Banner Advertiser

Tuesday, June 11, 2013

[mukto-mona] টাকা ২২২,৪৯১,০০০০০০০.০০ মাত্র




সহজিয়া কড়চা

টাকা ২২২,৪৯১,০০০০০০০.০০ মাত্র

সৈয়দ আবুল মকসুদ | তারিখ: ১১-০৬-২০১৩

সম্রাট অশোক ও আকবরের সুবিধা ছিল এই যে তাঁদের সময় পত্রপত্রিকা ও টিভি চ্যানেলগুলো ছিল না। নির্বাচিত পার্লামেন্ট বা সংসদ না থাকলেও অশোকেরও অনির্বাচিত পরিষদ ছিল, আকবরেরও উপদেষ্টারা ছিলেন আমাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো—এখন যা বিলুপ্ত। তাঁদের সরকারকেও একটি বার্ষিক বাজেট তৈরি করতে হতো। সেকালে ছিল না শুধু বাজেট-বক্তৃতা। বলাই বাহুল্য, বাজেট না থাকলে আকবর ফতেহপুর সিক্রি এবং
তাঁর নাতি শাহজাহান তাজমহল বানাতে পারতেন না। বিশ্বব্যাংকের ঋণ ছাড়াই তাঁরা ওসব বানিয়েছিলেন।
বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রের বাজেট আর বঙ্গীয় বাজেট এক জিনিস নয়। আমাদের রবীন্দ্র-নজরুলজয়ন্তী পালনের ধুম, বাজারে আম-কাঁঠাল-লিচু-জাম ওঠা এবং বাজেট ঘোষণা একই মৌসুমে হয়ে থাকে। গোলটেবিল, সংবাদ সম্মেলন প্রভৃতি প্রবল বেগে চলতে থাকে। এর মধ্যে বাজেট বক্তৃতা পঠিত হওয়ার দিনটি আসে। যাঁদের দিবানিদ্রার অভ্যাস, সেদিন তাঁরাও বসে যান টিভির সামনে। যাঁদের হিন্দি সিরিয়াল না দেখলে ভাত হজম হয় না, ওই দিন অপরাহে কোনো সিরিয়ালের একটি পর্ব দেখা হয় না তাঁদের।
বছর বছর বাজেটে টাকার অঙ্কটা যেমন বাড়ছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে বাজেট-বক্তৃতার আকার। এবার বাজেটে যে অঙ্কটির কথা বলা হয়েছে, উয়ারী-বটেশ্বরের সময় থেকে আজ পর্যন্ত বাঙালি অত টাকার কথা শোনেনি। বাজেটের পরিমাণ ২২২,৪৯১,০০০০০০০ টাকা। ওই টাকা বাংলাদেশের সব মানুষকে ভাগ করে দিলে প্রত্যেকের ভাগে পড়বে ১৪ হাজার টাকার কিছু কম।
বাহাত্তর সাল থেকে সামরিক শাসন ও তত্ত্বাবধায়কের সময় ছাড়া প্রায় সব সংসদেই আমার অর্থমন্ত্রীর বাজেট-বক্তৃতাপাঠ উপভোগ করার সৌভাগ্য হয়েছে। এবারও আমন্ত্রিত হয়ে দর্শক গ্যালারিতে ছিলাম। এবারের বাজেট-বক্তৃতাটি ছিল ১৮৫ পৃষ্ঠার। অর্থমন্ত্রীর বয়স, শারীরিক অবস্থা ও বাজেটের আকার বিবেচনা করে মাননীয় স্পিকার শুরুতেই বলেন, ইচ্ছা করলে অর্থমন্ত্রী বসেও পাঠ করতে পারেন। অর্থমন্ত্রী কিছুটা দাঁড়িয়ে পাঠ করে বেশির ভাগ সময় বসেই পড়েন।
বিরোধী দলের আসনগুলো শূন্যতায় খাঁ খাঁ করছিল। শুধু তাঁদের টেবিলের ওপর শোভা পাচ্ছিল বাজেটসংক্রান্ত কাগজপত্রের একটি করে মস্ত বড় থলে। প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি তাদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলে, এ বাজেট 'রাজনৈতিক ফায়দা লোটার' বাজেট। সারা রাত ভালো করে পাঠ করে পরদিন মওদুদ আহমদ বললেন, 'এ বাজেট অ্যা বিউটিফুল বিগ বেলুন'—একটি বিরাট সুন্দর বেলুন। এর মধ্যে বাতাসই বেশি। তার পরদিন মৃদুভাষী মঈন খান বললেন, এ বাজেট 'একটি খোঁড়া হাঁস'। বিএনপির আমলের বাজেটগুলো ছিল সুস্থ হাঁস, তা পি টি উষার মতো দৌড়াতে পারত। সরকারি জোটের জাতীয় পার্টির নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, এ বাজেট 'নির্বাচনবিলাসী'। বাজেট বিষয়ে বিশেষ অভিজ্ঞ চরমোনাইয়ের পীরসাহেব মুখ খুললেও হেফাজত নেতারা কোনো মন্তব্য করেননি। কারণ, তাঁরা পার্থিব ব্যাপারে মাথা ঘামান না।
সংসদ থেকে যখন বেরিয়ে আসি, কয়েকজন সাংবাদিক জানতে চাইলেন আমার প্রতিক্রিয়া। আমি বললাম, টাকার অঙ্কটা খুব বড়। একটি নয়, দুটি নয়, আড়াইটি বাংলাদেশকে এই টাকায় সোনার বাংলা না হোক পিতলের বাংলা হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। তবে দুর্নীতি বন্ধ না হলে সিকি বাংলাদেশেরও এ টাকায় উন্নয়ন সম্ভব নয়।
সিপিডির গবেষকেরা শিল্প-সাহিত্যেরও সমঝদার। তাই বোধ হয় বলতে চেয়েছিলেন অবাস্তব, বলেছেন এ বাজেট 'পরাবাস্তব'। তবে আমার মনে হয়, বাজেটটা পরাবাস্তব হলেই ভালো হতো। কুড়ি শতকের বিশের দশক থেকে সুররিয়ালিজম বা পরাবাস্তববাদ শব্দটি প্রচলিত। উৎপত্তি ফরাসি দেশে। শিল্পকলা-সাহিত্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। বাংলাদেশে তা বাজেট পর্যন্ত পৌঁঁছেছে। অ্যাপলিনিয়ার, আঁদ্রে ব্রেতো, লুই আরাগঁ, পল এলুয়ার, পিকাসো, সালভাদোর দালি প্রমুখ ভাবতেও পারেননি কোনো দেশের বাজেটও পরাবাস্তব হতে পারে অর্থাৎ বাস্তবতা থেকে বহু দূরে। এবারের বাজেট পরাবাস্তব, আগামী নির্বাচনের পর নতুন সরকার যে বাজেট দেবে ২০১৪-১৫-তে, সেটি হবে দাদাবাদী (Dadaism) বাজেট।
আসলেই এটি পরাবাস্তব বাজেট। পরাবাস্তববাদীরা অচেতন ও অবচেতন মনের ভাবনা তাঁদের রচনা ও শিল্পকর্মে প্রকাশ করেন। চেতন ও অবচেতন মনের খেলা non-logically এবং illogically—যুক্তিবিবর্জিত এবং অযৌক্তিকভাবে রচনায় তুলে ধরা হয়। অর্থমন্ত্রী তাঁর রচনার একটি জুতসই শিরোনামও দিয়েছেন: 'উন্নয়নের চার বছর: স্বপ্ন পূরণের পথে বাংলাদেশ'। পরাবাস্তববাদীরা তাঁদের স্বপ্ন পূরণের কোনো প্রয়োজন মনে করেন না, আমরা স্বপ্ন পূরণ না করে ঘরে ফিরব না। আমরা একটি পদ্মা সেতু দেড় বছর যাবৎ টেলিভিশনে দেখছি। এটার নামই পরাবাস্তবতা।
বাংলাদেশের ইতিহাসে আবুল মাল আবদুল মুহিত অত্যন্ত সংস্কৃতিমান, উচ্চশিক্ষিত ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অর্থমন্ত্রী। তাঁর অর্থনীতি বিষয়ে জ্ঞান ও প্রশাসনিক দক্ষতা প্রশ্নাতীত। শিল্প-সাহিত্য নিয়ে তাঁর সঙ্গে তর্ক করা যায়। তিনি একজন গ্রন্থকারও। তাঁর বাংলাদেশ-ইমার্জেন্স অব অ্যা ন্যাশন (১৯৭৮), থটস অন ডেভেলপমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (১৯৮১), বাংলাদেশ পুনর্গঠন ও জাতীয় ঐকমত্য (১৯৯১) প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ। তাঁর বিশ্লেষণ নিরপেক্ষ। তিনি তাঁর নিজের সম্পর্কে লিখেছেন:
'১৯৫৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৭১-এর জুন পর্যন্ত আমি পাকিস্তান সরকারের সিভিল সার্ভিসের সদস্য ছিলাম। ১৯৬৯ সালের আগস্টে আমি ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাসে অর্থনৈতিক কাউন্সিলর হিসেবে যোগ দিই। ১৯৭১-এ পাকিস্তানের সেনাবাহিনী যখন বাংলাদেশের ছাত্রজনতার উপর হামলা করে তারই ফলশ্রুতিতে একজন আমলার রুটিন ভূমিকা বিসর্জন দিয়ে তিরিশে জুন ১৯৭১ তারিখে আমি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করি। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমে আমাকে পরিকল্পনা কমিশনের সচিব হিসেবে নিয়োগ করা হয়। কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে ১৯৭২-এর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকায় অবস্থানের পরে আমি ওয়াশিংটনে অর্থনৈতিক মিনিস্টার হিসেবে প্রত্যাবর্তন করি। বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের সদস্য হলে ১৯৭২-এর নভেম্বরে আমি বিশ্বব্যাংকে একান্তর (Alternate) নির্বাহী পরিচালক হিসেবে যোগ দিই।...১৯৭৪-এর শেষে আমি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নির্বাহী পরিচালক হিসেবে যোগ দিই, ১৯৭৭-এ জুন মাসে আমি বাংলাদেশে বহিঃসম্পদ বিভাগের সচিবের দায়িত্ব নিই এবং ১৯৮০ সালে অবসরগ্রহণের আবেদন করে ১৯৮১ সালের শেষ দিনে সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করি।' [মুখবন্ধ, বাংলাদেশ পুনর্গঠন ও জাতীয় ঐকমত্য]
প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সরকার ছাড়া সব সরকারের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা তাঁর রয়েছে। তিনি লিখেছেন, '১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত জেনারেল জিয়া সরকারের বিভিন্ন অর্থনৈতিক বিষয়ে উদ্যোগের সঙ্গে আমি গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট ছিলাম।'
নিজের সম্পর্কে এবং বিভিন্ন সরকার সম্পর্কে তিনি স্পষ্ট পর্যালোচনা করেছেন তাঁর গ্রন্থে। ২৬ মার্চ ১৯৯১ তিনি লিখেছেন, '১৯৮২ সালের ২৪ মার্চে কিছু সামরিক শাসন জারি হলো। জেনারেল এরশাদ ঘোষণা করলেন যে,...দেশকে পরিচালনার জন্য নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে কাজ করা প্রতিটি দেশপ্রেমিকের কর্তব্য।...এরশাদের শেষ আবেদন হলো যে দেশের অর্থনৈতিক সংকটকালে সামান্য সময়ের জন্য হলেও আমাকে উপদেষ্টার [অর্থমন্ত্রী] দায়িত্ব নিতে হবে। ২৯ মার্চ নানা চাপের মুখে আমি নিতান্তই একটি ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।'
নিজের সমালোচনা শুধু নয়, বিভিন্ন সরকারের মূল্যায়ন করেন তিনি নির্মোহ দৃষ্টিতে। তাঁর মন্তব্য: '১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বরে দেশের সংবিধান রচিত হয় আর তার ভিত্তি ছিল সংসদীয় সরকারপদ্ধতি এবং মানবাধিকারের শ্রেষ্ঠতা। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার অতি সত্বর তাদের জনপ্রিয়তা হারিয়ে ফেলে এই সুন্দর সংবিধানের উদারনৈতিক মানসিকতার উপর আঘাত হানে।...আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারের গড়িমসি ও দলীয় স্বার্থকে প্রাধান্য প্রদান মোটেই কাঙ্ক্ষিত ছিল না। ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠতে আওয়ামী লীগের ব্যর্থতা নির্দলীয় জনগণকে ব্যথিত করে।...দলীয় স্বার্থের বিকৃত উপলব্ধিই সন্ত্রাসের রাজস্ব দমনে সরকারকে ব্যর্থ করে।...তারপরে আসলো বিভিন্ন কালাকানুন। বিশেষ ক্ষমতা আইন, প্রেস ও প্রকাশনা আইন আজও শাসকগোষ্ঠীর নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে। ব্যক্তিস্বাধীনতার সংকোচন, বাকস্বাধীনতার উপর আঘাত আর সর্বোপরি জাতীয় রক্ষীবাহিনীর নির্যাতন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার সুন্দর স্বপ্নকে ভেঙে খান খান করে দেয়।' [পৃ. ৬-৭]
তিনি আরও বিশ্লেষণ করেছেন আওয়ামী লীগের সরকারের নেতাদের কথা। বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তাঁর মূল্যায়ন এ রকম:
'বাংলাদেশের মন্ত্রিসভা বা প্রশাসনে এবং জাতীয় সংসদে তাঁর মতামতই পেত রাষ্ট্রীয় নীতি বা সিদ্ধান্তের স্বীকৃতি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবেই তিনি ছিলেন সর্বশক্তিমান। ব্যক্তিকেন্দ্রিক এই ব্যবস্থার দুর্বলতা ছিল বিস্তর। মোসাহেবী ও বিবেচনাহীন মতামত প্রদান ক্রমে ক্রমে এতই প্রাধান্য লাভ করে যে সদুপদেশ ও ভিন্নমত দেশ থেকে প্রায় বিতাড়িত হয়ে যায়।' [পৃ. ৮]
তিনি বলেছেন, 'চতুর্থ সংশোধনী একনায়কত্বের সাংবিধানিক ভিত্তি রচনা করে। আইনগতভাবে যথেচ্ছ শাসনের বীজ বপন করা হয়—এই সংশোধনীর ফলে। চতুর্থ সংশোধনী নিঃসন্দেহে অসমীচীন ও অনাহুত ছিল, কিন্তু তা পাস হয় সাংবিধানিক ধারায় এবং তার পরিবর্তনও সেই ধারায় বাঞ্ছনীয় ছিল। কমপক্ষে একটি গণআন্দোলনে এর পরিবর্তন কাম্য ছিল।' [পৃ. ১৫]
'জেনারেল জিয়ার শাসনকাল' শীর্ষক অধ্যায়ে তিনি লিখেছেন, 'মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম নায়ক হিসেবে জেনারেল জিয়ার খ্যাতি এবং তাঁর কর্মোদ্যম তাঁকে জনপ্রিয় নেতা হিসেবে অধিষ্ঠিত করে।...১৯৭৮ সালের ১২ জুন হয় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। জিয়ার সপক্ষে গঠিত হলো জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট, আর তাঁর বিরুদ্ধে গড়ে উঠলো গণতান্ত্রিক ঐক্যজোট। সরকারি প্রভাবের পূর্ণ ব্যবহার আর জাগো দলের প্রচেষ্টা, সামরিক শাসনের কর্তৃত্ব এবং তাঁর ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা জিয়ার নির্বাচনে প্রচুর অবদান রাখে। এই নির্বাচনে ৫৩.৬ শতাংশ ভোটদাতা অংশগ্রহণ করেন এবং জিয়া পান ৭৬.৭ শতাংশ ভোট। জেনারেল ওসমানী পান ২১.৭ শতাংশ ভোট। আগস্ট মাসে জিয়া তাঁর নিজস্ব রাজনৈতিক দল গঠন করলেন। নানা মতের নানা জনকে নিয়ে গঠিত হলো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।' [পৃ. ১৯]
তিনি লিখেছেন, '১৯৮১ সালের ১৫ নভেম্বর বিচারপতি সাত্তার নির্বাচনে জয়লাভ করেন।... এই নির্বাচনে সেনাধিনায়ক এরশাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন।...বিচারপতি সাত্তার নির্বাচনের পর নতুন করে মন্ত্রিসভা গঠন করেন এবং ৩ জানুয়ারিতে একটি নিরাপত্তা পরিষদ গঠন করেন। কিন্তু জেনারেল এরশাদ এই পরিষদ মেনে নিলেন না।...জেনারেল এরশাদের নানা আবদার ও দাবিদাওয়ায় উত্ত্যক্ত এবং তাঁর ব্যবহার ও কর্মকাণ্ডে বীতশ্রদ্ধ হয়ে রাষ্ট্রপতি শেষ পর্যন্ত তাঁকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৮২ সালের ২৩ মার্চ তিনি রাজনৈতিক কর্মকর্তাদের পুনর্বিন্যাস করেন এবং একই সঙ্গে নতুন সেনাধিনায়ক নিয়োগের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু রাষ্ট্রপতি সাত্তার খুব দেরি করে ফেলেন। জেনারেল এরশাদকে অনবরত লাই দিয়ে তিনি তাঁর অবস্থানকে সুদৃঢ় করতে সুযোগ দেন।' [পৃ. ২২-২৩]
জনাব মুহিত বাংলাদেশের রাজনীতির ক্ষেত্রে ত্রিকালদর্শী। তবে নব্বইয়ের দশকের আগে দলীয় রাজনীতি করেননি। শুরু ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম থেকে। ছিলেন তার সম্পাদক। তার পরেই আওয়ামী লীগে। তাঁর দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও সততার কারণে তাঁর কাছে আমাদের প্রত্যাশা বেশি। যে কর্মকর্তাই এই বাজেট-বক্তৃতা লিখে দিন, পাঠ করেছেন তিনি। এর দায় তাঁর।
বাজেটে এবং বাজেটের বাইরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন কালোটাকা সাদা করার কথা। তাঁর ভাষায়, 'কালোটাকা সাদা করার একটি পদ্ধতি আমরা বের করেছি।' কী সাংঘাতিক কথা! এখন যে কেউ কোটি কোটি টাকা ঘুষ খেতে পারে। বনভূমির গাছ উজাড় করে যত খুশি টাকা উপার্জন করতে পারে। চোরাচালান করে শত শত কোটি টাকা আয় করতে পারে। হেরোইন বিক্রি করে কোটিপতি হলেও ক্ষতি নেই। শুধু নির্ধারিত ট্যাক্স পরিশোধ করলেই হলো। যার কালোটাকা আছে সে ৪০ লাখ টাকার জমি বা ফ্ল্যাট ৯০ লাখ টাকায় কিনতে পারবে। তার গায়ে লাগবে না।
অর্থমন্ত্রী 'স্বপ্ন পূরণের পথে' যাত্রা করলেও মধ্যশ্রেণীর সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেছে এই বাজেটের দর্শনে। তিনি 'আশিতে পদার্পণ' করে 'মেঘের আড়ালে রুপালি নয় সোনালি রেখা' দেখেছেন। উনআশির নিচে যাঁদের বয়স, তাঁদের আকাশের মেঘ পর্যন্ত যাবার প্রয়োজন নেই, চোখের বিঘত খানেক দূরেই তাঁরা দেখছেন অন্ধকার।
ব্যক্তির মতো জাতিও যদি নৈতিকতাকে বিসর্জন দেয়, তার অর্থ-সম্পদ যতই থাক, জিডিপি যতই বাড়ুক, তার মর্যাদা থাকে না।


সৈয়দ আবুল মকসুুদ: গবেষক, প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক।


__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___