Banner Advertiser

Saturday, June 7, 2014

[mukto-mona] মওদুদের কেলেঙ্কারিতে ভিয়েনায় তোলপাড়



মওদুদের কেলেঙ্কারিতে ভিয়েনায় তোলপাড়
এম. নজরুল ইসলাম
ভিয়েনার বাঙালী কমিউনিটির অতি পরিচিত মুখ আবিদ হোসেন খান তপন অস্ট্রিয়াতে আছেন তিন দশক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তন ছাত্র বাঙালী কমিউনিটির নেতৃস্থানীয় প্রতিনিধি। আমার ঘনিষ্ঠ এই বন্ধুটিকে সব সময়, সব প্রয়োজনে পাওয়া যায় সবার পাশে। সবার সঙ্গে তাঁর সদ্ভাব। সাহসী এক যোদ্ধাই বলা যেতে পারে তাঁকে। দূর পরবাসে নিজেকে যেমন প্রতিষ্ঠিত করেছেন, তেমনি যুদ্ধ করেছেন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে। শরীরে দানা বাঁধা কর্কট রোগকে পরাস্ত করে জীবনযুদ্ধে জয়ী আবিদ হোসেন খান তপনের টেলিফোন পেলাম সাতসকালে। কুশলাদি জিজ্ঞাসা করে তিনি সেদিনের হয়টে (ঐবঁঃব) পত্রিকাটি দেখার জন্য অনুরোধ করলেন। তখনও পত্রিকা দেখার সুযোগ হয়নি। ঘর থেকে বাইরে বের হলে তবেই পত্রিকা সংগ্রহ করা সম্ভব। অনলাইনের যুগে এখানে পত্রিকা কিনে পড়ার লোকের সংখ্যা খুব বেশি নেই। অন্যদিকে এখানে বাংলাদেশের মতো ঘরে ঘরে হকাররা পত্রিকা পৌঁছে দিয়ে যায় না। ফলে পত্রিকা সংগ্রহ করতে হলে বাইরে কোন নিউজ পেপার স্ট্যান্ডে যেতে হবে। অবশ্য সব বড় শপিং মলে, বাস স্টপেজে, স্টেশনে, ফিলিং পাম্পে খবরের কাগজের স্ট্যান্ড আছে। যে যার মতো পত্রিকা সংগ্রহ করতে কোন বাধা নেই। কাজেই বাইরে বের হলে পত্রিকাটি সংগ্রহ করা যাবে, এই ভেবেই তাঁর সঙ্গে কথা বলা শেষ করেছি। দিনটি ভাল কাটুক এই শুভকামনা জানিয়ে ফোনটি রাখলেন তিনি।
প্রতিদিনের মতো ঘর থেকে বেরিয়ে নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় দিনের শুরুতেই কাগজটি আর সংগ্রহ করা হয়নি। কী এমন খবর সেখানে আছে, যার জন্য পত্রিকাটি সংগ্রহ করতে হবে, সে কথাও আবিদ হোসেন খান তপনকে জিজ্ঞাসা করা হয়নি। কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার মুঠোফোন বাজতেই স্ক্রিনে যে নামটি ভেসে উঠল, এ নামটিও আমার পরিচিতি। তিনি অস্ট্রিয়ার নাগরিক ড. পিটার লরেঞ্জ, পেশায় একজন সিনিয়র আইনজীবী। আমার ব্যক্তিগত বন্ধু পিটার জানতে চাইলেন, আমি সেদিনের হয়টে পত্রিকাটি দেখেছি কি না। জানালাম পত্রিকাটি এখন পর্যন্ত দেখার সুযোগ হয়নি। যে কোন এক ফাঁকে অনলাইনে দেখে নেব। তিনি বললেন পত্রিকাটির প্রিন্ট কপি সংগ্রহ করতে। কী এমন খবর সেখানে আছে যে প্রিন্ট কপি সংগ্রহ করতে হবে-এমন প্রশ্নের জবাবে পিটার জানালেন, যে খবরটি ঐদিনের হয়টে পত্রিকাটি ছেপেছে, যা আমাকে বিস্মিত করবে। 
এখানে বলে রাখি, হয়টে ভিয়েনা থেকে প্রকাশিত জার্মান ভাষার সবচেয়ে পাঠকপ্রিয় পত্রিকা। এই জার্মান শব্দটির বাংলা প্রতিশব্দ 'আজ'। এখান থেকে জার্মান ভাষায় যে দৈনিকগুলো প্রকাশিত হয় তার মধ্যে হয়টের প্রচার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। পত্রিকাটি কোথাও বিক্রি হয় না। পত্রিকা স্ট্যান্ডে রাখা থাকে, যে কেউ ইচ্ছে মতো সেটা সংগ্রহ করতে পারে, তার জন্য কোন ইউরো পকেট থেকে দিতে হয় না। অর্থাৎ পত্রিকাটির বিজ্ঞাপন এত বেশি যে পত্রিকা কর্তৃপক্ষ এটা বিনামূল্যে বিলি করে। তাতে তাদের লোকসান হয় না। পিটার লরেঞ্জের টেলিফোনের পর ভেবেছি পরবর্তী স্টল থেকে পত্রিকাটি সংগ্রহ করতে হবে। কী বিস্ময় আমার জন্য অপেক্ষা করছে, অন্তত সে কৌতূহল মেটাতে হবে। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি সেদিনের কোনো পত্রিকা অবশিষ্ট নেই। এখানে রাস্তায় পত্রিকার হকার পাওয়া যাবে না। ঢাকার ফার্মগেট, শাহবাগের মতো যে কোন জায়গা থেকে ইচ্ছে করলেই একাধিক দৈনিক সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। পত্রিকা বিক্রির নির্দিষ্ট জায়গা আছে, সে কথা আগেই বলেছি। সেখান থেকেই পত্রিকা সংগ্রহ করতে হবে। পরবর্তী পত্রিকা স্টলের খোঁজে পা বাড়াতেই এবার আরেক অস্ট্রিয়ান বন্ধুর ফোন। এবার ফোন করেছেন মিশেলা ব্যান্ডিয়ন, পেশায় সাংবাদিক। তাঁর সঙ্গেও অনেক আগের পরিচয়। মাঝে মাঝে দেখা হয়। মিশেলাও ঐদিনের হয়টে পত্রিকাটি দেখতে বললেন। মিশেলা জানেন আমি বাংলাদেশের পত্রপত্রিকায় লেখালেখি করি। তিনি জানালেন, আমি নাকি হয়টে পত্রিকার ভেতরের পাতায় আমার লেখার খোরাকও পেয়ে যেতে পারি। মিশেলার ফোনের পর আমার আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। কিন্তু পত্রিকা কোথায় পাই? 
মিশেলের ফোন ছাড়তে না ছাড়তেই আরেক অস্ট্রিয়ান বন্ধুর ফোন। পেশায় সাংবাদিক নরবার্ট বয়্যারও জানতে চাইলেন, আমি হয়টে পত্রিকাটি দেখেছি কি না। জানালাম তখনও হয়টে পত্রিকাটি আমি সংগ্রহ করতে পারিনি। পিটার ও মিশেল যে আমাকে পত্রিকাটি সংগ্রহ করতে বলেছেন, তা জানাতেও দ্বিধা করলাম না। নরবার্টও বললেন সেখানে ছোট করে হলেও বাংলাদেশ নিয়ে বড় একটি খবর আজ প্রকাশিত হয়েছে। 'এই রাজনীতিবিদদের নিয়ে তোমরা আগামী দিন কিভাবে পাড়ি দেবে'-এমন একটি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে কথা শেষ করলেন তিনি। 
নরবার্টের সঙ্গে কথা শেষ করেই আবার পত্রিকার খোঁজ করি। সৌভাগ্যক্রমে পেয়েও যাই একটি স্টলে। পত্রিকাটি হাতে নিতেই ফোন বেজে ওঠে। এবার ড. মার্টিন বুচবার্গার। ভদ্রলোক পেশায় অধ্যাপক, আমার অনেক দিনের পরিচিত। তিনিও হয়টে পত্রিকাটির কথা বললেন। জানালাম, পত্রিকাটি মাত্রই আমি হাতে পেয়েছি। তিনি বললেন, ভেতরের পৃষ্ঠা খুলে দেখ তোমাদের এক রাজনীতিবিদ সম্পর্কে কী লেখা হয়েছে। তাঁকে ধন্যবাদ দিয়ে তাড়াতাড়ি পত্রিকার পাতা ওল্টাতে থাকি। কী এমন খবর যা ভিয়েনার বাংলাদেশী কমিউনিটি তো বটেই, আমার পরিচিত অস্ট্রিয়ানদেরও নাড়া দিয়েছে! এরই মধ্যে আমার মোবাইল ফোনে অনেক এসএমএস জমা হয়েছে। সব ক্ষুদে বার্তাতেই এই একটি খবর পাঠ করার কথা বলা হয়েছে। দ্রুত পৃষ্ঠা ওল্টাতে থাকি। ভেতরের পাতাতেই পেয়ে যাই খবরটি। বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে নিয়ে সেখানে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ মওদুদ আহমদ এক অস্ট্রিয়ান নারীর সম্পত্তির উত্তরাধিকার সেজে তা দখল করেছেন। জার্মান ভাষায় খবরটির শিরোনাম 'চড়ষরঃরশবৎ ধষং ঊৎনংপযষবরপযবৎ', যার উচ্চারণ 'পলিটিকেয়ার আলস এরবসøাইক্ষের'। বাংলায় এই শিরোনামটির অর্থ 'জালিয়াতি করে উত্তরাধিকার সেজে জমি দখল করা।' এই শিরোনামের সংবাদটির সারাংশ হচ্ছে, 'বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতা মওদুদ আহমদ সম্ভবত জালিয়াতি করে ভিয়েনার অধিবাসী মৃত মিসেস ইনজে মারিয়া ফ্ল্যাজের উত্তরাধিকার সেজে ২ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ইউরো নিয়েছে। এ ব্যাপারে আইনী তদন্ত শুরু হয়েছে।'
খবরটি পাঠ করে এতক্ষণে আমি অস্ট্রিয়ান নাগরিকদের বিস্ময়ের কারণটি উপলব্ধি করতে পারি। বুঝতে পারি হয়টে পত্রিকার ভেতরের পাতায় প্রকাশিত একটি খবর নিয়ে ভিয়েনার বাঙালী কমিউনিটিতে কেন এত তোলপাড়। অস্ট্রিয়া এমন এক দেশ, যেখানে সবাই সম্পন্ন। উত্তরাধিকার নিয়ে কেউ কোনদিন কোন চিন্তা করে না। বাংলাদেশে যেমন সম্পত্তি নিয়ে খুনোখুনির ঘটনা ঘটে, মৃত ব্যক্তির সম্পত্তির উত্তরাধিকার গজিয়ে যায়, তেমন কোন সম্ভাবনা অস্ট্রিয়াতে নেই। কোন সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়ে কোন মামলার ঘটনা অস্ট্রিয়াতে বিরল। এখানে কেউ মারা গেলে, যদি তাঁর উত্তরাধিকার খুঁজে পাওয়া না যায়, তাহলে সেই সম্পত্তি সরকারের হেফাজতে চলে যায়। স্বাভাবিকভাবেই, কোন এক অস্ট্রিয়ান নারী, যিনি কোন এক সময়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ছিলেন, তাঁর সম্পত্তির উত্তরাধিকার কেমন করে মওদুদ আহমদ হলেন, এটাই অস্ট্রিয়ানদের বিস্ময়ের কারণ। আমি ঐ অস্ট্রিয়ান নাগরিক ইনজে মারিয়া ফ্ল্যাজের খোঁজ করতে শুরু করি। জানতে পারি তিনি অনেক আগেই পৃথিবীর মায়া কাটিয়েছেন। কোন এক সময় পাকিস্তানী নাগরিক মো. এহসানের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। ঢাকার পত্রিকায় প্রকাশিত খবরেও বলা হয়েছে, গুলশান আবাসিক এলাকায় ১৫৯ নম্বর হোল্ডিংয়ে এক বিঘা ১৩ কাঠা আয়তনের প্লটটি পাকিস্তানি নাগরিক মো. এহসানকে ১৯৬০ সালের ২৪ আগস্ট হস্তান্তর করে তৎকালীন ডিআইটি, বর্তমানে রাজউক। পরবর্তী সময় লিজ গ্রহীতার প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত আবেদনের ভিত্তিতে তাঁর স্ত্রী ইনজে মারিয়া ফ্ল্যাজের নামে প্লটটি ১৯৬৫ সালে লিজ দলিল হিসেবে রেজিস্ট্রি হয়। সরকারী পরিত্যক্ত সম্পত্তি তালিকা প্রণয়ন সংক্রান্ত 'মিনিস্ট্রি অব কেবিনেট অ্যাফেয়ার্স' জারির আগেই ইনজে মারিয়া ফ্ল্যাজ ও যুদ্ধের পর পরই তাঁর স্বামী মো. এহসান দেশত্যাগ করেন। ১৯৭৩ সালে প্লটটি পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে গেজেটে তালিকাভুক্ত হয়।
বাংলাদেশের পত্রপত্রিকার খবর অনুযায়ী, রাজধানীর গুলশানে সরকারী বাড়ি আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের হওয়া দুর্নীতির মামলায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও তাঁর ভাই মনজুর আহমদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, মওদুদ আহমদ ও তাঁর ভাই গুলশানের ওই বাড়ি ভোগদখল করে আসছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, মওদুদ আহমদ ওই সম্পত্তি আত্মসাতের উদ্দেশ্যে নিজেকে ইনজে মারিয়া প্রদত্ত আম মোক্তারনামার (পাওয়ার অব এ্যাটর্নি) দাবিদার দেখানোর জন্য একটি আম মোক্তারনামা তৈরি করেন এবং সুবিধামতো সময়ে ব্যবহার করেন। ১৯৭৩ সালের ২ আগস্ট থেকে নিজেকে ভাড়াটিয়া দেখিয়ে তিনি বাড়িটি দখলে নেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, লিজ গ্রহীতা ইনজে মারিয়া স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে আসার কোন দালিলিক প্রমাণ না থাকলেও মওদুদ আহমদ তাঁর পাওয়ার অব এ্যাটর্নিতে তা দেখিয়েছেন। পরবর্তী সময় ১৯৭৮ সালে তৎকালীন সরকারে যোগদান করে প্রথমে সরকারের মন্ত্রী এবং ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তৎকালীন সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ক্ষমতার অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে বাড়িটিকে পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকা থেকে বাদ দেয়ার অপচেষ্টা করেন। গণপূর্ত ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয় থেকে প্লটটি ১৯৮০ সালের ১৩ মে মারিয়ার নামে ১০০ টাকা মূল্যে হস্তান্তর দলিল বের করেন। একই বছর প্লটটি রেজিস্ট্রি করা হয়। পরে ১৯৮৪ সালে ইনজে মারিয়া কর্তৃক জনৈক মহসিন দরবার বরাবরে একটি আম মোক্তারনামা সম্পাদন দেখানো হয়। ইনজে মারিয়া ১৯৮৫ সালে মারা যান। এটা জানা সত্ত্বেও মহসিন দরবার নামক ব্যক্তিকে দিয়ে মৃত ব্যক্তির আম মোক্তার হিসেবে ১৯৮৫ সালে বাড়িটি মওদুদের সহোদর মনজুর আহমদ বরাবর চুক্তি সম্পাদনা দেখানো হয়। কিন্তু রাজউকের নথিতে তা নেই।
মওদুদ আহমদ অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে ঢাকায় একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। যেখানে তিনি বলেছেন, 'গুলশানের ওই বাড়িটির মালিক ছিলেন অস্ট্রিয়ান নাগরিক মিসেস ইনজে মারিয়া ফ্ল্যাজ। আমি শুধু তার একজন আইনজীবী ছিলাম। অস্ট্রিয়ান সরকারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার ১৯৮০ সালে এই বাড়িটি রেজিস্ট্রি দলিলের মাধ্যমে তাঁকে ফিরিয়ে দেন। তখন আমি সরকারী ক্ষমতায় ছিলাম না। ২০০৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর হাইকোর্টের রায়ের ভিত্তিতে রেজিস্ট্রি করা দলিলের মাধ্যমে লন্ডনে বসবাসরত আমার ভাই মনজুর আহমদ এই বাড়ির মালিক হন।' 
ঐ সংবাদ সম্মেলনের তাঁর ভাষ্যেই দেখা যায় মওদুদ আহমদ ১৯৮০ সাল থেকে চলে এসেছেন ২০০৫ সালে। এটা তাঁর স্বভাবজাত ব্যাপার। মওদুদ আহমদের রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে যাঁরা ওয়াকিফহাল, তাঁরা জানেন দুর্নীতিতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। দুর্নীতির দায়ে তাঁর সাজাও হয়েছিল। জেল খেটেছেন তিনি। আবার রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমায় কারামুক্ত হয়েছেন। কাজেই এ ধরনের জালিয়াতি করা যে তাঁর পক্ষে অসম্ভব নয়, তা বলাই বাহুল্য। যদিও সংবাদ সম্মেলনে আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন তিনি। অবশ্য মওদুদ আহমদ সবসময় নিজের সুবিধা অনুযায়ী 'ওয়াজ' করতে পারেন। এর লিখিত দলিলও আছে। কর্নেল তাহের হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, ট্রাইব্যুনাল গঠনের অনেক আগেই জেনারেল জিয়াউর রহমান কর্নেল তাহেরের মৃত্যুদণ্ড প্রদানে মনস্থির করেন। রায়ে হাইকোর্ট মওদুদ আহমদ রচিত 'ডেমোক্রেসি অ্যান্ড দ্য চ্যালেঞ্জ অব ডেভেলপমেন্ট : এ স্টাডি অব পলিটিক্স অ্যান্ড মিলিটারি ইন্টারভেনশন্স ইন বাংলাদেশ' বই থেকে উদাহরণ টানেন। এর প্রতিবাদে সেই সময় যুদবলের কর্মীরা মওদুদের কুশপুতুলও দাহ করেন।
যাহোক, আগের প্রসঙ্গে ফেরা যাক। মওদুদের এই উত্তরাধিকার দাবি এখন ভিয়েনার বাঙালী কমিউনিটিতে সবেচেয়ে আলোচিত বিষয়। ভিয়েনাতে আমারও প্রায় দুই যুগ অতিবাহিত হতে চলেছে। এখানে এই দীর্ঘ সময়ে এমন কোন মামলার কথা শুনিনি। কেউ মারা গেলে তাঁর উত্তরাধিকারের দাবি নিয়ে কোন আত্মীয়কে আদালতে যেতে দেখিনি। এমন কোন ঘটনার সঙ্গে অস্ট্রিয়ার কোন নাগরিক কিংবা বাঙালী কমিউনিটির কোন পরিচয় আগে ঘটেনি। অস্ট্রিয়ান নারীর উত্তরাধিকার দাবি করে মওদুদ আহমদের বাড়ি দখলের ঘটনা তাই অস্ট্রিয়াতে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। তোলপাড় চলছে। এখানকার বাঙালী কমিউনিটি তো বটেই, অস্ট্রিয়ানরাও মনে করছেন এটা বড় ধরনের জালিয়াতি। বিদেশে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করতে এই জালিয়াতির তদন্ত ও বিচার হওয়া উচিত বলে ভিয়েনায় বসবাসরত বাঙালীদের অভিমত।

লেখক: অস্ট্রিয়া প্রবাসী সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী 
nayrul@gmx.at
রবিবার, ৮ জুন ২০১৪, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২১



__._,_.___

Posted by: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___