Banner Advertiser

Saturday, November 22, 2014

[mukto-mona] জামায়াতের মুনাফেকি শুধু রাজনীতিতে নয়, ব্যক্তি জীবনেও



রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০১৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪২১


জামায়াতের মুনাফেকি শুধু রাজনীতিতে নয়, ব্যক্তি জীবনেও
জনকণ্ঠ রিপোর্টার ॥ জামায়াতের সাবেক আমীর ঘাতককুল শিরোমনি গোলাম আযম তার 'শিক্ষাব্যবস্থায় ইসলামী রূপরেখা' বইয়ে লিখেছেন, ইংরেজ প্রবর্তিত আধুনিক শিক্ষাই যদি আদর্শ শিক্ষা বলে প্রচারিত হয় তাহলে এ শিক্ষার ফল দেখে কোনো ইসলামপন্থী লোকই সন্তুষ্টচিত্তে এ ধরনের শিক্ষাকে সমর্থন করতে পারে না। পাশ্চাত্য মতাদর্শে বিশ্বাসীরা মানুষকে অন্যান্য পশুর ন্যায় গড়ে তুলবার উপযোগী শিক্ষাপদ্ধতির প্রচলন করেছেন। এ শিক্ষা দ্বারা মনুষ্যত্বের বিকাশ অসম্ভব। আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের গোটা পরিবেশ একেবারেই ইসলামবিরোধী। 'আধুনিক শিক্ষাকে এভাবে গাল দিয়েই গোলাম আযম মাদ্রাসা শিক্ষায় জীবন গড়তে নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। কিন্তু তিনি নিজে তার সন্তানদের মাদ্রাসার ধারে কাছেও আনেননি। এই লোকই আবার আরেক বইয়ে বলেছেন, 'আমি আমার ছেলেদের মাদ্রাসায় দেইনি এজন্য যে, আমি তাদের যোগ্য বানাতে চাই'। 
কেবল গোলাম আযমই নয়, পবিত্র ধর্মের মুখোশ পরে এভাবেই প্রতিষ্ঠার পর থেকে নির্বিঘেœ রাজনৈতিক ফায়দা লুটে যাচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধী উগ্রবাদী গোষ্ঠী জামায়াতের শীর্ষ নেতারা। মাদ্রাসা শিক্ষার বাইরে গিয়ে নিজেদের সন্তানদের যেমন তৈরি করেছেন সেই পাশ্চাত্য শিক্ষাতেই অন্যদিকে পরিবারের কেউই নেই ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গেও। অথচ সাধারণ নেতাকর্মীদের মাদ্রাসা শিক্ষা ও ইসলাম রক্ষার কথা বলে প্রয়োজনে জীবন দেয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করে নিজেরা ফায়দা লুটে চলেছেন যুগের পর যুগ। ধর্মের মুখোশের আড়ালে জামায়াতের আসল চরিত্রের কথা তুলে ধরেছেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেমরাও। সাধারণ মুসল্লিদের ব্যবহার করে জামায়াতের এ ধরনের অপকর্মকে ইসলাম বিরোধী কর্মকা- হিসাবে অভিহিত করেছেন বিভিন্ন ইসলামীপন্থী নেতা, ইসলামী চিন্তাবিদ ও ওলামা মাশায়েকরা। যেখানে উপমহাদেশের প্রখ্যাত সব আলেমদের প্রায় প্রত্যেকেই জামায়াতকে অভিহিত করেছেন ইসলামের অপব্যখ্যাকারী বিভ্রান্তকারী গোষ্ঠী হিসাবে। ইসলামের দুর্নামের জন্য দায়ী করে অনেকেই জামায়াতকে ইসলামের শত্রু হিসবে অভিহিত করেছেন। 
প্রতিষ্ঠা থেকেই ধর্মকে ব্যবহার করে অপকর্ম, দেশদ্রোহিতা : উগ্র মৌলবাদী এই দলটির ইতিহাস খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে, ১৯৪১ সালের ২৬ আগস্ট ভারতের হায়দারাবাদে প্রতিষ্ঠা হয় আজকের এই জামায়াতে ইসলামী। মাওলানা আবু আলা মওদুদীর প্রতিষ্ঠিত এই দলের নাম ছিল 'জামায়াতে ইসলামী হিন্দ'। বৃটিশদের বিরুদ্ধে ভারতের স্বাধীনতা যখন প্রায় নিশ্চিত ঠিক সেই সময়ও এই মওদুদী বলেছিলেন, ভারতের স্বাধীনতার চেয়ে এই মুহূর্তে বেশি জরুরী হলো এখানে হুকুমতের আইন প্রতিষ্ঠা করা। স্বাধীনতার কয়েকদিন আগে ১৯৪৭ সালের এপ্রিল মাসে পাটনায় জামায়াতের সম্মেলন করেন মওদুদী। আগস্টে স্বাধীনতার পর মওদুদী পাকিস্তানের লাহোরে একটি বস্তিকে 'দারুল ইসলাম' ঘোষণা করে সেখানে অবস্থান নিতে থাকেন। এখান থেকেই দল পরিচালনা করে উগ্রবাদী সব বইপুস্তক প্রকাশ করেন। '৬২ সাল পর্যন্ত অন্তত ১০০ প্রবন্ধে মওদুদী বলেন, 'পার্লমেন্টে মহিলা সদস্য আসন নাজায়েজ। অথচ ওই বছরেই ফাতেমা জিন্নার পক্ষে নির্বাচনে তার সঙ্গে কাজ করেন জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পূর্ব পাকিস্তানে জামায়াত শাখার আহ্বায়ক করা হয় খুররম জাহ মুরাদকে। মাওলানা আব্দুর রহীম, ব্যারিস্টার কোরবান আলী ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক। আব্দুর রহীম কারমাইকেল কলেজ থেকে জামায়াতের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়ে আসেন গোলাম আযমকে। পরবর্তীতে পূর্ণঙ্গ কমিটি গঠন করে কাজ শুরু করে দলটি। আইযুব খান প্রণিত মুসলিম পরিবার অধ্যাদেশের বিরোধিতা করার কারণে ১৯৬৪ সালের ৪ জানুয়ারি জামায়াতের কর্মকা-ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তবে ওই বছরেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় সরকার। 
৬৬ তে আওয়ামী লীগের ছয় দফার তীব্র বিারোধিতা করে জামায়াত। '৭০-এর নির্বাচনে জামায়াত পশ্চিম পাকিস্তানে ৪টি আসনে জয়লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধের মধ্যেই ১৯৭১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ডাঃ আব্দুল মালিককে গবর্নর করে যে প্রাদেশিক সরকার গঠন করা হয়েছিল তাতে শিক্ষামন্ত্রী হয়ে আসেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর আব্বাস আলী খান। একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাক সেনাবাহিনীকে সাহায্য করতে রাজাকার, আলবদর, আলশামসসহ বিভিন্ন বাহিনী গঠন করে জামায়াত চালায় গণহত্যা। ১০ এপ্রিল পাকিস্তানের অখ-তা রক্ষার ঘোষণা দিয়ে গঠন করা হয় 'শান্তি কমিটি'। মুক্তিযুদ্ধের পর ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ হলে জামায়াত নিষিদ্ধ হয়। আত্মগোপন করে গণহত্যার নায়ক জামায়াত নেতারা। '৭৫-এ জাতির পিতার হত্যার পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আশীর্বাদে ফিরে আসে যুদ্ধাপরাধীদের দল। 
১৯৭৬ সালের আগস্টে জিয়া বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে তাদের রাজনীতি উন্মুক্ত করে দেয়। এ সময় ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগের (আইডিএল) হয়ে কাজ চালায় জামায়াত। ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে কয়েকটি পদে জয়লাভ করে আইডিএল। এই নেতাদের মধ্যে ছিলেন আব্দুর রহিম, সিদ্দিকুর আহমেদসহ অন্যরা। ওই বছরই জিয়াউর রহমানের বদৌলতে গোলাম আযম বাংলাদেশে ফিরে এলে আইডিএল ভেঙ্গে স্বাধীন বাংলাদেশে গঠিত হয় 'জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ।' যার ভারপ্রাপ্ত আমীর হন একাত্তরের ঘাতক আব্বাস আলী খান। দলে আসেন একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধী সকল জামায়াত নেতাই। এদের মধ্যে যারা জীবিত আছেন তারাই এখন জামায়াতের শীর্ষ নেতা। সাংবিধানিকভাবে বৈধ হওয়ার আশায় দুই বছর আগে গঠনতন্ত্র সংশোধন জামায়াতে ইমলামী বাংলাদেশ নাম পাল্টে ধারণ করে ' বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী'। 
মাদ্রাসা শিক্ষা ও ইসলামী আন্দোলনে নেই জামায়াতীদের পরিবারের কেউ ॥ বাংলাদেশ ও বিদেশের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থাকে 'নাস্তিকদের শিক্ষা' হিসেবে প্রচার করে থাকে জামায়াত। আধুনিক শিক্ষার বিপরীতে দলটি মাদ্রাসা শিক্ষার পক্ষে জোর দাবি জানিয়ে আসছে বহুকাল থেকে। কিন্তু এ দলের শীর্ষ নেতাদের সন্তানরা কেউ মাদ্রাসায় পড়ে না। অথচ দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিজেদের পরিচালিত মাদ্রাসার দিকে ঠেলে দেয় জামায়াত। সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দলটি এ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের এক সময় টেনে নেয় দলে। গরিব ঘরের এই মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদেরই পরে হরতাল, পিকেটিংয়ের সময় পুলিশের গুলির সামনে ঠেলে দেয়া হয়। জামায়াতের মূল নেতৃত্বে যাঁরা আছেন তাঁদের সন্তানরা পড়াশোনা করে প্রচলিত, আধুনিক ও তাঁদের ভাষায় 'নাস্তিক ও ইসলাম বিরোধীদের' শিক্ষাঙ্গনে। সাধারণ নেতাকর্মীদের মাদ্রাসা শিক্ষা ও ইসলাম রক্ষার কথা বলে প্রয়োজনে জীবন দেয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করলেও শীর্ষ জামায়াত নেতাদের পরিবারে ইসলাম বিরোধী কর্মকা-ের ভূরি ভূরি অভিযোগ আছে। খোদ জামায়াত-শিবিরের মাঠ পর্যায়ের একটি বৃহৎ অংশ গেল বছর এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছেন জামায়াত নেতাদের। ফাঁস করে দিয়েছিলেন জামায়াত নেতা ও তাদের স্ত্রী, সন্তানদের ইসলাম বিরোধী কর্মকা-ের তথ্য প্রমাণ। এ নিয়ে এখনো অসন্তোষ আছে জামায়াত-শিবিরের সাধারণ নেতাকর্মী-সমর্থকদের মাঝে। জামায়াতের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলছে দেশের অন্যান্য ইসলামী দলগুলোও। সাধারণ মুসল্লিদের ব্যবহার করে জামায়াতের এ ধরনের অপকর্মকে ইসলাম বিরোধী কর্মকা- হিসাবে অভিহিত করেছেন বিভিন্ন ইসলামপন্থী নেতা, ইসলামী চিন্তাবিদ ও ওলামা মাশায়েকরা। জানা গেছে, শীর্ষ জামায়াত নেতাদের পরিবারে মাদ্রাসা শিক্ষার বিপরীতে পাশ্চাত্যের কর্মকা- চলা নিয়ে অসন্তোষ আছে সাধারণ কর্মীদের। শিবিরের একটি বৃহত অংশ ২০১২ সালে এসব অভিযোগ তুলে শোরগোল পাকিয়ে ফেলেছিল। সাধারণ কর্মীরা বলছেন, সাধারণ মুসল্লি ও কর্মীদের ইসলামের পথে চলা আর সৎ মানুষ হওয়ার কথা বললেও জামায়াত নেতাদের পরিবার চলে ইসলামের বিরুদ্ধে। এই মুহূর্তে নেতাদের জীবন রক্ষায় সারাদেশের হাজার হাজার কর্মী জীবন দিয়ে লড়ছেন, কিন্তু কোথাও শীর্ষ নেতা ও তাদের সন্তানরা নেই। তারা হয় বিদেশী শিক্ষা গ্রহণে নয়তো দেশে আরাম-আয়েশ করে বেড়াচ্ছেন। কর্মীদের ইসলামী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার স্বপ্ন দেখানো এমনকি জীবন দেয়ার কথা বললেও জামায়াতের আমীর নিজামী থেকে শুরু করে কোন নেতাই নিজেদের পরিবারে সেই স্বপ্ন দেখেন না। 
২০১২ সালে 'সেভ শিবির'-এর ব্যানারে শিবিরের মাঠ পর্যায়ের সাধারণ কর্মীরা তথ্য প্রমাণসহ অভিযোগ এনে বলেছিলেন, 'জামায়াত এবং শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতারা আমাদের ইসলামের কথা বলেন, ভাল মানুষ হিসাবে চলতে বলেন। এতে আমরা উজ্জীবিত হই, ইসলামের পক্ষে জীবন উৎসর্গ করতে উজ্জীবিত হই, কিন্তু আমাদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা হলো, এই জামায়াত নেতাদের পরিবারে তাদের সন্তানরা কেউ ইসলামের পথে নেই। কেউ শিবির করে এই পথে আছেন তার খবর নেই। জামায়াত সব সময়ই দাবি করে তাদের মূল লক্ষ্য হলো ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা। ইসলামী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কিরূপ হওয়া উচিত সেই বিষয়ে কথা বলেন নেতারা। সাধারণ কর্মীদের তারা বলেন, এ দেশে প্রচলিত শিক্ষা পদ্ধতি যেটি তাদের ভাষায় আধুনিক শিক্ষা, এই আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতির বিরুদ্ধেই তাদের অবস্থান। 
জামায়াতের সাবেক আমীর ঘাতককুল শিরোমনি গোলাম আযম তার 'শিক্ষাব্যবস্থায় ইসলামী রূপরেখা' বইয়ের ৭ নম্বর পৃষ্ঠায় লিখেছেন, 'ইংরেজ প্রবর্তিত আধুনিক শিক্ষাই যদি আদর্শ শিক্ষা বলে প্রচারিত হয় তাহলে এ শিক্ষার ফল দেখে কোনো ইসলামপন্থী লোকই সন্তুষ্টচিত্তে এ ধরনের শিক্ষাকে সমর্থন করতে পারে না।' বলেছেন, 'পাশ্চাত্য মতাদর্শে বিশ্বাসীরা মানুষকে অন্যান্য পশুর ন্যায় গড়ে তুলবার উপযোগী শিক্ষাপদ্ধতির প্রচলন করেছেন। এ শিক্ষা দ্বারা মনুষ্যত্বের বিকাশ অসম্ভব।' ২১ নম্বর পৃষ্ঠায় বলেছেন, 'আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের গোটা পরিবেশ একেবারেই ইসলামবিরোধী।' কিন্তু বাস্তবতা হলো- তিনি তার সন্তানদের মাদ্রাসার কাছেও আনেননি কোনদিন। 
গোলাম আযমের ছয় ছেলে। একজন আব্দুল্লাহহিল মামুন আল আযমী খিলগাঁও গবর্নমেন্ট স্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার থেকে অর্থনীতিতে এমএ করেছেন। আব্দুল্লাহ হিল আমিন আল আযমী খিলগাঁও গবর্নমেন্ট স্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকা কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় বাংলাদেশ স্বাধীন হলে দেশত্যাগ করেন এবং লন্ডনে নিটিং ফ্যাক্টরিতে কাজ শুরু করেন। আব্দুল্লাহ হিল মোমেন আল আযমী সিদ্ধেশ্বরী স্কুল থেকে এসএসসি, হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজ থেকে এইচএসসি ও একই কলেজ থেকে বিকম পাস করেছেন। আব্দুল্লাহ হিল আমান আল আযমী- ১৯৭৫ সালে সিলেট সরকারি অগ্রগামী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় বিভাগে এসএসসি, ঢাকা সেন্ট্রাল কলেজ থেকে তৃতীয় বিভাগে এইচএসসি পাস। এরপর ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন (সবার জন্য নির্ধারিত তারিখের একমাস পর তিনি মিলিটারি একাডেমিতে যোগদান করেন)। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণী পাওয়া একজন অতি সাধারণ ছাত্র জিয়ার সময় সেনাবাহিনীতে কিভাবে কমিশন পেলেন সে প্রশ্ন আছে। ২০০৯ সালে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে কর্মরত অবস্থায় বরখাস্ত হয়। আব্দুল্লাহ হিল নোমান আল আযমী- ঢাকা গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনায় অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন। সবশেষে আব্দুল্লাহ হিল সালমান আল আযমী- মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজীতে অনার্সে ভর্তি হয়েছিলেন কিন্তু শেষ করতে পারেননি। এরপর আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স এবং মাস্টার্স করেন।
জামায়েতের আমীর মতিউর রহমান নিজামীর পরিবারের কথা তুলে ধরে শিবিরের একটি বিক্ষুব্ধ অংশ একবার বলেছিল, নিজামীর পরিবার দেখেই বোঝা যাবে তারা নিজেরা কতোটা ইসলামের পথে হাঁটেন? বলা হয়েছে, নিজামীর স্ত্রী সামসুন্নাহার নিজামী এককভাবে ইসলামী ছাত্রী সংস্থা এবং মহিলা জামায়াতকে নিয়ন্ত্রণ করেন, যা স¤পূর্ণ ইসলাম ও গঠনতন্ত্র বিারোধী কাজ। 'সেভ শিবির'-এর ব্যানারে শিবির কর্মীরা বলছে, এই মহিলা (নিজামীর স্ত্রী) মানারাত ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অধ্যক্ষ ছিলেন। সেখানে অনেক টাকার হিসেব দিতে পারেননি। তার পরেও স্বামীর দাপটে কিছুদিন পদে টিকে থাকালেও এক সময় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে নিজেই একটা স্কুল খুলেছেন। কিন্তু স্কুল করার সব টাকা নেয়া হয়েছে জামায়াতের কর্মীদের কষ্ট করে জমানো ফান্ড থেকে। যা চরম অপরাধ। নিজামীর বড় ছেলে তারেকের কর্মকা- তুলে ধরে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়া ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় নাইট ক্লাব, বার থেকে শুরু করে সব আজেবাজে জায়গাই ছিল তার মূল কাজ। বাংলাদেশে এসে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষক হিসাবে যখন কাজ করেছিলেন তখনো তার বিরুদ্ধে ওঠে ছাত্রীদের সঙ্গে অসামাজিক কাজ করার অভিযোগ। নিজামী অন্যদের বললেও এই ছেলেকে কখনই ছাত্র শিবিরের কোন কাজেই আসতে দেখা যায়নি। নিজামীর অন্য সব ছেলে-মেয়েরাও কেউ ইসলামী আন্দোলনে নেই। নেই মাদ্রাসা শিক্ষায়ও।
সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহশান মুহাম্মদ মুজাহিদের তিন ছেলে ও এক মেয়ে। কর্মীদের ইসলামের পথে চলে সৎ মানুষ হওয়ার কথা বললেও এই জামায়াত নেতার পরিবার চলছে তাদের বলা ইসলামবিরোধী পথেই। মুজাহিদের বড় ছেলে তাজদিদ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় মুজাহিদের পরামর্শে সেই শিবিরকে দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীর ওপর নির্যাতন চালিয়েছিল। তাকে মানুষরূপী শয়তান অভিহিত করে শিবিরের একটি অংশ একবার বলেছিল, অনেক মেয়ের সঙ্গে অসামাজিক কাজে জড়িয়ে থাকার অভিযোগ আছে জামায়াত নেতাদের কাছেও। জামায়াত শিবিরের সাধারণ নেতাকর্মী সুযোগ না পেলেও মুজাহিদ তার এই ছেলেকে অস্ট্রেলিয়ায় পড়ালেখা করতে পাঠিয়েছেন জামায়াতের টাকায়। তাহ্কিক মুজাহিদের দ্বিতীয় ছেলে। মেয়েদের সঙ্গে যার রয়েছে অসামাজিক কাজের নানা অভিয়োগ। এক মেয়েকে নিয়ে মগবাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় তার অবৈধ জীবনযাপনের ঘটনা জানেন জামায়াত-শিবিরের অকেকেই। ছোট ছেলে মাবরুরই মুজাহিদের সব অপকর্মের হোতা। অভিযোগ আছে, জামায়াত নেতা যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসি হওয়া কাদের মোল্লার এক ছেলে মাবরুরের বন্ধু। এই দুজন গাঁজা, মদসহ নানা নেশায় জড়িয়ে স্কুল জীবন থেকে। মুজাহিদের মেয়ে তামরিনা ভিকারুননিসা স্কুল ও কলেজ থেকে এসএসসি এবং এইচএসসি, আল মানারাত ইউনিভার্সিটিতে ইংলিশে অনার্স করেছেন। 
কাদের মোল্লার স্ত্রীর তথ্য তুলে ধরে শিবিরের এক অভিযোগনামায় একবার বলা হয়েছিল, তার স্ত্রী বেগম সানওয়ার জাহান জামায়াতের রোকন হলেও আমিরের স্ত্রী সামসুন্নাহান নিজামীর সকল অপকর্মের সহযোগী। নিয়মের কথা বললেও মহিলা জামায়াত এবং ইসলামী ছাত্রী সংস্থাকে এরা দুজন ক্ষমতার জোরে অসাংবিধানিকভাবে পরিচালনা করছে। মোল্লার বড় ছেলের নাম জামিল। মগবাজারের হোটেলগুলোতে অনৈসলামিক সব অপকর্মের নায়ক এই জামিল। স্কুল জীবন থেকেই সে করছে এই অপকর্ম। আবুজর গিফারী কলেজে পড়ার সময় এই ঘটনা ছাড়াও গাঁজা খাওয়ার সময় কয়েকবার পুলিশের হাতে আটক হলেছিল। শিবিরের কর্মীদের ইসলামী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে জীবন দেয়ার আহ্বান জানালেও মোল্লার এই সন্তানকে এই স্বপ্ন দেখান না। ছোট ছেলের নাম মওদুদ। মালয়েশিয়ায় ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে পড়ে। কিন্তু বিয়ে না করেই তার এক বান্ধবীর সঙ্গে লিভ টুগেদার করছে দিনের পর দিন এমন অভিযোগ উঠেছে জামায়াতের ভেতর থেকেই। তাদের অপকর্মের ছবিও বহুবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। 
আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান। ফাঁসির অপেক্ষায় থাকা এ যুদ্ধাপরাধীর পাঁচ ছেলে এক মেয়ে। প্রথম ছেলে হাসান ইকবাল ওয়ামী এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেছে ন্যাশনাল ব্যাংক স্কুল ও কলেজ থেকে। ইসলামী ইউনিভার্সিটি থেকে মিডিয়া এ্যান্ড ম্যাস কমিউনিকেশনে অনার্স ও মাাস্টার্স করেছেন। এই ছেলে সামহোয়ারইনের ব্লগার। হাসান ইকরাম ওয়ালী এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেছে ন্যাশনাল ব্যাংক স্কুল ও কলেজ থেকে। হাসান জামান সাফি এসএসসি ও এইচএসসি ন্যাশনাল ব্যাংক স্কুল থেকে, অনার্স পাস করেছে মাল্টিমিডিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে। হাসান ইমাম ওয়াফী এসএসসি ও এইচএসসি ন্যাশনাল ব্যাংক স্কুল থেকে পাস করে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ করেছে। আহম্মদ হাসান জামান 'এ' লেভেল পরীক্ষা দিয়েছে একাডেমিয়া ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল থেকে। মেয়ে আতিয়া নুর মিরপুর লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে পড়ে। 
যুদ্ধাপরাধের দায়ে আটক আরেক নেতা মির কাসেম আলীর দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। এক ছেলে মোহাম্মদ বিন কাসেম (সালমান) আল মানারাত ইংরেজী মিডিয়াম থেকে এ লেভেল এবং ও লেভেল করেছে। এরপর পাকিস্তান ডেন্টাল কলেজে পড়েছে। আরেক ছেলে মির আহমেদ বিন কাসেম (আরমান) আল মানারাত থেকে এ লেভেল এবং ও লেভেল করেছে। এরপর লন্ডনে বার এ্যাট ল সম্পন্ন করেছে। মেয়ে হাসিনা তাইয়্যেবা অনার্স এবং মাস্টার্স করেছে হোম ইকোনমিক্স কলেজ থেকে। সুমাইয়া রাবেয়া আল মানারাতে স্কুল ও কলেজ থেকে এ লেভেল এবং ও লেভেল সম্পন্ন করার পর আল মানারাত ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ করেছে । আরেক মেয়ে তাহেরা হাসনিন আল মানারাতে এ লেভেলে পড়েছে। এই হচ্ছে জামায়াত নেতাদের পরিবারে মাদ্রাসা ও ইসলামী শিক্ষা চর্চার চিত্র। অথচ এরাই হাজার হাজার কর্মী ও সাধারণ মুসল্লির কাছে নিজেদের ইসলামের আসল লোক বলে জাহির করছে বছরের পর বছর। 
২০১২ সালে যখন শিবিরে ব্যাপক বিদ্রোহ তখন শিবিরের বিদেশে থাকা একটি পক্ষ থেকে ধারাবাহিকভাবে জামায়াত নেতাদের পরিবারে ইসলামের ব্যবহার সম্পর্কে তথ্য প্রকাশের ঘোষণা দিয়ে জামায়াত নেতাদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছিল 'আপনাদের এটা মনে রাখা উচিত যে, নিজের পরিবারে ইসলামের সঠিক শিক্ষা দিতে পারলেই কেবল অন্যদের সেই শিক্ষা দেয়ার কথা বলা যায়। নিজের পরিবার ইসলামী আন্দোলনে থাকলেই কেবল অন্যদের এই আন্দোলনে ডাকা যায়, আনা যায়।' 
জামায়াত-শিবির, মওদুদী সম্পর্কে উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেমরা ॥ ধর্মের মুখোশ পড়া জামায়াতের আসল চরিত্রের কথা দিনের পর দিন তুলে ধরেছেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেমগণ। আলেমদের প্রায় প্রত্যেকেই জামায়াতকে অভিহিত করেছেন ইসলামের অপব্যাখ্যাকারী, বিভ্রান্তকারী গোষ্ঠী, ইসলামের শত্রু হিসেবে।
মুফতীয়ে আজম মাওলানা ফয়জুল্লাহ (রহ.) এক লিখিত বক্তব্যে বলেছিলেন, মওদুদী ফাসেকি চিন্তাধারা ও ফাসেকি আকিদাসম্পন্ন এক ব্যক্তি। তার লেখনী ও বক্তৃতার মধ্যে শুধু সলফে সালেহীন, সাহাবায়ে কিরাম, তাবেঈন, আইম্মায়ে মুজতাহিদীন, আওলিয়ায়ে কিরামদের সম্পর্কে অত্যন্ত বাজে কথা আছে। এ কারণে তাদের থেকে দূরে থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা ফাসেক। আর ফাসেকের পেছনে নামাজ আদায় করা মাকরুহে তাহরিমী। এই মন্তব্যে স্বাক্ষর করেছিলেন মাওলানা আব্দুল ওয়াহাব, মাওলানা আব্দুর রহমান, মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক, মাওলানা শামসুল হক, মাওলানা আব্দুল হামিদ, মাওলানা আব্দুল জলিলসহ আলেম সমাজের অনেকেই। 
বাংলাদেশ ওলামা-মাশায়েখ সংহতি পরিষদের চেয়ারম্যান ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বহুবার বলেছেন, মওদুদী জামায়াতের মতাদর্শগত ভ্রষ্টতা, নিছক রাজনৈতিক নয় বরং ইসলামের মৌল আকিদাগত। তাদের অতীত ইতিহাস সাক্ষী দেয় এরাই উগ্র জঙ্গীবাদের স্রষ্টা, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের লালনকারী; তাই মওদুদীপন্থী জামায়াত-শিবির ইসলামী দল নয়, ওরা ভ-। তিনি '৭১ সালে জামায়াতে ইসলামের ভূমিকা টেনে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াত আলবদর, আলশামস নামে সংগঠনের মাধ্যমে কিছু কুলাঙ্গারকে নিয়ে হত্যা, লুন্ঠন, ধর্ষণ এবং জ্বালাও পোড়াওয়ের মতো যুদ্ধাপরাধে লিপ্ত ছিল। তিনি এ সকল মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত সকলকে বিচারের দাবি জানান। ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী শুধু যুদ্ধপরাধীই নয়, তারা ইসলামের শত্রু। 
আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী (রহ.) দীর্ঘদিন জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। হাজার হাজার লোক তার দেখাদেখি জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেছিলেন। অতঃপর জামায়াত-শিবিরের প্রকৃত রূপ তার সামনে উন্মোচিত হয়। তিনি জাতিকে মওদুদী ফিতনার ভয়াবহতা থেকে সতর্ক করার জন্য অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত ও প্রামাণ্য গ্রন্থ 'ভুল সংশোধন' রচনা করেন। তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত জামায়াত তাদের স্বীয় অপকর্ম স্বীকার না করেন, ততক্ষণ পর্যন্ত কোন মুসলমানের জামায়াতে যোগদান করা জায়েজ হবে না। 
বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের প্রাক্তন খতিব মাওলানা মুফতি আব্দুল মুয়ীজ (রহ.) তার বহু লেখায় বলেছেন, মওদুদী প্রকৃতপক্ষে কোন আলেম নন। কোরান ও হাদিস সম্পর্কে কোন সঠিক জ্ঞান তার নেই। দীনের অপব্যাখ্যা করে মুসলিম সমাজকে গোমরাহ করাই তার মূল লক্ষ্য। তার প্রবর্তিত ফিতনা থেকে দূরে থাকা সকল মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব। 
আজকের হেফাজতের আমির ২০০৩ সালের ৯ অক্টোবর বলেছিলেন, জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে আমাদের বিরোধ কোন রাজনৈতিক বিরোধ নয়, এই বিরোধ আকিদাগত। এতে বিশ্বের সকল হক্কানি আলেম একমত। 
চট্টগ্রাম জিরি মাদ্রাসার আল্লামা নূরুল হক 'মওদুদীর তাফসির ও চিন্তাধারা' বইয়ে বলেছেন, মওদুদীবাদ ভ্রান্ত হওয়ার দিক দিয়ে উল্লেখযোগ্য একটি ফেরকা। ইসলামের মুখোশ পড়ার কারণে সাধারণ মানুষ তাদের দলে চলে যাচ্ছে। আল্লামা হাফেজ্জী হুজুর (রহ.) মওদুদী মতবাদ এবং জামায়াত-শিবির সম্পর্কে 'সতর্ক বাণী' শিরোনামে একটি বই লেখেন। তাতে তিনি মওদুদীর ভ্রান্ত মতবাদ ও জামায়াতে ইসলামীকে মুসলমানদের ঈমান ও ধর্মবিশ্বাস ধ্বংসকারী ফিতনা হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি মুসলমানদের ইসলামের মুখোশধারী এই দল থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানান। হাফেজ্জী হুজুরের (রহ.) এই পুস্তকে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় চার শতাধিক আলেম অভিন্ন মত প্রকাশ করে স্বাক্ষর করেছিলেন।

প্রকাশ : রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০১৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪২






__._,_.___

Posted by: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___