Banner Advertiser

Monday, September 29, 2014

[mukto-mona] রিকশাওয়ালা আবদুল মজিদের মেয়েরা পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ে



রিকশাওয়ালা আবদুল মজিদের মেয়েরা পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ে

 ২০১৪ সেপ্টেম্বর ২৯ ১৬:৪৭:২৮
রিকশাওয়ালা আবদুল মজিদের মেয়েরা পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ে

বাহরাম খান, পত্নীতলা (নওগাঁ) থেকে : মোহাম্মদ আবদুল মজিদ ৬৩ বছর বয়সেও রিকশার প্যাডেল ঘুরিয়ে জীবন সংসারের চাকা সচল রেখে চলেছেন। এই বয়সে রিকশা চালানোর প্রয়োজন শুধু সংসারের জন্য নয়, তিন মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালানোর অর্থ যোগান দিতেও এ কাজ করতে হচ্ছে তাকে।

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার ফহিমপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মজিদ ও তার তিন মেয়ে এখন এলাকার শিক্ষা সংগ্রামের রোল মডেল।

মজিদের চার সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে লাইলী খাতুন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে মাস্টার্সে পড়ছেন। দ্বিতীয় মেয়ে শিরীন আকতার নওগাঁ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে অনার্সে ও তৃতীয় মেয়ে সুমাইয়া আকতার বানু পত্নীতলার কে এম এইচ স্কুলে (কাটাবাড়ী মোড় উচ্চ বিদ্যালয়) পড়েন দশম শ্রেণীতে। একমাত্র ছেলে ঢাকায় রিকশা চালান। সন্তানদের মধ্যে সবার বড় এই ছেলে বিবাহিত। ওই ছেলে বাবার সংসারে কোনো সহযোগিতা করেন না।

লাইলী খাতুন কে এম এইচ স্কুলে নবম শ্রেণীতে পড়ার সময় তাকে বিয়ে দেওয়ার চিন্তা আসে মজিদের মাথায়। এমন ইঙ্গিত পেয়ে লাইলী তার ভাবীর মাধ্যমে ওই বয়সে বিয়ে না করার ও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানান বাবাকে।

মেয়ের এই আবেদন অনুধাবন করে রাজি হন আবদুল মজিদ। শুরু হলো মেয়ের শিক্ষা চালিয়ে যাওয়া এবং মজিদের দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম।

বেসরকারি সংগঠন আইটিভিএস (ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন সার্ভিসেস) বাংলাদেশের সমন্বয়কারী মাহমুদ হাসান পত্নীতলায় মজিদের রিকশায় চড়ে কথা প্রসঙ্গে জানতে পারেন তার মেয়েদের শিক্ষা সংগ্রামের কথা।

বাংলাদেশের কয়েকটি প্রত্যন্ত এলাকায় বাল্যবিবাহ রোধ ও শিক্ষা নিয়ে কাজ করা মাহমুদ হাসান বিষয়টি ছড়িয়ে দেন প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। তিনি দ্য রিপোর্টকে বলেন, 'মজিদ ও তার মেয়েদের অনবদ্য সাফল্যের কথা এলাকার মানুষও তেমন জানত না। আমরা তাকে নিয়ে কাজ শুরু করার পর পুরো এলাকার অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপকভাবে সাড়া পড়ে। বিষয়টি মেয়েদের শিক্ষা অর্জনে অত্যন্ত ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।'

স্থানীয় কে এম এইচ স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ওমর ফারুক দ্য রিপোর্টকে বলেন, 'আবদুল মজিদ ও তার মেয়েরা আমাদের এলাকায় উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। অনেক অনুষ্ঠানে তাদের উপস্থিত করে অন্যান্য ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের উৎসাহ দেই আমরা। যাতে সব মেয়েরা পড়াশোনা চালিয়ে যায়। অনেক অভিভাবক অনুপ্রাণিত হয়ে মেয়েদের পড়াশোনা করাচ্ছেন।'

১৯৭৮ সাল থেকে শুরু হওয়া ষাটোর্ধ্ব আবদুল মজিদ আজও রিকশা চালিয়ে মেয়েদের পড়াশোনার খরচ চালানোর কাজটি কেন করছেন? 'বিয়ে দিলেই তো দায় সারা যেত'— এমন প্রশ্নে ঘাড় নাড়িয়ে মজিদের উত্তর 'বাবা, ছেলেডা মানুষ হয় নাই। মেয়েগুলো পড়াশোনা করতে চাইচ্ছে। না করি কেমনে। আশপাশের পরিস্থিতি দেখছি। পড়াশোনা না করলি পরে গরিবের মেয়ে গরিবের ঘরেই যাতি হবি। তার চেয়ে আমার কষ্ট হলিও ওরা ভালো থাকবে।'

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্রী লাইলী খাতুন পরিবারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে বিয়ে না করে কীভাবে বড় হওয়ার স্বপ্ন বুনলেন? জানতে চাইলে লাইলী বলেন, 'স্কুলে পড়ার সময় থেকেই আমার আত্মবিশ্বাস ছিল। তাই হাল ছাড়িনি। মেয়ে নই, মানুষ হতে চেয়েছি। বেশিরভাগ মেয়ের স্বপ্ন থাকে এসএসসি পাস করে প্রাইমারির টিচার হবে। আমার মনে জেদ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিচার হতে সমস্যা কোথায়?'

অর্থের সমস্যায় আবদুল মজিদ। সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী তিনি। রিকশা চালিয়ে দৈনিক ১৫০ থেকে ২০০ টাকা রোজগার করে সংসার চালানোই কঠিন। সেখানে তিন মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালানো যেন পাহাড় ঠেলার মতো কাজ।

আবদুল মজিদ জানান, দিনের বেলায় নিজের রোপণ করা প্রায় চারশোর মতো তালগাছের যত্ন নেন পর্যায়ক্রমে। রাতে চালান রিকশা। এলাকায় বৃক্ষপ্রেমিক হিসেবেও তার সুনাম আছে। অল্প কিছু জমিতে পরিবারের ভাতের যোগান হয়।

মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ যোগানোর জন্য আলাদাভাবে গরু ও ছাগল পালন করেন আবদুল মজিদ। যখনই ভর্তি, ফরমফিলাপ কিংবা বই কেনার জন্য একসঙ্গে বেশি টাকার প্রয়োজন হয়, তখনই বিক্রি করে দেন গরু কিংবা ছাগল। কখনও সহযোগিতা নেন এক ভাতিজার কাছ থেকে। কিন্তু কারো ঋণ রাখেন না আবদুল মজিদ।

সন্তানদের শিক্ষা সংগ্রামের এই যুদ্ধে বাবা ও মেয়েরাই শুধু নন, সমানতালে আছেন মা মনোয়ারা বেগমও। টানাটানির সংসারে হাঁস-মুরগি পালন করে কিছু বাড়তি টাকা মেয়েদের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি।

চেষ্টা একটাই নিজেরা যেমনই আছেন, মেয়েরা যেন কষ্টে না থাকে। বাবা মায়ের এ সব কষ্টের কথা মাথায় রেখে ভালো ফল করে এগিয়ে যাচ্ছেন আবদুল মজিদ-মনোয়ারা বেগম দম্পতির তিন মেয়ে।

বড় মেয়ে লাইলী খাতুন কৃতিত্বের সঙ্গে সম্মান শেষ করেছেন। কিছুদিনের মধ্যে মাস্টার্স শেষ হতে যাচ্ছে। মেজ মেয়ে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তৃতীয় মেয়ে জেএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে কে এম এইচ স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী। তার রোল নম্বর এক।

আবদুল মজিদের সঙ্গে রবিবার বিকেলে কথা হয়। এ সময় তার বার্ধ্যক্যের চেহারায় তৃপ্তির রেখাও ঝিলিক দিচ্ছিল। এক মেয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, বাকি দু'জন নওগাঁ ও পত্নীতলায়। ফহিমপুর গ্রামের এই রিকশাওয়ালার জীবনে আর কী চাই!

(দ্য রিপোর্ট/বিকে/এইচএসএম/এইচ/সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৪)

- See more at: http://www.thereport24.com/article/60880/index.html#sthash.f3JbW6Nm.dpuf



__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___