সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ওই নারী এবং তার চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার রুহুল আমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, হাসপাতালে লোক পাঠিয়ে ওই নারীর চিকিৎসা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ঘটনার শিকার নারীকে আইনিসহ সব ধরণের সহায়তা দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
অভিযুক্তদের ভয়ে আত্মগোপন করে থাকা ওই নারী দাবি করেন, ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতের সাবেক আমির আ. মজিদের ছেলে রকিবুল্লাহ কিছুদিন আগে তাকে ধর্ষণ করায় সে অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়ে।
এ ঘটনা কাউকে জানালে প্রাণহানীর হুমকিও দেয় রকিবুল্লাহ।
এরপর ওই নারীকে রকিবুল্লাহ এবং তার বাবা আ. মজিদসহ তাদের সহযোগীরা গর্ভপাত করানোর জন্য জোর করে ২৪ মে রাতে ঠাকুরগাঁও থেকে দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে একটি মাইক্রোবাসে করে রওয়ানা হয়।
রাত ২টার দিকে তারা দিনাজপুরের বীরগঞ্জ আমতলি এলাকায় পৌঁছে ওই নারীকে টেনে-হিচড়ে মাইক্রোবাস থেকে নামায় এবং ধানক্ষেতের মধ্যে নিয়ে মারধর করে এবং শ্বাস রোধ করে রাখে।
একপর্যায়ে মৃত ভেবে তাকে সেখানে ফেলে রেখে যায়।
পরদিন অচেতন অবস্থায় ধানক্ষেত থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ও পরে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। এ বিষয়ে বীরগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করে পুলিশ।
দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান ডা. নাজিউর রহমান এবং ওই বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আ. রহিম জানান, ওই নারীর চোয়ালের নিচের অংশ সম্পূর্ণ ভেঙে যাওয়ায় কোনোমতে ব্যান্ডেজ দিয়ে তা আটকে রাখা হয়েছে।
তারা আরো জানান, দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এর কোন চিকিৎসা হয় না বলে তাকে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য বলা হয়েছে।
এদিকে, শারীরিকভাবে দুর্বল ওই নারী বলেন, "সোমবার রকিবুল্লাহসহ কয়েকজন এ নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য এবং ঠাকুরগাঁও যাবার জন্য চাপ দেয়।"
সেখানে যেতে রাজি না হওয়ায় তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে তারা চলে যায় বলে জানান অসহায় ওই নারী।
এর কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে তাকে দিনাজপুর হাসপাতাল থেকে রিলিজ করে দেন। কিন্তু নিরাপত্তার অভাবে আত্মগোপনে থাকেন তিনি। এ খবর পেয়ে তাকে খুঁজে বের করেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি।
রিলিজের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. নাজিউর রহমান এবং ডা. আ. রহিম জানান, কারা তাকে রিলিজ করিয়েছে তা তারা জানেন না।
অভিযুক্ত রকিবুল্লাহকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, "এ ঘটনার জন্য আমি মোটেও দায়ী নই। বিষয়টির কিছুই জানি না।"
এরপর দ্রুত সাংবাদিকের কাছ থেকে চলে যান তিনি।
__._,_.___