Mr Roys analysis is plausible
Sent from my iPhone
Sent from my iPhone
"খালেদা জিয়া এখন কি করবেন? ঈদের জন্য দেরি না করেই একটা ঘোষণা তাঁকে প্রচার করতে হবে। যে মুহূর্তে সরকার শেখ হাসিনার অধীনে একদলীয় নির্বাচনের ঘোষণা দেবে সে মুহূর্ত থেকেই নতুন কোনো নির্দেশের জন্য অপেক্ষা না করে সমর্থক ও কর্মীদের লাগাতার দেশ অচল করে দিতে হবে। সে মুহূর্ত থেকে সড়ক, রেল, বন্দর, অফিস-আদালত আর দোকানপাট সবকিছু বন্ধ করে দিতে হবে।
আওয়ামী লীগের নেতারা টিটকারি করেন, বলেন যে বিএনপিকে আন্দোলন করা শিখতে হবে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে। তবে তাই হোক। শেখ হাসিনার লগি-লাঠি-বৈঠার আন্দোলনের ডাকে ২০০৬ সালে অক্টোবরে বাংলাদেশকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। সরকারের নতুন চমকের জন্যে দেরি না করে এখন থেকেই খালেদা জিয়া সে ঘোষণা দিয়ে রাখতে পারেন। তা না হলে আমার ভয় হচ্ছে, ক্ষমতা হয়তো চিরতরে বিএনপির নাগালের বাইরে শেখ হাসিনার বাকশালী স্বৈরতন্ত্রের হাতে চলে যাবে।"
Mr. Serajur Rahman is suggesting that BNP should shut down entire Bangladesh so that no election can take place. Wonderful suggestion, indeed!If BNP blocks the election, Awami League will remain in power until election is held. Now, I know why Awami League government is reluctant to resign before the election.On the other hand, if they resign before the election and there is no election, Awami League is automatically out of power. Under this condition, probably, caretaker (Kamal-Yunus) government will remain in power without public base, and BNP/Jamat will be able to run the country.So, my prediction is - there will be no caretaker government, and Awami League will be in power with or without the election. Where am I wrong here?Jiten Roy
On Thursday, October 10, 2013 6:53 PM, Shahadat Hussaini <shahadathussaini@hotmail.com> wrote:
সরকারের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার এখনই সময়
সি রা জু র র হ মা নফলি মাছ ফুটুস কাটে এখানে, দম নেয় বিশ হাত দূরে। শেখ হাসিনা রামপাল তাপ-বিদ্যুত্ কারখানার ভিত্তি স্থাপন করলেন। কিন্তু তিনি রামপালে ছিলেন না, ছিলেন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায়। বাংলাদেশের মানুষ সুন্দরবনের ধার ঘেঁষে কয়লা জ্বালানো বিদ্যুেকন্দ্র চায় না, আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদীরাও এর ঘোরতর বিপক্ষে। তাদের মতে কয়লা জ্বালানো বিদ্যুত্ কেন্দ্রের বিদূষণে সুন্দরবনের অনন্য ম্যানগ্রোভ অরণ্য ধ্বংস হয়ে যাবে, রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হবে।
শেখ হাসিনাকে ভিত্তি স্থাপনের রানী বলা চলে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে আমেরিকার ওয়াইল্ড ওয়েস্টে আইন ছিল না। স্থানীয় প্রশাসকরা নিয়ম করেছিলেন, আপনি যদি অন্য সকলের আগে কোনো জমিতে গিয়ে একটা খুঁটি গেড়ে দেন তাহলে সে জমি আপনার হয়ে যাবে। বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সে রকমেরই মনে করেন, তিনি একটা ভিত্তিপ্রস্তর গেড়ে দিলেই সে প্রকল্পটির অর্জন তার হয়ে যাবে। বিগত পৌনে পাঁচ বছরে বহু ভিত্তি তিনি স্থাপন করেছেন, কিন্তু ক'টির কাজ সমাধা হয়েছে আর ক'টির কাজ শুরু হয়েছে জরিপ করতে গেলে আপনাকে হতাশ হতে হবে।
অথচ এই প্রধানমন্ত্রী আর এই সরকার ভিত্তি স্থাপনকে নিজেদের সাফল্য হিসেবে জাহির করতে চান। কারণ বোধ হয় এই যে তারা পদ্মা সেতুটি গিলে খেয়েছেন, তার কিছুটা অপপ্রভাবও দূর করা না গেলে নির্বাচনে কী মুখ দেখাবেন তারা। সেজন্যই সেদিন যখন রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুত্ কেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপন করলেন শেখ হাসিনা সরকারের অনুগত মিডিয়া ঢাকঢোল পিটিয়ে সেটাকে সে প্রকল্পের উদ্বোধন বলে প্রচার করেছিল। ভিত্তি স্থাপন আর প্রকল্পের উদ্বোধনের মধ্যে যে ব্যয়বহুল আর কষ্টসাধ্য নির্মাণ প্রক্রিয়া অবশিষ্ট থাকে সেটা বেমালুম চেপে গিয়ে তারা দেশের মানুষকে বোকা বানাতে চেয়েছে।
শোনা যাচ্ছে আগামী ক'দিনের মধ্যে শেখ হাসিনা আরও ক'টি অস্তিত্ববিহীন প্রকল্পের ভিত্তি স্থাপন করবেন যেগুলোর মূলধন সংস্থান, স্থান নির্ধারণ, এমনকি নীল নকশাই হয়তো তৈরি হয়নি। সন্দেহ নেই যে এই সরকারের সাফল্যের খাতার শূন্য পাতাগুলো মিথ্যা সাফল্য দিয়ে অংশতও পূরণ করা তাদের উদ্দেশ্য।
রামপাল বিদ্যুত্ কেন্দ্রের ভিত্তি প্রধানমন্ত্রী রামপালে গিয়ে স্থাপন করতে পারেনি। এ প্রকল্পের বিরুদ্ধে স্থানীয় এবং জাতীয় প্রতিরোধ খুবই প্রবল। প্রতিবাদ জানাতে ঢাকা থেকে বিশিষ্টজনদের একটা লংমার্চ পথে থেমে থেমে রামপাল পর্যন্ত গিয়েছিল। সর্বত্রই তারা স্থানীয় লোকদের প্রতিরোধ দৃঢ়তর করার চেষ্টা করেছেন। আঠারো দলের জোটের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও বলেছেন রামপালে কয়লা জ্বালানো বিদ্যুত্ কেন্দ্র কিছুতেই হতে দেয়া হবে না। রামপালে গেলে শেখ হাসিনার প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়ার ভয় ছিল তো সে কারণেই তিনি কাজটা রিমোট কন্ট্রোলে সারার চেষ্টা করেছেন।
রিমোট কন্ট্রোলের নির্বাচন?
রিমোট কন্ট্রোলে আরেকটা কাজও করেছেন শেখ হাসিনা। রামপালের ভিত্তি স্থাপন উপলক্ষে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে ভিডিও লিংকে কথা বলেছেন। তার মাত্র আগের সপ্তাহে জাতিসংঘে তিনি ড. মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছেন, ফটো তুলিয়েছেন। নতুন এমন কি জরুরি ব্যাপার ঘটলো যে ভিডিও লিং করে চমক আর চটক দেখাতে হলো তাকে? বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চেয়েছিলেন : আপনারা যা যা চেয়েছেন আমি দিয়ে দিয়েছি, এবারে আপনারা অনুগ্রহ করে আমাকে গদিতে রাখার ব্যবস্থাটা করুন কোনো মতে?
ভিত্তি স্থাপনের এই হিড়িক আর এস্ততা এবং আরও কিছু ব্যাপার-স্যাপার থেকে মনে হচ্ছে শেখ হাসিনা আরও একটা চমক দেখাতে যাচ্ছেন। জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের গ্রেফতার বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বিএনপি এবং ১৮ দলের জোটের নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশের নজরদারিও বেড়ে গেছে। শোনা যাচ্ছে ঈদের পরপরই তাদেরও গ্রেফতার করে জেলে পোরা হবে। সরকারি কর্মচারীদের জন্য হঠাত্ করে উদারভাবে ২০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা গোষণা করা হয়েছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী এবং তার সেনা-সামন্তরা বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে হুশিয়ারি ও গালিগালাজ তুঙ্গে তুলেছেন। লক্ষণীয় যে শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক প্রতিভূর বিরুদ্ধে নতুন কোনো অপবাদ আবিষ্কার করতে পারছেন না। এখন তিনি নিজের অপকর্মগুলো একে-দুয়ে খালেদা জিয়ার ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছেন।
এসব কি আপনাদের আসন্ন কোনো চমকের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে না? মনে করা যেতে পারে যে ২৫ অক্টোবর থেকে নতুন আন্দোলন করার সুযোগ খালেদা জিয়াকে দিতে চান না শেখ হাসিনা। খুব সম্ভবত, সে তারিখের আগেই তার একদলীয় নির্বাচনের (এবিএম মূসার ভাষায় রিমোট কন্ট্রোলের নির্বাচন) ঘোষণা দিয়ে দেবেন হাসিনা। সে জন্যই ধর-পাকড়ের হিড়িক বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সরকার তাদের একদলীয় নির্বাচনে একদলীয় বিজয়ের পথের কাঁটাগুলো সরিয়ে ফেলতে চায়।
এটাই যদি সরকারের পরিকল্পনা হয় তাহলে গোটা সিনেরিয়োটা কেমন হতে পারে? স্বল্পতম সময়ের ব্যবধানে তারা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে। সরকার জানে যে, ভোট দিতে বেশি লোক আসবে না। সময়ের স্বল্পতার এবং নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে মতানৈক্যের কারণে ভারত ছাড়া আর কোনো দেশ থেকে পর্যবেক্ষকও সম্ভবত, আসবেন না। ডুপ্লিকেট ব্যালট বাক্সগুলো আগে থাকতেই ভরাট করে রাখা হবে। খালেদা জিয়া নির্বাচন প্রতিরোধ করার জন্য কমিটি গঠনের ডাক দিয়েছেন। দলাদলি ইত্যাদি কারণে সরকারের শর্ট-নোটিশ নির্বাচনের আগে কমিটিগুলো গঠিত নাও হতে পারে। হলেও ২০০৮ সালের মতো আওয়ামী লীগ ক্যাডার দিয়ে ভারাক্রান্ত ডিজিএফআই এবং এনএসআই বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রস্তাবিত কমিটির সদস্য এবং সাধারণভাবেই ১৮ দলের জোটের নেতা-কর্মীদের ভয় দেখিয়ে আসবে, যাতে তারা ভোট কেন্দ্রের ধারে-কাছেও না যান।
ষড়যন্ত্রের সম্ভাব্য সিনেরিয়ো
তা সত্ত্বেও সাহস করে যারা ভোট কেন্দ্রে যাবেন কী দেখবেন তারা? উত্তর পাড়ার তৃতীয় শক্তি যদি ভোট কেন্দ্র পাহারা দিতে সরকারের ডাকে সাড়া নাও দেয় তাহলেও দলীয়কৃত পুলিশ ও র্যাব, আওয়ামী লীগের ক্যাডার আর বিজিবি দিয়ে কেন্দ্রগুলো ঠেঁসে রাখবে সরকার। বাংলাদেশে বহু লোক বিশ্বাস করে বিডিআর বিদ্রোহের সময় এবং গত ৫ মে ভোররাতে শাপলা চত্বরের অভিযানে ভোল-বদলানো বিএএসএফও তত্পর ছিল। সে সবের পুনরাবৃত্তি যে সরকারের একতরফা ভোটের দিনেও হবে না কে জানে? এখন আবার বিএসএফ-বিজিপি যৌথ টহলের কথাবার্তা শুরু হয়েছে। এই যৌথ টহল কি ভোটের দিন নির্বাচন কেন্দ্রগুলোতেও প্রসারিত হবে?
তারপর প্রশ্ন ওঠে ফলাফল নিয়ে। বিএনপির ভেতরেও কিছু গতি ও অর্থলোভী আছেন খালেদা জিয়ার বয়কটের ডাক সত্ত্বেও যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হলেও নির্বাচন প্রার্থী হবেন। তাদের দু'একজন এবং বামের জোটের জনাকয়েককে বিজয়ী ঘোষণা করে সরকার ফলাফলের ঘোষণা দেবে। ভারত ছাড়া বহু দেশের সরকারই শেখ হাসিনার একতরফা নির্বাচনের ফলাফলকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করবে না। কিন্তু ভারতের চাপ এবং অন্যান্য কূটনৈতিক স্বার্থ বিবেচনা করে আমতা-আমতা করে হলেও অবশেষে তারা সরকারের ঘোষিত ফলাফলকে গ্রহণযোগ্য বলে ঘোষণা দেবে। বিগত দু'তিন বছরে বিএনপি এবং ১৮ দলের জোটের নেতারা কূটনীতিকদের সঙ্গে বহু বৈঠক করেছেন, বহু খানাপিনা করেছেন। কিন্তু তাদের নিরপেক্ষ নির্বাচন এগুনোর বদলে পিছিয়ে যাচ্ছে বলেই মনে হয়। খানাপিনা আর বৈঠকের কোনো বাস্তব মূল্য থাকলে সেই কবে তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি স্বীকৃতি পেত, খালেদা জিয়ার প্রধানমন্ত্রী হওয়া সুনিশ্চিত হয়ে যেত।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস কূটনীতিকদের মতামতকে বেশি গুরুত্ব দিতে গিয়ে বিএনপি এবং ১৮ দলের জোট গুরুতর ভুল করেছে। সরকার পতনের আন্দোলন যখন তুঙ্গে উঠেছে কূটনীতিকদের পরামর্শ শুনতে গিয়ে বিরোধী জোট তখন ক্ষান্ত দিয়েছিল। আমার তখন ছোট বেলায় পড়া সিরাজুদ্দৌল্লা নাটকের পলাশীর যুদ্ধের দৃশ্যের সে কথাগুলো মনে হয়েছে। মীর জাফরের লোকেরা সাধারণ সৈনিকদের মধ্যে প্রচার করছিল, "শোন ওহে বন্ধুগণ, করো অস্ত্র সম্বরণ। নবাবের অনুমতি কালি হবে রণ।" এ কলামে একাধিক বার আমি বিরোধী জোটকে সতর্ক করেও দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, আন্দোলনে একবার ভাটা পড়লে সে আন্দোলন নতুন করে চাপিয়ে তোলা কঠিন হবে।
দু'হাজার আট সালের মাস্টারপ্ল্যানের নির্বাচনে গদি দেয়ার বিনিময়ে ভারত শেখ হাসিনার সরকারের কাছ থেকে অনেক কিছু আদায় করে নিয়েছে। শেখ হাসিনা দিল্লিতে স্বাক্ষরিত গোপন চুক্তিগুলোতে কী কী দিতে রাজি হয়ে এসেছিলেন আমরা জানি না। সেসব চুক্তির বিবরণ কখনো প্রকাশ করা হয়নি। এমনকি সংসদ সদস্যদের কাছেও নয়। কিন্তু আমরা দেখেছি এশিয়ান হাইওয়ে বিনা শুল্কে আমাদের সড়ক রেল ও নদী পথে করিডোর এবং আমাদের সমুদ্র বন্দর দুটোর অবাধ ব্যবহার দিল্লির সরকার আদায় করে নিয়েছে।
বাংলাদেশকে উলফাদের সঙ্গে ঠেলে দেবেন না
একাত্তরে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ভারত তাদের পাকিস্তানের হাতে তুলে দেয়নি। উত্তর-পূর্ব ভারতের কিছু মুক্তিযোদ্ধা বাংলাদেশের কারাগারে হলেও আশ্রয় পেয়েছিলেন। শেখ হাসিনার সরকার একে-দুয়ে তাদের ভারতের হাতে এবং খুব সম্ভবত নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে তুলে দিয়েছে।
সর্বশেষ আমাদের সুন্দরবন, আমাদের পরিবেশের সর্বনাশ করে শেখ হাসিনা রামপালে কয়লা-জ্বালানো বিদ্যুত্ কেন্দ্রে স্থাপনের অধিকার ভারতের হাতে তুলে দিলেন। কিন্তু এখানেই ভারতের চাওয়ার শেষ নেই। বাংলাদেশকে হয় পুরোপুরি ভারতের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া, নয়তো প্রাথমিকভাবে সিকিমের মতো করদ রাজ্যে পরিণত করা ভারতের লক্ষ্য বলে বহুদিন ধরেই পরিষ্কার হয়ে গেছে। শেখ হাসিনাকে আরেক মেয়াদে গদিতে রাখা গেলে সে উদ্দেশ্যও সফল হবে বলে দিল্লি আশা করতে পারে।
কিন্তু তার পরিণতি সম্বন্ধে ভারতে পূর্ণ উপলব্ধি আছে কিনা পরিষ্কার নয়। বাংলাদেশের মানুষ এবং বিদেশের মিডিয়া বেশ কিছুদিন আগে থাকতেই বলে আসছে আওয়ামী লীগ পুরোপুরি গণসমর্থনহীন হয়ে গেছে। ভারতীয় মিডিয়া তো পরিষ্কার বলে দিয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের জনপ্রিয়তা তলানিতে ঠেকেছে। এমতাবস্থায় পচন ধরা বর্তমান সরকারকে ফরমালিন ইনজেকশন দিয়ে আরও এক মেয়াদে গতিতে রাখার অর্থ হবে ভারত বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং সুসম্পর্ক রাখার ইচ্ছা পুরোপুরি পরিত্যাগ করেছে। হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের এক পর্যায়ে রাষ্ট্রপতি হবার আগে প্রণব মুখার্জী নাকি ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কম্যান্ডকে সতর্কাবস্থায় রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ভারতের বিশাল সামরিক শক্তির ভয় দেখানো অবশ্যই হাসিনার সমর্থকদের একটা বড় ভরসা।
একাত্তরেও পাকিস্তানিরা তাদের সমরশক্তির ভয় দেখিয়ে বাংলাদেশীদের গণতন্ত্রের আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করেছিল। তখন যেসব ছেলে পাকিস্তানিদের ট্যাঙ্ক ও সাজোয়া গাড়ি চলাচল অসম্ভব করে দিয়েছিল তারা এবং তাদের উত্তরসূরিরা এখনো বাংলাদেশেই আছে। আর নদীপথ ও সড়কগুলো অচল করে দেয়ার টেকনিকও হারিয়ে যায়নি। শেখ হাসিনাকে আবারও গদিতে বসিয়ে দিল্লির সরকার যদি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের শিখাটি নিভিয়ে দিতে চায় তাহলে অবশ্যই এখানে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের সাতটি রাজ্যের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তারা হাত মেলাবে।
বিচ্ছিন্নতাবাদে জর্জরিত ভারত
উত্তর-পূর্বের সাত বোন নামে পরিচিত রাজ্যগুলো সুবিচারের আশা পরিত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছে চার দশকেরও বেশি আগে। ভারত তার বিশাল সমরশক্তি দিয়েও সে যুদ্ধ বন্ধ করতে পারেনি। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে সে করিডোর নিচ্ছে সাত বোনের বিরুদ্ধে দলন প্রক্রিয়া শক্তিশালী এবং চীনের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে অরুণাচলে হিমালয়ের ওপর ভারি অস্ত্রশস্ত্র পাঠানোর পথ সুগম করতে। শুধু উত্তর-পূর্বেই নয়, দিল্লি সরকারের সাম্রাজ্যবাদী শোষণের বিরুদ্ধে ভারতের অন্যান্য অঞ্চলেও বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। বিহার ভেঙে ঝাড়খণ্ড হয়েছে। পাঞ্জাব সেই কবে দু' টুকরো হয়ে হারিয়ানার জন্ম দিয়েছে। ১৯৮৪ সালের সামরিক অভিযানের পরেও শিখদের পৃথক রাজ্যের দাবি মাঝে মাঝেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। অন্ধ্র প্রদেশ মাত্র সেদিন দু' ভাগ হলো, জন্ম হলো নতুন রাজ্য তেলেঙ্গানার। জলপাইগুড়ি আর দার্জিলিংকে পৃথক করে গোর্খাল্যান্ড করারও আন্দোলন হচ্ছে।
লক্ষ্য করার বিষয় যে, এগুলোর প্রত্যেকটি দাবি বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং সেসব দাবিতে অনিবার্যভাবেই সন্ত্রাস ও হানাহানি হয়েছে। এই যেখানে অবস্থা সেখানে খণ্ডিত ভারতবর্ষকে আঠা দিয়ে জোড়া লাগানোর স্বপ্ন আহাম্মকেই দেখতে পারে। বাংলাদেশের তথাকথিত প্রগতিবাদী পুঁটি মাছেদের তড়পানি তার চাইতেও বড় মূর্খতা। সাত বোন দিল্লির শেকল কাটিয়ে বেরিয়ে যাবেই। সে প্রক্রিয়ায় যদি বাংলাদেশকেও ঠেলে দেয়া হয় তাহলে যে বিভীষিকা সৃষ্টি হবে দিল্লির কর্তারা এখনো সেটা বুঝে উঠতে পারেননি এবং তার সীমানা ছুঁয়ে সে রকম তোলপাড় আর উথাল-পাতাল দেখা দিলে বেইজিং নীরব হয়ে থাকবে বলে মনে করার কোনো কারণ নেই। খালেদা জিয়া তাঁর সিলেটের ভাষণেও উল্লেখ করেছেন যে চীন বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা করতে চায়, বাংলাদেশের বন্ধু হতে চায়।
খালেদা জিয়া এখন কি করবেন?
খালেদা জিয়া এখন কি করবেন? ঈদের জন্য দেরি না করেই একটা ঘোষণা তাঁকে প্রচার করতে হবে। যে মুহূর্তে সরকার শেখ হাসিনার অধীনে একদলীয় নির্বাচনের ঘোষণা দেবে সে মুহূর্ত থেকেই নতুন কোনো নির্দেশের জন্য অপেক্ষা না করে সমর্থক ও কর্মীদের লাগাতার দেশ অচল করে দিতে হবে। সে মুহূর্ত থেকে সড়ক, রেল, বন্দর, অফিস-আদালত আর দোকানপাট সবকিছু বন্ধ করে দিতে হবে।
আওয়ামী লীগের নেতারা টিটকারি করেন, বলেন যে বিএনপিকে আন্দোলন করা শিখতে হবে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে। তবে তাই হোক। শেখ হাসিনার লগি-লাঠি-বৈঠার আন্দোলনের ডাকে ২০০৬ সালে অক্টোবরে বাংলাদেশকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। সরকারের নতুন চমকের জন্যে দেরি না করে এখন থেকেই খালেদা জিয়া সে ঘোষণা দিয়ে রাখতে পারেন। তা না হলে আমার ভয় হচ্ছে, ক্ষমতা হয়তো চিরতরে বিএনপির নাগালের বাইরে শেখ হাসিনার বাকশালী স্বৈরতন্ত্রের হাতে চলে যাবে।
(লন্ডন, ০৮.১০.১৩)
serajurrahman34@gmail.com
__._,_.___