানিয়েছিলেন, আলীমের নেতৃত্বে শান্তি কমিটির সদস্যরা তার শ্বশুর জব্বার হোসেনকে নির্যাতন শেষে হত্যা করেন। 

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামি আব্দুল আলীমকে কাঠগড়ায় শনাক্ত করেন বিউটি খানম। পরে আলীমের আইনজীবী আবু ইউসুফ মো. খলিলুর রহমান তাকে জেরা শুরু করেন। জেরার কার্যক্রম আগামী ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করেছেন চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল।  

বর্তমানে ৫৫ বছর বয়সী সাক্ষী বিউটি খানম বর্তমানে পাঁচবিবি এনএম সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে উচ্চমান সহকারী হিসেবে কর্মরত। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি নবম শ্রেণীর ছাত্রী ছিলেন। তখন তার বয়স ছিল ১৪/১৫ বছর। তখন তার বিয়ে হয়। পরে তিনি বিএ ও এমএড করেছেন। 

সাক্ষ্যে বিউটি বলেন, ''মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি আমার গ্রামের বাড়ি বালিঘাটায় বসবাস করতাম। ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল দুপুরের দিকে ঘোড়াঘাট থেকে পাকিস্তানি সেনারা পাঁচবিবির হাটে এসে অনেক জ্বালাও-পোড়াওসহ বর্বোরোচিত ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। আমি এসব ঘটনা লোক মুখে শুনে অত্যন্ত ভীত-সন্ত্রস্ত হই।'' 

তিনি বলেন, ''ঘটনার দিন পাঁচবিবির হাট থেকে লোকজন দৌড়াদৌড়ি করে আসতে থাকেন। আমি তাদের কাছ থেকে জানতে পারি যে, পাকিস্তানি সেনারা পাচঁবিবি হাটে আসছে। সে সময় শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ও রাজাকার কমান্ডার আব্দুল আলীম ও তার সহযোগী সদস্যরা পাকিস্তানি সেনাদেরকে সহযোগিতা করতেন।'' 

সাক্ষী বলেন, ''ওই দিন গোলাগুলিতে ছাত্তার ও ননী কুণ্ডু নামে দুই ব্যক্তি ছাড়াও অনেকে মারা যান। একই দিনে পাঁচবিবি বাজারেও ধ্বংসযজ্ঞ চালায় শান্তি কমিটি, রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনারা। 

তিনি বলেন, ''আমার বাবা জব্বার হোসেন চট্টগ্রামে ইপিআরের সুবেদার মেজর হিসেবে কাজ করতেন। আমার বাবা জখম হয়ে এসে ধুরুইল গ্রামে আমার স্বামীর বাড়িতে ওঠেন। আমার স্বামীর বাড়ি নিরাপদ নয় ভেবে তিনি পাশের ফিসকা গ্রামের নাজিম উদ্দিনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। সে সময় পাঁচবিবি কামরুন্নেসা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প ছিল। পাঁচবিবি সিওতে(ডেভ) আরো একটি ক্যাম্প ছিল।''

বিউটি খানম বলেন, ''আমার বাবাকে গ্রেফতারের জন্য পাকিস্তানি সেনাদের কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার নেতৃত্বে রাজাকার ও শান্তিবাহিনীর সদস্যরা নাজিম উদ্দিনের বাড়ি ঘেরাও করেন। তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যান। আমি জানার পরে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত হই। এরপর আমার মায়ের সঙ্গে আমার স্বামী গোলাম রসুল দেখা করেন।''

তিনি বলেন, ''পরে জয়পুরহাট শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ও রাজাকার কমান্ডার আলীমের সঙ্গে মা, আমার ভাই জাহাঙ্গীর ও স্বামী গোলাম রসুল দেখা করে বাবার খোঁজ-খবর জানতে চান। আলীম আমার স্বামীকে বলেন, তোমার শ্বশুর জব্বার হোসেন চট্টগ্রামে পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে গোলাগুলিতে অংশ নিয়েছেন। তাকে ছাড়া যাবে না। পরে স্বামীর অনুরোধে আলীম জানান যে, জব্বার হোসেনকে ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চে বসিয়ে রাখা হয়েছে।'' 

''এরপর আব্দুল আলিম একটি চিঠি লিখে দেন। আমার স্বামী সেটি রাজাকার রফিক বিহারীর কাছে দেন। রফিক বিহারী বগুড়া জেলখানা ও রাজাকার ক্যাম্পে খোঁজ নিয়ে জানান যে, জব্বার হোসেনকে পাওয়া যাচ্ছে না।''

সাক্ষী বলেন,  ''আমার স্বামী আব্দুল আলীমের কাছ থেকে ফিরে ডাক্তার ফরিদের সঙ্গে দেখা করলে তিনি নিশ্চিত করেন যে, পাঁচবিবি শান্তি কমিটির কাছ থেকে এনে আব্দুল আলীমের নেতৃত্বে শান্তি কমিটির সদস্যরা আমার বাবাকে নির্যাতন শেষে হত্যা করেন।''

বিউটি খানম বলেন, ''মুক্তিযুদ্ধকালে আব্দুল আলীমের উপস্থিতিতে পাকিস্তানি সেনারা জয়পুরহাটের পাঁচবিবি এলাকায় মানুষ হত্যাসহ বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করেছে।''

আলীমের বিরুদ্ধে এর আগে রাষ্ট্রপক্ষের আরো ৭ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা হলেন, আব্দুল মোমেন, মোহাম্মদ সাইদুর রহমান, নুরুল ইসলাম, মোল্লা শামসুল আলম, আব্দুস সামাদ মণ্ডল, সোলায়মান আলী ফকির ও গোলাম রসুল। আসামিপক্ষ তাদের জেরাও সম্পন্ন করেছেন।

উল্লেখ্য, গত ১১ জুন ৭ ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট ১৭টি অভিযোগে আলীমকে অভিযুক্ত করেন ট্রাইব্যুনাল-২।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, আব্দুল আলীম জয়পুরহাটের ডা. আবুল কাশেম হত্যা ও ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধার গণহত্যার সঙ্গে জড়িত। এছাড়া জয়পুরহাটের করাইকাদিপুর এলাকার গণহত্যাসহ চকপাড়া, জুড়িপাড়া, পালপাড়া, সোনাপাড়া এলাকায় ৩৮ জনকে হত্যারও অভিযোগ রয়েছে আলীমের বিরুদ্ধে, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের।

গত ১৫ মার্চ আলীমের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করেন প্রসিকিউশন। এতে একাত্তরে হত্যা, লুণ্ঠনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আলীমের বিরুদ্ধে তিন হাজার ৯০৯ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। গত ২৭ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-১ আলীমের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আমলে নেন।

আনুষ্ঠানিক অভিযোগে আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে ২৮টি অভিযোগ আনা হয়েছিল। এর মধ্যে ১৭টি আমলে নিয়ে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল-২।

পরে গত ১৬ এপ্রিল আলীমের মামলাসহ তিনটি মামলা ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে ট্রাইব্যুনাল-২ এ স্থানান্তর করা হয়।

উল্লেখ্য, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গত বছরের ২৭ মার্চ জয়পুরহাটের বাড়ি থেকে আলীমকে গ্রেফতার করা হয়। ৩১ মার্চ তাকে ১ লাখ টাকায় মুচলেকা এবং ছেলে ফয়সাল আলীম ও আইনজীবী তাজুল ইসলামের জিম্মায় জামিন দেন ট্রাইব্যুনাল। এরপর বেশ কয়েক দফা এই জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়।

সাবেক এই সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীকে দেওয়া জামিনের অন্য শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে- আলীমের পাসপোর্ট জমা থাকবে ট্রাইব্যুনালের নিবন্ধকের কাছে। ছেলে ফয়সাল আলীমের বনানীর বাসায় তাকে থাকতে হবে। ট্রাইব্যুনালের অনুমতি ছাড়া ঠিকানা বা অবস্থান পরিবর্তন করা যাবে না।

গণমাধ্যমে কোনো ধরনের বক্তব্যও দিতে পারবেন না আলীম। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের সাক্ষী, একাত্তরে নির্যাতিত কেউ, ক্ষতিগ্রস্ত কোনো পরিবার, কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি বা দলের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে, ফোনে বা ব্যক্তির মাধ্যমে কোনো ধরনের যোগাযোগ করা যাবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১২
জেপি/ সম্পাদনা: অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর; জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর eic@banglanews24.com


Related:

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার

'আলীমের নির্দেশে কয়েকজন হিন্দুকে হত্যা করা হয়'

নিজস্ব প্রতিবেদক | তারিখ: ০৯-১০-২০১২

বিএনপির নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবদুল আলীমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গতকাল সোমবার জবানবন্দি দিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের তৃতীয় সাক্ষী নুরুল ইসলাম। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, একাত্তরের মে মাসের শেষ দিকে আলীম ও পাকিস্তানি সেনাদের নির্দেশে কয়েকজন হিন্দুকে নির্যাতনের পর খঞ্জনপুর কুঠিবাড়িতে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।
বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ প্রায় এক ঘণ্টা জবানবন্দি দেন নুরুল ইসলাম (৬৮)। শারীরিক কারণে জামিনে থাকা আলীম এ সময় ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন।
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক নুরুল ইসলাম জবানবন্দিতে বলেন, ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্র ইউনিয়ন করতেন। পরে অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে (ন্যাপ) যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য সরবরাহ করতেন। তিনি বলেন, একাত্তরের মে মাসে পাকিস্তানি সেনারা ক্ষেতলালে যায় এবং ক্ষেতলাল থানা ও স্থানীয় উচ্চবিদ্যালয়ে ক্যাম্প করে। পরে আলীমের সহায়তায় জয়পুরহাট শহরে শাওনলাল বাজলার বাড়ি দখল করে শান্তি কমিটি ও পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্প করা হয়। জয়পুরহাট, আক্কেলপুর, পাঁচবিবি ও ক্ষেতলালের এসব ক্যাম্প থেকে ওই সময়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ পরিচালিত হতো।
রাষ্ট্রপক্ষের এই সাক্ষী বলেন, একাত্তরের মে মাসের শেষ দিকে একদিন তিনি দুই বন্ধুর সঙ্গে হারুঞ্জাহাট ও উত্তর হাটশহরের হিন্দুদের অবস্থা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে যান। এ সময় তাঁরা পাকিস্তানি সেনা, রাজাকার ও শান্তি কমিটির সদস্যদের হারুঞ্জাহাট গ্রামে ঢুকতে দেখেন। তাঁরা জানতে পারেন, পাকিস্তানি সেনা, রাজাকার ও শান্তি কমিটির সদস্যরা উত্তর হাটশহরেও ত্রাস সৃষ্টি করেছে। এদের একটি অংশ হারুঞ্জাহাটে গিয়ে তাঁর (সাক্ষী) পরিচিত বাদল ও শচীনকে ধরে উত্তর হাটশহরে নিয়ে যায়। পাকিস্তানি সেনা, রাজাকার ও শান্তি কমিটির সদস্যরা উত্তর হাটশহর গ্রামের প্রভাষ চন্দ্র শীল, মণীভূষণ ওরফে ফণীভূষণ চক্রবর্তী, কার্তিক বর্মণ, নিমাই চন্দ্র, প্রিয়নাথ বর্মণ ও আরও তিনজনকে ধরে এবং বাদল ও শচীনকে তাঁদের সঙ্গে বন্দী করে ক্ষেতলালে নিয়ে যায়। তাঁরাও পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের অনুসরণ করে ক্ষেতলালে যান। ক্ষেতলালে শান্তি কমিটির কার্যালয়ে নিয়ে ওই বন্দীদের নির্যাতন করা হয়। তাঁরা চিৎকার শুনতে পান। পরে বন্দীদের শাওনলাল বাজলার বাড়ির ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আবদুল আলীম ও পাকিস্তানি সেনারা উপস্থিত ছিল। পরে আলীম ও পাকিস্তানি সেনাদের নির্দেশে ওই বন্দীদের খঞ্জনপুর কুঠিবাড়িতে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।
জবানবন্দি শেষে সাক্ষীকে জেরা শুরু করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী খলিলুর রহমান। জেরা অসমাপ্ত অবস্থায় এই মামলার কার্যক্রম আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তার জবানবন্দি: একই ট্রাইব্যুনালে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক খান জবানবন্দি দেন। তিনি এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের দ্বাদশ ও শেষ সাক্ষী। তাঁকে জেরার জন্য ১৫ অক্টোবর দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।

http://www.prothom-alo.com/detail/news/296340


 Related:

পাক সেনারা আলীমের নেতৃত্বে পাঁচবিবি আক্রমণ করে
যুদ্ধাপরাধী বিচার
সাক্ষী সাইদুরের জেরা
বুধবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১২, ৪ আশ্বিন ১৪১৯


বুধবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১২, ৪ আশ্বিন ১৪১৯



জবানবন্দিতে সাক্ষী সাইদুর রহমান


আলীমের নির্দেশে মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক | তারিখ: ০৫-০৯-২০১২


বিএনপির নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গতকাল মঙ্গলবার জবানবন্দি শেষ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের দ্বিতীয় সাক্ষী সাইদুর রহমান। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আলীমের নেতৃত্বে ও সহায়তায় বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।
বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ সাইদুর রহমানের জবানবন্দি নেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি রানা দাশগুপ্ত। শারীরিক কারণে জামিনে থাকা আলীম এ সময় ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা সাইদুর গত সোমবার জবানবন্দি শুরু করেন।
জবানবন্দিতে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী বলেন, সত্তরের নির্বাচনে কনভেনশন মুসলিম লীগের পরাজিত প্রার্থী আলীম জয়পুরহাট শহরে নিজের বাড়িতে রাজাকারদের নিয়োগ দেন। এপ্রিলে পাকিস্তানি সেনারা জয়পুরহাটের বিভিন্ন স্থানে আসে। জয়পুরহাট শহরে শাওনলাল বাজলার দোতলা বাড়ির নিচতলায় পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্প ও দোতলায় কমান্ডার মেজর আফজাল বেগের থাকার জায়গা করা হয়। শাওনলালের ধানের চাতালে রাজাকারদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প ও গদিঘরে শান্তি কমিটির কার্যালয় স্থাপন করেন আলীম। এরপর তিনি আক্কেলপুর গিয়ে মোহনলাল আগরওয়ালের গদিঘরে শান্তি কমিটির কার্যালয়, দুর্গা দত্ত আগরওয়ালের দোকানঘরে রাজাকার ক্যাম্প ও অস্থায়ী থানা স্থাপন করেন। পরে তিনি শান্তি কমিটির সদস্যদের নিয়ে আক্কেলপুর সিনিয়র মাদ্রাসায় পাকিস্তানি সেনাদের স্থায়ীভাবে থাকার ব্যবস্থা করেন। সেখানেও মেজর আফজালের থাকার জন্য বিশেষ কক্ষের ব্যবস্থা করা হয়।
সাইদুর রহমান বলেন, একাত্তরের ১৯ এপ্রিল তিনিসহ আক্কেলপুর সংগ্রাম কমিটির কয়েকজন সদস্য পাঁচবিবি সংগ্রাম কমিটির সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে যান। তাঁরা ওই রাতে পাঁচবিবিতে ছিলেন। পরদিন দুপুরের দিকে আলীম ও পাঁচবিবি শান্তি কমিটির নেতা জয়বারের নেতৃত্বে পাকিস্তানি সেনাদের একটি দল পাঁচবিবি আক্রমণ করে হত্যা, লুট, অগ্নিসংযোগ প্রভৃতি অপরাধ করে। বিকেলে তারা মেহেরুদ্দিন চৌধুরীর বাড়ি আক্রমণ করে। এ অবস্থায় তিনি আক্কেলপুরের দিকে রওনা হন। পথে জয়পুরহাটে গিয়ে শোনেন, পাঁচবিবিতে আক্রমণের ঘটনায় সেখানকার সাধারণ মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে আলীমের বাড়ি আক্রমণ করেছে। আলীম বাড়ির পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়েছেন। ২১ এপ্রিল সান্তাহার থেকে ট্রেনে করে আক্কেলপুর গিয়ে কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা আকাশে মর্টার শেল নিক্ষেপ ও ফাঁকা গুলি করে। এতে খাদাইল গ্রামের আবদুল মজিদ গুলিবিদ্ধ হন।
সাক্ষী আরও বলেন, পাকিস্তানি সেনাদের ভয়ে ৭ মে আক্কেলপুর থেকে ১৩ জনের একটি দল ভারতে যাচ্ছিল। রাত হয়ে গেলে তারা ভাদস ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান সৈয়দ আলী ডাক্তারের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। তিনি ছিলেন আলীমের দোসর। দলটিকে বৈঠকখানায় ঢুকিয়ে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। সৈয়দ আলী রাতেই জয়পুরহাটে আলীমের কাছে এ খবর পাঠান। পরদিন সকালে আলীম পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে সেখানে যান এবং আটক ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনকে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে তুলে দেন। বাকি ১০ জনকে আক্কেলপুর রেলস্টেশনের বিশ্রামাগারে আটক রাখা হয়। তাঁদের একজন আবদুস সালাম ছিলেন তাঁর (সাক্ষী) বাল্যবন্ধু। এ খবর পেয়ে তিনি সেখানে গিয়ে গোপনে বিশ্রামাগারের জানালা দিয়ে সালামের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানেন। পরে তিনি শোনেন, পাকিস্তানি সেনাদের হাতে তুলে দেওয়া তিনজনকে আলীমের নির্দেশে খঞ্জনপুর কুঠিবাড়ি ঘাটে গুলি করে হত্যা করা হয়। বিশ্রামাগারে আটক রাখা ১০ জনকেও আলীম পাকিস্তানি সেনাদের হাতে তুলে দেন। পাকিস্তানি সেনারা তাঁদের পাঁচবিবির কোকতারা গ্রামের একটি পুকুর পাড়ে নিয়ে গুলি করলে নয়জন মারা যান, একজন বেঁচে যান।
সাইদুর রহমান বলেন, একাত্তরের ১৪ জুন খোকন পাইকারের নেতৃত্বে বগুড়ার ১৪ জন যুবক বগুড়া যাওয়ার পথে আক্কেলপুরে শান্তি কমিটির সদস্যরা তাঁদের ধরে শান্তি কমিটির কার্যালয়ে নিয়ে যায়। এ খবর জানানো হলে আলীম গিয়ে আটক ব্যক্তিদের পাকিস্তানি সেনাদের হাতে তুলে দেন। তিনি তাঁদের অমানবিক নির্যাতন করে হত্যার জন্য পাকিস্তানি সেনাদের নির্দেশ দেন। পাকিস্তানি সেনারা ওই ১৪ জনকে আক্কেলপুর সিনিয়র মাদ্রাসায় নিয়ে গাছের সঙ্গে ঝোলায়। তাঁদের খেজুর কাঁটা দিয়ে আঘাত করা হয়।
এ সময় ট্রাইব্যুনাল সাক্ষীর কাছে জানতে চান, এসব ঘটনা কী তিনি নিজের চোখে দেখেছেন? জবাবে সাক্ষী বলেন, এসব ঘটনা তিনি নিজের চোখে দেখেছেন।
সাইদুর রহমান বলেন, আহত ওই ১৪ জনকে আমট্র গ্রামে নিয়ে তাঁদের ও স্থানীয় কয়েকজনকে দিয়ে কবর খোঁড়ানো হয়। এরপর ওই ১৪ জনকে গুলি করে হত্যা করে মাটিচাপা দেওয়া হয়। জুন মাসের শেষ দিকে সংগ্রাম পরিষদের কাজে তিনি (সাক্ষী) জয়পুরহাট যান। তিনি রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারের পশ্চিম পাশের ফাঁকা জায়গায় ২৪ জন ব্যক্তি, কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা ও মেজর আফজালের সঙ্গে আলীমকে ছবি তুলতে দেখেন। পরে জেনেছেন, জয়পুরহাটের আলোখেলা স্টুডিওর মালিক মোতাসসিন বিল্লাহ ওই ছবি তোলেন। আক্কেলপুরের শহীদ ফজলুল করিমের বড় ভাই আবদুল হাই ওই ছবি সংরক্ষণ করেন।
সাক্ষী বলেন, ৭ অক্টোবর জয়পুরহাটের পশ্চিমে পাহাড়পুরে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের তুমুল যুদ্ধ হয়। পরদিন তিনজন মুক্তিযোদ্ধাকে ধরার পর আলীমের নির্দেশে শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘোরানো হয় এবং প্রচার করা হয়, কেউ মুক্তিবাহিনীতে যোগ দিলে তাঁদের পরিণতিও এমন হবে। পরে তিনি (সাক্ষী) জানতে পারেন, বন্ধনপুর বুড়িবাড়ি ঘাটে ওই তিনজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
রানা দাশগুপ্ত এ সময় জানতে চান, সাক্ষী যেসব ঘটনার বিবরণ দিলেন, তা কী নিজে দেখেছেন? জবাবে সাক্ষী বলেন, কয়েকটি ঘটনা নিজের চোখে দেখেছেন, কয়েকটি শোনা।
জবানবন্দি শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী মুন্সী আহসান কবীর সাক্ষীকে জেরা শুরু করেন। পরে জেরা অসমাপ্ত অবস্থায় এ মামলার কার্যক্রম ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করেন ট্রাইব্যুনাল


আলীমের নির্দেশে মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত হয়েছে ..

http://www.prothom-alo.com/detail/news/286754


আলীমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের ২৮টি অভিযোগ উপস্থাপন।











\







__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___