Banner Advertiser

Thursday, April 18, 2013

[mukto-mona] ক্রান্তিকালে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সর্ববৃহৎ সংগঠনের সম্মেলনে করণীয়



Kindly circulate.

 
Ranjan Chowdhury
-----------------------------

ক্রান্তিকালে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সর্ববৃহৎ সংগঠনের সম্মেলনে করণীয়

পারিবারিক, বংশীয়, সামাজিক এবং পারিপার্শ্বিকভাবে শৈববকাল থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা, রীতি-নীতি ও আচার-আচরণের মাধ্যমে আমি একটি সমন্বিত, অসাম্প্রদায়িক ও বর্ণবিদ্বেষহীন সমাজব্যবস্থায় বিশ্বাসী । এর পেছনে মূলত আমার মা-বাবা, বড় দাদা ও বংশীয় মুরব্বীগণ এবং সাবেক বৃহত্তর বরিশাল ও ফরিদপুর জেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চলজুড়ে শত-শত বছরের সামাজব্যবস্থার প্রভাব রয়েছে । কৈশোর এবং যৌবনে বেড়ে ওঠার সময় মাতৃভূমির স্বাধীকার থেকে স্বাধীনতা আন্দোলন, সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে এই বিশ্বসা-বোধই আদর্শ হয়ে হৃদয়ে প্রোথিত হয় । পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী ও প্রগতিশীলতার মূর্ত প্রতীক জগন্নাথ হলের আবাসিত ছাত্র এবং মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা পালনকারী প্রধান ছাত্র সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ততা ও অগ্নিযুগের বিপ্লবী বিশিষ্ট জননেতা সর্বজন শ্রদ্ধেয় ফণি ভূষণ মজুমদারের একান্ত সাহচর্যে থাকার কারণে এই আদর্শে অবিচল থাকাই আমার ব্রত ও ধর্ম হয়ে দাঁড়ায় ।

এই আদর্শগত কারণেই ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়গত কোন সংগঠনে আমার কখনো উৎসাহবোধ জাগেনি । তাই বিগত ৭০ দশকের শেষে এবং ৮০ দশকের প্রথম দিকে ঢাকেশ্বরী মন্দিরকেন্দ্রিক মন্দির রক্ষা কর্যক্রমে অংশগ্রহণ এবং ১৯৮৮ সালে এরশাদীয় পার্লামেন্টে রাষ্ট্রধর্ম বিল পাশ হওয়ার পর এর বিরুদ্ধে স্বোচ্চার ছিলাম বটে, কিন্তু ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কিমিটি, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ এবং বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক কোন পদ পেতে কখনো আগ্রাহন্বিত ছিলাম না, এখনো নেই । জগন্নাথ হলের অগ্রজ, সমবয়সী ও অনুজরাই মূলত এসব সংগঠনের অগ্রভাগে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং তাদের অনেকেই সেই প্রথম থেকেই আমাকে এসব সংগঠনে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করে বিফল হয়েছেন । এইসব সংগঠনে সরাসরি সম্পৃক্ত হতে আামার অনমনীয় অনীহার মূল কারণ আদর্শ । তাই বরাবরই আমার বিশ্বাস ছিল- স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলটি কোন না কোন দিন নিরঙ্কুশ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হয়ে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরবর্তী ক্ষমতাসীন সামরিক শাসকগোষ্ঠী এবং তাদের দোসরদের কর্তৃক সৃষ্ট ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক বৈষম্য দূরীভূত করবে । ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে সেই দল ভূমিধ্বস বিজয়ী হয়ে ৬ ফেব্রূয়ারি ২০০৯ তারিখে সরকার গঠনের ফলে আমার আশার পাল্লা বহুগুণ ভারি হয়ে ওঠে । কিন্তু অনেক আশা-নিরাশার দোলাচালের পর ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসেদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাশের মধ্য দিয়ে আমার আশার গুড়ে অনেকটাই বাঁলি পড়ে ।

উল্লেখ্য, ধর্মনিরপেক্ষতার প্রকৃত সংজ্ঞা অনুসারে '৭২-এর সংবিধানে এই বিষয়টি হুবহু প্রতিপালিত না হলেও তাতে সকল ধর্মের নাগরিকদের সমঅধিকার নিশ্চিত করা হয়েছিল । বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পরিচালিত সরকার দেশের সকল ধর্মের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিলেন । ফলে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে '৭৫ এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে তাঁর নির্মম হত্যাকাণ্ড-অবধি বাংলাদেশে কোন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বা হামলা সংঘটিত হয়নি ।

পঞ্চম এবং অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের সকল ধর্মের সমঅধিকার হরণ করার পর আশা করা গিয়েছিল ৩০ জুন ২০১১ তারিখে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের '৭২-এর অবস্থানে ফিরিয়ে নেয়া হবে, অর্থাৎ সকল ধর্মের নাগরিকদের সমঅধিকার নিশ্চিত করা হবে । কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল তা করা হয়নি । উল্লেখ্য যে, এই সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের প্রারম্ভে প্রস্তাবনার পূর্বে "বিসমিল্লাহির- রহমানির-রহিম (দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহের নামে),/পরম করুনাময় সৃষ্টিকর্তার নামে" এবং ২ক অনুচ্ছেদে "প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সম-মর্যাদা ও সম-অধিকার নিশ্চিত করিবেন" শব্দগুচ্ছ সংযুক্ত থাকায় সুস্পষ্টভাবে সংখ্যাগুরুদের ধর্মকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে । তাই পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে পঞ্চম এবং অষ্টম সংশোধনীকে খানিকটা পরিমার্জিত করে সংবিধানের ধর্মীয় লেবাস অক্ষুণ্ন রাখা হয়েছে । তাতে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতাতো নয়ই, এমনকি সকল ধর্মের নাগরিকদের সমঅধিকারও নিশ্চিত করা হয়নি । স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী দলটির নেতৃত্বে বর্তমান সংসদে তিন-চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও এমনটি ঘটার কারণে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং প্রগতিশীলরা ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত এবং প্রতিবাদ করেছেন ।

প্রণিধানযোগ্য যে, বিগত সাড়ে তিন দশকের বেশি সময় যাবত পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি কারণে, বিশেষত দীর্ঘ এই সময়ে সরাসরি রাষ্ট্রীয় এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ধর্মকে কারণে-অকারণে যথেচ্ছ রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে । ফলে রাষ্ট্র, সরকার এবং সমাজের রন্ধ্রে-রন্ধ্রে ধর্মীয় অনুভূতি এতোটাই প্রকট আকার ধারণ করেছে যা ইচ্ছা থাকলেও অগ্রাহ্য করা যায় না বিধায় সংবিধানেও ধর্মীয় লেবাস অক্ষত রাখতে হয়েছে বলে ধরে নেয়া যেতে পারে । তাই মনে-মনে অনেক ক্ষোভ পুঞ্জিভূত থাকা সত্ত্বেও এই ভেবে অনেকটা আশ্বস্ত ছিলাম যে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকালীন অন্তত দেশে কোন সাম্প্রদায়িক হামলা সংঘটিত হবে না । আর ভবিষ্যতে স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী দলটি আবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসলে হয়তোবা সংবিধানের এই বৈষম্যমূলক ধারাগুলো বিলোপের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
কিন্তু ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখ ভয়ংকর রাজাকার সাইদির মৃত্যুদণ্ড ঘোষিত হবার পর থেকে নিরীহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর একতরফা বর্বরোচিত যে হামলা প্ররিচালিত হয়ে আসছে, তা বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল । দেশের ধর্মীয় সংখ্যাগুরুদের মধ্যে উগ্র সাম্প্রদায়িক ও ধর্মান্ধ গোষ্ঠী কর্তৃক পরিচালিত এই হামলা প্রতিরোধ বা প্রতিকারে দৃশত্য সরকার এবং সরকারী ও বিরোধী দলসমূহ তেমন কোন কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়নি । আশ্চর্যের বিষয়- এই হামলার ব্যাপারে সরকার ও বিরোধী দল একে অপরকে দায়ী করে আসছে বটে, কিন্তু উভয় পক্ষই ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলা প্রতিরোধ বা প্রতিকারে তাদের কর্মসূচি বা করণীয় কী তা ঘোষণা দিতে বা মৃদু ঘোষণা দিলেও তা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে । ফলে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা পড়ে-পড়ে মার খাচ্ছেন, সর্বস্ব হারাচ্ছেন আর প্রতি মুহূর্তে এই ভেবে আরো বড় ধরনের হামলার আশংকার মধ্যে রয়েছেন যে, আবার কবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃত কোন একটা রাজাকারের বিচারের রায় ঘোষিত হবে- যার জের ধরে সাম্প্রদায়িক হায়েনার দল অসহায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলে পড়বে ।

একটি বিষয় অপ্রিয় সত্য হলেও প্রসঙ্গত এখানে উল্লেখ করা অবান্তর হব না যে, অতীতে পাকিস্তান আমলে, এমনকি বাংলাদেশ আমলেও বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বা সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার হয়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন তাদের ভিটেমাটি ছেড়ে পাশ্ববর্তী দেশে চলে গিযে কোনমতে প্রাণ বাঁচাতে পেরেছেন । পার্শ্ববর্তী দেশের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে দেশান্তরের সেই অবস্থা অধুনা রহিত হয়ে গেছে । ফলে সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের পড়ে-পড়ে মার খাওয়া এবং জীবন দেয়া ছাড়া আর বাকি থাকে ধর্মান্তরিত হওয়া । এসবের যা কিছুই ঘটুক না কেন, মূল কথা দাঁড়াচ্ছে- বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, বিপন্ন বোধ করছেন এবং আরেকটু বেশি করে বলতে হয় তারা অস্তিত্ব সংকটের সম্মুখীন বলেও অনেকে মনে করছেন । এই নিরাপত্তাহীনতা বা বিপন্নতাবোধ বা অস্তিত্ব সংকটবোধ থেকে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা বিভিন্ন সভা-সমাবেশে মনবেদনাজাত ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন- তাদের আস্থায় চির ধরেছে এবং তারা বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক শক্তির উপর আস্থাবান থাকতে পারছেন না ।

এই যখন অবস্থা তখন আজ (১৯ এপ্রিল ২০১৩, শুক্রবার) এ দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সর্ববৃহৎ সংগঠন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে । অন্যদিকে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ঐতিহাসিকভাবে প্রথমে তথাকথিত শত্রু সম্পত্তি আইন, পরে পরিবর্তিত নামে অর্পিত সম্পত্তি আইনের খড়গসহ নানাবিধ সমস্যায় আবর্তিত রয়েছেন । এসব নিয়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃতৃন্দসহ সারা দেশ থেকে আসা প্রতিনিধিরা এই সম্মেলনে তাদের কার্যক্রম এবং সাংগঠনিক বিবরণ তুলে ধরার পাশাপাশি নতুন কার্যকরী কমিটি নির্বাচন করবেন বটে, কিন্তু এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বা অস্তিত্বের প্রশ্নে আগামী দিনগুলোতে তারা কী কর্মপন্থা অবলম্বন করবেন সে ব্যাপারে দৃঢ় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা ।

বাংলাদেশের বিপন্ন সংখ্যালঘুদের উপর হামলা বন্ধ তথা তাদের নিরাপত্তা বিধানে চাই সাংবিধানিক নিশ্চয়তা, রাজনৈতিক দৃঢ়তা, ত্বরিত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ ইত্যাদি । কারণ হামলা, অত্যাচার, নির্যাতন ইত্যাদি যা কিছুই ঘটুক না কেন দেড় কোটিরও বেশি বিশাল জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব বিলোপ করা বা হওয়া সম্ভব নয় । প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ধর্মভিত্তিক সৃষ্ট রাষ্ট্র পাকিস্তানকে আজঅবধি সংখ্যালঘুশূণ্য করা সম্ভব হয়নি । তাই বাংলাদেশেও তা কোন কালেও সম্ভব হবে না বিধায় কীভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলা বন্ধ পূর্বক তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় সে ব্যবস্থাই করতে হবে ।আর ব্যবস্থা গ্রহণে যখন দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর তরফে তেমন কার্যকর কিছু দেখা যাচ্ছে না, তখন ভুক্তভোগীদেরকেই ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়াজ তুলতে হবে । এমন আওয়াজ তুলতে হবে যাতে করে তা দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে তীব্র নাড়া দেয় এবং রাজনৈতিক দলগুলো যেন ধর্মীয় সংখ্যালঘুদেরকে ধর্মীয় বা্ সাম্প্রদায়িক সুড়সুড়ির শিকারের বা বলির পাঠা হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ না পায় ।


__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___