" সার্ভার মেইনটেন্যান্স এর জন্য অল্প সময় সামহোয়্যার ইন ব্লগ বন্ধ থাকবে।এই সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
সামহোয়্যার ইন ব্লগ টিম "
http://www.amarblog.com/blogs/%E0%A6%86%E0%A6%B0%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A6%97%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A7%9C%E0%A6%B6%E0%A6%BF
▓▓▓▓ প্রসঙ্গ – " মাজহাব এবং বিভক্ত মুসলিম জাতি " ▓▓▓▓
" সৃষ্টিকর্তা এক, অদ্বিতীয় এবং তার কোন প্রতিদ্বন্দ্বী নেই এবং মহামানব হজরত মোহাম্মাদ (সাঃ) তার প্রেরিত রাসুল। "
এই মূল এবং অকৃত্তিম তত্ত্বটিকেই কেন্দ্র করে যুগে যুগে নানা ব্যাখ্যা এবং বিশ্লেষণের মাধ্যমে গড়ে উঠেছে ইসলামের একাধিক সম্প্রদায়। মহানবী (সাঃ) এর সময়ে ধর্মের নতুন আস্বাদন এবং পূর্ণ প্রাপ্তির পরিসরে কেউই তখন কোনরূপ ব্যাখ্যা বা পরিমার্জনের প্রত্যাশা করেননি। তাই প্রায় সব উপদলই তাদের পালিত আচার ব্যাবস্থাকে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহের প্রেরিত এবং মোহাম্মাদ (সাঃ) মনোনীত বলে দাবী করে। মুসলমানদের মধ্যে নানা দল-উপদল সৃষ্টির কারণ হিসেবে দায়ী করা যায় রাজনৈতিক মতবাদ, ধর্মীয় মতবাদ ও সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি। বিভিন্ন ধর্মীয় মতবাদ ও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে মুসলমানদের মধ্যে তৈরি হয়েছে নানান মত-পার্থক্য। পবিত্র গ্রন্থ আল কোরআন এবং মহামানব হজরত মোহাম্মাদ (সাঃ)বর্ণিত হাদিসেও ইসলামের এই বিভিন্ন উপদল সম্পর্কে বিভিন্ন আদেশ, নিষেধ এবং সতর্কবাণী। যেমন -
পবিত্র কোরআনের সূরা আনআমের আয়াত ১৫৯ ইসলামের বিভিন্ন উপদল সম্পর্কে বলা আছে --
“যারা নিজেদের দ্বীনকে খন্ড খন্ড করে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে তাদের সাথে আপনার (হে রাসূল) কোন সম্পর্ক নেই।”
সুরা রুমের আয়াত ৩১, ৩২ এ ইরশাদ করা হয়েছে -
“তাঁর (আল্লাহর) দিকে রুজু হও, আল্লাহকে ভয় কর, সালাত ক্বায়েম কর, আর সেই মুশরিকদের মধ্যে সামিল হয়ো না, যারা নিজেদের দ্বীনকে খন্ড খন্ড করে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে এবং প্রত্যেক দলই নিজেরটা নিয়েই সন্তুষ্ট।”
সূরা আল-ইমরানের আয়াত ১০৫ এ আল্লাহ পাঁক ইরশাদ করেছেন -
“তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা তাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শন আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং নিজেদের মধ্যে মতান্তর সৃষ্টি করেছে। তাদের জন্য রয়েছে মহা শাস্তি।”
বিভিন্ন উপদল এবং তাদের পরিনাম সম্পর্কে হজরত মোহাম্মাদ (সা;) বলেছেন,
“ওহে, অবশ্যই যারা তোমাদের পূর্বে ছিল তারা ৭২ দলে বিভক্ত ছিল এবং অবশ্য্ই আমার এই উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। ইহাদের সকল দলই দোযখে যাবে এক দল ব্যতিত। সাহাবা (রাঃ) জিজ্ঞেসা করলেন, “ইয়া রাসূলুল্লাহ, সেটি কোন দল? নবী (সঃ) বললেন, ” আমি এবং আমার সাহাবীগণ যার উপর আছি, তার উপর যারা থাকবে।”
(তিরমিজী ও আবু দাউদ, রেওয়ায়েতে মেশকাত শরীফ ১ম খন্ড, হাদীস নং- ১৬৩)
মোহাম্মাদ (সাঃ) বর্ণীত এই ৭৩ শ্রেণী মূলত ১০ টি বড় দলের অন্তর্গত। সেগুলি হল ---
১) আহলে সুন্নাত বা সুন্নি সম্প্রদায় -------------------- উপদল সংখ্যা - ১
২) খারিজী ----------------------------------------- উপদল সংখ্যা - ১৫
৩) শিয়া --------------------------------------------উপদল সংখ্যা - ৩২
৪) মুতাজিলা ----------------------------------------উপদল সংখ্যা - ৬
৫) মুরজিয়া -----------------------------------------উপদল সংখ্যা - ১২
৬) মুশাব্বিয়া ----------------------------------------উপদল সংখ্যা - ৩
৭) জাহমিয়া ----------------------------------------উপদল সংখ্যা - ১
৮) জারারিয়াহ/ জাবরিয়া -----------------------------উপদল সংখ্যা - ১
৯) নাজ্জারিয়া ---------------------------------------উপদল সংখ্যা - ১
১০) কাদরিয়া ---------------------------------------উপদল সংখ্যা - ১
====================================
মূল দলঃ আহলে সুন্নাত বা সুন্নি সম্প্রদায়, উপদল সংখ্যা - একটি
হজরত মোহাম্মাদ (সাঃ) এবং সাহাবীগণের পদাঙ্ক অনুসারীগনই হচ্ছে আহলে সুন্নাত এবং তা থেকেই সুন্নি শব্দের সৃষ্টি। অভিধানিকভাবে ‘সন্নাহ’ শব্দের অর্থ পথ, চাল-চলন, রীতিনীতি, শরিয়ত ইত্যাদি। রাসুল (সাঃ) তার কথায় এবং কাজের মাধ্যমে যেসব কাজের নির্দেশ দিয়েছেন বা যেসব কাজ নিষেধ করেছেন সুন্নাহ সেসব আদিষ্ট এবং নিষিদ্ধ কর্ম সমষ্টিকেই বুঝায়। সুন্নি মতাদর্শ বিশ্লেষণমূলক ৪ টি মাজহাবে বিভক্ত। চার ইমামের সবারই লক্ষ্য ছিল ধর্ম বিশ্বাস এবং তার ব্যাবহারিক প্রয়োগকে আরও বেশী আগ্রসরমান এবং শৃঙ্খলাবদ্ধ করে মানুষের জন্য সহজবোধ্য করার। চার ইমামই গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়ে নিজেদের বিবেক এবং বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের মতামত প্রদান করেছেন এবং অন্য ইমামদের বিভ্রান্তি এবং গোঁড়ামির স্বীকার বলে দাবী করেছেন। সুন্নি মুসলমান মাত্রই এই চার মাজহাবের কোন না কোন ইমামের অনুসারী। এই চার মাজহাবের নামকরন করা হয়েছে ইমামদের নামে - ইমাম হানাফি, ইমাম মালেকি, ইমাম সাফেয়ি এবং ইমাম হাম্বলি। সকল ইমামরাই ছোট কথায় বলতে গেলে মুসলিম সমাজ সংস্কারক হিসাবে কাজ করেছেন যাদের মূল লক্ষ্যই ছিল ধর্মকে সাধারন মানুষের জন্য সহজবোধ্য এবং অনুকরণযোগ্য করে তোলা। মাজহাব শব্দের অর্থ – চলার পথ। ইসলামি পরিভাষায় কোরআন – সুন্নাহর প্রদর্শিত,রাসুল সাঃ,সিদ্দিকীন,শোহাদায়ে কেরাম ও সৎকর্মশীল ব্যক্তিবর্গের মনোনীত পথের নামই হল মাজহাব। অন্য শব্দে এটাই সিরাতে মুস্তাকিম বা সরল পথ। মাজহাব কোন নতুন ধর্ম,মতবাদ বা কোরআন সুন্নাহ বহির্ভূত ব্যক্তি বিশেষের নিজস্ব মতের নাম নয়, বরং মাজহাব হল কোরআন, সুন্নাহ,ইজমা ও কেয়াসের ভিত্তিতে বিভিন্ন ধর্মীয় সমস্যার প্রদত্ত সমাধান যার বিষয়ে বিজ্ঞ ব্যক্তিগণ মত প্রদান করেছেন। মাজহাব হল, কোরআন -সুন্নাহর তে অস্পষ্ট আয়াত ও হাদীস গুলীর সরল ব্যাখ্যা মাত্র। চার মাজহাবের কোন ইমাম-ই রাসুলের কথার বাহিরে এক কদম ও দেননি। সুতরাং চার মাজহাবই ইসলামের মুল ৪ টি ভিত্তি তথা কোরআন ,সুন্নাহ, ইজমা, ও কিয়াসের আলোকে প্রণীত। মাজহাব মানার মানেই হল রাসুলের কথা মানা। বিশ্বের মোট মুসলিমের ৭৫% - ৮০% সুন্নি সম্প্রদায়ের অনুসারী।
মতাদর্শ বা মাজহাবে ইমামে আযম আবু হানিফা -
নোমান ইবনে সাবিত ইবনে যুতা ইবনে মারযুবান / ইমামে আযম আবু হানিফা ছিলেন ফিকহশাস্ত্রের একজন প্রখ্যাত বিশেষজ্ঞ এবং হিজরী প্রথম শতাব্দীর একজন গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী ব্যক্তিত্ব। ইসলামী ফিকহের সর্বাধিক প্রসিদ্ধ ও পরিচিত চারটি সুন্নি মাযহাবের প্রধান ব্যক্তিত্ব বা ইমাম ছিলেন তিনি। উমাইয়া খলিফা আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ানের রাজত্বকালে ইমাম আবু হানিফা ইরাকের কুফা নগরীতে ৬৯৯ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন এবং সুন্নি প্রথম মাজহাবের আঁতুড়ঘর হিসাবে বিবেচিত করা হয় এই ইরাকের কুফা নগরীকেই। ইমাম আবু হানিফের ছয় বছর বয়সে উমাইয়া খলিফা আবদুল মালিক মৃত্যুবরণ করে। ষোল বছর বয়সে আবু হানিফা পিতার সাথে হজ্জে গিয়েছিলেন। ইমাম আবু হানিফার পিতা সাবিত বিন যুতা কাবুল, আফগানিস্তানের একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। তার পিতার বয়স যখন ৪০ বছর তখন আবু হানিফা জন্মগ্রহণ করেন। বংশধরের দিক থেকে তাকে অ-আরবীয় বলে ধরা হয়ে থাকে কারণ তার দাদার নামের শেষে ‘যুতা’ শব্দটি রয়েছে। প্রখ্যাত মুসলিম ইতিহাসবিদ খতীবে বাগদাদী আবু হানিফার নাতি ইসমাইল বিন হামাদের বক্তব্য থেকে আবু হানিফার বংশ ব্যাখা দেন। অন্য আরেক ইতিহাসবিদ হামাদ আবু হানিফাকে পারসিক বংশ্বদ্ভূত বলে দাবি করেন। আবু হানিফার বংশ নিয়ে অনেক ব্যাখ্যা পাওয়া যায় তবে সবচেয়ে বেশি পরিচিত ও নির্ভরযোগ্য মত হলো তিনি কাবুলের পারসিক বংশদ্ভূত। ইমাম আবু হানিফা ইসলামী সম্রাজ্জ্যর উত্তরাধিকারি হিসাবে ইসলামের চতুর্থ খলিফা হজরত আলী (রাঃ) বংশধর সৈয়দ ইব্রাহীমকে সমর্থন করতেন এমনকি আর্থিক সাহায্যও প্রদান করতেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। সৈয়দ ইব্রাহীম, আব্বাসিয় খলিফা মনসুরের আনুগত্য অস্বীকার করে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন ৬৬২ খ্রিষ্টাব্দে। এরপরের বছর তিনি নিহত হন কুফার যুদ্ধে এবং তার ছিন্ন মস্তক পাঠানো হয় আব্বাসিয় খলিফা মনসুরের কাছে। এরপরের বছর ৬৬৩ খ্রিষ্টাব্দে, আব্বাসিয় খলিফা মনসুর, ইমাম আবু হানিফাকে বাগদাদ নগরীর প্রধান বিচারপতির পদ গ্রহন করার আহবান জানান। অনেকের মতে - উপযুক্ত প্রমাণপত্রের অভাবে, আলী (রাঃ) এর উত্তরাধিকারী ইব্রাহীমকে গোপনে আবু হানিফা সমর্থন করতো প্রমান করতে না পেরেই এই প্রধান বিচারপতির পদ গ্রহন করার আমন্ত্রণ জানান আব্বাসিয় খালিফা মনসুর, যার মূল লক্ষ্যই ছিল বাগদাদের জনপ্রিয় ইমাম আবু হানিফাকে সকলের সম্মুখে বিভিন্নভাবে অপযূস্ত করা। কারন যাই হোক না কেন, ৭৬৩ খ্রিষ্টাব্দে আব্বাসীয় বংশের আল-মনসুর, ইমাম আবু হানিফাকে রাজ্যের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের প্রস্তাব দেন কিন্তু স্বাধীনভাবে থাকার জন্য তিনি প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন। তার পরিবর্তে তার ছাত্র আবু ইউসুফকে প্রধান বিচারপতির দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রস্তাব প্রত্যাখানের ব্যাপারে আবু ইউসুফ, আল মনসুরকে ব্যাখা দেন তিনি নিজেকে এই পদের জন্য উপযুক্ত মনে করছেন না। আল-মনসুরের এই পদ প্রস্তাব দেওয়ার পেছনে তার নিজস্ব কারণ ছিল যেটি ইতিমধ্যে উপরে বলা হয়েছে। আবু হানিফা প্রস্তাব প্রত্যাখান করার পর মনসুর তাকে মিথ্যাবাদী হিসেবে অভিযুক্ত করেন। এই অভিযোগের ব্যাখ্যায় আবু হানিফা বলেন, “আমি যদি মিথ্যাবাদী হই তাহলে প্রস্তাব প্রত্যাখান করার ব্যাপারে আমার মতামত সঠিক, কারণ কিভাবে আপনি প্রধান বিচারপতির পদে একজন মিথ্যাবাদিকে বসাবেন ? ” এই ব্যাখার উত্তরে আল-মনসুর আবু হানিফাকে গ্রেফতার করেন ও তাকে নির্যাতন করে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়। ৭৬৭ খ্রিষ্টাব্দে আবু হানিফা কারাগারে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার নয় তবে কেউ কেউ বলেন আবু হানিফা আল মনসুরের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহের চেষ্ঠা করেন এ জন্য তাকে জেলখানর ভেতর মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। আবার কেউ কেউ দাবী করেন তাকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়। পশ্চিম এশিয়া, দক্ষিন মিশর এবং ভারতবর্ষের অধিকাংশ মুসলিম সুন্নি মতাদর্শের, আবু হানিফার মাজহাবের অনুসারী।
মতাদর্শ বা মাজহাবে ইমামে মালেকি -
হানাফি মতবাদের পরে মদিনায় গড়ে উঠে মালিকি মাজহাব যার নেতৃত্ব দেন ইমাম মালিক বা ‘ইসলামের শেখ’ নামে খ্যাত ইবনে আনাস ইবনে মালিক ইবনে আবি আমির আল-আসবাহি যার জন্ম হয় ৭১১ খ্রিষ্টাব্দে মদিনাতে। ইমাম মালেক (রহ.)-এর পূর্বপুরুষ ইয়েমেনের অধিবাসী ছিলেন। তাঁর দাদা আবু আমের দ্বিতীয় হিজরীতে (৬২৩ খ্রিস্টাব্দে) ইসলাম গ্রহণের পর সপরিবারে মদিনা চলে আসেন। পরবর্তীতে মদিনাতে ইমাম মালেক জন্মগ্রহণ করেন।ইমাম মালেক (রহ.)-এর বংশপরম্পরা ইয়েমেনের শাহি খানদান হুমাইরের শাখা ‘আসবাহ’-এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কারণে তাঁকে আল-আসবাহী বলা হয়। ইমাম মালেক ১৭৯ হিজরীর রবিউল আউয়াল মাসে (৭৯৫ খ্রিস্টাব্দে) ৮৪ বছর বয়সে মদিনাতে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর তাঁকে মসজিদে নববীর পাশে জান্নাতুল বাকী কবরস্তানে দাফন করা হয়। ইসলামী আইন বিষয়ে ইমাম মালেক (রহ.) রচিত " মালিকের মুয়াত্তাকে " আজও সর্বস্তরে বিনা অজর আপত্তিতে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়। মালিকী মাজহাবের মুসলিমদের উত্তর মিশর এবং উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকায় প্রাধান্য দেখা যায়।
মতাদর্শ বা মাজহাবে ইমামে সাফেয়ি -
তৃতীয় মতাদর্শ বা মাজহাবের প্রতিষ্ঠাতা আবু আব্দুল্লাহ মোহাম্মাদ ইবনে ইদ্রিস বা ইমাম শাফেয়ী। তিনি প্যালেস্টাইনের গাঁজা শহরে ৭৬৭ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহন করেন এবং ৮২০ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যবরন করেন। সিরিয়াতে দুই বছর বয়সে বাবার মৃত্যুর ইমাম সাফেয়ি মাতার সাথে মক্কায় বসবাসের উদ্দেশ্য যান। ইমাম সাফেয়ি বানু মোতালিব গোত্রের সদস্য ছিলেন যারা ছিলেন বানু হাসেম গোত্রের মানুষদের নিকট আত্মীয়। বানু হাসেম গোত্রের সদস্য ছিলেন খোদ মহানবী হজরত মোহাম্মাদ (সাঃ) এবং খলিফা আবু আব্বাস। অনেকের মতে ইমাম সাফেয়ির মৃত্যু হয় ইমামে মালিকীর এক অনুসারীর ছুরির আঘাতে আবার অনেকের মতে ইমাম সাফেয়ি দীর্ঘদিন ধরে ভোগা রোগের কারনে মৃত্যবরন করেন। সিরিয়া, দক্ষিণ মিশর, ইয়ামেন, সোমালিয়া, ইন্দোনিশিয়ায় এই মাজহাবের অনুসারিদের প্রাধান্য দেখা যায়।
মতাদর্শ বা মাজহাবে ইমামে আহমেদ ইবনে হাম্বল -
চতুর্থ মতাদর্শ বা মাঝহাবের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম আহমেদ ইবনে হাম্বল। তার জন্ম ৭৮০ খ্রিষ্টাব্দে ইরাকে এবং তিনি মৃত্যবরন করেন ৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দে। মুসলিম বিশ্বে ইমাম আহমদ "শাইখুল ইসলাম" উপাধিতে পরিচিত। ইমাম আহমেদ ইবনে হাম্বল ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতির নির্মম শিকার হয়েছিলেন। হাম্বলির মতবাদ বা মাজহাব সুন্নি সম্প্রদয়ের অন্য তিন মাজহাবের মতো তেমন জনপ্রিয় না হবার মূল কারন হল এই মতবাদ বেশ রক্ষণশীল বা গোঁড়া হিসাবেই পরিচিত। পর্যায়ক্রমে দুই আব্বাসিয় খলিফা খলিফা মামুন এবং মুতসিমের হাতে নির্মমভাবে নির্যাতিত হন ইমাম আহমেদ ইবনে হাম্বল। খলিফা মামুন এবং মুতসিম ছিলেন ইসলামী উপদল মোতজিলা সম্প্রদায়ের অনুসারী যারা প্রমানহীন কোন কিছুকেই চূড়ান্ত বলে বিশ্বাস করতেন না। উভয় আব্বাসিয় খলিফা, ইমাম আহমেদ ইবনে হাম্বলকে মোতজিলা মতবাদ মেনে নিতে নির্দেশ দেন কিন্তু ইমাম তা মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় তাই তিনি আব্বাসিয় খালিফাদের দ্বারা দণ্ডপ্রাপ্ত হন। ইমাম আহমেদ ইবনে হাম্বলের জীবিতকালে তার মতাদর্শ প্রতিষ্ঠিত না হলেও তার মৃত্যুর পরে ওয়াহাবি মতবাদ প্রতিষ্ঠিত হবার পরে থেকে তার মাজহাবের বা অনুসারীদের বেশ কদর বেড়ে যায় এবং তার অনুসারীরাই মূলত এই মতবাদের বা মাজহাবের মর্যাদায় উন্নীত করে।
************ আমার আগামী লেখাগুলিতে, আমি ইসলামের ৭৩ উপদলের বিশ্বাসের মতভেদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করবো। অনেক ধর্মবিশারদ বলে থাকেন, মাজহাব যারা মানে তারা কোন সমস্যা না; মাজহাব যারা মানে না তারাও কোন সমস্যা না; সমস্যা তারাই যারা এসব নিয়ে বিরোধকে উস্কে দেয়। কাজেই, আমি আমার বইতে কোন মাজহাবের পক্ষে বা বিপক্ষে কোন ব্যাক্তিগত মন্তব্য করতে সম্পূর্ণভাবে অপারগ। এই ব্লগ লেখার উদ্দেশ্য আমার মাজহাব সম্পর্কিত জ্ঞানকে সবার মাঝে বিলিয়ে দেওয়া - ভালো মন্দের বিচারের ভার পাঠকদের হাতেই ন্যাস্ত থাকলো। (চলবে) ************
♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥
এই ব্লগের যে কোন অংশ লেখকের লিখিত অনুমতি ব্যাতিত ছাপানো কিংবা ব্যাবহার করা কিংবা কোন মাধ্যমে রূপান্তর করা আইনানুগ নিষেধের আওতায় পড়ে। ------------------ লেখক " আরশিনগরের পড়শি "
♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥
__._,_.___