Banner Advertiser

Wednesday, April 8, 2015

[mukto-mona] বরগুনা ও লাঙ্গলবন্দের ঘটনা পৌর নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে



বরগুনা ও লাঙ্গলবন্দের ঘটনা পৌর নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে
বুধবার, ৮ এপ্রিল ২০১৫

বরগুনায় ১৪ হিন্দু পরিবার জোরপূর্বক উচ্ছেদ এবং লাঙ্গলবন্দে ১০ হিন্দু নিহত ঘটনায় এ সময় দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের হিন্দুরা বেশ ক্ষিপ্ত। এমনিতে হিন্দুর ওপর অত্যাচার গত ৪৪ বছরে সবার গা-সহা হয়ে গেছে। কিন্তু কোনো কোনো ঘটনা কখনো-সখনো আঞ্চলিক বেড়া ডিঙিয়ে জাতীয় পর্যায়ে চলে আসে বলেই মাঝেমধ্যে হইচই হয়, কিছুদিন সবাই 'আহা-উহু' করেন এবং তারপর আবার সব আগের মতো। তাই তো ২০০১-এর হাজারো নির্যাতন, ধর্ষণের ঘটনার বিচার হিন্দুরা পায়নি, নন্দিরহাট-অভয়নগর-রামুসহ প্রতিদিন ঘটে যাওয়া অগুনতি ঘটনার বিচার কোনোদিন পাওয়ার সম্ভাবনাও নেই।
বাংলদেশে হিন্দুর ওপর আক্রমণের যে কোনো ঘটনায় আমরা বিএনপি-জামায়াতের ওপর দোষ দিয়ে নিজেদের 'সাধু' বলে প্রমাণ করার প্রয়াস পাই। এটা হয়ত সত্য যে, বিএনপি-জামায়াতের ছত্রছায়ায় মৌলবাদ বেড়ে ওঠে বা ওরা অত্যাচার করেও কিন্তু রামু-নন্দিরহাট-অভয়নগরের ঘটনা কি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে না যে, হিন্দুর ওপর অত্যাচারের ক্ষেত্রে 'সবাই ভাই-ভাই'? এই একটি মাত্র জায়গায় বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক বিভেদ থাকে না, বিএনপি-আওয়ামী লীগ তখন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হিন্দু খেদাও আন্দোলনে নেমে পড়ে। এর সর্বশেষ প্রমাণ বরগুনার ঘটনা। পাঠকের সুবিধার্থে গুটিকয় ঘটনা এখানে তুলে ধরছি, যা দেখে কেউ হয়ত প্রশ্ন করতে পারেন, বাংলাদেশে কি এগুলো ঘটছে? তাদের বলা যায়, এত সামান্য, 'টিপ অন আইসব্যার্গ', প্রকৃত সমস্যা আরো অনেক ভয়াবহ।
এবার কটি নিউজ দেখা যাক, প্রায় সবগুলোই মিডিয়ায় এসেছে : বরগুনার সন্ত্রাসীদের ভয়ে ভিটেছাড়া ১৪ হিন্দু পরিবার/চট্টগ্রাম ঘিরে ইসলামিক স্টেট গঠনের পরিকল্পনা/বাগেরহাটে বিধবাকে নৌকায় ধর্ষণ, ৬ দিন পর উদ্ধার/বরগুনার পাথরঘাটায় কুনা ব্যাপারী নামের এক অষ্টাদশীকে অপহরণ ও ধর্মান্তরকরণ/জৈন্তাপুরে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে হিন্দুর বাড়িতে হামলা/মানিকগঞ্জে প্রতিমা ভাঙচুর, হামলা/কেশবপুরে সংখ্যালঘু পরিবারকে বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা/লাঙ্গলবন্দের ৪৬ একর জমির অধিকাংশ বেদখল এবং দখলকারীরা প্রভাবশালী/বড়াই গ্রামে গণধর্ষণ/ খাগড়াছড়িতে উপজাতি ছাত্রীকে তুলে নিয়ে রাতভর ধর্ষণ করল ছাত্রলীগ নেতা/এবার গির্জার জমি দখল করে নিলেন আওয়ামী লীগ নেতা/দীঘিনালায় স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার, ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার/চরফ্যাশনে সংখ্যালঘুর জমি দখল করেছে আওয়ামী লীগ নেতা/হিন্দু ছাত্রদের জোর করে গরুর মাংস খাওয়ালেন জামায়াতী শিক্ষক/ ইত্যাদি।
দীর্ঘ তালিকা দেখে কেউ হয়ত ভাবতে পারেন এটা সারা বছরের ঘটনা! না, এটা শুধু মার্চ মাসের খণ্ডচিত্র, যা দেশীয় মিডিয়ায় এসেছে। অনেকে প্রশ্ন তুলতে পারেন, এসব মৌলবাদ সমর্থক পত্রিকাগুলোর কাজ। তাও নয়, প্রায় সবগুলো নিউজ প্রগতিবাদী মিডিয়ায় এসেছে। বলে রাখা ভালো, মিডিয়ার পারফরম্যান্স চমৎকার, যদিও প্রশাসনের ভূমিকা ঠিক উল্টো। ভোরের কাগজ বরগুনার ঘটনার ওপর সম্পাদকীয় লিখেছে। মানবাধিকার কমিশনের প্রধান ড. মিজান প্রশ্ন তুলেছেন, ইজতেমায় পুলিশ থাকলে লাঙ্গলবন্দ স্নানে ছিল না কেন? বরগুনা ও লাঙ্গলবন্দের ওপর কটি পত্রিকা চমৎকার অনুসন্ধানমূলক রিপোর্ট করেছে। কাদের সিদ্দিকী যেমন কদিন আগে বলেছেন, 'ক্রিকেট খেলা নিয়ে আমাদের সাম্প্রদায়িক চরিত্রটি সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে'; তেমনি বরগুনা ও লাঙ্গলবন্দ ঘটনায় প্রশাসনের বিমাতাসুলভ, অবহেলিত, বিদ্বেষী মনোভাব আর চাপা থাকেনি। সরকার নির্বিকার। সংখ্যালঘু মন্ত্রী-এমপি-নেতারা এতটাই দলীয় যে স্বজাতির কথা তাদের মনেই থাকে না।
এসব অত্যাচারের কোনোটারই কি বিচার হবে? অতীত যদি বর্তমানের প্রতিচ্ছবি হয়, তবে নির্দ্বিধায় বলা যায়, 'বিচারের বাণী নীরবে-নিভৃতে কাঁদে'। উপরের ঘটনাবলি থেকে বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের একটি ট্রেন্ড পাওয়া যায়, তা হলো, অত্যাচারের প্রক্রিয়া বহুবিধ হলেও নাবালিকা ধর্ষণ, মন্দির বা মূর্তি ভাঙা, সম্পত্তি-জমি জবরদখল, এসবের প্রকোপ বেশি এবং গত ৪৪ বছরে এর কোনো বিচার সংখ্যালঘুরা পায়নি। বরগুনার মতো ঘটনা বাংলাদেশে হরহামেশা ঘটছে, কোনো প্রতিকার নেই, নেই বিচার। অনেকেই বলেন, এ আর এমনকি, ওরা ভারতে চলে গেলেই তো পারে! আর এ দেশে থাকলে এমন তো টুকটাক হবেই! আর যারা একটু কট্টর, তারা বলেন, এটা মুসলমানের দেশ। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, কোনো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে অমুসলমানরা থাকতে পারে না, শুধু পাকিস্তান নয়, তাবৎ মুসলিম বিশ্বের দিকে তাকালে এ সত্য বুঝতে কারো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। বাংলাদেশও যে একই দিকে যাচ্ছে তাতেও কারো সন্দেহ থাকার কারণ নেই। নইলে ৪৪ বছরে সংখ্যালঘু জনসংখ্যা প্রায় ২০ ভাগ থেকে ৯ ভাগে নেমে আসে কী করে? গত বছর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছিলেন, পরিস্থিতি সামাল না দিলে আগামী ২০ বছরে বাংলাদেশ হিন্দুশূন্য হয়ে যাবে। আর হিন্দুরা না থাকলে মুসলমানরা খুব সুখে-শান্তিতে থাকবেন এমনটা আশা করা দুরাশা। তেমন যদি হতো তাহলে তাবৎ মুসলিম বিশ্বে শান্তির সুবাতাস বইত। ঘটনা তো উল্টো, মুসলিম দেশে মুসলমানরা মানবেতর জীবনযাপন করছে, বরং অমুসলমান দেশে মুসলমানরা ভালো আছে।
লাঙ্গলবন্দের ঘটনাটি একটু অন্যরকম, তবে সরকারি অবহেলার দৃষ্টান্ত। বাঁধ ভেঙে গেছে গুজব শুনে কেন সবাই হুড়াহুড়ি শুরু করে দিলেন বোঝা দায়। চিলে কান নিয়ে গেছে শুনে চিলের পিছে না দৌড়িয়ে আগে কানে হাত দেয়াটা জরুরি ছিল নাকি? তাহলে তো এত বড় দুর্ঘটনাটি ঘটত না! বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ অভিযোগ করেছে, লাঙ্গলবন্দে দুর্ঘটনা ঘটানো হয়েছে। অভিযোগ গুরুতর। সংখ্যালঘু অত্যাচার, ব্লুগার হত্যা বা আহমেদীদের ওপর নির্যাতন একসূত্রে গাঁথা। সবকিছুর লক্ষ্য বাংলাদেশকে একটি একক ইসলামি রাষ্ট্রে পরিণত করা। হেফাজতের শফি আহমদ বলেছেন, সব মুর্তাদকেই দেখে নেয়া হবে। আমাদের এক বন্ধু লিখেছেন, বাংলাদেশি জিহাদিরা এখন আইএসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে এবং তাদের সম্মিলিত শক্তি অর্থাৎ আল-কায়েদা, আল-হিন্দ বা আইএস সমর্থিত জিহাদি শক্তি বাংলাদেশে এখন যা ইচ্ছে তাই করতে পারে। খুব বেশি দিন নয়, সরকার এদের কাছে অসহায় হয়ে পড়বে। তাহলে কি বাংলাদেশে পাকিস্তানের মতো তালেবানি ফাইট অনিবার্য? দেশ যেভাবে এগুচ্ছে, তাতে কোনো সংশয় দেখি না, শুধু সময়ের হেরফের হতে পারে।
এসব ঘটনার প্রভাব আসন্ন পৌর নির্বাচনে পড়বে। গ্রামে হিন্দুরা থাকতে পারছে না, তাই শহরে উঠে আসছে। কাজেই ঢাকা-চট্টগ্রামে হিন্দু ভোট নেহাত কম নয় এবং এই ভোট জয়-পরাজয়ে নিয়ামক ভূমিকা পালন করতে পারে। আগেরবার মেয়র মহীউদ্দীনের পরাজয়ে হিন্দু ভোট একটি বিরাট ফ্যাক্টর ছিল। রামু-নন্দিরহাট-অভয়নগর-বরগুনা-লাঙ্গলবন্দ ঘটনায় এবারো হিন্দু ভোটাররা নীরব বিপ্লব করে দিতে পারে। হিন্দুরা তো আওয়ামী লীগকে সবকিছুই দিয়েছে, বিনিময়ে প্রাপ্তি কী? স্বাধীনতার জন্য হিন্দুদের অবদান সবার চেয়ে বেশি কিন্তু স্বাধীনতার সুফল কি হিন্দুর ঘরে পৌঁছেছে? যদি পৌঁছত, তাহলে তো হিন্দুকে পালিয়ে বেড়াতে হতো না। লন্ডন গার্ডিয়ান কবছর আগে এক বিশাল হেডিং করে লিখেছিল, 'ইন বাংলাদেশ, মাইনরিটিজ আর অনলি সেফ ইন ডিপার্চার লাউঞ্জ'। শান্তিপ্রিয় হিন্দুরা মুখে না বললেও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, 'সম্ভাবনী যুগে যুগে।' হিন্দুরা প্রায়শ বলে থাকেন, 'যেই রমনা কালীবাড়ি পাকিস্তানিরা গুঁড়িয়ে দিয়েছিল, সেই রমনায় দাঁড়িয়েই ৯৫ হাজার পাকিস্তানিকে মাথা নিচু করে সারেন্ডার করতে হয়েছিল।' ব্যাপারটি কাকতলীয় হলেও এটাই ইতিহাস। রমনা কালীবাড়ির প্রসঙ্গে আরো দুচারটি কথা বলি, কারণ 'ফিরিয়ে দাও রমনা' হিন্দুর আজীবন লালিত স্বপ্ন।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানিরা রমনা কালীবাড়ি ভেঙে দেয়। আজ পর্যন্ত কোনো সরকার তা ফেরতও দেয়নি, পুনর্নির্মাণ তো দূরের কথা। ঢাকেশ্বরী থেকে ঢাকা, সেই ঢাকেশ্বরী আজো জাতীয় মন্দিরের স্বীকৃতি পায়নি, অথচ প্রধানমন্ত্রীও যখন বক্তৃতা দেন, তিনিও ওটাকে জাতীয় মন্দির হিসেবেই আখ্যায়িত করেন। সদ্য ঢাকেশ্বরীর কিছু সম্পত্তি সরকার জবরদখল থেকে উদ্ধার করেছে কিন্তু তা হস্তান্তর করতে মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা দাবি করছে! এটা অন্যায়, মন্দিরের জমি মন্দিরকে ফেরত দেয়া সরকারের দায়িত্ব, সরকার কি পারতেন মসজিদের জমি হলে তা করতে? কেন এই বৈষম্য? রমনা নিয়ে একটি ঘটনা দিয়ে লেখাটি শেষ করব। এরশাদ তখন সিএমএলএ, আমরা মহানগর পূজা কমিটির পূজা করি ঢাকেশ্বরীতে। তিনি আসবেন, একরকম জোর করেই নিমন্ত্রণ নেন। তিনি এলেন, বক্তৃতা দিলেন। ভিভিআইপিদের আপ্যায়নের জন্য তখন একটি পৃথক ব্যবস্থা ছিল, এরশাদকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হলো, নেতারা সবাই বসলেন। সাদামাটা কথাবার্তার এক পর্যায়ে আমাদের এক মাসিমা (মহানগরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কেবি রায় চৌধুরীর স্ত্রী) বললেন, 'স্যার, আপনাকে একটি কথা বলব?' এরশাদ উত্তর দিলেন, 'বলুন মা, বলুন'। মাসিমা বললেন, 'স্যার, আমাদের রমনা কালীবাড়িটি দিয়ে দিন'। এরশাদ কিছু বলার আগেই মাসিমা আবার বলতে থাকেন, 'স্যার, বঙ্গবন্ধু ও জিয়া রমনা ফেরত দেয়নি বলে তাদের করুণ পরিণতি হয়েছে। আমরা আপনার ভালো চাই, আমাদের রমনা ফিরিয়ে দিন'। একজন বয়স্ক মহিলার মুখে এমত কথা শুনে এরশাদ ঘটনার আকস্মিকতায় ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যান। সামলে নিয়ে তিনি বলেন, 'মা, আমি বিষয়টি দেখব'। এরপর আর কথা এগোয়নি। খুব সম্ভবত ওই বছরই বা পরের বছর পুলিশ প্রহরায় ওয়াইজঘাটের 'ভিআইপি স্যু'র রতন স্বাধীনতার পর প্রথম রমনায় মা-কালীর পূজা করেন। তারপর থেকে ওখানে কিছু কিছু ধর্মীয় কার্যকলাপ হচ্ছে কিন্তু সরকার এখনো এগিয়ে আসেনি। রমনা কালীবাড়ি যথাস্থানে ফিরিয়ে দেয়া উচিত। শুভস্য শীঘ্রম। 'দিনে দিনে বাড়িতেছে দেনা, শুধিতে হইবে ঋণ'।

নিউইয়র্ক থেকে
শিতাংশু গুহ : কলাম লেখক।


__._,_.___

Posted by: Jiten Roy <jnrsr53@yahoo.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___