Related: একাত্তরের ২৫-২৬ মার্চ মধ্যরাত্রিতে যখন পাকিস্তানী সৈন্যরা পাশবিক হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়, তখন এরশাদ রংপুরে ছুটি ভোগরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে যোগদান না করে এপ্রিলের প্রথম দিকে তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে পাড়ি জমান এবং সপ্তম ইস্ট বেঙ্গলের অধিনায়ক হিসেবে পুনরায় যোগদান করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে অসুস্থ পিতাকে দেখার জন্য তিনি সেপ্টেম্বরে রংপুরে এসেছিলেন। এবারেও তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ না দিয়ে পাকিস্তানে ফিরে যান। ১৯৭২ সালে পাকিস্তানে আটকে পড়া বাঙালী অফিসার ও সৈন্যদের দেশদ্রোহিতার অভিযোগে বিচার শুরু হলে লে. কর্নেল এরশাদকে উল্লেখিত ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়। সুতরাং এইসব কারণে স্বাধীন বাংলাদেশে তার চাকরি থাকার কথা নয়। তবুও তাকে সেনাবাহিনীতে স্থান দেয়া হয় এবং এই বিপজ্জনক ব্যক্তির সেনাবাহিনীতে বহাল থাকার পরিণতি সবার জানা। |
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় সেনাবাহিনীতে থাকাকালে আমি নাকি পাকিস্তান থেকে ছুটিতে বাংলাদেশে এসেছি এবং কোনো এক কল্পিত আদালতের বিচারক ছিলাম। আমি এই ধরনের জঘন্য মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, আমি অত্যন্ত বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করছি যে, কিছু কিছু মহল আমার বিরুদ্ধে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আমার ভূমিকা নিয়ে মিথ্যা, বানোয়াট এবং কল্পনাপ্রসূত তথ্য প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
বিবৃতিতে তিনি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, বর্ণিত এই বানোয়াট তথ্যের যদি কেউ প্রমাণ দিতে পারে- তাহলে আমি রাজনীতি থেকে চির বিদায় নেব, এমনকি দেশ ছেড়েই চলে যাবো। আর যারা এ ধরনের মিথ্যাচার করছেন, তারা প্রমাণ দিতে না পারলে জাতির সামনে তাদের ক্ষমা চাইতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এরশাদ এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা আমার বুকের লালিত স্বপ্ন। দুর্ভাগ্য, সেই স্বাধীনতা যুদ্ধে আমি অংশগ্রহণ করতে পারিনি। কারণ, যুদ্ধ শুরুর মাত্র এক মাস আগে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে আমাকে পোস্টিং দেওয়া হয়েছিল। যদি দেশে থাকতাম তাহলে জীবনবাজী রেখেই স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করতাম।
তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এবং স্বাধীনতার পরে পাকিস্তানের বন্দি শিবিরে স্ত্রীসহ আমি এবং বাঙালী সৈনিক ও অফিসারগণ অববর্ণনীয় নির্যাতন ও দুর্দশা সহ্য করে বেঁচে ছিলাম।
এরপর বঙ্গবন্ধুর কূটনৈতিক সাফল্যে আমরা দেশে ফিরতে পেরেছি। দেশে ফেরার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই আমাকে পদোন্নতি প্রদান করে আর্মি হেড কোয়ার্টারে এডজুটেন্ড জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনিই আমাকে প্রথমবারের মতো এনডিসি কোর্স করাতে ভারতে পাঠিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু আমাকে জানতেন এবং বুঝতেন বলেই তার কাছ থেকে আমি এই পুরস্কার পেয়েছি। পরবর্তীকালে আমি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পেয়েছি।
__._,_.___