Banner Advertiser

Thursday, March 5, 2015

[mukto-mona] নজিরবিহীন আন্দোলন, জিম্মি সাধারণ মানুষ -




প্রিন্ট সংস্করণ
   

*৬ জানুয়ারি থেকে অবরোধ, হরতাল, সহিংসতা ও ক্রসফায়ারসহ মোট মৃত্যুর সংখ্যা




রাজনৈতিক কর্মসূচিকেন্দ্রিক সহিংসতার দীর্ঘতম এক রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে, যাতে সবচেয়ে বেশি মূল্য দিয়েছে সাধারণ মানুষ। বিএনপি-জামায়াতের দুই মাসের টানা অবরোধে নিহত হয়েছেন ১১৫ জন, যার ৯০ জনই সাধারণ মানুষ। পেট্রলবোমায় দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন ৬২ জন এবং কথিত ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ৩৬।


সহিংস রাজনীতির কাছে জিম্মি সাধারণ মানুষ এখন পথ চলছে আতঙ্ক নিয়ে। এর অর্থনৈতিক ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা-চিকিৎসাসহ সব ক্ষেত্রে।


বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটানা এত সময় ধরে অবরোধ-হরতালের ইতিহাস নেই। অতীতে এ রকম নাশকতা বা সাধারণ মানুষের প্রাণহানির এত ঘটনাও ঘটেনি। তা ছাড়া আগে কখনোই সাপ্তাহিক ছুটি বা জাতীয় দিবসে আন্দোলন কর্মসূচি থাকত না।


অতীতের সব আন্দোলন পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, সাধারণ মানুষকে নিশানা করে আগে কখনো হামলা হয়নি। আগে রাজনৈতিক আন্দোলন মানে ছিল পুলিশের হামলা, তাদের সঙ্গে মারামারি কিংবা দুই পক্ষের সংঘর্ষ। কিন্তু এখন রাজনীতির অস্ত্র পেট্রলবোমা আর ক্রসফায়ার ও গ্রেপ্তার-মামলা।
গত ৫ জানুয়ারির 'একতরফা' নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে গত দুই মাসের আন্দোলনে নিহত হন ১১৫ জন। এর মধ্যে ৬২ জন মারা যান পেট্রলবোমা হামলায়। ৩৬ জন মারা গেছেন কথিত ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধে। বাকি ১৭ জন মারা গেছেন সংঘর্ষ বা গোলাগুলির মধ্যে পড়ে। এ পর্যন্ত নিহত ৯০ জন সাধারণ মানুষের মধ্যে ৩৩ জন বাস বা অন্য কোনো বাহনের যাত্রী। যাত্রী ছাড়াও চালক মারা গেছেন ১৪ জন। এঁদের মধ্যে নয়জন ট্রাকচালক এবং ১১ জন চালকের সহকারী। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন নয়জন শ্রমিক বা দিনমজুর, একজন পথচারী, পাঁচজন ছাত্র, দুজন প্রবাসী, সাতজন শিশু এবং নয়জন নারী, একজন পুলিশ সদস্য। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আচমকা বাসে বা ট্রাকে হামলার ঘটনায় এসব প্রাণহানি ঘটেছে।


সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন, বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের গ্রন্থ বাংলাদেশের তারিখ, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিবেদন এবং বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট প্রকাশিত সংবাদপত্রে হরতালচিত্র (১৯৪৭-২০০০) বইয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এর আগে টানা অসহযোগ কর্মসূচি চলেছে ২০ দিন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত বিএনপি সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আওয়ামী লীগ এই কর্মসূচি দিয়েছিল।


বাংলাদেশের রাজনৈতিক আন্দোলনের ইতিহাস খুঁজতে গিয়ে দেখা গেছে, সবচেয়ে বড় আন্দোলন হয়েছে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতনের দাবিতে। আট বছর বিচ্ছিন্নভাবে আন্দোলন হলেও ১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বর পুলিশের গুলিতে চিকিৎসক শামসুল আলম মিলন মারা গেলে এরশাদ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। এর পরই টানা আন্দোলনের ঘোষণা আসে। নয় দিনের মাথায় (৫ ডিসেম্বর) এরশাদ পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
১৯৯১ সালে গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসার পর নির্বাচন এলেই রাজনৈতিক আন্দোলন ও সহিংসতার তীব্রতা বাড়ে। ১৯৯৬ সালের নির্বাচন যেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে হয়, সে জন্য '৯৪ সাল থেকে আওয়ামী লীগসহ বিরোধী দলগুলো আন্দোলন শুরু করে। কিন্তু বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি না মেনে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিলে সেটি বন্ধের দাবিতে ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডাকে আওয়ামী লীগ। দেশের বিভিন্ন স্থানে এ সময় পুলিশের গুলি ও সংঘর্ষে ১৫ জন নিহত হন। এর মধ্যেই নির্বাচন শেষে সরকার গঠন করে বিএনপি।


এরপর বিএনপি সরকারের পতনের দাবিতে আওয়ামী লীগসহ বিরোধী দলগুলো ৯ মার্চ থেকে লাগাতার অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করে। টানা ২০ দিন এই অসহযোগ কর্মসূচি চলে। ২৮ মার্চ রাষ্ট্রপতি সংসদে সংবিধান সংশোধনী বিল আনলে ৩০ মার্চ অসহযোগ কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়। ওই দিন খালেদা জিয়া পদত্যাগ করেন এবং বিচারপতি হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়। এই আন্দোলন চলাকালে পুলিশ ও বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষে ১৯ জন মারা যান।


এরপর ১৯৯৬ সালের ১২ জুন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হয়। ওই নির্বাচনের পর সে সময়ের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি হাবিবুর রহমান ২১ জুন রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে বলেন, 'কিছুদিন সরকার পরিচালনা করতে গিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে সীমাহীন অসহিষ্ণুতা আমি দেখেছি, ভবিষ্যতে যেন আর তা দেখতে না হয়। নতুন জাতীয় সংসদকে কেন্দ্র করে আপনারা এমন রাজনৈতিক রেওয়াজ গড়ে তুলুন, যাতে আর কোনো দিন রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে রাজপথে যেতে না হয়।'


কিন্তু প্রয়াত এই প্রধান উপদেষ্টার কথা কেউ শোনেনি। যদিও ২০০১ সালের আওয়ামী লীগ স্বাভাবিকভাবেই ক্ষমতা ছেড়ে নির্বাচন দেয় এবং ১ অক্টোবরে নির্বাচনে বিএনপি সরকার গঠন করে। নির্বাচনের আগের দুই মাস আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে রাজনৈতিক সহিংসতায় ৯৬ জন মারা গেছেন। এঁদের মধ্যে ৭৯ জনই রাজনৈতিক কর্মী, ১৭ জন সাধারণ মানুষ।


বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে আবার সংঘাতের ঘটনা ঘটে ২০০৬ সালের অক্টোবরে। বিএনপি সাবেক প্রধান বিচারপতি কে এম হাসানকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করতে চাইলে আওয়ামী লীগ তা প্রত্যাখ্যান করে। কে এম হাসান আর শপথ নেননি। ২৭ অক্টোবর এ নিয়ে সংঘর্ষে সারা দেশে ১২ জন নিহত হন। পরদিন মারা যান ২৪ জন। ২৮ অক্টোবর ঢাকা পরিণত হয় রণক্ষেত্রে।
২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি নবম সংসদ নির্বাচনের কথা থাকলেও ৭ জানুয়ারি থেকে আওয়ামী লীগ আবার অবরোধ ডাকে। এই আন্দোলন শুরুর মাত্র চার দিনের মাথায় ১১ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণ করে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার।


২০০৭ ও ২০০৮ সালে নির্বাচন নিয়ে সহিংসতায় কোনো প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচন করার ঘোষণা দিলে আবার ভয়াবহ সংঘাত শুরু হয়।
২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর দশম সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন থেকে টানা আন্দোলন শুরু করে বিএনপি। মাঝখানে এক বা দুই দিনের বিরতি দিয়ে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় দফা অবরোধ চলে। এর মধ্যে ২৬ নভেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত হরতাল-অবরোধে ৭৫ জন প্রাণ হারান। আওয়ামী লীগ নির্বাচনের জন্য অনড় থাকলে ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে লাগাতার অবরোধ ডাকে বিএনপি। কিন্তু এর মধ্যেই ৫ জানুয়ারি 'একতরফা' নির্বাচন হয়। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় প্রাণ হারান ৩৪ জন। ওই নির্বাচনের বর্ষপূতির দিন (৫ জানুয়ারি ২০১৫) থেকে আবারও সংঘাত-সহিংসতা চলছে।\


এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, 'আমি তো গত দুই মাসে ক্ষতি ছাড়া কোনো অর্জন দেখি না। বিএনপি মুখে মুখে ঘোষণা দিয়ে হরতাল-অবরোধ করছে, যার সঙ্গে সাধারণ মানুষের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এমন কোনো খাত নেই, যেটি অবরোধে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না। আর সাধারণ মানুষ তো জিম্মি। এমন পরিস্থিতিতে তো সরকারেরও ক্ষতি ছাড়া লাভ হচ্ছে না। বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ। কাজেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সরকারের যেমন আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া উচিত, তেমনি বিএনপিকে সহিংসতা বন্ধ করতে হবে।'
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট রাজনৈতিক বিরোধে গত ১৪ মাসে বিরোধী নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তারের যে হিড়িক পড়েছে, তা-ও নতুন নজির তৈরি করেছে।

প্রসঙ্গ:











__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___