ব্লগ অ্যাডমিন,
মুক্তমনা বাংলা ব্লগ।
আমি আরণ্যক নীলকণ্ঠ (পেন নেম), মুক্তমনায় নিয়মিত লিখতে আগ্রহী। নিচের লেখাটি পাঠাচ্ছি মুক্তমনায় প্রকাশের জন্য। যদি আপনার লেখাটিকে প্রকাশের উপযোগী মনে হয়, তবে প্রকাশ করলে বাধিত হবো।
আশা করছি নিকট ভবিষ্যতে আরো লিখতে পারবো।
ধন্যবাদান্তে,
আরণ্যক নীলকণ্ঠ
---------------------------------------------------------------------
প্রবীর ঘোষ মশায়ের যুক্তিহীনতা এবং হোমোফোবিয়া
-----------------------------------------------------------------------
প্রবীর ঘোষকে গুরু মানতাম। কারণ, 'গুরু' শব্দটার সংজ্ঞানুযায়ী আলোর পথ দেখালে তো গুরুই বলে, তাই না?
কিশোর বয়সে তাঁর 'অলৌকিক নয় লৌকিক' সিরিজের বইগুলো পড়ে এবং নিজে কিছু সন্ধান-অনুসন্ধান করে স্থির হয়েছিলাম ভদ্রলোকের দৃষ্টিকোণই সঠিক। খুব বড়রকমের প্রভাব তিনি ফেলেছিলেন আমার উপর।
এইপর্যন্ত বলার পর, বাকি অংশে যাওয়ার আগে একটু বলে রাখি: তার ঐ সিরিজের বইগুলো বাদে অন্যগুলো আমি পড়ি নি। এবং তারপর চলতি সময়ে তিনি কী করছেন না করছেন তার খোঁজ খবরও আমি তেমনটা রাখতাম না। ফেসবুকে ফ্রেন্ডলিস্টে আছেন বটে, কিন্তু তেমন একটা পোস্ট তাঁর থেকে পাই না। তাই তাঁর কর্মকান্ডের ব্যাপারে আমি তেমন আপডেটেড ছিলাম না।
আনটিল রিসেন্টলি। ড. অভিজিৎ রায়ের হত্যাকান্ডের পর ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির সভায় তাঁর বক্তৃতাটা আমি পড়েছি। এবং পড়ার পরে তাঁর উপর এতদিনকার সমীহ শেষ হয়ে গেছে।
কারণটা বলি, তিনি সরাসরি বলেছেন, অভিজিৎ রায় নাকি সমকামীতা 'প্রোমোট' করেছেন তাঁর বইয়ের মাধ্যমে। তার অর্থ, ধরে নেয়া যায় ঐ বইটি মি. ঘোষ পড়েছেন। যদি পড়েই থাকেন, এবং তিনি যুক্তিবাদী হয়ে থাকেন, তাহলে তার নিশ্চিতভাবেই বোঝার কথা যে, সমকামী কেউ ইচ্ছে করে হয় না, এটা জীনগত ব্যপার। কাউকে সমকামীতায় আগ্রহী করা যায় না, অর্থাৎ প্রোমোট করা বলে কিছু থাকতে পারে না। কাঠালের আমসত্বের মতো, আর কি! করার মধ্যে শুধু এটা করা যেতে পারে যে, মানুষকে বোঝানো যায় - সমকামীরা বিকৃত মানসিকতার নয়। ওটা ভুল ধারণা। সমকামীতাও স্বাভাবিক। পৃথিবী জুড়ে প্রগতিশীলেরা এল.জি.বি.টি (লেসবিয়ান গে বাইসেক্সুয়াল ট্রান্সজেন্ডার) অধিকার বাস্তবায়নে উচ্চকণ্ঠ। সেখানে এই সাধারণ তথ্য না জানতে পারাটাকে কোন ক্যাটেগরিতে ফেলা যায়?
ভণ্ডামি? সেটা ছাড়া তো কিছু মনে আসছে না। একজন যুক্তিবাদী কিভাবে যুক্তিহীনের মতো অন্যের উপর নিরর্থক নিন্দা লেপন করতে পারেন? এবং প্রবীর ঘোষের বক্তব্য থেকে পরিষ্কার, তিনি যুক্তিবাদীর কিছুই না। তিনি বইগুলো লিখেছেন ভালো, কিন্তু কিভাবে লিখেছেন সেটা নিয়েই এখন আমি সন্দিহান।
আরো একটা ব্যাপার মনে হয় উল্লেখযোগ্য। প্রবীর ঘোষের বইগুলোতে আত্মপ্রচারের ভাগটা বেশ প্রকট, বৈজ্ঞানিক তথ্য উপাত্ত বা মৌলিক প্রশ্নগুলো সমাধানে বিজ্ঞানের অগ্রগতি নিয়ে তেমন কোনও তথ্যবহুল আলোচনা নেই বললেই চলে। যেটা, ড. অভিজিৎ রায়ের লেখার একটা বড় প্লাস-পয়েন্ট। অভিজিৎ রায় কাউকে মুখের উপর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেননি, কিন্তু সকলের চ্যালেঞ্জ বিনামূল্যে খণ্ডন করে গেছেন।
এই ব্যাপারটাও মনে হয় প্রবীর ঘোষের সহ্য হয় নি।
উপসংহার এই যে, প্রবীর ঘোষ এখন আর কোনও শ্রদ্ধেয় নাম নয়। তিনি যুক্তিহীন হোমোফোবিক এবং আত্মম্ভরী লেখকমাত্র।
----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
__._,_.___