[Attachment(s) from Mahbub Murshed filmdart128@gmail.com [mukto-mona] included below]
আইসিল কী মৌলবাদী ইসলামের প্রতীক ? না ইসলামের বিকৃত রূপের ?
আইসিস(ISIS) বা আইসিল (ISIL) কী আসলে ইসলামের প্রতিনিধিত্বকারী ? না কী মৌলবাদী বা ওয়াহাবী ইসলামের রূপ ? না কী ইসলামের নামে ধর্ম বিকৃতির এক নিকৃষ্ট রূপ ? এসব প্রশ্ন এখন মুসলিম- অমুসলিম, আস্তিক -নাস্তিক সকলকে-ই ভাবিয়ে তুলেছে।
ইরাক, সিরিয়া এবং লিবিয়ার সরকার বিরোধী যোদ্ধাদের একটি অংশ হঠাৎ করে-ই নিজেদের দখলীকৃত এলাকাকে 'ইসলামিক রাষ্ট্র' হিসেবে ঘোষণা দেয় গত বছর। শুধু তা-ই নয়, তাদের প্রধাণ নিজেকে খলিফা বানিয়ে 'ইসলামিক খেলাফত' কায়েমের ঘোষণা প্রদান করেছিল। মজার ব্যাপার হলো তার হাতে শোভা পাচ্ছিল অতি দামি বিলাস বহুল ঘড়ি।
তবে এই তথাকথিত ইসলামিক রাষ্ট্র এবং এর খলিফাকে কোন মুসলিম রাষ্ট্র বা বিশ্বের ইসলামিক নেতৃবৃন্দ মেনে নেয়নি ; বরং তাদের কাজ-কর্মকে ইসলাম বিরোধী আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে । কিন্তু তাতে 'গাঁয়ে মানে না আপনি ,মোড়ল''- এর মতো এই খলিফা এবং তার বিভ্রান্ত যোদ্ধারা তাদের কর্ম-কান্ড চালিয়ে -ই গেছে এবং যাচ্ছে -বর্বরোচিতভাবে। আসলে তাদের কীর্তিকলাপের যে খবর প্রতিদিন মিডিয়াতে পাওয়া যায় তার অর্ধেকও যদি সত্য হয় -তাহলেও তাদের অপরাধকে মধ্যযুগীয় বর্বরতার সাথে-ই শুধু তুলনা করা চলে।
কী তারা করছে না ? তার বিদেশি সাহায্য সংস্থার নিরীহ মানুষদের ধরে তাদের মস্তক বিচ্ছিন্ন করেছে এবং সেই দৃশ্য আবার ধারণ করে প্রচার করেছে । তারা ভিন্নধর্মীদের হয় হত্যা করেছে - নতুবা জোর-পূর্বক ধর্মান্তরিত করেছে। তারা মেয়েদের দাসের মতো বিক্রি করে দিয়েছে । তাদের অত্যাচার থেকে মুসলিমদের ও নিষ্কৃতি মেলেনি। আসলে তাদের হাতে নিহত এবং নির্যাতিতদের মধ্যে মুসলিমের সংখ্যা-ই বেশি। তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসা মুসলিমদের তারা বীভৎভাবে হত্যা করেছে - মাথা কেটে বা গুলি করে মেরে বা আগুনে পুড়িয়ে। অতি সম্প্রতি তারা দুজন বাংলাদেশিকেও ধরে নিয়ে গেছে। বস্তুতঃ পাশ্চাত্য বিশ্বের বিভিন্ন ইসলাম বিদ্বেষী মানুষেরা এতোকাল ধরে বিভিন্ন ধরণের প্রচারণা চালিয়ে ইসলাম ধর্মের ইমেজের যতোটুকু ক্ষতি করতে পারেনি -আইসিস একা-ই তার দশগুণ বেশি ক্ষতি করেছে -ইসলামের এবং মুসলিমদের।
আইসিস এর তথাকথিত জিহাদীরা শুধু যে নিষ্ঠুর তা-ই নয়; তাদের শিক্ষা -দীক্ষাও অতি নিম্ন মানের। তারা মূর্তি পুজা এবং পুরাকীর্তির মধ্যে পার্থক্য করতে অক্ষম। ইরাকের মোসুল শহরের মিউজিয়ামের হাজার বছরের পুরনো মূর্তিগুলো যে মানব জাতির প্রথম সভ্যতার প্রতিনিধিত্বকারী, অমূল্য সম্পদ তা তাদের মাথায় ঢোকে না । তারা বর্বরের মতো মূর্তি পুজার কথা বলে ইরাকী জাতির অমূল্য সম্পদকে অবলীলায় ধ্বংস করেছে। তারা চার হাজার বছরের প্রাচিন নিমরুদ শহরের পুরনো স্থাপত্য- ভাস্কর্য বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। তারা ২০০০ বছরের পুরনো হাত্রা শহরেও তাদের ধ্বংস যজ্ঞের থাবা বাড়িয়ে দিয়েছে। এরা ইসলাম এবং মুসলিমদের-ই শত্রু শুধু নয়; তারা সভ্যতার শত্রু। অবস্থা এমন -ই যে ইরাকের 'ট্যুরিজম এবং অ্যান্টিকুইটি' বিষয়ক মন্ত্রী এসব ঐতিহাসিক শহর এবং সভ্যতার নিদর্শন রক্ষা করতে পাশ্চাত্য বিশ্বের বিশেষ সাহায্য কামনা করেছেন।
কিন্তু আইসিসকে অর্থ দিচ্ছে কারা ? এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ।কিন্তু যার উত্তর দিতে অনেকে-ই অস্বস্তি বোধ করেন। নিকট অতীতে সিরিয়া,লিবিয়ার সরকার বিরোধীদের পাশ্চাত্য থেকে যে সমরাস্ত্র এবং সৌদী আরব, কাতার, আরব আমীরাত ইত্যাদি দেশ হতে যে অর্থ সাহায্য দেয়া হয়েছিল তার বড় একটি অংশ তারা হস্তগত করেছে। আবার যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য সদস্য দেশ -এমন কী সৌদী আরব,কাতার, আরব আমীরাতের মতো দেশগুলো আইসিসের বিরুদ্ধে গেলেও তারা এখনো কীভাবে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে তা নিশ্চয়-ই বড় ধাঁধা। কোন কোন দেশের কর্তা ব্যক্তি এবং পন্ডিৎজনেরা বলেছেন যে সৌদী আরব, কাতার, আরব আমীরাতসহ মধ্যাপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের কিছু ধণাড্য ব্যক্তিরা গোপনে আইসিলকে সাহায্য করছে । নিজ সরকারের বিরুদ্ধে যেয়ে তারা কীভাবে সাহায্য করছে বা করতে পারছে -তা তদন্তের বিষয়। তবে আইসিস বা আইসিল যে মানব জাতির জন্য একটি অভিশাপ হয়ে দেখা দিয়েছে -এমন কী ইসলাম ধর্ম এবং মুসলিমদের জন্যেও -তা আর বলে দেয়ার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু এদের দমন করতে বিশ্বের মুসলিমরা কী করতে পারেন ?
__._,_.___