Banner Advertiser

Friday, April 10, 2015

[mukto-mona] উনি বাড়ি ফিরেছেন, ওরা কোনোদিন ফিরবে না




উনি বাড়ি ফিরেছেন, ওরা কোনোদিন ফিরবে না

বৃহস্পতিবার, ৯ এপ্রিল ২০১৫

প্রায় ৩ মাস পরে উনি বাড়ি ফিরলেন। বড় খবর হলো সেটা। নানাভাবে ভিন্ন ভিন্ন মনোভাব নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম প্রচার করল সেটা। কেউ ভাবছে তার পরাজয় হলো। কেউ বলল মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বাঁচল। কেউ আবার বলল বিএনপি নতুন কৌশলের সন্ধানে। যে যেভাবেই দেখুক আর যে যেভাবেই বলুক তার বাড়ি ফেরা একটা বড় খবর। নির্বাচন বন্ধ করবার জন্য ২০১৩-১৪ সালে তিনি যে আন্দোলন করেছিলেন তখন মারা গিয়েছিল ৫০০ মানুষ। এবারের সরকার পতনের ৩ মাসের আন্দোলনে মারা গেছে ১৫০ জনের মতো মানুষ। এই ৬৫০ জনের মতো মানুষ যাদের তিনি না ফেরার দেশে পাঠিয়েছেন তারা আর বাড়ি ফিরবে না। তারা কারা? কে তাদের খবর রাখে? তারা 'শিন থ্রæ' রঙিন কাপড় পরে না। তাদের চোখে বড় রঙিন চশমা নেই। না ফেরার দেশে যাওয়ার সময় তারা বিশাল গাড়ি চড়ে সেখানে যায়নি। তাদের বিশাল গাড়ি ধরে দৌড়ে কেউ গর্ববোধ করেনি। এই অনার্য অধ্যুষিত দেশে তাদের গায়ের রঙ হয়ত ফর্সা ছিল না। কাজেই কে তাদের খবর রাখে?

এই সাড়ে ৬শ ছাই হয়ে যাওয়া মানুষের মধ্যে ছিল শিশু। অবুঝ শিশু। ওরা কিছুই বুঝত না। রাজনীতি তো বুঝতই না। ক্ষমতার রাজনীতি তো একেবারেই বুঝত না। তবু ওরা ক্ষমতার রাজনীতির শিকার হলো। সৃষ্টিকর্তা ওদের এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন কি অকালে ছাই হয়ে যাওয়ার জন্য। মৃত্যু তো অনেক রকমের হতে পারে। শরীরের কোনো অংশ যাদের পুড়েছে কোনোভাবে, তারাই জানে দগ্ধ হওয়ার কী ব্যথা, কী যন্ত্রণা। এই অবুঝ শিশুগুলো কী অপরাধ করেছিল যে তাদের এমন যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যুবরণ করতে হলো! মৃত্যুবরণ করেছে অনেক নারী যাদের রাজনীতিতে কোনো ভূমিকাই ছিল না। অনেকে মৃত্যুবরণ করেছে যাদের পরিশ্রমে সংসার চলত। এই পরিবারগুলোর কী হবে? এদের তো কোনো জাদুকরী বিদ্যা নেই। কোনো উপার্জন ছাড়াই এদের স্ত্রীরা কয়েক লাখ টাকা ভাড়া দিয়ে বিশাল বাড়িতে থাকতে পারবে না। এদের সন্তানরা বিনা উপার্জনে লাখ লাখ টাকা খরচ করে সপরিবারে বিদেশে বাস করতে পারবে না। এদের সন্তানরা এমন ভাগ্যবান নয় যে দলের ধনাঢ্য ব্যক্তিরা তাদের জন্য প্রতিদিন অজস্র টাকা খরচ করবে। দলের ধনী ব্যক্তিরা গরিব ব্যক্তিদের নিয়ে আগ্রহী নয়। জোসেফ স্টালিনের সংজ্ঞা অনুযায়ী এরা পরিসংখ্যান মাত্র। কারণ এরা বিপুল সংখ্যায় মরেছে। এরা মাত্র কয়েকজন যদি মৃত্যু বরণ করত তবে এদের আমরা শহীদ বলতাম।

অন্য আরো অনেক ক্ষতি রয়েছে প্রাণহানির পাশাপাশি। উৎপাদনের বিশাল ক্ষতি হয়েছে। যানবাহনের অভাবের জন্য উৎপাদিত পণ্য নষ্ট হয়েছে। পড়াশুনার ক্ষতি হয়েছে। যারা পরীক্ষার জন্য তৈরি হয়েছে কষ্ট করে আর তারপর পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগেছে তাদের কষ্ট যারা পরীক্ষা দেয়নি তারা বুঝতে পারবে না। বাংলাদেশের সব সরকারি কাজ তো রাজধানীতেই কেন্দ্রীভূত। কাজের জন্য ঢাকায় এসে তারপর হরতালের জন্য কাজ না করেই ফিরে যাওয়া কি যন্ত্রণার তা ভুক্তভোগীরাই শুধু জানেন। ২০১৩-১৪ সালের আন্দোলনে দেশ ও জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লাভ কারো হয়নি। সে অভিজ্ঞতার বিশ্লেষণ না করে উনি আবার 'একশন রিপ্লের' ডাক দিলেন। ফলাফল একই রকমের হলো।

উনি বললেন 'অবরোধ' করা হবে। কোথায় অবরোধ? অবরোধ করতে গেলে অবরোধকারীর প্রয়োজন হয়। সে রকম কাউকে দেখা গেল না। দলের কর্মীদের দেখা গেল না কোথাও। নেতাদের কথাতো ছেড়েই দিলাম। জনগণ তো ধারেকাছেই এল না। তবু একে বলা হলো অবরোধ। কেউ কেউ আবার 'টানা অবরোধ' জাতীয় কথাও বললেন। অবরোধের যখন এমনি হাল তখন আবার উনি হরতালের ডাক দিলেন। ঠিক বলা হলো কিনা নিশ্চিত নই। অজ্ঞাত স্থান থেকে ছাপান কাগজে অন্য একজন হরতালের ডাক দিতে থাকলেন। জনগণের কোনো সাড়া পাওয়া গেল না। জনগণের অংশগ্রহণ নেই। জনসমর্থন নেই তবু হরতাল। যেটা চলতে থাকল সেটা হচ্ছে বোমাবাজি। পেট্রলবোমা নিক্ষেপ। অগ্নিকাণ্ড। হত্যা। ধ্বংসযজ্ঞ।

নিরপেক্ষ সেজে তথা কথিত সুশীলরা গলাবাজি করতে থাকলেন। এদের কণ্ঠে হত্যার কোনো নিন্দা শোনা গেল না। ধ্বংসের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ ধ্বনিত হলো না। এই স্বঘোষিত বুদ্ধিমানদের বুদ্ধির প্রতি কোনো আগ্রহ দেখাল না জনগণ।

যেটা এখন স্পষ্ট সেটা হচ্ছে যে উনাকে আর উনার সমর্থকদের জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। সোজা কোথায় হেরে গেছেন তিনি। কিন্তু এখানেই আমাদের মনে একটা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ২০১৩-১৪ সালের হত্যা আর ধ্বংসের পর কিছুদিনের বিরতি নিয়ে তিনি আবার একই কাজের ডাক দিয়েছিলেন। আন্দোলনের ফলে যে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল সে জন্য কি কেউ দায়ী নয়? ওই বিশাল ধ্বংসযজ্ঞের দায়বদ্ধতা তবে কার? কয়েকজন কিশোরকে বোমা নিক্ষেপের জন্য শাস্তি দিয়েই কি সব শেষ? বিশাল অপরাধের জন্য কোনো ব্যক্তিকে দায়ী করা হয়নি। এর ফল আমরা কী দেখলাম! আমরা দেখলাম 'একশন রিপ্লে'। ২০১৫ সালেও দেখলাম হত্যার আর ধ্বংসের পুনরাবৃত্তি। ২০১৩-১৪'র দায়ী ব্যক্তিরাই সেটা ঘটালেন। প্রশ্নটা হচ্ছে এই যে, আমরা নিকট ভবিষ্যতে কী দেখতে যাচ্ছি? আমরা কি আবার দেখবো ২০১৩-১৪ আর ২০১৫'র দায়ী ব্যক্তিরা কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে আবার হত্যাযজ্ঞে নেমে যাবে? এই বিশাল হত্যাকাণ্ডের জন্য কেউ কি দোষী সাব্যস্ত হবে না? কারো কি শাস্তি হবে না এই বিশাল অপরাধের জন্য? তবে কি নিরপরাধ মানুষগুলো জীবন দিতেই থাকবে? এই হত্যা আর ধ্বংস প্রতিরোধের কোনো ব্যবস্থাই কি নেয়া হবে না?

ওয়াহিদ নবী : চিকিৎসক, লেখক। রয়াল কলেজ অফ সাইকিয়াট্রিস্টের একজন ফেলো।



http://www.bhorerkagoj.net/print-edition/2015/04/09/27432.php


মুক্তচিন্তা'র আরও সংবাদ


__._,_.___

Posted by: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___