এটা বার বার প্রমাণিত
এবং —
দুঃখজনক হলেও, সত্য যে—
মিথ্যুক, জ্ঞ্যানপাপী বিএনপি-জামাত-রাজাকাররা এবং তাদের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা এবং
দুর্নীতিবাজ, চরম মিথ্যাচারী, মুর্খ বা জ্ঞানপাপী, ভন্ড, সঠিক নাম পরিচয় হীন বর্ণচোরারা -
এবং
বঙ্গবন্ধু-শেখ হাসিনা-আওয়ামী লীগের অন্ধ বিরোধীরা –
সব সময় না জেনে, না পড়ে, না বুঝে –
উল্টা পাল্টা, মিথ্যা, আধা সত্য-আধা মিথ্যা কথা বলে আবোল তাবোল মন্তব্য করে।
এটাই ওদের অন্যতম এবং প্রধান চারিত্রিক বৈশিস্ঠ্য এবং প্রধান গুনও!
আসলে, মিথ্যুক, জ্ঞ্যানপাপী বিএনপি-জামাত-রাজাকারদের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা ভণ্ডদের, প্রতারদের সম্বলই হচ্ছে অজ্ঞতা, কুজুক্তি আর মিথ্যচার।
এত কম জেনে, এত ভুল ও এত মিথ্যা জেনে এবং অনেক ক্ষেত্রে না জেনেও - একমাত্র বাংলাদেশেই
• বিএনপি-জামাত দল করা যায়!
• ওদের সমর্থক হওয়া যায়!
মহান পুরুষ রিয়ার এডমিরাল এম. এ. খান
০৫ আগস্ট,২০১৫
আতিকুর রহমান রুমনমহৎ কীর্তি যেমন বিলীন হয় না, তেমনি মহান পুরুষদের স্মৃতিও চিরকাল জাগরুক থাকে মানুষের অন্তরে। রিয়ার এডমিরাল মাহবুব আলী খান(এম এ খান) ছিলেন সে রকমই এক সৎ, কর্মীষ্ঠ, দেশপ্রেমিক মহান পুরুষ। যতদিন জীবিত ছিলেন দেশের জন্য নিবেদিতভাবে কাজ করেছেন। নিষ্ঠা, কর্মদক্ষতা ও মানুষের প্রতি অকুন্ঠ ভালবাসা তাঁর পারিপার্শ্বিক জগৎকে উজ্জ্বল আলোকময় করে তুলেছিল। অমায়িক ব্যবহার, গভীর জ্ঞান ও প্রশ্নাতীত সততায় তার আভিজাত্যই উদ্ভাসিত হতো বার বার।
৬ আগষ্ট সেই মহান পুরুষের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের সাবেক যোগাযোগ উপদেষ্টা, সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও সাবেক নৌবাহিনী প্রধান।বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী এ সৎ ও মহান দেশপ্রেমিকের জন্ম ১৯৩৪ সালের ৩ নভেম্বর সিলেট জেলার বিরাহীমপুরের এক সম্ভ্রান্ত ও বিখ্যাত মুসলিম পরিবারে। তার পিতা আহমেদ আলী খান প্রথম মুসলিম হিসেবে তৎকালীন ভারতে ১৯০১ সালে ব্যারিস্টার হন। তিনি নিখিল ভারত আইন পরিষদের সদস্য (এমএলএ) ও আসাম কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি তিনটি বিষয়ে এমএ ডিগ্রিও নেন। হায়দ্রাবাদ নিজামের প্রধান আইন উপদেষ্টা ছিলেন তিনি।
এম এ খানের মাতা ছিলেন জুবাইদা খাতুন। অবিভক্ত বিহার, আসাম ও উড়িষ্যার জমিদার পরিবার খানবাহাদুর ওয়াসিউদ্দিন আহমেদের কন্যা। মরহুমা জুবাইদা খাতুনের দাদা ছিলেন ব্রিটিশদের থেকে 'অর্ডার অব এমপায়ার' (Officer of the Most Excellent Order of the British Empire -- OBE) খেতাবপ্রাপ্ত । আহমেদ আলী খানের অপর ভাই গজনফর আলী খান ১৮৯৭ সালে ভারতে চতুর্থ মুসলিম হিসেবে আইসিএস লাভ করেন। গজনফর আলী খান ১৯৩০ সালে ব্রিটিশদের থেকে অর্ডার অব এমপায়ার খেতাব পান।
এম এ খানের দাদা ছিলেন তৎকালীন ভারতের বিশিষ্ট চিকিৎসক খানবাহাদুর আজদার আলী খান। তিনি বিহার ও আসামের দারভাঙ্গা মেডিকেল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ও পাটনা মেডিকেল কলেজে অধ্যাপনা করতেন। তিনি ১৯২৪ সালে সিলেটে নাফিজাবানু চ্যারিটেবল হাসপাতাল ও ১৯৩০ সালে ম্যাটারনিটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।
এম এ খানের পিতার মামা জাস্টিস আমীর আলী কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিলেন। এম এ খানের দাদা খানবাহাদুর আজদার আলী ছিলেন স্যার সৈয়দ আমীর আলীর জামাতা। স্যার সৈয়দ আমীর আলী ছিলেন ইংল্যান্ডের রয়্যাল প্রিভি কাউন্সিলের সদস্য এবং ইন্ডিয়ান ভাইসরয়েজ এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্য।
স্যার সৈয়দ আমীর আলীর বিখ্যাত দুটি গ্রন্থ হলো 'হিস্ট্রি অব সারাসেন' ও 'স্পিরিট অব ইসলাম'। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এমএজি ওসমানী ছিলেন এম এ খানের চাচাতো ভাই। শের-এ সিলেট ও অবিভক্ত পাকিস্তানের মন্ত্রী মরহুম আজমল আলী চৌধুরীও তার চাচাতো ভাই। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে এম এ খান ছোট। সবার বড় বোন সাজেদা বেগম। মেজভাই বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. সেকেন্দার আলী খান। মরহুম ডা. সেকেন্দার আলী খানের মেয়ে আইরিন খান, যিনি মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সিলেটের বিরাহীমপুর, কলকাতা ও পুরান ঢাকার ৬৭ পুরানা পল্টন লাইনের বাড়িতে এম এ খানের শৈশব ও কৈশোর অতিবাহিত হয়। তিনি কলকাতা ও ঢাকায় প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ছোটবেলা থেকেই ছিলেন শান্ত, ধীর ও চিন্তাশীল। সুদর্শন শারীরিক গঠন ও ব্যক্তিত্বপূর্ণ অভিব্যক্তির কারণে পরিবারের সবার প্রিয় ছিলেন তিনি।
এম এ খান ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলা করতেন। ব্যাডমিন্টন খেলায় পারদর্শী ছিলেন। খেলা নিয়ে ভাইদের সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদও হতো। পুরানা পল্টন লাইনের বাড়িতে সামনের খালি জায়গায় ব্যাডমিন্টন খেলার কোর্ট কেটে ভাই-বোনরা দিন-রাত খেলতেন। ধর্মের প্রতি ছোটবেলা থেকেই ছিল তার গভীর অনুরাগ। প্রতিদিন সকালে নামাজ আদায় করে পবিত্র কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করতেন। যে কোনো কাজে বের হওয়ার আগে তিনি আল্লাহকে স্মরণ করতেন।
শোনা যায়, তিনি বেশ খাদ্যরসিকও ছিলেন। গলদা চিংড়ি, ইলিশ মাছ খুব পছন্দ করতেন। ১৯৫৫ সালে সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর সঙ্গে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের দুই কন্যা শাহিনা খান জামান (বিন্দু) এবং ডা. জুবাইদা রহমান (ঝুনু)। শাহিনা খান জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে পড়াশোনা করেন। ছোটকন্যা জুবাইদা রহমান ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে চিকিৎসাশাস্ত্রে ডিগ্রিলাভ করেন।
বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমডোর সৈয়দ শফিউজ্জামান এম এ খানের জ্যেষ্ঠ জামাতা।
তিনি মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ সরকারের সামরিক উপদেষ্টা ছিলেন। আর শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বড় পুত্র বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার কনিষ্ঠ জামাতা। তাদের কন্যা জায়মা রহমান এম এ খানের নাতনি।এম এ খান ১৯৫২ সালে ক্যাডেট হিসেবে পাকিস্তান নৌবাহিনীর নির্বাহী শাখায় যোগ দেন এবং কোয়েটায় সম্মিলিত বাহিনী স্কুল থেকে সম্মিলিত ক্যাডেট হিসেবে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
তিনি উচ্চতর শিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যের ডারমউথে রয়্যাল নেভাল কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন লাভ করে ব্রিটিশ বিমানবাহিনীর রণতরী ট্রায়ামপতে ১৯৫৪ সালে প্রশিক্ষণ লাভ করেন।
১৯৫৬ সালের ১ মে স্থায়ী কমিশন লাভ করেন। এরপর তিনি রয়্যাল কলেজে এবং গ্রিনউইচসহ ইংল্যান্ডের রয়্যাল নেভাল ইনস্টিটিউশনে বিভিন্ন কোর্স সমাপ্ত করেন। ১৯৬৩ সালে কৃতী অফিসার হিসেবে তিনি যুক্তরাজ্যে রানী এলিজাবেথ কর্তৃক পুরস্কৃত হন। এম এ খান ১৯৬৩ সালে যুক্তরাজ্যের এইচএম ভূমি থেকে টর্পেডো ও অ্যান্টি-সাবমেরিন ওয়াফেয়ার অফিসার হিসেবে উত্তীর্ণ হন। তিনি পাকিস্তানের নেভাল স্টাফ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন লাভ করেন।
করাচিতে পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টে তিনি সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট কোর্স সমাপ্ত করেন। এম এ খান ১৯৬০ সালে পিএনএস তুগ্রিলের গানারি অফিসার ছিলেন এবং ১৯৬৪ সালে পিএনএস টিপু সুলতানের টর্পেডো ও অ্যান্টি-সাবমেরিন অফিসার ছিলেন।
১৯৬৭-৬৮ সালে তিনি রাওয়ালপিন্ডিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে জয়েন্ট চিফস সেক্রেটারিয়েট স্টাফ অফিসার (ট্রেনিং এবং মিলিটারি অ্যাসিস্ট্যান্স) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
তিনি ১৯৬৯ সালে পিএনএস মুখতার-এ মাইন সুইপার প্রধানও ছিলেন। তিনি ১৯৭০ সালে পিএনএস হিমালয়ে টর্পেডো ও অ্যান্টি-সাবমেরিন স্কুলের অফিসার-ইন-চার্জ এবং করাচিতে সিওয়ার্ড ডিফেন্স অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের আগেই তিনি পাকিস্তানে চাকরিরত ছিলেন। স্ত্রী ও দুই কন্যাসহ এম এ খান পশ্চিম পাকিস্তানে অবস্থান করছিলেন। যুদ্ধের সময় পাকিস্তান সরকার বাঙালিদের আর বিশ্বাস না করলে এবং এম এ খানের দেশের জন্য অনুভূতি টের পেলে পরিবারসহ তাকে গৃহবন্দি করে।
দীর্ঘ তিন বছরকাল বন্দিজীবন অতিবাহিত করার পর ১৯৭৩ সালে স্ত্রী ও দুই কন্যা বিন্দু ও ঝুনুসহ আফগানিস্তান এবং ভারত হয়ে বাংলাদেশে কৌশলে আসতে সক্ষম হন। ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে তিনি চট্টগ্রামে মার্কেন্টাইল একাডেমির প্রথম বাঙালি কমান্ড্যাট নিযুক্ত হন। ১৯৭৪ সালে নৌ-সদর দপ্তরে পারসোনেল বিভাগের পরিচালক হিসেবে তাকে নিয়োগ করা হয়। ১৯৭৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি নৌবাহিনীর সহকারী স্টাফ প্রধান (অপারেশন ও পারসোনেল) নিযুক্ত হন।
১৯৭৬ সালের ডিসেম্বরে রয়্যাল নেভি কর্তৃক হস্তান্তরিত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রথম রণতরী বিএনএস ওমর ফারুক (সাবেক এইচএমএম ন্যাভডক)-এর অধিনায়ক হন। এ রণতরী গ্রহণের পর তিনি তা নিয়ে আলজেরিয়া, যুগোস্লাভিয়া, মিসর, সৌদি আরব এবং শ্রীলঙ্কার বন্দরগুলোতে শুভেচ্ছা সফরের পর দেশে ফিরে আসেন। ১৯৭৯ সালের ৪ নভেম্বর তিনি নৌবাহিনীর স্টাফ প্রধান নিযুক্ত হন এবং ১৯৮০ সালের ১ জানুয়ারি রিয়ার এডমিরাল পদে উন্নীত হন। এম এ খান সবসময়ই জীবন বাজি রেখে কাজ করেছেন। নৌবাহিনীতে যোগদানে দেশপ্রেম স্পষ্ট ছিল।
১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যোগদানের পর তাকে নেভাল কমডোর পদে দায়িত্ব দেয়া হয়। এ সময় নেভাল কমডোর আকবর ছিলেন তার ঘনিষ্ঠজন। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে বিশ্বমানের আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে তিনি কাজ করেছেন। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর আইন প্রণয়ন করেছেন তিনি। দেশের সমুদ্রসীমা রক্ষা, সমুদ্রে জেগে ওঠা দ্বীপের দখল রক্ষা, দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপ বাংলাদেশের দখলে রাখা, সমুদ্র এলাকায় জলদস্যু দমন, সুন্দরবন এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে নৌবাহিনীকে সচেষ্ট করতে তার নেতৃত্ব বিশেষ ভূমিকা রাখে।
তিনি সরকারের সশস্ত্র বাহিনীর বেতন ও পেনশন কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। বাহিনীগুলোর বেতন কাঠামো এই কমিটির দীর্ঘদিনের বিশেষ বিবেচনার ফল। তিনি দেশের প্রশাসনিক পুনর্গঠনে জাতীয় বাস্তবায়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। বাংলাদেশে উপজেলা পদ্ধতির প্রবক্তাও তিনি। ১৯৮২ সালে দেশে সামরিক আইন জারিকালে এডমিরাল এম এ খান উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিযুক্ত হয়। এ সময় যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা করা হয় তাকে। এবং ১৯৮২ সালের ১০ জুলাই থেকে ১৯৮৪ সালের ১ জুন পর্যন্ত তিনি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এ সময় শাহজালাল সেতু, লামাকারী সেতু ও শেওলা সেতুসহ দেশের অন্যান্য স্থানেও বড় বড় কাজের সূচনা হয়। রিয়ার এডমিরাল মাহবুব আলী খানের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ ছিল না। লক্ষ্য ছিল স্বল্পকালীন মেয়াদে স্থায়ী জনকল্যাণমূলক কিছু কাজ সম্পাদন। তাতে তিনি সফলও হয়েছেন। তিনি শুধু সিলেটের নয়, সারাদেশের জন্যই ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। মৃত্যুর আগপর্যন্ত তিনি ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্বে নিয়োজিত।
১৯৮২ সালের জুন মাসে জেদ্দায় অনুষ্ঠিত ওআইসি সম্মেলনে রিয়ার এডমিরাল মাহবুব আলী খান বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। ১৯৮২ সালের ডিসেম্বরের ৬ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত জ্যামাইকায় অনুষ্ঠিত সমুদ্র আইন বিষয়ক সম্মেলনে তিনি বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন এবং বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে কনভেনশন অন অফ সি কনফারেন্সে স্বাক্ষর দেন।
এসকাপের উদ্যোগে ১৯৮৩ সালের মার্চে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত রেলওয়ে মন্ত্রীদের সভায় তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৮২ সালের এপ্রিল মাসে রিয়ার এডমিরাল মাহবুব আলী খান নৌ, রেল ও সড়ক প্রতিনিধি দলের নেতা হিসেবে চীন সফর করেন এবং চীনের নৌঘাঁটিগুলো পরিদর্শন করেন। ১৯৮৩ সালের জুলাই মাসে তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়া সফরে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
১৯৮২ সালের নভেম্বরে তিনি রাশিয়া যান এবং প্রেসিডেন্ট ব্রেজনেভের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। সর্বশেষ ১৯৮৪ সালের ৩০ মার্চ তিনি গিনির প্রেসিডেন্ট আমদের সেকুতুরের শেষকৃত্যে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বড় ভাই রেজাউর রহমান নৌবাহিনীতে এম এ খানের সহকর্মী ছিলেন।
তাই শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে এম এ খানের নিবিড় সম্পর্ক ছিল। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এম এ খানকে সম্মান করতেন। ১৯৭৫ সালে দেশে সিপাহি-জনতার বিপ্লবের পরে জিয়াউর রহমান সরকারের সময় নৌবাহিনীর প্রধানের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি তত্কালীন সরকারের যোগাযোগ উপদেষ্টা ছিলেন।
১৯৮৪ সালের ৬ আগস্ট সকালে ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দরে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান ভূপাতিত হলে এম এ খান সেই স্থান পরিদর্শনে যান। সে সময় তিনি হৃদযন্ত্রে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করলে সেখান থেকেই তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তিনি চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যান। জীবনাবসান হয় মাত্র ৪৯ বছর বয়সে এ দেশপ্রেমিক মহান নায়কের। রিয়ার এডমিরাল মাহবুব আলী খান সমাজসেবা এবং দেশপ্রেমে ছিলেন এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। স্ত্রী সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু প্রতিষ্ঠিত সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান সুরভির জন্য ছিল তার পূর্ণ সহযোগিতা।
সুরভির হাজার হাজার শিশুর মাঝে আজও তাকে দেখতে পান দেশবাসী। সুরভির কার্যক্রমে ও তৃণমূলের পথকলি শিশুদের উন্নয়নে এম এ খানের স্ত্রী সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুকে ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ সরকার সমাজসেবায় বিশেষ ভূমিকা রাখায় 'স্বাধীনতা পদক' প্রদান করে। দেশের প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে এ পদক তুলে দেন।
এছাড়া নারীর স্বাস্থ্যসেবা আরো বাড়াতে সিলেটের নাফিজাবানু চ্যারিটেবল হাসপাতাল ও ম্যাটারনিটি হাসপাতাল উন্নয়নে এম এ খান বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। তার আরো একটি গুণ আজো সবাইকে মনে করিয়ে দেয় আর তা হলো, বড়দের প্রতি শ্রদ্ধা ও ছোটদের ভালোবাসা।লেখক: সাংবাদিক ও কলাম লেখক
দেশে বিদেশে বাঙ্গালীরা এবং বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ গুনুমুগ্ধ ভক্ত গন
সুখে থাকুন, ভালো থাকুন এবং নিরাপদে থাকুন
জয় বাংলা , জয় বঙ্গবন্ধু
শুভেচ্ছান্তে
Engr. Shafiqur Rahman Anu
__._,_.___