Banner Advertiser

Friday, December 27, 2013

[mukto-mona] চোর-ডাকাত ও খুনিদের দখলে দেশ(Bangladesh under the Occupation of Thieves and Robbers)

Assalamu alaikum


Please find my new article "চোর-ডাকাত ও খুনিদের দখলে দেশ(Bangladesh under the Occupation of Thieves and Robbers) as word and pdf file.

You can click the following link to read in the website.
http://www.drfirozmahboobkamal.com/2010-03-24-10-21-22/976-bangladesh-under-the-occupation-of-robbers-and-thieves.html

If you like it then forward it to others
Regards.

Firoz Mahboob Kamal

চোর-ডাকাত ও খুনিদের দখলে দেশ

 

ফিরোজ মাহবুব কামাল

 

দখলদারি চোর-ডাকাতদের

 

দেশের সবচেয়ে বড় বিপর্যয়টি ঘূর্ণিঝড়,অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি বা সুনামীতে ঘটে না। এরূপ দুর্যোগে কোন দেশ বিশ্বজুড়ে কলংকিত বা অপমানিতও হয় না। কারণ,জনগণ এজন্য দায়ী নয়। বরং সবচেয়ে বড় বিপর্যয় ও বড় অপমানটি আসে রাষ্ট্র যদি চোর-ডাকাত ও খুনিদের দখলে যায়। দুর্বৃ���্তদের সে দখলদারি এবং সে দখলদারির প্রতি জনগণের নীরবতা বরং মহান আল্লাহর কঠিন আযাবকে অনিবার্য করে তোলে। আজকের বাংলাদেশ তো তেমনি এক দখলদারির শিকার। বহু শত বছর আগে বাংলাদেশে মায়ানমারের বর্গিদের ভয়াবহ হামলা হতো। তারা গ্রামের পর গ্রাম নিঃস্ব করে সমুদ্র পথে নিজ দেশে ফিরে যেত। সুদূর ইউরোপ থেকে এসেছিল পর্তুগীজ জলদস্যুরা। লুন্ঠনে তাদের নৃশংসতাও ছিল লোমহর্ষক। ডাকাতদের বড় অস্ত্রটি হলো জনমনে ত্রাস বা ভয় সৃষ্টি। কারণ অতিভয় মানুষকে প্রতিরোধহীন করে��� সেরূপ ত্রাস সৃষ্টিতে তারা শুধু অর্থলুটই করে না,নির্মম ভাবে মানব হত্যাও করে।ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগও করে। এভাবে কেড়ে নেয় জনগণের প্রতিরোধের সাহস। ফলে নিষ্ঠুর বর্গি ও পর্তুগীজ জলদস্যুদের হাতে বাংলায় বহু মানুষের প্রাণনাশ হতো। ঘরবাড়িও ধ্বংসস্তুপে পরিণত হতো। মানুষ তখন ধনসম্পদ ফেলে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করতো। সে বিদেশী ডাকাতদের হাত থেকে সাধারণ মানুষদের বাঁ���াতে বাংলার মোগল সুবেদার মুর্শিদ কুলিখানকে তার বিশাল নৌবাহিনী নিয়ে দীর্ঘকাল যুদ্ধ করতে হয়েছে।যুদ্ধ করতে হয়েছিল আলিবর্দি খাঁকেও।

 

 

সে পুরনো আমল বাংলাদেশে আব���র ফিরে এসেছে। তবে এবারের ডাকাতেরা ���িদেশী নয়। তারা দেশী। পুরনো বর্গিদের থেকে তাদের নিষ্ঠুরতাও কম নয়। এসব দেশী বর্গিরা ���গিবৈঠা নিয়ে মানুষ খুন করে র���জধানীর রাজপথে। মানুষ খুন ও ���রবাড়িতে আগুন দিতে ���ারা গ্রামেগঞ্জে নেমেছে।বার্মীজ বর্গি ও পর্তুগীজ জলদস্যুদের হাত��� বুলডোজার ছিল না, মেশিনগাণও ছিল না। কি���্তু বাঙালী দস্যুদের তা আছে। স���তক্ষিরা, লালমনির হাট, জয়পুরহাট, বগুড়া, ���াপাইনব���ব���ঞ্জ, লক্ষ���পুর, ন���য়াখালী, সীতাকুন���ড, কক্সবাজা���সহ দেশের নানা স্থান এখন তাদ���র হা���ে ধ্বংসপুর���। তাদে��� হা���ে মানুষ লা��� হচ্ছে, ঘরবাড়��� ���ুন্ঠিত হচ্ছে এবং লুন্ঠন ���েষে ভস্মিভূতও হচ্ছে। এদের ডাকাতি ঠ্যাকাতে দেশে মুর্শিদ কুলি খান ���ে������ কোন রাষ্ট্রীয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ ���াহি���ী��� নেই। বরং সর���ারি দলের নেতাকর্মী ও মন্ত্রীগণ ন���জেই পরিনত হয়েছে ভয়ানক ডাকাত বাহিনী���ে��� র‌্যাব, বিজেবী ও পুলিশবা�����িনী পরিণত ���য়েছে তাদের সহায়ক বাহিনীতে। মানব সভ্যতা��� সবচেয়ে শক্ত������ালী প্রতিষ্ঠা হলো রাষ্ট���র। রাষ্ট্���ের হা���ে থাকে সামরিক বাহিন���,পুলিশ বাহিনী, আদালত, অর্থভ���ন্ডার, প্���শাসন, প্রচার মাধ্যমের ন্যায় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। রাষ্ট্র্র যখন চোর ডাকাতদের হাতে অধিকৃত হয় তখন রাষ্ট্রের সকল সামর্থ ব্যয় হয় চু���িডাকাতির কাজে। সাধারণ মা���ুষ তখন দ্রুত নিঃস্ব হয়। হালাকু ও চেঙ্গিজ খানের আমলে মুসলিম ভূমিতে তো সেটিই ঘটেছিল। বাংলা সেরূপ ডাকাতদের প্রথম দখলে যায় সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ আমলে। এবং একাত্তরের পর দখল নেয় আওয়ামী ডাকাতেরা।

 

 

বাংলার ইতিহাসে দুর্ভিক্ষ হয়েছে মাত্র তিনবার। প্রথম দুইবার বিদেশী ডাকাত ব্রিটিশদের আমলে এবং তৃতীয় বার মুজিবের আমলে। ব্রিটিশ শাসনের শুরুতেই ঘটেছিল ছিয়াত্তরের দুর্ভিক্ষ। তাতে বাং���ার বহুলক্ষ মানুষ না খেয়ে মারা গিয়েছিল। দ্বিতীয় বার এসেছিল তাদের চল্লিশের দশকে। একাত্তরের পর বহুলক্ষ মানুষ মারা গিয়েছিল বাঙালী ডাকাতদের হাতে দেশ অধিকৃত হওয়ায়।অথচ বেসরকারি চোর-ডাকাতগণ যতই ���ৎপাত করুক তাদের হাতে কোন দেশেই দুর্ভিক্ষ আসে না।লাখ লাখ মানুষও মারা যায় না। কাউকে কাপড়ের অভাবে জাল পড়তে হয়না। কারণে তাদের ডাকাতিতে সরকারি প্রতিষ্ঠান লিপ্ত হয় না। বরং পুলিশ তখন ডাকাতি থামায়। এবং আদালতও ডাকাতদের শাস্তি দেয়। কিন্তু ভয়ানক দুর্ভিক্ষ হয় ডাকাত দলের দখলে রাষ্ট্র গেলে। সেটি যেমন ব্রিটিশ আমলে হয়েছিল,তেমনি মুজিব আমলেও। রাষ্ট্র তখন সরকারি দলের নেতাকর্মীদের চুরিডাকাতির হাতিয়ারে পরিণত হয়।

 

 

রাজনৈতিক দলে চোর-ডাকাত

 

দেশ যে কতটা সরকারি দলের ডাকাতদের শিকার তারই কিছু বিবরণ সম্প্রতি ছাপা হয়েছে বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকায় ।আগেকার দিনে ডাকাতদের তবুও লোকলজ্জার ভয় ছিল। মানুষের সামনে মুখ দেখাতে হবে এবং লোকে ডাকাত বলবে -সে ভয়ে ডাকাতেরা ডাকাতিতে নামতো গভীর রাতে। ডাকাতির অর্থও তারা লুকিয়ে রাখতো। কিন্���ু আজকের ডাকাতদের সে লোক-লজ্জা নেই। তারা দিনদুপুরে ডাকাতি করে সবার চোখের সামনে। সেকালে খবর পেলে ডাকাত ধরতে পুলিশও ছুটে আসতো। কিন্তু এখন তা হয় না। পুলিশ এখন ডাকাত ধরতে রাস্তায় বেরুয় না,বরং তারাও ডাকাতদের সাথে যোগ দিয়েছে। ডাকাতগণও এখন আর আগের মত ���াকাত দল গড়ে না। তারা বরং বেছে বেছে রাজনৈতিক দলে যোগ দেয়। এতে সুবিধা হয়,ডাকাতি করতে তখন গ্রামে-গঞ্জে নামতে হয় না। বরং ইচ্ছামত ডাকাতি করতে পারে সরকারি ব্যাংক,রাষ্ট্রীয় কোষাগার,সরকারি টেন্ডার,সরকারি ভূমি,রাস্তার সরকারি গাছ,শেয়ার বাজার এসবের উপর।বিনাশ্রমে হাজার হাজার কাটি টাকা লুন্ঠন করাও তখন সহজ হয়ে পড়ে। পুলিশের মূল কাজটি হয়েছে এসব সরকারি ডাকাতদের ঘর বাড়ি পাহারা দেয়া।এসব ডাকাতদের চেনার সহজ উপায় হলো,তাদের সম্পদের দিকে তাকানো। কারণ অর্থ-সম্পদ মিথ্যা কথা বলে না। তাছাড়া টাকা-পয়সা কখনোই আকাশ থেকে পড়ে না। মাটি খুড়লেও তা পাওয়া যায় না। বিশাল কোন ব্যবসা-বাণিজ্য নাই, বড় কোন চাকুরি নাই, পিতার জমিদারিও নাই -এমন ব্যক্তি যদি কোটি টাকার মালিক হয় বা হঠাৎ বিশাল ব্যবসা শুরু করে তখন কি বুঝতে বাঁকি থাকে যে,সে অর্থ নিশ্চয়ই চুরি-ডাকাতির? এ সহজ বিষয়টি বুঝতে কি বেশী বিদ্যাবুদ্ধি লাগে? সরকারি মন্ত্রীরা তো সে ডাকাতিটা করে সরকারি অর্থভান্ডারের উপর।

 

 

আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় যায় তখনই দেশে ব্যাপক চুরি-ডাকাতি শুরু হয়। ফলে আওয়ামী লীগ থাকতে কি ডাকাতদের আর আলাদা ডাকাত দল গড়া লাগে? ডাকাতদল নিয়ে রাতের আঁধারে বনবাদাড় পাড়ি দিয়ে ডাকাতি করা ও জনগণের হাতে লাঠিপেটা খাওয়ার ঝুঁকি কে নেয়? তারা বরং আওয়ামী লীগে যোগ দেয়। তাতে যেমন উপার্জন বাড়ে,তেমনি নিরাপত্তাও বাড়ে। সমগ্র প্রশাসন তখন ডাকাতদের আজ্ঞাবহ সেবকে পরিণত হয়। এসব ডাকাতেরা তখন রাজনৈতিক নেতা, এমপি ও মন্ত্রী সাজে। তাদের নামের আগে জনগণ তখন মাননীয় খেতাব লাগায় ও বিনয়ের সাথে কুর্ণিশও করে। এসব ডাকাতেরা মুজিবের আমলে যেমন প্রচুর লুটেছে,তেমনি লুট করেছে শেখ হাসিনার আমলে।এসব ডাকাতেরা বিশ্বব্যাংকের অর্থেও হাত দিয়েছিল। আর সে কারণে বাতিল হয়ে গেল পদ্মা সেতুর নামে বিশ্বব্যাংকের বরাদ্দকৃত ঋণ। সৎভাবে চাকুরি-বাকুরি ও ব্যাবসা বানিজ্য করে সারা জীবনেও সম্পদের দ্বিগুণ করা যায় না। কোন রূপে পেটে ভাতে বাঁচতে, পরিবারের চিকিৎসায় ও সন্তানদের শিক্ষাদীক্ষায় প্রায় সবই শেষ হয়ে যায়। কিন্তু ডাকাতদের সম্পদ রাতারাতি বাড়ে। শূণ্য হাতে বেরিয়ে তারা বহু লক্ষ টাকা নিয়ে ঘরে ফেরে।

 

 

সুস্থ মানুষের দায়ভার শুধু হিংস্র পশুদের চেনা নয়, সমাজের চোর-���াকাতদের চেনাও। মু'মিনের জীবনে সেটি এক ঈমানী দায়বদ্ধতাও। চেনার সে কাজটি সঠিক না হলে তাদের নির্মূলের ঈমানী দায়ভারটি কীরূপে পালিত হবে? বাংলাদেশের মুসলমানদের ব্যর্থতা এক্ষেত্রটিতেও বিশাল। চুরি-ডাকাত���তে যারা বাংলার ইতিহাসের সকল রেকর্ডকে অতিক্রম করেছে তারাও বাংলাদেশে ভোট পায়। নেতাও রূপেও স্বীকৃতি পায়।গরুকে গরু বলা বিবেকের দায়বদ্ধতা,গর���কে তাই হাতি বা সিং��� বলা যায় না। মহান আল্লাহর কোরআনী নির্দেশে��� বিরুদ্ধাচারিকেও কি তাই মুসলমান বলা যায়? তেমনি বিবেকের দায়বদ্ধতা হলো চোর-ডাকাতদের চোর-ডাকাত বলা। স্বৈরাচারিকে স্বৈরাচারি বলা। তাকে নেতা, নে���্রী, বন্ধু ও জাতির পিতা বললে বিবেকের সে দায়ভার পালিত হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে সে দায়ভারই কতটা পালিত হয়েছে?   

 

 

 

আওয়ামী চোর-ডাকাতদের কান্ড

 

রাজনীতির পেশার সাথে জড়িত ডাকাতদের ���ম্পত্তি য��� হারে বৃদ্ধি পেয়েছে তা বিস্ময়কর। এ স��� ডাকা���েরা ম���ত���র ৫ ব���রে যত সম্পদ ডাক���তি করেছে তা বাংলার বু�������ে জন্ম নেয়া ড���কাতের��� বিগত হাজার বছরেও ���রতে পার�����নি। আর এ ডাকাতদের ���ধিকাংশই আ���য়ামী লীগের। কোন সাধারন চোর-ডা���াতের প���্ষে সম্পদের এরূ��� বিশাল পাহাড় এতদ্রুত গড়��� তো���া সম্���ব নয়। শেখ হাসিনা, তোফায়েল আহম্মদ, প্রয়াত আব্দু��� রাজ্জাক, মোফাজ্জেল হোসেন মায়া, মোহাম্মদ নাসিমের ন্যায় ���ত শত আওয়ামী নেতাদের গুলশান, ধা���মন���ডি, বনানী, বারিধারার �����্যায় এলাকায় বিশাল বিশাল বা���ির মালিক হয়ে���েন। মালিক বনেছেন এরশাদের ন্যায় ������্য দলের নেতারাও। তাদের পিতাগণ ���ি কোন ধনশালী জমিদার বা বিশাল ব্যবসায়ী ছিলেন? বাংলাদেশে লাখ লাখ মানুষ চাকুরি-বাকুরি ও ব্যবসা-বাণিজ্য করে। কিন্তু সারা জীবন সৎভাবে চাকুরি ও ব্যবসা করে ঢাকা শহরে দূরে থাক নিজ গ্রামেও কি দালান তোলা যায়? তাদের প্রাসাদতূল্য বাড়ি, দামী গা���ি ও সম্পদের পাহাড়ই বলে দেয় না তারা কোন পেশার লোক। সম্প্রতি তাদের সে ডাকাতির তথ্য ছেপেছে বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকা। গত পাঁচ বছরে তাদের সম্পদ বেড়েছে ১০০ থেক��� ৩০০ গুণ পর���যন্ত। শত শত ঘরে ডাকাতি করে কি কোটি টাকা পাওয়া যায়? কোটি কোটি টাকা থাকে তো ���েশের ব্যাংক, বীমা কোম্পানি, সরকারি কোষাগার, শেয়ার বাজার এবং সরকারি জমিজমার মাঝে। আওয়ামী ডাকাতগণ হানা দিয়েছে বেছে বেছ সেসব স্থানেই।ফলে বেড়েছে  সম্পদ পাহাড়। তাদের স্ত্রীরাও পাল্লা দিয়ে গড়েছে সম্পদের বিশাল স্তুপ। ২০০৮ সালে যেসব আওয়ামী নেতারা ধারদেনা করে নির্বাচন করেছেন এমন এমপি���াও এখন বহু কোটি টাকার মালিক। তাদের সম্পদের তালিকায় যোগ হয়েছে বাড়ি, ফ্ল্যাট, ব্যাংকে নগদ টাকা, জমি, শিল্প প্রতিষ্ঠান, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, এফডিআর ইত্যাদি।

 

তাদের হঠাৎ গড়ে উঠা সম্পদের বিবরণটি পাওয়া যায় জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার শর্ত হিসেবে নির্বাচন কমিশনে তাদের নিজেদের দাখিল করা হলফনামায় ঘোষিত সম্পদের বিবরণী থেকে। ২০০৮ সালের হলফনামায় ঘোষিত সম্পদের হিসাব আর ২০১৩ সালে দেয়া হিসাব থেকে প্রকাশ পায় তাদের সম্পদের এ বিশাল বৃদ্ধির বিস্ময়কর চিত্র। গত ১৪ ডিসেম্বর এসব তথ্য সাধারণের জন্য কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। সে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতের দৈনিক ইনকিলাব গত ২৩/১২/১৩ তারিখে রিপোর্ট ছেপেছে, মাত্র ৫ বছরে সরকারদলীয় এমপি-মন্ত্রীদের সম্পদ বেড়েছে ২ হাজার ২শ' ৯০ গুণ পর্যন্ত। রাজনীতিই এখন দ্রুততম সময়ে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার মাধ্যম। মন্ত্রী-এমপিদের সাথে সাথে তাদের স্ত্রীরাও গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। অথচ পাহাড়সম সম্পদের এসব মালিকের অনেকেরই পেশা কৃষি, ব্যবসা, আইনজীবী, বাড়ি ভাড়া, টিভি টকশো আর সাংবাদিকতা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার শর্ত হিসেবে নির্বাচন কমিশনে দেয়া হলফনামা থেকে তাঁদের স্বেচ্ছায় ঘোষিত এ সম্পদের হিসাব পাওয়া গেছে।

 

আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ২০০৮ সালে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের হিসাব দিয়েছিলেন পাঁচ কোটি ৭৮ লাখ ৯৩ হাজার ৫৫২ টাকার। এবার তিনি সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছেন ১০ কোটি ৪১ লাখ তিন হাজার ৫৪৮ টাকার। আবদুল মান্নান খান ছিলেন গত সংসদের একজন এমপি এবং সে সাথে গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী। ২০০৮ সালে তার আয় ছিল ২৬ লাখ ২৫ হাজার। পরিবারে তার উপর নির্ভরশীল সদস্যদের কোনো আয়ই ছিল না। অথচ পাঁচ বছর পর তিনি ও তার স্ত্রী বা অন্য নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা। পাঁচ বছর আগে তার সম্পদ ছিল প্রায় সাড়ে ১০ লাখ টাকা। এখন সে সম্পদ প্রায় ১১ কোটি টাকা। মাত্র এই ৫ বছরে তার সম্পদ ১০৭ গুণ বেড়েছে��� পাঁচ বছর আগে তার ও স্ত্রীর কোনো পাকা দালান ছিল না। এখন দুটি ফ্ল্যাট হয়েছে। এ দুটি ফ্ল্যাটের মূল্য ধরা হয়েছে এক ক���টি ৮১ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। মান্নান খানের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের ও স্ত্রীর কাছে নগদ ৫৫ লাখ টাকা, সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী আমানত হিসেবে নিজের নামে ৪৩ লাখ ও স্ত্রীর নামে সাড়ে ৬ লাখ টাকা এবং ৪৪ লাখ টাকা মূল্যের একটি গাড়ি। সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী পৈতৃক সূত্রে পেয়েছিলেন পাওয়া পাঁচ একর কৃষি জমি। আর এখন তার নিজ নামে ৩১ লাখ ৭৪ হাজার এবং স্ত্রীর নামে এক কোটি ৬৪ লাখ টাকার অকৃষি জমি। তার আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের মূল্য এক কোটি ৮১ লাখ টাকা। অ্যাপার্টমেন্টের দাম এক কোটি ৮১ লাখ টাকা।

 

 

আওয়ামী লীগের আরেক নেতা ও শেখ হাসিনার নিকটাত্মীয় হলো ফজলে নূর তাপস। ২০০৮ সালে তার বার্ষিক আয় ছিল ২২ লাখ টাকা। এখন তার বার্ষিক আয় দুই কোটি ১১ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। তাপসের অস���থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ৬ কোটি ২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা, ব্যা���কে ৬ কোটি ২ লাখ ৩৯ হাজার, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ৩২ কোটি ১৪ লাখ এবং সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ৩ কোটি ৩ লাখ টাকা। এ ছাড়া রয়েছে ২৫ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার। আসবাবের মূল্য ১১ লাখ। তাপসের স্ত্রীর নামে ব্যাংকে জমা আছে ২৪ লাখ ৭২ হাজার এবং পুঁজিবাজ���র ও সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ আছে ৭০ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে তার কাছে নগদ ছিল ৮৯ লাখ টাকা। ব্যাংকে ছিল এক লাখ ৯৮ হাজার টাকা। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ছিল ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা। তাপসের  ১০ কাঠা অকৃষি জমির মূল্য ২ কোটি ৪৬ লাখ, অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য এক কোটি ৪ লাখ এবং চা ও রাবার বাগানের মূল্য ১২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। তার স্ত্রীর নামে ধানমণ্ডিতে একটি প্লটের মূল্য এক কোটি ৬৬ লাখ টাকা, রাবা��� ও চা-বাগানের মূল্য এক কোটি ২ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে তাপস বা তার স্ত্রী কোনো অ্যাপার্টমেন্ট এবং চা বা রাবার বাগানের মালিক ছিলেন না। আরেক আওয়ামী লীগ নেতা মির্জা আজমের সম্পদ বেড়েছে ২ কোটি থেকে ১৫ কোটিতে।পুঁজিবাজার ও সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ আছে প্রায় ৫ কোটি টাকা। স্থায়ী আমানত হিসাবে রয়েছে ৮৪ লাখ টাকা। তাদের গাড়ির মূল্য ৮৩ লাখ টাকা। অন্যান্য সম্পদের পরিমাণ ২৩ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে ২০০৮ সালে মির্জা আজম ও তার স্ত্রীর মোট সম্পদ ছিল ১ কোটি ৯১ লাখ টাকার। আর এখন সেই সম্পদ বহুগুণ বেড়ে হ���েছে ১৫ কোটি ৭০ লাখ টাকার।

 

২৩/১২/১৩ তারিখে দৈনিক প্রথম আলো ছেপেছে,"মাহবুবুর রহমান ছিলেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী। মাত্র পাঁচ বছরে তাঁর ব্যা���ক��� টাকা বেড়েছে ৫৮৬ গুণ, জমি বেড়েছে ১৪৩ গুণ এবং বার্ষিক আয় ব���ড়েছে ৭৯ গুণ। এই প্রতিমন্ত্রীর পাঁচ বছ��� আগে কৃষিজমি ছিল মাত্র ২০ একর। আর এখ��� স���ই জমির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে দুই হাজার ৮���৫ একর। সাবেক স্������াষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর শেষ সময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন। মন্ত্রিত্ব ছাড়াও পেয়েছেন ব্যাংক,���িশ্ববিদ্যালয় ও কনটেইনারবাহী জাহাজের ���াইসেন্স।এরই সঙ্গে ���াল্লা দিয়ে বেড়েছে ���াঁ��� সম���পদও।দৈনিক প্রথম আলোর রিপোর্টঃ "২���০৮ সালে মহ���উদ্দীন খান আল���গীরের নামে ১৩টি মামলা ছিল। কিন্তু প্রায় সব মামলা থ���কেই অব্যাহতি পে���েছ���ন। ���াবেক তত্ত্বাবধায়ক সরক���রের ���ময় ���বৈধ সম���পদ অর্জনের দায়��� ১৩ বছরের ���ারাদণ্ড হয়েছিল মহীউদ্���ীন ���া��� আলম���ীরের।সংসদ সদস্য প���ও হারাতে বসেছিলেন। নির্বাচন কম���শ���ে জমা দেওয়া ���লফন�����মা অনুযায়ী,মহীউদ্দীন খান আলমগীরের মোট সম্পদের পর���মাণ ���৬ কোটি ৪১ লা��� টাকারও ���েশি। গত এক বছরেই সম্পদ বেড়েছে প্রায় ������ কোটি ৮৭ লাখ টাকার। পাঁচ বছর আগে যেখানে তাঁর নিজের ���গদ টাকা ছিল মাত্র পাঁচ লাখ,সেখানে এবার ন���জের ও ���্ত্রীর নগদ টাকাই আছে পাঁচ কোটিরও বেশী।

 

দৈনিক সমকাল ২৫/১��� তারিখে লিখ���ছে সাবেক মন্ত্রী দিপু মনির সম্পদ ৫ ���াখ টাকা থ���কে বেড়ে ৮৪ লাখ টাকায় পৌছেছে। তার স্বামীর বেড়েছে ৮ লাখ ৮০ হাজার। সাথে যোগ হয়েছে একটি বিলাসবহুল গাড়ি, ৩৩ লাখ টাকার ১০ কাঠা জমি ও ৮লাখ টাকার অলংকার। ২৪/১২/১৩ তারিখে দৈনিক যুগান্তর রিপোর্ট করেছে, "নৌমন্ত্রী ও পরিবহন শ্রমিক নেতা শাজাহান খানের আয় ও সম্পদ দুটোই বেড়েছে। পাঁচ ���ছরে তার স���্পদের পরিমাণ বেড়েছে অন্তত ১২ গুণ। আয় বেড়েছে প্রায় ১০ গুণ। একই সঙ্গে তার স্ত্রীর আয় ও সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে। শাজাহান খান ও তার স্ত্রী দু'জনই রাজউকের প্লট নিয়েছেন। পাঁচ বছরের ব্যবধানে শাজাহান খানের স্ত্রীর বার্ষিক আয় ৫ হাজার ২০০ টাকা থেকে বেড়ে আনুমানিক ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা হয়েছে। ২৩/১২/১৩ তারিখে দৈনিক ইনকিলাব রিপোর্ট করেছঃ "আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। গত ৫ বছরে প্রায় পাঁচ কোটি টাকায় ৭০ একর জমি কিনেছেন। তিন কোটি টাকা বিনিয়োগ করে নতুন তিনটি ব্যব���া প্রতিষ্ঠান করেছেন। গাজীপুরে এক কোটি ৯৮ লাখ টাকায় কিনেছেন তিন একর জমি। বাগেরহাটের মংলা উপজেলার জয়মনিতে দুই কোটি ৯৪ লাখ ৫৪ হাজার ২৭৬ টাকা দিয়ে ৬৬ দশমিক ৫৯৩ একর জমি, জয়মনিতেই দশমিক ৭০ একর জমি দুই লাখ ৮৬ হাজার টাকায়, কুষ্টিয়ার জোড়হাঁসে ১১ লাখ টাকায় জমি কিনে সেখানে ২০ লাখ টাকায় একটি বাড়ি নির্মাণ করছেন তিনি। নগদ আছে প্রায় ৪৪ লাখ টাকা। স্ত্রী ও নিজের নামে কেনা আছে এক কোটি ২২ লাখ টাকার শেয়ার। সানমেরিন শিপইয়ার্ডে শেয়ার কেনা বাবদ অগ্রিম দুই কোটি ১০ লাখ টাকা জমা দিয়েছেন এবং সুদমুক্ত ঋণ হিসেবে দিয়েছেন এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা। এক কোটি পাঁচ লাখ ও ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা দামের দুটি গাড়ি রয়েছে তাঁর। পরিবেশ ও বনমন্ত্রী হাসান মাহমুদের তুলনায় বেশি সম্পদের মালিক হয়েছেন তার স্ত্রী নুরান ফাতেমা। অথচ ৫ বছর আগে তিনি ছিলেন সাধারণ একজন গৃহিণী। সে সময় তার সম্পদের পরিমাণ ছিল মাত্র ৬০ হাজার টাকা। কিন্তু বিগত পাঁচ বছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৯০ গুণ। এখন তার সম্পদ ১৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকার। ২০০৮ সালে হাসান মাহমুদ ৩৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকার মালিক ছিলেন, যা ৪ গুণ বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৭২ লাখ টাকায়। হাসান মাহমুদ ও তার স্ত্রীর মোট স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ এখন ১৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে দুই জনের মিলিত সম্পদের পরিমাণ ছিল ৩৮ লাখ ১৭ হাজার টাকা, যা গত ৫ বছরে ৪০ গুণ বেড়েছে।

 

 

বাঙালী মুসলমানের ব্যর্থতা

মুসলিম রাষ্ট্রের বড় ব্যর্থতা ও পরাজয়টি দারিদ্র্যতা নয়।বরং সেটি চোর-ডাকাতদের হাতে অধিকৃত হওয়ায়।সে আমলে কোন প্রাসাদ ও তাজমহল নির্মিত হয়নি। নির্মিত হয়েছিল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মত ও সর্বশ্রেষ্ঠ সভ্যতা।প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল সুবিচার এবং নির্মূল হয়েছিল দুর্বৃত্ত শাসন।মহান আল্লাহতায়ালা আর কোন কালের মানুষদের নিয়ে এতটা খুশি হননি যা হয়েছেন তাঁদের নিয়ে।ভদ্র মানুষেরা যেমন ঘরের আঙিনা থেকে আবর্জনা সরায়,তেমনি রাষ্ট্রের আঙিনা থেকেও তারা চোর-ডাকাতদের সরায়।মু'মিনের জীবনে সেটি ঈমানী দায়বদ্ধতা।শ্রেষ্ঠ উম্মত রূপে বেড়ে উঠার ক্ষেত্রে জনগণ ক���টা ব্যর্থ সেটি বুঝা যায় দেশের উপর চোরডাকাত ও খুনিদের দখলদারি কতটা প্রবল তা দেখে।তখন সম্মান বা বিজয়ের বদলে বিশ্বব্যাপী কলংক অর্জিত হয়।বন্য জন্তু-জানোয়ারদের কুকুরও তাড়া করতে পারে। ফলে তাতে জনগোষ্টির সভ্যতা,ভদ্রতা ও বাহাদুরি ধরা পড়ে নয়।সভ্য ম���নুষের সবচেয়ে বড় যুদ্ধটি হয় নিজ রাষ্ট্রে বেড়ে উঠা দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে। মুমিনের জীবনে এটিই প্রকৃত মিশন। এ মিশন জারি রাখার নামই জিহাদ। ইসলামে এটিই শ্রেষ্ঠ ইবাদত।এ ইবাদত পালনে অপরিহার্য হয় জানমালের বিপুল বিনিয়োগ।এ ইবাদতে ব্যয় হয় বিপুল অর্থ ও শহীদ হয় বহু মানুষ।ইসলামের গৌরব যুগে শতকরা ৭০ থেকে ৮০ ভাগ সাহাবা শহীদ হয়েছেন সে ইবাদতে। মুসলিম ইতিহাসে যা কিছু গর্বের তার সিংহ ভাগ তো নির্মিত হয়েছে সে শহীদদের ত্যাগে��� বিনিময়েই। যে দেশে শহীদ নেই,বুঝতে হবে সে দেশে সে ফরয ইবাদত-পালনও নাই। ফলে এমন দেশে আল্লাহর দ্বীনের বিজয় আসে না,মুসলমানের গৌরবও বাড়ে না। মুসলমানগণ তখন ব্যর্থ হয় বিশ্বমাঝে শ্রেষ্ঠ উম্মত রূপে বেড়ে উঠায়। সে মুসলিম ভূমি তখন কলংকি��� হয় দুর্বৃত্ত কবলিত রাষ্ট্র নির্মাণে���এরূপ রাষ্ট্রই শয়তানের হাতিয়ারে পরিণত হয়। আর তারই প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো আজকের বাংলাদেশ। জিহাদের ইবাদত পালনে বাংলাদেশের মানুষ যে কতটা ব্যর্থ এটি হলো তারই প্রমাণ।

 

 

মুসলমানের দায়ভার বিশাল। সেটি শুধু কালেমা পাঠ ও নামায-রোযা পালন নয়। ইবাদত বন্দেগীকে মসজিদে সীমিত রাখাও নয়। মু'মিনদের প্রতি মহান আল্লাহতায়ালার নির্দেশ:"হে ঈমানদারগণ!তোমরা সুবিচারের প্রতিষ্ঠাকারি র���পে দাঁড়িয়ে যাও এবং আল্লাহর পক্ষে নিজেকে সাক্ষি রূপে পেশ করো যদিও সে সাক্���্যটি তোমাদের নিজের বা তোমাদের পিতমাতা ও নিকটজনদের বিপক্ষে যায়;এবং সে দ���িদ্র হোক বা ধনি হোক -আল্লাহই তাদের জন্য যথেষ্ট। অতএব সুবিচার প্রতিষ্ঠায় নিজ-প্রবৃত্তির অনুসরণ করো ন���। যদি তোমরা বক্রতা অবলম্বন করো বা পশ্চাৎপদ হও তবে নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা তোমাদের সমস্ত কর্মের পূর্ণ খবর রাখেন।" (সুরা ন���সা,আয়াত ১৩৫)। অন���রূপ নির্দেশ দেয়া হয়েছে সুরা মায়েদায়। বলা হয়েছ���,"হে ঈমানদারগণ!তোমরা আ���্লাহর জন্য খাড়া হয়ে যাও,সুবিচারের জন্য সাক্ষ��� রূপে দাড়িয়ে যাও।" -(���ুরা মায়েদা আ���াত ৮)। ম���সলিম সমাজে তাই কাঙ্খিত হলো ���ন্যায় ও অবিচারের বিলোপ।প্রকৃত মুসলমান তাই শুধু জায়নামাযে খাড়া হয় না। বরং সে সর্বশক্তি দিয়ে ���াড়া হয় মহান আল্লাহতায়ালার পক���ষে। এরূপ খ���ড়��� হওয়ার কারণেই মহান ���ল্লাহর কাছে সে ব্যক্তি�����ি স্বীকৃতি পায় ���াঁর নিজ দলের সৈনিক রূপে।সে দায়ি���্বপালনে নিহত হলে পায় ���হীদের মর্যা���া।এমন ব্যক্তি তার সমগ্র সামর্থ নিয়ে ���াড়া হয় ও সাক���ষি দেয় সকল প্রকার অন্যায়ের বিরুদ���ধে এবং সুবিচারের পক্ষে।আল্লাহর পক্ষে খাড়��� হ���য়ার অর্থ,ত���ঁর শরিয়তি বিধানের ���ক্ষে খাড়��� ���ওয়া। কারণ,শরিয়তে বিধান প্রতিষ্ঠা না পেলে কি ন���যায় ���িচার প�����রতিষ্ঠা সম্ভব? শরিয়ত ছাড়া ���া���্ট্রে সুবিচার প্রতিষ���ঠা ���তে পারে -সেটি বিশ্বাস ক���াই তো হারাম। সেটি বিশ্বাস করলে প�����ম অবিশ্বাস ও অবজ্���া করা হয় মহান আল্লাহতায়ালার কোরআনী বিধানের প্রতি।সেরূপ অবিশ্বাস ও অবজ্ঞার কারণে অবিশ্বাসী ব্যক্তিটি কাফেরে ���রিনত হয়।

 

 

ব্যর্থতা মিশন নিয়ে বাঁচায়

 

পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালার ঘোষণা,"তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত,তোমাদের আবির্ভাব ঘটানো হয়েছে সমগ্র মানবজাতির জন্য।তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দাও এবং অন্যায় নির্মূল করো এবং আল্লাহর উপর বিশ্বাস করো..।" (সুরা আল ইমরান, আয়াত ১১০)।এ���ি হলো পবিত্র কোরআনের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি আয়াত। যে বিষয়টি এ আয়াতে গুরুত্ব পেয়েছে তা হলো সুবিচারের প্রতিষ্টা ও অবিচারের মূলোৎপাটন। এতে ঘোষিত হয়েছে মুসলিম জীবনের ভিশন ও মিশন স্টেটমেন্ট। ভিশনটি হলো সর্বজাতির মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মতের মর্যাদা লাভ। আর মিশনটি হলো ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা ও অন্যায়ের নির্মূল। ভিশন তো ব্যক্তির জীবনে এমন এক স্বপ্ন -যা অর্জনে সে তার সমগ্র সামর্থকে নিয়োজিত করে। আর মিশন হলো মূলত সে ভিশনে পৌছার ক���্মকৌশল। আল্লাহ নির্দেশিত সে ভিশন ও মিশন নিয়ে ���াঁচতে হলে ঈমানদারের জীবনে কি করণীয় সেটিই ঘোষি��� হয়েছে পূর্বে উল্লেখিত সুরা নিসার ১৩৫ নম্বর ও সুরা মায়েদার ৮ নম্বর আয়াতে। এ দুটি আয়াতে মহান আল্লাহর পক্ষে ও ন্যায় বিচারের প্রতিষ্ঠায় দাঁড়াতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

 

 

তাই যে দেশে ঈমানদারের সংখ্যা বাড়ে সেদেশে সুবিচারের প্রতিষ্ঠায় ও অবিচার নির্মূলে মোজাহিদদের সংখ্যাও বাড়ে। সেটি না হলে বুঝতে হবে প্রকৃত ঈমানদার রূপে বেড়ে উঠায় বিরাট সমস্যা রয়েছে। সমগ্র মানবকূলে মুসলমান যে শ্রেষ্ঠ তা তো সে মিশন পালনের বরকতেই। শুধু মসজিদ-মাদ্রাসা বৃদ্ধির কারণে কি কোন দেশে সুবিচার প্রতিষ্ঠা পায়? সুবিচারের পক্ষে দাঁড়ানোর মুজাহিদও চাই। সৎকাজের নির্দেশ এবং অন্যায় কাজের নির্মূলে কারো আগ্রহ থাকলে ধর্মকর্মকে কি শুধু মসজিদ-মাদ্রাসায় সীমিত থাকে? তখন তো তার জীবনে অপরিহার্য হয় সমাজ ও রাষ্ট্রের অন্যান্য অঙ্গনে নামা।তখন অনিবার���য হয় মানব সভ্যতার সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান তথা রাষ্ট্রের উপর দখলদারি প্রতিষ্ঠা করা এবং সকল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে সুবিচারের প্রতিষ্ঠায় ও অন্যাযের নির্মূলে কাজে লাগানো। নবীজী (সাঃ) নিজে হাতে রাষ্ট্র গড়েছেন এবং রাষ্ট্র-প্রধান হয়েছিলেন তো এমন দায়িত্ববোধ নিয়েই। নবীজী(সাঃ)র সে সূন্নতটিকে শক্ত ভাবে ধরে রেখেছিলেন খোলাফায়ে রাশেদা। ফলে যাদের জীবনে রাজনীতি নেই এবং রাষ্ট্রের বুকে ইসলাম প্রতিষ্ঠার আগ্রহও নাই তারা আল্লামা বা আলেম সাজলেও আসলে তারা যে জাহেল ও নবীজী (সা���)র সূন্নত থেকে দূরে তা নিয়ে কি সন্দেহ থাকে? অথচ বাংলাদেশে বহু আলেম,বহু নামাযী ও রোযাদার বেড়ে উঠেছে সে জাহিলিয়াত বা অজ্ঞতা নিয়ে।তাদের জীবনে তাই আল্লাহর দ্বীনের পক্ষে সাক্ষিদানে আগ্রহ নেই। আগ্রহ নেই শরিয়তের প���রতিষ্ঠায়।দেশের আদাল���ে শরিয়তি বিধান পরিত্যক্ত হলেও তাদের জীবনে তা নিয়ে মাতম উঠে ন���।বাংলার একটি জেলায় যত মসজিদ-মাদ্রাসা আছে নবীজীর আমলে বা সাহাবায়ে কেরামের আমলে সমগ্র মুসলিম রাষ্ট্রে তা ছিল না। কিন্তু সেদিন ইসল���মের বিজয় এসেছিল। অথচ আজ  বাড়ছে পরাজয় ও কলং���। কারণ,প্রতিটি মুসলমান সেদিন জানমাল নিয়ে খাড়া হয়েছিলেন মহান আল্লাহর শরিয়তি বিধান প্রতিষ্ঠায়। শরিয়তের প্রতিষ্ঠায় সেদিন তারা নিজেদের জান-মালের বিপুল কোরবানীও দিয়েছিলেন।

 

ডাকাতদের দখলদারি কীরূপে শেষ হবে?

 

ব���ংলাদেশের ন্যায় মুসলিম দেশে বিপুল ভাবে বেড়েছে মসজিদ মাদ্রাসা,বেড়েছে নামাযী ও রোযাদারের সংখ্যাও।বেড়েছে হজ ও ওমরা পালনকারির সংখ���যাও।কিন্তু বাড়েনি আল্লাহ ও তার শরিয়তের পক্ষে মুজাহিদের সংখ্যা। জিহাদের ময়দান এদেশে ফাঁকা।মদিনার ক্ষুদ্র নগর থেকে যতজন মুজাহিদ ও শহীদ গড়ে উঠেছিলেন বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম বাংলাদেশে বিগত বহু যুগেও তা সৃষ্টি হয় নাই।১৫ কোটি মুসলমানের দেশে জনগণ সুবিচারের পক্ষে দাঁড়ালে কি দেশ দুর্বৃত্তদের দখলে যেত? পরাজিত হতো কি শরিয়ত? রাজনীতিতে দখলদারি প্রতিষ্ঠা হতো কি ডাকাতদের? দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ বরং দাঁড়িয়েছে জাতিয়তাবাদ,���েক্যুলারিজম,সমাজবাদ ও পাশ্চাত্যের কুফরি বিধানের প্রতিষ্ঠায়। সরকারি দল,সরকারের প্রশাসন,পুলিশ,র‌্যাব আদালত,রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীগণ দাঁড়িয়েছে আল্লাহাতায়ালা ও তাঁর শরিয়তি বিধানের প্রতিষ্ঠা রোধে। তারা সুস্পষ্ট পক্ষ নিয়েছে শয়তান ও শয়তানি বিধানের। সরকারের পক্ষ থেকে এ হলো মহান আল্লাহর বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট বিদ্রোহ।আর সে বিদ্রোহে অর্থ ও জনবল জোগাতে বাধ্য করা হচ্ছে জনগণকে। জনগণের রাজস্বে পালিত পুলিশ ও র‌্যাব বন্ধ করেছ��� কোরআনে তাফসির। পাহারা দিচ্ছে ব্যাভিচার-পল্লি তথা পতিতাপল্লির। পাহারা দিচ্ছে কুফরি আইনের উপর প্রতিষ্ঠিত আদালত ও সে আদালতের বিচারকদের যাদের প্রধানতম কাজ হলো ইসলামপন্থিদের দ্রুত ফাঁসিতে ঝুলানো। জিহাদের উপর বই রাখার কারণে তারা গ্রেফতার করে চলেছে মুসল্লিদের।

 

ইসলামের বিরুদ্ধে মুসলিম দেশে এরূপ একটি যুদ্ধ পরিচালিত হবে সেটি কি ভাবা যায়? ভারতের ন্যায় কাফের দেশেও তো সেটি হয় না। ইউরোপ আমেরিকাতেও হয় না। পত্রিকায় প্রকাশ, দেশের আদালতে ২৮ লাখ মামলা ঝুলছে।এক যুগ পরেও বিচার মিলেনি বহুলক্ষ মামলার। সেসব মামলার ফয়সালা নিয়ে সরক���রের মাথা ব্যাথা নেই। বিচারকদেরও তা নিয়ে কোন তাড়াহুড়া নেই। অথচ একটি দায়িত্বশীল সরকারের মূল কাজটি হলো দেশে দ্রুত ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা। অথচ আওয়ামী সরকারের এজেন্ডা ভিন্ন। তাদের সকল তাড়াহুড়া হলো ইসলামের পক্ষের শক্তির নেতাদের দ্রুত ফাঁসিতে ঝু���ানো। আদালতে ন্যায় বিচার সুনিশ্চিত করা নয়,বরং এটি হলো তাদের রাজনৈতিক শত্রু নির্মূলের প্রজেক্ট। এজন্য মিথ্যা সাক্ষি উৎপাদনে বিশাল কারখানা বসানো হয়েছে।

 

চোরডাকাতদের হাতে অধিকৃত হওয়ায় অসম্ভব হয়েছে সুবিচারের প্রতিষ্ঠা। ফলে দেশ আজ  অন্যায়-অবিচার ও দুর্বৃত্তিতে পরিপূর্ণ। দুর্বৃত্তিতে ৫ বার বিশ্বে প্রথম স্থান দখলের প্রেক্ষাপট তো এটাই। প্রশ্ন হলো,দুনিয়াতে যাদের এরূপ লজ্জাজনক অর্জন,আল্লাহর দরবারেও কি তারা সম্মান আশা করতে পারে? রোজ হাশরের বিচার দিনে আল্লাহতায়ালার সামনে দাঁড়ানোর সামান্য ভয় থাকলে কোন ঈমানদার কি নিজ দেশে চোর-ডাকাত ও খুনিদের এমন দখলদারি মেনে নিতে পারে? শয়তানদের দখলদারি এভাবে মেনে নেয়া কি মুসলমানের কাজ? আওয়ামী দখলদারির প্রতিটি দিন ও প্রতিটি মুহুর্ত কি শয়তানেরই আনন্দ বাড়াচ্ছে না? এভাবে শয়তানের আনন্দ বাড়িয়ে কি জান্নাত আশা করা যায়? অথচ মুসলমান তো প্রতিটি দিন ও প্রতিটি ���ুহুর্ত বাঁচে মহান আল্লাহতায়ালাকে খুশি করতে। সেটি শয়তানি শক্তির নির্মূল ��� শরিয়তে��� প্রতিষ্ঠা বাড়িয়ে। ইসলামের এ মৌলবিশ্বাসটি মুসলিম চেতনায় কবে বদ্ধমূল হবে? ���র সেটি না হল��� ড���কা���দের দখলদারিও কি শেষ হবে? ২৫/১২/���৩