প্রেমিকের আহবানে এসে কারাভোগ॥ ভারতে ফিরে গেলেন পম্পা রানী
২৯ ডিসেম্বর ২০১৪, সোমবার, ৩:৪৮
গত ৭ জুন কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের সীমান্ত-সংলগ্ন ধর্মদহ গ্রামের খেজু মালিথার ছেলে আমজাদ আলীর সাথে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার করিমপুর থানার শিকারপুর কুঠিপাড়ার অসিত কুমার মন্ডলের মেয়ে পম্পা রানী মন্ডলের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের গড়ে উঠে। এর কিছুদিন পর ভারতের শিকারপুর দেবনাথ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী পম্পা রানী মন্ডল নদীতে গোসল করতে নেমে নদীর ওপার ভারত ভূ-খন্ড থেকে চলে আসেন এপারে বাংলাদেশ ভূ-খন্ডে । তারপর আমজাদ আলীর সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর মাসখানেক তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় বেড়িয়ে বেড়ান।
এ ব্যাপারে ভারতে পম্পা রানীর ভাই া সেখানকার থানায় একটি অপহরণের মামলা করেন। এ বিষয় কুষ্টিয়া দৌলতপুর থানায় জানানো হলে গত ৭ জুন খবর পেয়ে কুষ্টিয়া দৌলতপুর থানা পুলিশ অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করা এবং পাসপোর্ট আইনে পম্পা রাণী মন্ডলকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে তাকে কুষ্টিয়া কারাগারে পাঠানো হয়। কুষ্টিয়ার আদালত তাকে ১৫ দিনের কারাদন্ডাদেশ দেয়। সেই থেকে পম্পারাণী কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে অন্তরীণ ছিলেন। নানা প্রশাসনিক জটিলতায় পম্পার ভারতে ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। পম্পা রানীকে তার দেশে ফেরতের ব্যাপারে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বিশেষভাবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগযোগ করে চেষ্টা চালান। নভেম্বর মাসের ৭ তারিখে পম্পা রানীর দেশে ফেরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলে ওই দিনই বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ তাকে দেশে পাঠানোর জন্য তাকে নিয়ে দর্শনা সীমান্তে অপেক্ষা করেছিল। কিন্তু ভারত সীমান্তে তার পরিবারের কেউ না পৌছলে সেদিন তার দেশে ফেরা হয়নি। ফলে আবার কুষ্টিয়ার কারাগারে ফেরত আসেন তিনি। গত সপ্তাহে ভারতে অনুষ্ঠিত আন্তঃসীমান্ত বৈঠকে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক পশ্চিমবংগের নদীয়া জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে বৈঠককালে পম্পা রানীর দেশে ফেরার বিষয়ে সেখানকার ডিএমকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানান। এরপর রবিবার পম্পা রানীর ভারতে ফেরত যাওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত করে নদীয়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের কাছে একটি ফ্যাক্সবার্তা পৌছালে তার দেশে ফেরার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়।
সোমবার সকালে কুষ্টিয়া কারাগার থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে পম্পারানী জানান, প্রেমিকের আহবানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশে এসে তাকে বিয়ে করেছিলাম। কিন্তু আমার ভাইয়েরা এবিষয়ে মামলা দায়ের করায় বিষয়টি আইনগত জটিলতার মধ্য পড়ে যায়। পরে আমার ১৫ দিনের সাজা হয়। কুষ্টিয়া কারাগারে ছয় মাস অবস্থান করেছিলাম। কারা কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসন আমাকে যথেষ্ট সম্মানের সাথে দেখেছে। আমার দেশে ফেরার বিষয়ে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক এবং জেল কর্তৃপক্ষ খুবই আন্তরিকতার পরিচয় দিয়েছে। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আজ নিজ দেশে ফিরে যেতে পারায় খুবই ভালো লাগছে।
বিয়ে করতে সীমান্ত পার, জেল খেটে ভারতে ফেরত
__._,_.___