রাজনীতির নামে নাশকতা কি অপরাধ নয়
ডা. ওয়াহিদ নবি
বেগম জিয়া চলমান অবরোধের ডাক দিয়েছিলেন বর্তমান সরকারকে তার ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করার জন্য। উদ্দেশ্যটা শতকরা ১০০ ভাগ রাজনৈতিক। আরো সঠিকভাবে বলতে গেলে বলতে হয় যে, এই রাজনীতি ক্ষমতা দখল করার রাজনীতি। অবরোধ বলতে সাধারণ মানুষ যা বোঝে তা অবশ্য হচ্ছে না। অবরোধ বলতে সাধারণ মানুষ বোঝে বেষ্টন করে রাখা বা আরো সোজা ভাষায় ঘেরাও করে রাখা। অবরোধের নামে যা হচ্ছে তা হচ্ছে সন্ত্রাস। এই সন্ত্রাসের সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ হচ্ছে অগ্নিকাণ্ড। আর এই অগ্নিকাণ্ডের প্রধান শিকার হচ্ছে যানবাহন। সবচেয়ে অমানবিক দিক হচ্ছে যানবাহনের সঙ্গে সঙ্গে নিরপরাধ মানুষ পুড়ে মরছে। সংবাদমাধ্যমে যে ছবিগুলো আমরা দেখছি, সেগুলো দেখলে শিউরে উঠতে হয়। মনে প্রশ্ন জাগে এসব ছাই হয়ে যাওয়া মানুষের দিকে তাকিয়ে অবরোধের আহ্বানকারীরা কি ভাবছেন? এসব অসহায় মানুষের দগ্ধ দেহ কি তাদের সাফল্য মাপার পরিমাপক? আর সাধারণ মানুষ কি ভাবছে এসব ভস্মীভূত মানবদেহ দেখে? আন্দাজ করি তারা যে কত অসহায় সে কথাই তারা ভাবছে। আর সরকার কি ভাবছে? মনে প্রশ্ন জাগে সরকারের বর্তমান ভাবনা কি গুণগতভাবে সাধারণ মানুষের মতোই অর্থাৎ অসহায়বোধ?
অবশ্য অবরোধের নামে যে শুধু যানবাহন আর মানুষ পুড়ছে তা নয়। পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে বিপথগামীরা, যা পুড়ে পুড়ুক। তাদের কাছে এটা একটা অগ্ন্যুৎসবের মতো। দুর্বৃত্তরা উত্তেজনায় এসব উপভোগ করছে। আপনজনহারা অন্য মানুষের বুকফাটা ক্রন্দন তাদের কর্ণকুহরে প্রবেশ করছে না। ভস্ম হয়ে যাওয়া অন্য মানুষের সারা জীবনের সঞ্চয় তাদের মনে কোনো রেখাপাত করছে না। যাদের আদেশে আর ইঙ্গিতে তারা এসব করছে তাদের মনে নিজেদের ছাড়া অন্য কারোর কথা স্থান পায় না। যারা পুড়ে মরছে তারা রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের আপনজন নয়। যা কিছু পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে, সেগুলো তাদের নিজেদের নয়।
শুধু অগ্নিসংযোগ নয়, সব রকমের ধ্বংসাত্মক কার্য চলছে অবরোধের নামে। ভাঙচুর, বলপ্রয়োগ, বোমা নিক্ষেপ এসব তারা করছে সুযোগ পেলেই। এই যে কর্মগুলো তারা করছে সাধারণভাবে এর সবই আইনের চোখে অপরাধ। এর সবই আইনের চোখে দণ্ডনীয়, কিন্তু কিছুই তাদের হচ্ছে না। কেউই বিচারের সম্মুখীন হয়নি। কেউই দণ্ডিত হয়নি। কেউই শাস্তি পাচ্ছে না। কাজেই সমানে চলছে এই অপকর্ম। এই অপকর্ম শুধু যে দুষ্কর্ম তা-ই নয়, এগুলো আইনের চোখে গুরুতর অপরাধ। আর তাই এগুলো যারা করবে তাদের শাস্তি পাওয়ার কথা; কিন্তু তারা শাস্তি পাচ্ছে না। এর কারণ কি? কারণ হচ্ছে এই যে, এই অপকর্ম করা হচ্ছে রাজনীতির নামে।
রাজনীতির নামে করা হচ্ছে বলে যারা এই অপকর্ম করছে তারা নিজেদের অপরাধী বলে মনে করছে না। তারা অনুশোচনা বোধ করছে না। তারা বরং গর্ববোধ করছে এই ভেবে যে, তারা রাজনীতির জন্য এসব করছে। তারা মনে করছে যে, একটা ভালো আদর্শের জন্য তারা এসব করছে। কেউ কেউ ভাবছে যে নেত্রীর আদেশে তারা এসব করছে এবং নেত্রী তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। কাজেই তিনি জানেন কোনটা করা উচিত আর কোনটা করা উচিত নয়। নেত্রীর আদেশ মতো কাজ করতে ভাবার দরকার কি? সব দায়িত্ব তো নেত্রীর। তাদের তো কোনো দায়িত্ব নেই। মিলগ্রাম এক্সপেরিমেন্টের কথা তো আমরা জানি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা অধ্যাপকের আদেশে মানুষদের মাত্রাতিরিক্ত বিদ্যুৎ দিয়েছিল।
দেখা যাচ্ছে, বিপথগামীরা নিজেদের দায়ী মনে না করলেও কেউ না কেউ দায়ী থাকছেন। আর এক্ষেত্রে দায়ী হচ্ছেন যিনি বা যারা আদেশ দিয়েছেন। নুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনালের কথা মনে করা যাক। যারা দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন তারা কি নিজের হাতে কাউকে মেরেছিলেন? গোয়েরিং বা রবিনট্রপ কি নিজের হাতে কাউকে খুন করেছিলেন? তবে তারা দোষী সাব্যস্ত হয়ে ফাঁসির দড়িতে ঝুললেন কেন? তারা ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলেছিলেন এজন্য যে, যারা এমন নীতি প্রণয়ন করেছিলেন এবং এর ফলে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ফাঁসিকাষ্ঠে যারা ঝুলেছিলেন তাদের আদেশেই নাৎসিরা অগণিত মানুষকে হত্যা করেছিল।
আমরা সাধারণেরা চাই রাজনীতির নামে নৃশংস হত্যাকাণ্ড বন্ধ হোক। গণতান্ত্রিক রাজনীতি যেভাবে চলা উচিত সেভাবে চলুক। আমরা কোনো অজুহাতে সন্তুষ্ট নই। বেগম জিয়া বলতে চান যে, বিএনপিকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য আওয়ামী লীগের কর্মীরাই নাশকতা করছে। এমন কথা বলে নাশকতার ব্যাপারে বিএনপি দায়িত্ব এড়াতে পারে না। আজকাল টিভি ক্যামেরায় আগুন লাগানো দুর্বৃত্তদের ছবি দেখা যায়। আর তাছাড়া এই পরিস্থিতি তাদের কারণেই সৃষ্টি হয়েছে। আমরা যারা আইন বুঝি না তাদের আইন বোঝা মানুষেরা বোঝান যে, বিশৃঙ্খল অবস্থায় নাশকতা হলে সেগুলো আদালতে প্রমাণ করা কঠিন। তবে কি আমাদের মেনে নিতে হবে যে, নাশকতা থামানো যাবে না? তবে কি মেনে নিতে হবে যে, নাশকতা সৃষ্টিকারীরা মানুষ পুড়ে মারতেই থাকবে? তবে কি মেনে নিতে হবে যে, আমাদের রাজনীতি বলপ্রয়োগের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতেই থাকবে?
বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের সহিংস আন্দোলনের কারণ আবার নির্বাচন আদায় করা। তারা তত্ত্ব¡াবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার হলেই যে নিরপেক্ষ হবে এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। বিএনপি নিজেরাই দাবি করে যে, ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিরপেক্ষ ছিল না। ২০০১ সালের নির্বাচনের সময় বিচারপতিদের অবসরের সময়সীমা বাড়ানো নির্বাচনটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার এমন অনেক কাজ করেছে, যেগুলো আইনসম্মত ছিল না। কাজেই একটা অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেয়া অনেকেই পছন্দ করেন না। ২০০৬ সালে যা ঘটেছিল তা ঘটতেই থাকবে ভাবা উচিত নয়। বিএনপি যেভাবে চাইবে সেভাবে নির্বাচন হবে, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। বিদেশিরা আমাদের সব ব্যাপারে নাক গলাবে এটা বিএনপি ভাবতে পারে আর কেউ সেটা চাইবে না। ভারত আর মার্কিন রাজনীতিবিদদের নিয়ে বিএনপি যে মিথ্যাচার করেছে তাতে বিশ্বাস করাই মুশকিল হয়েছে কোনটা তারা সত্য বলছে আর কোনটা তারা মিথ্যা বলছে। সবচেয়ে বড় কথা বিএনপি তো আগে ক্ষমতায় ছিল। তারা সে সময় কি এমন করেছে যে জন্য তাদের ক্ষমতায় আনার জন্য মানুষ হরতাল-অবরোধ পালন করবে?
লেখক: রয়াল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিসের ফেলো- See more at: http://www.manobkantha.com/2015/01/26/209052.html#sthash.WqERzvnx.dpuf
রাজনীতির নামে নাশকতা কি অপরাধ নয়
ডা. ওয়াহিদ নবি
বেগম জিয়া চলমান অবরোধের ডাক দিয়েছিলেন বর্তমান সরকারকে তার ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করার জন্য। উদ্দেশ্যটা শতকরা ১০০ ভাগ রাজনৈতিক। আরো সঠিকভাবে বলতে গেলে বলতে হয় যে, এই রাজনীতি ক্ষমতা দখল করার রাজনীতি। অবরোধ বলতে সাধারণ মানুষ যা বোঝে তা অবশ্য হচ্ছে না। অবরোধ বলতে সাধারণ মানুষ বোঝে বেষ্টন করে রাখা বা আরো সোজা ভাষায় ঘেরাও করে রাখা। অবরোধের নামে যা হচ্ছে তা হচ্ছে সন্ত্রাস। এই সন্ত্রাসের সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ হচ্ছে অগ্নিকাণ্ড। আর এই অগ্নিকাণ্ডের প্রধান শিকার হচ্ছে যানবাহন। সবচেয়ে অমানবিক দিক হচ্ছে যানবাহনের সঙ্গে সঙ্গে নিরপরাধ মানুষ পুড়ে মরছে। সংবাদমাধ্যমে যে ছবিগুলো আমরা দেখছি, সেগুলো দেখলে শিউরে উঠতে হয়। মনে প্রশ্ন জাগে এসব ছাই হয়ে যাওয়া মানুষের দিকে তাকিয়ে অবরোধের আহ্বানকারীরা কি ভাবছেন? এসব অসহায় মানুষের দগ্ধ দেহ কি তাদের সাফল্য মাপার পরিমাপক? আর সাধারণ মানুষ কি ভাবছে এসব ভস্মীভূত মানবদেহ দেখে? আন্দাজ করি তারা যে কত অসহায় সে কথাই তারা ভাবছে। আর সরকার কি ভাবছে? মনে প্রশ্ন জাগে সরকারের বর্তমান ভাবনা কি গুণগতভাবে সাধারণ মানুষের মতোই অর্থাৎ অসহায়বোধ?
অবশ্য অবরোধের নামে যে শুধু যানবাহন আর মানুষ পুড়ছে তা নয়। পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে বিপথগামীরা, যা পুড়ে পুড়ুক। তাদের কাছে এটা একটা অগ্ন্যুৎসবের মতো। দুর্বৃত্তরা উত্তেজনায় এসব উপভোগ করছে। আপনজনহারা অন্য মানুষের বুকফাটা ক্রন্দন তাদের কর্ণকুহরে প্রবেশ করছে না। ভস্ম হয়ে যাওয়া অন্য মানুষের সারা জীবনের সঞ্চয় তাদের মনে কোনো রেখাপাত করছে না। যাদের আদেশে আর ইঙ্গিতে তারা এসব করছে তাদের মনে নিজেদের ছাড়া অন্য কারোর কথা স্থান পায় না। যারা পুড়ে মরছে তারা রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের আপনজন নয়। যা কিছু পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে, সেগুলো তাদের নিজেদের নয়।
শুধু অগ্নিসংযোগ নয়, সব রকমের ধ্বংসাত্মক কার্য চলছে অবরোধের নামে। ভাঙচুর, বলপ্রয়োগ, বোমা নিক্ষেপ এসব তারা করছে সুযোগ পেলেই। এই যে কর্মগুলো তারা করছে সাধারণভাবে এর সবই আইনের চোখে অপরাধ। এর সবই আইনের চোখে দণ্ডনীয়, কিন্তু কিছুই তাদের হচ্ছে না। কেউই বিচারের সম্মুখীন হয়নি। কেউই দণ্ডিত হয়নি। কেউই শাস্তি পাচ্ছে না। কাজেই সমানে চলছে এই অপকর্ম। এই অপকর্ম শুধু যে দুষ্কর্ম তা-ই নয়, এগুলো আইনের চোখে গুরুতর অপরাধ। আর তাই এগুলো যারা করবে তাদের শাস্তি পাওয়ার কথা; কিন্তু তারা শাস্তি পাচ্ছে না। এর কারণ কি? কারণ হচ্ছে এই যে, এই অপকর্ম করা হচ্ছে রাজনীতির নামে।
রাজনীতির নামে করা হচ্ছে বলে যারা এই অপকর্ম করছে তারা নিজেদের অপরাধী বলে মনে করছে না। তারা অনুশোচনা বোধ করছে না। তারা বরং গর্ববোধ করছে এই ভেবে যে, তারা রাজনীতির জন্য এসব করছে। তারা মনে করছে যে, একটা ভালো আদর্শের জন্য তারা এসব করছে। কেউ কেউ ভাবছে যে নেত্রীর আদেশে তারা এসব করছে এবং নেত্রী তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। কাজেই তিনি জানেন কোনটা করা উচিত আর কোনটা করা উচিত নয়। নেত্রীর আদেশ মতো কাজ করতে ভাবার দরকার কি? সব দায়িত্ব তো নেত্রীর। তাদের তো কোনো দায়িত্ব নেই। মিলগ্রাম এক্সপেরিমেন্টের কথা তো আমরা জানি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা অধ্যাপকের আদেশে মানুষদের মাত্রাতিরিক্ত বিদ্যুৎ দিয়েছিল।
দেখা যাচ্ছে, বিপথগামীরা নিজেদের দায়ী মনে না করলেও কেউ না কেউ দায়ী থাকছেন। আর এক্ষেত্রে দায়ী হচ্ছেন যিনি বা যারা আদেশ দিয়েছেন। নুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনালের কথা মনে করা যাক। যারা দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন তারা কি নিজের হাতে কাউকে মেরেছিলেন? গোয়েরিং বা রবিনট্রপ কি নিজের হাতে কাউকে খুন করেছিলেন? তবে তারা দোষী সাব্যস্ত হয়ে ফাঁসির দড়িতে ঝুললেন কেন? তারা ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলেছিলেন এজন্য যে, যারা এমন নীতি প্রণয়ন করেছিলেন এবং এর ফলে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ফাঁসিকাষ্ঠে যারা ঝুলেছিলেন তাদের আদেশেই নাৎসিরা অগণিত মানুষকে হত্যা করেছিল।
আমরা সাধারণেরা চাই রাজনীতির নামে নৃশংস হত্যাকাণ্ড বন্ধ হোক। গণতান্ত্রিক রাজনীতি যেভাবে চলা উচিত সেভাবে চলুক। আমরা কোনো অজুহাতে সন্তুষ্ট নই। বেগম জিয়া বলতে চান যে, বিএনপিকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য আওয়ামী লীগের কর্মীরাই নাশকতা করছে। এমন কথা বলে নাশকতার ব্যাপারে বিএনপি দায়িত্ব এড়াতে পারে না। আজকাল টিভি ক্যামেরায় আগুন লাগানো দুর্বৃত্তদের ছবি দেখা যায়। আর তাছাড়া এই পরিস্থিতি তাদের কারণেই সৃষ্টি হয়েছে। আমরা যারা আইন বুঝি না তাদের আইন বোঝা মানুষেরা বোঝান যে, বিশৃঙ্খল অবস্থায় নাশকতা হলে সেগুলো আদালতে প্রমাণ করা কঠিন। তবে কি আমাদের মেনে নিতে হবে যে, নাশকতা থামানো যাবে না? তবে কি মেনে নিতে হবে যে, নাশকতা সৃষ্টিকারীরা মানুষ পুড়ে মারতেই থাকবে? তবে কি মেনে নিতে হবে যে, আমাদের রাজনীতি বলপ্রয়োগের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতেই থাকবে?
বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের সহিংস আন্দোলনের কারণ আবার নির্বাচন আদায় করা। তারা তত্ত্ব¡াবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার হলেই যে নিরপেক্ষ হবে এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। বিএনপি নিজেরাই দাবি করে যে, ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিরপেক্ষ ছিল না। ২০০১ সালের নির্বাচনের সময় বিচারপতিদের অবসরের সময়সীমা বাড়ানো নির্বাচনটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার এমন অনেক কাজ করেছে, যেগুলো আইনসম্মত ছিল না। কাজেই একটা অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেয়া অনেকেই পছন্দ করেন না। ২০০৬ সালে যা ঘটেছিল তা ঘটতেই থাকবে ভাবা উচিত নয়। বিএনপি যেভাবে চাইবে সেভাবে নির্বাচন হবে, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। বিদেশিরা আমাদের সব ব্যাপারে নাক গলাবে এটা বিএনপি ভাবতে পারে আর কেউ সেটা চাইবে না। ভারত আর মার্কিন রাজনীতিবিদদের নিয়ে বিএনপি যে মিথ্যাচার করেছে তাতে বিশ্বাস করাই মুশকিল হয়েছে কোনটা তারা সত্য বলছে আর কোনটা তারা মিথ্যা বলছে। সবচেয়ে বড় কথা বিএনপি তো আগে ক্ষমতায় ছিল। তারা সে সময় কি এমন করেছে যে জন্য তাদের ক্ষমতায় আনার জন্য মানুষ হরতাল-অবরোধ পালন করবে?
লেখক: রয়াল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিসের ফেলো
__._,_.___