একটি দিনেই নিঃস্ব হয়ে গেলাম : হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার ঘটনাটি শুধু একটি পরিবারের ওপর হামলার ঘটনা ছিল না। হামলাটি ছিল একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত শক্তির প্রতিশোধের আঘাত। বাঙালি জাতি যাতে মাথা উঁচু করে না দাঁড়াতে পারে সেজন্যই ওই হামলা। জাতির জনককে হত্যা। আর তারই ধারাবাহিকতায় জেলখানায় জাতির মহান আরও চার নেতাকে হত্যা। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ৩১ জুলাই আমি আর রেহানা দেশের বাইরে গেলাম। সবাইকে রেখে গেলাম। কিন্তু মাত্র পনেরো দিনের ব্যবধানে একটি দিনে আমরা পুরোপুরি নিঃস্ব হয়ে গেলাম। আমি একদিনেই সব হারালাম। গতকাল শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবন সংলগ্ন সবুজ চত্বরে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। 'জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪০তমশাহাদাতবার্ষিকী' উপলক্ষে আওয়ামী লীগের ৪০ দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই সহযোগী সংগঠনটি স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি ও আলোচনা সভার আয়োজন করে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একটি স্বাধীন দেশে কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের সার্বিক উন্নয়নে জাতির জনক যখন কাজ করে যাচ্ছিলেন, যখন সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে শুরু করেন_ তখনই তাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৩১ জুলাই আমি আর রেহানা দেশের বাইরে গেলাম। সবাইকে রেখে গেলাম। কিন্তু মাত্র পনেরো দিনের ব্যবধানে মাত্র একটি দিনে আমরা পুরোপুরি নিঃস্ব হয়ে গেলাম। পরিবারের সদস্যদের হারানোর পর নিজের দেশে ফেরা নিয়ে তৎকালীন সরকার যেসব বাধা সৃষ্টি করে সেগুলোর উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, একপর্যায়ে বাধা উপেক্ষা করেই দেশে ফিরি। এবং আওয়ামী লীগের হাল ধরি।আওয়ামী লীগ দীর্ঘ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় ফেরার পর এখন দেশের উন্নয়নে অব্যাহতভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ক্ষমতায় আসার পর তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। এই উন্নয়ন কাজেও বিএনপি-জামায়াত চক্র বাধা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের বাধা সত্ত্বেও দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এখন বাংলাদেশকে আর কেউ অবহেলার চোখে দেখে না। এখন বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল।শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষ যাতে মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে পারে সেজন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের মানুষকে যাতে ভিক্ষা করতে না হয় সেটাই নিশ্চিত করা হচ্ছে। শেখ হাসিনা বলেন, ঘোষণা দিয়েছিলাম ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হবে। ২০১৫ সালেই দেশ নিম্ন-মধ্য আয়ের হয়েছে। তবে আমরা নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশ হয়ে থাকতে চাই না। দেশ হবে উন্নত। ২০৪১ সালের মধ্যে তা নিশ্চিত করা হবে।কৃষক লীগের আয়োজনে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, রক্তদান একটি মহান কাজ। আপনার দান করা রক্ত বাঁচাতে পারে অন্যের জীবন। আর সে কারণে বেশি বেশি রক্তদান করতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, আমিও একসময় নিয়মিত রক্ত দিয়েছি। এখন বয়স বেড়ে যাওয়ায় রক্ত দেয়া যাচ্ছে না। যারা রক্তদান করতে পারেন তারা নিয়মিত রক্তদান করবেন সেটাই আমার প্রত্যাশা। বক্তৃতার শেষ পর্যায়ে কৃষক লীগের আয়োজনে ওই রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ড. আব্দুর রাজ্জাক, সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, কৃষক লীগের সভাপতি আলহাজ মোতাহার হোসেন মোল্লা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
__._,_.___