হেফাজতী মাওলানার তেঁতুল তত্ত্ব ॥ আমরা এবং আমাদের নারীগণ
মুহম্মদ শফিকুর রহমান
'আল-হাদিস (আল বায়হাকি) : হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, কালা কালা রাসুলুল্লাহ (স) উত্তলুবুল ইলমা ওয়ালাও বিচ-চীন; ফা-ইন্না তালাবাল ইলমি ফারিদাতুন আলা কুল্লি মুসলিমিনা ওয়াল মুসলিমাত' [হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ (স) বলেছেন: জ্ঞানার্জনের প্রয়োজনে সুদূর চীনে যেতে হলেও যাও, কেননা আল্লাহ প্রতিটি মুসলমান নর-নারীর জন্য জ্ঞানার্জন ফরজ করেছেন।]
হেফাজতী মাওলানা শফীর তেঁতুল তত্ত্ব নিয়ে অনেক লেখালেখি, অনেক গলাবাজি হয়েছে। পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশন, মানববন্ধন, পার্লামেন্ট, শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চ সর্বত্র; বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হেফাজতী মাওলানার তেঁতুল ও লালা তত্ত্ব নিয়ে। সবাই ছিঃ ছিঃ করেছে, থু থু ছিটিয়েছে। কেবল, চুপ থেকেছেন বিএনপি-জামায়াত নেত্রী খালেদা জিয়া। বরং তিনি তাতে মৌনসম্মতি দিয়েছেন। অবশ্য এটাই স্বাভাবিক খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে। কেননা, হেফাজত খালেদার জোটভুক্ত একটি দল এবং ৫ মে হেফাজতের শাপলা চত্বরের অবস্থানে খালেদা জিয়ার পক্ষে কেন্দ্রীয় নেতা সাদেক হোসেন খোকা, ড. মোশাররফ, এমকে-রা সশরীরে উপস্থিত হয়ে মুসাফা করে ইমান পোক্ত করেন। খালেদা জিয়া তার দল ও ঢাকাবাসীকে খাবার পানি সরবরাহ করারও নির্দেশ দিয়েছিলেন। এমন একটা সময় এই নির্দেশটি দিলেন যখন হেফাজতী নামধারীরা বিজয়নগর, পুরানা পল্টন, জিরো পয়েন্ট, বায়তুল মোকাররম এলাকা থেকে গোটা মতিঝিল এলাকা জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ভস্মস্তূপে পরিণত করছিল। বায়তুল মোকাররমের ধর্মীয় গ্রন্থের বাজারে পবিত্র কোরান-হাদিস পর্যন্ত আগুনে জ্বলছিল, রাস্তার আইল্যান্ডের গাছ কেটে সাবাড় করছিল এবং আইল্যান্ড ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছিল। যে কারণে দেখলাম পার্লামেন্টে বিএনপির একজন নারী সদস্য গলা ফাটিয়ে হেফাজতীদের সমর্থন করে বক্তৃতা করছেন। অবশ্য এই ভদ্রমহিলার কথা বলার সময় মুখে কিছুই আটকায় না, তার চেহারা-সুরত দেখলে সহজেই বোঝা যাবে তার কোন কিছুই আটকাবে না।
এই এত কিছুর পরও আমি কেবল একটি কলামে সামান্য ইঙ্গিতে ধিক্কার জানিয়েছিলামÑ কোন স্বতন্ত্র কলাম লিখিনি। কারণ, ময়লা ঘাটলে দুর্গন্ধই বেরোয়। তবে দুর্গন্ধ থেকে মুক্তির জন্য পৌরসভার মেশিন দিয়ে ময়লা ডাম্পিং ডিপোতে ফেলতে হয়।
আমার ধারণা ছিল হেফাজতী মাওলানা তার ওই নোংরা মন্তব্য প্রত্যাহার করবেন, নিজে অনুতপ্ত হবেন এবং আমাদের মা-বোন তথা নারী সমাজের কাছে ক্ষমা চাইবেন। কিন্তু না, তিনি ক্ষমা চাইলেন না, বরং কাগজে দেখলাম তিনি নতুন করে বলছেন শাহবাগ গণজাগরণ চত্বরের ছেলেমেয়েরা নাকি বস্ত্রহীন অবস্থায় রাত কাটিয়েছে। গতরাতে একটি টিভি চ্যানেলে তার তেঁতুল তত্ত্বের ওপর বক্তৃতার ফুটেজটি দেখলামÑ প্রথমবার এবং পুরোটাই দেখলাম ও শুনলাম। তিনি কি বললেন, (মা-বোনদের কাছে ক্ষমা চেয়ে) তুলে ধরতে চাই:
ক. নারীরা হচ্ছেন তেঁতুলের মতো। কোন বাচ্চাকে তেঁতুল খেতে দেখলে অথবা বাজারে তেঁতুল দেখলে পুরুষ মানুষের জিহ্বা থেকে লাল ঝরবেই।
খ. যার লালা ঝরবে না সে নপুংসক।
গ. মেয়েদের ক্লাস ফোর-এর পরে আর পড়াবেন না। এটুকু কেবল সংসারের হিসাব যাতে রাখতে পারে।
ঘ. গার্মেন্টসে মেয়েদের পাঠাবেন না। তারা সকালে গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে যায় এবং রাত ১০টা ১২টা পর্যন্ত কাটিয়ে ঘরে ফিরে। এ সময় তারা 'জেনা' করে ফিরে (নাউজুবিলাহ)।
ঙ. শাহবাগের ছেলেমেয়েরা বস্ত্রহীন রাত কাটায়।
মানুষ এসব কথা বলতে পারে? কেউ প্রশ্ন করলে উত্তর একটাই হবে, কোন সভ্য, সচেতন, ঈমানদার মানুষ এমন কথা বলতে পারে না। কারণ এই ভাষাগুলো হচ্ছে অন্ধগলির। তাছাড়া তার সব অভিযোগ স্রেফ মিথ্যা, কোন ভিত্তি নেই। যারা গার্মেন্টসে কাজ করে (৪৫ লাখ গার্মেন্টস কর্মীর মধ্যে ৩৫ লাখই মেয়ে)। এই মেয়েরা আমাদের ভদ্রলোকদের (?) মতো লেখাপড়া করার সুযোগ পায়নি, বেশিরভাগই একেবারেই কম লেখাপড়া জানা, বড়জোর মাধ্যমিক পর্যন্ত এবং তারা বাংলার গ্রাম-গ্রামান্তর-শহরের নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসেছে। ওই জীবন যে কত কষ্টের, কত যন্ত্রণার তা জাকাত-ফিতরা-সদকা-ভিক্ষের পয়সায় ঘি-মাখন, মাছ-মাংস খেয়ে যারা ঘাড় মোটা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে, তারা বুঝবে না। কারণ তারা আল্লাহ, রাসূলের (স.) নামে মাদ্রাসা বানিয়ে তাতে ফ্রি-থাকা-খাওয়ার একটা ব্যবস্থা করে নেন। এই মাদ্রাসার পড়া শেষ হলেও ব্যবহারিক জীবনে তার কোন স্থান নেই; কারণ, ব্যবহারিক জীবনের শিক্ষা তাদের পাঠ্যসূচিতে না থাকায় ছাত্ররা চাকরি ক্ষেত্রে অযোগ্য হয়ে পড়ে। তখন আর কি করবেÑ হয় একই রকম একটা মাদ্রাসা বানিয়ে শিক্ষক হয়ে অথবা আশপাশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে বুঝিয়ে একটা মসজিদ বানিয়ে তাতে ইমাম বা মুয়াজ্জিন হয়ে কর্মসংস্থান করে নেয়। তাছাড়া এরা বেশিরভাগই শৈশব থেকে যৌবন পর্যন্ত একটি মাদ্রাসার চার দেয়ালের মধ্যে জীবন কাটাতে কাটাতে বাইরেও যে একটা সুন্দর মুক্ত জীবন আছে তার স্বাদ তারা পায় না। বরং হেফাজতী হুজুররা বাইরের মুক্তজীবন সম্পর্কে তাদের মধ্যে একটা ভ্রান্ত ধারণার জন্ম দেয়। ফলে বাইরের জীবনের প্রতি তাদের যে ঘৃণা তা মূলত না পাওয়ার বেদনা থেকে উদ্ভূত। আর ওই ঘৃণার আড়ালেও কাজ করে নারীদের প্রতি আকর্ষণ, যা তাদের ঠোঁট দিয়ে লালা হয়ে বেরোয়। এভাবে হেফাজতী হুজুরদেরও জিহ্বা থেকে লালা বেরোয়। বলতে দ্বিধা নেই, হয়ত এ কারণেই প্রায়শ মাদ্রাসা থেকে অঘটনের খবর শোনা যায়। হেফাজতী শফী বলেছেন, যার জিহ্বা থেকে লালা না বেরোয় সে নপুংসক বা পৌরুষত্বহীন। কই, আমাদের তো লালা বেরোয় না! শফী সাহেবের বেরোয়; কারণ, এই ৯৪ বছর বয়সেও নারীগামী (?) হতে চান কি-না জানি না। তবে এটা জানি, এ ধরনের উচ্চারণ একজন নিম্নশ্রেণীর অন্ধগলির মানুষই করতে পারেÑঅন্য কোন মানুষ নয়। এ ধরনের মানুষের কাছে নারীগণ নিরাপদও নন। শফী সাহেব যে বলছেন, 'প্রজন্ম চত্বরের ছেলেমেয়েরা তিন চার মাস পর্যন্ত 'উলঙ্গ' হইয়া মহিলা-পুরুষ যেভাবে রাস্তার পর রাস্তা দখল করে, যে কাজ করেছে, সবাই জানেন।' (জনকণ্ঠ ২৫ জুলাই ২০১৩)। এই কথাটি একদিকে কুরুচিপূর্ণ আবার চরম মিথ্যাচার। আমি বেশিরভাগ দিন গণজাগরণ চত্বরে গেছি, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ইমরান এইচ সরকারদের বক্তৃতা শুনেছি, লাকীদের সেøাগান উপভোগ করেছি; কই, আমি তো কাউকে অশালীন পোশাকে দেখলাম না! বরং শত শত কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েকে দেখেছি অত্যন্ত শালীন এবং ভদ্র পোশাকে চত্বরে আসা-যাওয়া করতে। বস্তুত প্রজন্ম চত্বরে যারা এসেছে তারা একটি আদর্শ নিয়ে এসেছে, আর যাদের মধ্যে আদর্শ থাকে তাদের মন-মেজাজে অশালীন কিছু স্থান করে নিতে পারে না। শফী সাহেবদের মধ্যে কোন আদর্শ নেই বলে তাদের এদিক-ওদিক চোখ যায় এবং তারা নারী শিক্ষার বিপক্ষে দাঁড়িয়েছেন। অথচ আমরা জানি, প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন বিবি খাদিজা (রা.)। তিনি ছিলেন আরবের ১০ জন সফল ব্যবসায়ীর একজন। নবীপতœী হযরত আয়েশা (রা.) উটের পিঠে বসে যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। ইসলামের প্রথম শহীদও একজন নারীÑ হযরত সুমাইয়া (রা.)। শফী সাহেব এরপর কিভাবে ওসব কথা বলেন?
আমি তো অবাক হয়ে যাই, এই শতাব্দিতেও একজন মানুষ কিভাবে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের মেয়েদের লেখাপড়ার বিরুদ্ধে কথা বলেন? এই লেখার শুরুতে আমি হাদিসে রসুল (স.)-এর উদ্ধৃতি দিয়েছি, তার বাংলা অর্থও বলেছিÑ রসুলে করিম (স.) যেখানে লেখাপড়া শেখার জন্য প্রয়োজনে সুদূর চীনেও যেতে বলেছেন; কেননা, প্রতিটি মুসলিম নর-নারীর জন্য জ্ঞানার্জন ফরজ করা হয়েছে। তাহলে শফী সাহেব কি করে নারী শিক্ষার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারেন? নিতে পারেন এ জন্য যে, ভদ্রলোক একজন সুশিক্ষিত মানুষ নন। আমরা সকালে যখন রাজপথ দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাই, পাশে তাকালেই দেখি টিফিন ক্যারিয়ার হাতে ডিসিপ্লিন সোলজারের মতো গার্মেন্টসের নারী-কর্মীরা লাইন করে কাজে যাচ্ছে, আবার সন্ধ্যায় কাজ থেকে বাড়ি ফিরছে; কখনও কখনও রাত ৯টা ১০টাও বেজে যায়। তখন কি মনে হয় না আমি যে গাড়ি করে তার পাশে দিয়ে যাচ্ছি ওই গাড়িটি তাদেরই শ্রমে-ঘামের বিনিময়ে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে কেনা? আমাদের কি মনে হয় না শুটেড-বুটেড হয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যে অফিসে বসে কাজ করি, শীতল আর হাওয়ার মধ্যে সেই এয়ারকুলার বিশেষ করে এয়ারকুলার চালাতে যে জ্বালানি তেল লাগে তাও আমদানি করতে হয় ওই মেয়েদের শ্রমে-ঘামে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রায়। হেফাজতী শফী সাহেব আপনি যে বাতিটি জ্বালান, যে ফ্যানটি আপনার মাথার ওপর ঘুরে, যে এয়ারকুলারটির নিচে বসে আরামে ঘুমান, সেগুলোও তেলেই চলে, অর্থাৎ জ্বালানি গ্যাস দিয়ে উৎপাদিত বিদ্যুতেই চলে। আমাদের তো অনেক খাদ্যদ্রব্যও আমদানি করতে হয়, সেসবও আমদানি করতে হয়, ওদের শ্রমে-ঘামে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়ে। শফী সাহেব যখন খেতে বসেন, তখন কি আপনার মনে পড়ে না এগুলো আসে কোত্থেকে? জামার ওপর বাহারি জোব্বা পরেন, সেগুলোওতো ওই গরিব অথচ সাহসী মেয়েদের শ্রমে-ঘামে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রায় কেনা। উনি যদি সত্যি সত্যি বিশ্বাস করেন গার্মেন্টসের মেয়েরা 'জেনা' করে (নাউজুবিলাহ), তাহলে তো শফী সাহেবের বিদ্যুতের আলো, ফ্যানের বাতাস, এয়ারকুলারের ঠা-া, বিদেশ থেকে কেনা চাল, পেঁয়াজ, রসুন, গরম-মসলা, ডাল, এসব পরিত্যাগ করে তবেই ওই মেয়েদের বিরুদ্ধে বলা উচিত। শফী সাহেবকে বলি, আজ যে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৫ বিলিয়ন ডলার এবং বাংলাদেশ এ অঞ্চলের সবচেয়ে দ্রুত অগ্রসরমাণ দেশ, এসবের পেছনে কেবল গার্মেন্ট সেক্টর নয়, সব ক্ষেত্রে নারী সমাজের অংশগ্রহণ, শ্রম, মেধা ও যৌক্তিকভাবে অবদান রেখে চলেছে। শফী সাহেব আপনি যে বিমানে চড়ে হজ করতে যান (কেউ কেউ ভিক্ষা করতেও যান) তাও বৈদেশিক মুদ্রায় কেনা জ্বালানি তেলেই চলে।
এবার আমি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করতে চাই, হেফাজতী শফী এতবড় একটি নোংরা কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য আমাদের মা-বোনদের সম্পর্কে করলেন, তার প্রতিবাদ যেভাবে হওয়ার কথা ছিল সেভাবে হয়নি, হচ্ছে না। জংলি রাষ্ট্র পাকিস্তানেও কিশোরী মালালা যেভাবে হেফাজতীদের মুখে চপেটাঘাত করে আলোকিত ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে চলেছেন, আমাদের নারীগণ কোথায়? মালালা আজ পথে নেমেছেন; অথচ আমাদের বেগম রোকেয়া নেমেছেন অনেক অনেক আগে। যদিও এ আন্দোলন-প্রতিবাদ কেবল নারীদের নয়, পুরুষদেরও। তাদেরও নারীদের পাশাপাশি রাজপথে নামতে হবে। কেননা, শফী সাহেবদের টার্গেট হচ্ছে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে রাজনৈতিক শক্তিকে রাষ্ট্রশক্তির বাইরে ঠেলে দিয়ে ক্ষমতা দখল করে তাদের মধ্যযুগীয় পশ্চাৎপদ শাসন কায়েম করা। যে কারণে তারা এক সময় 'নারী নেতৃত্ব হারাম' ফতোয়া দিলেও এখন থুক্কু দিয়ে খালেদা জিয়ার আঁচল ধরেছে। এমন কি যে জামায়াতকে 'মওদুদী ফিতনা' বলে 'ফতোয়া' দিয়ে জামায়াতের পেছনে নামাজ পড়তে নিষেধ করেছিলেন, এখন 'থুক্কু' দিয়ে সেই জামায়াতের পেছনে ইকতিদা করে কাতার বেঁধেছেন? আমাদের নারীগণ কি ভুলে গেছেন তারা বিবি খাদিজা (রা.) বা হযরত আয়েশা সিদ্দিকার (রা.) উত্তরনারী? নারীগণ কি ভুলে গেছেন তারা বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত, কবি সুফিয়া কামাল, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, শহীদ জননী জাহানারা ইমাম বা জোয়ান অব আর্কের উত্তরসূরি? তবে কি এই উত্তরসূরির দায়িত্ব কেবল বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা বা আয়েশা খানমরাই পালন করবেন? যে দেশে ৩০ লাখ শহীদের পাশাপাশি ৪ লাখ মা-বোন স্বাধীনতার জন্যে সম্ভ্রম-আত্মাহুতি দিয়েছেন, সেই রক্তে কেনা বাংলাদেশের মা-বোনেরা সেভাবে রাজপথে নেই কেন? জানি, একদিন আপনাদের রাজপথে নামার বিকল্প নেই; তবে কোনো রকম সময়ক্ষেপণে অনেক মূল্য দিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে আমি মহীয়সী বেগম রোকেয়া সাখাওয়াতের 'বঙ্গীয় নারী শিক্ষা সমিতি'তে প্রদত্ত সভানেত্রীর অভিভাষণ থেকে উদ্ধৃত করে এ লেখা শেষ করছি : 'নারী ও পুরুষ বিরাট সমাজদেহের দুটি ভিন্ন অংশ। বহুকাল হইতে পুরুষ-নারীকে প্রতারণা করিয়া আসিতেছে, আর নারী কেবল নীরবে সহ্য করিয়া আসিতেছে। পুরুষের পক্ষে নারায়নী সেনা আছেন বলিয়া তাহারা এ যাবত নারীর উপর জয়লাভ করিয়া আসিতেছেন। সুখের বিষয় এতকাল পরে 'শ্রীকৃষ্ণ' স্বয়ং আমার হিন্দু ভগিনীদের প্রতি কৃপাকটাক্ষপাত করিয়াছেন। তাই চারদিকে হিন্দু সমাজের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের অবরোধ বন্দিনী মহিলাদের মধ্যে জাগরণের সাড়া পড়িয়া গিয়াছে।... এবার মাদ্রাজের লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের ডেপুটি প্রেসিডেন্ট পদে একজন মহিলা নির্বাচিত হইয়াছেন। সম্প্রতি রেঙ্গুনে একজন মহিলা ব্যারিস্টার হইয়াছেন...।'
'মুসলমানদের যাবতীয় দৈন্য-দুর্দশার একমাত্র কারণ স্ত্রী শিক্ষায় ঔদাস্য। ভ্রাতৃগণ মনে করেন তাহারা গোটাকতক আলীগড় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে ভর করিয়াই পুলসিরাত (পারলৌকিক সেতু বিশেষ) পার হইবেনÑ আর পার হইবার সময় স্ত্রী ও কন্যাকে হ্যান্ড-ব্যাগে পুরিয়া লইয়া যাইবেন। কিন্তু বিশ্বনিয়ন্তা বিধাতার বিধান যে অন্যরূপ। যে বিধি অনুসারে প্রত্যেককেই স্ব-স্ব কর্মফল ভোগ করিতে হইবে। সুতরাং স্ত্রী লোকদের উচিত যে, তাহারা বাক্স-বন্দী হইয়া মালগাড়িতে বসিয়া সশরীরে স্বর্গ লাভের আশায় না থাকিয়া স্বীয় কন্যাদের সুশিক্ষায় মনোযোগী হন।'
এই যাদের উত্তরাধিকার তারা কি পেছনে পড়ে থাকতে পারে?
ঢাকা: ২৫ জুলাই, ২০১৩
লেখক : ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক
http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=16&dd=2013-07-27&ni=143716 আহমদ শফী যা বলেছেন
ইত্তেফাক ডেস্ক
13 Jul 2013 12:10:55 PM Saturday BdST |
| | | |
|
অবমাননা কি পুরুষেরও নয়? গীতি আরা নাসরীন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
|
|
Related:
শফীর বক্তব্য জঘন্য: শেখ হাসিনা
নিজস্ব প্রতিবেদক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
ওয়াজে নারীদের নিয়ে আহমদ শফীর বক্তব্যকে জঘন্য বলে আখ্যায়িত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
http://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article646506.bdnews
ANTI-WOMEN REMARKS
Video:
Avjøvgv kwdi eqvbÑ wKQz cÖvmw½K cÖkœ - ˆmq` gvneyeyi iwk` : mv‡eK BwcwmGm, Kjvwg÷ †fv‡ii KvMR : kwbevi, 13 RyjvB 2013
11 Jul 2013 12:55:19 PM Thursday BdST |
| | | |
|
নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য শফীর (ভিডিও) নিউজ ডেস্ক বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম |
Video URL: | আল্লামা শাহ আহমদ শফী |
ঢাকা: হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী নারীদের স্বাধীনতা, শিক্ষা ও চাকরি সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ, সভ্যতা ও উন্নয়ন বিরোধী মন্তব্য করেছেন। ইন্টারনেটে প্রকাশিত একটি ওয়াজ মাহফিলে ভিডিওচিত্রে তার এ ধরনের বক্তব্য পাওয়া গেছে। বর্তমান বিশ্ব যেখানে নারীদের স্বাধীনতা, স্বনির্ভরতার ওপর জোর দিচ্ছে, তিনি আছেন উল্টো পথে। ওয়াজে নারীদের তিনি তুলনা করেছেন তেঁতুলের সঙ্গে। তেঁতুল দেখলে মানুষের যেমন জিভে জল আসে তেমনি নারীদের দেখলে 'দিলের মইধ্যে লালা বাইর হয়' বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। আল্লামা শফির ওই বক্তব্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকসহ নানান ব্লগে এখন সমালোচনার ঝড় বইছে। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ ওই বক্তব্যের নিন্দা জানাচ্ছেন। এ বিষয়ে এরই মধ্যে নারী নেত্রীরাও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। শফীর মতে, নারীদের কাজ হলো আসবাবপত্রের যত্ন নেওয়া, সন্তান লালন-পালন করা, ঘরের মধ্যে থাকা। ...... Watch Video at: http://www.youtube.com/watch?feature=player_embedded&v=R-cd6P-u4WY Read details at : http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=dcc6eb2145ef8a8f576cb97b62e79359&nttl=11072013209787 -
20 hours ago - কম ডেস্ক. ঢাকা: নারীদের স্বাধীনতা, শিক্ষা ও চাকরি সম্পর্কে হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফীর দেওয়া কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে রাজধানীতে মানববন্ধন হয়েছে।... মানববন্ধনে অংশ নিয়ে নাট্যকার রোকেয়া প্রাচী বলেন, আল্লামা শফীর মতো একজন ধর্মপ্রাণ মানুষনারীদের নিয়ে এ ধরনের বক্তব্য দিতে পারেন না।
-
9 hours ago - হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী নারীদের স্বাধীনতা, 18 hours ago - নারীদের নিয়ে শফীর কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রত্যারের দাবি. বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়। সমকাল প্রতিবেদক. হেফাজতে ইসলামীর আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর দেওয়া কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে 'জনতার শক্তি' নামে একটি সংগঠন ও নারীদের নিয়ে প্রকাশিত ... 4 hours ago - প্রতিমুহূর্ত প্রতিবেদন :: নারীদের নিয়ে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। মানববন্ধনে বক্তারা ধর্মের নামে শাহ আহমদ শফীর দেওয়া নারীর প্রতি মধ্যযুগীয় অবমাননা ও অসম্মানজনক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ...
18 hours ago - নিজেস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা : হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীনারীদের স্বাধীনতা, শিক্ষা ও চাকরি সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ, সভ্যতা ও উন্নয়ন বিরোধী মন্তব্য করেছেন। ইন্টারনেটে প্রকাশিত একটি ওয়াজ মাহফিলে ভিডিওচিত্রে তার এ ধরনের বক্তব্য পাওয়া গেছে। বর্তমান বিশ্ব যেখানে নারীদের স্বাধীনতা, স্বনির্ভরতার ওপর ... 22 hours ago - প্রথম বার্তা ডেস্ক : হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ. 22 hours ago - ডেস্ক রিপোর্ট :: হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী নারীদেরস্বাধীনতা, শিক্ষা ও চাকরি সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ, সভ্যতা ও উন্নয়ন বিরোধী মন্তব্য করেছেন। ই. 19 hours ago - নারীদের স্বাধীনতা, শিক্ষা ও চাকরি সম্পর্কে হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফীর দেওয়া কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে রাজধানীতে মানববন্ধন হয়েছে। ... মানববন্ধনে অংশ নিয়ে নাট্যকার রোকেয়া প্রাচী বলেন, "আল্লামা শফীর মতো একজন ধর্মপ্রাণ মানুষ নারীদের নিয়েএ ধরনের বক্তব্য দিতে পারেন না। এ বক্তব্যের ... |
|
__._,_.___