নিউইয়র্ক : তুমি সুন্দর, আর আমি অসুন্দর। তাতে কি? যদি আমি তোমাকে আমা অপেক্ষা অসুন্দর করে দিতে পারি। তবেই আমি হব তোমা অপেক্ষা সুন্দর। এমনই রীতিতে চলছে যুক্তরাষ্ট্রে বিপাবলিকান পার্টি এবং বাংলাদেশে বিএনপি। রাজনীতিতে মিথ্যাচারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিএনপি এবং যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টিও মধ্যে অপূর্ব এক সামঞ্জস্য উদঘাটিত হয়েছে ২৬ জুন শুক্রবার বাজারে আসা নিউইয়র্কের ঠিকানা পত্রিকার এক বিশেষ প্রতিবেদনে। এখানে তা উল্লেখ করা হলো।এনআরবি নিউজ
ধরা যাক রিপাবলিকান পার্টির কথা। এমন একসময় ছিল-রাষ্ট্র পরিচালনায় এই দলের সুচিন্তিত মতাদর্শ। তারা ছিলেন মেধাবী, রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদের দক্ষতার ইতিহাস সমৃদ্ধ। বর্তমানে এই দলের তো কোনো সুচিন্তিত মতামতই নাই-অধিকন্তু গত দুই দশক ধরে এই দল ওবামা ও ক্লিনটন প্রশাসনের সময় তাদের ঘায়েল করার নিমিত্তে যেসব উদ্ভট কল্পকাহিনী প্রচার করছে তাতো পাগলের প্রলাপ বৈ কিছুই নয়। তাদের প্রলাপের কিছু নমুনা এখানে উপস্থাপন করা হলো।
(১) ওবামা মুসলমান, (২) তার খ্রিস্টান মিনিস্টার তাকে শিক্ষা দিচ্ছে আমেরিকানদের ঘৃণা করার জন্য, (৩) হ্যারিকেন, স্যান্ডি প্রকৃতির সৃষ্টি নয়। এগুলো ওবামার সৃষ্টি। তার নির্দেশে ইউএস সিক্রেট আর্মির রেডিও ওয়েব সিস্টেমের মধ্য দিয়ে এই হ্যারিকেন সৃষ্টি, (৪) ওবামা ফেডারেল ডিটেনশন ক্যাম্পে ১ বিলিয়ন ডলারের কফিন পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন, (৫) বিন লাদেন নিহত হয়েছে-তা ঠিক নয়। এ বিষয়ে ওবামা মিথ্যা তথ্য দিয়েছে, (৬) কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে স্যান্ডিহুক এলিমেন্টারি স্কুলে ২০ বছর বয়সী এডাম লেন্জা স্কুল ছাত্রছাত্রীদের হত্যা করেছিল। তা প্রকৃতপক্ষে ওবামা করিয়েছিল। বিশেষত ইউএস রাইফেলস ক্লাবের হাত থেকে অস্ত্র তুলে নিতে, (৭) ওবামা নাইজেরিয়ার প্রশাসনকে জানিয়ে দিয়েছে- যদি ঐ দেশের সরকার সমকামী বিবাহ অনুমোদন করে তবেই ওমাবা প্রশাসন বোকোহারাম টেরোরিস্ট দমনে সহায়তা দিবে, (৮) ওবামা ইরান ও আইএস আইএস এর সাথে এমন গোপন চুক্তি করতে যাচ্ছে যে, তারা আমেরিকায় নিউক্লিয়ার আক্রমণ চালাবে। এতে করে ওবামা তৃতীয় বারের মতো বিনা নির্বাচনে ক্ষমতায় থাকার পথ সুগম হবে, (৯) ওবামার জন্ম কেনিয়ায়, (১০) ওবামার জন্ম ইন্দোনেশিয়ায়, (১১) ওবামা শ্বেতাঙ্গবিদ্বেষী, (১২) ওবামা খ্রিস্টানবিদ্বেষী, (১৩) ওবামা ইহুদি ও ইসরায়েল রাষ্ট্র বিরোধী, (১৪) ওবামা কমিউনিস্ট ও মার্কস আদর্শে বিশ্বাসী ইত্যাদি।
অতএব প্রেক্ষাপট বিবেচনা করেই রিগ্যান প্রশাসনের প্রাক্তন সিনিয়র পলিসি এনালিস্ট বলেছেন, এখন এটি উম্মাদের দল। অজ্ঞ পার্টির দল। তারা জানে না কিছুই। তারপরও তারা অহঙ্কারী। আমেরিকায় গৃহযুদ্ধের সময় আব্রাহাম লিঙ্কন এক দলের নিকট অত্যন্ত নিন্দনীয় প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ওবামার প্রতি বিরোধী দলের নিন্দা সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। কেউ বলতেই পারেন নিক্সন প্রশাসন তো নিন্দায় কম আক্রান্ত হননি। অথবা ইরাক আক্রমণ নিয়ে বুশ প্রশাসন ছিল নিয়মিত বলি। হ্যাঁ ফোর্ড, রুজভেল্ট, হ্যারিট্রুম্যান, জিমি কার্টার তারাও নিন্দায় জর্জরিত হয়েছিলেন। তবে ঐ নিন্দা মিথ্যা, কল্পকথার ওপর ভর করে নয়। ধর্মান্ধ মুসলমানদের কাছে ওবামা এতই ঘৃণিত যে, তারা যে কোনো মূল্যে ওবামাকে হত্যা করতে বদ্ধপরিকর। কারণ ওবামা প্রশাসন অতীতের যে কোনো প্রশাসনের তুলনায় অধিকসংখ্যক মুসলমান টেরোরিস্ট হত্যা করেছে। ইউএস নেভি সিলস ও ড্রোন হামলায় ইসলামি টেরোরিস্টদের হাত থেকে অনেক বেশি পশ্চিমা বন্দি মুক্তিলাভ করেছে। বিন লাদেনকে হত্যা করেছে। ইরাক-সিরিয়া আইএস আইএস এর বিরুদ্ধে নিয়মিত ড্রোন হামলা চলছে।
ওবামার বিরুদ্ধে সর্বশেষ চক্রান্ত এতই অদ্ভূত কল্পনাপ্রসূত যে, শেষ পর্যন্ত পার্টির মধ্য থেকেই কেউ কেউ সোচ্চার হয়েছে যে, এমন মস্তিষ্ক বিকৃত অপপ্রচার বন্ধ হউক। (৫) সর্বশেষ চক্রান্তমূলক নতুন সূত্র হলো, ওবামা প্রশাসন টেক্সাস অঙ্গরাজ্য দখলের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। ফেডারেল সরকারের সৈন্য বাহিনী গোপন সুরঙ্গ পথে টেক্সাসের বন্ধ একটি বিশাল ওয়াল মার্টের তলদেশ দিয়ে ওয়ালমার্টে প্রবেশ করবে। যাতে টেক্সাসবাসী টেরও না পায়। বিষয়টি কত অদ্ভূত কল্পনাপ্রসুত। বিষয়টি বোধগম্য হতে আপনি যদি প্রশ্ন করেন টেক্সাস অঙ্গ রাজ্যতো ফেডারেল গভর্নমেন্টের অন্তর্ভুক্ত রাজ্য। তবে জানবেন টেক্সাসে অন্তর্ভুক্ত নাসা দখলে যাচ্ছে। এটিওতো ফেডারেল গর্ভনমেন্টের। তখনই জানবেন লকল্যান্ড ওয়ারফোর্স বেইচ বা ফোর্ট লুড দখলে যাচ্ছে। এটিওতো কেন্দ্রীয় সরকারের, তখন জানবেন টেক্সাস গভর্নর ও ওখানকার জনপ্রতিনিধিদের উৎখাতে যাচ্ছে। তাদের তো পদচ্যুত করতে ইউএস কংগ্রেস ও সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদন প্রয়োজন। তা না হলে এটি হবে যে অসাংবিধানিক? যদি তাই হয় তবে ওবামা প্রশাসন টেক্সাস অঙ্গ রাজ্যের সরকার উৎখাত করে সারাদেশে সামরিক শাসন জারি করতে যাচ্ছে। ওবামা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকতে যাচ্ছে।
এই উদ্ভট প্রপাগান্ডার পিছনের মূল রহস্য কী? ওবামার কোন ইস্যু নিয়ে এমন সব কল্পকাহিনি ছড়াচ্ছে? বিষয়টি আর কিছু নয় ওবামার জেইড হেলম ১৫। বিষয়টি হলো আগামী ১৫ জুলাই থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর এই দুই মাস ইউএস আর্মি গ্রিন বেরেটস; ইউএস মেরিন স্পেশাল অপারেশন কমান্ড; ইউসি নেভী সিলস; ইউসি এয়ারফোর্স স্পেশাল অপারেশন কমান্ড সম্মিলিতভাবে আমেরিকার দক্ষিণ পশ্চিমের নয়টি রাজ্য টেক্সাস, নিউ মেক্সিকো, আরিজেনা, ক্যালিফোর্নিয়া, নেভাদা, ইউটাহ, মিসিসিপি, ফ্লোরিডা, লুঝিয়ানা রাজ্যে বিশেষ ট্রেনিংয়ে যাচ্ছে। প্রশিক্ষণের প্রথম ক্ষেত্রটি টেক্সাস রাজ্যের শহরতলীর পরিত্যক্ত ভূমি। যে গুলোতে উন্নয়নের কাজ এখন চলছে না। ইউএস আগামীতে বিভিন্ন দেশে যে সব সমর ক্ষেত্রে যাচ্ছে ঐ দেশের সাথে আমেরিকার দক্ষিণ পশ্চিমের রাজ্যগুলোর সাথে মিল রয়েছে।
সামরিক অনুশীলনের জন্য টেক্সাস রাজ্যকে বেছে নেয়ার ওবামা বিরুদ্ধবাদীদের ভাবিয়ে তুলেছে। টেক্সাস আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বুশ ও জুনিয়র বুশের আবাসস্থল। অন্য দিকে আগামীতে সম্ভাব্য রিপাবলিকান দলীয় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জেব বুশেরও আবাসভূমি। বিষয়টি মস্তিষ্ক বিকৃত রিপাবলিকান দলীয়দের ভাবিয়ে তুলেছে। ওরা বলে টেক্সাসকে দিয়ে ওবামা প্রশাসনের সামরিক অনুশীলনের জন্য ওবামার জনপ্রিয়তা বেড়ে যাবে। তাই বিকৃতরূপে মনগড়া বিষয়টি ইন্টারনেটে ছড়ানো হচ্ছে।
বিষয়টি এমনভাবে ছড়াচ্ছে যে, আমেরিকা সামরিক অভিযান চালিয়ে বিদেশ ভূমি থেকে যেভাবে মোস্ট ওয়ান্টেড ব্যক্তিদের ধরে নিয়ে আসে। তেমনই টেক্সাসে কেন্দ্রীয় সরকারের 'টপলিস্ট' ব্যক্তিদের তুলে নিয়ে হত্যা করবে বা জেলে নিবে। সাধারণ পাবলিকদের কাছ থেকে অস্ত্র তুলে নিবে। সব শেষে সামরিক শাসন জারি করবে। কোনো বিচার বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তির উপরের বিষয়গুলো আমলে না নেওয়ারই কথা। আশ্চর্যজনকভাবে দেখা গেল যে, টেক্সাসের গভর্নর টেক্সাস স্টেট গার্ডদের নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের সম্ভাব্য কর্তৃত্ব গ্রহণের প্রতি যেন নজর রাখে।
রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সিনেটর টেড ক্রুজ নিজেকে হোয়াইট হাউজের জন্যে অযোগ্য প্রদর্শন করে পেন্টাগণকে এই বিষয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। এমনও বলেছেন আমেরিকার জনগণের ওবামা প্রশাসনকে অবিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ আছে। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী 'রেন্ড পল' তার সমর্থকদের বলেছেন বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন। আশ্চর্যের বিষয় যে সাংবাদিকরাও হোয়াইট হাউজে ডিফেন্স সেক্রেটারিকে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করে। এমন বিচার বুদ্ধিহীন সাংবাদিকদের পেশার প্রতি আরও সজাগ হতে হবে নয়তো পেশা ত্যাগ করতে হবে।
টেক্সাসে রিপাবলিকান দলীয় হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভ লুই গোইমার্ট বলেন, সেনাবাহিনীকে প্রমাণ করতে হবে তারা নিজ দেশের রাজ্যের বিরুদ্ধে অনুশীলনের বাইরে অন্যকিছু করতে যাচ্ছে না। বিষয়টি হাস্যকর নয়, ধূর্ততায় ভরা। রাজনীতিবিদ যখন বোধশক্তি হারিয়ে ফেলে, চোখে দেখেও দেখে না, সাধারণ নাগরিকদের স্বপ্ন দেখাতে ব্যর্থ হয়, তাদের ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় রাখে। তখন দেশ বিশ্বময় উপহাসের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সচেতন রাজনীতিবিদদের সুচিন্তিত মতামত হবে প্রশংসনীয়।
বিল ক্লিনটনের সময় তার রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয় নয়, বস্তুত তাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেই চলেছিল। তখন অপপ্রচার ছিল ক্লিনটন অপ্রাপ্ত বয়স্কসহ ৫০ জনকে ট্রেন এক্সিডেন্টে হত্যা করিয়েছে। সে ল্যাটিন আমেরিকার ড্রাগ কার্টেলদের সহায়তা করত। হোয়াইট হাউজের ডেপুটি কাউন্সিলর যিনি বিল ক্লিনটনের মনিকা লিউনেস্কির সঙ্গে মাখামাখি বিষয় হিলারীর সাথে শেয়ার করত- তাকে ক্লিনটন হত্যা করিয়েছিল। অথচ সবাই জানে সে আত্মহত্যা করেছে। ক্লিনটন তার অপরাধ চাপা দিতে সে তার কমার্স সেক্রেটারি রন ব্রাউনকে হত্যা করিয়ে তাকে প্লেনে বসিয়ে পরে আরও ৩৩ জনসহ ক্রয়েশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত করে। মনে হয় রন ব্রাউনকে হত্যা করিয়েও বিল ক্লিনটনের তৃষ্ণা মিটেনি, ৩৩ জন সিভিলিয়ানকেও হত্যা করে তৃষ্ণা মিটেছে।
ক্লিনটন প্রেসিডেন্সির সময় রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ কংগ্রেস ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট কাউন্সিল বিরামহীনভাবে তদন্ত করে এই তথ্য খুঁজে পেয়েছিল যে ক্লিনটনের সাথে ইন্টার্ন মনিকা লিউনেস্কির বিবাহ বহির্ভূত অনৈতিক সম্পর্ক আছে। অথচ তারা এই সত্য খুঁজে বের করেনি যে ক্লিনটন তার স্ত্রীকে চিট করেছে। রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ হাউজ মরিয়া হয়ে ক্লিনটনকে ইমপিচ করার জন্য উঠেপড়ে লাগে। যদিও তারা জানে তাকে ইমপিচ সম্ভব নয়। কারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ ডেমোক্রেট ইউএস সিনেট কখনও ইমপিচের পক্ষে ভোট দেবে না। আল কায়দা প্রধান বিন লাদেন তখনও আমেরিকান সাধারণ নাগরিকদের কাছে অপরিচিত। ১৯৯৮ সালে ৭ আগস্ট পূর্ব আফ্রিকায় একটি অ্যাম্বাসি তারা উড়িয়ে দেয়। ক্লিনটন ঐ সময় একটি দুর্বল আক্রমণে বিল লাদেনকে হত্যা করতে ব্যর্থ হয়। রিপাবলিকান দল তখন ক্লিনটনের ব্যর্থ আক্রমণের জন্য তাকে নিন্দা করেনি। বরঞ্চ তখন তাকে ইমপিচ করার জন্য ব্যতিব্যস্ত। ঐ সময় যদি ক্লিনটন প্রশাসন স্বাভাবিক নিয়মে চলত হয়তো ওবামা নিহত হতেন।
সাদ্দাম হোসেন ১৯৯৮ সালে জাতিসংঘের অস্ত্র পর্যবেক্ষক দল ইরাক থেকে বের করে দেয়। ঐ সময় সাদ্দাম প্রশাসন নিশ্চিত ছিল যে, ক্লিনটন প্রশাসন বেসামাল। রিপাবলিকান ক্লিনটন প্রশাসন বিমুখ। তাই পরিক্ষামূলকভাবে সাদ্দাম জাতিসংঘ অস্ত্র পর্যবেক্ষক দল বের করে দেয়। ক্লিনটন তখন ইরাকে মিসাইল নিক্ষেপ করে। রিপাবলিকান তখন ক্লিনটনের মিসাইল নিক্ষেপকে তো স্বাগত জানাইনি অধিকন্তু অপপ্রচার করেছে ক্লিনটন তার সেক্স স্ক্যান্ডাল কেইস থেকে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি অন্যদিকে নিতেই মনিকা মিসাইল নিক্ষেপ করেছে। এই ক্ষেত্রে সাদ্দামের অনুমান ঠিকই ছিল। যদিও ঐ সময় রিপাবলিকান সঠিকভাবে ক্লিনটনের ইরাক বিষয়ে সহায়তা করত। তবে হয়তো জর্জ বুশের সময়ে তিন বছরে ২টি যুদ্ধ সংগঠিত হতো না। অতি সম্প্রতি মে মাসে বাংলাদেশ ভারত স্থলসীমান্ত চুক্তিকে বিএনপি প্রশংসা করেছে। ১৯৭৪ সালের ১৬ মে ইন্দিরা-মুজিব এই চুক্তিটি করে। তখন আওয়ামী বিরোধী দল এই চুক্তি নিয়ে কটাক্ষ করে। পরে বিএনপি নির্বাচনের প্রচারকালে এই চুক্তিকে বাংলাদেশকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার চুক্তি বলে অভিহিত করে। অথচ এই চুক্তি ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মালিক ফিরোজ খান নুন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর মাঝে স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
১৯৭২ সালের ১৯ মার্চ ইন্দিরা-মুজিব স্বাক্ষরে ২৫ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীচুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল। নির্বাচন এলে বিএনপি এটিকে ভারতের সাথে গোলামী চুক্তি বলে অভিহিত করত। অথচ চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে বিএনপি মন্তব্য করে এটি এমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি নয়। ১৯৯৭ সালে ২ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষে আবুল হাছনাত আব্দুল্লাহ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির পক্ষে সন্তু লারমা পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তিটি করার জন্য সামান্য এগিয়ে যান, পরে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় এলে তারা চুক্তিটি করে। দেখা গেল বিএনপি এই চুক্তিটি মেনে নেয়নি। অপপ্রচার চালিয়েছে- এই চুক্তির ফলে ফেনি পর্যন্ত ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে। ধর্মীয় অনুভূতিতেও বিএনপি অপপ্রচারে নেমেছে। নির্বাচনে তারা অপপ্রচার চালিয়ে এসেছে-আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে মসজিদে উলুধ্বনি হবে। বাংলাদেশে কোনো মসজিদে উলুধ্বনি আজও হয়নি। রিপাবলিকান দল ও বিএনপির নিকট সবিনয় অনুরোধ অপপ্রচার বন্ধ করুন।
http://khabor.com/archives/59588
__._,_.___