Banner Advertiser

Friday, May 10, 2013

[mukto-mona] হেফাজতে বাংলাদেশ চাই



কালের পুরাণ

হেফাজতে বাংলাদেশ চাই

সোহরাব হাসান | তারিখ: ১১-০৫-২০১৩


১৯৫১ সালের ১৬ অক্টোবর পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান রাওয়ালপিন্ডিতে এক জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। নিহত হওয়ার আগমুহূর্তে তিনি বলেছিলেন, 'খোদা, পাকিস্তানকে হেফাজত করো।' 
এ ঘটনার ২০ বছরের মাথায় পাকিস্তান ভেঙে যায় এবং লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে।
হেফাজত শব্দটির অর্থ রক্ষণাবেক্ষণ, তত্ত্বাবধায়ন, তদারকি ইত্যাদি। যে শাসকবর্গের হাতে পাকিস্তান রক্ষার দায়িত্ব ছিল, সেই শাসকবর্গ সেটি করতে পারেনি বলেই পাকিস্তান ভেঙে গিয়েছিল। মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর 'পোকায় খাওয়া' খণ্ডিত পাকিস্তান এখন জাতিগত বিদ্বেষ, রক্তপাত ও জঙ্গি হানায় বিধ্বস্ত ও বিপন্ন একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। 
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, সারা বিশ্বের চোখে সেই ব্যর্থ রাষ্ট্রটি নির্বাচনের ব্যাপারে ঐকমত্যে আসতে পারলেও, আমাদের 'সফল রাষ্ট্রের' অতিশয় সফল রাজনৈতিক নেতৃত্ব দুই দশক ধরে নির্বাচন নিয়ে কানামাছি খেলা খেলছেন। দেশে বর্তমানে যে রাজনৈতিক সংকট চলছে, তার সবটা না হলেও একটা বড় কারণ—নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা। 
পাকিস্তান রাষ্ট্র এবং পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর যে ভূত এ দেশের মানুষের ওপর চেপে বসেছিল, আমরা তা ঝেড়ে ফেলতে পারিনি। স্বাধীনতার ৪২ বছর পরও পাকিস্তানি সাম্প্রদায়িক, জাতিবিদ্বেষী, হিংসাশ্রয়ী ও স্বৈরতান্ত্রিক রাজনীতি আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজকে ক্ষতবিক্ষত করে চলেছে। 

দুই
বাংলাদেশে বহু রাজনৈতিক দল আছে। এদের মধ্যে কোনোটি নিজেকে খাঁটি বামপন্থী বলে দাবি করে, কোনোটি মধ্যপন্থী পরিচয় দিতে ভালোবাসে। আবার কেউ স্বাধীনতা রক্ষার অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকায় আছে। যদিও এসব দলের আদর্শ, নীতি ও কর্মসূচিতে বৃহত্তর জনগণের স্বার্থের চেয়ে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থ প্রাধান্য পায়। স্বাধীনতার পর দেশের সমগ্র জনগোষ্ঠীকে এক করার, সবার পক্ষে কথা বলার, সবার হয়ে কাজ করার মতো কোনো দল আসেনি। সবাই নিজ নিজ স্বার্থে চলেছে, এখনো চলছে। যারা বাঙালিদের স্বার্থের কথা বলেছে, তারা পাহাড়িদের কথা ভুলে গেছে। যারা মুসলমানের স্বার্থ রক্ষার কথা বলেছে, তারা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানদের স্বার্থের কথা মনে রাখেনি। যারা জনগণতান্ত্রিক বিপ্লব করবে বলে বুলন্দ আওয়াজ তুলেছিল, তাদের চিন্তায়-কর্মেই জনগণের জায়গা ছিল না। ছিল 'রুশ-ভারত ভূত' খেদাও কিংবা 'মার্কিন-চীন দৈত্য' তাড়ানোর মতলবি স্লোগান। আর সাধারণ মানুষের অবোধগম্য এসব অচেনা স্লোগান দিতে দিতে তারা একসময় জনগণ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই অতিবিপ্লবীদের কেউ ধর্মে আশ্রয় নিলেন, কেউ নকল জাতীয়তাবাদে মুক্তি খুঁজলেন, কেউ বা বাঙালি জাতীয়তাবাদীদের সঙ্গে হাত মেলালেন।
ফলে বাংলাদেশে গরিব-দুঃখী মানুষের পক্ষে কথা বলার রাজনীতিটাই হারিয়ে গেল। আমাদের বামপন্থীরা মানুষের কাছে যান না। মানুষের ভাষা বোঝেন না। নিজেদেরও বোঝাতে পারেন না। এসব কারণেই রাজনীতি এখন নিয়ন্ত্রণ করছে ক্রমশ ডানে ঝুঁকে পড়া বুর্জোয়া দলগুলো। স্বাভাবিকভাবে তারা নিজেদের স্বার্থ দেখবে। তাদের নীতিতে, কর্মসূচিতে গরিব মানুষের স্থান নেই। সেই শূন্যতা পূরণ করছে বা করতে চাইছে ধর্মাশ্রয়ী রাজনৈতিক দল ও হেফাজতে ইসলামের মতো অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠনগুলো। আমাদের জনদরদি দল কিংবা বিদেশি সাহায্যপুষ্ট এনজিওগুলো যখন উন্নতির অভিনব গল্প শোনাচ্ছে, তখন দেখতে পেলাম, দেশে প্রায় অর্ধলক্ষ কওমি মাদ্রাসায় অন্তত ৫০ লাখ শিক্ষার্থী আছে (প্রতি মাদ্রাসায় ১০০ জন হলে), যাদের সঙ্গে কথিত আধুনিক রাষ্ট্র, রাজনীতি, শিক্ষা ও সংস্কৃতির সম্পর্ক নেই। এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে বাইরে রেখে যাঁরা দেশের ও সমাজের উন্নতি করতে চান, তাঁরা হয় বোকার স্বর্গে আছেন অথবা দেশবাসীকে বোকা বানাতে চাইছেন।
গত ৬ এপ্রিল ও ৫ মে গরিব এসব মাদ্রাসাছাত্রকে, যাঁরা শাপলা চত্বরে নিয়ে এসেছিলেন, তাঁরাও কেউ তাদের হেফাজত করবেন না। জামায়াতে ইসলামীর মতো এই হেফাজতের নেতাদের ছেলেমেয়েরা কেউ কওমি মাদ্রাসায় পড়ে না। তাঁদের কেউ শাপলা চত্বরের সমাবেশেও আসেনি। এই সমাবেশে এসেছিল বা আনা হয়েছিল সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত ও দরিদ্র ছেলেদের, যাদের খাওয়া-পরার ব্যবস্থা মা-বাবা করতে পারেন না বলে লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে দেন, কওমি মাদ্রাসায় পড়তে পাঠান। আর যাঁরা তাদের শাপলা চত্বরে নিয়ে এসেছিলেন, তাঁরা ক্ষমতা নিয়ে দর-কষাকষি করেন। পত্রিকার খবর অনুযায়ী, তাঁদের কাউকে কাউকে নাকি মন্ত্রী করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। ৫ মে সন্ধ্যা ছয়টার পরও শাপলা চত্বরে হেফাজতের নেতা-কর্মীদের অবস্থান নেওয়ার সেটাই ছিল আসল মাজেজা। 
বাংলাদেশের ছোট-বড় সব দলই জনগণের কল্যাণ ও দেশের স্বার্থরক্ষার কথা বলে রাজনীতি করে। আবার অন্য দলের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র হত্যা এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তোলে। ক্ষমতায় থাকতে তারা এক ভাষায় কথা বলে, বিরোধী দলে গেলে অন্য ভাষায়। তারা কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না, এমনকি অন্যের কথা শোনার প্রয়োজন বোধ করে না। তারা সবাই নিজের হেফাজত করতে সচেষ্ট।
স্বাধীনতার ৪২ বছর পরও যদি রাজনীতিতে স্বাধীনতার পক্ষ ও বিপক্ষ শক্তি থাকে, বুঝতে হবে আমরা খুব বেশি এগোইনি। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি কীভাবে দল ও রাজনীতি করে? তাদের তো নাগরিকত্ব থাকারই কথা নয়। আসলে তারা এই স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নিতে চায় না, চায় রাজনৈতিক স্লোগান হিসেবে ব্যবহার করতে। এতে কথিত স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিই লাভবান হয়। 
আসলে কোনো রাজনৈতিক দলই গোটা দেশকে ধারণ করতে পারছে না। তারা কেউ আওয়ামী লীগকে ধারণ করে, কেউ বিএনপিকে, কেউ বা জাতীয় পার্টি বা জামায়াতকে। সবাই গোষ্ঠীগত স্বার্থে মগ্ন। ব্যক্তিস্বার্থে মশগুল। ৪২ বছর ধরেই আমরা নীতি-আদর্শের চেয়ে ক্ষমতাকেই বড় করে দেখছি। 

তিন

হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ৫ ও ৬ মে সারা দেশে টানটান উত্তেজনা চলছিল। সবার মনেই আতঙ্ক ছিল, শেষ পর্যন্ত এই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ থাকবে কি না? থাকেনি। ৫ মে দুপুরেই শুরু হয় ভয়াবহ সংঘর্ষ, যার জের ধরে কয়েক ঘণ্টা ধরে জ্বলতে থাকল পুরানা পল্টন, তোপখানা মোড়, বায়তুল মোকাররম, বিজয়নগর ও ফকিরাপুল এলাকা। একদিকে আগুন জ্বলছে, অন্যদিকে শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে। এটি কীভাবে সম্ভব হলো? মতিঝিলে হেফাজতের সমাবেশ হলেও বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে কেন বিপুলসংখ্যক কর্মী জড়ো হলেন? কারা তাদের নামিয়েছিলেন? 
অনেকে বলতে চাইছেন, জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা হেফাজতের ভেতরে ঢুকে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। এই দুটি শক্তিকে কি আলাদা করার কোনো উপায় আছে, যেখানে ১৮ দলের অন্তত চারটি দল হেফাজতের আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত? সরকারের নীতিনির্ধারকেরা সব দায় বিএনপি ও জামায়াতের ওপর চাপিয়ে আত্মতৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছেন। কিন্তু হেফাজতের কর্মসূচিতে জামায়াত-শিবিরের এই অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কিংবা নাশকতা রোধে কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি।
অনেকে শাপলা চত্বরের সমাবেশ সরিয়ে দিতে যৌথ অভিযানের ন্যায্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু এর বিকল্প কী ছিল? কম শক্তি প্রয়োগে এ রকম সফল অভিযানের নজির খুব বেশি নেই। যাঁরা শাপলা চত্বরে অভিযানের বিরোধিতা করছেন, তাঁরাই আবার পিলখানায় সেনা অভিযান না চালানোর কঠোর সমালোচনা করতেন। আসলে দলীয় দৃষ্টির বাইরে কেউ কিছু ভাবতে পারছেন না। তবে শাপলা চত্বরের অভিযানে যৌথ বাহিনী সফল হলেও সরকারবিরোধীদের প্রচারণা বন্ধে শতভাগ ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের অতিকথন মন্ত্রীরাও এ ব্যাপারে নিশ্চুপ।
হেফাজতে ইসলামের নেতারা ইসলামের হেফাজতের কথা বলে কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের শাপলা চত্বরে নিয়ে এসে নিজেরা পালিয়ে গেছেন। তাদের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে মানবতা ও ধর্ম—দুটিই চরমভাবে লাঞ্ছিত হয়েছে। মহাজোট সরকারের দায়িত্ব ছিল জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া, তারাও সেই নিরাপত্তা দিতে পারেনি। আওয়ামী লীগের দাবি, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু সেটি ত্বকী হত্যার আসামি, কিংবা মৃত্যুদণ্ড মওকুফ প্রাপ্ত ব্যক্তিদের নিয়ে সম্ভব কি না, সে প্রশ্নের উত্তর নেই। বিএনপি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের অতন্দ্র প্রহরী বলে দাবি করে। কিন্তু তাদের আমলে কীভাবে ভিন্ন দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ১০ ট্রাক অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে? কীভাবে বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃত্বকে হত্যা করতে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়, তার ব্যাখ্যা নেই।
আমরা এমন একটি রাজনৈতিক দল চাই, যে দলটি সব ভেদাভেদ ভুলে বাংলাদেশের সব মানুষকে হেফাজত করবে। কারও নাগরিক অধিকার ও মানবাধিকার হরণ করবে না। ধর্ম ও জাতিগত পরিচয়ে কারও প্রতি বৈষম্য দেখাবে না। আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান সুযোগ ও অধিকার ভোগ করবে। যে দলটি আইনের শাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় মনোযোগী হবে, এবং ব্যক্তি, দল ও গোষ্ঠীর ঊর্ধ্বে জাতীয় স্বার্থকে স্থান দেবে।
হেফাজতে ইসলাম বা অন্য কোনো ধর্ম নয়, কোনো বিশেষ জনগোষ্ঠী নয়, যে দলটি বাংলাদেশের সব মানুষের অধিকার ও স্বার্থ দেখবে, আমরা সেই দলের অপেক্ষায় আছি।
 সোহরাব হাসান: কবি, সাংবাদিক।
sohrab03@dhaka.net

http://prothom-alo.com/detail/date/2013-05-11/news/351257




অভিযান ছিল অপরিহার্য: প্রেসনোট





__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___