----- Forwarded Message -----
From: Gonojagoron Moncho <projonmochottar@gmail.com>
To:
Sent: Tuesday, May 14, 2013 9:38 AM
Subject: [Bangladesh-Zindabad] Gonojagoron
From: Gonojagoron Moncho <projonmochottar@gmail.com>
To:
Sent: Tuesday, May 14, 2013 9:38 AM
Subject: [Bangladesh-Zindabad] Gonojagoron
'চোখের সামনেই আগুনে পুড়ে মরল আমার কলিজার টুকরা'
হরতালের ছোবল
এম শাহজাহান ॥ 'চোখের সামনেই আগুনে পুড়ে মরল আমার কলিজার টুকরা। শত চেষ্টা করেও তাকে বাঁচাতে পারিনি। সাহায্যের জন্যও কেউ এগিয়ে আসেনি। দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছিল। আর পুড়ে যাচ্ছিল আমার কপাল। সইতে না পেরে ঘুষি মেরে বাসের গ্লাস ভেঙে লাফিয়ে বাইরে বের হয়েছি। অন্যসব যাত্রীও বের হয়েছে। শুধু আমার কলিজার টুকরা রাসেল বের হতে পারল না।
আমার সামনেই জ্বলে-পুড়ে মারা গেল ছেলেটি। এ কষ্ট কোথায় রাখব? কোথায় পাব প্রাণের টুকরাকে? বাবারে, আমি মরে গিয়েও যদি ছেলেটিকে রক্ষা করতে পারতাম তাহলে মরেও শান্তি পেতাম। এখন ছেলে হারানোর শোক সইব কিভাবে?'
না, এটি কোন নাটকের সংলাপ নয়। সন্তানহারা একজন হতভাগ্য পিতার আর্তনাদ। সাংবাদিকদের সামনে ঠিক এভাবেই বিলাপ করছিলেন প্রয়াত ব্যাংক কর্মকর্তা রাসেল মাহমুদের পিতা মোঃ সাইফুল ইসলাম। বিএনপি-জামায়াত শিবিরের ডাকা হরতালের আগের দিন উত্তরা আজমপুর চলন্ত বাসে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান রাসেল মাহমুদ। ঘটনাটি ঘটে চলতি বছরের গত ৫ ফেব্রুয়ারি।
শুধু রাসেল মাহমুদ নয়, হরতালে দেশের কোন মানুষের জীবনই এখন আর নিরাপদ নয়। হরতালের ছোবল থেকে রক্ষা পায়নি নিষ্পাপ শিশু ও কোমলমতি শিক্ষার্থীরাও। সহিংস ও ধ্বংসাত্মক হরতালে প্রতিনিয়ত প্রাণহানি ঘটছে। রক্ত ঝরছে। মা হচ্ছেন পুত্রহারা, স্ত্রী হারাচ্ছেন স্বামী আর সন্তান তাঁর প্রিয় বাবাকে! এভাবে অসংখ্য মানুষ রাজনীতির শিকার হয়ে মর্মান্তিক মৃত্যুর মধ্য দিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। গত বছরের এপ্রিল মাসে বাস ড্রাইভার বদর আলীর মর্মান্তিক মৃত্যু আজও দেশের মানুষ ভুলতে পারেনি। হরতাল সমর্থকদের অগ্নিসংযোগের কারণে পার্ক করা বাসে ঘুমন্ত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন বদর আলী বেগ।
দেশের বিবেকবান প্রতিটি মানুষ জানতে চায়-এই কান্নার শেষ কোথায়? জ্বালাওপোড়াও প্রতিহিংসার রাজনীতি কি দেশ থেকে বিদায় নেবে না? আর কত মায়ের বুক খালি হবে হরতাল-অবরোধের কবলে পড়ে?
জানা গেছে, হরতালের আগের দিন কিংবা হরতালে বাসে আগুন দেয়া রাজনীতিতে নতুন সংস্কৃতি হয়ে উঠছে। কারণ হরতালের দিন রাজপথে পিকেটার পাওয়া যায় না। আর তাই হরতালের আগের দিন বাসে আগুন দিয়ে নাশকতা চালিয়ে ভয়-ভীতি ও আতঙ্ক ছড়ানো হয়। বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট হরতাল সংস্কৃতিতে সংযুক্ত করেছে নতুন এই কৌশল। ঢাকা মহানগর পুলিশের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, হরতাল সংস্কৃতিতে নতুন কৌশল সংযুক্ত হয়েছে। এই কৌশলের অংশ হিসেবে হরতালের আগে বাসে অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে। ফলে মারা পড়ছে নিরীহ সাধারণ মানুষ। তিনি বলেন, হরতালের আগের দিন এ ধরনের সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগ করে নিরীহ মানুষ হত্যা করা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। তবে এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক রয়েছে। আগামীতে বাসে অগ্নিসংযোগ করে নিরীহ মানুষ হত্যাকারী পিকেটারদের কঠিন শাস্তির আওতায় আনা হবে।
হরতালে নাশকতা ঠেকাতে পুলিশের কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, হরতালে মিছিলের নামে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালানো হয় বলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। পুলিশ জনগণের জানমাল রক্ষায় যেকোন ধ্বংসাত্মক কর্মসূচী রুখতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিয়েছে। তিনি বলেন, হরতালের আগের দিন মানুষের মাঝে ভীতি ছড়ানোর জন্য গাড়ি ভাঙচুর ও পোড়ানোর মতো ঘটনা ঘটে। এতে অনেক নিরীহ যাত্রীদের জীবনহানি হচ্ছে। তবে এবার সেই পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ কাজ শুরু করেছে। পুলিশ কমিশনার বলেন, নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া সাংবিধানিক দায়িত্ব। তাদের শান্তি নিশ্চিত করতে মহানগর পুলিশ সর্বোচ্চ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
এদিকে, হরতালের সময়ে লাশ ফেলার রাজনীতির ষড়যন্ত্র করার তথ্য রয়েছে গোয়েন্দা সংস্থার হাতে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলে আন্দোলন বেগবান করার পাঁয়তারা চলছে। এজন্য হরতাল আহ্বানকারী রাজনৈতিক দলগুলো একটি অশুভ চক্রকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। আর এতে মারা পড়ছে সাধারণ মানুষ। শুধু হরতাল নয়, সভা-সমাবেশকে কেন্দ্র করেও লাশ ফেলা হচ্ছে। সরকারবিরোধী আন্দোলন চাঙ্গা করতে এ অপকৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। সর্বশেষ হেফাজতের সমাবেশ কেন্দ্র করে সম্প্রতি ঢাকায় তা-ব চালায় ওই চক্রটি। দিনে দুপুরে পল্টন এলাকায় পরিবহন শ্রমিককে মেরে ফেলা হয়। অগ্নিসংযোগ করে জ্বালিয়ে দেয়া হয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সহস্রাধিক দোকান পাট। সরকারী সম্পত্তি বিনষ্ট করার পাশাপাশি বায়তুল মোকাররমের স্বর্ণের মার্কেটে আগুন দেয়া হয়। পবিত্র কোরান শরীফও রক্ষা পায়নি চক্রটির হাত থেকে। গত ২০১০ সাল থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ফলে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ মৃত্যু বরণ করে। পাশাপাশি অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। প্রকৌশলী, ডাক্তার, ব্যাংকার, সাংবাদিক, পুলিশ ও সরকারী উর্ধতন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ হরতালের টার্গেট হচ্ছে।
সূত্র মতে, জালাও পোড়াও কর্মসূচীর হরতাল বাংলাদেশের সংবিধানও সমর্থন করে না। বাংলাদেশে প্রচলিত হরতাল বেশিরভাগ সময়ে সহিংসতায় রূপ নেয়, যা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথে চরম হুমকি। হরতালের এসব নেতিবাচক দিক সংবিধানে প্রদত্ত ৩৬, ৪০, ৪২ অনুচ্ছেদের সরাসরি লঙ্ঘন বলে মত দিয়েছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও সিনিয়র আইনজীবীরা। তাঁদের মতে, 'হরতাল' বলতে আমরা বুঝি সরকারের কোন সিদ্ধান্ত বা কর্মকা-ের বিরুদ্ধে চাপ প্রয়োগের নীতি হিসেবে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে দৈনন্দিন কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা। সে কারণে হরতালকে সাংবিধানিক অধিকার মনে করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে প্রচলিত ধারার হরতালগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, দলীয় স্বার্থে ডাকা হরতাল পালনে জনগণকে বাধ্য করা হচ্ছে। জনগণের মাঝে ভয়-ভীতি সৃষ্টির লক্ষ্যে চালানো হয় জ্বালাও পোড়াও কর্মসূচী। সে কারণে হরতালের সময় সাধারণ মানুষ প্রাণের ভয়ে ঘর থেকে বের হয় না। বন্ধ হয়ে যায় মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের জীবিকা নির্বাহের উপায়। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অঘোষিতভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের দারুণভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। জানমালের ব্যাপক ক্ষতিসাধনের মাধ্যমে চালানো হয় ধ্বংসযজ্ঞ। এ বিষয়ে অতিরিক্ত এ্যাটর্নি জেনারেল এমকে রহমান বলেন, দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য হরতাল একটি সাংবিধানিক অধিকার, তবে এর মাধ্যমে গাড়ি ভাংচুর, জালাও-পোড়াও কর্মসূচী ও ভয়ভীতি প্রদর্শন এটা সংবিধান সমর্থন করে না। তিনি বলেন, সব দলকেই আন্দোলনের ধারা পাল্টাতে হবে। এ ধরনের হরতালের কারণে আমাদের দেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর নতুন কোন উপায় খুঁজে বের করা উচিত। তিনি আরও বলেন, হরতাল পালনে সাধারণ জনগণকে বাধ্য করা যাবে না। এটা সংবিধানের পরিপন্থী। মানুষ ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারে না। দিনে দুপুরে বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। অন্যের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে নিজের অধিকার দাবি করার নৈতিক ভিত্তি থাকে কিভাবে?
আমার সামনেই জ্বলে-পুড়ে মারা গেল ছেলেটি। এ কষ্ট কোথায় রাখব? কোথায় পাব প্রাণের টুকরাকে? বাবারে, আমি মরে গিয়েও যদি ছেলেটিকে রক্ষা করতে পারতাম তাহলে মরেও শান্তি পেতাম। এখন ছেলে হারানোর শোক সইব কিভাবে?'
না, এটি কোন নাটকের সংলাপ নয়। সন্তানহারা একজন হতভাগ্য পিতার আর্তনাদ। সাংবাদিকদের সামনে ঠিক এভাবেই বিলাপ করছিলেন প্রয়াত ব্যাংক কর্মকর্তা রাসেল মাহমুদের পিতা মোঃ সাইফুল ইসলাম। বিএনপি-জামায়াত শিবিরের ডাকা হরতালের আগের দিন উত্তরা আজমপুর চলন্ত বাসে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান রাসেল মাহমুদ। ঘটনাটি ঘটে চলতি বছরের গত ৫ ফেব্রুয়ারি।
শুধু রাসেল মাহমুদ নয়, হরতালে দেশের কোন মানুষের জীবনই এখন আর নিরাপদ নয়। হরতালের ছোবল থেকে রক্ষা পায়নি নিষ্পাপ শিশু ও কোমলমতি শিক্ষার্থীরাও। সহিংস ও ধ্বংসাত্মক হরতালে প্রতিনিয়ত প্রাণহানি ঘটছে। রক্ত ঝরছে। মা হচ্ছেন পুত্রহারা, স্ত্রী হারাচ্ছেন স্বামী আর সন্তান তাঁর প্রিয় বাবাকে! এভাবে অসংখ্য মানুষ রাজনীতির শিকার হয়ে মর্মান্তিক মৃত্যুর মধ্য দিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। গত বছরের এপ্রিল মাসে বাস ড্রাইভার বদর আলীর মর্মান্তিক মৃত্যু আজও দেশের মানুষ ভুলতে পারেনি। হরতাল সমর্থকদের অগ্নিসংযোগের কারণে পার্ক করা বাসে ঘুমন্ত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন বদর আলী বেগ।
দেশের বিবেকবান প্রতিটি মানুষ জানতে চায়-এই কান্নার শেষ কোথায়? জ্বালাওপোড়াও প্রতিহিংসার রাজনীতি কি দেশ থেকে বিদায় নেবে না? আর কত মায়ের বুক খালি হবে হরতাল-অবরোধের কবলে পড়ে?
জানা গেছে, হরতালের আগের দিন কিংবা হরতালে বাসে আগুন দেয়া রাজনীতিতে নতুন সংস্কৃতি হয়ে উঠছে। কারণ হরতালের দিন রাজপথে পিকেটার পাওয়া যায় না। আর তাই হরতালের আগের দিন বাসে আগুন দিয়ে নাশকতা চালিয়ে ভয়-ভীতি ও আতঙ্ক ছড়ানো হয়। বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট হরতাল সংস্কৃতিতে সংযুক্ত করেছে নতুন এই কৌশল। ঢাকা মহানগর পুলিশের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, হরতাল সংস্কৃতিতে নতুন কৌশল সংযুক্ত হয়েছে। এই কৌশলের অংশ হিসেবে হরতালের আগে বাসে অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে। ফলে মারা পড়ছে নিরীহ সাধারণ মানুষ। তিনি বলেন, হরতালের আগের দিন এ ধরনের সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগ করে নিরীহ মানুষ হত্যা করা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। তবে এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক রয়েছে। আগামীতে বাসে অগ্নিসংযোগ করে নিরীহ মানুষ হত্যাকারী পিকেটারদের কঠিন শাস্তির আওতায় আনা হবে।
হরতালে নাশকতা ঠেকাতে পুলিশের কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, হরতালে মিছিলের নামে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালানো হয় বলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। পুলিশ জনগণের জানমাল রক্ষায় যেকোন ধ্বংসাত্মক কর্মসূচী রুখতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিয়েছে। তিনি বলেন, হরতালের আগের দিন মানুষের মাঝে ভীতি ছড়ানোর জন্য গাড়ি ভাঙচুর ও পোড়ানোর মতো ঘটনা ঘটে। এতে অনেক নিরীহ যাত্রীদের জীবনহানি হচ্ছে। তবে এবার সেই পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ কাজ শুরু করেছে। পুলিশ কমিশনার বলেন, নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া সাংবিধানিক দায়িত্ব। তাদের শান্তি নিশ্চিত করতে মহানগর পুলিশ সর্বোচ্চ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
এদিকে, হরতালের সময়ে লাশ ফেলার রাজনীতির ষড়যন্ত্র করার তথ্য রয়েছে গোয়েন্দা সংস্থার হাতে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলে আন্দোলন বেগবান করার পাঁয়তারা চলছে। এজন্য হরতাল আহ্বানকারী রাজনৈতিক দলগুলো একটি অশুভ চক্রকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। আর এতে মারা পড়ছে সাধারণ মানুষ। শুধু হরতাল নয়, সভা-সমাবেশকে কেন্দ্র করেও লাশ ফেলা হচ্ছে। সরকারবিরোধী আন্দোলন চাঙ্গা করতে এ অপকৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। সর্বশেষ হেফাজতের সমাবেশ কেন্দ্র করে সম্প্রতি ঢাকায় তা-ব চালায় ওই চক্রটি। দিনে দুপুরে পল্টন এলাকায় পরিবহন শ্রমিককে মেরে ফেলা হয়। অগ্নিসংযোগ করে জ্বালিয়ে দেয়া হয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সহস্রাধিক দোকান পাট। সরকারী সম্পত্তি বিনষ্ট করার পাশাপাশি বায়তুল মোকাররমের স্বর্ণের মার্কেটে আগুন দেয়া হয়। পবিত্র কোরান শরীফও রক্ষা পায়নি চক্রটির হাত থেকে। গত ২০১০ সাল থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ফলে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ মৃত্যু বরণ করে। পাশাপাশি অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। প্রকৌশলী, ডাক্তার, ব্যাংকার, সাংবাদিক, পুলিশ ও সরকারী উর্ধতন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ হরতালের টার্গেট হচ্ছে।
সূত্র মতে, জালাও পোড়াও কর্মসূচীর হরতাল বাংলাদেশের সংবিধানও সমর্থন করে না। বাংলাদেশে প্রচলিত হরতাল বেশিরভাগ সময়ে সহিংসতায় রূপ নেয়, যা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথে চরম হুমকি। হরতালের এসব নেতিবাচক দিক সংবিধানে প্রদত্ত ৩৬, ৪০, ৪২ অনুচ্ছেদের সরাসরি লঙ্ঘন বলে মত দিয়েছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও সিনিয়র আইনজীবীরা। তাঁদের মতে, 'হরতাল' বলতে আমরা বুঝি সরকারের কোন সিদ্ধান্ত বা কর্মকা-ের বিরুদ্ধে চাপ প্রয়োগের নীতি হিসেবে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে দৈনন্দিন কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা। সে কারণে হরতালকে সাংবিধানিক অধিকার মনে করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে প্রচলিত ধারার হরতালগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, দলীয় স্বার্থে ডাকা হরতাল পালনে জনগণকে বাধ্য করা হচ্ছে। জনগণের মাঝে ভয়-ভীতি সৃষ্টির লক্ষ্যে চালানো হয় জ্বালাও পোড়াও কর্মসূচী। সে কারণে হরতালের সময় সাধারণ মানুষ প্রাণের ভয়ে ঘর থেকে বের হয় না। বন্ধ হয়ে যায় মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের জীবিকা নির্বাহের উপায়। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অঘোষিতভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের দারুণভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। জানমালের ব্যাপক ক্ষতিসাধনের মাধ্যমে চালানো হয় ধ্বংসযজ্ঞ। এ বিষয়ে অতিরিক্ত এ্যাটর্নি জেনারেল এমকে রহমান বলেন, দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য হরতাল একটি সাংবিধানিক অধিকার, তবে এর মাধ্যমে গাড়ি ভাংচুর, জালাও-পোড়াও কর্মসূচী ও ভয়ভীতি প্রদর্শন এটা সংবিধান সমর্থন করে না। তিনি বলেন, সব দলকেই আন্দোলনের ধারা পাল্টাতে হবে। এ ধরনের হরতালের কারণে আমাদের দেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর নতুন কোন উপায় খুঁজে বের করা উচিত। তিনি আরও বলেন, হরতাল পালনে সাধারণ জনগণকে বাধ্য করা যাবে না। এটা সংবিধানের পরিপন্থী। মানুষ ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারে না। দিনে দুপুরে বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। অন্যের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে নিজের অধিকার দাবি করার নৈতিক ভিত্তি থাকে কিভাবে?
__._,_.___